প্রিয়অপ্রিয়ের_সংসার #লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান) #পর্ব_১৭

0
32

#প্রিয়অপ্রিয়ের_সংসার
#লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)
#পর্ব_১৭

“আপনাকে কোথায় কোথায় না খুঁজে বেড়াইলাম। আপনে কই চলে গেছিলেন? জানেন না আপনার মাইয়াডা আপনারে ছাড়া খানাপানি খায় না। তাও কেন না বলে চইলা গেলেন? পুরো একদিন কোথার থেকে আসছেন ঘরে? সত্য কথা বলবেন কিন্তু। যে বেডা তার স্ত্রীর উপর হাত উঠাতে পারে তার কাছে পতিতালয়ে যাওয়া কোনো ব্যাপারই না।”

কথাটা বলতে দেরি কিন্তু রূপালি বেগম এর গালে চ’ড় মা*রতে এক মুহুর্ত ব্যয় করলেন না নাছির উদ্দিন। নাসমা তার মায়ের গালে চ’ড় পড়তে দেখে ভয়ে গুটিয়ে গেল। দরজার কোণ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে যায়। তার বাবা যে তার মায়ের উপর হাত তুলেছে এ যেনো তার প্রথম দেখা দৃশ্য। সে সবসময় জেনে এসেছে তার বাবা মায়ের মধ্যকার সম্পর্ক খুব মধুর। তবে আজ কী এমন হলো যার কারণে তার বাবা হাত উঠিয়েছে। নাসমা ঢোক গিলে আমতার কণ্ঠে ‘বা বাবা বাবা’ বলে ডেকে উঠে। নাছির উদ্দিন থমথমে মুখখানা নিয়ে পেছন ফেরেন। নাসমাকে দেখে উত্তপ্ত রাগকে নিয়ন্ত্রন করে নিলেন। তবে নিজ স্ত্রীর দিকে ফিরে অব্দি চাইলেন না। রূপালি বেগম তাচ্ছিল্যের হাসলেন। এই আর এমন কী? নাসমাকে দেখে তিনি মৃদু গলায় আওড়ায়।

“মা তোমার না দশটায় এক্সাম? যাও পড়তে বসে যাও। তোমার হাতে শুধু একঘণ্টা আছে। তোমার মাম্মা দুধ নিয়ে আসতেছে কেমন? যাও এখন।”

মায়ের কথা শুনে মাথা নুইয়ে রুমের বাহির থেকে সরে গিয়ে নিজের বড় ভাইয়ের রুমে চলে গেল নাসমা। তার ভাবনা তার বড় ভাইকেও সে চ’ড় এর বিষয়টা জানাবে। তার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে বিধেয় বড় ভাইয়ের কাছ থেকে শুনতে চাইবে।
অন্যত্রে, নাছির উদ্দিন কপালে হাত ঠেকিয়ে বসে আছেন সোফায়। রূপালি বেগম এর চোখের থেকে পরপর জল গড়াচ্ছে। তবুও মুখে কুলুপ এঁটে আছেন। নিজ মনে রুম সাফসুতরো করে বেরিয়ে গেলেন। নাছির উদ্দিন দেখে ‘ও আল্লাহ্’ বলে মৃদু আর্তনাদ করে চোখ বুঁজলেন। তার চোখ থেকেও জল গড়ায়। কিন্তু কেনো? তা হয়ত শুধু এক বাবা, এক পুরুষই জানেন ভালো। তার চেয়েও বড় আল্লাহর কাছে তার সমাধান আছে। নাজমুর গম্ভীর মুখে বোনের পুরো কথা শুনল। সেও নিরুক্ত। উঁচু গলায় বাবার সঙ্গে তর্ক করার মত বয়স তার এখনো হয়নি। সে নিজেই বাবার সঙ্গে কলেজ যাওয়া আসা করে। তার বাবার সহায়তায় তার পড়াশোনা চলছে। ফলে সে কীভাবে বাবার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করবে?লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)
তখনি ঘরের দরজায় জোরালো আঘাত হয়। কেউ এসেছে বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে বোধহয়। নাসমা তার ভাইয়ের কাছ থেকে উঠে ছুটে দরজা খুলতে গেল। ভাবল তার বোন এসেছে। দরজা খুলতেই অপরিচিত লোক কে দেখে মুখটা মিইয়ে গেল নাসমার। নাসমা কে দেখে লোকটা তার পান খাওয়া দাঁত দেখিয়ে জিজ্ঞেস করেন।

“মামুনি তোমার বাবা কোথায় গো? তারে দেখতাছি না যে?”

