রিদ-মায়ার প্রেমগাঁথা
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
৩৪
সুফিয়া বেগমের সোজাসাপ্টা কথায় মায়া ভয় আরও বাড়লো। মা ছেলের দুটোই এক। কথার তেজ আর আরচণের মানুষকে ঘায়েল করতে সক্ষম। মায়া কোনো রকমের মাথা নাড়িয়ে অসম্মতি দিতে দিতে বলল…
‘ না।
‘ চেহারার প্রেমে পড়োনি বলছো?
‘ হুমম।
‘ তাহলে কিসের জন্য বিয়ে করলে আমার ছেলেকে? ওহ তো সুবিধার মানুষ নয়।
সুফিয়া বেগমের গম্ভীর কন্ঠ আর তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে মায়ার গলায় শুকিয়ে এলো। তৃষ্ণার্ত গলায় আর ভয়ার্ত চোখে মুখে তুলে তাকাল সুফিয়া বেগমের দিকে। শক্ত শাশুড়ী কঠিন প্রশ্নের উত্তর, মায়াকে কি দিতে হবে এই মূহুর্তে জানা নেই। মহিলাটি এমনই ভিষণ লম্বা। মায়া সোফায় বসে মুখ তুলে উপরে তাকাতে তাকাতে ওর ঘাড় বেঁকে যাচ্ছে। চতুর সুফিয়া বেগম মায়ার নিরব অসুবিধাটা বুঝে চট করে বসে গেল মায়ার সামনে। মায়া চমকালো, ভড়কাল, ভয়ে আরও সিটিয়ে গেল সোফয়। সুফিয়া বেগম মায়ার পাশাপাশি সোফায় না বসে বরং মায়ার মুখোমুখি টি-টেবিলের উপর বসল তাও কিছুক্ষণ আগে মায়ার দিকে বাড়িয়ে দেওয়া পানির গ্লাসটা সরিয়ে। সুফিয়া বেগমের হঠাৎ বসার ধরণে মায়ার কলিজা ধড়াস করে উঠলো আতঙ্কে। শুধু কথায় নয় মা-ছেলে বসাবসিতে যেন একই রকম ধার্চ রাখে। ভয়ার্ত মায়া খালি মস্তিষ্কে ভাবতে বসলো মা- ছেলের মধ্যে কে কাকে কপি করে আসলো? রিদ খান নিজের মাকে কপি করে নাকি মা নিজের ছেলেকে কপি করে বেড়ায় কোনটা? দুটো মানুষের কথা তেজ, আচরণ কিভাবে একই হয়। মায়াতো এতোদিন শুধু নিজের স্বামীকে সামলানো নিয়ে টেনশন করতো। কিন্তু এখন তো দেখছে কাহিনি উল্টো। শুধু ছেলেকে নয় শাশুড়ীকেও টেনশনের পাল্লায় তুলতে হবে। বাপরে! মায়া এমন আধা পাগল মানুষ দুটোকে কিভাবে সামলাবে ওহ? পান থেকে চুন খসতেই স্বামী নাকের ডগায় দম নিয়ে আসে মায়ার। এখন আবার কঠিন শাশুড়ী পাল্লায় পরলো ওহ। শেষ..! মায়ার জীবন ফ্রীতে শেষ হয়ে গেল। এই মা-ছেলে মিলে মায়াকে কথার বানে পিষে পিষে মেরে ফেলবে রোজ। মায়া ওহ কঠিন শাশুড়ীর দিকে তাকিয়ে অসহায়ত্ব বোধ করলো। বুক ফাটা আর্তনাদের কান্নাটা গলায় আটকে ভয়ার্ত মুখে তাকাল কিছু দূরে বসে থাকা রাদিফের পাশে রিদের দিকে। দুষ্টু রাদিফ দুষ্টু হেঁসেই মায়ার দিকে তাকিয়ে, কিন্তু কঠিন রিদ খান যেন বাজ পাখির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মায়ার দিকে। যেন মায়া একটা উল্টা পাল্টা উত্তর দিলেই চোখ দিয়ে গুলি করে মারবে যেকোনো সময়। মায়া এমন ভয়ংকর পরিস্থিতিতে ফেঁসে যাবে ভাবেনি। পাশে ছেলের শুঁকুনের দৃষ্টি আর সামনে মায়ের আতঙ্ক। উফফ! এখন যদি মায়া শাশুড়ীকে ভয় পেয়ে বা সম্মান দেখিয়ে মিথ্যা বলে যে, উনার ছেলের প্রেমে পড়েনি তাহলে নিশ্চয়ই মায়াকে ওর স্বামী মাথার উপর তুলে আছাড় মারবে। আবার যদি সত্যি বলে, স্বামীর প্রেমে পড়েছে, তাহলে ওর শাশুড়ী যদি মনে করে মায়া উনার ছেলেকে বড়োলোক দেখে ফাঁসাতে চাইছে তাহলে সেটা মায়ার আত্মসম্মানে লাগবে প্রচুর? মায়া এখন কি করবে? এই মূহুর্তে কি বলা উচিত ওর? মায়া যখন দ্বিধাহীনতায় ভোগলো তখনই মায়ার ধ্যান ভাঙ্গে আবারও সুফিয়া বেগমের তীক্ষ্ণ কন্ঠে কথায়। তিনি মায়ার উদ্দেশ্যে আবারও বললেন…
‘ কিছু জিজ্ঞেস করছি আমি। উত্তর দাও!
