#চিত্তসন্ধি
পর্ব ৪৫
লেখা: #Azyah
“মানে হলো আজকে একটা ডিভোর্স হবে।আরেকটা বিয়ে”
সবাই মেহতাবের দিকে চেয়ে আছে।এইমাত্র যা বললো সেই হিসাব মেলানোর চেষ্টায়।সবার মনেই একটা প্রশ্ন। কার ডিভোর্স হবে আর কার বিয়ে?সবার এমন চেহারা দেখে মেহতাব বলে উঠে,
“লাগবে না কাউকে আমার।আমি একাই যাচ্ছি।”
তার আগে শাহরিয়ারের কাছে গিয়ে হুমকি দিয়ে বললো, “ডিভোর্স পেপারে যেনো সই হয়ে যায় দ্রুত।”
“এসব হুমকি টুমকিতে আমার কিছু আসে যায় না।অন্য কোথাও এপ্লাই করেন।”
রক্ত চড়ে গেল মেহতাব এর মাথায়।আদরের হাত ছেড়ে আবার কলার চেপে ধরেছে শাহরিয়ারের।আদর এই অবস্থায় ছুটে গেলো।বারবার ছোটানোর চেষ্ঠা করছে তাদেরকে।তবে দুটো ছেলে মানুষের কাছে কিছুতেই পেরে উঠলো না। রোহিত এগিয়ে গেলো।ঠিক তখন রায়হান প্রবেশ করলো ঘরে। রোহিতের দেওয়া ঠিকানা ধরেই এখানে এসেছে। সৌভাগ্যবশত আজ রুবির বাবা মা,বোন কেউ নেই বাড়িতে।এসে ছাড়িয়ে নিলো তাদের দুজনকে।
শাহরিয়ার শার্ট ঝারছে। মুখে তার হাসি।হাসতে হাসতে বললো,
“কষ্ট করে আর লয়ারের কাছে যেতে হবে না।ডিভোর্সের প্রয়োজন পড়বে না”
“মানে?”
“কি মানে মানে করছেন!বিয়ে হলে না ডিভোর্স দিবো আশ্চর্য্য!কোনো বিয়ে হয়নি। হ্যা এটা অবশ্য ঠিক বিয়ে হওয়ার কথা ছিল।কিন্তু আদরের যেই অবস্থা ছিলো?আমি নিজে করলে ভালোর চেয়ে আরো খারাপ হতো।”
শান্তা বলে উঠে এরইমধ্যে, “তাহলে আপনি আদরের সাথে আসলেন কি করে? কোথায় ছিলো ও এতদিন?”
“ওর খালার বাড়ি।আর সেটা আমার গ্রামের বাড়িও। ও এতদিন ওর বাবা মা, খালা আর আমার সাথে ছিলো।”
শান্তা আবার বললো, “আপনি কেনো গিয়েছেন ওর সাথে?”
“বাড়ি থেকে চাপ দিচ্ছিল।আবার আদরও মুখে রাজি থাকলেও সে মনে মনে মোটেও রাজি ছিলো না।আমাদের গ্রাম আর আদরের খালার বাড়ি এক হওয়াতে সুযোগ পেয়েছি।বাড়িতে বলেছি আমি আগে আদরকে একটু চিনতে বুঝতে চাই।তাছারাও আদরের মানসিক অবস্থা অনেকটা খারাপ এটা আমি দেখেই বুঝে গেছিলাম।জিজ্ঞেস করেন ওনাকে।বুঝাই নি?ফিরে আসতে বলিনি ঢাকায়?”
সবাই আদরের দিকে চেয়ে আছে। মেহতাব বাদে।হাতটা তার হাতে।খুশির ঝলকের দেখা মিলল তার ঠোটে। অশ্রুভেজা চোখের সাথে মৃদু হাসি।মনের প্রশান্তি!আদরক কাউকে বিয়ে করেনি। বক্ষস্থলে এক পলশা বৃষ্টি নেমেছে।সকল অস্থিরতার নিবারণ করলো।যেনো মরুর বুকে পানির সন্ধান।
সব ভাবনা চিন্তা শেষে আবার হাত ধরে টানাটানি শুরু করলো।বললো,
“সমস্যা নেই। ডিভোর্স না হোক বিয়ে হবে।চলো আদর”
রায়হান বললো, “কার বিয়ে?”
