#চিত্তসন্ধি
পর্ব ২৫
লেখা: #Azyah
“জানি আমি।আপনি কত কথাইতো বলেন। আমি শুনেও শুনি না।আপনাকে দোষ দিচ্ছি না।আপনার কথাটা আমাকে উপলব্ধি করতে বাধ্য করলো আমি আমার বাইশ বছরের জীবনে নিজের জন্য কিছুই করিনি।আর এই কারণেই অন্য মানুষ দ্বারা আমার জীবন কন্ট্রোল হয়েছে।”
আদরের সবগুলো কথা অক্ষরে অক্ষরে শুনেছে। মস্তিষ্কে ধারণ করছে মেহতাব। ধারণক্ষমতার চাইতেও দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা।দ্রুত সিদ্ধান্ত,দ্রুত সেই সিদ্ধান্তে আমল করা।
আদরের হাত চেপে বললো,
“চলো”
আদর চিন্তান্বিত। কোথায় যাওয়ার কথা বলছে? মেহতাবের চোখে চোখ পরতে ইসস্ততবোধ করলো। দৃষ্টি নামিয়ে প্রশ্ন করলো,
“কোথায়?”
“তুমি যে কথাগুলো বললে?সেগুলো কতটুকু সঠিক আর কতটুকু যুক্তি আছে কথার সেটা বিচার করতে হবেনা?”
কথার মারপ্যাঁচ আদৌ কি বুঝেছে আদর?নাহ একদমই বোঝেনি।এত পেঁচিয়ে বলার মানে কি?সহজ ভাষায় যেনো কথাই বলতে জানে না।একটা বাক্য বুঝতে আরেকবার প্রশ্ন করতে হয়।
এখনও তাই মানে বুঝতে না পেরে আবারো শুধালো,
“মানে?”
মেহতাব সোজা হয়ে দাড়িয়েছে। সামান্য বিরতিতে ডেস্কের সামনে গিয়ে মোবাইল চাবি পকেটে রাখলো। ল্যাপটপসহ যাবতীয় কাজের জিনিসও ব্যাগে নিয়েছে।শুধু এপ্রোনটা চেয়ারে ঝুলিয়ে বলে উঠলো,
“পার্কিংয়ে গিয়ে দাড়ান। আসছি ”
“এখন কেনো যাবো।আপনার আমার ডিউটিতে এখনও একঘণ্টা বাকি”
ভাবলেশহীন উত্তর আসলো সঙ্গেসঙ্গে, “যা বলেছি করেন।”
____
অনেক পেশেন্টে তার সিরিয়াল ক্যানসেল করেছে।আজ নাই ছিলো কোনো অপারেশন, রাউন্ডও ছিলো না।হাতে অবসর সময় ছিলো বলে একঘণ্টা আগেই বেরিয়ে গেছে।এতে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি।গাড়ি চলছে আপন গতিতে।আজ আবহাওয়াটাও বেশ ঠাণ্ডা।গরমের প্রকোপ কমেছে।মেহতাব সিদ্ধান্ত নিলো এসির বাতাসের চেয়ে প্রাকৃতিক বাতাসই শ্রেয়।গাড়ীর জানালা নামিয়ে দিল তৎক্ষনাৎ।গাড়ীর ভেতরে বসে থাকা দুজন মানুষই শব্দহীন।গাড়ীর হর্ন এর আওয়াজ ছাড়া আর কোনো আওয়াজ নেই।মেহতাব মনোযোগী গাড়ি চালাতে।আদর বাহিরের দৃশ্যে।রাস্তায় হাজার যানবাহন।তার মধ্যে হাজার মানুষ।কেউ বাড়ি ফিরছে,কেউ হয়তো স্নিগ্ধ বিকেল উপভোগ করছে তিন পায়ার রিকশায় চরে।রিকশা চালক বিকেল উপভোগ করার চেয়ে বেশি জীবিকা নিয়ে চিন্তিত।আশেপাশের প্রত্যেকটা মানুষের জীবন একটা একটা করে গল্প।কারো দুঃখের,কারো সুখের।
আদরের জীবনের গল্প বললে সেটা হবে সবকিছুর পাওয়ার পরও একটা অপূর্ণতা।অপূর্ণতা!ভারী শব্দ।ভাবতে শুরু করলে এই ভারী বোঝার নিচে চাপা পড়ে যাবে।নিজেকে চাপা পরে যাওয়ার ঠিক রক্ষা করার মতন মজবুত সে নয়।
