#ওয়েলকাম_টু_মাই_ডার্কসাইড
#পর্ব_২২
#সারিকা_হোসাইন
______
নির্ঘুম এক লম্বা রাত কোনো মতে এপাশ ওপাশ করে কাটিয়ে ভোরের আলো ফুটতেই ফজরের নামাজ শেষ করে জগিং এ বের হয়েছে রায়াফ।আজকাল তার কিছুই ভালো লাগছে না।দুশ্চিন্তা আর হতাশা চারদিক থেকে যেনো তাকে গ্রাস করতে চাইছে।চোখ বন্ধ করলেই বিভৎস কিছু পুরোনো স্মৃতি করুন ভাবে চোখের সামনে ভেসে উঠছে।সারাক্ষন বিভীষিকাময় ভয়ঙ্কর স্মৃতি গুলো তাড়া করে বেড়ায়।বেঁচে থেকেও যেনো সে মৃত আজ ।
নির্জন পার্ক টাতে একের পর এক চক্কর কেটে যাচ্ছে রায়াফ।চতুরপাশের জিনিস নিয়ে তার কোনো মাথা ব্যাথা নেই।সে নিজেকে নিয়েই ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে কঠিন ভাবে ।কতো সময় ধরে সে এভাবে দৌড়ে চলেছে তা নিজেও ঠাহর করতে পারছে না।চেয়েও যেনো পায়ের গতি রোধ করা যাচ্ছে না এমন অবস্থা।
হঠাৎই চিকন মিষ্টি মেয়েলি স্বরে পায়ের গতি শ্লথ হলো তার।ধীরে ধীরে রাস্তার পাশের বেঞ্চি টার কাছে গিয়ে শক্ত অবস্থানে দাঁড়ালো রায়াফ।পিছন ফিরে শ্যাম বর্ণের মায়াবী মুখশ্রী দেখে নিমিষেই সকল দুশ্চিন্তা মস্তিষ্ক থেকে দৌঁড়ে পালালো।
এতোক্ষন কোনো কিছু টের না পেলেও অসহ্য গরমে শরীরে জ্বালা ধরে গেলো মুহূর্তে।মাথার চুল নিংড়ে চিকচিকে মোটা দানার ঘাম চিবুক বেয়ে নেমে গ্রীবা দেশে বিলীন হচ্ছে।পানি পিপাসায় গলাটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে উঠলো।
রায়াফের এমন অদ্ভুত অবস্থা দেখে মেয়েটি সামান্য হেসে হাতে থাকা ওয়াটার বোতল এগিয়ে দিলো
“এভাবে উদ্ভ্রান্তের মতো কেউ দৌড়ায়?দেখেছেন সূর্যের তেজ কতো?”
কাঁপা কাঁপা হাতে মেয়েটির থেকে পানির বোতল নিয়ে ছোট করে থ্যাঙ্কস জানালো রায়াফ।এরপর আশেপাশে চোখ বুলিয়ে দেখলো সকাল বেলা যারা জগিংয়ে এসেছিলো তাদের কেউ নেই এখন আর।হাতের স্মার্ট ওয়াচ এর দিকে তাকাতেই চোখ ছানাবড়া হলো।
“আসলে চারপাশে খেয়াল না করেই আপন ভাবনায় দৌড়ে যাচ্ছি,বুঝতেই পারিনি এতোটা বেলা হয়ে গেছে।তা আপনি এই সময়ে এখানে কি করে?
নিচু কন্ঠে এনিকে প্রশ্ন টি করে বোতলের ছিপি খুলে ঢকঢক করে পানি গিলতে লাগলো রায়াফ।
এনি স্মিত হেসে বললো
“আপনার জন্য আসতে হলো মিস্টার।
“আমার জন্য মানে?
