চিত্তসন্ধি পর্ব ৫০ লেখা: #Azyah

0
6

#চিত্তসন্ধি
পর্ব ৫০
লেখা: #Azyah

“আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট না আমার অর্ধাঙ্গিনী হিসেবে কাজ করবে।আমাকে সাহায্য করবে।ব্যাক সাপোর্টে থাকবে।সারাক্ষণ পাশে আর সাথে থাকবে আমার ”

মেহতাবের কথার উত্তরে আদর বললো, “আমার কাজ করতে কোনো সমস্যা নেই।কিন্তু আপনি না সেদিন বললেন আমার এখন আর কাজ করার প্রয়োজন নেই?”

“বলেছিলাম।কিন্তু এখন চিন্তায় পরিবর্তন আনলাম। হ্যা এটা ঠিক ঘরের বাহিরে অফিসের ধকল আমি তোমাকে করতে দিবো না।সেই কারণেই আমার সাথে কাজ করা।আর চাকরি ছাড়াও তোমার নিজের একটা ইনকাম সোর্স থাকা উচিত।”

“তাই বলে দুটো কাজ একসাথে আবার পড়ালেখাও?”

“দুটো কাজ করতে বলার পেছনে একটা কারণ আছে”

আদর জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো মেহতাবের দিকে। শুধালো,

“কি কারন?”

“পড়ালেখা করতে হবে।এর পেছনে কোনো কারণ নেই।কিন্তু চাকরি আর এই কোর্সটা করবে নিজের বাবা মার জন্য।”

এমনেতেই মেহতাবের কথা অর্ধ বুঝছে আদর।তার মাথায় কি চলে সেটা বোঝা কঠিন।পুরো স্পষ্ট করে না বললে কোনো মানুষই বুঝতে পারবে না।ওই না বোঝার তালিকায় আদরও পড়ে। তাইতো এতএত প্রশ্ন করে বসে।এবারও ঠিক একই।জিজ্ঞেস করলো,

“বুঝতে পারছি না কিছুই।ক্লিয়ার করে বলেন”

স্বাভাবিক ভঙ্গীতে মেহতাব বললো, “তুমি কি বলেছিলে মনে আছে?তোমার একটা ভাই থাকা উচিত ছিলো।তোমার পরিবারের একটা শক্ত লাঠি থাকা উচিত ছিলো?যাদের কোনো ছেলে সন্তান নেই সেই বাবা মাগুলোর দায়িত্ব নিয়ে অনেক ভাবনা চিন্তা করতে হয়।মেয়ের বিয়ের পরও কিন্তু বাবা মাকে দেখে রাখার দায়িত্ত্ব মেয়ের উপরই থাকে।দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা সেটা পালনে অক্ষম।কারণ কি?তারা বিবাহিত।একজন ছেলের তার বাবা মার প্রতি যতটুক দায়িত্ব থাকে একজন মেয়ের জামাইরও ঠিক ততটুুক দায়িত্ব আছে।কিন্তু এই সমাজে কেউ মানে না এটা।আমি তোমার দায়িত্ব নিতে বাধ্য।তবে তোমার বাবা মার দায়িত্বও নিবো।কোনো দয়া দেখিয়ে নয়।আর তোমাকে সাবলম্বী করে তুলবো যেনো আমার দায়িত্ব নেওয়াকে আমার দয়া হিসেবে না দেখো।না তোমার টাকার প্রতি আমার কোনো হক আছে,না আমার পরিবারের।তোমার অর্জিত টাকা একান্তই তোমার আর তোমার বাবা মার।”

পলকহীন চোখে মেহতাবের কথা শুনছে আদর।ভালো লাগছে শুনতে।ধীরেধীরে বুঝতে শুরু করেছে মেহতাবের কথার মানে।একটু থেমে মেহতাব আবার বললো,

“তুমি এটাও বলেছো তুমি ছাড়া তোমার বাবা মা একদম একা।এটা সত্যি!কিন্তু এখন এটাও সত্যি তুমি ম্যারিড।এক বছর সময় দিলাম।নিজেকে সাবলম্বী করে নাও।নিজের অর্জিত টাকা জমাও।”

“জমিয়ে কি করবো? টাকাতো বাবা মার পেছনে খরচ করার জন্য ইনকাম করবো তাই না?”

