#নীলের_পরি (২৮)
হাফসা হন্তদন্ত হয়ে পরির রুমে এল। পরি উপর হয়ে শুয়ে টিভি দেখছিল। হাফসা কে রাগী মুডে রুমে প্রবেশ করতে দেখেই পরি উঠে বসল। হাফসার দিকে তাকিয়ে একবার আগাগোড়া দেখে নিল। কিন্ত কিছুই বুঝে উঠতে পারল না।
পরি হালকা ভয় নিয়ে জিজ্ঞাসা করল,”কি হয়েছে?”
হাফসা পরির দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বলল,”তোর জামাই এর জন্য আমার জীবন টা তেনা তেনা হয়ে গেল।”
হাফসার কথা শুনে পরি ভ্যাবলা হয়ে গেল। ইনোসেন্ট ফেস করে বলল,”কে কার জামাই? আমি পিউর সিঙ্গেল।”
হাফসা কিছু বলতে যাবে তার আগেই নীল এসে হাজির।
নীল হাফসা কে উদ্দেশ্যে করে বলল,”হাফসা জিহান সহ সবাই কে থিয়েটার রুমে নিয়ে যা। একটু পর ই মুভি শুরু হবে।”
হাফসা কিছু না বলে চলে গেল। বাইরে বেরিয়ে ভাইয়ের চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করল। শেষমেষ নিজেই বোকা হয়ে গেল। ভাইয়ের চৌদ্দ গোষ্ঠীর মধ্যে একজন তো সে নিজেও তাই না। কথাটা বুঝতে পেরে আনমনে হাসতে লাগল।
আজকাল উল্টো পাল্টা কথা বলছে সে!
হাফসা চলে যেতেই নীল রুম লক করে দিল। পরি ভয়ার্ত চোখে তাকাল। যেখানে নীল নিজেই পরির জন্য আলাদা রুম দিয়েছে। সেহেতু উল্টো পাল্টা কিছু হওয়ার চান্স জিরো। তবু ও কেন জানি পরি ভয় পাচ্ছে । নীল পরি কে একপলক দেখে বলল,”তুমি টোটালি সিঙ্গেল তাই না?”
পরি কিছু বলল না। তার ভাবতেই কেমন লাগছে। নীল শুনে নিয়েছে! নীল হঠাৎ পরির কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়ল।
নীলের স্পর্শ পরির গায়ে লাগতেই সে যেন জমে গেল। হাত পা অবশ হয়ে যাচ্ছে। বুকের ভেতর কেমন ধীম ধীম শব্দ।
নীল কোল থেকে মাথা না সরিয়েই বলল,”হুম বউ কে আলাদা রুমে রাখলে তো এমন ই হওয়ার কথা। বউ নিজেকে সিঙ্গেল বলেই দাবি করবে। যাই হোক একটা চিহ্ন তো বসিয়ে দেওয়া উচিত।”
পরি কোনো রকম নিজেকে সামলে নিয়ে বলল,”মানে?”
নীল বাঁকা হেসে উঠে বসল। তারপর পরির কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল,”মানে কোনো একটা কিছু করা তো দরকার। একটা লাভ বাইট বসিয়ে দিলে কেমন হয়?”
পরি ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে আছে। মুখ দিয়ে কোনো শব্দ ই বের হচ্ছে না। পরির এমন অবস্থা দেখে নীল ফিক করে হেসে দিল। নীল কে হাসতে দেখে পরি বোকা বনে গেল।
নীল কোনো মতে হাসি থামিয়ে বলল,”এতোভয় পাও কেন?”
তারপর আবার ভ্রু কুঁচকে নিয়ে বলল,”এই তুমি কি আমার বাচ্চাদের ভবিষ্যত অন্ধকার করার প্ল্যান করেছ নাকি? আয় হায় আমার বাচ্চা গুলো তো এখনি আসার জন্য কাঁদছে। পরি তুমি কেমন মাম্মা? চলো আমাদের বেবি দের নিয়ে আসি।”
নীলের কথার আগা মাথা খুঁজে পেল না পরি। পরি ভাবলেশহীনভাবে বলল,”আমাদের বাচ্চা মানে? কোথায় কবে কেমন করে?”
