#গল্প_ওয়েলকাম_টু_মাই_ডার্কসাইড
#পর্ব_৬
সারিকা_হোসাইন
******
অফিসে নিজের ডেস্কে বসে বসে ঝিমুচ্ছে রাজ্য।মাথার উপর ক্যাচ ক্যাচ শব্দে সিলিং ফ্যানটি ক্রমাগত ঘুরে চলেছে।সব কিছুই সে ঠাহর করতে পারছে কিন্তু চোখ মেলে দেখতে পারছে না।এমন এক অবস্থা যেনো কান সজাগ কিন্তু দৃষ্টি অবরোধ।শরীরের হঠাৎ এমন দুরবস্থা হবার কারন কোনো ভাবেই খুঁজে পাচ্ছে না সে।
হঠাৎই এক গাদা ফাইল টেবিলের উপর শব্দ করে বাড়ি মেরে রেখে তিরিক্ষী মেজাজে কটমট করতে করতে বেনজির আশফী বলে উঠলেন
“অফিস কি ঘুম পাড়ার জায়গা?এখানে টাকা দিয়ে সরকার কি বিশ্রামাগার খুলেছে?
খারুস কমান্ডারের গর্জনে কোনো মতে চোখ মেলে তাকালো রাজ্য।এরপর ধীর কন্ঠে বলে উঠলো
“আসলে স্যার আজকে হঠাৎই খুব খারাপ লাগছে তাই…..
রাজ্যকে কথা শেষ করতে না দিয়েই অগ্নিমূর্তি ধারণ করে বেনজির আশফী বলে উঠলেন
“দায়িত্ব নিয়েছো রাঘব বোয়াল ধরার কিন্তু জালে এখনো একটা চুনোপুঁটি পর্যন্ত তুলতে পারো নি।কিন্তু এক্সকিউজ দেবার বেলায় কথার বাহার সাজিয়ে বসে থাকো।
কমান্ডারের এমন মিস বিহেইভে রাজ্য মনে অনেকটাই কষ্ট পেয়ে মিইয়ে যাওয়া কন্ঠে বলে উঠলো
“স্যার আমার শরীর টা ভীষন দুর্বল আমার কিছুদিন ছুটি প্রয়োজন”
ছুটির কথা বলতেই রাগে লাল হয়ে গেলেন বেনজির আশফী।
রাজ্যকে উদ্দেশ্য করে গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠলেন
“ছুটি কি মামুর বাড়ির আবদার?চাইলে আর পেয়ে গেলে?
“ছুটি নিয়ে ঘরে বসে থাকলে রুহিতা চৌধুরীর কেইস সলভড করবে কে তোমার বাপ?
রাজ্য টলমল চোখে অপরাধীর ন্যায় বলে উঠলো
“স্যার আমি সত্যি বলছি।আমার ছুটির খুব প্রয়োজন।
রাজ্যকে কথা শেষ করতে না দিয়েই হাতের ইশারায় রাজ্যকে চুপ করতে বলে একটা পেপার এগিয়ে গজগজ করতে করতে বলে উঠলেন
“সিটি হাসপাতালে গিয়ে রুহিতা চৌধুরীর জবানবন্দি নিয়ে অজ্ঞাত লোকটির খুজ আজকের মধ্যে জানাবে আমাকে।উপর থেকে প্রেসার আছে।মেয়েটির বাবার ক্ষমতা তোমাকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর প্রয়োজন মনে করছি না।
এখন আমার সামনে থেকে যাও।তোমার চেহারা দেখতে ইচ্ছে করছে না।
কমান্ডারের এমন কুৎসিত জঘন্য আচরণে রাজ্যের চোখ থেকে গাল বেয়ে মুক্ত দানার মতো দুই ফোটা জল গড়িয়ে পড়লো।
দুই হাতের উল্টো পিঠে সেই জল মুছে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস মোবাইলে ক্যাপচার করে বেরিয়ে গেলো।
পার্কিং লটে এসে নিজের বাইকের সামনে দাঁড়িয়ে আছে রাজ্য।আর মনে মনে ভাবছে
“শরীরের যেই অবস্থা কোনো ভাবেই এই মুহূর্তে বাইক কন্ট্রোল করা সম্ভব না।তার চেয়ে একটা ক্যাব বুক করে যাওয়াই ভালো হবে।
