ধূসর_রঙের_প্রজাপতি #ফাতেমা_তুজ #part_5

0
159

#ধূসর_রঙের_প্রজাপতি
#ফাতেমা_তুজ
#part_5

মিরপুর ১০ নং গোলচত্বরে বাস থামতেই ফোঁস করে দম ফেলল ঝিল। এতো এতো জ্যামের কারনে দেড় ঘন্টা লেগে গেল। মাত্র ১০ কিলোমিটার অথচ সময় লাগলো দেড় ঘন্টা। বাংলাদেশের যানজট কি কখনোই কাটবে না?ঝিল গোলচত্বরে দাঁড়িয়ে ফোন লাগালো মৌনতা কে। মৌনতা ফোন রিসিভ করেই বকবক শুরু করে দিলো।
ঝিল ক্লান্ত হয়ে পরেছে। মৌনতা এক দমে হাজার কথা বলে বলল
_ কি রে আছিস নাকি গেছিস? কথা বলিস না কেন ?

_ মৌন তুই কথা বললে কাউকে কথা বলতে দিস?

_ উফফ স্যরি। যাই হোক কোথায় তুই আর কতো দেরি হবে?

ঝিল চারদিকে তাকিয়ে মুখ টা ঢেকে নিয়ে বলল
_ গোলচত্বরে এসে পরেছি এবার প্লিজ তাড়াতাড়ি আয়।
আমি হাঁপিয়ে গেছি , ক্লান্ত লাগছে , মনে হচ্ছে মাথা ঘুরে যাবে।

মৌন উচ্চশব্দে বলল
_ এই না নাহহ ঝিলি একটু পর অজ্ঞান হো প্লিজ।
আমি এসে নিই তারপর , দু মিনিট লাগবে জাস্ট।

ঝিল ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো। এই মেয়েটা এমন পাগল কেন? কেউ কি ইচ্ছে করে অজ্ঞান হয়!

মিনিট পাঁচেক পর ই মৌনতা কে দেখতে পেল ঝিল।
মৌনতা হাত দিয়ে ইশারা করছে ওকে। ঝিল মলিন হাসলো, সত্যি খুব খারাপ লাগছে ওর।

মৌনতা রোড পেরিয়ে এসে ঝিল কে জড়িয়ে ধরলো। ঝিল এক হাতে পিঠ চাপরে বলল
_ প্লিজ এবার নিয়ে যাহ আমাকে আম ট্রায়ার্ড।

মৌনতা মেকি হাসি দিয়ে বলল
_ বিয়ের আসর থেকে ছয় বার পালিয়ে আসা মেয়ে নাকি ট্রায়ার্ড! আচ্ছা বিয়ে টা করে নিলে কিহ বা হয়?
আঙ্কেল রা ও নিশ্চিত হয়ে যাবে আর তুই ওহ ঝামেলা মুক্ত হবি।

ঝিল ভেঙ্চি কেটে বলল
_ নো ওয়ে। আমি এই পৃথিবীকে আর ও অনেক জানতে চাই। বিয়ে মানেই এক বস্তা প্যারা। স্বাধীনতা বলতে কিছু ই থাকবে না। সকলের মন জোগাতে গিয়ে পা পিছলে অকালে ম’রার শখ নেই আমার।

ঝিলের কথা তে হো হো করে হেসে উঠলো মৌনতা। ঝিল বাঁকা চোখে তাকিয়ে বলল
_ তুই বিয়ে টা করে নে আমি না হয় তোর শশুর বাড়িতে নেক্সট বার পালিয়ে যাবো। নতুন এক্সপেরিয়েন্স ও হবে তোর শশুর বাড়ি ও ঘোরা হবে।

মৌনতা আবার খিল খিল করে হাসলো। ঝিল বিরক্তি নিয়ে বলল
_ প্লিজ এখন চল, আমার খিদে পেয়েছে।

মৌনতা হাসি থামিয়ে ঝিল কে নিয়ে নিজের বাসাতে গেল। বিশাল এক কম্পার্টমেন্ট এর সেভেন ফ্লোর এ মৌনতাদের বাসা। মৌনতা লম্বা হেসে বলল
_ লিফ্ট নষ্ট হয়ে গেছে।