পরির কথাতে নীল হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেল। হাসতে হাসতেই বলল,”মানে টা হলো আমাদের বাচ্চা আসার জন্য কাঁদছে। তো মাম্মা পাপা হিসেবে আমাদের উচিত ওদের এই পৃথিবীতে আনার ব্যবস্থা করা।”
নীলের কথা শুনে পরি কয়েক সেকেন্ড নীলের দিকে তাকিয়ে থাকল। কিছুক্ষণ পর যখন পরি নীলের কথার মানে বুঝল।
তখন পরি নীলের মুখে বালিশ ছুঁড়ে ওয়াশরুমের দিকে দৌড় দিল। নীল পরির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হাসতে লাগল।কিছু সময় পর হাসি থামিয়ে বলল,”পরি তাড়াতাড়ি থিয়েটার রুমে চলে এসো।”
নীল আর কিছু না বলে হাসতে হাসতে বাইরে চলে আসল।
রুম থেকে বের হতেই রোজিনা বেগমের মুখোমুখি হলো।
রোজিনা বেগম কে দেখে নীল দমে গেল। রোজিনা বেগম ছেলেকে এক পলক দেখে নিলেন। তারপর মিষ্টি হেসে বললেন,”কি হয়েছে বাবা? এত খুশি কেন তুই?”
নীল বোকা হেসে গল্প সাজাতে লাগল। মায়ের কাছে কি ঐসব কথা বলা যায়? মোটেও না। ছেলে কে বিব্রত বোধ করতে দেখে রোজিনা বেগম মৃদু হাসলেন। কিছু বুঝলেন কি না তা ওনার মুখ দেখে বোঝা গেল না। নীল কিছু একটা বলতে চাচ্ছিল ঠিক তখনি রোজিনা বেগম থামিয়ে দিলেন।
রোজিনা বেগম বললেন ,”আর কিছু বলতে হবে না।
আপনি যেতে পারেন শাহজাদা।”
মায়ের কথাতে নীল মুচকি হাসল। মা কে জড়িয়ে ধরে বলল,” হুম আম্মি জান আপনার আজ্ঞা শিরোধার্য।”
ছেলে আর মা খুনসুটি করে নিজেরাই হাসতে লাগল।
হানিফ আহমেদ পাশ দিয়েই যাচ্ছিলেন। মা আর ছেলে কে হাসতে দেখে দাঁড়িয়ে গেলেন।
নীল বাবা কে দেখে বলল,”আব্বু তুমি আমাদের মা ছেলের মাঝে হিংসে করো না প্লিজ। আমার দশটা না পাঁচ টা একটা মাত্র আম্মু।”
ছেলের কথা শুনে হানিফ আহমেদ মৃদু হাসলেন। তারপর চোখ মুখ কুঁচকে রসিকতার সুরে বললেন,”তা কি বলছিস আরেক টা আম্মু লাগবে? আমার কিন্তু সমস্যা নেই। আমি দু পায়ে রাজি।”
হানিফ আহমেদের কথা শুনে রোজিনা বেগম রাগে ফুঁসতে লাগলেন। রাগী চোখে তাকিয়ে স্থান ত্যাগ করলেন। হানিফ আহমেদ অসহায় দৃষ্টি তে চেয়ে বললেন,” এই রে ক্ষেপেছে, আজ আমার অবস্থা শেষ। আমি যাই ,দেখি কিছু করতে পারি কি না। দোয়া করিস বাবা। যা রাগ ম্যাডামের।”
মা বাবার এমন হাজারো খুনসুটি ভালোবাসা দেখে নীল অভ্যস্ত। মা বাবার কান্ডে নীল হাসতে লাগল তারপর আপন মনে বলল,”আমার বউ টা যে কবে আগের মতো হবে।
একদম মিষ্টি পরি। যাকে দেখলেই ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে হয়।
ছোট সময়ে কেমন বাচ্চামো টাই না করেছে। আর এখনো তো বাচ্চা পুরো। শুধু কিছু সময়ের জন্য অনুভূতিটা চাপা পরে আছে। আর মাত্র কয়েকটা দিন তারপর পরি পুরোপুরি আমার।”