সুফিয়া বেগমের গম্ভীর কন্ঠে মায়া ভয়ার্ত মুখে মিনমিন করে বলল…
‘ আমি কিছু জানি না। আমাদের এমনই এমনই বিয়ে হয়ে গেছে।
মায়ার উত্তরটা পছন্দ হলো না চতুর সুফিয়া বেগমের। পেশায় উনি একজন এডভোকেট! দীর্ঘদিনের পেশাদারীতে উনি মানুষকে পাল্লায় তুলে পরখ করার অভিজ্ঞতা আছে উনার। ছেলের বউ হিসাবে অল্প বয়সী মেয়েটাকে উনার দারমাপা হয়ে গেছে এতক্ষণে। কিন্তু তারপরও ছেলের পছন্দ বলে মেয়েটিকে উনার প্রশ্নের মুখাপেক্ষীত হতে হবে। উনার জানা দরকার মেয়েটি আসলে উনার ছেলের জন্য কতোটুকু পারফেক্ট। উনার ছেলে এই মেয়ের জন্য পাগল সেটা উনি এতদিন শুনে এসেছে। কিন্তু উনার মতে এই মেয়েকেও অবশ্যই সমান পাগল হতে হবে উনার ছেলের জন্য। নয়তো যেকোনো পরিস্থিতিতে ভয় পেয়ে এই মেয়ে পিছিয়ে যেতে পারে। অল্প বয়সী মেয়েরা এমনই হয়। পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে না পারলে পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। এতে কষ্ট উনার ছেলে পাবে। তীক্ষ্ণতায় সুফিয়া বেগম মায়া কথার উত্তর সাপেক্ষে বলল…
‘ এমনই এমনই আবার বিয়ে হয় কিভাবে? আমার ছেলেকে কতোটুকু চিনো তুমি? ওর ক্রিমিনাল মাইন্ডের প্রখরতার সম্পর্কে তোমার এক রত্তিও জানা নেই। এখন তুমি যদি আমাকে বলো আমার ছেলের সাথে তোমার বিয়েটা এমনই এমনই হয়ে গেছে তাহলে সেটা আমি কিভাবে বিশ্বাস করব বলো? ছেলে জম্ম দিয়েছি আমি। আমার জানা আছে আমার পেটের সন্তান কেমন? আমি যতটুকু জানি আমার ছেলের জীবনে কোনো কিছু এমনই হয় না। যেমন ধরো! গায়ের পোষাকটা যদি প্রোপার সিলেক্ট করে সে পড়ে, তাহলে জীবন সঙ্গীকে কি কোনো চিন্তা ভাবনা ছাড়ায় এমনই এমনই এন্ট্রি দিয়ে দিবে ওর জীবনে? শুনো মেয়ে আমার ছেলের জীবনের কোনো কিছু এমনই হয়না। তুমিও যে ওর জীবনে অনাকাঙ্ক্ষিত কেউ নয় সেটাও নিশ্চিত থাকো। তোমাকে ওর জীবনের জড়ানো পিছনে নিশ্চয়ই আমার ছেলের সলিড কোনো কারণ পাবে। সেটা হয়তো তুমি জানো না। কিন্তু আমি আমার ছেলেকে চিনি। এখন তুমি তোমার কথা শুনাও। আমার যতটুকু মনে হচ্ছে আমার ছেলের সাথে তোমার বিয়েটা সম্পূর্ণ তোমার জন্য অনাকাঙ্ক্ষিত ছিল, আমার ছেলের জন্য নয়। এখন তুমি যদি চাও তাহলে আমার ছেলে সাথে সেপারেশন করতে পারো। আমি তোমাদের ডিভোর্সের ব্যবস্থা করে দিতে পারি। আই এম অ্যা লয়ার। বুঝতে পারছো আমি একজন উকিল মানুষ। আমার মাত্র এক ঘন্টা লাগবে তোমাদের ডিভোর্সের বিষয়টা হ্যান্ডেল করতে। সো আমার ছেলেকে ভয় না পেয়ে নির্ভয়ে বলো কি চাই তোমার? আমি সাপোর্ট করবো তোমাকে। কি সেপারেশন চাই তোমার?