আপন ভাবনা ভেবে অফিসের সামনের মেরিন রোডে গিয়ে দাঁড়ালো। কিছুক্ষন পায়চারি করেও সেখানে কোনো গাড়ি দেখতে পেলো না সে।এরপর উবার থেকে একটা ট্যাক্সি নিয়ে ছুটে চললো সিটি হসপিটালের উদ্দেশ্যে।
_________
ভাইয়া এতটা নিষ্ঠুর তুমি হইও না।যুবরাজ এই বাড়ি ছেড়ে চলে গেলে আমি দম বন্ধ হয়ে মারা যাবো।ও আমার অন্ধের জষ্ঠী।তোমার দুটো পায়ে পড়ি ভাইয়া আমাকে ছেলে হারা করো না।
সাদাফ শাহীরের ব্যাক্তিগত কক্ষে সামিনা সাদাফ শাহীরের হাতে পায়ে ধরে কেঁদে কেঁদে যুবরাজ কে এই বাড়ি থেকে বের করে না দেবার জন্য অনুরোধ করে যাচ্ছে সমানে।কিন্তু সাদাফ শাহীর তার এক কথায় অনড়।
“হয় যুবরাজ সারেন্ডার করবে না হয় এই বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যাবে।
সামিনা কাঁদতে কাঁদতে এক পর্যায়ে বলে উঠলেন―
যেহেতু তুমি তোমার সিদ্ধান্তে অনড়।তাহলে জেনে রেখো যুবরাজ এই বাড়িতে না থাকলে আমিও থাকবো না।যেই বাড়িতে আমার ছেলের জায়গা হবে না সেই বাড়িতে বসে বসে আমার আরাম আয়েশ করার কোনো প্রশ্নই আসে না।
সাদাফ শাহীর এবার নড়েচড়ে উঠলেন।সামিনার দিকে অসহায় দৃষ্টি প্রয়োগ করে বলে উঠলেন
“মাতৃ স্নেহে এতোটাই অন্ধ হয়ে গিয়েছিস তুই?কোনটা ভুল কোনটা সঠিক সেটাও বুঝতে পারছিস না?
সাদাফ শাহীরের এমন প্রশ্নবাণে ফ্লোর ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন সামিনা।এরপর নিজের চোখের গড়িয়ে পড়া জলের ধারা দুই হাতের করপুটে মুছে আহত কন্ঠে বলে উঠলেন―
“ওকে আমি আমার সব টুকু দিয়েই বড় করেছিলাম ভাইয়া।আমিই ছিলাম ওর বন্ধু আমিই ওর মা।ওর মনের জমানো সকল কথা নির্দ্বিধায় খুলে বলতো আমাকে।শুধু তাই নয় ও যখন নিউ ইয়র্ক হসপিটালে কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে জয়েন করে তখনো ও আমার আঁচল তলেই ছিলো।যুবরাজ কতোটা হাসিখুশি উচ্ছল প্রাণবন্ত সাদাসিধে ছিলো এটা নতুন করে তোমাকে বলার প্রয়োজন মনে করছি না।
হঠাৎই ছেলেটা তার ডাক্তারি পেশা ছেড়ে কেনো নিউ ইয়র্কে একজন ইতালিয়ান স্টুডেন্ট কে খুন করে পুলিশের কাছে সারেন্ডার না করে দেশে ফিরে এলো এটা আমিও জানিনা।আমি বারবার যুবরাজকে জিজ্ঞেস করেছি সেই ঘটনা।
এ আমাকে বারবার একই কথা বলেছে যে,
“আমি না মারলেও আইনের আওতায় আনলে ওর ফাঁসি হতো।কিন্তু এতো লম্বা কার্যক্রম আমার পছন্দ নয়।এজন্য আমি নিজেই ওকে শাস্তি দিয়েছি।আর এই যুবরাজ কাউকে শাস্তি দিয়েছে মানে সে শাস্তি পাওয়ার মতোই জঘন্য অপরাধ করেছে।
পরে আমি রায়াফের কাছে হাত জোড় করে কেঁদে কেটে এতোটুকুন জানতে পেরেছি যে,ছেলেটি কাউকে রেপ করেছিলো।
এখন তুমিই বলো ভাইয়া,তোমার সামনে একজন রেপিস্ট থাকলে তুমি তাকে কি করতে?
