চিত্তসন্ধি পর্ব ৪৭ লেখা: #Azyah

0
5

#চিত্তসন্ধি
পর্ব ৪৭
লেখা: #Azyah

এখন নভেম্বর মাস। প্রকৃতি জানান দিচ্ছে খুব শীগ্রই শীত আসছে। হিমশীতল হাওয়া বইছে মাঝেমধ্যে। কাপনি ধরিয়ে দিয়ে যাচ্ছে সারা অঙ্গে।মেহতাবের নিত্যদিনের কাজ।অম্বরপানে চেয়ে থাকা।দুরাকাশে নিজের মন খারাপের বার্তা পাঠানো। এ কেমন অনুভূতি?যেখানে মনের এক কোণে সুখের ছড়াছড়ি।সেখানে আবার সামান্য কষ্টও উকি দিচ্ছে।ঠান্ডা বাতাসের ঘ্রাণ আবার সবকিছু ভুলিয়েও দিচ্ছে।তার চোখ নীলাকাশে।আর আদরের চোখ তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ।আজ যেনো চোখ সরছেই না।তাকে অন্যরকম দেখাচ্ছে।এতদিন একরকম মনে হতো এখন আরেক রকম।এখন সম্পর্ক পরিবর্তন হয়েছে তাই বুঝি? বস আর ডাক্তারের রোল বাদ দিয়ে এখন স্বামীর রোল প্লে করছে।
দোলনায় মেহতাবের পাশে গিয়ে বসলো আদর।কোনো চিন্তা ভাবনা না করে মাথা এলিয়ে দিলো কাধে।

মেহতাব বললো, “কাল থেকে কিন্তু তোমার মধ্যে বেশ পরিবর্তন লক্ষ করছি আমি”

“কি পরিবর্তন?”

“সেটা তুমি ভালো মতোই জানো।”

“উহু জানি না”

“তুমি কি সজ্ঞানে আমার কাঁধে মাথা রাখলে এসে?ভয় পাওনি?”

“কেনো ভয় পাবো?আপনি বাঘ না ভাল্লুক?অনেকটা সাহস জুগিয়েছি এতদিনে।একদম ভয় পাবো না আপনাকে এখন থেকে।”

“তাই?”

“হুম তো? কি মেসেজ দিয়েছিলেন আমাকে।ফিরে আসলে একদম বিরক্ত করবেন না, জ্বালাবেন না।আমি যা বলব সব শুনবেন।”

“তুমি আমার মেসেজ পড়েছ?”

“প্রত্যেকটা মেসেজ পড়েছি আমি।আর…”

“আর?আর কেঁদেছো তাইতো?”

মেহতাবতো তার না বলা কথাগুলো ধরে ফেলে অনেক আগ থেকেই। এতে নতুন কি?আদর নিচু কণ্ঠে বলল,

“হুম”

মেহতাব গভীর সুরে বললো, “তারপরও মায়া হয়নি আমার প্রতি?”

মাথা তুললো আদর।মেহতাবের দিকে দৃষ্টি দিয়েছে। মেহতাবও সঙ্গেসঙ্গে ঘুরে তাকালো আদরের দিকে।আজ কেনো আদরের চোখে চোখ রাখতে পারছে না? এখনতো তাকে দেখা জায়েজ।তাকে ভালোবাসা জায়েজ।তারপরও কিসের সংকোচবোধ?অন্যদিকে আদর চোখ রসগোল্লার ন্যায় মেহতাবের দিকে তুলে রেখেছে।তাদের স্বভাব একে অপরের সঙ্গে আদান প্রদান হয়ে গেলো নাতো?

