সুদর্শন শঙ্খচিল’ [০১] লেখনীতে:- নূরজাহান আক্তার (আলো)

0
196

‘সুদর্শন শঙ্খচিল’
[০১]
লেখনীতে:- নূরজাহান আক্তার (আলো)

“বিয়ের রাতে বউকে হসপিটালে ভর্তি করলি। তুই কি মানুষ?”

কথাটা বলে শিফাত ওর বন্ধু রনিতকে থাপ্পড় মারল। কথাটা শুনে রনিত মাথা নিচু করে নিল। এতো বিশ্রী ব্যাপার ঘটে যাবে সেও ভাবেনি। এখন ওর নিজের কাছে নিজেকে ছোট মনে হচ্ছে। আজকে রনিতের বিয়ে হয়েছে। ওর বন্ধুরা ওকে বাসরঘরে ঢুকিয়ে ক্লাবে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। রাত দু’টোর দিকে রনিতের কল পেয়ে ওরা হসপিটালে ছুটে এসেছে।

রনিতের বউয়ের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য তাঁকে হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে। যাকে বলে অপরিপক্ব বয়সে বিয়ের ফল। ঘটনাটা খুবই লজ্জাজনক। রনিতেরও লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছা করছে। তাঁর মাথায় ঘুরছে অন্য চিন্তা। এখন দুই পরিবারের সদস্যদের সামনে কিভাবে দাঁড়াবে? আর আত্মীয়-স্বজনরাও শুনলে হয়তো বলবে, “বউ দেখে লোভ সামলাতে পারেনি। তাই বউয়ের উপর হামলে পড়েছে।”

রনিতের বউয়ের নাম পলক। সে এবার নবম শ্রেনীতে উঠেছে। প্রতিটা মেয়ের মতো পলকও একরাশ স্বপ্ন নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে পা রেখেছিল। সংসারের সুখ-দুঃখে সামিল হয়ে দায়িত্বটা কাঁধে নিতে চেয়েছিল। রনিতকে ভালবাসা দিয়ে মুড়িয়ে রাখতে চেয়েছিল। এসব আর হলো কই? প্রথম রাতেই তো স্বামী নামক মানুষটা তাঁর মনটা বিষিয়ে দিল। মেয়ের বিদায়ের সময় পলকের বাবা রনিতের হাতে মেয়েকে তুলে দিয়ে কেঁদে বলেছিলেন, “আমার কলিজাটাকে তোমাকে দিলাম। আমার পাগলি মেয়েটাকে দেখে রেখো, বাবা।”

রনিত হ্যাঁ সূচক মাথা নেড়েছিল। বাবার ছায়াতল ছেড়ে স্বামী নামক মানুষটার উপর বিশ্বাস রেখে, সে নব্য স্বপ্নের ডানা মেলেছিল। বাসর রাতে দু’জনে জোছনা বিলাস করতে চেয়েছিল। হাতে হাত রেখে গল্প করতে চেয়েছিল, একে অপরকে বোঝার সময় চেয়েছিল। কিন্তু ঘটে গেল অন্য ঘটনা। স্বামী নামক মানুষটা ওর উপরে হামলে পরল। তাঁকে সাদা বিছানার চাদরে কুমারীত্বের পরীক্ষা দিতে হলো। রনিতও ভুলে গিয়েছিল, পলকের বয়সটা এখন সঙ্গমের জন্য অপরিপক্ব। তাঁর এই ভুলের কারণে এখন লজ্জাজনক পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হলো।

ওদের গল্পটা এমন না হতেও পারতো। রনিত তাঁকে সময় দিতে পারতো। বউ তো আর পালিয়ে যাচ্ছে না। সে তো আর অবুঝ নয়। বুদ্ধি দিয়ে নিজেকে কনট্রোলে রাখতে পারতো। তাহলে হয়তো ওদের গল্পটাও স্বাভাবিক হতো। এই ঘটনায় পুরুষ জাতির প্রতি পলকের মনে ঘৃণার জন্ম নিল। তাঁর মনে একটা ঘৃণিত ধারণা পোষণ হলো, “পুরুষ জাতি নারীর দেহতে তুষ্ট।”