কথা গুলো ভাবতেই নীলের চোখের কোণে কিঞ্চিত পানি চিকচিক করে আবার দমে গেল। ভালোবাসা বুঝি এমন ই হয়? শান্ত মন কে অশান্ত করার জন্যে প্রিয় মানুষটার একপলক চাহনি ই যথেষ্ট। নীল উড়ছে ভালোবাসার দহনে। আর নীল চায় জীবনের শেষ সময় অবধি এভাবেই পরির সাথে কাটিয়ে দিতে। পরি কি তখন খুব লজ্জা পেয়েছে? পরির লজ্জা মাখা মুখ টা নীলের খুব দেখতে ইচ্ছে করছে।
কি যে লাগছিল তখন। পুরো আকাশ বাতাস যেন নীলের সর্বাংশে লুটপাট চালাতে লাগল। নীল আপন মনে হাসতে লাগল আর পুনরায় নিজেকে বলল,”পুরো পাগল হয়ে যাচ্ছি। পরির প্রেমে পাগল।”
অনিক থিয়েটার রুমে তার লাগাতে ব্যস্ত। জীবনে কখনো এই তার ফার লাগায় নি সে। বাবার আদরের দুলাল কি না।
তবে পড়াশোনা আর বিজন্যাস বেশ ভালো বুঝে। অনিক দু হাতে দু রকমের তার নিয়ে ভাবছে কোনটা লাগাবে। কিন্তু বুঝে উঠতে পারছে না। হাফসা থিয়েটার রুমে এসে অনিক এর এই অবস্থা দেখে হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে। হাফসার হাসির শব্দ গাঢ় হতেই অনিক পেছন ঘোরে তাকাল। পেছন ঘুরতেই হাফসা চুপ হয়ে যায়। অনিক বিরক্তি নিয়ে বলল,”এভাবে না হেসে পারলে হেল্প কর।”
হাফসা ভাব নিয়ে বলল,”কোনো ব্যাপার ই না এটা। সরুন আমি লাগিয়ে দিচ্ছি।”
অনিক ভ্রু কুঁচকে বলল,”আর ইউ সিউর?”
হাফসা মুখ বাঁকিয়ে বলল,”তো? মেয়ে বলে ছোট করে দেখছেন নাকি?”
অনিক সরে যেতেই হাফসা তার নিয়ে নাড়াচাড়া করতে লাগল। দশ মিনিট বসে থেকে ও কোনো কুল কিনারা খুঁজে পেল না। অনিক তাড়া দিয়ে বলল,”হয়েছে?”
হাফসা পেছন ঘুরে মেকি হাসি দিয়ে বলল,”এই তো আর একটু।”
কিন্তু আর ও পাঁচ মিনিট বসে থেকে ও কোনো কিছু করতে পারল না হাফসা। হাফসা উঠে দাঁড়াতেই অনিক হাসতে লাগল। বেচারা হাফসা গোমড়া মুখ করে রইল। জিহান থিয়েটার রুমে আসতেই অনিক বলল,”দেখো তো তার টা লাগাতে পারছি না।”
জিহান দেখছি বলে তারের কাছে চলে গেল। দুই মিনিটের মধ্যে জিহান তার লাগিয়ে দিল। অনিক ভ্রু নাচাতেই
হাফসা বোকা হাসিতে অধর রাঙিয়েছে। হাফসা কোনো মতে কাজ দেখিয়ে নিজেকে সরিয়ে নিল। অনিক বিষয়টা বুঝতে পেরে মৃদু হাসছে। তারপর জিহন কে নিয়ে বাকি কাজ গুলো সেরে ফেলল।
থিয়েটার রুমে পর পর পাঁচ সিটের চার সেট সোফা আছে।
কিন্তু সবাই একটু স্পেস নিয়ে বসেছে। প্রথম টায় নিশাত , রনি , জিহান বসেছে। দ্বিতীয় টায় অনিক ,রিহান আর হাফসা বসেছে। তৃতীয় টায় রিনি , তিন্নি আর লিমন
সবার শেষের সোফাতে নীল আর পরি বসেছে। পরি হাফসার সাথে বসতে গিয়েছিল কিন্তু নীল হাত টেনে ধরেছিল। যার কারণে পরি দমে গিয়ে নীলের সাথেই বসেছে। হরর মুভি নাম শুনতেই পরির বুক ধুকপুকানি শুরু হয়ে গেছে। দিনের বেলা হলে ও চলত এখন তো রাত ১১ টা বাজে। আজকে পরি শেষ! পরি বার বার ঢোক গিলছে।