ঝিলের চোখ দুটো রসগোল্লার মতো হয়ে গেল। মৌনতা হো হো করে হেসে উঠলো।
_ মজা করছিলাম।

ঝিল বোকার মতো তাকিয়ে রইলো। এই মেয়েটা ওকে টেনশন দিয়েই মেরে ফেলবে।

*

অভিনব ফেসবুক স্ক্রল করছে। বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সি খুঁজে খুঁজে দেখছে। সুন্দরবন ঘুরতে হলে সাধারনত ট্রাভেল এজেন্সির সাথে ই যেতে হয়। সেখানে একা যাওয়ার সাধারন পারমিশন নেই। তবে কেউ চাইলে সম্পূর্ন ঝুঁকি নিয়ে পারমিশন নিতে পারে সেটা ভিন্ন বিষয়। তবে ট্রাভেল এজেন্সি ছাড়া সকাল বেলা খুলনা থেকে মংলা হয়ে সুন্দরবন ঘুরে সন্ধ্যায় ফিরে আসা যায়। সেক্ষেত্রে পর্যটন কেন্দ্র গুলো তেমন উপভোগ করা যায় না। তাছাড়া ভ্রমন গাইড ছাড়া সুন্দরবন ঘুরতে যাওয়া প্রচন্ড রিক্সের। তার জন্য সবথেকে সুবিধা জনক আর বেস্ট উপায় হচ্ছে ট্রাভেল কোম্পানির প্যাকেজ নিয়ে ঘুরতে যাওয়া।

অভিনব গত বছর ও সুন্দরবন গিয়েছিল। তবে সেটা ভারত থেকে, আর ভারতের সুন্দর বনের পর্যটন কেন্দ্র গুলো ওর কাছে কেমন আর্টিফিশিয়াল লেগেছে যেন।
প্রকৃতির সেরা সান্নিধ্য পায় নি ওহ তার উপর সেটা মাত্র ছিলো এক দিনের ট্যুর।

সাধারনত সুন্দরবন ট্যুর এর বুকিং কনফার্ম করা হয় অনেক দিন আগে থেকেই। আসন ফাঁকা থাকা সাপেক্ষে যাত্রার তারিখের কমপক্ষে সাত দিন আগে পর্যন্ত বুকিং কনফার্ম করা হয়। বুকিং মানে কনফার্মেশন মানি জমা দিয়ে আসন নিশ্চিত করা। বুকিং কনফার্ম করতে হলে ডেডলাইনের মধ্যে টাকা জমা দিতে হয়। চাইল্ড পলেসি ও রয়েছে : সেখানে 3 বছর বয়স অব্দি শিশুদের আসন ফ্রি , 3+ থেকে 6 বছরের শিশুদের জন্য ছাড় আছে।
সেক্ষেত্রে বাচ্চাদের বাসের সিট ও শিপে কেবিন শেয়ার করতে হবে।

কিন্তু অভিনবর কাছে এতো দিন অপেক্ষা করার মতো সময় নেই। ওহ চায় দ্রুত প্রকৃতির সাথে একটু মিতালি গড়তে।

অভিনব বেশ চিন্তিত হয়ে পরলো। বেশ কয়েকটা ট্রাভেল এজেন্সি দেখলো অভিনব। সেখানে একটা ট্রাভেল এজেন্সি পেয়ে গেলো, যেটা পরশু ই যাবে সুন্দরবন আর এটাতে ইমার্জেন্সি এন্ট্রি নেওয়া হচ্ছে।
তারা নিজেদের নতুন উদোক্তা বলে দাবি করেছে।
তাদের বিশেষত্ব হচ্ছে ট্রাভেলার দের দ্রুত সুযোগ সুবিধা দেওয়া। যেহেতু অন্য এজেন্সি গুলো তে যেতে গেলে লেট হবে তাই অভিনব ঠিক করলো এটাতেই যাবে।
এজেন্সির সমস্ত ডিটেলস চেইক করে দেখলো অভিনব।
এখানে এন্ট্রির জন্য টাকা আগে পেমেন্ট করতে হবে । তাও আবার সাধারনের থেকে বেশি পেমেন্ট দিতে হবে।
অভিনব সে দিকে পাত্তা দিলো না। টাকা যত লাগুক সমস্যা নেই ওর । টাকা দেওয়ার বিভিন্ন পদ্ধতি আছে। স্বশরীরে কিংবা বিভিন্ন কার্ডের মাধ্যমে আসন কনফার্ম করা যেতে পারে। অভিনব নিজের কার্ড এর মাধ্যমে টাকা পেমেন্ট করে আসন কনফার্ম করে নিলো।
তারপর বাংলাদেশের সুন্দরবন নিয়ে একটু রিসার্চ করলো। এটা অভিনবর স্বভাব যেখানে যাবে তা সম্পর্ক আগে ধারনা নিয়ে নিবে। এটা প্রতি টা ট্রাভেলার দের ই করা উচিত।