“আমার আর আদরের”
হাত ছাড়ানোর চেষ্ঠা করে আদর বললো,
“আমি কোথাও যাবো না আপনার সাথে!”
“তুমি যাবে তোমার ঘাড়ও যাবে।অনেক!অনেক বেশি কষ্ট দিয়েছো আমাকে।তোমার শাস্তি এখনও শুরুই হয়নি!
“আপনার এক বউ দিয়ে হয় না?আবার আমাকে চাচ্ছেন?”
মেহতাব জবাব দিতে চাইলে রায়হান থামিয়ে দেয়।বলে,
“আপনি কতটা বোকা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না।আসেন ঘটনা বলি আপনাকে।”
সবাই গোল হয়ে বসে।প্রথমেই ফারিহা শেইখকে কল করা হলো।একে একে সব স্বীকার করেছে আদরের কাছে।সব ভিডিও ক্লিপ আর ভয়েস রেকর্ডও শোনানো হলো তাকে।আদর এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে মেহতাবের দিকে।সবটা পরিষ্কার তার কাছে।এত বড় ভুল কি করে করতে পারে সে? সামান্য একটা ফোন কলের ভিত্তিতে এত বড় কান্ড ঘটিয়ে বসলো?
রায়হান বললো, “আপনি চাইলে মেহতাবকে জানাতে পারতেন।আমাকে জিজ্ঞেস করতে পারতেন।আপনি কি করলেন চলে গেলেন।এই বিশ্বাস আপনার?এই আপনার ভালোবাসা?এতটা ঠুনকো?মেহতাব আপনাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল।জানেন আপনার মার সাথে ওর কথা হয়েছে?সময় চেয়েছে তার কাছে।আপনাকে একটু বিরক্ত করে তারপর সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিল।আপনিতো ওকে বোঝেনই না আদর।আপনাকে কত ভালোবাসে জানতে চান?ওর চেহারা দেখেন ভালো করে। আপনার জন্য কত পাগলামো করেছে সেটা আমি দেখেছি।এই একমাসে কত রাত আপনার বাড়ির সামনে পাড় করেছে হিসাব নেই।ঘুম নামক জিনিসটা ওর জীবন থেকে হারিয়ে গেছে।রাত বিরাতে আপনার প্রলাপ করে উঠতো।ঘুমের ইঞ্জেকশন দিয়ে ওকে শান্ত করেছি। কয়েকবারত আপনাকে খুঁজতে বেরিয়েছিলো।কত কল,কত মেসেজ দিয়েছিল।ফোনটা একবার অন করে দেখতেন।একটাবার মেহতাবের কথা শুনতেন আদর?”
এত এত কথা শুনে নিজের চোখের জল আটকাতে পারলো না আদর।সব ভুল!তার ভাবনা সব ভুল।বারবার ভুল করে বসে।নিজে কষ্ট পায়।অন্যকেউ দেয়।কতবড় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে! মেহতাবের প্রতি বিশ্বাস এতটাই ঠুনকো ছিলো?যে এক রাতে ভেঙে দিয়ে চলে গেলো কেউ। যাচাইও করলো না একবার।যেখানে মেহতাবকে অপরাধী ভেবেছিল সেখানে মূল অপরাধী হয়ে দাড়ালো আদর নিজে।তার জেদ,তার অভিমান।এতটা নির্বোধ সে!
লজ্জায়, অপরাধবোধে কোনো কথা বের হচ্ছে না আদরের মুখ থেকে।ঠোঁট কামড়ে কাদঁছে।মেহতাব তাকে সবার সামনে থেকে সরিয়ে নিয়ে গেলো।বারান্দায় এসে দাড় করিয়েছে।দুগালে হাত রেখে বলল,
“সব বাদ।সব ভুলে যাও।একটা ভয়ঙ্কর অতীত ভেবে ভুলে যাও।চলো বিয়ে করে ফেলি।”
“আমি আপনার যোগ্য না!আপনাকে একদম বুঝি না আমি।আপনাকে কষ্ট দিয়েছি।ভুল বুঝেছি।আমি আপনার যোগ্য না।আমাকে বিয়ে করলে সারাজীবন আমার বোকামির স্বীকার হবেন।”
মেহতাব ধমকের সুরে বলে উঠে, “আদর!”