ভ্রু কুঞ্চন করে অবাকের স্বরে কথা টা শুধালো রায়াফ।
এনি আঙ্গুলি নির্দেশ করে বলে উঠলো
“ঐযে তিন তলা সিরামিক ইটের খয়েরি রঙা বিল্ডিং টা দেখছেন ওটা আমাদের বাড়ি।দুতলায় জানালা বরাবর যেই রুমটা দেখতে পাচ্ছেন ওইটা আমার বেডরুম।যখন আমি ডিউটি থেকে ফিরেছি তখন থেকে আপনাকে ফলো করে যাচ্ছি।তিন ঘন্টা ধরে আপনি বিরামহীন হেটে চলেছেন।”
এনির কথায় সামান্য লজ্জিত হলো রায়াফ।এমন ভাবেই দুশ্চিন্তায় মশগুল হয়ে ছিলো যে সে তিন ঘন্টা ধরে একই জায়গায় হেটে চলেছে!
“ইশ না জানি মেয়েটা আমাকে বেক্কল ভাবছে।
রায়াফ পানির বোতল ফিরিয়ে দিতে হাত বাড়িয়ে আমতা আমতা করে বলে উঠলো
“আহ আব আসলে হয়েছি কি….”
রায়াফকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে এনি বলে উঠলো
“দুশ্চিন্তা কখনোই কোনো কিছুর সমাধান করতে পারেনা।তাই আমি বলবো আজেবাজে চিন্তা না করে মনের জমানো কথা গুলো কাউকে শেয়ার করুন”
“আমার মনের কথা কাউকে শেয়ার করার মতো নয় মিস এনি”
আহত স্বরে কথাটি বলে আর এক মুহূর্ত সেখানে দাঁড়ালো না রায়াফ।
রায়াফের মাথা নিচু করে হনহন করে হেটে যাবার পানে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে এনি।
“মানুষটা খুবই নরম মনের।আর নরম হৃদয়ের মানুষের কষ্টই সবচেয়ে বেশি এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে।
________
কোমরে একটা সাদা টাওয়েল জড়িয়ে খোশ মেজাজে সিগারেট ফুকে চলেছে যুবরাজ।তাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে সবেই লম্বা একটা শাওয়ার নিয়ে এসেছে।ভালো করে না মোছার কারনে চুলের আগা গড়িয়ে টুপ টুপ করে জল ঝরে পড়ছে।সেদিকে অবশ্য তার কোনো ধ্যান নেই।তার ধ্যান জ্ঞান সব সামনে মেলে ধরা একটা স্থির চিত্রের উপর।নিজের ফোনের স্ক্রিনে রাজ্যের আবেদন ময়ী একটা ছবি বের করে বার বার চুমু খাচ্ছে আর হো হো করে হেসে উঠছে সে থেকে থেকে।চুমু খাওয়া শেষ হতেই ফোনটা সেন্টার টেবিলের উপর রাখলো।
“দাঁড়াও জানেমান নেংটু ঢেকে নেই”
শীষ বাজাতে বাজাতে দ্রুত হাতে একটা হাফপ্যান্ট পরে নিলো যুবরাজ।এরপর সেকেন্ড না গড়াতেই আবার ফোনের লক খুলে ছবিটি বের করে চুমু খেলো।
সদর দরজায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এমন অদ্ভুত মেজাজ বিগড়ানো ঘটনা পুরোটাই পাক্কা দশ মিনিট ধরে দেখে চলেছে রায়াফ।শেষে বিরক্ত হয়ে ড্রয়িং রুমে প্রবেশ করে নিজের গায়ের জগিং ড্রেস খুলতে খুলতে শুধালো
“আজ কাল নেশা পানি বেশি করছিস নাকি?নাকি মেন্টালি সিক হয়ে গেছিস?