এত রাতে হসপিটালে তেমন ডাক্তার নেই। এদিকে পলকের রক্তক্ষরণ থামছে না। ওর মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। চোখের কোণা বেয়ে ঝরছে অশ্রুবিন্দু। লজ্জা আর ভয়ে সে জর্জরিত। একজন নার্স ঘুম থেকে উঠে রেগে বলল, “বুইড়া ব্যাডার হুশ নাই। বউ পাইয়া গতরে ত্যাজ বাইড়া গেছে। ইস! মাইয়াডার কি অবস্থা করছে?”

পলকের অবস্থা বেগতিক দেখে সে দ্রুত ডাক্তার ডাকতে গেল। পলক চুপ করে শুয়ে আছে। ওর ইচ্ছা করছে মায়ের বুকে মুখ লুকিয়ে বলতে, “মা! মাগো, আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। স্বামী নামক মানুষগুলো খুব খারাপ হয়। তাঁরা মন দিয়ে মন খুঁজে না, তাঁরা দেহের ভাঁজে সুখ খুঁজে।”

এদিকে রনিতের চোখ দিয়ে ঝরঝর করে পানি ঝরছে। ওর আরো সাবধান হওয়া উচিত ছিল। তাহলে হয়তো মেয়েটাকে এতোটা কষ্ট পেতে হতো না। সে অনুতপ্ত। পলকের করুণ চাহনি দেখে তাঁর মরে যেতে ইচ্ছে করছে। অল্প বয়সী মেয়েকে সেও বিয়ে করতে চাচ্ছিল না। কিন্তু বড়রা কথা শুনেনি বরং জোর দিয়ে বলেছে, “নরম মাটিতে মনমতন গড়ন দিলে যেমন সঠিক আকারের পাত্র বানানো যায়। তেমনি ছোট মেয়েকে বিয়ে করলে তাঁকেও মনমতো গড়ে তোলা যায়।”

পলকের সঙ্গে ওর চাচাতো বোন মিতু এসেছিল৷ পলকের শ্বশুরবাড়ির পাশেই মিতুর বান্ধবী তুয়ার বাসা। ওর এখানে একা ভালো লাগছিল না। তাই সে তুয়ার বাসায় চলে গেছে। রনিত মিতুকে মেসেজ করে হসপিটালে আসতে বলল, তবে বাসার কাউকে এই ঘটনা জানাতে নিষেধ করল। মিতু বোনের অবস্থার কথা শুনে কাঁদছে। তুয়া মিতুকে কোনো রকম থামায়। তুয়া এত রাতে মিতুকে কিছুতেই একা ছাড়বে না। তাই দু’জনে একসাথে যাবে বলে ঠিক করল। দু’জনে সর্তকতার সাথে রুম থেকে বের হলো। তুয়া ওর ভাই তুরাগের বাইকের চাবিটা নিলো। দু’জনে বাইকে করে গেলে দ্রুত হসপিটালে পৌঁছাতে পারবে। তুয়া বাইক ড্রাইভ করতে পারে। সে শখের বশে তুরাগের থেকে ড্রাইভ করা শিখেছে।

প্রত্যয় কেবল ওটি থেকে বের হলো। এক পেশেন্টের গুরুতর অবস্থার জন্য ওকে হসপিটালে আসতে হয়েছিল। বিগত সাড়ে তিন ঘন্টা পর সে ওটি থেকে বের হল। নার্সকে দৌড়ে যেতে দেখে প্রত্যয় জিজ্ঞাসা করল, “কি হয়েছে? এভাবে দৌড়াচ্ছেন কেন?”

