#রিদ_মায়ার প্রেমগাঁথা
#লেখিকাঃ_রিক্তা ইসলাম মায়া
৪১_প্রথমাংশ
সময়টা ১১ঃ৪৫ ঘরে! চাঁদ বিহীন আকাশে অসংখ্য তাঁরা মেলা। ঠান্ডা ফুরফুরে বাতাস গা ছুঁয়ে মন সিক্ত করছে। জুই তিনতলা ভবনের এককোণে বারান্দায় দাঁড়িয়ে ঘন কালো আকাশের দিকে তাকিয়ে সিক্ত নুনা চোখে। বাহিরের পরিবেশটা যতটা শান্ত জুইয়ের ভিতরটা ততটাই অশান্ত। বিগত গোটা একটা দিন একটা রাতের ব্যবধানে কতো কিছু ঘটে গেল জুইদের জীবনে। মায়া রাঙ্গামাটিতে হারিয়ে আজ অচেতন অবস্থায় হসপিটালের বেডে পরে। মায়াকে খুঁজতে গিয়ে আরিফও হসপিটালের একই অবস্থায় শুয়ে। আপন দুটো মানুষকে এইভাবে বেডে অচেতন অবস্থায় পরে থাকতে দেখে জুইয়ের ভিতরটা বারবার হু হু করে কেঁদে উঠছে বাঁধ ভাঙ্গা কান্নায়। এইতো সন্ধ্যার নাগাদ জুইকে কলেজ টিচারের বাসায় থেকে হসপিটালের নিয়ে এসেছে আসিফ। এখানে আসার পর থেকে মায়া আর আরিফকে অচেতন অবস্থায় কেবিনে পেয়েছে জুঁই। নিজের ভাই বোন দুজনকে অসুস্থ অবস্থায় দেখে নিজেকে সামলাতে পারেনি জুঁই হাউমাউ করে কেঁদেছিল তখন। তবে জুইকে সামলাতে আয়ন, আসিফ দুজনকেই পাশে পেয়েছিল সে। এই অসময়ে বিপদে যেখানে জুইদের পরিবারই পাশে নেই সেখানে আয়নদের ডাল হয়ে দাঁড়ানোটা ছিল ঘোর অন্ধকারে বিশাল আলোর নেয় আস্থাবহল। আরিফ, মায়ার হসপিটালের তদারকি থেকে জুইয়ের খেয়াল পযন্ত রাখছে এই দুজন মানুষ। আয়ন প্রোফেশনালি ডাক্তার হওয়ায় আরিফ, মায়ার চিকিৎসার তদারকি সে নিজেই করছে। আর আসিফের কথা যত বলবে ততই কম মনে হবে জুইয়ের। চমৎকার একটি মানুষ। অসাধারণ দায়িত্ববান পুরুষ। কেউ সামান্য চাকরির জন্য তার মালিকের এতোটা বিশ্বস্ত আর আপন হয়ে থাকতে পারে সেটা আসিফকে না দেখলে বুঝতো না জুই।
আবছা আলোয় হঠাৎ নিজের উপর কারও কালো ছায়া পড়তেই বিষন্ন জুই গ্রিল থেকে মাথা উঠিয়ে পিছনে তাকাল। দরজার সামনে আয়নকে দেখতে পেয়েই অস্বস্তিতে আছড়ে পরলো জুই। না চাইতেও আয়নের সঙ্গে পুরনো অতীত গুলো স্মৃতিচারণ হতেই জুই সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে নিজের দু’হাত কুচলালো অস্বস্তিতে। এলোমেলো দৃষ্টিতে ফ্লোরে ফেলে মিহি স্বরে জিগ্যেসা করল…
‘ কিছু বলবেন?
‘ কিছু না বললে কি এখানে দাঁড়ানো যাবে না মিস জুঁই?