গাড়ীর সিটে মাথা হেলান দিয়ে মেহতাবের দিকে দৃষ্টি স্থাপন করলো।এইযে মানুষটা?আদরের জীবনে তার কি চরিত্র?হটাৎ করে এলো।অনেকটা অংশজুড়ে বসে গেলো।চোখের পলক ঝাপটাতেই মানুষের জীবনের গতি বদলে যায় না?সামান্য অজ্ঞান হওয়ার বাহানায় তার মতন একজন চলে এলো।তার চেহারার দিকে তাকালে গম্ভিরতার সাথে আরো একটা জিনিষ বেশ লক্ষণীয়।সেটা হলো মায়া।গায়ের রং মোটামুটি ফর্সা। শ্যামলাও বলা যায় না।তার মুখশ্রী ছাড়াও সবচেয়ে আকর্ষণীয় তার সবক্ষেত্রে পরিপাটি থাকা আর কন্ঠস্বর।রেগে,শান্তভাবে,ধমকে,গম্ভীরভাবে যেভাবেই কথা বলুক শুনতে ভালো লাগে।এতদিন তার কোনোকিছুই ভেবে দেখা হয়নি।আজ এক গাঢ় দৃষ্টি স্থাপন করে তার ভাললাগার দিকগুলো টুকে নিচ্ছে আদর।ডাক্তার,আর বস ছাড়া আর কি কোনো চরিত্রে আছে সে আমার জীবনে?
“তাকিয়ে আছেন কেনো?”
আদর ঠান্ডা স্বরেই উত্তর দিলো,”ভাবছিলাম জিজ্ঞেস করবো কোথায় যাচ্ছি।আপনিতো উত্তর দিবেন না”
“গুড।এভাবেই মুখ বন্ধ করে বসে থাকেন”
অবিলম্বে আদর আবারো জানালার বাইরে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে।এখন থেকে তার প্রত্যেকটা কথার জবাব কি হতে পারে আন্দাজ করে ফেলছে সে।মেহতাব সুদূর রাস্তা ঠিক নজর সরিয়ে আদরকে দেখে স্মিথ হাসলো।মানিয়ে নিয়েছে হয়তো তার এই এড়িয়ে যাওয়ার অভ্যাসকে।তার হাসিটা সবসময় আদরের অগোচরেই হয়। সে আজও দেখেনি।হয়তো মাথা না ঘোরালে দেখতো।আবার এমনও হতে পারত আদর মাথা না ঘোরালে মেহতাব হাসতই না।হাসিটাকেও টপকে এড়িয়ে যেত।
রাস্তা থেকে আদরের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় আগেই তাগাদা দিয়েছিল কোথায় যাওয়া হচ্ছে। নিশ্চিত ছিলো না।রাস্তাটা তার পরিচিত আগেও এসেছে এখানে।পূর্বাচল একুশ নম্বর সেক্টর।সামনেই আছে বিশাল দীঘি।নাম ব্লু লেক।জায়গায় নামকরণের সার্থকতা স্থানটি দেখলেই বোঝা যায়।তাদের আসতে প্রায় চল্লিশ মিনিট সময় লেগেছে।তখন প্রায় বিকেলের শেষ প্রহর।তবে এখনও দিনের আলো ছড়িয়ে আছে।কোলাহলে ভরপুর এই জায়গা।কেউ পরিবার,কেউ প্রিয়জন নিয়ে এসেছে।মেহতাব হেঁটে আদরের চেয়ে কয়েক কদম দূরে চলে গেলো।আদর তার সাথে গতি মেলাতে অক্ষম। অন্যথায় কোনো উপায় না পেয়ে দৌড় লাগলো।হাটতে হাটতে লেকের এক কাছে বাঁশের তৈরি একটা পুলে এসে দাঁড়িয়েছে।পেছন ঘুরে আদরকে বললো,
“আসেন”
বুকে হাত রেখে হাপাতে হাপাতে আদর বললো,
“এটা যদি ভেঙে এই লেকে পড়ে যায়?”