রায়াফের তিরস্কার কানে তুললো না যুবরাজ।কারন সবাই জানে সে নির্লজ্জ্ব আর বেহায়া।রায়াফের কথাকে পাত্তা না দিয়ে আরো বার দুয়েক চুমু খেয়ে ফোনটা রেখে স্থির হয়ে বসলো যুবরাজ।
আজকে তার জীবনের সবচেয়ে বড় খুশির দিন।এমন খুশি কি চাইলেই হওয়া যায় নাকি?আজ তো তার জন্য ঈদের দিন।
এস ট্রে তে সিগারেট এর ফিল্টার ঠেসে ধরে নায়কীয় ভঙ্গিমায় সামনের এলোমেলো চুল গুলো ব্যাক ব্রাশ এর মত করে ঠেলে পিছনে সরালো।এরপর টেবিলে থাকা জুসের গ্লাস তুলে আয়েশী ভঙ্গিতে পায়ের উপর পা তুলে ছোট চুমুক দিয়ে রায়াফের দিকে তাকিয়ে কিটকিটিয়ে হেসে উঠলো।
ফ্রেস হবার জন্য উঠতে উঠতে রায়াফ শুধালো
“এ কোন অসভ্যতামি?
যুবরাজ গ্লাস ফেলে উঠে দাঁড়িয়ে আদর মাখা কন্ঠে বলে উঠলো
“আরে রেগে যাচ্ছিস কেনো ব্যটা?ঈদের দিনে কেউ রাগ করে?
“আজকে ঈদ?
ওয়াশরুমের দরজায় পা রেখে জিজ্ঞাসু ভঙ্গিতে যুবরাজের পানে দৃষ্টি পাতলো রায়াফ।
“হ্যা আজকে তো ঈদই।তুই জানিস না?
বিশাল কনফিডেন্স এর সহিত প্রশ্ন খানা ছুড়ে মারলো যুবরাজ।
শাওয়ার এর নব ঘুরাতে ঘুরাতে রায়াফ বলে উঠলো
“মেয়াদ উত্তীর্ণ গাজা কখন সেবন করেছিস তুই যুবরাজ?
“গাজা নয়রে বন্ধু গাজা নয়।বেহেশতী শরাব”
যুবরাজের মুখের উপর ধড়াস করে ওয়াশরুমের দরজা লাগিয়ে শাওয়ার এর শীতল জল রাশির নীচে গিয়ে চোখ বুঝে দাঁড়ালো রায়াফ।এই মুহূর্তে যুবরাজের হেঁয়ালি পনা একদম ভালো লাগছে না তার।
“যেখানে সেকেন্ডে সেকেন্ডে জীবনের রঙ বদলে যাচ্ছে সেখানে কিসের এতো আনন্দ উল্লাস?”
________
রান্না ঘরে আনমনে পায়েসের পাতিলে নাড়াচাড়া করে যাচ্ছেন মিসেস তনুজা।আজ তার কিছুই রান্না করতে ইচ্ছে করছে না।মাঝে মাঝে এই জীবন তার কাছে বিষাদ ঠেকে।মনে হয় সংসার ছেড়ে দূরে কোনো নির্জন একাকী জায়গায় চলে যেতে পারলে হয়তো মনের ভেতর এর আগ্নেয়গিরির লাভার মতো দগদগে আগুন টাকে নেভানো যেতো।
“কিন্তু স্বামী ,সন্তান ,সংসার ফেলে কোথায় যাবো আমি?
আর ভাবতে পারেন না তনুজা।হঠাৎই নেত্র বেয়ে অঝোর ধারায় জলের ফোয়ারা ঝরতে থাকে।চুলাটা কোনো মতে বন্ধ করে কেবিনেটে হেলান দিয়ে বসে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠেন তনুজা।নিজের নাড়ি ছেড়া ধন আদরের ছেলের মায়াবী মুখ খানা চোখে ভাসতেই বুক চাপড়ে হাই হুতাশ করে ডুকরে উঠেন তিনি।
“আমার বাচ্চা”!ওরে আমার বাবা রে!
“আমার বাচ্চাটার কি দোষ ছিলো রে আল্লাহ?কেউ কেনো আমার এতো সুন্দর বাচ্চাটাকে মেরে দিলো?আমার সহজ সরল ছোট বাচ্চাটা।হায়রে মাবুদ এই নিষ্ঠুরতা তুমি কিভাবে মেনে নিলে?সন্তানের লাশটা দেখার নসিব পর্যন্ত করলে না?
