প্রেমনগরে_প্রশান্তির_ভেলা #আফসানা_মিমি |সাতাশ তম পর্ব |

0
111

#প্রেমনগরে_প্রশান্তির_ভেলা
#আফসানা_মিমি
|সাতাশ তম পর্ব |

” বলো মা আলহামদুলিল্লাহ, কবুল!”

সারা ঘরে পিনপতন নীরবতা। উপস্থিত মানুষজনের কেউ কেউ একে অপরের কানে ফিসফিসিয়ে কিছু বলছে তো কিছু মানুষের মুখে আনন্দের হাসি দেখা যাচ্ছে। প্রেম নীড়ে মধ্যরাতে বিয়ে হচ্ছে। বিয়ের পাত্র আজাদ সাহেবের ছোট ছেলে নিবরাজ নাদিফ এবং পাত্রী রিনিঝিনি রুপ। পাত্র-পাত্রী দুজনকে একসাথে বসানো হয়েছে সোফার ঘরে। উপস্থিত আছেন অনুষ্ঠানের আগমনকৃত সকলেই। নতুন করে শুধু দুইজন এসেছে এই রাতে। ফয়সাল, ফাল্গুনী। ফয়সাল ফাল্গুনী দুজনের চোখে বিস্ময়। আপাতত দুজন হা করে রুপ, নাদিফকে দেখে যাচ্ছে। রুপ নিশ্চুপ, কবুল বলছে না। বিয়ে নামক বন্ধনের জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না আজ, এই মুহূর্তে। অপরদিকে নাদিফের মাথা নত লজ্জায়। নাদিফের বড্ড আফসোস হচ্ছে এই ভেবে যে, আজ’ই রুপ ভালোবাসার কথা বলেছে আর আজ’ই বিয়ে হতে হচ্ছে! কোথায় নাদিফ ভেবেছিলো কিছু মাস চুটিয়ে, লুকিয়ে প্রেম করবে! তা আর হলো না। শুধুমাত্র ফাহিমার জন্য।
সময় গড়িয়ে পড়ছে। রুপের কোন নড়াচড়া নেই। শরীর, হাত কাঁপছে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। উপস্থিত সকলে রুপের কাজে কানাঘুষো করছে। আয়েশা আজাদ হয়তো রুপের মনের অবস্থা বুঝতে পারলেন। রুপের পাশে বসে হাতের উপর ভরসার হাত রাখলেন। রূপ আয়েশা আজাদকে পাশে পেয়ে যেন ভরসা পেলো। আস্তে করে কন্ঠনালী দিয়ে ‘আলহামদুলিল্লাহ কবুল’ উচ্চারণ করলো।
তিনবার আলহামদুলিল্লাহ কবুল বলে শরীয়ত মোতাবেক নাদিফের স্ত্রী রুপে নতুনভাবে প্রেম নীড়ে নিজের জায়গা করে নিলো অপরুপ। নাদিফের কবুল বলার পর মুনাজাতের মাধ্যমে বিবাহের পর্যায় শেষ হয়।

এখন আসি আমাদের ভোলা ভালা ফাহিমা ভাবির দিকে। ফাহিমা সবার থেকে আলাদা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সোফার ঘরের এক কোণে। ফাহিমার সামনে অগ্নিরুপ ধারণ করে কোমড়ে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছে নাবিল।

” আমি তো শুধু বলেছি বাচ্চার কথা, আর বেশি কিছু বলেছি?”

ফাহিমার নিরীহ মুখখানা দেখে নাবিল প্রায় গলেই যাচ্ছিলো কিন্তু পর মুহূর্তে ফাহিমার করা কাজের কথা মনে পড়ে যাওয়ায় আবার শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে নাবিল। নাবিলের ভাবগতির কোন পরিবর্তন না পেয়ে ফাহিমা এবার কান্না করে দিয়ে বলে,

” তুমি আমাকে আর আগের মতো ভালোবাসো না। তোমার আরেকটা বউ আছে তাকেই ভালোবাসো। এখন তো আমি তোমার বাচ্চার মা এখন তো অন্যদের দিকে না তাকাও! আমার কি দোষ বলো! আমি চাই ভালো কিছু করতে হয়ে যায় তার উল্টো।”

নাবিল পড়েছে মহা বিপদে। তাঁর বোকা বউটা যে এভাবে কান্না করবে ভাবতে পারেনি। সকলের অগোচরে ফাহিমার মুখ চেপে ধরে ফিসফিসিয়ে বলে,