আয়নের কাটকাট কথায় কিছুটা রাগের আভাস পেল জুই। রাগটা কিসের তা বুঝতে দেরি হলো না জুইয়ের। জুইয়ের বিচলিতা বাড়লো। আয়নকে এরাতে চেয়ে বলল…
‘ তা কেন হবে? আপনি বরং এখানেই দাঁড়ান আমি কক্ষে যাচ্ছি মায়ার পাশে।
কথা বলেই জুই এক প্রকার চোরের মতোন আয়নের পাশ কাটিয়ে তাড়াহুড়োয় চলে যেতে চাইলে বাঁধা দেয় আয়ন। পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়া জুইয়ের বাহু টেনে নিজের মুখোমুখি করতেই আয়নের কাছ থেকে নিজের হাতটা ছাড়ানো চেষ্টা করে জুই খানিকটা শক্ত গলায় বলল…
‘ এসব কি ধরণের অভদ্রতা ডাক্তার সাহেব? হাতটা ছাড়ুন? যেতে দিন আমাকে।
আয়ন একই ভাবে জুইয়ের হাতটা চেপে ধরেই বলল…
‘ আমি এখন অভদ্র হয়ে গেলাম? তাহলে আমাকে আপনার মতো করে ভদ্রতা শেখান জুই। কিভাবে মানুষকে মায়ায় ফেলে চট করে ঘায়েব হয়ে যাওয়া যায় সেইসব শেখান। আমি আপনার কাছে থেকে সলিড ধোঁকাবাজি শেখতে চাই জুই। যেন একটা মানুষকে পুরো ধ্বংশ করার মতোন ক্ষমতা রাখে এমন বেঈমানী হতে চাই। শেখাবেন আমাকে? আপনি তো আমার দেখা শ্রেষ্ঠ ভদ্র মানুষ। আপনি নিশ্চয়ই এসবে ডিগ্রিদারি ভদ্র মানুষ।
আয়নের জুইকে করা অপমানের কথায় জুই রাগে মেজাজ দেখিয়ে বলল..
‘ হাতটা ছাড়ুন! আপনি এখন বেশি বাড়াবাড়ি করছেন। যেতে দিন আমাকে। ছাড়ুন!
জুইয়ের মেজাজে আয়নও মেজাজ দেখিয়ে বলল..
‘ কেন যেতে দিব? আমার কথা আগে শেষ হোক তারপর যাবেন আপনি। এখন বলুন এতোদিন আমার কল ধরেন নি কেন আপনি?
‘ আমার ইচ্ছে করেনি তাই ধরেনি! কেন ধরবো আপনার ফোন? কে হোন আপনি আমার, যে সারভর ফোনে কথা বলতে হবে আমাকে?
বরাবরই জুইয়ের কথায় আয়নকে রাগ, ক্ষোভ কষ্ট দুটোই দেয়। এই মূহুর্তেও তার ব্যতিক্রম হলো না। আয়ন জুইয়ের বাহু ঝাকিয়ে কানে টেনে রাগের তোপে বলল…
‘ ইচ্ছে করেনি তাই ধরেন নি তাই না? বিগত তিনটা মাস আমার সাথে কি ছিল আপনার হ্যাঁ? রাতভর ফোনে কি করতেন আমার সাথে আপনি? তখন আপনার মনে হয়নি আমি কে? কেন আমার সাথে তখন ফোনে কথা বলতেন? আপনি তো জানতেন আমাদের দুজনের মধ্যে কি সম্পর্ক চলছিল এতোদিন? তাহলে এখন না জানার ভান করছেন কেন?
জুইও একই ভাবে বলল…
‘ আমি যাকে মনে করেছিলাম সে আপনি নই। একটা ভুল বুঝাবুঝি সম্পর্ক ছিল বলে সেটা আমি শেষ করে দিয়েছি।
‘ আপনি একা শেষ করলে হবে? সম্পর্কটা ছিল আমাদের দুজনের। শেষ করতে হলে আমাদের দুজনের সমান মতামত থাকবে সেখানে, আপনি একার শেষ করার কে? আপনি কি শুধু একাই ছিলেন এই সম্পর্কে? আমি ছিলাম না? তাছাড়া
ভুল বুঝাবুঝি শুধু আপনার পক্ষ থেকে ছিল জুই, আমি শুরু থেকেই জানতাম ফোনের ওপাশের মানুষটা আপনি ছিলেন। আপনাকে জেনেশুনেই সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলাম আমি, তাহলে এখানে আমার দোষটা কোথায় সেটা বলবেন জুই? আমিতো আপনার কাছে যায় নি, আপনাকে ফোন করেনি, বরং আপনি আমার কাছে এসেছেন নিজের ভালোবাসা ঝুলি নিয়ে। আমাকে আপনার অভ্যাসে পরিণত করে হঠাৎ হারিয়ে গেলেন অন্য কারও অযুহাত দিয়ে। আপনি একটা বারও আমার কথা ভেবেছেন জুই? আপনাকে ছাড়া আমি কেমন থাকবো? আপনি তো আমাকে ভালোবাতেন জুই তাহলে কেন এমন করছেন? কেন আমাকে এতো কষ্ট দিচ্ছেন? সবটা ঠিক করে নেওয়া যায়না? আমিতো মানুষটা সেই আগেরই আছি, যার সাথে আপনি মন খোলে কথা বলতেন, সবকিছু শেয়ার করতেন তাহলে আপনি এখন কাকে খোঁজছেন জুই?
