#রং(Wrong)
#পর্বঃ৯
#লেখনিতেঃতন্নী_তনু
একটু বড়দের বিষয় লেখা আছে। খুব সামান্য।
সিনথিয়া,
জানি তুমি ভালো নেই!আমার জন্য তোমার জীবন দুর্বিষহ! কোনো কিছু আমার হাতে ছিলো না।আমি নিরুপায়!সেদিন পারসোনাল লাইফ নিয়ে অনেক কিছু বলার ছিলো কিন্তু বলা হয়ে ওঠেনি। সব সত্যে জানার জন্যে আমাদের মুখোমুখি হওয়া দরকার!কিন্তু সে উপায় আর নেই।তবে তুমি চাইলে হতেও পারে।আমি কোথায় আছি জানিনা!শোনো পৃথিবীর সকল তথ্য আমার কানে আসে।কিন্তু আমার খবর কারো কাছে পৌঁছায় না। এই চিঠি তোমার হাতে পৌঁছানো মানে আমার জীবন তোমার সাহায্য বাঁচতে পারে। আর আমার বাঁচা মানে তোমার মুক্তি!
আমি একটা জায়গায় বন্দি আছি। যারা আমাকে বন্দি রেখেছে তারা একটি গ্রুপ। তারা শুধু আমাকে একা বন্দি করেনি।আমার মতো আরও অনেকেই আছে। তাদের একটা সৎ উদ্দেশ্যে আমাদের বন্দি রেখেছেন। তবে সৎ উদ্দেশ্য সফল না হলে হয়তো তারা নিজেদের বাঁচাতে আমাদের ক্ষতি করবেন। বলতে গেলে তারা নিরুপায় হয়ে হয়তো আমাদের প্রাণ নিবেন। তাদের সবার জীবন সম্পর্কে তুমি শোনোঃ
দশ বছর আগে এই গ্রুপের কারো বাবা,কারো চাচা কারো ভাই’কে তুলে নেয়া হয়। পলিটিক্স ইস্যু!তুমি বুঝবেনা। তারা এখন কোথায় কিভাবে আছে কেউ জানেন না। আমাদের দেশ সম্পর্কে তুমি জানো সব-ই। দেশের পুলিশ সম্পর্কেও জানো। গত দশ বছর আগে এই গ্রুপের বাবা-ভাই দের মিথ্যা অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। দশ বছরে কেস লড়তে লড়তে তাঁদের পরিবারের জীবন শেষ। তবুও তারা ন্যায় বিচার পায়নি।তাদের মধ্যে কারো মা-শয্যাশয়ী। মৃত্যুর আগে ছেলে’কে শেষ বারের মতো দেখতে চান একজন মা। কারো স্ত্রী অসুস্থ। কারো মেয়ের বিয়ে কারোর ছেলের বিয়ে। বাবা মানে কি তুমি তো বোঝো?এই সকল সময়ে “বাবা” নামক মানুষটি’কে একজন সন্তান কতোটা চায়! বোঝ? যদি মৃত্যু হতো তারা মেনে নিতেন।তবে আমৃত্য বাবাহীন জীবন কতো যন্ত্রণার আমরা সবাই বুঝি। তারা সকলে চান পরিবারে দশ বছর আগের হারিয়ে যাওয়া মানুষটি ফিরুক! মৃত্যুর আগে অন্তত ফিরুক। আর মৃত্যু হলে তাদের লাশ অথবা হার অন্তত পরিবারের কাছে পাঠানো হোক। তারা ঐজন্যে জীবনের শেষ চেষ্টায় নেমেছেন।এইবার তাদের প্ল্যান শোনো! তারা আমাদের কোনো প্রমাণ না রেখে তুলে এনে বন্দি রেখেছেন। তারা এই সকল ছেলে মেয়েদের জীবনের বিনিময়ে তাদের প্রিয়জন ফিরে পাওয়ার দাবী করবেন।