সাদাফ শাহীর কোনো কথা না বলে চুপচাপ ইজি চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে রইলেন।তিনি মনে করেন যতো যাই ঘটুক না কেনো!মানুষের আইনের ঊর্ধ্বে গিয়ে কাজ করা উচিত নয়।এই আদর্শ কে বুকে ধারণ করেই তিনি এতো গুলো দিন পার করে এসেছেন।
কিন্তু তার ছেলে এই আদর্শ লঙ্ঘন করেছে।শুধু লঙ্ঘন না ভয়ংকর ভাবে তার আদর্শ খর্ব করেছে।
সাদাফ শাহীর কে চুপচাপ থাকতে দেখে সামিনা আবার বলে উঠলেন
“আমি যুবরাজকে খুব ভালো করেই চিনি ভাইয়া ।অকারণে সে একটা পিঁপড়ে পর্যন্ত মারে নি কোনো দিন।ও মানুষ খুন করুক যা খুশি করুক তাতে আমার কোনো আসে যায় না।কারন আমি ওর মা।আর মা কখনো সন্তান ফেলে দিতে পারেনা হোক সে ফাঁসির কাষ্ঠের আসামি।
নিজের ছেলের জন্য এতো ভালোবাসা দেখাচ্ছিস তাহলে অন্যের ছেলের জন্য কেনো নয়?তোর ছেলে যাদের মারে তারাও তো কোনো না কোনো মায়ের সন্তান”
কথা গুলো বলে সাদাফ শাহীর সামিনার মুখের দিকে উত্তরের আশায় গভীর চোখে তাকিয়ে রইলেন।
এমন সময় হঠাৎই ব্যাগপত্র নিয়ে ধীর পায়ে কক্ষে প্রবেশ করলো যুবরাজ।
সামিনার দিকে তাকিয়ে ভারী কন্ঠে বলে উঠলো
“আমি চলে যাচ্ছি মা।বেঁচে থাকলে আবার দেখা হবে।
সামিনাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই গটগট পায়ে কক্ষ ত্যাগ করলো যুবরাজ।
এই দৃশ্য সামিনা সহ্য করতে না পেরে মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে অস্ফুট স্বরে যুবরাজের উদ্দেশ্যে হাত বাড়িয়ে বলে উঠলো
“যাসনা আমার মানিক”
সামিনার মৃদু আহত কন্ঠ যুবরাজের কর্ণে আঘাত করতে ব্যার্থ হলো।এক বারো পিছনে না ফিরে হনহন করে সামনের দিকে ছুটে চললো সে।
এদিকে অসহায় সামিনা জ্ঞান হারিয়ে মেঝেতে পড়ে রইলো।যুবরাজ তা জানতেও পারলো না।
_______
সিটি হসপিটাল এর রিশিপশনে দাঁড়িয়ে আছে রাজ্য।কোথায় থেকে কি তদন্ত শুরু করবে সেটারই খেই খুঁজে পাচ্ছেনা সে।রিশিপশনে বসে থাকা অল্প বয়সের সুন্দরী এক মেয়ে রাজ্যের দিকে এগিয়ে এসে বিনয়ের সাথে বলে উঠলো
“হ্যালো ম্যাম।আপনাকে অনেক সময় ধরে নোটিস করছি এখানে একা একা দাড়িয়ে আছেন।আপনার কি কোনো হেল্প প্রয়োজন?