নার্স প্রত্যয়কে পলকের কথা জানাল। এর সাথে এটাও বলল এখন একটা ডাক্তারও ফ্রি নেই। যারা আছেন তাঁরা কেবলই ওটি থেকে বের হয়েছেন। উনারা যেতে চাচ্ছেন না। প্রত্যয় আর কথা বাড়াল না। সে কেবিনে গিয়ে দ্রুত ওটির ড্রেস খুলে নার্সের সাথে গেল। সব দায়িত্বে গা ছাড়া ভাব করতে নেই। আর ডাক্তারী পেশাতে তো নয়ই। কারন ডাক্তারের গা ছাড়া ভাব মানে পেশেন্টের প্রাণনাশ। প্রত্যয় দ্রুত ব্ল্যাড বন্ধের ইনজেকশন পুশ করে পলকের শরীরে রক্ত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে বলল। নার্স এসে রনিতকে বলল, “আপনারা রক্ত যোগাড় করুন। পেশেন্টের রক্ত লাগবে।”

কথাটা শুনে রনিত আর শিফাত ছুটল ব্ল্যাড ব্যাংকে। যাওয়ার আগে রনিত নার্সকে বলে গেল, উনি যেন পলকের সাথেই থাকে। নার্স মুখ বেঁকিয়ে কেবিনে ডুকল। ওদের রক্ত যোগাড় করে আনতে আনতে পেশেন্ট রক্তশূন্যতায় মারা যেতে পারে। তাই প্রত্যয় নার্সকে বলল,” দ্রুত পেশেন্টের শরীরে রক্ত দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। ওর অবস্থা ভাল নয়।” নার্স জানাল,’ পেশেন্টের বাসার কেউ নেই, আর রক্তের গ্রুপ কিভাবে জানবে?’

প্রত্যয় বলল, “পেশেন্টের ব্ল্যাড টেস্ট করে হসপিটাল থেকে আপাতত ব্ল্যাড কালেক্ট করুন।”

নার্স প্রত্যয়ের কথামতো তাই করল। পলক নিস্তেজ হয়ে বেডে পরে আছে। ইনজেকশন পুশ করার পর ধীরে ধীরে পলকের রক্তক্ষরণ কমতে থাকল। তখন তুয়া আর মিতু হসপিটালে এসে পৌঁছাল। প্রত্যয় নার্সকে খেয়াল রাখতে বলে কেবিন থেকে বের হলো। মিতু কাঁদতে কাঁদতে তখন কেবিনে ডুকল। তুয়া বাইকটা রেখে কেবিনের সামনে এসে দাঁড়াল।

প্রত্যয়কে কেবিন থেকে বের হতে দেখে তুয়া কড়াভাবে বলে উঠল, “এই আপনার লজ্জা করে না? আচ্ছা, লজ্জার কথা বাদ দিলাম। সাধারণ সেন্সটুকুও কি আপনার নেই?”

প্রত্যয় মেয়েটার কথা শুনে দাঁড়িয়ে গেল। সে কি এমন করল যে মেয়েটা তাঁর সঙ্গে এভাবে কথা বলছে? এই মেয়েটাই বা কে? প্রত্যয়কে চুপ থাকতে দেখে তুয়া আরো রেগে গেল। সে পারছে‌ না সামনের ছেলেটাকে তুলে আছাড় দিতে। রাগে ওর শরীরটা কিড়মিড় করছে। এমন বেয়াদব ছেলের সাথে পলকের বিয়ে হয়েছে? পলকের বাবা কি আর ছেলে পাননি? একথা ভাবলে তুয়ার রাগে মাথাটা ফেটে যাচ্ছে। প্রত্যয় তুয়ার দিকে তাকিয়ে একদম শান্ত কন্ঠে বলল, “আমি কি করেছি? আমার লজ্জা লাগবে কেন?”

প্রত্যয়ের কথা শুনে তুয়ার রাগটা কনট্রোলের বাইরে চলে গেল। এতো জঘন্য কাজ করে সে আবার ওকেই জিজ্ঞাসা করছে,” সে কি করেছে?” তুয়া রেগে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, “বাসরঘরে বউকে রক্তাক্ত করে এখন সাধু সাজা হচ্ছে? আপনি চরম মাপের অসভ্য একজন মানুষ।”

প্রত্যয় তুয়ার কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে নিলো। বিয়ে, বউ, বাসরঘর কোথায় থেকে আসলো? প্রত্যয় বুঝতে পারল, মেয়েটা ওকে কারো সাথে গুলিয়ে ফেলেছে। হয়তো ওকে পলকের হাজবেন্ড ভেবেছে। মেয়েটা রেগে দাঁতের সাথে দাঁত চেপে ওর সাথে কথা বলছে, রাগে ওর নাকটা ফুলে উঠছে। ভ্রু দু’টো কুঁচকে আছে। তুয়া পারছে না প্রত্যয়কে গিলে খেতে। প্রত্যয় তুয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল, “আমি ডক্টর ওয়াসিক রায়হান প্রত্যয়।”

তুয়া রেগে বলল, “তো আমি কি নাচব?”