” কান্না করে না আমার ফামু! বাবুও কান্না করবে তোমার কান্না দেখে। চলো তোমাকে আচার দেই। আর যা করেছো তো করেছো’ই। এখন থেকে আমি তোমার আশেপ্শে থাকবো সর্বদা যেন আর উল্টা পাল্টা কিছু বলতে না পারো। ”

ফাহিমার মুখে জয়ী হাসি। নাবিলকে নিয়ে চলে গেলো রান্না ঘরে। এদিকে নাবিল ভাবছে কয়েকঘন্টার আগের কথা।

কয়েকঘন্টা আগে,

নাবিল মাত্র বাসায় প্রবেশ করেছে। নাদিফের ফোন পেয়ে শুধু পারেনি হেলিকপ্টারে চড়ে উড়ে আসতে প্রেম নীড়ে। প্রেম নীড়ে আসতেই ফাহিমার কণ্ঠস্বর নাবিলার কর্ণধার আসে। মুহুর্তেই নোবেলের চোখ বড়ো বড়ো হয়ে যায়। সোফার রুমে থাকা উপস্থিত সকলের মাঝখানে গুঞ্জন শোনা যায় ইতিমধ্যে। নাবিল এতে ভয় পেয়ে যায়। প্রেম নীড়ের সম্মানহানী যেন না হয় এজন্য সকলের উদ্দেশ্যে হেসে বলে,

” আসলে আপনাদের দুইটি কারণে এখানে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। একটি হচ্ছে আমার স্ত্রী গর্ভবতী এই খুশিতে। আরেকটি হচ্ছে, আমরা আমাদের ছোট ভাই নাদিফের বিয়ে আয়োজন করেছি ঘরোয়াভাবে। আপনাদের জন্য এই সংবাদ সারপ্রাইজ ছিলো। আমার স্ত্রী একটু দুষ্টুমি করছে আর কি। কিছু মনে করবেন না। আপনারা বসুন খাওয়া-দাওয়া করুন। আমরা সকল কিছুর ব্যবস্থা করে আসছি।”

আজাদ সাহেব এবং আয়েশা আজাদ তখন নিজ ঘরে ছিলেন। ফাহিমাকে কি উপহার দিবেন তা আলোচনা করছিলেন। আসলামপুরে থাকা অবস্থায় ফাহিমা আয়েশা আজাদের কাছে কোমরের বিছার আবদার করেছিলেন আয়েশা আজাদ সে আবদার পূরণ করার জন্য কোমরের বিছা অর্ডার করেছেন এবং সেটা আগামীকাল হাতে আসবে। এসব কিছু আজাদ সাহেবের সাথে আলোচনা করছিলেন। ফাহিমার কথা তখনও তাদের কর্ণধারা পৌঁছায়নি।

এদিকে নাবিল দৌঁড়ে ছাদে চলে আসে। ফাহিমা অপরাধীর ন্যায় নাদিফের পানে তাকিয়ে আছে। রুপ একপাশে দাঁড়িয়ে আছে মাথা নীচু করে। নাদিফ এপাশ-ওপাশ পায়চারি করছে। কারণ এতক্ষণে নাদিফ বুঝে গিয়েছে যে ফাহিমার এ কথা অনুষ্ঠানে চলে আসা সকল অতিথিরা জেনে গেছে। এদিকে ফাহিমা নিজের কথায় নিজেই অনুশোচনা বোধ করছে। বারবার দেবরের কাছে ক্ষমা চেয়েছে।

” তোমার কি আক্কেল জ্ঞান বলতে কিছুই নেই? এভাবে কেউ বোম ফাটায় নাকি? এখন কি হবে! ভাই রে আজ তোকে বিয়ে করতে হবে রুপকে। কোথায় চেয়েছিলাম ছোট ভাইয়ের বিয়েতে আনন্দ ফুর্তি করবো, নাচ গান করবো তা আর হলো না। তোমার জন্য সব ভেস্তে গেল ফাহিমা।”

ফাহিম স্বামীর কথার উপর কোন কথা বলেনি। ফাহিমা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে। এদিকে নাদিফ প্রেম করতে এসে নিজেই জালে ফেঁসে গিয়েছে।

” কিরে ছোট! কি করবি এখন? বিয়ে তো করতেই হবে। আমি নিজে বলেছি না হলে প্রেম নীড়ের মান সম্মান সব শেষ। আমার বউয়ের কথার জন্য তুদের কাছে ক্ষমা চাইছি।”

