#তবু_আছি_কাছাকাছি(Doctors love)💕
#writer_Sumaia_Islam_Mim
#part_32
💕
.
.
মেডিকেলে কিনবা বাসায়! সাদির আজাইরা রোমান্স অলটাইম শুরু হয়ে যায়! আর ফ্যাসাদে পড়ে বেচারি সুমু। কিন্তু কাজের সময় দুইজনেই অনেক সিরিয়াস। মেডিকেল বলতে লাঞ্চ টাইমেই দুজনের দেখা হয়! আবার বাসায় দেখা! অনেক সময় সাদি বা সুমু দুইজনের মধ্যে কারো নাইট ডিউটি পড়লে তো কথাই নেই। দেখাই হয় না। যেমন এখন! প্রায় পাঁচ দিন ধরে সুমুর নাইট ডিউটি চলছে আর সাদি দিনেই ক্লাস করিয়ে ফিরে আসে। সুমু সারারাত কাজ করে সকালে বাসায় ফেরে তখন সাদি রেডি হয়ে ক্লাস নিতে বের হয়। একঝলক দেখা হয় তাদের! আবার বিকেলে সাদি বাসায় ফিরে তখন দেখে সুমু সব সংসারের কাজ সামলে হসপিটালের জন্য বের হয়! তাদের মধ্যে বিনিময় হয় মলিন হাসি। তবু দুজনের মধ্যে ভালোবাসা বিন্দুমাত্র কমে নি।
.
আজ শুক্রবার! সাদি সুমু দুজনেরই ছুটি! সুমুর এক সপ্তাহ নাইট ডিউটি ছিলো। এখন আবার ডে ডিউটি শুরু হবে। সকালে এসেই সুমু ঘুম দিয়েছে সাদির পাশে শুয়ে। সাদি তখনও বেঘোরে ঘুমুচ্ছে৷ ঘুম থেকে উঠেই সুমুর চেহারা দেখে সাদির ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠলো। সকাল সকাল বউয়ের মুখ দেখে ঘুম থেকে উঠেছে! যদিও খুব ইচ্ছে ছিলো তবুও বউয়ের ঘুম ভাঙালো না সাদি! সুমুর কপালে একটা চুমু দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলো। তারপর রান্নাঘরে গেলো নাস্তা বানাতে! কিন্তু রান্নাঘরে গিয়ে দেখে সুমু আগেই সব নাস্তা রেডি করে রেখেছে। এখন সে কি করবে? সুমু তো ঘুম! তাই বসে বসে নিউজ দেখছে।
সুমুর ঘুম ভাঙে ১১ঃ৩০ টা নাগাদ। উঠে আড়মোড়া ভেঙে ঘড়ির দিকে তাকাতেই চোখ বড় হয়ে গেলো। পাশে তাকাতে দেখে সাদি উঠে পড়েছে। তাকে ডাকলো না কেন? এটা ভাবতে ভাবতেই উঠে ড্রয়িংরুমে গিয়ে দেখে সাদি টিভি দেখছে। সুমুকে দেখে একটা হাসি দিলো। সুমুও বিনিময়ে একটা হাসি ফিরিয়ে দিয়ে বলল,
—নাস্তা করেছো ডাক্তারসাহেব? সব তো রেডি করে রেখেছিলাম।
সাদি উঠে এগিয়ে এসে বলল,
সাদিঃ এতোদিন তো তোমাকে ছাড়াই খেয়েছি তাই আজ ভাবলাম তোমার সাথেই নাস্তা করি!
—তাহলে ডাকোনি কেন? ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
সাদিঃ তাতে কি হয়েছে এখন খেয়ে নেবো! তুমি সেই ভোরে এসেছো তাও জানি না!
—(ম্লান হাসি দিয়ে) আমি ভোর ৫ঃ০০টায় বাসায় এসেছি।
সাদিঃ চলো খেয়ে আবার ঘুমাবা!(সুমুর হাত টেনে)
—হ্যাঁ! আর বাসার সব কাজ তুমি করবা না?
সাদিঃ দরকার হলে করবো! চলো।
সাদি আর সুমু একসাথে নাস্তা করলো।
—আজ মামুনি আসবে। আমি ফোন করেছিলাম।
সাদিঃ ওহ! আমি আনতে যাবো? কখন আসবে বলছে?