একটা বাচ্চা মেয়ে কিনা ওকে বকছে! ওর এই দিনও দেখতে হলো। প্রত্যয় আবারও বলল,”আমি পেশেন্টের হাজবেন্ড নই। আপনি আমাকে ভুল বুঝছেন।”

তুয়া প্রত্যয়ের কথা শুনে জিহ্বাতে কামড় দিল। সে চিনতে ভুল করে ফেলেছে। মিতু ওকে বলেছে পলকের বর খুব সুদর্শন। এজন্য সে প্রত্যয়কে রনিত ভেবেছিল। তাছাড়া প্রত্যয় ডক্টরের ড্রেসআপে ছিল না। যার জন্য সে বুঝতে পারেনি। তুয়া লজ্জিত কন্ঠে বলল, “দুঃখিত। আমাকে মাফ করবেন। টেনশনে মাথা ঠিক ছিল না।”

“ইট’স ওকে।” বলে প্রত্যয় মুচকি হেসে চলে গেল।

একটুপরে, রনিত আর শিফাত রক্ত নিয়ে হসপিটালে আসল। তুয়া রাগে রনিতের মুখের দিকে‌ তাকালও না। লোকটার উপর ওর খুব রাগ হচ্ছে। মিতু কেবিনের বাইরের চেয়ারে বসে আছে। পলকের শরীরে রক্ত দেওয়া হচ্ছে। রনিত শুকনো মুখে পলকের কেবিনে ডুকল। পলক চোখ বন্ধ করে শুয়ে ছিল। রনিত আলতো করে পলকের হাতটা ওর মুঠোয় পুরে বলল, “দুঃখিত! আমাকে মাফ করো।” পলক ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল। রনিতের চোখেও পানি। রনিত সত্যিই খুব অনুতপ্ত। স্বামীর চোখে পানি দেখে পলকের মনটা গলে গেল। অল্প বয়সী আবেগী মনে অভিমান রাগ ধরে রাখতে পারল না। রনিত পলকের কপালে আদর দিয়ে বলল, “ঘুমাও। আমি এখানেই আছি।” পলক রনিতের কথামত চোখ বন্ধ করে নিলো।

ওরা চারজন সারারাত হসপিটালে ছিল। সকাল বেলা রণিত আর পলককে ওদের বাসার কেউ খুঁজে পাচ্ছে না। রনিতের বাসায় এটা নিয়ে কানাঘুসা চলছে। রনিতের আব্বু রনিতকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমরা কোথায়?”

রনিত বলল, “বাবা! আমরা কক্সবাজারে এসেছি। এক সপ্তাহ পরে বাসায় ফিরব। শিফাত হুট করে কক্সবাজারে আসার টিকিট উপহার দিল, এজন্য তোমাদের জানাতে পারিনি।”

বাসা ভর্তি মেহমান উপস্থিত। আর ছেলের এমন কাজে ওর বাবা রেগে গেলেন। উনি রনিতকে গালাগাল করে ফোন রাখলেন। রনিত ফোন রেখে মাথা নিচু করে বসে রইল। রনিতকে এই বুদ্ধিটা তুয়া দিয়েছে। যাতে ওরা কারো কাছে হাসির পাত্র না হয়। ভুল যখন হয়েই গেছে, তখন সেটা শুধরে নিতে হবে।

তুয়া প্রথমে রনিতের উপরে রেগে থাকলেও, পলকের প্রতি ওর যত্নশীলতা দেখে তুয়ার মনটা নরম হয়েছে। এজন্যই সে নিজে থেকে রনিতকে এই বুদ্ধিটা দিয়েছে। সকালে তুয়া আর মিতু বাসায় ফিরল। এত সকালে তুয়াকে বাইক নিয়ে ফিরতে দেখে ওর আম্মু জিজ্ঞেস করলেন, “এতো সকালে তোরা কোথায় গিয়েছিলি?” তুয়া হেসে বলল,

“আম্মু, মিতুকে নিয়ে সকালের বাতাস খেতে গিয়েছিলাম।”

“বাতাস খেয়ে পেট ভরেছে নাকি খাবার খাবি?”