মেহতাবের গালে হাত রেখে বলল, “কি অবস্থা করেছেন নিজের? সব আমার জন্য হয়েছে না?আমি দায়ী? মারেন আমাকে।বকা দেন।”
আদরের কপালে চুমু খেয়ে বললো, “বকাও দিবো না। মারবোও না।বিয়ে করবো।সারাজীবনের জন্য বেধে ফেলবো তোমাকে আমার সাথে।একটা ছোট্ট সংসার চাই।শুধু তোমার আর আমার।বিয়েটা করো অনেক বোঝাপড়া আছে তোমার সাথে আমার।”
“করবো না বিয়ে!”
“মাথা এমনেতেই অনেক গরম আছে আদর।চলো নাহয় তুলে নিয়ে যাবো।তোমার কারণে আমার স্বভাবে এমন পরিবর্তন। ক্যারেকটারলেস,মাস্তান, ছ্যাসড়া,পাগল সব উপাধি পেয়ে গেছি আমি।কোনোকালে যে একজন ডাক্তার ছিলাম সেটা ভুলতে বসেছি।”
__
বড় বড় অক্ষরে লেখা কাজী অফিস।এক সিরিয়ালে সবাই দাড়িয়ে এই লেখার দিকে চেয়ে আছে।এমন একটা পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়াবে কখনো কেউ কল্পনাও করতে পারেনি।আর এই পরিস্থিতি উৎপন্ন করবে মেহতাব।সেটা ভাবনার বাহিরে ছিলো।ডক্টর নওশের মেহতাব বিয়ে করছে।তাও পরিবার পরিজন ছাড়া।কাজী অফিসে এসে।
রায়হান কোমরে হাত রেখে বলে উঠলো, “খুবই বাজে আইডিয়া”
মেহতাব ধমকের সুরে বলল, “কোনো বাজে আইডিয়া না।আমি এই বলদ মেয়েকে আর বিন্দুমাত্র ভরসা করি না।একবার না দুইবার আমাকে ফেলে রেখে চলে গেছে। হেনস্তা করেছে।এবার ওকে একা ছাড়ার চান্স নেই।”
জ্বলজ্বল চোখে মেহতাবের পানে চেয়ে আদর প্রশ্ন করলো, “দুইবার মানে?”
“কেনো মনে নেই?চাকরি করবে না বলে এক সপ্তাহ গায়েব ছিলে?আমার অসুস্থ্যতার কথা শুনে এসেছো!”
“আপনি বকেছিলেন আমাকে।”
“তো তাই বলে চলে যাবে?আমার সেদিন আর আজকে যে অবস্থা সবটার জন্যই আপনি দায়ী চলেন মিস আদর শিকদার।”
সবাই তাদের তর্ক খুব মনোযোগ সহকারে দেখছে।মনে হচ্ছে এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ।যেনো কোনো সার্কাস চলছে।হা করে আছে সবকয়টা।সব কথাই আদরের মাথার এক ইঞ্চি মাথার উপর দিয়ে গেলো।বলে কি এই লোক?এরমানে কি সে তখন থেকেই আদরকে ভালোবাসে?
মেহতাব আবার বললো, “কাজী অফিসে ঢুকছি।কোনো ধরনের ঝামেলা যেনো না হয়।কবুল বলতে বলা হলে এক নিঃশ্বাসে বলে ফেলবে।”
“আমি আব্বু আম্মুকে ছাড়া বিয়ে করবো না”
“তোমার আব্বু আম্মুর ব্যাপারে পড়ে আসছি।আগে বিয়ে করো”
সাদা পাঞ্জাবি পরে একজন মুরুব্বী বসে আছেন।চোখে চশমা।বড় দাড়ি।এতগুলো ছেলে পেলেকে একসাথে ঢুকতে দেখে কিছুটা চমকে উঠলেন।বললেন,
“এই আপনারা এভাবে ঢুকে যাচ্ছেন কেনো?”
রোহিত বললো, “বিয়ের সাক্ষী দিতে এসেছি”
“আচ্ছা। কার বিয়ে?”
