তবু_আছি_কাছাকাছি (Doctors love)💕 #writer_Sumaia_Islam_Mim #part_8 💕

0
135

#তবু_আছি_কাছাকাছি (Doctors love)💕
#writer_Sumaia_Islam_Mim
#part_8
💕
.
.
সাদিকে খুশি মনে বাড়ি ফিরতে দেখে সাদির মা ও বেশ খুশি হলো। গতকাল বিষন্ন মুখে এসেছিল কিন্তু আজ বেশ খুশি। সাদির মা কৌতুহলবশত জিজ্ঞেস করলো,

মামুনিঃ কিরে সাদি! আজ মন খুব বেশিই ভালো মনে হচ্ছে?

সাদিঃ হ্যাঁ! আম্মু! আজ এমন কিছু হয়েছে যা আমার লাইফে প্রথম ঘটলো।

মামুনিঃ তা কি এমন হয়েছে যে আজ এতো খুশি?

সাদিঃ এক আধপাগলীর কথার জন্য আমার সব খারাপ মুড ভালো হয়ে গেছে!

মামুনিঃ(অবাক হয়ে) আধপাগলী?

সাদিঃ হুম!(হেসে)
।অতঃপর সাদি তার আম্মুকে সুমুর বিষয় সব বলে। সাদির আম্মুও সব শুনে হা!

মামুনিঃ আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না৷ এই মেয়ের সাথে অবশ্যই তোর কোন কানেকশন আছে নয়তো বারবার এই মেয়ের সাথেই কেন তোর ধাক্কা লাগে বা দেখা হয়! সাদি রে! আমার মেয়েটাকে খুব দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে!

সাদিঃ তুমি তো আজই চলে যাচ্ছো! দুইদিন থেকে গেলে দেখতে পারতে।

মামুনিঃ সমস্যা নেই পরে এসে দেখবো!

সাদিঃ তোমার ইচ্ছা।

.
বিকেলে সুমু বের হয়েছে কিছু কেনাকাটা করতে। ফোনে রাকিবের সাথে কথা বলছে,

— হ্যাঁ ভাই! তুই কই?

রাকিবঃ আমি হসপিটালে আছি! কেন কোন দরকার?

— হুম! আমার কার্ডে টাকা সব তুলে নিসি! তুই কার্ডে টাকা ভরে দিস!

রাকিবঃ আমি এখন একটু ব্যস্ত আছি। হসপিটাল থেকে বের হয়ে দিবো নে। ওকে?

— আচ্ছা! ভালো থাকিস!

রাকিবঃ ওক,,,,

—এই যাহ! ফোনের টাকাও শেষ হয়ে গেলো!

সুমু মার্কেটে গিয়ে কিছু কেনা কাটা করলো। আর আসার সময় হালকা স্ন্যাকস ও নিলো। হাতে একটা টাকাও নেই। হঠাৎ সামনে তাকিয়ে সুমু আবার হাতের সব দেখে নিলো। পার্স একদম খালি। এখন সুমুর প্রচুর কান্না পাচ্ছে! পাশে একটা সিড়িতে মন খারাপ করে বসে আছে। মাঝে মাঝে একটু কান্নাও করছে কিন্তু তার কোন প্রভাব নেই। ঠোঁট উল্টে, গালে হাত দিয়ে বসে আছে।

.
সাদি নিজের খাবারের জন্য বাহির থেকে কিছু কিনতে বের হয়েছে। রিক্সায় থাকা অবস্থায় হঠাৎ করে সুমুর দিকে নজর গেল। তাড়াতাড়ি রিক্সা থামিয়ে নেমে এলো। বাচ্চাদের মতো মুখ ফুলিয়ে বসে আছে। বারবার আড়চোখে কি যেন দেখছে আবার মন খারাপ করছে। সাদি সুমুর সামনে গিয়ে দাঁড়ায় কিন্তু সুমুর কোন হেলদোল নেই৷ সে একমনে অন্যদিকে তাকিয়ে আছে। এবার সাদি সুমুর সামনে তুড়ি বাজালো! সুমুর খেয়াল ফিরতেই সামনে তাকিয়ে দেখে সাদি।

—ডাক্তারসাহেব!

সাদিঃ এখানে কি করছো? আর মন খারাপ কেন তোমার?(চিন্তিত স্বরে)

সুমুর যেন দুঃখটা আরো বেশি গাঢ় হলো। ফুঁপিয়ে উঠতেই সাদি ব্যস্ত হয়ে পড়লো,

সাদিঃ কেউ বিরক্ত করেছে? বাজে কথা বলেছে? একবার বলো শুধু! কি হলো বলো! কেউ কিছু বলেছে?

—(মাথা নাড়িয়ে) হুম!