সুফিয়া বেগমের সোজাসাপ্টা কথায় মায়ার মাথা ঘুরিয়ে উঠলো। মায়া মুখে তৎক্ষনাৎ ঘুরে গেল রিদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দিকে। সঙ্গে সঙ্গে চোখাচোখি হলো দুজনের। রিদ পূর্বের নেয় দৃষ্টি তীক্ষ্ণ করে মায়ার দিকে তাকিয়ে। মনে হলো সেও যেন মায়ের মতো করে মায়ার উত্তর গুলো চাই। ডরে ভয়ে মায়ার সিঁটিয়ে বসল। তক্ষুনি আবারও শুনা গেল সুফিয়া বেগমের গম্ভীর কন্ঠ…
‘ ওর দিকে না তাকিয়ে আমাকে দেখো। লুক এট মি! কি চাই তোমার বলো।
সুফিয়া বেগমের কথায় দুষ্টু রাদিফও হেঁসে তাল মিলিয়ে বলল…
‘ আরে ভাবি ভাইকে ভয় পেওনা। আমরা সবাই তোমার দলে বুঝলে। তুমি নির্ভয়ে বলো তোমার কি চাই? আমার উকিল মা কিন্তু একঘন্টার ভিতরে চট করে তোমাদের সেপারেশনের ব্যাপারটা রফাদফা করে দিতে পারবে। তারপর আমি নাহয় তোমাকে তোমার দুলাভাইয়ের বাসায় ড্রপ করে দিয়ে আসব। রিদ ভাই তোমাকে কিছু বলার সুযোগই পাবে না। তুমি বলো তোমার কি চাই?
মায়া কোলের উপরে রিদের কোটটাকে দু’হাতে দুমড়ে মুচড়ে কলিজা চেপে ধরা মতো করে সিঁটিয়ে বসল। মায়া মনে হলো সে কঠিন কোনো পরীক্ষা দিতে বসেছে এই মূহুর্তে। যে প্রশ্নপত্রের একটা উত্তরও জানা নেই মায়ার। ভয়ার্ত মায়া এসির মধ্যেও কপালের ঘাম কানিশ বেয়ে পড়ছে। দু’হাতে মুঠোয় রিদের কোটটা মুচড়ে ধরে কম্পিত গলায় বললো…
‘ আমার কিছুই চাই না।
‘ কি চাই না ঠিক করো বলো। আমার ছেলেকে চাই না বলছো?
সুফিয়া বেগমের কথায় তাল হারিয়ে মায়া তাড়াহুড়ো বলল….
‘ না না!
‘ না মানে চাই না?
‘ না চাই। আমার এই বিয়েটা চাই। আপনার ছেলেকেও চাই। মা হিসাবে আপনাকেও চাই। ভাই হিসাবে রাদিফ ভাইকেও চাই। দাদা-দাদি, সবাইকে চাই আমার এক পরিবারের।
মায়ার কথা শুনে রিদের কঠিন দৃষ্টি নরম হলো। যেন এতক্ষণ দম ধরে বসে ছিল মায়া কখন উল্টা পাল্টা উত্তর দিবে আর সে চট করে মায়াকে মাথার উপর তুলে আছাড় মারবে। রিদ গা এলিয়ে সোফায় বসতেই সুফিয়া বেগমে রিদের নমনীয়তা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে পরখ করে মায়ার নত মস্তিষ্কের দিকে তাকিয়ে বললো…
‘ আর একবার ভাবো। চাইলে সময় নিতে পারো। রিদকে ভয় পেলে আমাকে আলাদা ভাবে বলতে পারো। আমার ছেলের সাথে থাকতে হবে এমন কোনো জোড়াজুড়ি নেই। চয়েস ইজ ইউর। থাকতে না চাইলে…
সুফিয়া বেগমের কথা মাঝে মায়া মিহির গলা শুধালো…
‘ আমার সময় লাগবে না ম্যাম। আমি উনার সাথে সেচ্ছায় থাকতে চাই।
মায়ার নিজেকে কেমন নিমজ্জিত মেয়ে মনে হলো। নিজের স্বামী, সংসার সে কেমন একা একাই ঠিকঠাক করে ফেলছে পরিবার ছাড়া। নিশ্চয়ই মায়াকে ওর শাশুড়ী লোভী মেয়ে ভাবছে। কিন্তু মায়াও বা কি করবে? মায়ার তো সত্যি ডিভোর্স চাই না। আমার সত্যি ওর স্বামীকে ভিষণ পছন্দ। মায়া তো এই লোকটার সম্পর্কে না জেনে না চিনেই ভালোবেসে ছিল এতোদিন। তাহলে এখন কিভাবে বলবে মায়ার ওর স্বামীকে চাই না? আদৌ এটা বলা মায়ার পক্ষে