“দ্রুত খেতে দাও, আমার খুব খুধা লেগেছে।”

কথাটা বলে তুয়া মিতুকে নিয়ে খেতে বসল। তুরাগও এসে ওর পাশের চেয়ারে বসল। এরমধ্যেই তুয়া তুরাগের ঝগড়া লেগে গেল। তুরাগ তুয়ার ভাগের ডিম ভাজা খেয়ে নিচ্ছে। মিতু বসে ওদের মারামারি দেখছে। তুরাগ তুয়ার দিকে তাকিয়ে দাঁত বের করে হাসছে। তুয়া উঠে এক মগ পানি নিয়ে তুরাগকে দৌড়ানি দিল। তুরাগ ফ্ল্যাটের দরজা খুলে সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে হঠাৎ বসে পড়ল। ততক্ষণে তুয়া পানি ছুঁড়ে দিয়েছে। তখন প্রত্যয় সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠছিল। ব্যস! একমগ পানি গিয়ে পড়ল প্রত্যয়ের বুকে। এমন ঘটনায় তুয়া আর তুরাগ দু’জনেই হতভম্ব। প্রত্যয় নিজেও হতবাক হয়ে গেছে। তুয়া ভয়ে ভয়ে একবার প্রত্যয়ের দিকে তাকাল তারপর তুরাগের দিকে তাকিয়ে ,দৌড়ে বাসায় ঢুকে গেল। তুরাগ প্রত্যয়কে বলল, “সরি! আমরা বুঝতে পারিনি তুমি উপরে উঠছিলে। প্লিজ কিছু মনে করো না”

প্রত্যয় তুরাগের ছোট হবে। এজন্য তুরাগ ওকে তুমি করেই বলল। প্রত্যয় মুচকি হেসে বলল, “ব্যাপার না। আমি কিছু মনে করিনি।” তুরাগ প্রত্যয়ের সাথে কথা বলে জানতে পারল। প্রত্যয় ওদের ফ্ল্যাটের সামনের ফ্ল্যাটে উঠেছে। প্রত্যয়ের ফ্ল্যাটের দরজা আর তুয়াদের দরজা একেবারে সামনাসামনি। তুরাগ প্রত্যয়কে ওর পরিচয় জানাতে বলল, “আমি তুরাগ ইমতিয়াজ।”

“আমি ওয়াসিক রায়হান প্রত্যয়।”

“জব নাকি পড়াশোনা?

“আমি কার্ডিওলজিস্ট।”

“হার্টের ডাক্তার! বাহ! তা এসো আমাদের বাসায়।”

” অন্য একদিন যাব।”

“আচ্ছা।”

দু’জনে টুকটাক কথা বলে যে যার বাসায় চলে গেল। এটা প্রত্যয়দের নিজস্ব ফ্ল্যাট। ওরা কেউ এখানে থাকত না। ওর বাবা-মা রাজশাহীতে থাকেন। প্রত্যয় নিজের হসপিটালে কার্ডিওলজিস্ট হিসেবে নিযুক্ত আছে। ওর ডাক্তারী পেশার জন্য এই ফ্ল্যাটে তিনদিন হলো উঠেছে। সে এখানে একা থাকে। সারাদিন হসপিটালে থাকে বিধায় ওকে তেমন কেউ চিনে না। তুয়াকে দেখে প্রত্যয় বাসায় ঢুকে মনে মনে বলল, “এই মেয়েটা এখানে কেন?”

(প্রথম পার্ট দেখে গল্পের বিচার করবেন না, ধন্যবাদ।)

To be continue…..!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here