চিত্তসন্ধি পর্ব ৩১ লেখা: #Azyah

0
3

#চিত্তসন্ধি
পর্ব ৩১
লেখা: #Azyah

“মেহতাব তোমার সাথে কেউ যাচ্ছে? আই মিন এ্যাজ হেলপিং হ্যান্ড?”

দ্বিধা দ্বন্দে পড়ে গেছে মেহতাব।কালো চেয়ারে গা এলিয়ে রেখেছে।তর্জনী আঙ্গুল ঠোঁটের উপর চেপে।কপালে সূক্ষ ভাজ।ডান হাতের আঙ্গুলের আংটি ঘোরাচ্ছে।খলিল স্যারের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।মেয়েটা এমন জালে ফেলে দেয় মাঝেমধ্যে।কি করবে ঠিক ভেবে উঠা যায় না। রায়হানেরও ঠিক একই অবস্থা।পেপার ওয়েট ঘোরাতে ঘোরাতে মেহতাব এর দিকে চেয়ে আছে।ডক্টর খলিল মেহতাবকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে ল্যাপটপে লিস্ট করছেন।নেক্সট ক্যাম্পের যাবতীয় কাজগুলো রিচেক করছেন।হসপিটালের যাবতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব ডক্টর খলিলের হাতেই ন্যস্ত।রায়হান আর মেহতাবের মতে তিনি শিক্ষক।তিনি তাদের চেয়ে ভালো জানবেন,বুঝবেন। কক্স বাজার ক্যাম্পের ব্যাপারে আলোচনা করতেই তারা তিনজন এখানে জড়ো।

ডক্টর খলিল আবার বললেন, “কি হলো মেহতাব?আমি কি লিস্ট ফাইনালাইজ করে দিবো?”

মেহতাব ভেবে চিন্তে উত্তর দিলো, “না স্যার।..আমার সাথে আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট যাবে।”

“মিস আদর শিকদার?”

“জ্বি স্যার”

রায়হান সামান্য হাসলো। অত্যন্ত নিচু স্বরে বিড়বিড় করলো, “তারতো যেতেই হতো”

সাথেসাথে মেহতাব এর চোখ রাঙ্গানির স্বীকার হলো রায়হান।হাসি সেকেন্ডের মধ্যে গায়েব করে হয়ে গেলো এক নাদান বালক।নিজের ঠোঁটে আঙ্গুল চেপে বোঝালো সে চুপ আছে।

পরপর নড়েচড়ে বসলো রায়হান।অলমোস্ট সব কাজ শেষ।গলা পরিষ্কার করে ডক্টর খলিলের উদ্দেশে বললো,

“স্যার! আমরাতো ডাক্তার।আমাদেরও জীবনে অধিকার আছে একটু ঘুরাফিরা করার।আসলে ঘুরা না বিশাল সমুদ্র সৈকতে নিজের মাইন্ড ফ্রেশ করার।”

রায়হানের কথায় বাঁকা হাসলেন ডক্টর খলিল।তিনি তার স্বভাব চরিত্র সম্পর্কে অবগত।তার ক্লাসের সবচেয়ে অশান্ত ছেলে ছিলো রায়হান।ছটফট স্বভাবের।আর মেহতাব তার বিপরীত।একদম ঠান্ডা শীতল পানির মতন।তাদের মধ্যে রক্তের সম্পর্ক আছে সেটা যদি কাউকে মুখে না বলা হয় কোনোদিনও জানবে না।

মেহতাব রায়হানের দিকে তির্যকপূর্ন দৃষ্টি দিয়ে মনে মনে ভাবছে,

“এসব নমুনা আমার ভাগ্যেই কেনো পড়ে।একটা রায়হান,একটা দেওয়ার চাচা,জয়তুন খালা এখন আবার আদর।একেকজন আরেকজন থেকে এক ধাপ এগিয়ে।”

রায়হান বললো,

“আমাদের কাজ দুইদিনের এরপর একটা দিন সব ডাক্তাররা মিলে একটু সমুদ্র দেখলাম নাহয়?আমাদের এবসেন্সেতো ডাক্তার থাকবেই ক্লিনিক দেখার জন্য”