“সেটা একটা নির্দিষ্ট সময়ে।আজ থেকে এক অথবা দেড় বছর পর তুমি,আমি,আমার পরিবার,তোমার পরিবার একই সাথে থাকবে।তোমরা মেয়েরা শ্বশুর শাশুড়ি নিয়ে থাকতে পারলে আমরা পারবো না কেনো?আমি চাইলে এখনি তোমার বাবা মাকে আমার কাছে নিয়ে আসতে পারি।কিন্তু আমি চাই না তারা কোনোভাবে মনে করুক আমি দয়া করছি তাদের উপর।তারা যেনো তোমার ভরসায়,তোমার কাধে ভর দিয়ে আসে।এই কারণে আদর তোমার নিজে সাবলম্বী হওয়াটা খুব দরকার।”

মুগ্ধ হয়ে মেহতাবের প্রত্যেকটা কথা শুনছে আদর।সবটা পরিষ্কার তার কাছে। মেহতাবের চিন্তাভাবনা আসলেই দারুন।আদর নিজের বাবা মাকে নিয়ে যত সময় অপচয় করেছে সেখানে মেহতাব এই দুশ্চিন্তা থেকে বের হওয়ার পথটাও বের করে ফেললো।

আনমনে হুট করে বলে উঠলো, “আপনি অনেক ভালো”

“আজকাল ভালোর দাম নেই বুঝলে।সবাই শুধু ভুল বুঝে।চলে যায়”

আদরের মুখটা ছোট হয়ে গেলো।করুন কণ্ঠে বললো, “ভুলে যান না ওই কথাটা”

“খারাপ লাগে আদর!আমি সেই সময়টা যেই অনুভূতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছি।ভাবলে আমার শরীরের পশম এখনও দাড়িয়ে যায়!হারানোর দুঃখ কাকে বলে জানো?”

“এজন্যই বিয়ের পর থেকে আমার সাথে ঠিক মতন কথা বলেন না?”

“এটা কিছু অংশে সত্যি হলেও ভুল আছে।আমি শুরু থেকেই কম কথা বলি।কিন্তু এখন তোমার এক্সপেকটেশন বেড়েছে।তাই হয়তো আমার কথাগুলো কম মনে হচ্ছে।আর এতে তোমার কোনো দোষ নেই।”

___

সময় পাখা ঝাপটে গেছে।দেখতে দেখতে দুইদিন।আদর আর মেহতাব ফিরে এসেছে।তার আগে জয়তুন বেগমের মেয়েকে মেহতাব আদরের বাবা মার দেখা শুনার দায়িত্ব দিয়েছে।বিয়ের পরদিন থেকেই মেহতাব কাজে ব্যাক করে।আদর কাজে জয়েন করবে আগামী মাসে।আগামীকাল মিশা এবং নাসির উদ্দিন এর ফ্লাইট।তারা যত দ্রুত এসেছিলো তত দ্রুত যাচ্ছে।মিশা মাত্র এক সপ্তাহের ছুটিতে এসেছে দেশে।

“আপনাকে কল করছি ধরেন না কেনো?”

“ব্যস্ত ছিলাম” মেহতাব সামান্য সময় নিয়ে উত্তর দিলো।

“আচ্ছা।আমি আজকে রান্না করবো।আপনি কি খাবেন?”

আদরের রান্নার কথা শুনে মেহতাবের চোখ কপালে উঠে গেছে।চা পর্যন্ত ঠিক ছিলো।এবার খাবার রান্নায় উদ্যত আদর।মেহতাব প্রশ্ন করলো,

“রান্না জানো?”

“আবার জিজ্ঞেস করে।সব পারি!”

মেহতাব স্মিথ হেসে বললো, “যা ইচ্ছা রাধো শুধু খাবার যোগ্য হলেই হয়”

এমন তাচ্ছিল্যতম কথায় তেতে উঠল আদর।তার বানানো খাবার নিয়ে সন্দেহ করছে?ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলল,

“আমাকে কি ভাবেন হ্যা?আমি কি বাচ্চা যে কিছুই রাধতে পারি না?মোটামুটি যতটুক রান্না জানা দরকার জানি”

“ঠিক আছে দেখি কি কি রান্না জানেন আপনি।বাসায় এসে গরম গরম খিচুড়ি আর কয়েক পদের ভর্তা চাই”

“খাবার ভালো হলে কি দিবেন?”