নীল পরির অবস্থা বুঝতে পেরে মুচকি হাসছে। অনিক রিমোর্ট ক্লিক করতেই স্ক্রিনে বড়ো বড়ো করে ভেসে এল
”The wrong house”
এই নাম দেখেই পরির আত্মা কেঁপে উঠল। ইংলিশ হরর মুভি গুলো অত্যন্ত ভয়াভয়। পরি হরর মুভি দেখলেই কেঁদে ভাসিয়ে দেয়। হাফসা পপকর্ণ হাতে হৈ হৈ করছে।হাফসার সাথে সবাই তাল মেলাচ্ছে। কিন্তু পরি একদম শান্ত। আর নীল পরির দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে। মুভি অন হতেই সবাই চুপ হয়ে গেল। ভয়ানক সুর ভেসে আসতেই পরির পা কাঁপছে। পরি শুকনো ঢোক গিলে খানিকটা নীলের কাছে এসে বসল। নীল মিটমিটিয়ে হাসছে। কারণ সে তো এটাই চায়। হরর টোন কানে আসতেই পরি কেঁপে কেঁপে উঠছে।
মুভি চলছে। সবাই মুভি দেখতে ব্যস্ত। হঠাৎ স্ক্রিনে ভয়ানক চেহারা বড়ো করে ভেসে উঠতেই পরি নীল কে দুহাতে আঁকড়ে ধরল। মনে হচ্ছে ঐ ভয়ানক চেহারা টা একদম চোখের সামনে এসে পড়েছে। এই বুঝি গ লা টি পে দিবে। কি ভয়ংকর! পরি কাঁপছে। নীল পরি কে এক হাতে জড়িয়ে নিল। একদম নিজের সাথে মিশিয়ে নিল। পরি ভরসা পেয়ে নীল কে শক্ত করে জড়িয়ে আছে। মনে হচ্ছে ও নীলের বুকের ভেতর ঢুকে যাবে। নীল মৃদু হাসছে। আলতো হাতে পরির হাত ধরে রেখেছে। এতক্ষণ কোনো ধ্যান না থাকলে ও নীলের স্পর্শ পেয়ে পরির ধ্যান ফিরল। পরি জড়সড়ো হয়ে নীলের থেকে সরে গেল। নীল ভ্রুঁ কুচকে নিল। পরি সরে যেতেই হ্যাঁচকা টানে মেয়েটিকে নিজের কাছে নিয়ে এল।
পরির হার্ট বিট বেড়ে গেছে। নীল পরির কানের কাছে মুখ নিয়ে ঘোর লাগানো কণ্ঠে বলল,”এতোদূরে কেন যাচ্ছ? কাছে আসতে লজ্জা পাচ্ছ! আজ তো আমি।”
নীল পুরোটা শেষ করার আগেই পরি নীলের মুখ আটকে নিল। নীল পরির নাকে ঠোঁট ছুঁয়ে দিল। পরি কেঁপে উঠে নীল কে আকড়ে ধরেছে। খানিক বাদেই আবার দু হাত দিয়ে সরিয়ে দিতে চাচ্ছে কিন্তু নীল পরি কে যেতে দিচ্ছে না। বার বার পরি কে নিজের সিথে মিশিয়ে নিচ্ছে। পরির কোমর জড়িয়ে ধরে নীল নিজের কোলে বসিয়ে দিল। নীল পরির খোলা চুল গুলো গলার এক সাইডে দিয়ে ঘাড়ে চুমু বসিয়ে দেয়। প্রিয় পুরুষের উষ্ণ ঠোঁটের স্পর্শে পরি বার বার কেঁপে উঠছে। নীল কে দূরে সরাতে চেয়ে ও পারছে না। নীল পরির কোমর জড়িয়ে ধরে বসে আছে। পরি কিছু বলতে ও পারছে না। যদি একটু কিছু বলে তো এই আশে পাশের জনগন এটাকে মুভি বানিয়ে দিবে। হরর মুভির থেকে ও নীলের মারাত্মক অনুভূতি গুলো পরি কে বেশি ভয় পাইয়ে দিচ্ছে।
পুরো ১ঘন্টা ৪০ মিনিট নীলের অনুভূতি চলতে থাকল। পরি বিরক্তি মাখা দৃষ্টি তে তাকালেই নীল দুষ্টু হাসছে। এতে শুকনো ঢোক গিলে নীলের খুনশুটি গুলো মেনে নিল। এই নীল আজকাল লজ্জাহীন হয়ে যাচ্ছে! এ যে ভয়ঙ্কর বিষয়।