মেহতাব কথা কাটলো, “এসব অযথা।কোনো ঘোরাঘুরির দরকার নেই”

ডক্টর খলিলের মধ্যে মিশ্র স্বভাব দেখা যায়। পরিস্থিতি স্বাপেক্ষে আচরণ বদলান।এখানে রায়হানের কথা যুক্তিসম্পন্ন মনে হয়েছে। রোবটের মতন দিনরাত কাজ করে সবারই একটু প্রাকৃতিক বাতাস দরকার।

“অয়েল মেহতাব!এখানে আমি রায়হানের পক্ষে।কাম অন ম্যান তোমরা এখনও এতটা বুড়ো হয়ে যাওনি।একটা দিন নিজেকে,প্রকৃতিকে দিলে কারোই তেমন ক্ষতি হবে না।”

জয়ী ভঙ্গিতে মেহতাবের দিকে তাকিয়ে আছে রায়হান।যেখানে রুষ্ট নজরে তাকায় মেহতাব সেখানে আজ রায়হান তাকিয়ে।খুব এ্যাটিটিউড নিয়ে।কখনো কোনকিছুতে হারাতে পারেনি মেহতাবকে।আজ তাকে বাদ দিয়ে খলিল স্যার রায়হানের কথা শুনেছেন।তাছাড়া তার সাথে কম্পিটিশনও করেনি। বাচ্চামো তার রন্ধে-রন্ধে।

ক্যাবিন থেকে বের হওয়ার পথে রায়হান দুষ্টুমির ছলে বলে উঠলো,

“তোর খুশি হওয়ার কথা।আরেকটা দিন বেশি পাবি মিস আদরকে নিয়ে সমুদ্রে ঘুরে বেড়ানোর জন্য”

রায়হানের কথা শুনা মাত্র বাহু দিয়ে ধাক্কা দিয়ে তাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে।মেজাজ খারাপ করে হনহন করে চলে গেলো।পেছনে রায়হান হেসেই যাচ্ছে।তার হাসি দেখে অবাক চোখে তাকিয়ে আছে দেলাওয়ার হোসেন।

_____

হাতে ফাইল নিয়ে ক্যাবিনের এদিক ওদিক ঘুরছে মেহতাব। ফাইলের কিছু কাজে গড়মিল।সৌভাগ্যবশত এই গড়মিলে আদরের কোনো হাত নেই।সেও এক পা দু পা করে মেহতাব এর পেছনে। মেহতাব কোনো গুরুত্বই দিচ্ছে না।মুখে মাত্রারিক্তি বিরক্তি ভাব নিয়ে হেঁটে চলেছে। সাথে জুতোর ঠকঠক আওয়াজ।এই আওয়াজটা আদরের একদম পছন্দ হচ্ছে না।তারপরও সে নিরুপায়।নিজের কার্য উদ্ধার করতেই হবে।আজ মেহতাব নয় সে জোর খাটাবে।হিসাব মিলিয়ে পেছনে বেজে থাকা লেজের দিকে দৃষ্টি স্থাপন করা উচিত। থেমে গেলো।দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আজ ঠিক সময় ব্রেক কষতে পারেনি আদর।নাক গিয়ে লেগেছে মেহতাবের শক্ত পিঠে। মেহতাব ঘুরে তাকালো।

ফাইলটা আওয়াজ করে বন্ধ করে বললো,

“বিরক্ত করছেন!”

বোকা চেহারা বানিয়ে আদর প্রশ্ন করলো, “আমাকে নিবেন না?”