মেহতাবের হাতে হাত রেখে বলল, “আমি বোকা।আপনি ঠিকই বলতেন।আমি শুধু হাতে পায়ে বড় হয়েছি।অনেককিছু বুঝি আবার অনেককিছু বুঝি না।আসলে যেটা বোঝা দরকার সেটাই বুঝি না।অন্যসব ভুলভাল বুঝে বসে থাকি।আমি এমন কেন আমি নিজেও জানি না।এজন্যই হয়তো আপনাকে আমার ভাগ্যে লেখা হয়েছে।আমার ভুলগুলো শুধরে নেয়ার জন্য।আমাকে ঠিক রাস্তা দেখানোর জন্য।আমি যেমন অধৈর্য্য আপনি ততটা ধৈর্যবান।আপনি মানেন আর না মানেন।আপনার জীবনে একটা সঙ্গীর দরকার ছিলো।একটা জায়গা খালি ছিলো।ওই জায়গাটা পূরণ করতে আমাকে আপনার জীবনে পাঠানো হয়েছে।আমাদের একে ওপরের পরিপূরক হিসেবে বানানো হয়েছে।আমি অনেক সরি।আমি প্রমিজ করছি আমি আর কোনোদিন আপনাকে ভুল বুঝবো না।আর আপনাকে ফেলে রেখে চলে যাওয়ার কথা আপনি ভাবতেও পারি না।”

“বোকাসোকা একটা মেয়ে কত বড়বড় কথা বলে ফেললো!”

“মজা করলেন আমাকে নিয়ে?”

“একদম না।তোমার এই বোকামির মাশুল টানতে হয়েছিলো আমার।”

“বাদ দেন না।চলেন খাবেন এখন”

উঠে দাড়িয়ে মেহতাবের হাত টেনে ধরলো আদর।মেহতাব বললো,
“কি দরকার ছিলো এসবের?বাসায় রান্না করা আছে।”

“অবশ্যই দরকার আছে।দেখি উঠুন জলদি”

নতুন জামাইর মতন খাতির যত্ন চলছে।জোহরা খাতুন খুশিতে আটখানা।তাদের দেখে রান্না বসিয়েছে। দুইঘন্টার মধ্যে নানান পদ রান্না করে পরিবেশন করেছে তাদের সামনে।রায়হান আর মেহতাবের মেহমানদারিতে কোনো প্রকার ত্রুটি নেই।আদর মনে মনে ভাবছে সেতো নতুন জামাই-ই।শুধু বাড়ির লোকেরা জানে না। আশরাফ মাহমুদ বললেন,

“আদর তুমিও বসে পরো।খেয়ে নাও ওদের সাথে”

“পড়ে খাই আব্বু?”

“না না তোমরা খেয়ে নাও।আমি আর তোমার মা আছি”

মেহতাব থেকে এক চেয়ার দুরত্বে বসলো আদর।অনেক ইচ্ছে ছিলো তার পাশে গিয়ে বসবে।তবে খারাপ দেখায় বড়দের সামনে। নিজে থেকে পাশে গিয়ে বসা একদম ঠিক হবে না।এমনেতেই সবার চোখের আড়ালে ছাদে দুজন সময় কাটিয়ে এসেছে।

___

পুরোনো সতেজতা নিয়ে কাজে ব্যাক করেছে মেহতাব।নেই কোনো চিন্তা।ঠিক আগের মতন দায়িত্বের সাথে কাজ করছে।অনেকদিনের অভ্যাস আদর। সপ্তাহে পাঁচদিন সামনে থাকতো। বিগত একমাস যাবৎ ছিলো না।তারপরও ওর অভ্যাসটা যায়নি।এখনও তাকে অনুভুত হয় এই রুমটায়। পাশে থাকা বেডটায় গুটিসুটি হয়ে শুয়ে থাকার দৃশ্য ভেসে উঠে।আজ পরিস্থিতি ভিন্ন।আদর এখন মেহতাবের পেশেন্ট নয়,নাই অ্যাসিস্ট্যান্ট।আদর এখন তার বিবাহিত স্ত্রী।

যখন কেউ কাউকে খুব বেশি মনে করে তখন তাদের হৃদয়ের কানেকশন হয়।আর সেই কানেকশনের মাধ্যমেই মেহতাবকে চমকে দরজার সামনে দাড়িয়ে আদর।পরনে শুভ্র রঙের ড্রেস। ঠোঁটে পরান জুড়ানো হাসি।তাকে দেখে অনেকটা অবাক হলো মেহতাব।হুট করে এখানে?

উঠে দাড়িয়ে প্রশ্ন করলো, “তুমি এখানে কি করছো?”