সম্ভব? অবশ্যই না। মায়ার কথায় সুফিয়া বেগম যেন বেশ সুষ্ঠি হলো। দৃষ্টিতে প্রখরতা বজায় রেখে আবারও গম্ভীর রিদের মুখটা দেখলো এক পলক। রিদ নিজের জীবন সঙ্গী বাচাই করতে ভুল করেনি। উনার কানে আগেই এসেছিল রিদ কোথাও একটা জমে আছে। নারী জাতীয় ব্যাপার হবে সেটা বুঝেও উনি এতোদিন চুপ ছিল। কারণ উনি জানেন উনার ছেলে যা করে সেটা অবশ্যই ভেবে চিন্তেই করবে। মা হিসাবে শুধু উনি অপেক্ষাতে ছিল কবে রিদ নিজের পছন্দের মানুষটিকে উনার সামনে হাজির করবে। রাদিফ কাল রাতে রিদের বিয়ের বিষয়টা উনাকে জানালেও তিনি আরও আগে থেকে জানতো রিদ ফাহাদের ছোট শালীকে বিয়ে করে নিয়েছে সেটা। আসিফ নিজেই জানিয়েছিল উনাকে। হয়তো রিদ বলেছিল উনাকে জানিয়ে রাখতে। সেজন্য তিনি এতক্ষণ ছেলের বউকে বাজিয়ে দেখছিল কতোটুকু লয়েল বা সামলাতে পারবে উনার ঘাড়ত্যাড়া ছেলেকে। মেয়েটার ধৈর্য্য ভালো। উনার রগচটা ছেলের জন্য পারফেক্ট। সুফিয়া বেগম উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে হাতের ঘড়িটায় সময় দেখে মায়ার দিকে তাকিয়ে বললো…
‘ ওয়েলকাম মাই হোম অ্যান্ড আওয়ার লাইফ। এসেছো সেচ্ছায়। তাই নো মেটার! কোন পরিস্থিতিতে তুমি আছো বা ইন ফিউচারে কোন পরিস্থিতিতে পড়তে পারো। যেকোনো পরিস্থিতির জন্য ইউ ক্যান ফাইট বাট কখনো কোনো পরিস্থিতির জন্য আমার ছেলেকে ছেড়ে যাওয়ার অজুহাত দেওয়া যাবে না মনে রেখো। আর তোমাদের বিয়েটা যেহেতু হয়ে গেছে তাই আমার ছেলের সাথে তুমি ঢাকায় শিফ্ট হয়ে যাও। তোমার পরিবারের সাথে আমি কথা বলবো এই নিয়ে৷ তোমার বয়স কম বা সংসার সামলানোর জন্য তুমি সুইটেবল নয় এসব অজুহাত দেওয়া যাবে না। বাকি রইল তোমার পড়াশোনা ব্যাপারটা। তাহলে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ঢাকায় পড়াশোনা মান ভালো। তাছাড়া আমাদের পরিবারের সবাই হাইলি এডুকেটেড। তোমার পড়াশোনায় আমাদের সাপোর্ট শত% পাবে। বলতে পারো তোমার হাতে ধরে আমরা তোমাকে শিক্ষিত বানাব। এখন বলো আছে কোনো অসম্মতি?
সুফিয়া বেগমের কথায় মায়া কোনো কিছু চিন্তা ভাবনা না করেই নত মস্তিষ্কে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিল। যার অর্থ ওর কোনো অসম্মতি নেই কোনো কিছুতে। সুফিয়া বেগম মায়া সম্মতি পেয়ে আবারও বলল…
‘ ভেরি গুড! এখন চলো খাবে। খাবার ঠান্ডা হচ্ছে। রাদিফ তোর ভাবিকে নিয়ে টেবিলে যা আমার রিদের সাথে কথা আছে। গো।
‘ জ্বি মা!
মায়ের আদেশে রাদিফ বাধ্য ছেলের মতোন উঠে দাঁড়াল। শাশুড়ী আদেশ পেয়ে মায়াও জড়তার পায়ে উঠে দাঁড়াল। রাদিফের পিছন পিছন ডাইনিং পযন্ত এগোতে এগোতে ভাবলো। সে ছাতার মাথা খাবে এমন চাপ সৃষ্টিকারী পরিবেশে বসে। ক্ষুধায় মায়ার পেট চুচু করলেও শাশুড়ী নামক আতঙ্কে ওর পেট থেকে গলা পযন্ত শুকিয়ে কাট। মায়ার মনে হচ্ছে সে এই মূহুর্তে পানি পযন্ত খেতে পারবে না শাশুড়ীর সামনে বসে। সবকিছু কেমন উল্টি করে বেড়িয়ে আসবে। মায়ার মনস্তাত্ত্বিক