এটাই আমাদের আটক করার উদ্দেশ্য ছিলো। কিন্তু এই দাবী”তে তারা মাঠে নামলেই উপরমহল ইরফাদ সিনহা”র হাতে সকল ভার দিয়ে দিবেন। আর ওনার মতো চতুর পুলিশ অফিসার যে ভাবেই হোক এর জাল ভেদ করে সবাই’কে মুক্ত করবেন। এটা বিষয়টি তারা পরে বুঝতে পারেন।তাদের প্ল্যান কাজ করবেনা। সাথে নিজেরাও ফেঁসে যাবেন।কেস এমনিতেই জটিল মোর নিয়েছে। ইরফাদ সিনহা চুলছেড়া অভিজান চালাচ্ছেন। খুব শিঘ্রই হয়তো এই গ্রুপ অবধি পৌঁছে জাবেন।এই মূহুর্তে আমাদের পাওয়ার ক্লু পেলেই ইরফাদ সিনহা প্ল্যান মাফিক আসবেন। আর তার সাথে পেরে ওঠা দুস্কর। এই গ্রুপের সদস্য হয়তো নিজেদের বাঁচাতে আমাদের মেরে ফেলবেন।পুলিশ আর ঐ গ্রুপের চক্করে মাঝখান থেকে আমাদের মতো মানুষগুলোর জীবন রিস্কে। তারা এখন অন্য কিছু চাইছেন। গ্রুপের সকল সদস্য মিলে প্ল্যান করেছেন-তারা চাচ্ছেন! ইরফাদ সিনহাকে কিছুদিনের জন্যে লুকিয়ে রাখতে। তার জীবনের বিনিময়ে তাদের প্রিয়জনের মুক্তি দাবী করবেন। কারণ ইরফাদ সিনহা উপরমহলের অনেক কর্মকর্তার চোখের মণি।তিনি দেশের মূল্যবান সম্পদ।তার উপর ইরফাদ সিনহার বাবা ছিলেন কর্ণেল।তাকে বন্দি করার বিনিময়ে বহু সাধারণ প্রাণ বেঁচে যাবে।কিন্তু সিনহা”কে তুলে আনা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। অনেকবার চেষ্টা করার পরও তারা ব্যর্থ।তাদের এখন সহযোগিতা দরকার।
সিনথিয়া তুমি না!দেশের জন্য,মানবসেবা’ করার জন্য সদা প্রস্তুত। মানব সেবায় তুমি জীবন উৎসর্গ করতে চাইতে? সময় এসেছে সিনথিয়া। তোমার জীবন উৎসর্গ করতে হবে না। একটু সহযোগিতা করলে কত মানুষের প্রাণ বেঁচে যাবে তুমি ভাবতেও পারছো না। প্ল্যান শোনো!
কয়েকদিনের মধ্যে আমি বাসায় ফোন দিয়ে বলবো আমি দেশের বাইরে। বিপদের কারণে কন্ট্রাক্ট করতে পারিনি। তারা কেস তুলে নিবে। মানে তুমি মুক্ত!তবে তোমাকে সকল সাধারণ মানুষের জীবন রক্ষার্থে শুধু একটা ছোট্ট কাজ করে দিতে হবে।গোপন সূত্রে জানা গেছে ইরফাদ সিনহা তোমার পক্ষে আছেন। তাই ছাড়া পাওয়ার পর তদন্তের জন্যে অবশ্যেই তোমাকে তার পারসোনাল নাম্বার দিবেন।