জেদ্দি জুই জেদ ধরেই বলল…
‘ বললাম তো সবটা ভুল বুঝাবুঝি ছিল। আমি আপনাকে কখনো ভালো বাসিনি।
জুইয়ের মুখে ‘আপনাকে কখনো ভালোবাসিনি’ কথাটা আয়নের বুকে কোথায় যেন একটা চিনচিন ব্যথা শুরু হলো গুমোটে। আয়ন সেইভাবেই বলল…
‘ তো কাকে ভালোবেসেন জুই? রাদিফকে? আমাদের ফোনে কথা বলার আগে রাদিফকে কইবার আপনি সরাসরি দেখেছেন জুই? একবার? এই একবার দেখাতে আপনি রাদিফকে এতোটা ভালোবাসলেন যে আমার সাথে তিনমাস এতো এতো কথা বলেও আপনার মনে আমার জন্য সামান্য ভালো লাগা সৃষ্টি হয়নি? আপনার সব ভালো গালা, ভালোবাসা, ফিলিংসের আদান প্রদান সবকিছু তো আপনি আমার সাথে শেয়ারিং করেছিলেন জুই, তাহলে আপনার সেই ফিলিংস গুলো কি মিথ্যা ছিল? আপনার ধারণা করা মানুষটা আমি হতে পারিনি বলে আমার সাথে সবকিছু আপনি মিথ্যা করে দিলেন জুই? রাদিফের সাথে তো আমার কোনো কিছুই ছিল না জুই। আপনার সকল স্মৃতি, সকল ভালো লাগার ফিলিংস তো আমার সাথে ছিল তাহলে আমি কিভাবে আপনার কিছু হলাম না? নাকি রাদিফের মতোন আমি ফর্সা নয় কালো মানুষ বলে আমাকে মেনে নিতে পারছেন না আপনি? কোনটা?
‘ এমন কিছুই না। হাতটা ছাড়ুন!
‘ তো কেমন কিছু জুই, বুঝান আমাকে। আপনার যদি আমার গায়ের রংয়ে সমস্যা না থাকে তাহলে কিসে সমস্যা? আমি রাদিফের বাবার মতোন বড়োলোক নয় সেজন্য ভাবছেন আপনি ঠকে যাবেন আমাকে নিয়ে। তাহলে আপনাকে বলে রাখি জুই, আমি একজন স্টাবলিশ কর্মজীবী মানুষ। আমার কর্ম আছে যেটা রাদিফের নেই। রাদিফের বাপ-ভাই বড়োলোক হলেও রাদিফ তার পরিবারের উপর নির্ভরশীল। রাদিফ এখনো নিজের পড়াশোনা শেষ করতে পারেনি আর না কোনো চাকরি বা ব্যবসায় জড়িয়েছে। আপনি রাদিফকে এতো বড়োলোকী ভাব দেখছেন না সেটা শুধু রাদিফের বাবা-দাদার পৈতৃকসম্পত্তি দাপটে। সেই সম্পত্তির ভাগ কিন্তু আমার মারও আছে। সেক্ষেত্রে আমার পরিবারও কম যায় না খান পরিবার থেকে। হয়তো রিদের বিষয়টা আলাদা। রিদের নিজস্ব কর্ম আছে। সে একজন সফল ব্যবসায়ী। রিদের হয়তো বাপ-দাদার পৈতৃকসম্পত্তি ভাগের প্রয়োজন নেই কিন্তু রাদিফের এই মূহুর্তে তার পরিবার ছাড়া গোটা শূন্যতে আছে। সেক্ষেত্রে আমি আমার ওয়াইফকে বিলাসবহুল জীবন দিতে পারব জুই। আমার নিজস্ব গাড়ি-বাড়ি পেশা সবই আছে। আমার বাবার সম্পত্তির প্রয়োজন পড়বে না। আমি আপনাকে ভালো রাখতে পারবো জুই।
আয়নের কথায় জুইকে লোভী টাইপের মেয়ে মনে হলো। জুই কখনোই আয়নকে টাকা-পয়সা জন্য দূরে ঠেলে দেয়নি। জুই কোনো লোভী মেয়ে নয়। আয়নকে দূরে সরিয়ে রাখার পিছনে জুইয়ের বড়ো কারণ আছে। যেটা জুই এই মূহুর্তে প্রকাশ করতে চাচ্ছে না। কিন্তু আয়নের কথার ধরণে জুইয়ের নিজেকে লোভী মেয়ে মনে হলো। জুই ঘৃণায় নাক মুখ ছিটকিয়ে আয়নের থেকে হাতটা ছাড়িয়ে নিতে নিতে বলল….