“বাবা তো রুমে আপনি কে?”

লোকটা পুনরায় ফোকলা দাঁতের হাসি দিয়ে বলেন,
‘মামুনি আমি তোমার বাবার দোকানের পুরাতন মালিক। তারে একটু ডাকো চাই। কথা বলতাম।’
রূপালি বেগম উঠানে চলে গিয়ে ছিলেন। তার পালিত গরু কে খাওয়াবেন ভেবে। গরুকে খাবার দিয়ে ঘরের ভেতর আসতেই অপরিচিত লোককে দেখে মাথায় ঘোমটা টানলেন। ইতিমধ্যে লোকটার চোখ জ্বলমলে উঠল রূপালি বেগম কে দেখে। ঢং মে*রে রূপালি বেগম কে দেখে লাজুক হেসে বলেন,

“আপা কেমনডা আছেন? দিনকাল কেমন যায় আপনার? অনেক দিন হইলো আপনার হাতের পানি খায় না। একটু পানি দিয়ে আমার গলার তৃষ্ণা মেটায় দেন না।”

কথাগুলো শুনে অস্বস্তি বোধ করছেন রূপালি বেগম। তবুও মুখে প্রকাশ করেননি। অনিচ্ছাকৃত হলেও গ্লাসে পানি ঢেলে এগোলেন। তখনি স্ত্রীর হাত থেকে ছুঁ মে*রে পানির গ্লাসটি নিয়ে ঢক ঢকে খেয়ে নেন নাছির উদ্দিন। আকস্মিক কাজে চোখ পিটপিট করে তাকান তারা। নাসমা কী বুঝল কে জানে? সে মিটমিটে হাসল লোকটার হা হওয়া মুখ দেখে। নাছির উদ্দিন গলা কলকলিয়ে পানি খেয়ে তৃপ্তি পেয়েছেন মত বলেন,

“আহ্ অনেকক্ষণ পর যেয়ে গলার তৃষ্ণা মিটলগো বউ। কতক্ষণ ধইরা তোমারে ডাক শোধালাম। আইলা না কেন?”

স্বামীর মুখ থেকে আদুরীয় গলা শুনে থম মে*রে তাকিয়ে রইলেন রূপালি বেগম। লোকটা মুখ গম্ভীর করে গলা ঝেড়ে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন। নাছির উদ্দিন শব্দ শুনে পাশ ফেরে তাকান। মোকতাব মিয়াকে দেখে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেন।

“আরে মোকতাব মিয়া আপনি? কী খবর আসেন ভেতরে বাহিরে দাঁড়িয়ে আছেন কেন? ভেতরে এসে বসেন না।”

মোকতাব মিয়া হাসল না তবে হেহে করে বলে,
‘নারে সাব বসব না। পানি চাইছিলাম তা..।’
‘ওহ হ্যা আপনি পানি খাবেন দাঁড়ান মিয়া আমি দেয়। আমি থাকতে মেহমান তৃষ্ণার্ত থাকবে নাকি?’
কথা বলার ছলে গ্লাসে পানি ঢেলে মোকতাব মিয়ার দিকে এগিয়ে গিয়ে গ্লাসটা তার দিকে দেন। মোকতাব মিয়া একপলক রূপালি বেগম কে দেখে মৃদু হেসে পানির গ্লাসটি নিয়ে পানি পান করলেন। নাসমা ধীমি পায়ে হেঁটে তার মায়ের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। মোকতাব মিয়া পানি খেয়ে গ্লাসটা নাছির উদ্দিন এর কাছে দিলেন। তিনিও সন্তপর্ণে গ্লাসটা ধুয়ে রেখে দেন। পুনরায় মোকতাব মিয়ার কাছে এসে জিজ্ঞেস করেন।

“তাহলে আপনি বলুন এবার। কেন এসেছেন হঠাৎ?”

“ভাই সাব দোকানের নতুন মালিক তো আপনি। তবে দেখতে হবে না ঐডা কার নামে? দোকান চালাইতেছো আজ কয়েক বছর ধইরা। আপনার বাপে তো লোন নিয়াছিল যে ঐডা তো হাতে পেলাম না। তাই আইসা মনে কইরা দিলাম। আপনার বাপ নাই দেইখা এখন ঐ লোনের হিসেব আপনারে দিতে হবো।”