সাদিঃ কে?(রাগী ভাবে)

সুমু হাত দিয়ে ইশারা করে দেখালো। সাদি সামনে তাকিয়ে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো।

সাদিঃ ওই ফুচকাওয়ালা কিছু বলেছে?(রাগী কন্ঠে)

—না!!!! ওই ফুচকাগুলো বলেছে!(কাঁদো কাঁদো ভাবে)

সাদি এবার পুরোই অবাক! ফুচকা কথা বলেছে!

সাদিঃ কি বলেছে?(অবাক হয়ে)

—বলেছে! সুমু তুই আমার কাছে আয়। আমাকে খা!

সাদির এবার ভীষণ হাসি পাচ্ছে। ওকে ফুচকাগুলো নাকি ডাকছে!

সাদিঃ তো ফুচকার ডাকে সাড়া দিচ্ছো না কেন?

—দিবো কিভাবে? ফুচকাওয়ালা কি আমার শ্বশুর? আমার কাছে একটা টাকাও নেই!

সাদি এবার বুঝলো আসল কাহিনী। সুমুর মন আবারও খারাপ হয়ে গেল। সাদি খুব কষ্টে নিজের হাসি চেপে বলল,

সাদিঃ চলো তাহলে আমি তোমাকে ফুচকা খাওয়াই!

—(সাদির দিকে তাকিয়ে) আপনি কেন খাওয়াবেন?

সাদিঃ তাহলে তুমি কিভাবে খাবে?

—খাবো না! কষ্ট করে থাকবো!(ছলছল চোখে)

সাদি এবার একটু হেসেই দিল। এভাবে ফুচকা খাওয়ার জন্য বাচ্চাদের মতো কাউকে কাঁদতে এই প্রথম দেখলো সাদি।

সাদিঃ কষ্ট করে থাকতে হবে না আমি তোমাকে ফুচকা খাওয়াচ্ছি।

—আমি এভাবে ফাও খেতে পারবো না। আমার কাছে টাকা নেই! একটা কাজ করা যায়৷ আপনি কালকে আমার থেকে টাকা নিয়ে নিবেন!

সাদিঃ পরেরটা পরে দেখা যাবে। এখন চলো!

—আচ্ছা চলুন। তাড়াতাড়ি চলুন!

সুমুর হুশই নেই ও কি করছে! সাদির হাত ধরে টেনে নিয়ে গেল ফুচকার স্টলের সামনে। গিয়েই বলে উঠলো,

—মামা! দুই প্লেট ঝাল ঝাল করে ফুচকা দেন।

ফুচকাওয়ালাঃ আইচ্ছা!

সাদিঃ দুই প্লেট কেন? আমি তো খাব না!

—আপনার জন্য কে অর্ডার করলো?(অবাক হয়ে)

সাদিঃ তো দুই প্লেট যে?

—এই দুই প্লেট তো আমারই খেতে লাগবে। আপনি খেতে চাইলে অর্ডার করতে পারেন।

সাদিঃ নাহ! আমি খাই না!(হালকা হেসে)

—(বিড়বিড় করে) এলিয়েন!

সাদিঃ কিছু বললে?

—(দাঁত কেলিয়ে) নাহ!

ফুচকার প্লেট নিয়ে খুব মজা করে খাচ্ছে সুমু! যা অবাক হয়ে দেখছে সাদি। ফুচকার মতো একটা খাবারও মানুষ এতো মজা করে খেতে পারে? সাদিকে মুচকি মুচকি হাসতে দেখে সুমু ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞাসা করলো কি হয়েছে কিন্তু সাদি তো মুগ্ধ চোখে সুমুর এক্সপ্রেশন দেখছে। এর মধ্যেই সুমুর মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি এলো। সাদির হঠাৎ ফোন আসায় একটু দূরে যায়, এর মধ্যেই সুমু ফুচকাওয়ালাকে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে এক প্লেট ফুচকা বানাতে বলে। ফুচকাওয়ালা ও সুমুর কথা মতো বানায়। সাদি আবার স্টলের কাছে আসতেই সুমুকে জিজ্ঞাসা করে,
সাদিঃ খাওয়া শেষ?

সুমু কোন কথা না বলেই সাদির পায়ে খুব জোরে মাড়িয়ে দেই। সাদি পা উঠিয়ে আ করতেই সুমু ফুচকার প্লেট থেকে ফুচকা উঠিয়ে সাদির মুখে পুরে দেয়।

সাদির চোখমুখের এক্সপ্রেশন দেখে সুমু হেসে দেয়। আসলে সাদি কোনমতে ফুচকাটা খেয়ে আবারো পা ধরে লাফাতে থাকে কিন্তু সুমুর হাসির শব্দে সুমুর দিকে তাকাতেই যেন সাদির পায়ের ব্যাথা গায়েব হয়ে গেল।
সুমু তাকিয়ে দেখে সাদি তার দিকেই তাকিয়ে আছে। সুমু এখনো হাসছে তবে আস্তে।

—ডাক্তারসাহেব কি বেশি ব্যাথা পেলেন? পায়ে তো ব্যাথা থাকার কথা না!