আদর মেহতাবের টেবিলে ব্যাগটা রেখে বললো, “কেনো? আবার কাজে জয়েন করেছি।”

“কাজ?”

“হ্যাঁ?আর আমার ডেস্ক কোথায়?”

মেহতাব বসতে বসতে বললো, “সরিয়ে ফেলেছি”

“কেনো?….ওহ বুঝেছি।আমি ফিরে আসবো এটা আশা করেননি না?আমার সবকিছু সরিয়ে ফেলেছেন।অন্য কাউকে হায়ার করার ধান্দা আছে নাকি?এসব চলবে না।আমি আমার ভাগ ছাড়ছি না।আগেই বলে দিলাম।”

মেহতাব ভ্রু কুঁচকে উত্তর দিলো, “এখন আর কাজ করার কি দরকার?”

“বাহ রে?বিয়ে হয়ে গেছে বলে আর কাজ করবো না?আপনি না একজন প্রগ্রেসিভ মানুষ। আদি যুগের মানুষের ভাবনা আপনার? ছি:”

“আমি অনেক ব্যাকডেটেড।আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে তোমার এখন কাজ করা মানায় না। পদোন্নতি হয়েছে।আর অন্য কারো কাছে আমি তোমাকে কাজ করতে দিবো না।কোনোদিন না!”

মেহতাব অনেকটা পজেসিভ।তাকে দেখেই বুঝা যায়।কেনো কাজ করতে দিবে না সেটাও আদর ভালো করেই জানে।মুখ ভেংচিয়ে বললো,

“হিংসুটে!”

“হ্যাঁ হিংসুটে।এবার বাড়ি যাও”

আদর মুখ লটকে বলে উঠে, “একটু থাকি না?কতদিন পর এলাম এখানে। কত্ত মিস করেছি এই কেবিনটাকে জানেন?”

তাচ্ছিল্যের সুরে মেহতাব জবাব দিলো, “এট লিস্ট কেবিনের মায়ায় পড়ে ফিরে আসতে?”

“কথায় কথায় শুধু খোচা দেন।”

“তুমি খোচা খাওয়ার মতোই কাজ করেছো।”

“এভাবে বললে কিন্তু বিয়ে করবো না!”

“তোমার বিয়ে হয়ে গেছে”

“আপনার বাড়ি যাবো না।”

“তুলে নিয়ে যাবো।আমাকে চিনো তুমি?”

আদর চিন্তিত মুখ বানিয়ে বললো,

“চরিত্রহীন, গুন্ডা-মাস্তান আর কি কি উপাধি দেওয়া যায় আপনাকে?”

ছোটছোট চোখে আদরের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,

“তোমার বাবা মা তোমাকে আমার হাতে দেক একবার। কি কি উপাধি দেওয়া যায় শিখিয়ে দিবো।”

কথার অর্থ আদর যা ভাবছে ঠিক তাই।মাথা নামিয়ে ঠায় বসে রইলো।এক দন্ড নড়বে না এখান থেকে।এতদিন পর এসেছে।কিছুটা সময় কাটিয়েই যাবে।তাছাড়া এখন তার সম্পূর্ণ অধিকার আছে এখানে থাকার।হাজার হোক মেহতাব এখন তার স্বামী।স্বামীর কেবিনে আসতে কোনো অজুহাতের দরকার আছে?মেহতাব নিষ্পলক চেয়ে আছে আদরের দিকে।কতদিন পর দেখছে এই মুখটা। একমাসকে এক বছর সমান লেগেছে তার কাছে।কখনো ভাবেনি আবার দেখা পাবে তার।এই চিরচেনা কেবিন রুমে।তাও নিজের বউ হিসেবে। মেহতাবের মস্তিষ্ক এখনো স্থির করতে পারেনি।আসলেই আদর তার স্ত্রীতো?নাকি এটা কোনো স্বপ্ন।যদি স্বপ্ন হয় খুব ভালো স্বপ্ন।কোনোদিন যেনো এই স্বপ্ন ভেংগে না যায়! চেহারায় একটা নতুন বউয়ের মতন ভাব এসেছে। নাকফুলতো সবসময়ই পড়ে।আজ এই নাকফুলও ভিন্ন লাগছে।ইচ্ছে হচ্ছে জড়িয়ে ধরতে।চুমু খেতে সারামুখে।”আমার বউ” বলে সম্মোধন করতে।কিন্তু এই নির্বোধ মেয়ের সামনে সব শব্দ শেষ হয়ে যায়।খালি হয়ে যায় শব্দ ভান্ডার।তাছারাও কতটা কষ্ট দিয়েছে খেয়াল আছে?

