#চিত্তসন্ধি
পর্ব ৪১
লেখা: #Azyah
আদরকে জ্বালাতে ভাল্লাগে। ইদানিং এটা মেহতাব নতুন ভালো লাগায় পরিণত। এ কেমন অনুভূতি? যার মধ্যে ওপরজনকে জ্বালাতে বিরক্ত করতে বেশ ভালো লাগে?আজকাল সকল নিত্যনতুন স্বভাবে এটাও জুড়ে বসেছে।আদরকে বিরক্ত করা।সে জানে আদর বিয়ে করবে না।নাই তার জন্য কোনো ছেলে দেখা হয়েছে।আদরের মা মেহতাবকে কল করেছিলো আজ।
ঘোর কাটলো আদরের প্রশ্নে, “আপনি এমন কেনো?”
“কেমন?”
“জানি না”
নিজের অভিনয় জারি রেখে মেহতাব বললো, “বিয়েতো করতেই হবে।করে ফেলো দেরি করো না বেশি।”
“কাকে করবো?”
“তোমার বাবা মা যাকে ঠিক করে তাকেই করো!”
“ঠিক আছে!”
রাগ তরতর করে বেড়ে গেলো।খাবার যেমনকার তেমন রেখেই উঠে গেছে।টিসু দিয়ে জোরেজোরে হাত মুছে নিয়েছে।ব্যাগ হাতে নিয়ে নিঃশব্দে বেরিয়ে গেছে কেবিন থেকে। বেরোতেই ধাক্কা খায় রায়হানের সাথে।
আদরকে কাদতে দেখে রায়হান দ্রুত প্রশ্ন করে ফেললো,
“কি হয়েছে মিস আদর?মেহতাব বকেছে?”
“আপনার ভাই?আপনার ভাই অনেক খারাপ।অনেক!”
কান্না জড়িত কন্ঠে আদর বললো।এক মুহুর্ত সেখানে দাড়ায়নি।স্থান ত্যাগ করেছে রায়হানের কাছে অভিযোগ করেই।
দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে রায়হান বললো, “আদরকে রাগিয়ে দিয়েছিস তুই?কেদে চলে গেলো কেনো?”
“পাগল একটা!”
“কি বলেছিস?”
“কি বলবো?বলেছি একটা বিয়ে করে নিতে”
মেহতাবের মুখে দুষ্টুমির ঝলক দেখে রায়হানের আশ্চর্য্য সপ্তম আসমানে।তারপরও বললো,
“অনেক রেগে গেছে কিন্তু”
রায়হানকে অবাক করে দিয়ে মেহতাব হেসে বললো, “আদর আর রাগ?তাও আমার সাথে?”
“এভাবে মেয়ে মানুষ টিকবে না ভাই আমার।তুই কেনো খোচাস মেয়েটিকে?”
“একঘন্টা!বড়জোর একদিন।এরবেশি রাগ থাকবে না”
“দেখিস গতবারের মতন ঘটনা না ঘটে যায়”
“ইম্পসিবল!”
“ভাই তুই বুঝতে পারছিস না।”
মেহতাব এবার কপাল কুচকে নিয়েছে। রায়হানের এত কথা পছন্দ হচ্ছে না।নিজের গম্ভীর ভাবমূর্তি ধারণ করে বলে,
“এত কিছু বুঝতে চাই না আমি!আর তাছাড়াও ওর জন্য সারপ্রাইজ আছে একটা।এর আগে একটু রাগ করুক, অভিমান করুক,একটি কষ্ট পাক।”
___
বাহিরে ঝুম বৃষ্টি। রাস্তাঘাট ভিজে স্যাঁতস্যাতে হয়ে আছে।এক মনের বেদনা অন্যদিকে রাস্তার এই অবস্থা।এবার বাড়ি যাবে কি করে?দরজায় দাড়িয়ে অপেক্ষা করছে।একটু থামলেই বেরোবে।কিন্তু মন এখানে কিছুতেই থাকার জন্য সায় দিচ্ছে না।আকাশে যেমন মেঘ জমেছে।ঠিক তেমনি তার মনে জমেছে অভিমান।এই অভিমান ভাঙবে না। কিছুতেই নাহ! বৃষ্টির উপেক্ষা করেই বেরিয়ে পড়লো।ক্লিনিকের বাইরে বেরোতেই মায়ের সাক্ষাৎ। আকষ্মিক মাকে দেখে অবাক হলো আদর। ছাতা নিয়ে দাড়িয়ে আছে নিচে।দ্রুত সেও দৌড়ে গেলো মায়ের কাছে।
জোহরা খাতুন মেয়েকে টেনে ছাতার ভেতরে এনেছেন।
“মা তুমি এখানে?”
