তবু_আছি_কাছাকাছি (Doctors love)💕 #writer_Sumaia_Islam_Mim #part_9 💕

0
6

#তবু_আছি_কাছাকাছি (Doctors love)💕
#writer_Sumaia_Islam_Mim
#part_9
💕
.
.
সুমু ভয় ভয় সাদির দিকে তাকিয়ে আছে৷ না জানি কি উপায় তার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে!

—কি উপায় আছে আপনার কাছে?

সাদিঃ(মুচকি হেসে) বেশি কষ্টের কিছু না! শুধু…….

—(ভীত কন্ঠে) শুধু..কি?

সাদিঃ(হেসে দিয়ে) আমাকে……

—আপনাকে…..

সাদিঃ আমাকে…

—(বেশ রেগে) আরে ধুর মিয়া! বলবেন তো কি আপনাকে?

সাদিঃ কুল ডাউন! আমাকে একটা হেল্প করতে হবে!(দাঁত কেলিয়ে)

—কি হেল্প?

সাদিঃ আসলে আমি আমার আম্মুকে একটা সারপ্রাইজ দিতে চাই। তাই তুমি আমাকে হেল্প করবে!

—(খুশি হয়ে) অবশ্যই করবো!

সাদিঃ এতো খুশি হইলা ক্যান?

—(থতমত খেয়ে) আসলে আমার কাছে এই পর্যন্ত যতগুলো বদ হেল্প চাইছে সবগুলো নয় গার্লফ্রেন্ড বা বয়ফ্রেন্ডকে সারপ্রাইজ দিতে! এই প্রথম কেউ তার মাকে সারপ্রাইজ দিবে বলে হেল্প চাইছে তাই আমি অবশ্যই হেল্প করবো।

.
আজকে সাদির আম্মু ঢাকা ব্যাক করবে। তাই এই সুযোগে সাদি চেয়েছে তার মাকে সে একটা সারপ্রাইজ দিবে। সারপ্রাইজ তো একটা বাহানা আসলে সুমুকে তার সামনে নিয়ে গেলে সে এমনিই সারপ্রাইজড হবে।

.
সুমু নীলকে খুঁজছে বলার জন্য যে সে আজ ক্লাস করবে না। সাদির আম্মুর জন্য সারপ্রাইজ প্ল্যান করবে কিন্তু নীলকে কোথাও পাচ্ছে না। এবার বেশ বিরক্ত হয়ে সুমু নীলকে ফোন দিল,

—এই বানরের সেনাপতি! কই তুই?

নীলঃ আমি বটতলায়!

—তুই কলেজে নাই?

নীলঃ নাহ!

—আচ্ছা ওয়েট আমি আসতেছি!

নীলঃ তুই এসে কি করবি?

—তোর মাথায় গাট্টা মারবো! চুপচাপ ওখানে বসে থাক!

.
প্রায় পাঁচ মিনিট পরে সুমু বটতলায় পৌছায়। নীলকে দেখে হালকা হেসে দেয়। নীল সুমুকে খেয়াল করে নি। সুমু নীলের পিছন থেকে মাথায় হালকা করে গাট্টা মারে! নীল পিছন ফিরে সুমুকে দেখে মৃদু হাসে। যা দেখে সুমুর বেশ খটকা লাগে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এতোক্ষণে নীল উল্টো সুমুকে গাট্টা মারতো।

—(ভ্রু কুঁচকে) কি হইছে তোর? মন খারাপ কেন?

নীলঃ(আমতাআমতা করে) কই কিছু হয়নি তো!

—এখন তুই আমাকে শিখাবি? আমি তোর থেকে মাত্র একমাসের ছোট!

নীলঃ(ক্লান্ত হেসে) মানুষ বড় হওয়ার বড়াই করে আর তুই ছোট হওয়ার বড়াই করিস?

—হ্যাঁ! কারন এটাই আমি!

নীলঃ হুম! আমার পিচ্চি একটা বোন!

—তোর কানের নিচে দিমু ফাজিল পোলা! আমারে কোন এংগেল দিয়া পিচ্চি লাগে?

নীলঃ(হেসে) তুই হাতে পায়ে বুড়ি হইলেও আমার কাছে পিচ্চিই থাকবি!

—হুম বুঝছি! এখন আসল কাহিনী বল!

নীলঃ কিছু না!

—তুই বলবি না আমি যাবো?(রেগে)

নীলঃ অনুর সাথে ব্রেকআপ হইছে!

—(ভ্রু কুঁচকে) কেন?

নীলঃ বাদ দে! একটা গেছে তো কি হইছে অনেক গুলো চলে আসবে!

—এক মিনিট এক মিনিট! সামহাউ তোদের ব্রেকআপের কারনটা কি আমি!(অস্থির হয়ে)

নীলঃ সুমু তুই উত্তেজিত হইস না! অল ওকে!