মেহতাবকে এভাবে চেয়ে থাকতে দেখে আদর লজ্জমিশ্রিত কণ্ঠে বলে উঠে, “কি দেখছেন?”

“এই একমাস আমাকে যে কষ্ট দিয়েছো?এর শাস্তি কি হতে পারে সেটা ভাবছি!”

“হাহ! ভেবেছিলাম ভালো হয়ে গেছেন।আপনি আছেন এখনও আগের মতনই ঘাড়ত্যাড়া। যাই হোক দেন শাস্তি।আমি শাস্তি ভোগ করলে আপনিও কোনো অংশে কষ্ট কম পাবেন না ”

নিজের হাসিকে চাপিয়ে মেহতাব বললো, “এত কথা কে শেখালো তোমায়?ঐযে শাহরিয়ার?”

“আপনাকে কান্না করা কে শেখালো?ফারিহা শেইখ?”

“থাপ্পড় খাবে?”

“চা খাবো। বানিয়ে আনেন।”

আয়েশ করে চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়ে বলল আদর।আদর জানে মেহতাব এখনও রেগে।তার সাথে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টায় ইচ্ছে করে উল্টোপালটা বলছে।

মেহতাবও গা এলিয়ে দিলো চেয়ারে।বুকে হাত বেধে বললো,

“অর্ডার করা হচ্ছে আমাকে?”

“হ্যাঁ এমনটাই কিছু!”

মেহতাব উঠে দাড়ালো।একপা দুই পা করে এগিয়ে এসেছে।আদর পরিস্থিতির পূর্বাভাস পেয়ে নড়েচড়ে বসলো। নিরাপদ দূরত্ব নেওয়া উচিত এখন।মেহতাব কাছে এসে হাত টেনে ধরতে চাইলে আদর এক লাফে ছুটে পালিয়েছে। মেহতাব আর এগোয়নি।আদর নিজেই চা বানাতে উদ্যত হলো।বিড়বিড় করে বললো,

“আমিই বানাচ্ছি বসেন গিয়ে।”

____

জরুরী এক সপ্তাহের ছুটি নিয়ে এসেছে মিশা এবং তার বাবা নাসির উদ্দিন।হুট করে ছেলে এভাবে দেশে আসতে বলার কারণ কেউই জানে না। রায়হানও মিশাকে কিছুই জানায়নি। মেহতাব বারণ করেছে।দেশে থাকা অবস্থায় মিশা সামান্য সন্দেহ করলেও রায়হান তাকে বুঝ দিয়ে মনোযোগ ঘুরিয়ে অন্যদিকে নিয়ে গেছে।বিদেশ থেকে আশা চারটি খানি কথা নয়।তারপরও জরুরি তলবে ভার্সিটিতে অ্যাপ্লিকেশন করে আজ রাতের ফ্লাইটে বাংলাদেশে এসে নেমেছে মিশা আর নাসির উদ্দিন।সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে ছেলেকে পাননি।ক্লিনিকে চলে গেছে মেহতাব। রায়হানকে কল করলো নাসির সাহেব।তার কাছেও এত দ্রুত ডাকার কারন জানতে পারেননি। অগ্যতা অপেক্ষা করছেন মেহতাবের বাড়ি ফেরার।মিশার কপালেও চিন্তার ভাঁজ।বড় কোনো ঘটনা না হলে এভাবে ডেকে আনে না।
অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে সন্ধায় বাড়ি ফিরলো মেহতাব।ফ্রেশ হয়ে কাধে টাওয়াল ঝুলিয়ে এসে দাড়ালো বাবার সামনে।চুল মুছছে দাড়িয়ে। নাসির উদ্দিন টিভি দেখা বাদ দিয়ে ছেলের উদ্দেশে বললেন,

“আমাদের ডাকিয়ে নিজেই গায়েব হয়ে গেছো কেনো?”