নাবিলের কথা শুনে রূপের মাথায় হাত। নাদিফ অবাক চোখে তাকিয়ে আছে বড়ো ভাইয়ের পানে। এর মধ্যে আয়েশা আজাদ এবং আজাদ সাহেব উপস্থিত হয় ছাদে। সকলকে একসাথে দেখে প্রশ্ন করেন কি হয়েছে। নাবিলের মুখে সব ঘটনা শুনে আজাদ সাহেব হেসে বললেন,
” আলহামদুলিল্লাহ এতদিনে আমার ছেলের বউ একটা কাজের কাজ করেছে। এই কে কোথায় আছিস ঢাক ঢোল বাজা। আমার ছোট ছেলের বিয়ে হবে আজ!”

শুরু হয়ে গেছে ড্রামা পরিবারের ড্রামা। আয়েশা আজাদ স্বামীর কথা প্রতুত্তরে বললেন,

” বিয়ে হবে তা তো বুঝলাম। কিন্তু কথা হচ্ছে এত রাতে তুমি ঢাক ঢোল কোথায় পাবে? আমি বলি কি! রুপ নাদিফের বরঞ্চ শরীয়ত মোতাবেক বিয়ে পরিয়ে দাও। দুই সপ্তাহ পর ঢাক ঢোল পিটিয়ে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান করবো।”

স্ত্রীর কথাটা আজাদ সাহেবের খুবই পছন্দ হলো। সকলে একসাথে নিচে নেমে গেল।
এদিকে আয়েশা আজাদ রূপকে নিয়ে নিজের ঘরে চলে গেলেন। আয়েশা আজাদের একটি সুতির শাড়ি পড়িয়ে দিলেন রুপকে। রুপের সাজগোজ আগেরটাই শুধু ঠোঁট একটু গাঢ় লাল রং লাগিয়ে দিয়েছেন আয়েশা আজাদ। এইটুকুতেই রুপকে অপরুপ লাগছে।

এরপর কাজী সাহেব বাসায় আসতেই রুপকে নিয়ে সোফার ঘরে বসিয়ে দিলেন নাদিফের পাশে।

বর্তমান,

বাড়ির সকল মেহমান বিদায় নিয়েছে কিছুক্ষণ আগে। বাকি রয়েছে কাজী সাহেব। উনাকে পাওনা বুঝিয়ে বিদায় করবেন নাবিল। এখন রাত দুইটা বাজে ত্রিশ মিনিট। শহরে রাতে বিয়েটা সাধারণ বিষয়। মানুষ আসা-যাওয়া চলতেই থাকে শহরের বিয়েতে।

” বলছিলাম কি ম্যাডাম আমাদের একটা ব্যবস্থা করে দিন না আজকে। মানে হয়েছে কি আপনার বিয়ে দেখে আমাদের ইচ্ছে করছে বিয়ে করতে। এখন এই বয়সে পরিবারকে তো বলতে পারিনা তাই আপনাকে বললাম।”

এই প্রথম ফয়সাল রুপের সাথে চোখে চোখ মিলিয়ে কথা বলছে। এতদিন রুপ ছিল ফয়সালদের ম্যাডাম সাথে নাদিফের পছন্দ করা মানুষ। কিন্তু এখন হয়ে গিয়েছে নাদিফের বিবাহিতা স্ত্রী। এখন উল্টাপাল্টা কিছু বললে কেউ কিছু বলবে না। আর যদি নাদিফ কিছু বলতে আসে তাহলে ফয়সাল বলবে ভাবির সাথে মজা করছে।

ফাল্গুনের চোখ বড়ো হয়ে যায় ফয়সালার কথা শুনে। ছেলেটার মাথা সত্যিই গিয়েছে। ফাল্গুনী তো রাজি নয় এই ছেলের গলায় ঝুলতে। সারাদিনে যে কতবার এই ছেলে ফাল্গুনীকে ভালোবাসি বলে তার হিসেব নেই কিন্তু ফাল্গুনে তো পাত্তা দেয় না। কারণ ফাল্গুনের জানা আছে এই ছেলে দুই দিন পর অন্য কোনো মেয়েকে দেখলে ওই মেয়ের পিছনে ঘুরবে। তাই ফাল্গুনী এই ফয়সালের ফাঁদে পা দেবে না কখনো।

