চিত্তসন্ধি পর্ব ৪ লেখা: #Azyah

0
4

#চিত্তসন্ধি
পর্ব ৪
লেখা: #Azyah

“আম্মু তুমি আমার মা তো?নাকি দত্তক নিয়েছিলে আমাকে?”

আদরের এমন কথায় মোটেও গুরত্ব আরোপ করলেন না জোহরা খাতুন।এটা তার কমন ডায়লগ।তার বিপরীতমুখী কিছু ঘটলেই তার এসব ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল চলে।মার হাত ঝাঁকিয়ে আবার প্রশ্ন করলো আদর,

“বলছো না আম্মু?কেনো করলে এটা?”

“চাকরি নেই চাকরি নেই বলে বাবার কাছে লাফাচ্ছিলিস।এখন আমি ব্যবস্থা করে দিলাম তাতেও তোর আপত্তি।”

“আম্মু আমি চাকরী করতে চাই ঠিকই।কিন্তু এই কসাই এর কাছে না।”

“কসাই?এগুলো কেমন ভাষা?”

“ডাক্তাররা কসাই হয় আম্মু”

“নিজে ডাক্তার হতে পারোনি বলে অন্যের কাজকে অপমান করতে পারো না আদর।”

“আমি অপমান করছি না মা।উনি কেমন আমি সেটা এই তিনদিনে মেপে ফেলেছি।আমাকে অনেক প্রেশারে রাখবে কাজে রাখলে”

“কাজে একটু আকটু প্রেশার থাকেই।”

“আম্মু!”

“তুমি কি কোনোদিন ঠিক হবে না আদর?কত ভোগাবে আমাকে?অনেক চিন্তা হয় আমার তোমার জন্য।নিজের জীবনটাকে এবার একটু গোছাও। ভাবো নিজেকে নিয়ে।কঠোরতা মানুষকে মজবুত করে মনে রেখো।”

______

আগুনের দিন গুণছে সকাল
বাসস্টপে একা আলোর পথিক
রাতে ঝমঝম দিনের অসুখ
পুড়ছে শহর
যে গল্পের নাম ঠিকানা
আমার কাছে আজও অজানা
সেই গল্পে ঠায় দাঁড়িয়ে গাইছি এ গান।

“কি লাভ এসব গানের?যদি মনে প্রেম প্রেম অনুভুতিই না থাকে?”

মোবাইলের গান বন্ধ করে রায়হানকে ফিরতি প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হলো,

“ডিউটি শেষ?”

“হ্যা রে।”

“বাসায় যাননি কেনো?”

“ভাই এবার এই ডাক্তারি ফর্মালিটি বাদ দে।আমরা কেউই এখন ডিউটিতে নেই।”

“আচ্ছা দিলাম বাদ”

“ওই মেয়েটিকে রিলিজ দিয়ে দিয়েছিস?”

“কোন মেয়ে?”

“ঐযে আআআদদদররর!”

সুরেলা কণ্ঠে আদর শুনে মেহতাব কিছুটা বিরক্ত অনুভব করলো। বিরক্তি নিয়েই বললো,

“হ্যা কেনো?”

“ইস! ভাবলাম একটু গিয়ে দেখে আসবো।কি কিউট!একদম বাচ্চাদের মতন।কাশ!আমার পেশেন্ট হইতো।সারাজীবন হসপিটালে অ্যাডমিট রাখতাম।”

“হয়েছে?” মেহতাবের ভাবলেশহীন প্রশ্ন।

“হাহ! গেলাম আমি।থাক তুই বিরহে।আদর যেদিন আসবে একটু জানাস আমাকে”

“নিজের সময়” নিজের জন্য নির্ধারিত এই সময়টা দিনের যেকোনো মুহূর্তের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।এই সময়ে সারাদিনের কর্মকাণ্ডের হিসাব নিকাশ মিলিয়ে নেওয়া হয়।ঘরজুড়ে নীলচে নিয়ন আলো। মেহতাব এর মতে নীল রং মস্তিষ্ক শান্ত রাখে।পজিটিভ ভাইব দেয়।এখন রাত বারোটা।সব বিষয় থেকে ছিন্ন করে নেয় সে এই সময়টাতে। একটায় ঘুমিয়ে আবার সকাল নয়টায় উঠে পড়তে হবে।দৌঁড়াতে হবে ক্লিনিকের উদ্দেশ্যে।এই এক ঘন্টা তার নিজের।নিজেকে প্রশ্ন উত্তরের।দিনে রাতের সকল হিসাব নিকাশের।আজ তার মন মস্তিষ্ক তাকে বিশেষ জেরা করছে।

“কেনো গেলি আজ সেই রুমে?কিসের টানে?”