মেহতাব সোজাসুজি উত্তর দিলো, “না”

মেহতাব এর কঠিন, সোজাসাপ্টা উত্তরে বিষম খেয়ে বসে।মুখ অন্ধকার করে ফেলছে চোখের পলকে।তার মনে দয়া মায়া বলতে কিছু নেই।এভাবে মানুষের মনের আশা ভেঙে চুরমার করে দেয় কেউ?কতদিন সমুদ্র দেখা হয়না।একটা সুযোগ পেয়েছিল সেটায়ও বাঁধা হয়ে দাড়ালো এই কসাই সাহেব।

মন খারাপের রেশ দিয়ে বললো, “আচ্ছা”

অন্যদিকে ঘুরে গেলো আদর।পা বাড়ালেই মেহতাব হাত টেনে ঠিক আগের জায়গায় দাড় করিয়েছে।হাত ছেড়ে ফাইল থেকে দুটো কাগজ বের করে আদরের হাতে দিলো।আঙ্গুল কাগজের দিকে তাক করে বললো,

“এখানে বাবা,মার নাম,তাদের নাম্বার,এ্যাড্রেস সব লিখবেন। কাল অথরিটি থেকে ফোন করে আপনার ফ্যামিলি থেকে পারমিশন নেওয়া হবে।আর এটা হচ্ছে পাস।”

আদরকে বেশ উৎসুক দেখাচ্ছে।কথার ভঙ্গীতে সেটা পরিষ্কার। মুখে চওড়া হাসি।প্রশ্ন করলো,

“টাকা লাগবে না?”

“জ্বি না।সব খরচ ক্লিনিকই বহন করছে।”

“আমরা কোথায় থাকবো?”

“রাস্তায়,খোলা আকাশের নিচে।” মেহতাব ত্যাড়া উত্তর দিলো।

“এহ!আপনাদের তাহলে আর খরচ কি?টাকা বাঁচানোর জন্য এই প্ল্যান করেছেন? কিপটামির একটা লিমিট থাকা উচিত!”

বেশি কথা বলা রোগ সম্পর্কে আদরের ধারণা আছে।এবার দেখছি তার মাথায়ও সমস্যা। সন্দিহান দৃষ্টিতে প্রশ্ন ছুড়লো,

“আপনি কি আসলেই বোকা?নাকি দেখান যে আপনি বোকা?”

“ওমা! আমি বোকা হতে যাবো কেনো?”

“এর মানে আপনি আসলেই বোকা।”

মেহতাব বুঝতে পারছে ব্যাপারটা।পাগল যেমন নিজেকে পাগল বলে স্বীকার করে না।আদরের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই।নিজের বোকামি স্বীকার করছে না।

আদর পুনরায় প্রশ্ন করলো, “আমরা তাহলে আসলেই যাচ্ছি না সমুদ্রে?”

“হ্যা”

মুখের হাসি বিশাল থেকে আরো বিশাল হয়েছে। অদ্ভুদ কান্ড ঘটালো।উৎফুল্লতা,খুশি প্রকাশ করতে মেহতাব এর হাত চেপে ধরেছে।আরেকহাত দিয়ে কোমরের অংশের শার্ট খামচে ধরলো।হালকা লাফিয়ে বারবার বলে উঠলো,

“থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ!”

সেচ্ছায় মেহতাবকে স্পর্শ করেছে আদর।এটা দ্বিতীয়বার। প্রথমবার ঝড়ের গতিতে হাতে ব্যঞ্জেড লাগিয়ে সরে গিয়েছিলো।আজ খামচে ধরেছে হাতের কব্জি।আদরের নরম ঠান্ডা হাতের স্পর্শ পেয়ে মেহতাবকে ব্যকুল দেখাচ্ছে।সে অজান্তেই নিজের কাজ আর কথা দিয়ে মন গলিয়ে দেয়।শক্ত ভাবমূর্তিকে ভেঙে ফেলে।আদর হাত সরিয়ে নিয়ে বারংবার সরি বলতে শুরু করেছে।

আকষ্মিক আদরের ডান গালে ঠোঁটের স্পর্শ দিয়ে বললো,

“শান্ত আছি শান্ত থাকতে দাও।”