বেকুব ,নির্বোধের মতন একটা প্রশ্ন।এতবড় বাঁশের তৈরি পুল তার ওজনে ভেঙে যায়।মাঝেমধ্যে আদরের কথা শুনে নিজেকে নিজে বকতে ইচ্ছা করে মেহতাবের।
“আমি দাড়িয়ে আছি ভেঙে পড়ছে না।আপনি দাড়ালে ভেঙে যাবে?”
“আপনার একার ওজন নিচ্ছে এটা।আমি আসলে আরো চল্লিশ কেজি বেড়ে যাবে।গণনা করলে দেখা যাবে আমার চেয়ে আপনার ওজন বেশি।হবে আশি নব্বই কেজি।এদিকে আমার দোষ হবে না কিন্তু ভেঙে গেলে আপনি আমার উপরই রাগ দেখাবেন।”
মেহতাব বিরক্তি চাহনি দিয়ে বললো,
“আমি মাঝেমধ্যে অবাক হই।আপনার মতন এত বড় একটা মেয়ে এত আজগুবি কথাবার্তা বলে কি করে?”
“আসছি আসছি!আপনি সবসময়ই আমাকে বকবেন!”
বলতে বলতে মেহতাব এর পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।মেহতাব বসে পড়লো।পা তুলে জুতো জুতো, মোজা খুলে নিচ্ছে।কাজ করতে করতেই।মাথা তুলে আদরের দিকে চেয়ে বলল,
“বসেন”
ততক্ষণে জুতো খুলে পাশে রেখে দিয়েছে মেহতাব।পা ডুবিয়েছে দীঘির ঠান্ডা পানিতে।মেহতাব এর ভাষ্যমতে আদরকে এখানে বসতে হবে।জায়গা খুবই কম।একদম গা ঘেঁষে বসা লাগবে।এটা ভেবেই আদর ঢোক গিলে।
“কি হলো।বসছেন না কেনো?এক কথা দুইবার বলা লাগে কেন?”
ধমকের সুরে বলল মেহতাব।
দূরত্ব রেখেই বসে পড়লো আদর।তারপরও একজন আরেকজনের প্রায় ছুঁইছুঁই।এখনই অসস্তি লাগা শুরু করবে।অস্থির হয়ে উঠবে মন মস্তিষ্ক।
“জুতো খুলে বসুন।ঠান্ডা পানিতে পা ভেজালে পা শিথিল হয়।ক্লান্তি দূর হয়”
“না নাহ!আমি জুতোর ফিতা বাঁধতে পারি না ঠিক মতন।পড়ে ঝামেলা হবে।”
“আমি এক কথা বারবার বলতে পছন্দ করি না।যা বলেছি করেন”
“একদম না।জুতোর ফিতে বাঁধতে গিয়ে অনেক সমস্যায় পড়ে যাবো”
“আমি আপনার জুতো খুলে দীঘিতে ফেলে দেই?”
ঠান্ডা হুমকিতে সবসময়ের মতন দমে গেলো আদর।জুতো খুলে নিজেও পা ডুবিয়েছে দীঘির জলে।আসলেই আরাম লাগছে।শীতলতা পা বেয়ে শরীরে ছড়িয়ে যাচ্ছে যেনো।আগেও এখানে আসা হয়েছে।এই জায়গাটায় এসে বলা হয়নি কখনো।আজকে দিনটা ভিন্ন।পরিবার আর বন্ধু ছাড়া অন্য কারো সাথে ঘুরে বেড়ানোর অভ্যাসটাও নেই।
হুট করে মেহতাব অদ্ভুত প্রশ্ন করে বসলো,
“আমি কি?”