মানুষের প্রশ্নের পিঠে প্রশ্ন করে এড়িয়ে যাওয়া যায়।বেশ অবলিলায় কথার প্রসঙ্গ পরিবর্তন করা যায়।কিন্তু নিজের মন মস্তিষ্ককে কিভাবে এড়িয়ে যাবে?উত্তর দেওয়া এখানে আবশ্যক।বাধ্যতামূলক!

ফোনে টুংটাং শব্দ বেজে উঠলো। মেহতাব চোখ বুঝে নিল সঙ্গেসঙ্গে।স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ছে।যাক এখন মনোযোগ অন্যদিকে ঘোরানো যাবে।ফোনের শব্দ তাকে জেরা থেকে বাঁচিয়ে নিলো।মেহতাবকে নিজের কাছেই নিজেকে বড্ড অদ্ভুত লাগে।তার মধ্যের এসব ভুলভাল চিন্তা শুনে মানুষ তাকে ডাক্তার না পাগল ভাববে।

ফোন হাতে নিলো।মেইল এসেছে।আদর পাঠিয়েছে।তার সিভি দেওয়ার কথা ছিল সেটাই দিয়েছে সে।প্রথম অবাক করা বিষয় তার মেইল পাঠানো। মেহতাব ভেবেই নিয়েছিলো সে তার সিভি দিবে না।চেহারায় স্পষ্ট ছিল সে ইচ্ছুক নয় কাজে। দ্বিতীয়টা হচ্ছে এত রাতে মেইল পাঠানো।মোবাইলের স্ক্রিনেই সিভি চেক করতে করতে ঘড়িতে চোখ বুলিয়ে নিয়েছে। বারোটা আটত্রিশ বাজে।মেজাজটা আকষ্মিক বিগড়ে গেলো।

ফিরতি মেইলে লিখে পাঠালো,

“এটা মেইল পাঠানোর সময়?”

মোবাইলে বন্ধুদের সাথে গ্রুপ চ্যাটে আড্ডা জমিয়েছে আদর।মাত্র মেইল করে মনে হলো মায়ের টর্চার থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।কয়েক মিনিটের মাঝে মেইলের উত্তর এসেছে।মেসেজ দেখে ফুরফুরা মেজাজ হারিয়ে গেলো।তার ইচ্ছে সে যখন মন চায় মেইল দিবে।এতে তার কি সমস্যা?চেক না করলেই পারে!

সেও আবার সেটার উত্তরে বললো,

“আসলে সারাদিন ব্যস্ত ছিলাম।এখন সময় পেয়েছি তাই পাঠিয়ে দিলাম।ডিস্টার্ব করে থাকলে দুঃখিত।”

মিনিট তিনেক অতিবাহিত করে আবার মেইল এসেছে। যিনি পাঠিয়েছেন তিনি মেহতাব-ই।এভাবে মেইলে মেইলে কথা বেশি নস্টালজিক হয়ে গেলো না?আদরের মাথায় আপাদত এই ভাবনাই ঘুরছে।ভাবনায় ছেদ পড়লো মেইলটি পরে।চোখ বড় করে ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে আছে।অন্যদিকে বন্ধুগন তার ফিরতি মেসেজের অপেক্ষায়।

“আপনার ডায়েট চার্ট এর নিচে বড় বড় অক্ষরে লিখবেন খাবার আর ওষুধের সাথে প্রতিদিন ৯ ঘণ্টার ঘুম মেন্ডাটরি।রাত ১২ থেকে সকাল ৯ টা।আর হ্যা… পরশুদিন থেকে আপনার ডিউটি”

মানুষ যখন পায় তখন চারদিক থেকে পায়।আর যখন ফাসে উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব-পশ্চিম সব দিক দিয়ে ফাঁসে।আপাদত আদরের অবস্থা ঠিক তাই।খাবার দাবারে বিশেষ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।এখন কিনা ঘুমের উপরও! ঘুমোতেও হবে তার ইচ্ছে মত।আদরের জীবনের প্রত্যেকটা ক্রিয়া প্রক্রিয়া নিজের আয়ত্তে নিতে চাচ্ছে সে?