____

দেখতে দেখতে কক্স বাজার যাওয়ার দিন চলে এসেছে।সকাল আটটার বাস।অন্তত দশ থেকে বারো ঘণ্টার জার্নি।সকাল সকাল রওনা হয়ে একদিনের মধ্যেই পৌঁছাতে হবে।আদর চাতক পাখির মতো সকাল পাচটায় উঠে সব গোছগাছ শুরু করলো।তার বাবা অসুস্থ।তাদের আপন বলতে একমাত্র তার খালা আছেন।৪দিনের জন্য খালাকে বাড়িতে রেখে যাচ্ছে সে।রেডি হয়ে দ্রুত বেরিয়ে পড়লো।মাকে নিয়ে যাচ্ছে সাথে।বাবা সুস্থ থাকলে বাবাই নিয়ে যেতো। বাড়ির দরজা দিয়ে বের হয়ে সামনেই কালো গাড়ি দাড়ানো দেখতে পারছে।আদরের মা এগিয়ে গেলেন।বাড়ির গেটের সামনে এভাবে পথ আটকে গাড়ি দাড় করার কারণ জানতে।তার আগেই মেহতাব কাচ নামালো।

গাড়ি থেকে বের হয়ে স্মিথ হেসে বললো,

“আসসালামু আলাইকুম”

“ওয়ালাইকুম আসসালাম আপনি এখানে?” বলে জোহরা খাতুন সৌজন্যমূলক হাসি দিলেন।

খানিকটা থমকালেও সাথেসাথেই উত্তর দিলো,

“আসলে আমি এই রাস্তা দিয়েই যাচ্ছিলাম।এত সকালে মিস আদর কার সাথে আসবে? স্যারতো অসুস্থ।তাই ভাবলাম!”

জোহরা খাতুন চোখ নামিয়ে মুচকি হাসলেন।তিনি অনেক আগে থেকেই বিষয়টা ধরে ফেলেছেন।সেদিন আদর হসপিটালে ভর্তি ছিলো সেদিন থেকেই।

তিনি বললেন,

“আমি ওকে দিতে যাচ্ছিলাম।”

“আপনার কষ্ট করার দরকার নেই। আমিওতো সেখানেই যাচ্ছি।যদি অনুমতি দেন আমি নিয়ে যাই?”

আদর তার মা আর মেহতাবের কথা পাশে দাড়িয়ে শুনছে।আদরের মা বললেন,

“হ্যাঁ অবশ্যই।আদর যাও তুমি স্যারের সাথে যাও”

আদর মাকে বিদায় দিলো।চুপচাপ গাড়িতে গিয়ে বসেছে।মেহতাব জোহরা খাতুনকে সালাম জানিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।তাকে থামিয়ে জোহরা খাতুন বললেন,

“বাবা আমার মেয়েটা হেয়ালি স্বভাবের।এত দূরে দিচ্ছি তাও একা।বলা ঠিক হবে কিনা জানি না।কিন্তু ওকে যদি একটু দেখে রাখতেন?টেনশন হয়।মা তো?”

“টেনশন করবেন না।সেখানে আরো মেয়েরা আছে। জরুরি দরকারে আমাদের সবার নাম্বারও আপনাদের কাছে দেওয়া হয়েছে।তাছাড়া আমি আছি। যেভাবে নিচ্ছি ঠিক সেভাবেই ফিরিয়ে আনবো”

গাড়িতে উঠে আদরকে এক পলক দেখে নিলো।সিট বেল্ট লাগিয়ে মুখে চওড়া হাসি নিয়ে বসে।দেখে মনে হচ্ছে এর আগে কখনো কোথাও ঘুরতে যায়নি।সেখানে গিয়েও যে কাজ করতে হবে সেটা বোধ হয় ভুলেই গেছে।জানানো দরকার।কিন্তু ইচ্ছে হচ্ছে না।জানলেই মুখটা ছোট হয়ে যাবে।হাসি উধাও হয়ে যাবে।এটা মেহতাব কোনোভাবে চায় না। হাসুক,খুশি থাকুক।সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে নিজেই কাজ করবে।ততক্ষন এই মনকাড়া হাসিটা মুখে লেগে থাক।দেখতেও ভীষণ ভালো লাগে।

গাড়ি স্টার্ট দিয়ে বললো, “খুশি?”