“হুম”
“হটাৎ এলে যে?শরীর ঠিক আছে?”
“আরেহ হ্যা সব ঠিক আছে।মার্কেটে এসেছিলাম। চল এবার সি.এন.জি নিয়ে চলে যাই”
মায়ের কথা বিশ্বাস হচ্ছে না আদরের।হুট করে এভাবে ক্লিনিকের বাইরে দাড়িয়ে থাকা।মোটেও সুবিধাজনক নয়। কখনওতো আসে নি।আজ হটাৎ?
“কি হলো?চল”
সি.এন.জি দিয়ে বাড়ি ফিরলেও অনেকটা ভিজে গেছে মা মেয়ে দুজনই।বাড়ি ফিরে ফ্রেশ হয়েই গরম গরম কফি নিয়ে বসে পড়লো আদর বারান্দায়।মুখটা বাংলার পাঁচ এর মতন করে রেখেছে। কফিও গরম মেজাজটাও।তবে সামনের পরিবেশ বেশ সুন্দর।বাহিরে কাদামাটির জন্য বৃষ্টির উপর রাগ হলেও এখন বেশ উপভোগ করছে আদর। অন্তত কোনো অসভ্য ডাক্তারের অসভ্য কথাবার্তা শুনতে হচ্ছে না।কত বড় কথা বলে বসলো সে?একটুও হৃদয় কাপেনি? বললেই হলো বিয়ে করে নাও!জোহরা খাতুন ইতিমধ্যে দুয়েকবার এসে ঘুরে দেখে গেছে তাকে।আগে মেহতাবকে বুঝতে অসুবিধে হতো।এখন মার মতলবও ঠিক ঠেকছে না।
___
ফোন হাতে নিয়ে বসে আছে।কোনো প্রকার ঘুমের লক্ষণ নেই চোখে।ফেসবুক থেকে কল লিস্ট।বারবার এদিকওদিক ছোটাছুটি করছে আদর।মনের মাঝে সুপ্ত ইচ্ছে!বদ ডাক্টার মেহতাব কল দিবে?এতটা রাত হয়েছে।তার কি হুশ আছে আদর একা বেরিয়ে গেছে ক্লিনিক থেকে!রাগ করেছে।কল পর্যন্ত করেনি?সময়ের মনে সময় যাচ্ছে।ঘড়ি জানান দিচ্ছে বারোটা বেজে ত্রিশ মিনিট।হুট করে মেহতাবকে অনলাইন দেখালো।আদরও নড়েচড়ে উঠেছে। প্রস্তুতি নিচ্ছে নিজের মধ্যে।মেসেজ করলেই ইগনোর করবে।রিপ্লাই দিবে না।অপেক্ষায় চোখ বড়বড় করে চেয়ে আছে মোবাইলের দিকে।তাকে প্রচণ্ড রকমের হতাশ করে দিয়ে মেহতাব অফলাইন চলে গেছে।কোনো মেসেজ দেয়নি,কোনো কলও নয়।এখন কি করবে? কাল ডিউটি নেই।সামনাসামনি রাগ দেখানোর উপায় পর্যন্ত নেই। ইদানিং চোখের পানিও সস্তা হয়ে গেছে।কিছু হলেই ঝরতে শুরু করে দেয়।এখনই ঠিক এই অবস্থাই।চোখের মণি হাবুডুবু খাচ্ছে জ্বলে। বিষাদভরা মন নিয়ে ঘুমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদর।
মাত্র এক ঘণ্টার ঘুমে ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে যান্ত্রিক ফোনটি। ধড়ফড়িয়ে উঠে বুঝতে পড়লো মেহতাবের সাথে বিয়ে হচ্ছে এটা একটা স্বপ্ন ছিলো।স্বপ্ন দেখছিল আদর।ফোনের দিকে না চেয়েই ভেবে নিয়েছে মেহতাব কল করেছে।সামান্য খুশি হলেও আননোন নাম্বার দেখে সেটাও উধাও হয়ে গেল। ফোনটা বেজেই চলেছে। আননোন নাম্বার দেখে ধরবে কি ধরবে না সেই চিন্তা করতে করতে ধরে ফেললো।
“হ্যালো”
“তোমার মতন নির্লজ্জ্ব মেয়ে আমি দেখিনি কখনো!”মেয়েলি কন্ঠ। হুট করে এমন কথায় চমকে উঠলো আদর।
“এক্সকিউজ মি।কে আপনি?”