ধীরে ধীরে তনুজার কান্নার দমক ভারী হয়ে এলো।বুকের ব্যথাটা কঠিন ভাবে যন্ত্রনা দিতে লাগলো।সারা দুনিয়া ঘুরে উঠলো।মনে হচ্ছে এখনই হয়তো প্রাণ পাখিটা খাঁচা ছেড়ে বেরিয়ে ওই দূর গগনে ডানা মেলে উড়াল দেবে।সারা শরীর অসাড় হয়ে দৃষ্টি অন্ধকার হয়ে এলো।
রেজোয়ান চৌধুরী কেবলই বাজার সেরে বাসায় ফিরছেন।দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বার বার কলিং বেল টিপে যাচ্ছেন কিন্তু কেউ দরজা খুলছেন না।এবার ভদ্রলোক বেশ চিন্তিত হলেন।
“নিশ্চয়ই তনুজা ঘরের এক কোনে বসে কাঁদছে।ছেলেটার জন্মদিন এলেই তনুজা এমন করে।এসব দেখার জন্য আর কতকাল বাঁচিয়ে রাখবে খোদা?
এদিকে বার বার কলিং বেলের শব্দে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে রাজ্যের।সামান্য জাগ্রত হয়ে ভাবতে লাগে
“কেউ দরজা খুলছে না কেনো?বাসায় কি কেউ নেই নাকি?
হঠাৎই তার বালিশের নীচে ফোন খানা ভো ভো শব্দে কাঁপতে থাকে।
তড়িৎ গতিতে ফোন বের করে স্ক্রিনে” বাবা” লিখা দেখে বেশ অবাক হয় রাজ্য।
ফোন কেটে যাবার আগেই ঝটপট ফোন রিসিভ করে হ্যালো বলার আগেই রেজোয়ান চৌধুরীর বিচলিত কণ্ঠস্বর পাওয়া যায়।
“তাড়াতাড়ি দরজা টা খুলো।তোমার মা মনে হয় আজকেও কাঁদছে”
হঠাৎ ঘুম থেকে উঠার কারনে রাজ্যের ভোঁতা মস্তিষ্কে কিছুই ঢুকলো না।তবুও তড়িঘড়ি করে সিঁড়ি ডিঙিয়ে দরজা খুলে অবুঝের মতো দাঁড়িয়ে রইলো।
“সরে দাঁড়াও আমার সামনে থেকে”
কথা খানা বলে রাজ্যকে ঠেলে ড্রয়িং রুমে প্রবেশ করলেন রেজোয়ান চৌধুরী।
এরপর চিন্তিত স্বরে ডেকে উঠলেন
“তনুজা”
বেশ কয়েকবার ডেকেও তনুজার হদিস পাওয়া গেলো না।পায়েসের গন্ধে পুরো লিভিং রুম মম করছে।গন্ধেই বলে দিচ্ছে কেবল রান্নাটা হয়েছে। চৌকস রাজ্য দৌড়ে কিচেনে ঢুকে চারপাশে চোখ বুলাতেই দেখতে পায় কেবিনেটে হেলান দিয়ে চোখ বুঝে পরে আছেন তিনি।
সাথে সাথেই রাজ্য চিৎকার করে উঠে
“মা!