তুমি ঐখান থেকে বের হওয়ার পর- এই গ্রুপ থেকে জানানো তারিখে রাতের বেলা “এসপি”কে ফোন দিবে। আর এই গ্রুপের দেয়া লোকেশনে এসে বলবে তুমি বিপদে পড়েছো। তিনি মেয়েদের খুব সম্মান করেন। দীর্ঘ বিশ্বাস তিনি আসবেন। আর তোমাকে ওখান থেকে সরিয়ে আনা হবে। তিনি তোমার ফোনের লোকেশন ধরে আসবেন। এই ক্ষুদ্র কাজটি ইরফাদ সিনহা খুব সহজ মনে করে একা করবেন।তার ডিপার্টমেন্টে কেউ জানবেন না।আর এটাই প্রয়োজন। তাকে ধরার জন্যে সহজ রাস্তা প্রয়োজন। এই রকম একটা সহজ চাল ছাড়া তাকে ধরা প্রায় অসম্ভব। চাইলে অন্যে মেয়েদের দিয়ে করানো যাবে কিন্তু এসপি”র নম্বরে আননোন পারসোন কল দিলেই তিনি সন্দেহ করবেন। একমাত্র তুমি হলে এই প্ল্যান নিঁখুত হবে। আর সহজ,নিঁখুত,মসৃণ প্ল্যান না হলে তাকে কেউ ধরতে পারবে না। সিনথিয়া তুমি এইদিকে সহযোগিতা করে আবার এইটা ভেবোনা! তুমি এসপির ক্ষতি করছো।এই গ্রুপের কেউ ইরফাদ সিনহার কোনো ক্ষতি করবে না। আর একজন এসপি”র ক্ষতি করা সহজ কিছু না। সাধারণ মানুষ আর এসপি”র জীবন এক নয়। ওনার চুল পরিমাণ ক্ষতি হবে না। শুধু তার বিনিময়ে আটককৃত মানুষেরা ছাড়া পাবে। পরিবার পাবে। মৃত্যুশয্যাশয়ী মা তার সন্তানকে দেখতে পারবে। সাথে আমার সাথে আটকে থাকা সকল ভাই-বোন মুক্তি পাবে।
তুমি একটা বিষয় খেয়াল করেছো? আটককৃত আসামী”কে চব্বিশ ঘন্টার বেশী সময় ধরে আটকে রাখা যায় না। কিন্তু তারা তোমাকে আটকে রেখেছে। পুলিশকে যতো সহজ ভাবছো তত সহজ নয়। তারা স্বার্থের জন্যে অনেক কিছু করে। তুমি চাইলেও এখন মুক্তি পাবেনা। তোমার মুক্তির পথ এই একটাই।তুমি চাইলেই সাহায্য করতে পারো। দেখো অনেক মানুষের জীবন তোমার হাতে। বাকিটা তোমার ইচ্ছা। যদি সাহায্য না করতে পারো তাহলে আবার পুলিশদের জীবন-বৃত্তান্ত বোলো না। এতে এখানের সবার জীবন শেষ হয়ে যাবে। সেজন্য দায়ী থাকবে তুমি!(গল্পের লেখিকা তন্নী তনু। সবাইকে “Tonni-Tonu” এই পেইজে গল্প পড়ার অনুরোধ করা হলো।)
~~রাফি
আকাশ থেকে ঝড়ে পড়া ঝুম বৃষ্টিতে যখন ঠান্ডা, শান্ত,নিরব,পরিবেশ। এই সময়ে কেউ কাঁথার নিচে উষ্ণতা খুঁজছে কেউ বা ধোঁয়া ওঠা চা পান করে উত্তাপ চাইছে।এদিকে বরফ সিক্ত বৃষ্টির মধ্য ছাতা ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা এতোক্ষণের শান্ত পুলিশ অফিসারের চোখ মুখ আগুনের শিখার মতো জ্বলে উঠছে।