ভাবনা মাঝেই ডাইনিংয়ের সামনে দাঁড়াতে রাদিফ হেঁসে একটা চেয়ার টেনে দিল মায়াকে বসতে। মায়া অস্বস্তির দৃষ্টিতে রাদিফকে দেখে বসতে গেল তৎক্ষনাৎ বাঁধা দিল রাদিফ। মায়ার হাত থেকে রিদের কোটটা নিতে নিতে পুনরায় মায়াকে চেয়ারে বসতে আশ্বস্ত করলো। মায়া চেয়ারে বসতে রাদিফ পুনরায় ড্রয়িংরুমে দিকে গেল রিদের কোটটা রাখতে। সেই সুযোগে তনি মায়াকে একা পেয়ে মুখ খুলল। সে এতক্ষণ যাবত সুফিয়া বেগমের কান্ডখানা নিরব দর্শকে মতো দেখেছে। শুধু অপেক্ষা ছিল ওহ কবে মায়াকে একা পেয়ে মনে কথা গুলো বলবে। তাই রাদিফ যেতেই সুযোগ পেয়ে তনি বলল…
‘ ভাবি গো আইজকা আফনে বড়ো বাঁচা বাঁচ্ছেন। বাপরে! আমার তো আফনার লাইগা ডরে কইলজাডা ঠকঠক করতাছিল। মনে করছিলাম আফনে বড়ো ম্যাডামের প্রশ্নের ভুলবাল উত্তর দিবাইন আর বড়ো ম্যাডামের হাতের বিশাল ঝাড়ি খাইবান। আইজকা যদি আফনে বড়ো ম্যাডামের প্রশ্নের একডাও ভুলবাল উত্তর দিতাইন, বা কইতেন, আফনে রিদ স্যাররে ডির্ফোস দিতে চাইন তাইলে দেখতাইন, হগ্গলতের সুন্দর সুন্দর চেহারার রহস্য। বড়ো ম্যাডাম মেলা চালাক মানুষ ভাবি। বড়ো ম্যাডাম আফনারে হের কথার জ্বালে ফাঁসাইয়া আফনার পেট থেইক্কা কথা বাড় করতাছিল। আফনে রিদ ভাইরে কতোটুকু ভালোবাসুইন হেইডা জানতে। এইসব ডির্ফোস টির্ফোস কিচ্ছু পাইতেন না আফনে। বড়ো ম্যাডাম কইছে আফনে রিদ ভাইয়ের পছন্দের মানুষ। আফনে এই জীবনেও ছাড় পাইবেন না রিদ ভাইয়ের থেইক্কা লেইখা লন। রিদ ভাই যে রগচটা আর বদমেজাজী ব্যাডা মানুষ, সোজা মুখে তো কথাই কইনা কেউ লগে, আফনে ছোডো মানুষ হইয়া কেমনে ফাঁসলেন রিদ ভাইয়ের লগে? রিদ ভাই কি আফনারেও ডর দেখাইয়া রাখে ভাবি?
তনি কথায় মায়া মাথা নাড়িয়ে অসম্মতি জানাল। যার অর্থ এমন কিছুই না। তনি মায়ার অসম্মতিতে সন্তুষ্টি হলো কিনা জানা নেই। তবে অনেকটা আফসোস সুরেই বলল….
‘ ভাবি শুনেন! আফনারে একটা কথা কই। আপনার শশুর বাড়ির মানুষ সবাই রাজনীতির মানুষ বুঝছেন। হেরারে আফনে টক্কর দিইয়া কহনো পার পাইবেন না। এর থেইক্কা আফনার জন্য ভালো হইবো আফনি যদি রিদ ভাইয়ের কথা শুইয়া লক্ষী বউয়ের মতোন চলেন হের। কারণ সংসার আফনে কিন্তু রিদ ভাইয়ের লগেই করবেন ভাবি। আফনার শশুর, শাশুড়ী, দাদা-দাদি, সবাই আলাদা আলাদা বাড়িতে থাহে। রাদিফ ভাই থাহে বিদেশ। হেতের কথা বাদ দিন। আফনার শশুর- শাশুড়ী মধ্যে কঠিন কেঁচাল আছে বুঝলেন ভাবি! জামাই -বউ মনে হয় আজ পনেরোডা বছর ধইরা এক লগে থাহে না। কেউ কারও মুখও দেখাদেখি করে না। পারিবারিক অনুষ্ঠানে দুজনের একজনেরেও আফনে উপস্থিত পাইতেন না। দুইজনের এতো মনকষাকষি তারপরও একজন অন্যজনরে ডিফোর্স দেয় না। মূল কথা অইল আপনার শশুর- শাশুড়ী জন্য আপনার শশুর বাড়ির সবাই বিছিন্ন আর আলাদা আলাদা বাড়িতে থাহে। আমি এইখানে কাম করি নয় বছর ধইরা কিন্তু আইজ পযন্ত জানতে পারলাম না কি নিইয়া ঝামেলা বড়ো ম্যাডামের উনার জামাইর লগে। এই বিষয়ে কেউর