এদিকে ফয়সালার কথা শেষ হতেই নাদিফ বলে উঠে,

” বাচ্চারা এসব বলে না। বাচ্চাদের মুখে এসব কথা শোভা পায় না। আগে বড়ো হও। বড়ো ভাইয়ের মতো সুদর্শন হও। উঁচু লম্বা হও মোটাতাজা হও তারপর বিয়ে করিও।”

নাদিফের কথা ফয়সাল বুঝতে পেরেছে কিনা জানা নেই। কিন্তু ফাল্গুনী না বুঝে দৌঁড়ে চলে যায় রুপের ঘরে। আর ফয়সাল চলে যায় নাদিফের ঘরে।

এদিকে রাইসা আকাশ প্রেম আলাপে ব্যস্ত। রাইসা শুধুমাত্র রুপের কবুল বলার সময় পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো। আর বাকিটা সময় প্রেম নীড়ের পেছনের বারান্দায় একে অপরের হাতে হাত রেখে প্রেম আলাপ করতে ব্যস্ত তারা।

মেহমানদের খাবার খাওয়া হলেও প্রেম নীড়ের পরিবারের সদস্যদের কারো খাওয়া হয়নি এ পর্যন্ত। আয়েশা আজাদ রাইসার নাম ধরে হাঁক ছাড়লেন।রাইসা চটজলদি আকাশের হাত ছেড়ে চলে আসে আয়েশা আজাদের কাছে। এরপর ফাল্গুনীকে সাথে নিয়ে তিনজন খাবারের টেবিলে খাবার সাজায়।

ফাহিমা এই এক ঘন্টার ভেতরে এক ঘুম দিয়ে উঠেছে। নাবিল টানতে টানতে ফাহিমাকে নিয়ে আসে খাবার টেবিলে। এই অবস্থায় খাবার খেতে হবে। না হলে মা সন্তানের ক্ষতি হবে।

” আজ তোমার কি হবে অপরূপ?”

খাবারের টেবিলে রুপ নাদিফ পাশাপাশি বসেছে। সকলের অগোচরে নাদিফ রূপের কানে ফিসফিসিয়ে কথাটা বলল। নাদিফের কথা শুনে রুপের কান গরম হয়ে আসে। রুপ ভাবছে,
” আগে তো ঠোঁট কাটা প্রেমিক পুরুষ ছিলো মানুষটা। কিন্তু এখন হয়ে গিয়েছে বিবাহিত পুরুষ। এখন তো এই লোকটার ঠোঁট চলতেই থাকবে। একদম লাগামহীন হয়ে যাবে। যখন তখন কথার মাধ্যমে আক্রমণ করা শুরু করবে। এই যে এখন শুরু হয়েছে তার লাগামহীন কথাবার্তা! আমার কি হবে!”

রুপ ভাবনা থেকে বেরিয়ে নাদিফের কথার প্রত্যুওরে বলল,

” আজ কিছুই হবে না। চুপচাপ খান আর ঘরে গিয়ে ঘুমান।”

নাদিফ হাসছে রুপের কথা শুনে। এদিকে ফাহিমা রুপ নাদিফকে দেখছে
ফাহিমার চোখে রুপ নাদিফকে অনেক সুন্দর মানিয়েছে। ফাহিমা গালে হাত দিয়ে জোরে বলে উঠে,

” তোমাদের দেখে এখন আমার আবার বিয়ে করতে ইচ্ছে করছে। জামাই রাজি হয়ে যাও। চলো আবার বিয়ে করি।”

পরমুহুর্তে শ্বশুরের উদ্দেশ্যে ফাহিমা বলে উঠে,

” ও শ্বশুর আব্বা আপনার ইচ্ছে করছে না বিয়ে করতে!”

ফাহিমার বোম ফাটানো কথা শেষ হবার আগেই আজাদ সাহেব কেশে উঠেন। এই বয়সে বিয়ের কথা শুনে লজ্জায় ফেটে পড়েন। লজ্জায় দাড়ির আড়ালে আজাদ সাহেবের গাল দুটো লাল টমেটো হয়ে গিয়েছে।
আয়েশা আজাদ চোখ রাঙিয়ে পুত্রবধূর দিকে তাকালেন। এই মেয়েটার উদ্ভট কথা কবে বন্ধ হবে কে জানে!