রাগের উত্তাপে নরম হাত হয়ে উঠছে আগুনে পুড়িয়ে দক্ষহাতে গড়ে তোলা যেনো কামারের কোনো লৌহবস্তু। নিমিষেই যেনো লৌহশক্ত হাত দিয়ে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিবে সবকিছু। আর রাগের উত্তাপের পরিমাণ তাপমাত্রায় কনভার্ট করলে হিটএলার্ট জারি হয়ে যাবে। রাফি সামনে না থাকায় তাকে কল্পনায় সাজিয়ে দক্ত দাঁতের পেষনে মূহুর্তেই কয়েকবার পিষে ফেলে ইরফাদ তারপর দাঁতে কেটে কেটে অস্ফুট স্বরে বলে,
— “রাসকেল।”
____________
ফেরার পথ…
সিনথিয়া ঘুমাচ্ছে।মেডিসিনের প্রভাব আছে । ইরফাদ গাড়ির লাইট অন করে।চলন্ত গাড়িতে দোল খেয়ে এলোপাথাড়ি বাতাসের দরুন হেলে পড়া ছোট গাছের মতো সামনের দিকে নুয়ে পড়ছে সিনথিয়া। ইরফাদ গাড়ি থামায়।এই মূহুর্তে সিনথিয়া স্বাভাবিক না হলে গাড়ি চালানো সম্ভব না। তবে যেভাবে ঝুকে আছে সিনথিয়া, যেকোনো সময় শরীরের ভার রাখতে না পেরে সিটবেল্ট ছুটে যেতে পারে। যে কোনো সময় আঘাত লাগতে পারে। ঘুমন্ত আবস্থায় কোনো নারীকে স্পর্শ করা আপাতদৃষ্টিতে খারাপ দেখালেও কর্মক্ষেত্রে বিপদের সময় প্রত্যেক পুলিশ-আর্মিরসহ আরও সকল নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে কাছে নারী-পুরুষ সমান।গত মাসে উঁচু ব্রীজ থেকে পানিতে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করতে যাওয়া এক নারীকে ইরফাদ পাজাকোলে তোলে। মানুষটি তো নারী-ই ছিলো। পুলিশের কর্মক্ষেত্রে বিপদের সময় নারী-পুরুষের একটিই পরিচয়-মানুষ। “নারী” সে তো সম্মানের।সেই দৃষ্টিকোণ থেকে ইরফাদ সিনথিয়ার দুবাহু ধরে সিটে ভালোভাবে বসিয়ে দেয়। তখনই বিপদ সংকেত!কয়েকটা শপিংমল মল ঘুরে ইরফাদ সিনথিয়ার জন্যে জিপারসহ কুর্তি খুঁজে এনেছিলো। শুধু মাত্র সার্চ করতে যেনো সুবিধা হয়।কিন্তু এই মূহুর্তে জিপার’টাই যেনো কাল হয়ে দাঁড়ালো!কুর্তির মাঝখান দিয়ে লাগানো জিপার পুরোটাই খোলা! জামার একাংশ হেলে পড়েছে হাতের উপর!সাথে নেই ওড়না।ইরফাদ তৎক্ষণাৎ দৃষ্টি সরায়। সিটের চারপাশে ওড়না খুঁজে। কিন্তু খুঁজে পায় না। সিনথিয়ার ঘুম ভাঙার পরবর্তী সময়ের কথা কল্পনার জগতে একবার অনুভব করে ইরফাদ যেনো ভেতর থেকে ঘেমে উঠছে। কোমরের তলাতে শিরশিরিয়ে উঠে মাথা ঝিম ধরে আসে সংকোচ, আত্মসম্মান ধূলিসাৎ হওয়ার চিন্তায়। ঘুম ছুটতে বেশী সময় লাগবে না সিনথিয়ার।যদি সিনথিয়া উঠে নিজেকে এই অবস্থায় দেখে!