“আমি কে?তুমি বলো তুমি কে?কেনো পড়ে আছো আমার মেহতাবের পিছনে!”
“কি..কি বলছেন আপনি?”
“কি বলছি বুঝতে পারছো না?তুমি দুই টাকার একটা কর্মচারী।সামান্য একটা অ্যাসিসটেন্ট।আর লোভ ডাক্তারের প্রতি?লজ্জা করা উচিত!”
“আপনি এবার বেশি বেশি বলছেন।আর কে আপনি?আমাকে এত রাতে কল করে কি সব বলে যাচ্ছেন?”
“আমার পরিচয় তোমার না জানলেও চলবে!শুধু একটা কথা বলে রাখি।মেহতাব থেকে দূরে থাকো।তার সাথে আমার বিয়ে হতে চলেছে।আমি বিয়ের কার্ড এর ছবিও পাঠিয়েছি তোমাকে।দেখে নাও।”
হাত পা কাঁপতে শুরু করেছে আদরের।সারা শরীর ঘেমে একাকার।বুকের ওঠানামার গতি বেড়েই চলেছে।
“মিথ্যে কথা!আর আমি আপনার কথা কেনো বিশ্বাস করবো হ্যা?উনি একদম এমন না।”
“উনি কেমন এটা আমার চেয়ে ভালো কেউ জানে না।তাকে তোমার চেয়ে আমি আগে চিনি।ভালোবাসি।তুমি কোথা থেকে আসলে হ্যা?আর তোমার কি মনে হয় তোমাকে মেহতাব ভালোবাসে?হাহাহ! সব পুরুষদেরই নারীদের প্রতি আকর্ষণ থাকে। মেহতাবের তোমার প্রতি যা ছিল সবই দয়া।আকর্ষণ।তাছাড়া কিছুই না।তুমি কি ভাবলে মেহতাব এর মতন একজন ডাক্তার তোমাকে ভালোবাসবে?তোমার মতন সামান্য কর্মচারীকে?তোমার সাথে ওর লেভেল যায়?ছোটলোক কোথাকার!”
আদর হুহু করে কেদে উঠল।জোরে চিৎকার করে বললো, “আপনি মিথ্যা কথা বলছেন!”
“বিশ্বাস করা না করা তোমার ব্যাপার। মেহতাব আর আমার বিয়ে আগামী সপ্তাহে।দাওয়ার রইলো চলে আসবে।তখনই নাহয় সত্যিটা জেনে নিও?”