রাত তিনটা বাজে কিন্তু পরির চোখে ঘুম নেই। এই নীল আজকাল অসভ্য হয়ে যাচ্ছে। সবার সামনে ছি, যদি কেউ দেখে নিত? পরির ইচ্ছে করছে নীল কে দু চার টা কিল বসিয়ে দিতে। এখন প্রেম দেখাতে আসছেন ওনি! গত তিনটে বছর কতটা জ্বলেছে পরি।একটি বার কি খবর নিয়েছে? সব কিছু ভাবতে ভাবতে আবার পরিবারের কথা মনে পড়ছে পরির। সবাই কি খুব রেগে আছে? পরির কান্না পাচ্ছে। কিন্তু তবু নিজেকে সমলানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। সে ভাবছে,”আচ্ছা আম্মু,আব্বু কি আমাকে আর নীল কে মেনে নিবে না? আমি কি সেই সব মেয়েদেল তালিকায় পড়ে গেলাম যারা বাবা মা কে কষ্ট দিয়ে চলে আসে।”
পরি এই সব ভাবতে ভাবতে অঝোরে কান্না করে দিল।
ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজ সে অসহায়। প্রিয় মানুষটা থাকতে ও পরি নিজের অস্তিত্ব অনুভব করছে না। একটি মেয়ে শুধুমাত্র ভালোবাসার মানুষটা কে নিয়ে সম্পূর্ণ হতে পারে না। যে বাবা মা এত ভালোবাসা দিয়ে বড়ো করেছেন।
ভালো থাকার জন্য তাদের কে ও যে প্রয়োজন। পরির ইচ্ছে করছে সব কিছু ছেড়ে চলে যেতে। কিন্তু নীল? এই নীল কে নিয়ে কত স্বপ্ন ছিল পরির। কতোরাত নির্ঘুম কাটিয়েছে শুধুমাত্র নীলের জন্য। নীল কে ছাড়া অন্য কারো সাথে নিজেকে কল্পনা করা টা ও অসম্ভব। আর এত দিন তো দোটানার মধ্যে ছিল। কিন্তু নীল তো এখন তার স্বামী। নীলের অস্তিত্ব পরির সঙ্গে বেঁধে গেছে।নীল কে ছাড়া সম্ভব নয়। যদি নীল কে ছাড়তে হয় তো আ ত্ম হ ত্যা নামক মহা পাপ কে বেঁচে নেওয়া টাই হবে উত্তম। আর নীল কে পেয়ে ও পরি ভালো নেই। পরিবার কে ছাড়া পরি ভালো থাকতে পারবে না। আচ্ছা নীল তো বলেছে সব ঠিক করে দিবে। হ্যাঁ নীল পারবে সব কিছু ঠিক ঠাক করে দিতে। যদি না পারে?
তাহলে কি করবে পরি? এ কেমন দোটানার মাঝে ফেলেছেন সৃষ্টিকর্তা। নীল নাকি পরিবার? কোনটা বেঁছে নিবে সে? আর আ ত্মহ ত্যা কি হতে পারে সব কিছুর সমাধান? পরি ভাবতে পারছে না। নিজেকে পাগল পাগল লাগছে। পৃথিবীর সব থেকে অসহায় মুহৃর্ত বুঝি এটাই? পরিবার আর ভালোবাসার মানুষের মধ্যে যে কোনো একজন কে বেছে নেওয়া আদৌ কি সম্ভব? আচ্ছা নীল তো এখন ওর অংশ, ওর স্বামী। তাহলে নীল ও তো ওর পরিবারের অংশ। পরি আর ভাবতে পারছে না। বুকের ভেতর তীব্র যন্ত্রণা হচ্ছে।
এই মুহূর্তে বেঁচে থাকা টাই সব থেকে কষ্টকর আর কঠিন কাজ মনে হচ্ছে। মৃত্যু কে বেশি শান্তি মনে হচ্ছে। তবে কি মানুষ আ ত্ম হ ত্যা নামক মহা পাপ কে বেঁচে নেয় শুধুমাত্র দোটানায় থাকার কারণে? কোনো একজন কে বেছে নেওয়ার যুদ্ধে হেরে যাওয়ার কারণেই করে নেয় সর্বোচ্চ পাপ? হয়ত হ্যাঁ। কিংবা না।
⛔ আ ত্ম হ ত্যা কখনোই কোনো কিছুর সমাধান নয়।
চলবে….
ফাতেমা তুজ নৌশি