আদর আর মেহতাবকে দেখিয়ে বললো, “এইযে এই দুইজনের ”
রুবি একটা ওড়না এনে আদরের মাথায় দিয়ে দিলো।আদর এখনও হতভম্ব।কি হচ্ছে?যা হচ্ছে তাই কি সত্যি?এই অসভ্য ডাক্তার বিয়ে করছে তাকে?তাও এভাবে কাজী অফিসে এনে!তার পার্সোনালিটির সাথে এটা যাচ্ছে না একদম। হিতের বিপরীত কাজ করে ফেলছেন।কিন্তু চেহারায় কোনো ছাপ নেই।বরং অনেকটা চিন্তিত।পাশে বসে আছে।আদরের হাত চেপে ধরলো।লাল ওড়না মাথায় অন্যদিকে ঘুরে আছে আদর।এতখন ঘটনার ঘোরে থাকলেও এবার লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে।
কাজী সাহেব খুব দ্রুত কবুল বলতে বললেন।আদর হাসফাস করছে।লজ্জায় কুকড়ে যাচ্ছে। কবুল বলে ফেললেই সে হয়ে যাবে মেহতাবের স্ত্রী? শরীরটা শিরশির করে উঠলো।আদরকে কাপতে দেখে মেহতাব নিচু গলায় বললো,
“বিশ্বাস করো না আমাকে?”
মেহতাবের শীতল কন্ঠই যথেষ্ট আদরকে কাবু করতে।স্মিথ হাসলো আদর। মেহতাবের চোখের দিকে চেয়ে বলল, “কবুল”
পরপর আরো দুইবার কবুল বলেছে আদর। মেহতাবকে বলতে বলা হলে সে জোরে জোরে শ্বাস ফেলে।তারপর এক নিঃশ্বাসে কবুল বলে ফেলে।যেনো অনেক তাড়া তার।এক মুহুর্ত সময় নষ্ট করলে আদর হারিয়ে যাবে।আদর হেসে ফেললো তার সাথে বাকিরাও। যত দ্রুত কবুল বলেছে তত দ্রুত সই করিয়ে নিলো কাগজে।আদর আহাম্মক বনে আছে।কি থেকে কি হয়ে গেল?মিস থেকে মিসেস।তাও আবার মেহতাবের।মিসেস মেহতাব? আরেকদফা কম্পন অনুভব করলো সর্বাঙ্গে।বাবা মার কথা ভেবে ভীষণ খারাপ লাগছে।কি বলবে তাদের?এভাবে বিয়ে করাটা কি ঠিক হলো?তাদের বললে তারাও হয়তো রাজি হয়ে যেতেন।এবার যদি না মানেন বিয়েটা?রেগে যান?
সবাই বিয়ে শেষে বেরিয়ে যাচ্ছে।আদরও তাদের পিছু পিছু ছুটেছে।কিন্তু মেহতাবের হাত তাকে থামিয়ে দিলো। পিছনে টেনে এনে দাঁড় করিয়েছে নিজের মুখ বরাবর।মুখে ঠিক আগের মতন গুরুগম্ভীরতা।এক কাকতালীয়ভাবে আদর লাল রঙের গাউন পড়েছে।মাথার উপর রুবির দেওয়া লাল ওড়না। নাকটাও প্রচণ্ড রকমের লাল।পুরো লাল টুকটুকে বউ লাগছে।পকেট থেকে একটা আংটি বের করে বললো,
“যেদিন থেকে তোমার মা আমাকে বিয়ের কথা বলেছিলেন।ঠিক সেইদিন থেকে এই আংটিটা সাথে নিয়ে ঘুরছিলাম।তোমায় পরিয়ে দিবো বলে।সেই সুযোগটা পায়নি তখন।দিবো?”
আদর নিঃশব্দে হাত এগিয়ে দিলো।তার কোনো ইচ্ছে অপূর্ণ থাকবে না।অনেক কষ্ট দেওয়া হয়েছে।অনেক সহ্য করেছে।তার চোখের পানি আদরের হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করেছে।মেহতাবও বিনা শব্দে আংটিটি পড়িয়ে দিলো আদরের অনামিকা আঙ্গুলে।
“কাপছো কেনো?”
“কই?”
“আমাকে কেনো বুঝলে না আদর?”
আদর কি বলবে ভাবছে?সে যে ভুলটা করেছে তার জন্য ক্ষমাটা খুব ছোট শব্দ।তারপরও বললো,
“সরি!”
“আমি অনেক রাগ তোমার উপর!”
তাদের কথায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে রায়হান এসে দাড়ালো।বললো,
“কিরে যাবি না?”
মেহতাব রায়হানের উদ্দেশ্যে বললো, “আসছি একটু ওয়েট কর!”
রায়হানের মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি খেললো।চাপা হেসে বললো,
“তোরই বউ।সারারাত কথা বলার সময় পাবি।এখানে দাঁড়িয়ে আর কতক্ষন?”