মেয়েটির মিষ্টি সুশ্রী কন্ঠে মস্তিষ্ক সজাগ হলো রাজ্যের।নিজেকে কোনো রকমে ধাতস্থ করে ঝটপট ফোনের গ্যালারি থেকে রুহিতা চৌধুরীর ছবি দেখাতেই মেয়েটি কম্পিউটার ঘেঁটে মিষ্টি হেসে জানালো
“ম্যাম ছয় তলার চয়শত চৌদ্দ নম্বর রুমে গেলে আপনি রুহিতা চৌধুরী কে পাবেন”
রাজ্য সময় ব্যায় না করে মেয়েটিকে থ্যাঙ্কস জানিয়ে লিফট ধরে ছয় তলায় পৌঁছে গেলো।
নির্দিষ্ট কেবিনের সামনে কড়া সিকিউরিটির ব্যাবস্থা রাখা হয়েছে।রাজ্য কেবিনের সামনে দাঁড়াতেই দুজন সিকিউরিটি হাত দিয়ে বাঁধা প্রদান করলো।
রাজ্য লম্বা এক দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিজের আইডি কার্ড শো করতেই সিকিউরিটি দরজা ছেড়ে দাঁড়ালো।
রাজ্য ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখতে পেলো বেডে বালিশে হেলান দিয়ে বসে বসে মেয়েটি কাঁদছে।
রাজ্যকে দেখতে পেয়েই মেয়েটি কান্না থামিয়ে দ্রুত চোখ মুখ মুছে নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলো।
রাজ্য মুখে মিষ্টি হাসি ঝুলিয়ে মেয়েটির পাশের চেয়ার টেনে বসতে বসতে বলে উঠলো
রুহিতা তুমি আমার চেয়ে বয়সে অনেক ছোট,তোমাকে তুমি করে বললে কি তুমি রাগ করবে?
রুহিতা অবুঝের ন্যায় মলিন মুখে দুই পাশে মাথা নাড়িয়ে না বোধক উত্তর বোঝালো।
রাজ্য মেয়েটির মাথায় আলতো হাত বুলিয়ে স্মিত হাসলো।এরপর মেয়েটিকে স্বাভাবিক করতে কুশলাদি বিনিময় করলো।
মেয়েটি কিছটা স্বাভাবিক হতেই রাজ্য মেয়েটির হাত চেপে ধরে নরম কন্ঠে বলে উঠলো
“যেই লোকটি তোমার গলা চেপে ধরেছিলো তুমি তাকে চেনো?
হোটেলের বীভৎস স্মৃতি মনে পড়তেই রুহিতা কেঁপে উঠলো এবং সাথে সাথেই তার চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়লো।
রাজ্য রুহিতার দিকে একটি টিস্যু এগিয়ে দিয়ে আদুরে কন্ঠে বলে উঠলো―
“দেখো রুহিতা এভাবে মুখ বন্ধ করে রাখলে আমরা ক্রিমিনাল ধরতে পারবো না।আর আমরা ক্রিমিনাল না ধরতে পারলে তোমাদের মতো ছোট ছোট রুহিতারা প্রতিদিন বিপদের সম্মুখীন হবে।
এবার মুখ তুলে তাকালো রুহিতা।বার কয়েক গলা খাকরি দিয়ে ভাঙা ফ্যাসফ্যাসে কন্ঠে বলে উঠলো
“আমি আমার কলেজের ঈশান নামের একটি ছেলেকে প্রচন্ড ভালোবাসতাম।আর এই অজ্ঞাত লোকটি আমার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আমাকে চিঠির মাধ্যমে হোটেল পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছে।সে জোর করে আমাকে রেপ করতে চেয়েছে।ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে আমি তার চেহারা দেখে ফেলি এবং নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করি।কিন্তু তখনই লোকটি আমাকে গলা টিপে ধরে।
কেউ একজন আমাকে বাঁচানোর জন্য গুলি ছুড়েছিলো।লোকটি তখনই ঘটনা বেগতিক বুঝতে পেরে আমাকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছে।
এরপর আমার আর কিছুই মনে নেই।
লম্বা একটা সময় নিয়ে ধীরে ধীরে রুহিতা কথা গুলো শেষ করে পানি খাবার জন্য সাইডের টেবিলে হাত বাড়ালো।
রাজ্য পানির বোতলের ক্যাপ খুলে রুহিতার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে উঠলো
“গুলি টা আমি করেছি”
রুহিতা পানি খাওয়া বন্ধ করে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে রাজ্যের দিকে তাকাতেই রাজ্য একে একে সব ঘটনা খুলে বলে।
এরপর রাজ্য তার ফোন করে রুহিতাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে
“তোমাকে কিছু মানুষের ছবি দেখাবো এর মধ্যে যদি তোমাকে হ্যারেস করার লোকটি থাকে প্যানিক না হয়ে আমাকে লোকটির ছবি দেখাবে ঠিক আছে?