অনুমতি নাই কোনো প্রশ্ন করার। আফনে রিদ ভাইয়ের বউ হয়তো রিদ ভাই আফনারে কিছু না কিছু কইতে পারে ভবিষ্যতে। তবে আমার কথা মানেন ভাবি, জীবনের আর যাই করেন কোনো বেলা রিদ ভাইরে কষ্ট দিইয়েন না কিন্তু। তাইলে আফনে বা আফনার পরিবারের কেউ আস্তা থাকবো না ভাবি। রিদ ভাই হইলো বড়ো ম্যাডামের জান। রিদ ভাই যদি কোনো কিচ্ছু লইয়া কষ্ট পাই তাইলে বড়ো ম্যাডাম হের শশুর বাড়ির মানুষরে ছাড় দেয় না আমি দেখছি। এজন্য আফনারে এতো ঝেরা-প্রশ্ন করতাছিল বাজাইয়া দেখার লাইগা। আফনার উত্তরে সবাই সন্তুষ্ট, এইলাইগা পরিবেশ এহনো ঠান্ডা দেখতাছেন। নয়তো একডা ভুলবাল উত্তর করতেন তাইলে দেখতেন এই মূহুর্তে আফনার উপর দিইয়া ঝড়-তুফান টনেটো সব চইলা যাইতো। আমিতো পারি না এই চাকরিডা ছাইড়া ছইলা যাইতাম। কিন্তু এতো ভালো টাহার চাকরি আমি এই ঢাহা শহরে আর পামু না দেইখা এই লাইগা চাকরিডা আমি ছাড়তে পারি না। সারাদিনে শুধু বড়ো ম্যাডামের লাইগা দুই বেলা রান্না করতে হইয়। সকালের নাস্তা আর রাতের খাওন। দুপুরে ম্যাডাম কোটের ভিতরেই বইয়া খায়। সারাদিন আমি অবসরে বইসা বইসা টিভি দেখি আর মাস শেষে মোটা অংকের টাহা গুনি। নয়তো বড়ো ম্যাডামের মতো কঠিন রাগী মহিলা বাড়িতে কে কাম করতো? আমি তনি তো মইরা গেলেও করতাম না। বাপরে আফনার শাশুড়ী চাহন দেখলে আমার কইলজা কাপে। বুঝি না আফনার শশুর এই মহিলারে কি দেইখা বিইয়াডা করছিল। নিশ্চয়ই বড়ো ম্যাডামের রুপ দেইয়া আফনার শশুর পাগল হইছে নয়তো এমন কঠিন মানুষরে আবার কেউ বিইয়া করে নাহি? আমিতো জীবনেও করতাম না।
তনি দীর্ঘ কথায় মায়া গালে হাত রেখে তনি কথা মনোযোগ সহকারে শুনলো। তনি সব কথায় মায়ার মাথায় ঢুকেছে। কিন্তু মায়া বুঝলো না তনি মায়ার কাছে ওর শশুর বাড়ির নামে বদনাম করছে নাকি সুনাম। মায়া তনির আফসোসরত মুখটার দিকে তাকিয়ে বলল…
‘ আপনি কি সবার নামে সুনাম করছেন নাকি বদলাম? যদি একটু বলতেন আপু?
মায়ার কথায় তনি আরও হতাশ হলো। হাতের প্লেট গুলো চেয়ারের সামনে সাজাতে সাজাতে ফের আফসোস করে বলল…
‘ আমিতো বদনামই করতে চাইছিলাম ভাবি। কিন্তু এদের ব্যক্তিত্ব খালি আমারে কনফিউজড করে। না আমি ভালা কইয়া এদের চালাইতে পারি আর না মন্দ বইলা দোষ দেখাইতে পারি। কেমন শক্ত কঠিন মানুষ এরা। এদের দোষ বের করতে গেলেও নিজেই কেমন কইরা যানি সুনাম বের কইরা ফেলি । এদের মায়াই ফাঁসলে জীবন রফাদফা ভাবি। একদম শেষ! জীবনে হাইসা দুইডা কথা কইতো না এরা। আর না নরম ব্যবহার করবো কহনো। হেরপরও এরা মানুষরে কেমনে কইরা জানি নিজেদের মায়ার জ্বালে আটকায় রাহে ভাবি, আল্লাহ জানে। আমারে দেহেন ভাবি! হেই প্রথম থেইক্কা এই চাকরি করুম না, চইলা যামু, চইলা যামু কইরা কইরা আইজ নয়টা বছর পার করলাম। এহন আমি নিজেই বড়ো ম্যাডামরে ফালাইয়া দুইদিনের লাইগা গ্রামের বাড়িতে যাইতে মন চাইনা। আমি চইলা গেলে যদি ম্যাডামের অসুবিধা হয় হেই লাইগা। অথচ বড়ো ম্যাডাম আমারে আজও আপন কইরা লইতে পারলো না। কেমন রোবট মতোন চলাফেরা করে। আমার লগেও ঠিক কইরা কথা কইনা।