*

রাত প্রায় এগারোটা ঝিল সাধারণত এই সময়ে ঘুমে বিভোর হয়ে থাকে। তবে আজ ওর চোখে ঘুম নেই। শরীর ক্লান্ত হলে ও মনে শান্তি মিলছে না। মৌনতার বাসা টা ওর কাছে তেমন পছন্দ হয় নি। বিশেষ করে বাড়ির সর্ব বয়স্ক সদস্য মৌনতার দাদি । বৃদ্ধা ঝিল কে তেমন পছন্দ করেন নি। ঝিল আসতেই কেমন চোখে তাকিয়ে ছিলেন। আগের যুগের মানুষের মনোভাব যেমন হয়। ঝিল লম্বা করে শ্বাস ফেলল। মৌনতার বাসা তে থাকতে ইচ্ছে হচ্ছে না ওর। কোথাও একটা যেতে পারলে ভালো লাগতো। কোনো রিলেটিভের বাসাতে যাওয়া যাবে না। তাহলে কয়েক টা দিনের জন্য যাবে টা কোথায়? ঝিলের মুখ টা বাংলার পাঁচের মতো হয়ে আছে দেখে মৌনতা ঝিল কে বাহু দ্বারা ধাক্কা দিলো। ঝিল আনমনেই উত্তর করলো
_ হুহহ

_ কি হইছে তোর? মন খারাপ নাকি? আরে জানু মন খারাপ করিস না। এমন তো নয় বাসা থেকে পালিয়ে আসার জন্য তোকে সবাই বকা দিবে। ইসসস সবাই কতো ভালো। আমার বাসাতে যদি জানে আমি রিলেশনে আছি তাহলেই শেষ। পা ভেঙে বাসায় ফেলে রাখবে।

মৌনতার কোনো কথাই ঝিলের কান অব্দি পৌছালো না।
মৌনতা একাই বক বক করতে করতে এক পর্যায়ে থেমে গেল। ঝিলের দিকে সরু চোখে তাকিয়ে রইলো। ঝিলের চোখ দুটো মাথার উপর ভন ভন করে ঘোরা সিলিং এর দিকে। এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেন সিলিং পর্যবেক্ষন করার গুরু দায়িত্ব টা শুধু ওর। মৌনতা ফোঁস করে দম ফেলল। ঝিল কে কোনো কালেই বুঝে উঠতে পারে নি ওহ।দুজনের প্রায় চার বছরের পরিচয়। কলেজের ফার্স্ট ডে থেকেই বেশ জমে উঠেছে ওদের বন্ধুত্ব। তবে ঝিল পুরো ঝিলের মতোই , যার গভীরতা মাপার জন্য গভীর এক চোখের প্রয়োজন। পরিবারের আদরে বড় হওয়া মেয়েটার মানসিকতা খুব ভালো হলে ও কিছু বিষয়ের প্রতি গভীর খোব ওর। তার একটা হলো বিয়ে , সবাই বিয়ের স্বপ্ন দেখলে ও মেয়েটা সেই স্বপ্ন দেখে না।
হয়তো নিজ চোখে সংসার জীবন দেখা হয় নি বলেই।
বোধ হওয়া থেকেই তো মা কে দেখতে পায় নি। পুরো পুরুষ ফ্যামিলি তে বেড়ে উঠা একটা মেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন হবে সেটাই স্বাভাবিক। ঝিলের মুখের দিকে তাকালেই মৌনতার বেশ মায়া হয়। মেয়েটার মধ্যে কেমন এক সুখ খুঁজে পায় ওহ। মৌনতা হঠাৎ করেই ঝিল কে জড়িয়ে শুইয়ে পরলো। ঝিল সামান্য চমকালো, লম্বা করে দম ফেলে বলল
_ মৌন কি হয়েছে তোর?

_ কিছু না তোকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে হলো একটু।

ঝিল প্রশস্ত হাসলো। মৌনতার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল
_ ইসস তোর যদি বি এফ না থাকতো তাহলে আমি তোকে আমার ভাবি করে নিতাম।

মৌনতা বিগলিত হাসলো। এই কথা টা কয়েক শত বার বলেছে ঝিল। ঝিল ঘনঘন শ্বাস ফেলছে। মৌনতা ভ্রু কুঁচকে বলল
_ তোর কি কোনো বিষয় খারাপ লেগেছে ঝিল ?