___

অন্যমনস্ক হয়ে ক্লাসে সামনের দিকে চেয়ে আছে আদর। গালে হাত রেখে।স্যার কি লেকচার দিচ্ছে সেটা তার বরাবর মাথার এক ফুট উপর দিয়ে যাচ্ছে।আসলে ব্রেইন এসব ডায়জেস্ট করার মুডে নেই।পাশেই গভীর মনোযোগী শান্তা মারমা।চোখে চশমা,চোখ স্যারের মুখের দিকে আর অনবরত হাত চলেই যাচ্ছে তার। শান্তা পড়ালেখায় মনোযোগী হওয়ায় আদর, রুবি আর রোহিতের জন্য সুবিধেই হয়েছে।তার থেকে নোটস নিয়ে নেওয়া যায় পরে।সামনে বসেছে রোহিত।তার ঠিক পেছনে রুবি।রুবি কলম দিয়ে খুব সাবধানতার সাথে রোহিতের শার্টে কারুকার্য করে দিচ্ছে। রোহিত এতটাই ধ্যানহীন আচই পাচ্ছে না তার অগোচরে রুবি তার শার্টে গাছপালা, ঘরবাড়ি, ফলমূল একে বসে।

বেল বাজলো ক্লাস আজকের মতন শেষ। বেলের আওয়াজে আদরের মস্তিষ্ক সজাগ হয়েছে। শান্তা তার লেখালেখি আর রুবি তার আকাঝুকি থামালো।সারা ক্লাস জুড়ে হইচই।তার মধ্য দিয়ে তারা চারজন নিঃশব্দে সবাইকে এড়িয়ে ক্লাসের বাইরে চলে গেলো।
চশমা ঠিক করতে করতে শান্তা বললো,

“কিরে রোহিত! তোর শার্টে আমি শিল্পকলা একাডেমী দেখতে পাচ্ছি”

অবাক কণ্ঠে রোহিত বললো, “মানে?”

রুবি খিলখিল করে হাসছে।আদরও বুঝেছে এর পিছনের আসামি রুবি।রোহিত একমাত্র ছেলে তাদের দলের। চাইলেও নারী শক্তির সামনে মুখ খুলতে পারে না।তার চেয়ে বড় ব্যাপার রুবির প্রতি তার দুর্বলতা।মেয়েটার সব উল্টোপাল্টা কাজে জোর গলায় প্রতিবাদ করতে গিয়েও আটকে যায়।শার্টের নিচে টি শার্ট পরে থাকায় আজকের মতন সম্মান বেচে গেলো তার।শার্ট খুলে রুবির হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল,

“ধুয়ে আনবি”

“চল রবীন্দ্র সরোবরে যাই” রুবি বলল।

তপ্ত নিঃশ্বাস ছেড়ে আদর বললো, “আমার জীবনে আর ঘোরাঘুরি নেইরে।আজ থেকে সবকিছুর ইতি টানলাম”

রোহিত প্রশ্ন করলো, “কেনো?কেনো?”

“ওই অসভ্য ডাক্তারের পার্সোনাল অ্যাসিস্টেন্ট হিসেবে আমাকে বেছে নিয়েছে।আজ যেতে বলেছে।” মুখখানা ছোট করে উত্তর দিলো আদর।

শান্তা চশমা ঠিক করতে করতে বলল, “দেখতে কেমন রে?”

“আছে মোটামুটি”

“পার্সোনাল অ্যাসিস্টেন্ট থেকে পার্সোনাল পারসন হয়ে যা।”

“কি বলিস?”