রুহিতা মাথা ঝাকিয়ে সায় দিতেই রাজ্য একে একে ওয়ান্টেড ক্রিমিনাল দের ছবি বের করে রুহিতা কে দেখাতে থাকে।
নয় জন ক্রিমিনাল এর ছবি দেখানো শেষ হতেই দশ নম্বরে এসে
ভয়ে রাজ্যকে খামচে ধরে রুহিতা।
রুহিতার আচরণে রাজ্য বুঝে যায় এটাই সেই কালপ্রিট।
রাজ্য কিছুক্ষণ মৌন থেকে রুহিতা কে বলে উঠলো
“একটা লাস্ট প্রশ্ন করবো তোমাকে,প্রশ্নটা হচ্ছে
ঈশান এখন কোথায় আছে তুমি জানো?
রুহিতা অশ্রুসিক্ত নয়নে মাথা দুলিয়ে বলে উঠলো
“এই ঘটনার আরো এক সপ্তাহ আগে থেকে ঈশানকে আমি কলেজে দেখিনি।”
ঘটনার যেনো দুইয়ে দুইয়ে চার কিছুতেই মিলছে না।নিজের ভাবনা ফেলে রাজ্য রুহিতাকে আশস্ত করে একজন নার্স ডেকে কেবিন থেকে বেরিয়ে এলো।
_________
নিজের কেনা বিশাল এপার্টমেন্ট এ একটি ছবির সামনে বসে বসে একের পর এক সিগারেট ফুকে চলেছে যুবরাজ।
সিগারেটের স্বাদ ও আজকাল বিষাক্ত তিতকুটে লাগছে তার কাছে।মুখের তিতকুটে ভাব দূর করতে সিগারেট ফেলে ফ্রিজ থেকে একটা বিয়ারের ক্যান বের করে ছিপি খুলে চুমুক বসালো।প্রথম চুমুকেই পানসে স্বাদে চোখ মুখ কুঁচকে এলো যুবরাজের।
সব কিছুই আজকে তার কাছে বেস্বাদ, তিতকুটে লাগছে।
যুবরাজের এই তিতকুটে জীবনে রাজ্যর বড্ড প্রয়োজন।একমাত্র রাজ্যই পারবে সকল তিক্ততা দূর করে মধু ছড়াতে।
নিজেকে স্বাভাবিক করার জন্যে রুম থেকে বেরিয়ে থাই গ্লাসের দরজা ঠেলে খোলা বেকনিতে এসে চেয়ার টেনে ঠেস দিয়ে বসে দ্বিতীয় চুমুক বসালো যুবরাজ।
বার কয়েক চুমুক দিয়ে রাগে ফুঁসে উঠে হাতের করপুটে দুমড়ে মুচড়ে ধরলো বিয়ারের ক্যানটি।
উপচে পড়া বিয়ারে যুবরাজের গায়ের পোশাক ভিজে গেলো।
সেদিকে খেয়াল না দিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে যুবরাজ বলে উঠলো
“তোর হালুয়া আমি টাইট করে ফেলবো বেনজির।তুই আমার বউয়ের চোখের জল ঝড়িয়েছিস।
তোর হাত ভেঙে যদি আমি গলায় না ঝুলিয়েছি তবে আমার নাম যুবরাজ নয়।
#চলবে