সাদি হঠাৎ খেয়াল করলো আসলেই তার পায়ে ব্যাথা নেই। অবাক চোখে সুমুর দিকে তাকাতেই সুমু বলল,

—আমি আমার পায়ের পাতা দিয়ে মাড়িয়েছি তাই ব্যাথা নেই। শুধু তাৎক্ষণিক ব্যাথা পাবেন এতে কিন্তু সিরিয়াস ভাবে ব্যাথা দিতে চাইলে হিলের অংশ দিয়ে জোরে পা মাড়িয়ে দিতাম।

সাদির এখন খেয়াল হলো সে ফুচকা খেয়েছে। ফুচকার টেস্ট টা অনেক বেশি ভালো ছিল।

সাদিঃ সুমু! আমি ফুচকা খেয়েছি?

—জ্বি ডাক্তারসাহেব!(হেসে)

সাদিঃ বাট ফুচকা তো বাজে খাবার কিন্তু এটা তো অনেক মজা লেগেছে।

—মজা তো লাগবেই। আমি নির্দেশনা দিয়ে বানিয়ে দিয়েছি! খেয়ে দেখতে পারেন!

তারপর সাদিও সুমুর সাথে ফুচকা খেলো। সাদির কাছে মুহূর্ত টা অনেক বেশিই ভালো লেগেছে। হয়তো এই অতিরিক্ত ভালো লাগার কারনটাই সুমু!
.
.
.
পরদিন সুমু কলেজে গিয়েই সাদিকে খুঁজতে শুরু করলো। এর মধ্যেই নীল এসে সুমুর মাথায় গাট্টা মারলো!

— দেখ ভাই! এমন মাথা গাট্টা মারবি না। বিরক্ত লাগে।

নীলঃ ওই ড্রামাকুইন! অফ যা। তোর বিরক্ত লাগার ধার ধারি আমি? হুহ!

—তা তো জানিই!

নীলঃ এখন বল কাকে খুঁজিস?

—ডাক্তারসাহেবকে!

নীলঃ সাদি স্যারকে? কেন? কি দরকার?

—তোরে কেন কমু? দূর হো ফাজিল পোলা!

নীলঃ পেত্নী! তুই দূর হো! তুই স্যাররে খুঁজোস কেন? কে গোল পাকাইছো তুমি?(ভ্রু নাচিয়ে)

—বালের গোল পাকাইছি! সর তো!

নীলঃ নাও আই এম সিরিয়াস! কেন খুঁজোস?

—আরে স্যার আমার থেকে টাকা পায়। এটাই দিতে খুঁজি।

নীলঃ ওহ! আচ্ছা। তুই খুঁইজা দিয়ে আয়। আমাকে অনু ফোন করছে। গেলাম।

—ওক্কে!

নীল চলে যেতেই সুমু আরেকটু সামনে এগুতেই সাদিকে দেখতে পেল।

—ডাক্তারসাহেব!(জোরে)

সাদি পিছন ফিরে সুমুকে দেখতে পেয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। সুমু দোড়ে এসে হাঁফাতে হাঁফাতে বলতে থাকে,
—আপনার টাকাটা!(এগিয়ে দিয়ে)

সাদি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে হাত গুটিয়ে নিল। তা দেখে সুমুও ভ্রু কুঁচকে ফেলল।

সাদিঃ আমি কি তোমাকে টাকা দিয়েছিলাম?

— হ্যাঁ! কালকেই তো আমরা ফুচকা খেলাম! মনে নেই?

সাদিঃ হ্যাঁ মনে আছে। কিন্তু আমি কি টাকা তোমার হাতে দিয়েছিলাম?

—না। আপনি তো ফুচকাওয়ালাকে দিলেন টাকাটা! তাও আমার পক্ষ হয়ে।

সাদিঃ হ্যাঁ। কিন্তু টাকাটা তো আমি তোমার হাতে দেই নি। তাহলে আমি কেন হাতে টাকা নিব। তোমার তো আমাকে অন্য উপায়ে টাকা দাওয়া উচিত! তাই না?

—(ভ্রু কুঁচকে) তাহলে কি উপায়ে দিব?

সাদিঃ(বাঁকা হেসে) আমার কাছে একটা আইডিয়া আছে! চাইলে নিতে পারো!

—(ঢোক গিলে) কি উপায়?

,,
,,
,,
,,
(চলবে)……..

(নিন দিলাম বড় করে! আজ যদি কেউ বলছে যে ছোট হইছে, কালকে গল্পই দিব না! লিখতে অনেক সময় লাগে, তবুও পাঠক/পাঠিকার কোমল হৃদয়ে আমার জন্য মায়া হয় না! আজকে একটু ভালো ভালো কমেন্ট করেন। নাইস, নেক্সট আর কতদিন? এটা আপনাদের একটা রোগ হয়ে গেছে! মনে রাইখেন আপনাদের রিপ্লাই দিতে না পারলে কি হয়েছে, প্রত্যেকের কমেন্ট আমি পড়ি!)

ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here