ভাবতেই কূল পায় না ইরফাদ। কে! কি- ভাবলো এ নিয়ে কোনোদিন মাথাব্যাথা না থাকলে আজ সে মানতে পারছে না। তার দায়িত্বে থাকা ঘুমন্ত মেয়েটি ভরসা,বিশ্বাস করে এই ঝড়বৃষ্টির রাতে তার পাশে নিশ্চিন্তে বসেছিলো।একটু পর যখন উঠে এই অবস্থা দেখবে-পৃথিবীর সকল পুরুষের প্রতি তার বিশ্বাস উঠে যাবে।এই দক্ষ হাতে অনেক অসাধ্য ইরফাদ সাধন করলেও- কোনো নারীর বক্ষস্থলের মাঝখানের ছুটে যাওয়া জিপার, হাত দিয়ে স্পর্শ করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। টেনে তোলা তো বহুদূর। যদি ঘুম থেকে উঠে মেয়েটি-চিরকালের মতো তাকে ভুল বোঝে তাও মেনে নিবে। তবুও জিপার লাগাতে পারবে না। ইরফাদ ছটফট করতে থাকে। এখন ই যদি মেয়েটি চোখ খোলে। ইসস সে আর ভাবতে পারছে না। এত অসহ্য অসহনীয় খারাপ তার কোনোদিন লাগেনি। স্ট্রিয়ারিং এর গোল চাকার উপর মাথা ঠেকায় ইরফাদ। হঠাৎ ই মাথায় একটা বিষয় ধরা দেয়।ইরফাদ সুভা”র নম্বরে কল দেয় তারপর গর্জে উঠে বলে,
— আই’ল কিল ইউ!
–এতো রেগে যাচ্ছো কেনো?
— জিপার ওপেন কেনো?
–কি বলো! এমন হওয়ার তো কথা ছিলো না।
ইরফাদ রাগে কেঁপে কেঁপে ওঠে। পাশে থাকা মেয়েটির তন্দ্রা ছুটলে বিপদ। তাই যথাসম্ভব দাঁতে পিষ্ট করে কথা বলে,
–মিথ্যা বলিসনা সুভা! নিজের স্বার্থের জন্যে এতো নিচে নামিস না।
–আমি কি করলাম?
–এতো কিছুর পরও আমি তোকে বিশ্বাস করেছিলাম।ভেবেছিলাম বেস্ট ফ্রেন্ড তো! বিশ্বাস ভাঙবে না। তোর সাথে আজকের পর আর কোনো সম্পর্ক নেই।
–একটা মেয়ের জন্য তুমি আমার সাথে এমন করছো?
–আর ইউ ম্যাড!তুই কি করেছিস ভেবে দেখেছিস!আমি একজন পুরুষ, মেয়েটি ঘুম থেকে উঠে যখন নিজেকে এমন অবস্থায় দেখবে-আমাকে কি ভাববে? আমার কথা বাদ। মেয়েটি উঠে নিজেকে এই অবস্থায় দেখলে- লজ্জায়, অনুশোচনায় ধুকে ধুকে মরবে। একজন নারী হয়ে নারীর সম্মানের কথা ভাবলিনা?
–প্রথমত একটা মেয়ের “মনে করাতে” ইরফাদ এর মতো পুলিশ অফিসারের একবিন্দু কিছু আসবে যাবে না।এইটুকু জিপার খোলা তাতে কি এমন হয়েছে?
মাথার চুল পাঁচ আঙ্গুলে খামছে ধরে ইরফাদ। রাগে,ক্রোধে হাসফাস করতে করতে বলে,
–উফফ!পাগল হয়ে যাবো আমি।
— এতো হাইপার হচ্ছো কেনো?ঐ মেয়ে তোমাকে কি ভাববে? বরং ঘুম থেকে উঠে মেয়েটি ধন্য হয়ে যাবে। “এসপি” যেখানে পুরো পৃথিবীকে এভোয়েড করে। সেখানে তাকে অন্তত একপলক দেখেছে। মেয়েটির জীবন ধন্য!ধন্য!
–সবাই কি তোর মতো… সবাই তোর মতো নিজেকে সস্তা মনে করে না।
— তোমার জন্যে আমি আরও সস্তা হতে পারবো।
— তুই নারী জাতির কলঙ্ক। কেনো করলি এমন?