_ আরে না। আসলে আমার বুক ভরে শ্বাস নিতে ইচ্ছে হচ্ছে। সেটা এই কোলাহলপূর্ণ সমাজে আমি উপভোগ করতে পারছি না।

_ বিয়ে করে নে দেখবি সব রঙিন লাগলে।

ঝিল মজার ছলে বলল
_ বিয়ে টা করে নিই আর এক গাঁদা ছেলে পুলে জন্ম দিয়ে তাদের সামলানোর দায়িত্ব পেয়ে যাই তাই না।

তার পরের মুহূর্তেই কিছু টা আবেগ নিয়ে আবার বলা শুরু করলো
_সব রঙিন হয় না রে , আই নো প্রতি টা মেয়ে কখনো না কখনো মা হওয়ার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু আমি নিজেই তো কখনো মায়ের সান্নিধ্য পাই নি। আমি কি করে আমার সন্তান দের ভালোবাসা দিবো বল।আর আমার ভয় হয় , প্রচন্ড ভয় হয়। আমি যেমন রোজ আমার আম্মু আর মামুনিদের অভিযোগ করি আমাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য। তাদের ভালোবাসা না পেয়ে কাঁদি।
আমার সন্তান যদি বলে আমি কেন ওকে অন্য মায়ে দের মতো ভালোবাসতে পারি না।তখন আমি কি জবাব দিবো বল তো।

ঝিল কিছুটা নিরব হয়ে আবার বলা শুরু করলো।

_আমি যখন স্কুলে দেখতাম আমার বন্ধুরা মায়েদের সাথে হেঁটে হেঁটে আসছে। তখন আমি এক দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে থাকতাম। কেন আমার আম্মু নেই।এতো এতো অভিযোগ করতাম। অনেকের মা নেই তো কাকি রা আছে ,আন্টি রা আছে। আমার তো তাদের কেউ ই নেই। একজন মায়ের ভালোবাসার ছিটে ফোঁটা ও আমার গাঁয়ে নেই। হ্যাঁ আমার পাপা ভাইয়া রা আমাকে জান দিয়ে ভালোবাসে। কিন্তু একটা মায়ের অভাব কি কখনো পূরন হয়? তাঁদের এতো এতো ভালোবাসা ও আমাকে খুশি করতে পারে নি। রোজ কেঁদেছি একজন মায়ের হাতের ছোঁয়ার জন্য। মামুনি রা থাকলে ও এতো কষ্ট হতো না। কিন্তু আমার ভাগ্য এতো টাই খারাপ যে আমি কারো ভালোবাসা পাই নি। আমি কি করে মা হই বল তো?
সে সবের গুন আমার মাঝে যে নেই। আমি আমার এক পৃথিবী তে একা। মায়ের অভাব কেউ পূরন করতে পারে না। তবে লাঘব করার জন্য ও আমার কেউ ছিলো না।
আমি মা হলে কলঙ্কের তকমা লাগবে। আমার সন্তান রা কষ্ট পাবে , আর আমি হবো কলঙ্কিত মা। যে তার নিজ গর্ভের সন্তান কে সঠিক ভালোবাসতে পারবে না।

ঝিলের কথাতে কাঁদতে কাঁদতে মৌনতার হিচকি উঠে গেছে। অথচ ঝিলের চোখে এক ফোঁটা পানি ও নেই।
সেই প্রবাদ বাক্য টাই সত্য

” অল্প শোকে কাতর আর অধিক শোকে পাথর ”

হ্যাঁ ঝিল পাথর হয়ে গেছে। জীবনের উনিশ টি বছরের মধ্যে সতের টি বছর রোজ কেঁদেছে মেয়েটা আর কতো কাঁদবে ওহ? তবু চোখে জল যে শেষ হবার নয়। তাই চোখ থেকে বেহায়া নোনা জলের ফোয়ারা নেমেই যায়।

ঝিল এক চমৎকার হাসলো। মৌনতা কে জড়িয়ে ধরে বলল
_ এটা কিছুই নয় মৌন। এটা আমার ভাগ্য আমি মেনে নিয়েছি। বাচ্চা দের মতো ফ্যাচ ফ্যাচ করে কাঁদবি না প্লিজ।

এবার মৌনতা ডুকরে কেঁদে উঠলো। ঝিলের বুক থেকে চাঁপা কষ্ট টা গলায় এসে আটকে গেছে। ওহহ চিৎকার করে কাঁদতে চেয়ে ও পারছে না। বুকের ভেতর থেকে এক দলা অভিমান বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে। ভাগ্যের উপর বড্ড অভিমান হয়ে গেছে। মায়ের নরম হাতের ছোঁয়া পাওয়ার আকুলতা কখনো লাঘব হবে ওর?নাকি এভাবে জীবনের শেষ দিনটা কেঁটে যাবে। এতো এতো সুখ পেয়ে ও অসুখী হয়ে রবে! এ যন্ত্রণার যার শুধু সেই বুঝে তার জ্বালা।

( গল্পের পরবর্তী পার্ট এর লিংক কমেন্ট এ দিয়ে দেওয়া হবে তাই কমেন্ট এ দৃষ্টি রাখবেন। আর গল্প কেমন হচ্ছে অবশ্যই জানবেন । )

বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাফ করবেন ।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here