মেহতাব বললো, “জরুরি দরকার ছিলো”

“কি সেটা বলো শুনি?”

টান টান উত্তেজনা নিয়ে মিশা দাড়িয়ে।হটাৎ রায়হানকে বাড়িতে ঢুকতে দেখা গেলো।সবাই উপস্থিত। মেহতাব ভাবলেশহীন ভঙ্গিতে বলল,

“বিয়ে করবো সামনের শুক্রবার।এর জন্যই আনিয়েছি তোমাদেরকে।সব সেট করে এসেছি।গিয়ে মেয়ের বাবা মার সাথে কথা বলে নিবে।আগামী শুক্রবার ডেট ফেলবে বিয়ের।আমি কোনো ঝামেলা চাই না।আমার পরিবার,রায়হানের পরিবার আর আদর মানে যাকে বিয়ে করছি তার পরিবার থাকবে।ঘরোয়াভাবে।”

রায়হান বাদে নাসির উদ্দিন আর মিশার চোখ ছানাবড়া।বিষম খেয়ে গেলো দুজনই।কিভাবে নির্লজ্জের মতন কথাগুলো বলছে?সে সব ঠিকঠাক করে বাবাকে জানাচ্ছে শুধু।নাসির উদ্দিন হালকা চেচিয়ে বললো,

“দেখো মিশা তোমার ভাইয়ের কান্ড! মানে বিয়ের সবকিছু ঠিকঠাক করে বাবাকে জানাচ্ছে।”

মিশা বললো, “ভাইয়া কি এসব?”

“সিন ক্রিয়েট করিস না।এতদিন বিয়ে করো বিয়ে করো বলে মাথা খেয়েছিস আমার।এখন করতে চাচ্ছি তোরা বাবা মেয়ে মিলে এমন রিয়েকশন দিচ্ছিস যেনো চুরি করছি?”

নাসির উদ্দিন জবাবে বললেন, “তোমাকে বিয়ে করতে মানা করেছে কে?করো কিন্তু এইভাবে?আগে জানাওনি কেনো?”

“আগে আমি কিছু শিওর ছিলাম না।তোমরা দেশে ছিলে না।”

নাসির উদ্দিন তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলে উঠলেন, “ঠিক আছে আব্বা।যেদিন বউ নিতে যাবেন সেদিন জানিয়ে দিয়েন।আমরা আপনার বিয়ে আট্যান্ড করে ভালোমন্দ খেয়ে আসবো”

মেহতাব জবাব দিলো না।বাবার এমন ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল সম্পর্কে সে অবগত।কথা না বাড়িয়ে জড়িয়ে ধরলো বাবাকে।বললো,

“আমি আগেই বলেছিলাম সময় হলে বিয়ে করবো।এখন সময়টা এসেছে।ছেলের বিয়েতে তুমি খুশি না?”

“হুট করে জানলে খুশির চেয়ে শক বেশি লাগে”

“খুশী কিনা বলো?”

নাসির সাহেব বিনা বিলম্বে উত্তর দিলেন, “ভীষণ খুশি।কই? বৌমার ছবি দেখাও।দেখি কোন সাহসী মেয়ে আমার ছেলেকে বিয়ের জন্য রাজি করিয়েছে।তাকে আমি এয়ার্ড দিবো”

রায়হান বাবা ছেলের মধ্যে বলে উঠে, “নাকানি চুবানি খাইয়েছে ”

সঙ্গেসঙ্গে মেহতাবের রাগী দৃষ্টির স্বীকার হলো রায়হান। গুরুত্ব দিলো না।শুধু চোখ দেখাতে পারবে। ডক্টর নওশের মেহতাব কতটা ভীতু আর দুর্বল সেটা দেখে ফেলেছে রায়হান। তা অবশ্য শুধু আদরের জন্য!

মিশাও যোগ দিল বাবা আর ভাইয়ের মধ্যে।বললো, “তাহলে ভাইয়ার বিয়েটা আমার আগেই হচ্ছে”

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here