“তুমি যা চাও”

“নাহ!আমি চাইব না।আপনি আমার পছন্দমত আমাকে গিফট দিবেন”

মেহতাব প্রশ্ন করলো, “অধিকার খাটানো অ্যান্ড অল হ্যা?”

আদর চুপ রইলো কিছুক্ষন। নীরবতা ভেঙে বললো,

“অধিকার আছে বলেই খাটাচ্ছি” বলে তৎক্ষনাৎ ফোন কেটে দিলো।

__
ভরা সন্ধ্যা। পকেটে হাত রেখে এক প্রেমিক পুরুষ চুরির দোকানের সামনে দাড়িয়ে আছে। দ্বিধাদ্বন্দ মনে। চুড়ি ওয়ালি নানান ধরনের চুরির নাম বলছে।মাথায় কিছুই ঢুকছে না মেহতাবের।হাতে রজনীগন্ধার মালা।দ্রুত বাড়ি ফিরতে হবে। নাহয় ফুলগুলো শুকিয়ে যাবে।বিক্রেতা নারীকে বললো,

“আকাশী রঙের কাছের চুরি দেন।”

নারীটি বললেন, “হাতের মাপ জানেন বাজান?”

আরেকদফা বিপদের মুখে মেহতাব। মাপতো জানে না।পকেট থেকে ফোন বের করে দিল।ছবি দেখে হাতের মাপ আন্দাজ করা সম্ভব নয়।তারপরও অনেক যুদ্ধ করে আকাশী রঙের চুরি নিয়েছে। মাপে না হলে বদলে নিবে।গিন্নির জন্য উপহার নেওয়া শেষ।মুখে হাসি ঝুলিয়ে রওনা হয়েছে বাড়ির উদ্দেশে।

কলিং বেলের আওয়াজে আদর দ্রুত গেটের দিকে এগিয়ে গেলো।মেহতাব এসেছে।এই ব্যাপারে সে অবগত।আজ শাড়ি পড়েছে।কাকতালীয়ভাবে আকাশী রঙের শাড়ি। আইডিয়াটা ছিলো মিশার।বাংলা রান্নার সাথে বাংলা নারী সাজ।দরজা খুলে দাড়াতেই দেখলো মেহতাব জুতো খুলছে নিচু হয়ে।এক হাত দরজার দেয়ালে ঠেকানো।মাথা তুলে আদরকে শাড়ি পরিহিত অবস্থায় দেখে ক্লান্ত মনে ঝড় বয়ে যাওয়ার উপক্রম।ঠোঁট কামড়ে মেহতাবের দিকে ড্যাবড্যাব করে চেয়ে আছে।সবসময় নিজেকে আসমানী রঙে সাজায় কেনো?কি আছে এই রঙে। মেহতাবকে আয়ত্তে আনতে চায়?মনে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করে অবলার মতন দাড়িয়ে থাকে!

“ভাইয়া? ভাবিকে দেখা শেষ হলে ভেতরে এসো।” ঠোঁট টিপে হাসছে মিশা।অনেকক্ষন যাবৎ তাদের দরজায় দাড়িয়ে থাকতে দেখে ঠাট্টা করে বলে ফেললো।মেহতাব নজর এড়িয়ে ভেতরে ঢুকে গেছে।

দরজা লাগিয়ে আদর ভেতরে আসলে মিশা আবার বললো,

“ভাবি কি জাদু করেছো ভাইয়াকে বলোতো?এতদিন আমরা তাকে বদলাতে পারলাম না।তুমি অল্পদিনে ভাইয়ার চালচলন বদলে দিলে?”

আদরও কোনো অংশে কম না। মিশাকে উদ্দেশ্য করে বললো,

“রায়হান ভাইয়া যে জাদুতে আক্রান্ত ঠিক সেটাই!”