“আহাগো সোনাগো আমার বুঝো না?ডাক্তারকে প্রেমের ফাঁদে ফেল।দেখবি বেশি প্যারা দিবে না।” রুবি আদরের কাধে কনুই ঠেকিয়ে বললো।

“ইশ! ইয়াং বলে এতোটা ইয়াং না।বিবাহিত মনে হয়।মানুষের জামাইরে প্রেমের ফাঁদে ফেলবো। ছিঃ!”

রোহিত বললো, “ব্যাড লাক ”

“হুম।আমি মানতে শুরু করেছি আমার জীবনে আর শান্তি নাই”

আদরের চেহারা দেখে সবাই খারাপ লাগার অভিনয় করলো।কিছু মুহূর্ত পর অট্টহাসিতে ফেটে পড়েছে সবাই।তাদেরও দোষ কোথায়।এদের বন্ধু হাসলেও হাসতে ইচ্ছে করে।আবার বন্ধু কষ্টে থাকলেও হাসতে ইচ্ছে করে।এসব বন্ধুধর্ম।
___

“আসতে পারি?”

সাদা কাগজে কলম দিয়ে অযথা আকাঝুঁকি করছিলো মেহতাব।অলস সময় পার করছিলো।আজ কাজের তেমন চাপ নেই।মেয়েলি কন্ঠ পেয়েছে ঠিকই কিন্তু চোখ তুললো না।শুধু বললো,

“আসেন”

আদর সামনে এসে দাড়িয়েছে।হাতে একটি খাতা।ব্যাগ এককাধে ঝোলানো।বেগুনি আর সাদার সংমিশ্রণের একটি ড্রেস তার পরনে।বাহিরে প্রচন্ড রোদ। বাসের ঠেলা ধাক্কা খেয়ে এসে পৌঁচেছে এখানে।এসির বাতাস যেনো শীতলতা এনে দিয়ে গেলো সারাদেহে।
মেহতাবকে ভাবলেশহীন দেখে বলে উঠলো,

“আসসালামু আলাইকুম”

“ওয়ালাইকুম আসসালাম”

সালামের উত্তর নিয়ে সে তার একই ভঙ্গিতে।কপালে গাঢ় ভাজ পড়লো।সেকি দাড়িয়ে থাকবে।এই লোক কি তাকে বসতেও বলবে না?

“বসেন!”

বসেন শুনে চোখ তুলে তাকালো আদর।উনি কোনোভাবে মনের কথা পড়তে জানে নাতো?সেদিন তাকে যখন থ্রেট করছিলো খাবার নিয়ে তখনও ধরে ফেলেছিল তার মনে কি চলে।

“ধন্যবাদ”

চেয়ারে হেলান দিয়ে দুহাত একসাথে নিয়ে বললো,

“কেমন আছেন?”

এমন প্রশ্নে ভ্রুদ্বয় উচু করে আদর মনে মনে ভাবছে,

“আপনি আর ভালো থাকতে দিয়েছেন কই?”

মুখ দিয়ে বলতে যাবে “ভালো আছি” তার আগেই মেহতাব বললো,

“ভালো না থাকারই কথা”

আদরের চক্ষু চড়কগাছ।আবার ধরে ফেললো! সাবলীল ভঙ্গিতে উত্তর দিলো,

“জ্বি না ভালো আছি”

“হুম! একটু বসুন আপনার কাজের একটা রুটিন তৈরি করছি। পরে বুঝিয়ে দিবো”

আদর মাথা দুলিয়ে উত্তর দিলো, “জ্বি”

ল্যাপটপে আঙ্গুল চালাতে চালাতে আদরের ক্লান্ত চেহারায় চোখ বুলিয়েছে মেহতাব।ঘেমে কপালের ছোট চুলগুলো লেপ্টে আছে। তৈলাক্ত চেহারা।নির্ঘাত চোখ ঘষেছে। নাহয় এক চোখের কাগল লেপ্টে থাকবে কেনো?

“ডান পাশটাতে ওয়াশরুম আছে।হাত মুখ ধুয়ে আসতে পারেন।”

“জ্বি?”