বিয়ের কার্ডে মেহতাব এর নাম লেখা।ফোনটা পড়ে গেছে।থম মেরে বসে রইলো আদর।মাথা কাজ করছে না।পলকহীন চোখ সামনে চেয়ে।সম্পূর্ণ দেহ আসাঢ় হয়ে আসছে।ঠিক এই কারণে মেহতাব তাকে আজ অব্দি কোনো স্বীকারোক্তি দেয়নি?এই কারণেই বলেছে সে খুব শীগ্রই বিয়ে করবে।আদরও যেনো বিয়ে করে নেয়?সব জোট খুলে যাচ্ছে ধীরেধীরে।পরিষ্কার হয়ে উঠছে আদরের কাছে। মেহতাবের কাছে আশা,তার প্রতি এই টান!সবই অভিনয় ছিলো?তাকে এভাবে ঠকানো হলো।মেহতাব আর আদরের বিষয়ে কেউ কিছু জানতো না।তাদের মধ্যে জানাজানির মতন কোনো সম্পর্কও ছিলো না।যে মেয়েটি মাত্র কল করলো সে জানে অর্থাৎ মেহতাবই তাকে সব জানিয়েছে।অথবা জেনেছে।সে বিয়ে করে দিবে?আগামী সপ্তাহে বিয়ে করে নিবে সে!পাথরের মতন বসে রইলো আদর সারারাত।চোখের জল শুকিয়ে গেছে।মূর্তি বনে গেছে সে। সম্পুর্ণ জ্ঞানশূন্য।
____
“আমি বিয়ে করবো মা”
আশরাফ মাহমুদ,জোহরা খাতুন আর আদরের খালা ফাহমিদা চোখ তুলে তাকালো।হুট করে আদরের এমন সিদ্ধান্তে সবাই অবাক।
জোহরা খাতুন বললেন, “কাকে?”
“দেওয়ান আংকেল যে ছেলেটার কথা বলেছিল?তাকে”
জোহরা খাতুন বললেন, “আদর কি বলছিস?হটাৎ কি হলো তোর?”
“কিছুই হয়নি আম্মু”
উঠে দাড়ালেন জোহরা খাতুন।আদরের সামনে গিয়ে বললেন,
“তোর সাথে আমার কথা আছে।চল”
উচ্চস্বরে আদর বলে উঠলো,
“আমার কোনো কথা নেই আম্মু।তুমি যেই ব্যাপারে কথা বলতে চাও আমি সেই ব্যাপারে কথা বলতে ইচ্ছুক নই।আমি যা বলেছি তাই।আমি যত দ্রুত সম্ভব বিয়ে করবো।আর হ্যা বিয়েটা গ্রামে হবে।তুমি বিকেলে ওনাদের আসতে বলো”
আশরাফ মাহমুদ মেয়ের রাগী চেহারা দেখে এসে দাঁড়ালেন তার পাশে।মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন,
“মা আমার।তুমি কি কোনো চাপে পরে সিদ্ধান্ত নিচ্ছ?কেউ কিছু বলেছে?”
“আমি কোনো চাপে পড়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না।”
আদর এক মুহূর্ত থাকেনি সেখানে।দৌড়ে চলে গেছে নিজের রুমে।আশরাফ মাহমুদ আর জোহরা খাতুন একে অপরের দিকে চাওয়চাওয়ি করছে।
__
দেওয়ান মিয়াসহ আরো তিনজন এসেছেন আদরকে দেখতে।এলাকার নামকরা ব্যবসায়ী শাহরিয়ার।তার বাবা জাহাঙ্গীর আর মা শায়লা।খুব দ্রুত তাদের ডাকা হয়েছে।মাথা নিচু করে বসে আছে আদর তাদের সামনে।পাশেই থমথমে মুখে জোহরা খাতুন আর আশরাফ মাহমুদ।মেয়েকে দেখতে এসেছে অথচ তাদের মধ্যে কোনো আগ্রহ নেই।মেয়ের জেদের বশে বাধ্য হয়েছে তারা।অনেকবার জিজ্ঞেস করা হয়েছে,বোঝানো হয়েছে।তাড়াহুড়ো করতে না।কোনো সিদ্ধান্ত চিন্তাভাবনাবিহীন দ্রুত নিতে বারণ করেছে।তারপরও আদর তার কথায় অটল।
শায়লা বেগম আদরকে টুকটাক প্রশ্ন করছেন।আদরও থমথমে মুখে উত্তর দিয়ে যাচ্ছে।মূর্তি হয়ে তাদের সামনে বসে আছে সে। বক্ষস্থলের এক বিশাল ঝড় চেপে সব কথার উত্তর দিচ্ছে সে।
“আমাদেরতো মেয়ে ভীষণ পছন্দ হয়েছে ভাই সাহেব” জাহাঙ্গীর হোসেন বললেন।
আশরাফ মাহমুদ মুখে জোরপূর্বক হাসি টেনে বললেন, “যাক আলহামদুলিল্লাহ”
জাহাঙ্গীর হোসেন আবার বললেন, “শাহরিয়ারের মা তোমার কেমন লাগলো?”