আদরকে লজ্জা দিতে গিয়ে উল্টো নিজেই লজ্জা পেয়ে বসেছে মিশা।চোখ নামিয়ে হেসে চলে গেলো রান্না ঘরের দিকে। সার্ভ করার দায়িত্ব তার।সব রান্না আদর ইতিমধ্যেই সেরে ফেলেছে।আজ সন্ধ্যার নাস্তায় মেহতাবকে খিচুড়ি,ভর্তা খাওয়াবে।ধীর পায়ে রুমের দিকে অগসর হয়ে দেখতে পেলো মেহতাব চেঞ্জ করেছে। অর্ধভেজা মুখ দিয়ে খাটে গা এলিয়ে দিতেই আদরকে দেখে উঠে বসলো।একপলক তাকিয়ে আবার চোখ নামিয়ে নিয়েছে।ঘরে উপস্থিত দুজন।তারপরও নীরবতা।আদর দরজার দিকে দাড়িয়ে ভাবছে কি বলবে?কি দিয়ে কথা শুরু করবে।এমনেতেই হুট করে শাড়ি পড়ায় লজ্জাও লাগছে।তার আগে মেহতাব বললো,

“হটাৎ শাড়ি পড়লে যে?”

আদর দ্রুত উত্তর দিলো, “মিশা পড়তে বলেছে।বললো বাঙ্গালী খাবার রান্না হচ্ছে।বাংলা একটা লুক দরকার।তাছারাও নাকি আমি বাড়ির বউ। একটু আকটু শাড়ি পড়তেই হয়।তাই পড়লাম আরকি।আমি কিন্তু পড়তে চাইনি”

আদরের এত কথা শুনে মেহতাব কপালে হাত ঠেকিয়ে বসলো।একটা প্রশ্নের বিপরীতে পুরো বিস্তারিত বিশ্লেষণ করছে সে। মেহতাবকে এভাবে দেখে আদর মলিন সুরে শুধালো,

“কি হলো?”

“তুমি একটা বাচাল!”

“আমি আপনার জন্য এতকিছু রান্না করেছি।আর আপনি আমাকে বাচাল বললেন?”

“দুটো দুই জিনিস।বাচাল বলেছি কারন আমি তোমাকে একটা প্রশ্ন করেছি।তুমি গদগদ করে রচনা বলা শুরু করেছো।”

“ঠিক আছে।আমি আর কোনো কথা বলবো না।তালা দিলাম মুখে এখন থেকে”

এক মুহুর্ত দাড়ায়নি আদর।অল্পতে অভিমান করা রোগে পেয়েছে তাকে। প্রস্থান করেছে সেখান থেকে। মেহতাবের হাত পূনরায় ঠেকেছে কপালে।কত না কাঠখড় পোহাতে হবে একে নিয়ে?

__

রাতের খাবার আজ জলদি খাওয়া হচ্ছে।আদরের প্রথম রান্না বলে কথা। রায়হানও এসেছে।নতুন ভাবীর হাতের রান্না খাবে বলে।মিশা সবাইকে সার্ভ করতে চাইলে আদর দেয়নি।নিজেই সবাইকে সার্ভ করে দিয়ে হা তাদের মুখের দিকে চেয়ে আছে। প্রতিক্রিয়া দেখবে বলে।মেহতাব খাবার মুখে তোলার সাথেসাথে আদরের চোখ রসগোল্লার মতন হয়ে গেলো।আজ ডাক্তার সাহেবের মুখ পরেই ছাড়বে।এক এক করে সবকিছু দিয়ে খেলো মেহতাব।সবই ঠিকঠাক।বরং ভালো শুধু ভর্তায় একটি লবণ কম।সবসময়ের মতন প্রতিক্রিয়াহীনভাবে খেয়ে সবার আগে উঠে গেলো।আদরের মুখে অন্ধকার ছেয়ে গেছে।টেবিলে বসা বাকি সবার উদ্দেশে বললো,

“খাবার কি ভালো হয়নি?”

রায়হান বললো, “কে বলেছে ভালো হয়নি?বেশ মজাইতো”

তাল মিলিয়ে নাসির উদ্দিনও বললেন, “সত্যি খাবার ভালো হয়েছে”

মেহতাবের যাওয়ার পানে চেয়ে আদর বললো, “তাহলে কিছু না বলে উঠে চলে গেলো কেনো?”

মিশা উত্তরে বললো, “আরেহ ভাইয়ার কথা বাদ দাওতো। নিরামিষ একটা!কারো মুখের উপর প্রশংসা করে না”

রায়হান মজার ছলে বলতে বসে, “আরেহ একান্তে ঘরে বসে..”