সকলের মুখের ভাবগতি দেখে ফাহিমা আবার বলে উঠল,

” আরে সবাই এমন ভাবে তাকিয়ে আছো কেন আমার দিকে? আমি তো বলতে চাইছি যে, প্রেম নীড়ে একসাথে তিন জনের বিয়ে হোক। মানে আমার আর নাবিলের, বাবা-মার আবারও বিয়ে হোক। নাদিফ রুপের নতুন করে বিয়ে হোক। আমার কথা শেষ হলো না আর সবাই আমাকে বকছো। আমার দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকাচ্ছো। যাও খাবো না আমি।”

ফাহিমা খাবার রেখে রাগ করে গিয়ে বসলো সোফায়। ফাহিমার পিছু কিছু নাবিল চলে গেলো খাবার হাতে নিয়ে। এই রাতে ফাহিমাকে এক টুকরো রুটি হলেও খাওয়াতে হবে, নয়তো অসুস্থ হয়ে পড়বে।

সকলের খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ঘুমোতে যাচ্ছে যার যার ঘরে। এখন বাজে রাত তিনটা পঁচিশ মিনিট। একসাথে সিঁড়ি বেয়ে উঠছে সবাই। সবার পিছনে ফাহিমা আস্তে আস্তে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠছে। আয়েশা আজাদ এবং আজাদ সাহেব একটু আগে নির্দেশ দিয়েছেন সবকিছু নিয়ে যেন নাবিল নিচে চলে আসে। এই অবস্থায় সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা ভীষণ রিক্স।

আর পাঁচটা বিয়ের মতো রুপ নাদিফের বিয়ের পর যে স্বামী-স্ত্রী একসাথে থাকবে সেটা বিষয় না। রুপ নাদিফ নিজেদের মধ্যে কথা বলে নিয়েছে যে তারা আগের মতই থাকবে যার যার ঘরে। যেদিন আনুষ্ঠানিকভাবে আবারো কাগজে-কলমে বিয়ে পড়ানো হবে সেদিন একসাথে থাকবে। খাবার টেবিলে সকলেই রুপ নাদিফের কথায় মত দিয়েছে।

এদিকে উপরের তলায় পর পর এক সিরিয়ালে আজাদ সাহেব তারপর ফাহিমা তারপর রুপ এবং সর্বশেষে নাদিফের কামরা বিদ্যমান। যে যার যার ঘরে প্রবেশ করছে। আয়েশা আজাদ, আজাদ সাহেব মাত্র ঘরে প্রবেশ করলেন এমন সময় ফাহিমার কথা সকলের কর্ণধারা আবারো পৌঁছায়,

” আরে রুপ, তুমি নিজের ঘরে প্রবেশ করছো কেন? ছোট ভাইয়ার ঘরে যাবে না? আজ না তোমাদের বাসর রাত! এই রাতে আলাদা থাকে নাকি?”

ফাহিমার কথা শুনে আজাদ সাহেব শব্দ করে ঘরের দরজা আটকে দিলেন। রাইসা লজ্জায় অনেক আগেই ভেতরে চলে গিয়েছে। রুপ নাদিফ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বাহিরে। এদিকে নাবিল ফাহিমার মুখে হাত দিয়ে চেপে ধরে টেনে ঘরে নিয়ে চলে গিয়েছে।

রুপ শক্ত করে দাঁড়িয়ে আছে বাহিরে। শরীর কাঁপছে ভয়ে, লজ্জায়। নাদিফ আর ঘরে প্রবেশ করলো না। এগিয়ে আসছে রুপের কাছে। আজ রুপকে লজ্জায় রাঙা করে দিবে নাদিফ। নাদিফের মুখে দুষ্টু হাসির রেখা। রুপের কাছাকাছি এসে ফিসফিসিয়ে বলল,

” কি ম্যাডাম! বাসর করবেন না?”

চলবে…….

[হায়াত মওতের কথা বলা যায় না। কিছুদিন আগে আমার এক চাচী শাশুড়ি মারা গিয়েছেন। আর আজ আরেকজন চাচী শাশুড়ির খুব খারাপ অবস্থা। সন্ধ্যা থেকে চাচী শাশুড়ির বাসায় ছিলাম। লিখা শেষ হয়েছিল সন্ধ্যায় কিন্তু রিভিশন দেয় হয়নি। বানান অনেক ভুল হতে পারে। ক্ষমা করবেন। সবকিছু ভালো থাকলে আগামীকাল গল্প পাবেন। ভালো থাকবেন সবাই। আসসালামু আলাইকুম]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here