*********
যুবরাজকে সাথে নিয়ে আজকে রায়াফের হসপিটালের যাবার কথা মানথলি চেকআপের জন্য।কিছুদিন ধরেই হুটহাট কাশি হচ্ছে সাথে বুকে ব্যাথা।লাঙস এর চেকআপ করাটা বেশ জরুরি।
যুবরাজ আগেভাগে তৈরি হয়ে রায়াফ কে তাগাদা দিলো।
‘তাড়াতাড়ি কর।ওই রাস্তাটায় একটু বেলা হলেই জ্যাম লেগে যায়।গরম আমার একদম সহ্য হয়না এটা তুই ভালো করেই জানিস।
কথা গুলো বলে যুবরাজ চলে যেতেই দ্রুত হাতে নিজের কাপড় চোপর পাল্টে নিলো রায়াফ।আজকে সকাল থেকেই তার অদ্ভুত অনুভূতি হচ্চে।বেহুদা ভয় মনে বাসা বেঁধেছে।হৃদপিন্ড টা ধড়াস ধড়াস করে লাফিয়ে চলেছে সারাটাখন।
কিছুক্ষন পরেই কোনো রকম তৈরি হয়ে পার্কিং লটে যাবার উদ্দেশ্যে ঘর ছেড়ে বাইরে বেরুতে নিলেই আচমকা ফুলের টবের হোঁচট খেয়ে নখ উল্টে ফেললো রায়াফ।কাঁচা নখ ভেঙে তরতাজা লাল রক্ত বেরিয়ে এলো।ব্যাথায় চোখ মুখ কুঁচকে মেঝেতে বসে পড়লো সে।অজানা আতংকে না চাইতেও চোখ থেকে টসটসে অশ্রু দানা ঝরে পড়লো পায়ের উপর।
**********
গাড়ির স্টিয়ারিং এর উপর হাত রেখে উপুড় হয়ে চোখ বন্ধ করে বসে আছে যুবরাজ।পনেরো মিনিট ধরে জ্যমের মধ্যে পড়ে আছে তারা।আর সূর্যের ভালোবাসা দেখলে তো খুশিতে মরে যেতে ইচ্ছে করছে।নিজের সবটুকু উত্তাপ সযত্নে বিলিয়ে দিয়েছে ধরণীর মানুষের জন্য।
যুবরাজের পাশে বসে চারপাশে অস্থির দৃষ্টি বুলাচ্ছে রায়াফ।গরমে আর এসির গন্ধে তার পেট গুলিয়ে উঠছে বারবার।হঠাৎই পাশের কালো রঙের একটা প্রাইভেট কারে রাজ্যকে অসহায় ভঙ্গিতে বসে থাকতে দেখে বেশ অবাক হলো রায়াফ।
যুবরাজকে কিছু বলতে যাবে ওমনি জ্যাম ছুটে গেলো।
জ্যাম ছুটাতে আরো উদ্বিগ্নতা বাড়ল রায়াফের।
“কালো রঙের ল্যান্ড ক্রুইজার টাকে ফলো কর।”
কথাটা বলেই নিজের কপালের দুই পাশে আঙ্গুল দিয়ে সমানে স্লাইড করতে লাগলো রায়াফ!
“গাড়ি ফলো করতে যাবো কোন দুঃখে?যাচ্ছি তোর চেকআপ করাতে”
ভাবলেশহীন ভাবে কথাটা বলে ড্রাইভিং এ মনোযোগ দিলো যুবরাজ।
“গাড়িতে রাজ্যকে বিচলিত লাগলো।কোথায় যাচ্ছে দেখা দরকার”
“আমার বউকে দেখেছিস আগে বলবি না?
স্কেলেটরে পা চেপে হুড়হুর করে স্পিড বাড়ালো যুবরাজ।সকল গাড়ি ছাড়িয়ে কালো রঙের গাড়িটির পিছনে পিছনে ছুটতে লাগলো ফুল স্পিডে।
মিনিট দশেক পরেই স্কয়ার হসপিটালের গেটের সামনে এসে থমকে দাঁড়ালো যুবরাজের গাড়ি।
যুবরাজকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে হসপিটালের ভেতর দৌড়ে ছুটে চললো রায়াফ।
ওয়ার্ড বয় এর সহায়তায় গাড়ি থেকে নামিয়ে স্ট্রেচারে তোলা হচ্চে তনুজা চৌধুরী কে।
হঠাৎই সেখানে উদ্ভ্রান্তের মতো উপস্থিত হয় রায়াফ।সকল দ্বিধাদ্বন্দ্ব ভুলে প্রশ্ন করে বসে
“উনার কি হয়েছে?
অপরিচিত আগন্তুক এর মাঝে পরিচিত কন্ঠস্বর শুনে কেঁপে উঠেন বৃদ্ধ রেজোয়ান চৌধুরী ।
নিজের মাকে কোনো মতে স্ট্রেচারে তুলে দিয়ে রায়াফের দিকে গভীর অসহায় নেত্রে অপলক তাকিয়ে রয় রাজ্য।
#চলবে