মায়া তনি সুন্দর মুখটার দিকে তাকিয়ে অল্প হাসলো। তনি মুখে নিজের শশুর বাড়ির সম্পর্কে বদনাম শুনেও কেমন জানি শান্তি লাগছে মায়ার। মায়া ঘাড় বেঁকে তাকাল পিছনে। দেখা গেল মা ছেলে তিনজনই কিছু নিয়ে মনোযোগ সহকারে আলোচনা করছে। রাদিফকেও বেশ সিরিয়াস ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো এই প্রথম। মায়ার মনে হলো এই মানুষ গুলো ভিতর বাহিরে শক্ত কঠিন ব্যক্তিত্ব ধরে রাখলেও এদের সবার মাঝে ভালোবাসার মানুষকে আগলে রাখার দারুণ একটা মন আছে। এই যেমন মায়া নিজের স্বামীর পরিচয় জানার পরপরই রিদ কেমন নিজ দায়িত্বে পরিবারের সঙ্গে দেখা করাতে নিয়ে আসলো মায়াকে। মানুষ ভালোবাসলেও পরিবারের সামনে ভালোবাসার মানুষকে হাজির করতে চাই না। কিছু দিন অন্তত গোপনে রাখতে চাই। অথচ মায়ার ক্ষেত্রে হয়েছে ভিন্ন মায়ার কিছু জানার আগেই রিদ নিজের পরিবারকে মায়ার পরিচয় সম্পর্কে জানিয়ে রেখেছে। এতে দুজনের পবিত্র সম্পর্কটার সম্মান রেখেছে রিদ। তারপর দেখা গেল মায়ার কঠিন শাশুড়ীও ছেলের পছন্দের বাহিরে টু শব্দ পর্যন্ত করেনি। ছেলে নিজের পছন্দের বউকে হাজির করলো, আর মা হয়ে তিনি এতেই সম্মতি দিয়ে মায়াকে বুঝালো উনার ছেলেকে কখনো ছেড়ে না যেতে। অথচ উনারা এতো অর্থ সম্পদশালী, ক্ষমতা সম্পূর্ণ মানুষ, তাঁরা চাইলে মায়ার মতোন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েকে হাতের তুরিতে টিস্যুর মতোন ফেলে দিয়ে, রিদের জন্য যোগ্যতা সম্পূর্ণ কাউকে জীবন সঙ্গী হিসাবে বাঁচাই করতে পারে। রিদ একজন প্রতিষ্ঠিত, সফল ও হাইলি এডুকেটেড ব্যক্তিত্ব সম্পূর্ণ মানুষ। যেকোনো নারীই রিদ খানের বউ হতে চাইবে। সেখানে মায়ার মতোন অদক্ষ, অযোগ্যতা আর মধ্যবিত্ত পরিবারের সাধারণ একটা মেয়েকে বেঁছে নেওয়াটায় বুঝায় এদের কঠিন ব্যক্তিত্বের বাহিরেও তাদের সবার সুন্দর একটা ভালোবাসার মন আছে। মানুষ বলে কঠিন ব্যক্তিত্বের মানুষ গুলা নাকি প্রিয়জনকে আগলে রাখার ব্যাপারটা দারুণ থাকে। আজ মায়া চোখের সামনে দেখতে পারলো এতো গুলা মানুষকে।
~~
সকাল ১১ঃ১৭। রিদ ডাইভিংয়ে মায়া পাশের সিটে গা এলিয়ে বসে। রিদের দৃষ্টি আর মনোযোগ ডাইভিংয়ে থাকলেও মায়া মনোযোগ রিদকে দেখার উপর। রিদ বেশ কয়েক বার ভ্রুর কুঁচকে মায়াকে দেখেছে এভাবে তাকিয়ে থাকা নিয়ে। কিন্তু মায়ার কোনো ভাবান্তর ঘটেনি। মায়া সিটে কাত হয়ে রিদের দিকে ঘুরে বসে। রিদ ডাইভিংয়ের মধ্যে মায়ার মনোযোগ ভাঙ্গতে মায়ার দিকে ভ্রুর কুঁচকে তাকিয়ে বলল…
‘ কি সমস্যা? কি দেখো?
মায়া সেইভাবেই বসে থেকে উত্তর করে বলল…
‘ আপনাকে দেখি। জানেন আমি কখনো ভাবিনি আপনাকে এতো নরম ব্যক্তিত্বে দেখব কখনো।
রিদ মায়ার তাকিয়ে থাকার মানে বুঝতে পেরে সে চুপ রইল। মায়া রিদকে কিছু বলতে না দেখে সাহস পেয়ে আবারও বলল…
‘ আপনাকে একটা কথা বলার ছিল। বলি?