—ওয়াট ওকে? আমার জন্য তোর ব্রেকআপ হইছে এন্ড ইউ সে অল অকে?

নীলঃ এখানে তোর কোন ফল্ট নেই সুমু! নিজেকে দোষ দিবি না তুই!

সুমুর চোখ থেকে আপনাআপনি পানি পড়ছে। সে ভাবতেও পারে নি তার জন্য তার বেস্টফ্রেন্ডের ব্রেকআপ হবে!

—কি হয়েছে খুলে বল!

নীলঃ কিছু…..

—(বেশ জোরে) সবটা বলতে বললাম।

ঘটনাটা এমন যে,,,,,,

সুমুর থেকে বিদায় নিয়ে নীল অনুর ফোন রিসিভ করে আর তারা একসাথে দেখা করার জন্য বটতলায় আসে।

নীলঃ অনু! সরি ইয়ার! একটু লেট হয়ে গেলো। আসলে সুমুকে খুঁজে বলে এসেছি নয়তো বেচারি আমাকে খুঁজতো!

অনুঃ ও আচ্ছা! সুমু তোমাকে খুঁজতো? আমি খুঁজি না?

নীলঃ কি বলছো জান?

অনুঃ এএ,,,,ডোন্ট কল মি দিস! আমার কোন প্রায়োরিটি তোমার কাছে নেই। কিছু হইলেই সুমু সুমু! আমি তোমার গার্লফ্রেন্ড নাকি সুমু?

নীলঃ(অবাক হয়ে) কি বলছো এসব অনু?

অনুঃ আমি সত্যিটা বলছি! সুমুর সাথে তোমার অ্যাফেয়ার আছে! তাইতো আমাকে তুমি খুব কম সময় দাও! আসলে তুমি গাছেরও খেতে চাও আবার তলারও কুড়োতে চাও!(রেগে, চিৎকার করে)

নীল আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলো না। ঠাস করে একটা চড় লাগিয়ে দিল অনুর গালে। এতোক্ষণ যা নয় তাই বলেছে, তা সহ্যও করেছে কিন্তু তার আর সুমুর সম্পর্কে এতো বাজে কথা সে নিতে পারে নি। এবার নীলও বেশ চিৎকার করে বলল,

নীলঃ আরে! আমার তো তোকে সন্দেহ হয়! এতো চিপ মেন্টালিটির মেয়ে তুই? তুই আমাকে আর সুমুকে সন্দেহ করিস? কি পরিমান ঈর্ষা তোর মধ্যে! মাই গড!

কিছুক্ষণ থেকে আবার বলতে লাগলো। অনুকে বলার সুযোগই দিচ্ছে না!

নীলঃ আমার আর সুমুর সম্পর্ক ভাই-বোনের মতো! যা তুই কখনো বুঝবি না। আরে তোর মেন্টালিটি এতো খারাপ তাই আমি কি করে বুঝতে পারলাম না! জানিস! আমার সুমু আমাকে কি বলে? ছোট ভাই! রাকিব ভাইয়ার পরে ও আমাকে ভাই মানে! সব কথা শেয়ার করে। ময়মনসিংহে ওকে আমি আগলে রাখছি! আমার বোন হয় ও! আর তুই কি বানিয়ে দিলি! এইসব কথা যখন আমার ছোট বোনটা জানবে ওর চোখ থেকে অটোমেটিক পানি ঝরবে! যার মানে তুমি বুঝতে পারবে না। চলে যাও আমার চোখের সামনে থেকে!

অনুঃ(কান্না করে) সরি…নীল! আসলে….

নীলঃ(জোরে চিৎকার করে) জাস্ট লিভ!

তারপর অনু কাঁদতে কাঁদতে ওখান থেকে চলে যায়!

বর্তমান……..

—তুই পাগল নীল! এক্ষুনি অনুকে ফোন লাগা আমি কথা বলবো ওর সাথে!

নীলঃ একদম না সুমু! বেশি ভালোমানুষি দেখাবি না বলে দিলাম।

—দেখাইলাম না ভালোমানুষি! অনুকে সরি বলে যদি নিজের লাইফে ফেরত না আনসোস তো আমার সাথে কথা বলবি না।

নীলঃ কিন্তু ওর মতো একটা মেয়ে….

—আরে গাধা! ও তোরে নিয়ে ইনসিকিউর ফিল করে! এটা তো ভালো। আর এখন যখন আমাদের সম্পর্কে জানছে তো আর কিছু বলবে না। তুই ওরে মানিয়ে নিয়ে আয়। আর ভবিষ্যতে আমিও চেষ্টা করবো যাতে তুই ওকে বেশি সময় দিতে পারিস। আমিও কি বোকা! আচ্ছা বাদ দে। আর শোন আমি একটু ডাক্তারসাহেবের সাথে বাইরে যাচ্ছি তোকে আর আসতে হবে না। আমি একাই হোস্টেলে ফিরে যাবো। তুই অনুর সাথে দেখা কর!