“এটা আবার বলতে?কি মিষ্টি মেয়ে আদর।অপছন্দ হওয়ার প্রশ্নই উঠে না” শায়লা বেগম এর মুখে বিশাল হাসির ঝলক।
জাহাঙ্গীর হোসেন আদরের বাবার উদ্দেশ্যে বললেন, “ছেলে মেয়ে যদি আলাদা করে একটু কথা বলে নিত?ভালো হতো না?”
আশরাফ মাহমুদ হাসফাঁস করছেন মনেমনে।তিনি এই প্রস্তাবেই রাজি নন।মেয়েকে আলাদাভাবে কথা বলতে দিতেও ইচ্ছুক নয়।কিন্তু মুখের উপর নাও করা যায় না।কিছুটা অপ্রস্তুত হয়েই বললেন,
“জ্বি অবশ্যই!”
ছাদের দুইপ্রান্তে দাড়িয়ে আছে দুজন অপরিচিত মানুষ।কারো মুখেই তেমন কোনো কথা নেই।আদর মাথা নামিয়ে নিজের আনমনে যা ঘটছে সবকিছুর হিসাব মেলানোর চেষ্টায়। সব গোলমাল পেকে আছে।জোরে চিৎকার করে কেঁদে উঠতে ইচ্ছে করছে।পারছে না। কান্নাগুলো গলায় আটকে আছে।কেমন অনুভব করছে নিজেও বুঝে উঠতে পারছে না।সবই কি মেহতাবের জন্য?তার জন্য সে না ভেবে না চিন্তে এত বড় ডিসিশন নিলো?তার সাথে প্রতিযোগিতায় নেমেছে?সে কি ভেবেছে আদরের সাথে ভালোবাসার অভিনয় করবে!
“কিছু ভাবছেন আপনি?”
শাহরিয়ারের পুরুষালি কন্ঠস্বর শুনে ঘোর ভাঙলো।মাথা তুলে তাকিয়েছে।তবে শাহরিয়ারের দিকে নয়।ভেজা চোখ সামনের উচু দালানে স্থির করে বললো,
“জ্বি না”
“আপনি কিছু নিয়ে টেনসড?”
আদর উত্তর দিল না।বরং আরচোখে তাকিয়ে আছে শাহরিয়ারের দিকে।নিজের প্রতি ঘৃনাও হচ্ছে। মেহতাব ব্যতীত অন্য কোনো পুরুষ তার পাশে!
শাহরিয়ার নমনীয় সুরে বলে উঠে, “নাহ আপনাকে অনেকক্ষন যাবৎ খেয়াল করছি।মুখ গোমড়া করে আছেন।আম!হয়তো নার্ভাসনেস। যাই হোক সেসব বাদ দিন।”
“হুম”
“আপনাকে প্রশ্ন করতে পারি?”
“জ্বি”
“আপনি বিয়েতে রাজি?”
“হ্যাঁ!”
“মিথ্যে কেনো বলছেন?আপনিতো বিয়েতে রাজি না!”
খুব দ্রুত কথাটি বলে ফেলছে শাহরিয়ার।আদরের বুঝতে সামান্য বিলম্ব হয়েছে। শব্দগুলো মস্তিষ্কে গিয়ে বারি খেলো।সঙ্গেসঙ্গে দৃষ্টি তুলেছে শাহরিয়ারের দিকে।এতখন যাবৎ আটকে রাখা অস্রু চোখের কোণ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে। মেহতাবের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে।ঠিক এইভাবেই তার মিথ্যে,তার মনের কথাগুলো চট করে ধরে ফেলত।অথচ সবই ছিলো তার অভিনয়।
শক্ত গলায় আদর উত্তর দিল, “আপনি ভুল ভাবছেন।আমি এই বিয়েতে রাজি।আর যত দ্রুত সম্ভব আমি বিয়ে করতে চাচ্ছি।দ্রুত বলতে আমি বুঝিয়েছি দুইয়েক দিনের মধ্যে!”
চলবে…