–আমার আত্মার শান্তির জন্য। রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমানোর জন্যে। তুমি কি কারণে মেয়েদের পছন্দ করোনা জানি। ঐ কারণে আজ পর্যন্ত কোনো নারীর ভালোবাসা তুমি গ্রহণ করোনি। আমারটাও না। তবে তোমার জন্যে আমি আজও সিঙ্গেল।পুরো শহরের পুরুষ যে মেয়ের জন্যে পাগল -তুমি তাকে রিজেক্ট করেছো।সে মেয়েটি এখনো তোমার অপেক্ষায় আছে। তুমি এতো সহজে অন্যকে গ্রহণ করবে-আমি তো মানতে পারবো না। তোমার মনে আছে!একটা সময় তুমি বলতে-“যদি কোনোদিন বিয়ে করি- শ্যামবর্ণের মেয়েকে করবো”।ঐ মেয়েটিতো শ্যামবতী। তোমার পারসোনাল গাড়িতে পাশের সীটে কোনোদিন বাইরের কাউকেই বসাও না।বেষ্ট ফ্রেন্ড হিসেবেও কখনো আমাকে বসাও নি। তাহলে ও'”কে কেনো বসিয়েছো? আমার সন্দেহ হলো ও তোমার প্রেমিকা কি না? যে বাধা ভেদ করে দশ বছরেও তোমার মন পেলাম না।সে মন অন্য কাউকে দিয়ে বসলে কি না?তোমাকে জিজ্ঞেস করলে তো তুমি স্বীকার করবে না। আর আমি জানতেও পারবো না।তাই জিপারটা খোলা রেখেছি। যদি তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা”র সম্পর্ক থাকতো তাহলে তুমি এতোটা রাগ দেখাতে না। এতো হাইপার হতে না।
— তোর কি মনে হয়, গার্লফ্রেন্ড হলে আমি চেয়ে চেয়ে দেখতাম?
— আমি তা বলিনি। তুমি কেমন তা আমার চেয়ে ভালো কেউ জানে না।তুমি তখনো রিয়েক্ট করতে তবে এতোটা না।আমি তো তোমাকে চিনি। ইরফাদ তোমার গলা কাঁপছে…গার্লফ্রেন্ড হলে তোমার মতো মানুষের গলা কাঁপতো না।এটাই বুঝতে চেয়েছিলাম আমি।ঐজন্যেই এই প্ল্যানটুকু করা।
–গার্লফ্রেন্ড হলেও এমন রিয়েক্ট-ই করতাম!
–কখনো না!মেয়েটি যদি গার্লফ্রেন্ড হতো জিপার খোলা থাকলেই বা কি? একজন সৎ, আদর্শবান,ভদ্র,সভ্য ছেলের পার্টনার অবশ্যেই এতোটুকু বিশ্বাস রাখবে “ইরফাদ এই কাজ করেনি”।সে ঘুম থেকে উঠে যদি দেখে শরীরের অর্ধাংশ বেরিয়ে আছে। তবুও বিশ্বাস করবে না- যে তুমি এই কাজ করেছো। তুমি কেমন তা পুরো দেশবাসী জানেন। তোমার রিয়েক্ট বলে দিচ্ছে মেয়েটি অনেক দূরের!আমি নিশ্চিন্ত এবার! দেখো মেয়েটির ওড়না পিছনে ফেলে এসেছি। ওড়না তুলে একটু কষ্ট করে ঢেকে দাও…
–আর জিপার কে লাগাবে!
–জিপার লাগানোর কি দরকার!ঐ মেয়ে কি ভাবলো না ভাবলো তাতে তোমার কি? আর না হলে একটু লাগিয়ে দাও!সে ধৈন্য হয়ে যাবে সিউর। নাকি পারবে না?তোমার মতো এত বড় পুলিশ অফিসার আর ঐটুকু জিপার লাগানোর ক্ষমতা নাই?
–আজ যদি জিপার আমাকে লাগাতেই হয়। আল্লাহ”র কসম করে বলছি! আমি ওকে বিয়ে করে তবেই বাড়ি ফিরবো।
–ইরফাদ!এমন বোলোনা। আমি এখন-ই আসছি। প্লিজ গাড়ি থামাও। প্লিজ……
চলবে?
ভুল থাকতে পারে। আর মতামত জানাবেন।