“তোর বউ” কথাটি কানে ভেদ করে মস্তিষ্কে গিয়ে লেগেছে। এতো ভুল বুঝাবুঝি।এত রাগ,এত অভিমানের মধ্যে মেহতাব এটাই ভুলতে বসেছে ঠিক কিছু মুহূর্ত আগে আদরের সাথে এক পবিত্র শক্ত বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গেছে।আদরকে বিয়ে করেছে।সবকিছুই এতক্ষন ঘোর ঘোর লাগছিলো।এখন বাস্তবে এসে থম মেরে আছে।যা যা করেছে এতক্ষন সবকিছু ভেবে নিলো মেহতাব।সে করেছে এতকিছু?আদরকে এখানে এসে বিয়েটা পর্যন্ত করে নিলো।আজ থেকে তারা স্বামী স্ত্রী?
আদরের দিকে চোখ গেলো মেহতাবের। ড্যাবড্যাব করে চেয়ে আছে মেয়েটি। বিড়াল ছানার মতন।এবার আদর নয় মেহতাব চোখ সরিয়ে নিয়েছে।অস্থির লাগছে ভেতরে।
জোরে শ্বাস টেনে আদরের উদ্দেশ্যে বললো,
“চলো?”
“কোথায় যাবো আমরা?”
“বাড়িতে”
“কার বাড়িতে?”
মেহতাব কিছুটা এগিয়ে গিয়েছিল।আদরের প্রশ্নে ফিরে এলো।বুকে হাত বেধে শুধালো,
“তুমি কি আমার বাসায় যাওয়ার প্ল্যান করছো?বিয়ে হলো একঘণ্টা হয়নি।অধিকার খাটানো হচ্ছে?”
আদর নিজেকে জাস্টিফাই করতে দ্রুত মুখ খুলেছে।বলে উঠে,
“আমি কি একবারও বলেছি আপনার বাসায় যাবো।শুধু বেশি বোঝেন।”
বলেই হনহন করে হেঁটে চলে গেলো।যা মুখে তাই বলে ফেলে।বিয়ে করেছে কেনো?বিয়ের পর মেয়েরা কই যায়?এটা জানে না বুঝি?মুখের উপর লজ্জা দেয় শুধু।মানলাম বিয়েটা ভিন্ন পরিস্থিতিতে হয়েছে।তাই বলে বিয়ে করে ফেলে রাখবে নাকি?আদরের ঠিকানা কোনটা?বাড়ি যাবে?বাড়িতে কেউ নেই।বাবা মার ফিরতে ভোর হবে।
গাড়িতে বসে মেহতাব প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলো আদরের উদ্দেশে, “বাড়ির চাবি আছে না?”
“হুম”
“বাড়িতে নামিয়ে দিচ্ছি।”
“আমি একা থাকবো এত বড় বাড়িতে। ইম্পসিবল!আমার ভয় করে”
রুবি পেছন থেকে বলে উঠলো, “একা থাকবি কেন?ভাইয়া থাকবেতো তোর সাথে।”
রুবির প্রশ্নের জবাবে মেহতাব বললো, “জ্বি না।আদর আদরের বাসায় থাকবে।আর আমি আমার বাসায়।”
“এটা কেমন কথা ভাইয়া?আপনাদের আজই বিয়ে হলো।সব মিটমাট হলো।দুজন দুজনকে সময় দিবেন না?”
“বিয়ে যেহেতু করেছি।সময় দেওয়ার জন্য সারাজীবন পড়ে আছে।আর আমাদের বিয়ে হয়েছে ঠিকই।কিন্তু না আমার পরিবার না আদরের পরিবার উপস্থিত ছিলো বিয়েতে। বিয়েটা এখনও সম্পুর্ণ নয়।”
চলবে..
(কালকে সবাই গেস করছিলো শাহরিয়ারের সাথে আদরের বিয়ে হয়ে গেলো নাতো?এদিকে যে মেহতাবের সাথে আদরকে আগের রাতে বিয়ে দিয়ে ফেলছি সেটা কি কেউ জানে😶 )
(শাহরিয়ার : আমিতো কিছু করলামই না ভাই!আমারে কেন মারা হলো?শার্ট চাইপা ধরলো কেন?এই জন্যই মানুষের সাহায্য করতে চাই।হেডলাইন বানান এক ডাক্তার এক ব্যবসায়ীর কলার চেপে ধরছে)