‘লোন’ শব্দটা শুনে স্তদ্ধ হয়ে গেলেন রূপালি বেগম। অবাক দৃষ্টিতে নিজের স্বামীর দিকে তাকান তিনি। নাছির উদ্দিন নিরুত্তর চেহারায় একপলক স্ত্রীর দিকে তাকান। নিরস গলায় মোকতাব মিয়াকে আদেশ করেন।
‘আপনে বাহিরের চেহারায় বসে থাকুন। আমি আইতাছি এখনি। রুমে যাইতেছি একটু।’

“ওহ ঘরের ভেতর বইতে পারুম…।”
মোকতাব মিয়ার কথা পরিপূর্ণ হওয়ার আগেই নাছির উদ্দিন উত্তপ্ত নজরখানা তার উপর ফেলেন। দেখে মোকতাব মিয়া হেহে হেসে বাহিরের বরাদ্দকৃত চেয়ারে বসে যান। নাছির উদ্দিন দরজা আটকে রুমে যান। নাসমা কে রূপালি বেগম তার বোনের রুমে পাঠিয়ে দেন। তিনিও ছুটে স্বামীর কাছে গেলেন। নাছির উদ্দিন আলমারির দরজা খুলে একটা পুঁটলি বের করেন। সেখানে তিনি মাসখানেক টাকা জমিয়ে রাখেন। বাচ্চাদের টাকার ফি আলাদা রাখেন। যাতে কোনো কমতি তাদের পড়াশুনার উপর না আসে। তবে স্ত্রীর জন্য জমানো টাকায় দেখলেন ৫০ হাজার টাকা জমা হয়েছে। স্ত্রীর জন্য জমানো টাকা তিনি দিয়ে দেবেন ভেবেই নিজের কাছে তিনি মলিন অসহায়ত্ব বোধ করেন। তার হাতের কাছে যা জমানো টাকা আছে তা দিয়ে তিনি ঘরের যাবতীয় খরচের জন্য রাখেন। তপ্ত শ্বাস ফেলে বাচ্চা স্ত্রীর কথা চিন্তা করে তিনি স্ত্রীর টাকা ধরেননি। খরচের জমানো টাকা ২০হাজার টাকা পকেটে গুঁজে পুঁটলিটা যত্ন করে রেখে দেন। দরজার পাশ ঘেঁষে এককোণে নির্লিপ্ত হয়ে স্বামীর কাণ্ড দেখছিলেন রূপালি বেগম। স্বামীকে টাকা নিয়ে যেতে দেখে তিনিও পিছু পিছু যান। মোকতাব মিয়ার কাছে টাকা টুকু এগিয়ে দিয়ে বলেন,

“আপাতত ২০হাজার টাকা রাখুন। বাকি ৮ হাজার টাকা আমি সামনের বছর দেওয়ার চেষ্টা করব।”

মোকতাব মিয়া টাকা দেখে খুশি হলেও নাছির উদ্দিন এর মুখে পরের বছর বাকি টাকা দেওয়ার কথা শুনে আগুনের ন্যায় জ্বলে উঠেন। দাঁতে দাঁত চেপে বলেন,
‘মজা পাইছেননি আপনে? ব্যাংকের থেকে লোন নিয়ার ব্যাপার বুঝেন না নাকি? আপনে তো দোকানি মানুষ এ ব্যাপারে ভালা বুঝা উচিৎ আপনার। আমি কিছু জানি না আমার বাকি টাকা তিনমাস পরই লাগবো।’

নাছির উদ্দিন উত্তেজিত হয়ে গেলেন। অবাক হয়ে মোকতাব মিয়া কে বলেন,
‘কী বলছেন মাত্র তিনমাস? এই তিনমাসের ভেতর ৮হাজার টাকা কেমনে আনবো আমি? আপনি জানেন না এখন পরিস্থিতি খারাপ। ব্যবসায় ঘাটতি লাগছে। আপনিও একবার দোকানি মানুষ ছিলেন আপনিও তো জানেন।’

হঠাৎ ছপছপ শব্দ হয়। তাদের কথার মাঝে কারো পায়ের শব্দ শুনে তাদের নজর সেদিকে পড়ে। নাছির উদ্দিন বড় মেয়ে শেহরীনাকে দেখে সঙ্গে সঙ্গে মোকতাব মিয়ার দিকে তাকান। লোকটার লোভী চোখ জ্বলমলে উঠতে দেখে তিনি কঠোর গলায় ‘শেহরীনা’ বলে ডেকে উঠেন। মোকতাব মিয়াও নামটা মনে মনে স্মরণ করে নেন। শেহরীনা ভার্সিটির থেকে সবে মাত্র ঘরে ফিরেছে। সৎ বাবাকে অপরিচিত লোকের সঙ্গে কথা বলতে দেখে সে চুপচাপ ভেতরে যাচ্ছিল। তখনি তার সৎ বাবার ডাক শুনে ভ্রু কুঁচকে তাকায়। নাছির উদ্দিন গম্ভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলেন,