“মানে?”
“বললাম আমি কি?কে?কি কাজ করি?”
“কেনো আপনি জানেন না আপনি ডাক্তার?ডাক্তারি পেশায় নিয়োজিত”
“আপনি কি?আপনি কি করেন?”
আদর দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে উত্তর দিলো,
“আমি একজন স্টুডেন্ট আর পার্ট টাইম জব করি”
মেহতাব দীঘির শেষ সীমানায় এক দৃষ্টিতে চেয়ে বললো,
“আমার আর আপনার কাজ দুটোই ভিন্ন।”
“তাতো বটেই”
“আরেকটা ভিন্ন বিষয় আছে”
“সেটা কি?”
“আপনি বলেছিলেন আপনার জীবনে আপনার কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।”
“হ্যা বলেছিতো”
“কিন্তু আমার জীবনে আমার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ”
আদর চুপ হয়ে গেলো।কি বলতে চাচ্ছে?কিছুই বুঝছে না সে।বলে নিয়ে আসলো আমার কথায় কতটুকু যুক্তি আছে তার বিচার করবে।এই দীঘির পাড়ে শুনানি দিবেন?অবুঝের মতন মেহতাব এর পানে চাইলো।
“আপনার বাবা মা আছে।বন্ধু আছে।পড়ালেখা করছেন।নিজের জীবনে ইনজয় করছেন। একাকীত্ব অনুভব করেছেন কখনো?”
“ঘরের চার দেয়ালে পরিবার আমাকে কখনো একা হতেই দেয়নি।ঘরের বাইরে আমার বন্ধু আর পরিচিতজনেরা আমার সাথে থেকেছে।জীবনে কখনো একা কোথাও গিয়েছি কিনা খেয়ালও নেই।এখন কাজের জন্য শুধু একটা আসতে হয়।সেটাও অল্প সময়ের জন্য”
মেহতাব সামান্য আদরের দিকে ঘুরে বললো,
“সবসময় আশেপাশে কেউ না কেউ থেকেছে।”
“হ্যা”
“আমার আশেপাশে কেউ নেই।মা আগেই চলে গেছেন।বাবা আর বোন ছিল তারা এখন ইংল্যান্ডে।বোনের পড়ালেখার জন্য।বন্ধু আছে তাদের সাথে মাসে একবারও ঠিকমতো দেখা হয় না।আমি কাজ করছি।নিজের মতন করে।আমাকে বাধা দেওয়ার কেউ নেই।নিজের সিদ্ধান্ত নিজে গ্রহণ করছি।বাবা,মা,পরিবার,বন্ধু ছাড়া এইযে জীবনটা এটা স্বাভাবিক বলে মনে হয় আপনার?”
“অস্বাভাবিক!একা!দমবন্ধকর!” আদর বললো।
“নিজের জীবনে নিজের এত নিয়ন্ত্রণ থেকেও কি লাভ আমার?টাকা আছে?তিন বেলা খাওয়া দাওয়া করতে পারছি?মাথার উপরে একটা ছাদ আছে।এই!খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকা মানুষের জীবন?”