মিশার চোখ রাঙানিতে দমে গেল রায়হান।ইশারা দিয়ে বাবাকে দেখাচ্ছে।বড় মানুষ সামনে।চোখের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিচ্ছে মুখ সামলে কথা বলতে।

_

সন্ধ্যার পর থেকে মেহতাবকে এড়িয়ে যাচ্ছে আদর।ঘরের ত্রী সীমানায়ও যায়নি।রাগ,অভিমান দেখাচ্ছে।মিশার সঙ্গে সময় কাটাচ্ছে।অন্যদিকে মেহতাব কয়েকবার ঘরের বাইরে উকি দিয়ে আদরকে দেখতে পায়নি। অন্যঘর থেকে শুধু কথার আওয়াজ পেয়েছে। অন্যথায় অপেক্ষা করে লাইট নিভিয়ে শুয়ে পড়েছে।আদর উকি দিয়ে দেখলো।ঘরের লাইট বন্ধ। মেহতাবের কোনো সাড়া শব্দ নেই।রাগ তরতর করে বেড়ে যাচ্ছে।দাত কটমট করে বলতে লাগলো,

“একতো খাবার কেমন হয়েছে সেটা জানালো না।এত সময় যাবৎ ঘরের বাইরে একটাবার আমাকে ডাকেনি!নতুন বউয়ের সাথে কেউ এমন আচরণ করে!!”

ঘুম পেয়েছে নাহয়সারারাত ঘরে ফিরতো না।বিষণ্ণ মনে অন্যপাশে ঘুরে শুয়ে পড়েছে।ঠিক তখনই মেহতাব উঠে বসলো।ঘরের লাইট জ্বালিয়ে আদরকে টেনে তুলেছে।কপাল কুঁচকে বললো,

“নেক্সট টাইম আমি ঘরে আসার সাথেসাথে ঘরে আসবে।যত জরুরি কাজই থাকুক না কেনো।”

আদর নিরুত্তর।মুখ ভোতা করে বসে আছে।একটা কথাও বলবে না।এমন নিরামিষ মানুষের সাথে জীবন পাড় করতে হবে ভাবলেই মাথায় রক্ত চড়ে যায়।আদরকে মুখ গোমড়া করে বসে থাকতে দেখে দৃষ্টি শীতল করলো মেহতাব।হাত ছেড়ে ফ্রিজ থেকে একটু ছোট্ট প্যাকেট এনে সামনে রেখেছে। ব্যাগ থেকে চুড়ি বের করে আদরের সামনে ধরে বললো,

“নাও।”

অবাক সুরে আদর প্রশ্ন করলো, “কি এসব?”

“স্মৃতিশক্তি লোপ পেয়েছে নাকি?দুপুরে কল করে কি বলেছিলে?”

মুখে আলো ফুটতে এক সেকেন্ড সময় নেয়নি।দুপুরের কথা মনে পড়ে আদরের মুখে বিশাল হাসির জোয়ার।এই জোয়ার যথাসম্ভব লুকানোর চেষ্টায় সে।একহাতে আকাশী রঙের কাচের চুড়ি।অন্যহাতে রজনীগন্ধার মালা পড়তে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে।তার এই যুদ্ধ থেকে মেহতাব হাত টেনে নিল।হাতে মালাটি বেধে দিয়ে বললো,
“জিজ্ঞেস করলে না কেনো রজনীগন্ধার মালা?বকুল নয় কেনো?”
আদরের রাগ,অভিমান ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। মেহতাবের দিকে চেয়ে তার কথার ভাজে প্রশ্ন করলো,

“কেনো?আর আমার কিন্তু রজনীগন্ধার মালা পছন্দের।”

“জানি”

“কিভাবে?আমার জানা মতে কখনো বলিনি আপনাকে”

“সেদিন ভার্সিটি গেটে হাত বাড়িয়েছিলে ফাইল নেওয়ার জন্য?সেদিন তোমার হাত থেকে একটি একটি রজনীগন্ধার কলি জমিনে পড়ছিলো।জানি না কেনো এই দৃশ্য আমাকে অনেক আকর্ষণ অনুভব করায় সেদিন”

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here