নীলঃ সাদি স্যারের সাথে তোর কি দরকার? টাকা ফেরত দেস নাই? আর আমি তোর থেকে ওরে বেশি সময় দিতে পারবো না। (ভ্রু কুঁচকে)

—(একটু হেসে) এই হইছে ভাইদের প্রবলেম! আরে উনি ওনার আম্মুকে সারপ্রাইজ দিবে তাই একটু হেল্প চাইছে। আর অনুর রে তুই সময় দিবি না তো কি তোর বাপে দিব?

নীলঃ(চোখ টিপ দিয়ে) নাহ! আমার বাপে আমার মায়েরে সময় দেয়!

—ওরে শয়তান! বাপ মায়েরেও ছাড়ছ না! আচ্ছা আমি আসি!

নীলঃ হুম সাবধানে যাইস!

—আচ্ছা!

.
সুমু বটতলা থেকে বের হইতে হইতে সাদিকে ফোন দিল।

—ডাক্তারসাহেব! আমাকে একটু বটতলা থেকে পিক করতে হবে।

সাদিঃ ওখানে কি করো তুমি?

—(দাঁতে দাঁত চেপে) ক্রিকেট খেলি!

সাদিঃ সর্বনাশ! তুমি ক্রিকেট ও খেল!

—আসলে বলতে পারতাম!

সাদিঃ এসে গেছি! সামনে তাকাও!

সাদি একটা রিক্সার উপর বসা কানে ফোন! সুমু সাদিকে দেখে একটু হেসে দিল। রিক্সা থামিয়ে সুমুকে উঠতে ইশারা করলো। কিন্তু সুমু প্রথমে একটু অস্বস্থি করলেও পরক্ষনে রিক্সায় উঠে পড়লো!

.
সাদি সুমুকে অস্বস্তিতে দেখে একটু মন খারাপ করেছিল কিন্তু পরক্ষনে সুমুকে রিক্সায় উঠতে দেখে তার ঠোঁটে হাসি ফোঁটে।

রিক্সা চলছে আপন গতিতে। আর সাদি সুমু আলাদাভাবে এই মুহূর্তটা অনুভব করছে। নিরবতা ভেঙ্গে সুমু বলল,

—আচ্ছা ডাক্তারসাহেব! আপনি আমাদের কলেজের প্রফেসর! কিন্তু আপনি রিক্সায় কেন আসেন? মানে আমি সব প্রফেসরদের খেয়াল করেছি। বেশিরভাগ ডক্টরস গাড়িতে আসে আর কিছুসংখ্যক বাইকে। কিন্তু আপনি প্রতিদিন রিক্সায় আসেন! ব্যাপারটা কি?

সাদিঃ(একটু হেসে) আসলে ঢাকায় বাবার বাড়ি গাড়ি সবই আছে। আমার নিজেরও একটা গাড়ি আছে। এখানে নিজের টাকায় ফ্ল্যাট কিনে হাতে গাড়ি কেনার মতো টাকা নেই। তাই ভাবলাম অতো বিলাসিতা করে লাভ নেই। রিক্সা চড়তেও আলাদা আনন্দ পাওয়া যায়। তাই নয় কি! আরেকটা বিষয় কি জানো! এই যে রিক্সায় আছি বলে আজ তুমি আমার পাশে নির্দিধায় বসেছো, কিন্তু আমার নিজস্ব গাড়ি হলে তুমি কখনই গাড়িতে উঠতে না।

—(হেসে দিয়ে) অপ্রিয় হলেও সত্যি কথা বলেছেন। আপনার গাড়ি হলে আমি আসলেও উঠতাম না। তা আপনি বাইক চালান না?

সাদিঃ উহুম! না! মায়ের আদেশ! বাইক চালানো যাবে না।

—বাহ! আন্টির এই আদেশটা আমার খুব পছন্দ হয়েছে। আমি আর আম্মুও ভাইয়াকে বাইক চালাতে দেই না। আমারও পছন্দ না!

সাদিঃ(বিড়বিড় করে) আজকে থেকে তো তাহলে আরো আগে চালাবো না।

—কিছু বললেন?

সাদিঃ নাহ! তো প্রথমে কোথায় যাবে?

—আগে শপিংমল চলুন!

সাদিঃ শপিংমল?

—(হেসে) হুম! আগে আন্টির জন্য একটা সুন্দর দেখে শাড়ি কিনবো!

সাদিঃ ওহ! ওকে।

,,
,,
,,
,,
(চলবে)……..

ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here