একটু একটু হলেও মেহতাবের সমস্ত কথার অর্থ বুঝতে পারছে আদর।কথাবার্তা অনেক পেঁচানো।তবে প্রত্যেকটা শব্দ,বাক্য ধরে ধরে বোঝানোর চেষ্টায় আছে সে।বিস্তারিত বিশ্লেষণ করছে।বোঝাচ্ছে।একবাক্যে চাইলে বলে দিত পারতো।হয়তো সেটা মেনে নিতাম।কিন্তু অল্প সময়ের ব্যবধানে ভুলেও যেতাম।অনেক ছোট বিষয়ও সময় নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করা উচিত।মুচকি হাসলো আদর।একটা সুন্দর পরিবেশ,সুন্দর আবহাওয়া,সুন্দর মুহূর্তে সুন্দর একজন মানুষের মুখ থেকে কিছু সুন্দর কথা।
“আমরা মানুষ কোনোদিন স্যাটিসফাইড না।আপনি নিজের জীবনের নিজে লাগাম টানতে চান।আমি নিয়ন্ত্রণহীন হতে চাই।চাই আর করবো এর মধ্যে তফাৎ থাকে।আমাদের নিয়ন্ত্রণের উর্ধ্বেও আমাদের নিয়ন্ত্রণ করছে আমাদের ভাগ্য”
একটু থেমে মেহতাব আবার বললো,
“যা যেভাবে চলছে চলতে দেন।এত ভাবনার কি আছে? ভবিষ্যৎ জানি আমরা?আপনার জীবন আপনার কাছের মানুষ দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে।ক্ষতি করার মতন কেউ নেই।শুধু এটুকুই বাছ বিচার করতে শিখুন।যাকে নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার দিচ্ছেন তারা আদৌ আপনার মঙ্গল কামনা করেতো?”
মেহতাব পা তুলে রুমাল দিয়ে পা মুছে জুতো পড়ে নিয়েছে। রুমাল আদরের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো,
“চলেন অন্ধকার হয়ে আসছে”
আদরও উঠে দাঁড়িয়েছে।নিজের পা মুছে মোজা পরে নিলো।এখন জুতো পড়ার পালা।মেহতাব এর হুমকি শুনে জুতো খুলে নিলেও এখন ফিতে বাঁধবে কে?তারপরও চেষ্ঠা করতে হবে।পা পেঁচিয়ে উপুড় হয়ে পড়ে গেলে বিপদ।ঝুঁকে জুতোর ফিতে বাঁধতে চেষ্ঠা করেও ব্যর্থ আদর।মাথায় বুদ্ধি আসলো বাঁধবে না।ফিতে জুতোর ভেতরে ঢুকিয়ে নিয়েছে।এভাবে আর হাঁটার সময় পায়ে পেঁচাবে না।হাত ঝেড়ে আকস্মিক দাড়িয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দিল,
“বোঝাতে চাচ্ছেন আমি অন্যের উপরই ডিপেনন্ডেন্ট থাকবো?”
কথার উত্তর না দিয়ে নিজের পরিহিত প্যান্ট সামান্য উপরে তুলে হাঁটুর বলে বসে পড়েছে মেহতাব।ভাবসাব দেখে মনে হচ্ছে জুতোর ফিতে বাঁধবে।ঠিক যেমন ভাবনা তেমন কাজকর্মের দিকেই এগোচ্ছে সে।আদরের চোখ ছানাবড়া।এটা মোটেও আশা করেনি মেহতাব থেকে।
আদরের জুতোর ফিতে বাঁধতে বাঁধতে বললো,
“নাহ সবকিছুতে আবার মানুষের উপর নির্ভর করে বসে থাকবেন না।যেমন এইযে ফিতে বাঁধা!সামান্য কাজটুকু পারেন না?না বেধে চোরাই পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন।এতে ভালোর চেয়ে ক্ষতি বেশি হতো।”
তার চোখ মেহতাবের দিকে।ঝুঁকে বসে সুন্দর করে ফিতে-তে একটা একটা করে গিট দিচ্ছে। পরিপক্ক হাতের কাজ।এই লোকটা যে আদরের সামনে ঝুঁকে আছে তার কি খেয়াল আছে?
একপায়ের জুতোর ফিতে বেধে অন্য পায়ের দিকে অগ্রসর হয়েছে। মনোযোগ সেখানে রেখেই আবার বললো,
“দিনের চব্বিশ ঘণ্টা অথবা সারাজীবন বাবা,মা,বন্ধু,পরিজন সাথে থাকবে না তাই না?”
মেহতাবকে দেখায় মগ্ন হয়ে তার কথার জবাবে বলল,
“আর আপনি?”
চলবে?