“সোজা গিয়ে পরিষ্কার হইয়া খাইয়া ঘুম যাও গা।”

শেহরীনা চোখ ঘুরিয়ে পাত্তাহীন ভেতরে ঢুকে পড়ল। নাছির উদ্দিন এর মনটা খারাপ হয়ে গেল। তবে প্রকাশ করলেন না তিনি কবেই বা বড় মেয়ের সাথে ভালো ব্যবহার করেছেন যে একদিনের ভালো ব্যবহারে মেয়েটা তার সাথে আহ্লাদ করবে! মোকতাব মিয়া জ্বিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে পান খাওয়া দাঁত দেখিয়ে নাছির উদ্দিন কে উদ্দেশ্য করে বলেন,

“আইসা হুনেন আপনারে একবছরের মত সময় দিলাম। তবে এই উপকারের জন্য আমার কিছু লাগব।”

নাছির উদ্দিন খুশি হলেন তবে চাওয়ার কথা বলায় তিনি প্রশ্নাতীত নজরে তাকান। মোকতাব মিয়া হেহে করে হেসে বলেন,

“আরে জ্যান্ত কিছুই চাইতে পারব তাই না? এই মজা বুঝেন না আপনি?”

“ওহ ঐডা বলেন আমি তো রেগে যেতাম অন্য কিছু চাইলে।”

নাছির উদ্দিন এর সাথে কুশল আলাপ শেষে বিদায় নেন মোকতাব মিয়া। তবে জানালার দিকে উঁকি দিয়ে শেহরীনাকে দেখতে ভুলেন না। শেহরীনা ঘরের ভেতরে সোফায় বসে ছিল। রাস্তার মোড়ের দিকে যাওয়ার সময় সোফায় বসা ব্যক্তিদের দৃশ্য দেখা যায়। সেই হিসেব মোকতাব মিয়া শেহরীনার চুলের দিকটাই দেখতে পেলেন।
রূপালি বেগম খাবার দিয়েছেন টেবিলে। মনে মনে হাঁসফাঁস করছেন তিনি স্বামীর কাছ থেকে ব্যাপার খানা জিজ্ঞেস করার। তবে সন্তানদের ঘুমের ব্যবস্থা করতে হবে আগে। তাই স্বামীর জন্য অপেক্ষা করছেন তিনি। শেহরীনাও বসে আছে। ঘরের নিয়ম সবাই একসাথে খাবে। নাছির উদ্দিন লুঙ্গি গেঞ্জি পরণে দিয়ে খেতে আসেন। শেহরীনা কে দেখে রাগজড়িত গলায় বলেন,

“যহন যেটা কমু সেটা মানবে বুঝলাম না আলগা ভাবখানা দেখাস কেন হুম? ভাব দেখাস বাপরে। জানিস না তোর ফি আমি দেয়নি। ভুলে যাস নাকি এইডা? শেষবার কইতেছি আমি কিছু কইলে সেটা হুনবি নাহলে ঘরের বাইরে চলে যাস আজীবনের জন্য। এহন তুমি আমার মুখ দেখে বসে আসো কেন? খাবার বাড়তে জানো না?”

রূপালি বেগম মৃদু গলায় ‘দিচ্ছি’ বলে স্বামীর বাটিতে খাবার বেড়ে দেন। একে একে সবার বাটিতে খাবার বেড়ে স্বামীর অগোচরে শেহরীনার কাঁধে হাত রাখেন। শেহরীনার কী হলো কে জানে এ প্রথম মায়ের ভরসার হাত পেয়ে সে নিশিথা মনে মায়ের দিকে তাকায়। তবে মায়ের গালের একপাশ ঢেকে রাখা দেখে ভ্রু কুঁচকে আসে শেহরীনার। রূপালি বেগম চুপচাপ হাত সরিয়ে খেতে ইঙ্গিত দেন। শেহরীনা মাথা নুইয়ে থেকে স্বাভাবিক খাবারে মন দেয়। রূপালি বেগম তপ্ত শ্বাস ফেলে স্বামীর বদভ্যাস কে পরিবর্তন না করতে পেরে হতাশ। আজ ভার্সিটিতে ক্লাস তেমন ছিল না দেখে চলে এসেছে সে। মিনিট খানেক পর তাদের খাওয়া শেষ হলে; রূপালি বেগম নাসমাকে পরীক্ষার হলে যাওয়ার জন্য সাজিয়ে দিয়ে বইপত্র গুছিয়ে স্বামীর সঙ্গে পাঠিয়ে দেন।