“ফ্রেশ হয়ে আসুন”

ফোন আর ব্যাগ ডেস্ক এ রেখে আদর চলে গেলো ফ্রেশ হতে।বেশ কিছুক্ষন সময় দিয়ে চোখে মুখে পানি ছিটিয়েছে।এখন একটু ফ্রেশ লাগছে। এটারই দরকার ছিল।নাহয় ঘাম শুকিয়ে পুরো চেহারা তেলের খনিতে পরিণত হয়েছিল। টিসু দিয়ে ভালো ভাবে মুখ মুছে নিলো।সাথে অগোছালো চুলগুলোও ঠিক করে নিয়েছে।

“আপনার কাজ হচ্ছে আমার সাথে ছায়ার মতন লেগে থাকা”

কথাটি অদ্ভুত শোনাচ্ছে। ছায়ার মতন লেগে থাকা বলতে কি বোঝালো সে?

“মানে আমার সব কাজ লাইক পেশেন্টের সমস্ত ডিটেইলস, পেশেন্টদের ফাইল তৈরি করা,সার্জারি টাইম হাতে কলমে লিখে রাখবেন।যেদিন যেদিন আমার ডিউটি থাকে মানে সপ্তাহে চারদিন।সেই চারদিনের সমস্ত কাজের বিবরণ আপনার নোটবুকে লেখা থাকবে।রিমাইন্ডার দিবেন আমাকে।মাঝেমধ্যে ফিল্ড ওয়ার্কে যাওয়া লাগে।সেখানেও আমার সাথেই থাকবেন।সবকিছু মুখে বলে বোঝানো সম্ভব না।কাজ করতে করতে আশা করি বুঝে উঠবেন।গট ইট?”

“জ্বি”

মেহতাব থামলো।থেমে একবার আদরকে দেখে দিয়ে বললো,

“কাজে কোনো গাফিলতি আমার পছন্দ না।টাইম মেইনটেনেন্স ইস ভেরি ইম্পর্ট্যান্ট ফর মি।তাছারাও আপনি আমার অ্যাসিস্টেন্ট ছাড়াও আমার পেশেন্ট। উভয়ক্ষেত্রে আপনাকেই এলার্ট থাকতে হবে।আমি কোঅপারেট করবো।”

“জ্বি আচ্ছা”

পুতুলের মতন মাথা নাড়িয়ে মেহতাব এর সকল কথা হজম করে যাচ্ছে আদর। পেটে ইদুর বিড়াল দৌড়া দৌড়ি করছে।সেই সকাল ৯টায় নাস্তা করে ক্যাম্পাসে এসেছে।এখন দুপুর গড়ালো।খাওয়া দাওয়া হয়নি। খুদায় মুখটা শুকিয়ে যাচ্ছে।তার উপর সামনে বসা ডাক্তার সাহেবের বাণী! বিরক্ত লাগলেও প্রকাশে বাধা।

দেলাওয়ার হোসেন খাবারের ট্রে হাতে নিয়ে ভেতরে চলে আসলো।দরজা খোলার আওয়াজে আদর ঘুরে তাকিয়েছে।দেখেই বুঝা যাচ্ছে খাবার আনা হয়েছে।ঠোঁট কামড়ে অন্যদিকে ঘুরে আবার তার জাতীয় কাজ শুরু করলো। বিরবিরানো।বলছে,

“এমনেই ক্ষুদা পেয়েছে।এই সময় এই কাজের চাপে শুকিয়ে যাওয়া লোকের খাবার আনার কি দরকার ছিল!আমার সামনে বসে এই লোক খাবে আর আমি চেয়ে দেখবো!নিজেকে পরীক্ষায় বসা পরীক্ষার্থী মনে হচ্ছে। টিচাররা সামনে বসে চা সিঙারা খায় আর স্টুডেন্টরা সেগুলো হা করে চেয়ে দেখে। উফ!”

“শেষ?” মেহতাব এর কথায় সামান্য ঘাবড়ে গেল আদর।কি শেষ?

“জ্বি? বুঝিনি।”

“আপনার বিড়বিড় করা শেষ?”

এই লোকের সামনে দেখছি মুখ না মনকেউ সাবধানে রাখতে হবে।এত নিচু স্বরে বলার পরও কিভাবে বুঝে যায়?

“শেষ হলে খেয়ে নিন।আগামী দিন থেকে দুপুরের খাবার সাথে আনবেন।আর সেটা অবশ্যই আমার দেওয়া ডায়েট প্ল্যান অনুযায়ী”

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here