রিদ স্টিয়ারিং ঘুরাতে ঘুরাতে সম্মতি দিল…
‘ হুম।
মায়া সিট ছেড়ে সোজা হয়ে বসল। সিরিয়াস হওয়ার ভঙ্গিতে মিনমিন করে বলল…
‘ আমাদের কলেজে থেকে রাঙ্গামাটি যাওয়ার ট্যুরের প্লানিং করছে সবাই। আমিও সবার সাথে যেতে চাচ্ছিলাম। আমাকে…
রিদ মায়ার কথায় মাঝে ওর দিকে না তাকিয়েই ড্রাইভিং করতে করতে বলল…
‘ নো ট্যুর! নো প্ল্যানিং! কোথাও যাওয়া যাবে না তোমার। সব ক্যান্সেল।
মায়া হতাশার গলায় বলল…
‘ এমন করছেন কেন? সবাই তো যাচ্ছে আমি একা না। এই ট্যুরে আরিফ ভাইয়াও যাবে আমাদের সাথে। এখন আমি না গেলে ভাইয়া নিশ্চয়ই জিগ্যেসা করবে কেন যেতে চাচ্ছি না।
‘ পাকামো করবে না রিত। আমার এসব পছন্দ না। আরিফের সাথে আমি কথা বলে নিব।
রিদর মুখে আরিফের নামটা শুনতেই মায়া আতঙ্কিত গলায় তাড়াহুড়ো করে বলে উঠলো…
‘ আরে না না! আরিফ ভাইয়ার সাথে কথা বলতে হবে না আপনার। সামান্য একটা ট্যুরে জন্য আরিফ ভাইকে এখনই আমাদের সম্পর্কে বলার দরকার নেই। আমি কোথাও যাব না। প্রমিস!
মায়া তাড়াহুড়ো ব্যাপারটায় রিদের সন্দেহ হলো। মায়া যে নিজের পরিবারকে ওদের সম্পর্কে জানাতে চাচ্ছে না সেটা ভালোই বুঝলো রিদ। রিদ ডাইভিং করতে করতে মায়ার দিকে ভ্রুর কুঁচকে তাকিয়ে বলল….
‘ তুমি কি কোনো ভাবে এই সম্পর্কটা তোমার পরিবারের কাছে হাইড করতে চাচ্ছো রিত?
রিদের কথায় মায়া ভয়ে মাথা নাড়িয়ে অসম্মতি জানালেও মনে মনে সে জানে সত্যিটা এটাই। মায়া সত্যি রিদকে নিজের পরিবারের সামনে এখন উপস্থিত করতে চাচ্ছে না। তাহলে সবাই মায়াকে দোষ দিবে যে মায়া নিজের বোনের ভাসুরকে ফাঁসিয়ে বিয়ে করে নিয়েছে। এজন্য মায়া চাচ্ছে আরও কয়েকটা দিন যাক তারপর না-হয় আস্তে ধীরে নিজের পরিবারকে জানানো যাবে রিদকে নিয়ে। মায়া রিদকে মিথ্যা বলে বলল…
‘ হাইড করবো কেন? আসলে বড়ো আপু বিয়েটা মাত্র শেষ হলো। আর কয়েকটা দিন যাক তারপর না-হয় আমাদের ব্যাপারটা জানলো।
মায়ার কথা গুলো রিদের যুক্তিসঙ্গত মনে না হলেও সে আপাতত চুপ রইল। তাড়াহুড়ো করে মায়াকে চাপে ফেলতে চাই না রিদ। বরং বউকে কিছুদিন সময় দেওয়া উত্তম ভেবেই সে চুপ রইল। কিন্তু মায়া রিদকে নিয়ে কি ভাবছে সেটা মায়ারও জানে না। সুফিয়া বেগমের প্রতি কথার সম্মতি তখন শুধু মায়া চাপে পরে দিয়ে এসেছিল ওহ। মন থেকে কিছুই দেয়নি। বরং মায়া রিদের সাথে বিয়েটা পরিবারকে জানানো নিয়ে এই মূহুর্তে ভিষণ ভয়ে আছে। কিভাবে কি করবে? বা মায়ার পরিবার আদৌও ওদের সম্পর্কটা মানবে কিনা তাও জানে না মায়া। মূলত মায়া ভয় থেকেই রিদের সাথে সম্পর্কটা লুকাতে চাইছে। তীক্ষ্ণ সুফিয়া বেগমের তখনকার কথাটায় সত্যি হলো। অল্প বয়সী মেয়েরা বুঝে কম। তারা পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে জানে না। বরং ভয় পেয়ে পিছিয়ে যায়। মায়ার ক্ষেত্রে তাই হচ্ছে। রিদকে যতোটা সাহসীকতার সাথে ভালোবেসে ছিল ঠিক ততটাই দূর্বল মন মানসিকতা পরিচয় দিচ্ছে পরিবারের সামনে রিদকে তুলে ধরতে। মায়ার এই দূর্বল মন মানসিকতা জন্য ভবিষ্যতে কতোটা প্রভাব ফেলবে রিদ-মায়ার সম্পর্কে তাও ধারণা নেই মায়ার। তবে খুবই ভয়ংকর কিছুর মুখামুখি হতে হবে মায়া দূর্বল মানসিকতার জন্য।
[ বিগত দিনের ব্যস্ততা আর ঝামেলা পুরোপুরি কাটিয়ে উঠেনি। তবে গল্পের নেক্সট পার্ট তাড়াতাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ ]
#চলিত….