_____
রাতে রূপালি বেগম নাসমাকে পড়িয়ে খাবার গরম করতে আসেন। নাজমুর সুস্থ এখন। দেশ স্বাধীন হওয়ায় সে খুব উত্তেজিত সেবা শ্রুতিমধুর দিয়ে ছাত্রজনতার সঙ্গ দেওয়ার জন্য। তাই সে প্রতিদিন দুপুরে চলে যায় আসে রাত দশটায়। ছেলেকে আসতে দেখে তিনি শরবত এগিয়ে দেন। তার মাঝে মাগরিবের পর পর পুনরায় দোকানে বসেছেন নাছির উদ্দিন। ঘরের ভেতরে এখন তারাই বিদ্যমান। শেহরীনা এই সুযোগ ভেবে মায়ের রুমে গেল। রূপালি বেগম মাথা বালিশে রাখা অবস্থায় চোখ বুঁজে আসেন। মাকে ঘুমন্ত ভেবে শেহরীনা ডেকে তোলার সাহস পেল না। মানুষটা এমনিতে ঘুমানোর বেশি সুযোগ পান না। এখন নাহয় ঘুমিয়ে নিক ঠিকভাবে। শেহরীনা ফিরে রুমে চলে এলো। ফোনটা হাতে নিতেই অবাক আজ সে সারাদিন‌ ফোন অফ করে রেখেছিল। ফোনটা চালু করতেই সারোয়ার এর কল দেখে তার মনটা পুনরায় খারাপ হয়ে যায়। তবে কল ব্যাক করে না সে। ফোনটা সেভাবে ফেলে রেখে শুয়ে পড়ে। খাবার পরে খাবে সবাই মিলে বসলে। আপাতত তার মনমেজাজ ঠিক হোক।
অন্যত্রে, সারোয়ার বিষয়টা খেয়াল করে উদাসীন হয়ে যায়। মেসেজ গিয়েছে দেখে ভেবেছিল শেহরীনা নিজ থেকে কল দেবে কিন্তু বিপরীত দিক ঘটায়। সেও কিছুটি বলল না। হয়ত এই তার কপালের লিখন। একটু একটু প্রণয়ের দিকে এগোছিল তাও এক নিমিত্তে সমাপ্ত এই বুঝি লিখা ছিল কপালে? সারোয়ার মৃদু হাসল। এই হাসি না সুখের, না খুশির। এই হাসি তাচ্ছিল্যের। সেও ফোনটা ফেলে রেখে জানালার সাথে যুক্ত বেলকনিতে গিয়ে চেয়ারে গাঁ হেলিয়ে দেয়। সুন্দর জোৎস্না ভরা চাঁদের আলোর দিকে তাকিয়ে থাকে। মন মাজারে নিজের প্রতি অভিযোগ তার। পণ করে নিল সঙ্গিনী করলে শেহরীনাকেই করবে কখনো আর বিয়ে শব্দের সাথে মন বাঁধবে না।
ভেবেই চোখ বুঁজে নেয়। মৃদু ঠান্ডা বৃষ্টিময় বাতাসের তালে সে ঘুমের মধ্যে পাড়ি জমাবে। আকাশ মেঘলা তবে বৃষ্টির সম্ভাবনা কম। বিধেয় আজ সারা রাত সে বাহিরে কাটাবে।

চলবে……..
(গল্পটা একদিন পর পর দিতে চাইছি। বাসায় একলা হাতে সব সামলে উঠতে কষ্ট হচ্ছে সে জন্য গল্প তিনটা একসাথে দেবো। তবে সময়টা বেশি লাগবে। আপনাদের খুশির স্বার্থেই গল্প নিয়মিত দেবো ইন শা আল্লাহ। ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)

আমার প্রথম ই-বুক গল্প বইটই এপ্যাসে প্রকাশ পাবে ১৬ই আগস্ট। #হৃদয়ের_সঙ্গমে_অভিমান দাম মাত্র ৪০ টাকা এর বেশি হবে না। সবাই পড়বেন রিভিউ দেবেন।
আমার নতুন গ্রুপ আপডেট জানতে জয়েন হয়ে নিন। লিঙ্ক
https://facebook.com/groups/469093775938467/
আমার পেজ লিঙ্ক (লাইক এন্ড ফলো প্লিজ!)
https://www.facebook.com/tasmihaalraiyan

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here