আদর ঠোঁট কামড়ে নিলো।মাথা দুলিয়ে বোঝালো হ্যা সে খুশি।ডান হাতে স্ট্যারিং ধরে অন্য হাত এগিয়ে রাখলো আদরের সামনে।হাত পেতে রেখেছে।আদর দেখেছে।ভাবলো হয়তো এমনেতেই হাত এভাবে রাখা। অতঃপর আরেকটু এগিয়ে নিলো হাতটি তার কাছে।আদর মেহতাবএর দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্ঠা করলো আসলে চাচ্ছেটা কি?এভাবে হাত এগিয়ে রাখার মানে কি?অর্থ কিছুই না বুঝে হাতের দিকে চেয়ে আছে।মেহতাব বিরক্ত হয়ে আদরের দিকে তাকালো।পরপর তার হাতের দিকে।এবার আদরের কাছে স্পষ্ট সে কেনো হাত পেতে?

মেহতাব সামনের দিকে তাকিয়ে কপালে গাঢ় থেকে গাঢ়তর ভাজ ফেলতে শুরু করেছে।রেগে যাচ্ছে নাতো?হাত সরায়নি এখনো।শুকনো ঢোক গিলে নিজের হাত এগিয়ে আনল তার হাতে।বারবার জ্বিভ দিয়ে ঠোঁট ভেজাচ্ছে।তার হাতে হাত রাখার সাথেসাথে আকড়ে ধরেছে।এতখন এই অপেক্ষায়ই ছিলো তাহলে? মুখেতো বললো না কিছু। নিঃশব্দে গাড়ি চালাচ্ছে।

“আপনি আজকে আপনার ড্রাইভার আংকেলকে কেনো আনেননি?গাড়ি রাখবেন কোথায়?”

“পার্কিংয়ে”

“এই তিন চারদিন পার্কিংয়ে থাকবে?”

“হ্যাঁ”

আদর থামলো।চিন্তা ভাবনা করলো কিছু সময় নিয়ে। মিনিট দুয়েকপর বললো,

“বাসে কিন্তু আমি আপনার সাথে বসবো”

ভ্রু উচু করে আদরের দিকে ফিরলো।এমনেতেই শুধু দূরে দূরে থাকার বাহানা খোজে। আজ নিজে থেকেই বললো?এত পরিবর্তন? মেহতাব হেয়ালি করে বলে,

“দশ বারো ঘণ্টার জার্নি।একটা চরিত্রে সমস্যা ওয়ালা পুরুষের সাথে এতটা সময় পার করে দেওয়া ঠিক হবে মিস আদর?”

তেতে উঠলো আদর।হাত ছাড়ানোর জন্য হাত টান দিয়েছে।তারপরও ছাড়া পেলো না।বারবার একই কথায় বিরক্ত সে।মাথা ঘুরিয়ে অন্যপাশে চেয়ে বললো,

“আপনি বারবার একই কথা বলবেন না।আমি আর কাউকে চিনি? অপরিচিত মানুষের সাথে এতটা পথ পাড়ি দিতে কমফোর্ট ফিল করবো না”

“আমার সাথে আরো কমফোর্ট ফিল করবেন না”

“আপনিতো পরিচিত।আমি কিন্তু অন্য কারো সাথে বসছি না!নাহলে যাবোই না আমি”

মেহতাব এর পাল্টা প্রশ্ন, “বেশি দূর আসিনি।ফিরিয়ে দিয়ে আসবো?”

“ধুর!”

উচ্চ স্বরে হাসে মেহতাব।তার হাসির শব্দটাও কান আর মস্তিস্ককে ধাঁধিয়ে তোলে। হৃদয়ে ঝংকার তোলে।তার মধ্যে হাত টেনে ঠেকিয়েছে তার বুকে।বামপাশে আদরের হাত চেপে তার চিত্তের ধ্বনি অনুভব করাচ্ছে যেনো।ধীরেধীরে শক্ত খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসছে।তারপরও মানতে নারাজ।স্বীকার করতে নারাজ।কেমন বান্দা এ?কি হয় নিজের অনুভূতিগুলোকে সব বাধা ভেঙে প্রকাশ্যে আনলে?আনবে না।কোনদিন না।ভাঙবে কিন্তু মচকাবে না।খারাপ লোক!

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here