—নাহ! তোমার যেতে হবে না। ড্রাইভার কাকাকে নিয়ে আসছে। আমি একা আসতে দেই নি।
সাদিঃ ভালো করছো! আব্বু তো আবার সিলেট যাবে।
—বাবাই এসে দুইদিন রেস্টও নিলো না। খালি কাজ কাজ! এবার আসুক। একদম বেধে রেখে দিবো। আর কাজ করতে হবে না। এতো টাকা দিয়ে কি করবো!
সাদিঃ(হাসি দিয়ে) দেখো তুমি পারো কিনা। আমি আর সায়মা আপু এতো চেষ্টা করেও পারলাম না। কাজ নাকি তার নেশা। পেশা হলে ছেড়ে দিতো।
—এটা কেমন কথা?
সাদি শুধু হাসলো। আজ জুম্মারদিন তাই সাদি গোসল করে একটা নীল রঙের পাঞ্জাবি পড়ে নিলো। সুমু রান্নাঘরে কাজ করছে। আর সাদি চিল্লিয়ে সুমুকে বলছে,
সাদিঃ সুমু! টুপি কই?
—কাবার্ড খুলে ডানপাশে দেখো। তার পাশেই সুগন্ধি রাখা আছে। উপরের বাম সাইডে জায়নামাজ রাখা! পাইছো?
সাদিঃ হ্যাঁ পেয়েছি।
—তাড়াতাড়ি করো! ১টা বেজে গেছে।
সাদিঃ হুম! এদিকে আসো বের হচ্ছি আমি!
সুমু এগিয়ে এসে সাদিকে দেখে একটা হাসি দিয়ে বলে,
—মাশাল্লাহ! সাবধানে যাও! আর টাকা নিছো তো?
সাদিঃ হুম! নিছি! আসি!
সাদি বের হতেই সুমু গেট আটকে রান্নাঘরের বাকি কাজ শেষ করলো। তারপর গোসল সেরে আগে নামাজ পড়া শেষ করলো। সাদি বাসায় এসে দেখে তার বউ হালকা নীল রঙের একটা শাড়ি পড়ে ডাইনিং টেবিলে খাবার পরিবেশন করছে। সুমুকে দেখতে এতো স্নিগ্ধ লাগছে। সুমুর দিকে এগিয়ে যেতে নিলেই স্লিপ খেয়ে পড়তে নিলো সাদি। কোনমতে ব্যালেন্স করে সুমুর দিকে তাকিয়ে বেশ রেগে বলল,
সাদিঃ সুমু……!!তোমার চুলের পানি আবার ফ্লোরে পড়ে কি অবস্থা! একটু হলে পড়ে যেতাম!
—তুমি তো জানো আমি চুল মুছতে পারি না।
সাদিঃ চুলটা বেধে তো রাখতে পারো!
—নাহ! পারিনা! জানো না চুল বাধলে আমার মাথা ব্যাথা করে।
সাদিঃ হায় খোদা! এখন ফ্লোরে ত্যানা দাও! নাহলে তুমি পড়ে যাবা!
—হুম!
.
শুক্রবার হলেই সাদি আর সুমুর ড্রেস সিলেক্ট করা থাকে। সুমুকে সাদির পছন্দ মতো শাড়ি পড়তে হয় এবং সাদিকে সুমুর পছন্দ মতো পাঞ্জাবি।
—মামুনি আর পাঁচ মিনিটের মধ্যেই বাসায় পৌছাবে।
সাদিঃ পাশের রুমটা ঠিক করছিলা?
—হুম সকালেই করছি।
সাদির মা বাসায় আসতেই সুমু তাকে ফ্রেশ হয়ে নিতে বলে আর মামুনির আনা আচারগুলো সেল্ফে রাখছে।
সাদি অবাক হয়ে বলে,
সাদিঃ এতো আচার কেন সুমু?
—হুম? আমি আনাইছি!
সাদিঃ(ভ্রু কুঁচকে) কেন?
—অবশ্যই খাইতে! কিসব বলো!
বলেই সুমু চলে গেলো। আর সাদি হা করে তাকিয়ে আছে। বিষয়টা কি হলো তাই ভাবছে সাদি!
,,
,,
,,
(চলবে)……..
ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।