‘ আপনি একটা বিকৃত-মস্তিস্কের মানুষ। আপনার আমার সম্পর্কে এমন ধারণা ছিঃঃ!
‘ আপনি কেমন আমি জানি না জুই তবে আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি আপনাকে বুঝানোর।নয়তো আমি একবার হারিয়ে গেলে আপনার সাধ্যে হবে না আমার আর ফিরিয়ে আনার।
আয়ন কথা গুলো শেষ করেই প্রস্থান করলো বারান্দা ছেড়ে। ভগ্নহৃদয়ে বুকটা কেমন হা হা করে উঠলো আবারও। আজ কতোটা দিন ধরে জুই আয়নকে অকারণে কষ্ট দিয়ে যাচ্ছে। আয়নকে জুই রাদিফ ভেবে কথা বললেই বা কি? জুইয়ের ফিলিংসের আদান প্রদান সবকিছু তো আয়নের সঙ্গে হয়েছিল। দুজনের এতো স্বপ্ন, মায়া, টেক কেয়ার, ভালো লাগা, মুগ্ধতা, সবকিছুতে দুজনের মিলে যাওয়ার এতোকিছু পরও জুই কিভাবে আয়নকে দূরে সরিয়ে দেয় সামান্য দেখায় রাদিফের প্রতি ভালো লাগা থেকে। রাদিফের প্রতি তো ভালো লাগা ছিল জুইয়ের যেটা জুই কখনো প্রকাশ করতে পারেনি। সামন্য ভালো লাগা থেকে যদি জুই রাদিফের জন্য আয়নকে অস্বীকার করতে পারে, তাহলে আয়নের প্রতি ভালো লাগাটা তো জুই অসংখ্য বার আয়নকে বলেছিল ফোনে, তাহলে আয়ন কিভাবে সবকিছু ভুলতে পারবে এতো সহজে? এলোমেলো পায়ে আয়ন বারান্দা থেকে বেড়িয়ে কক্ষে বাহিরের যেতে যেতে শুনা গেল জুইয়ের ফুপিয়ে কান্নার শব্দ বারান্দা থেকে। জুইয়ের কান্নায় আয়নের বুকে আবারও চিনচিন ব্যথা অনুভব করলো। চারপাশে কেমন যেন গুমোট আর কষ্টে ভরা পরিস্থিতি। এখানে যে ভালোবেসেছে সেই ভালো নেই আজ। আয়নকে দরজা ধরে বেড়িয়ে যেতে দেখে দুচোখ মেলে তাকাল মায়া। জুই-আয়নের কথার মাঝেই মায়ার হুশ ফিরে ছিল। দুজনের তর্ক- বিতর্কে মায়া আর শব্দ করলো না বরং চুপচাপ চোখ বন্ধ করেই পরে রইলো বিছানায়। প্রথম থেকেই মায়ার কানে এসেছিল দুজনের কথা। অসুস্থ মায়া ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল বারান্দার দিকে। ভিতর থেকে ভেসে আসছে জুইয়ের কান্নার শব্দ। মায়া ঘাড় বেঁকে তাকাল পাশের বেডে শুয়ে থাকা আরিফের দিকে। মাথায় মোটা ব্যান্ডেজ বাঁধা। চিৎ হয়ে লম্বা করে পড়ে আছে সেখানে। মায়া আরিফের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকেই চোখ দিয়ে ধরধর অশ্রু জড়াল অপরাধ বোধে। বিকালে ঘটনা স্মৃতিচারণ করতে করতে ভাঙ্গা গলায় ধীরস্বরে ডাকল আসিফকে। মায়ার ছোট স্বর ডাক কেবিনের বাহিরে না পৌছালেও বারান্দার থাকা জুইয়ের কানে ঠিকই পৌছাল। দ্রুততায় হাতের উল্টো পিঠে চোখ মুছে তাড়াহুড়ো কক্ষে প্রবেশ করতেই জুই দেখলো মায়ার হুশ ফিরতে। মায়াকে সজ্ঞানে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা জুই তৎক্ষনাৎ ছুটে গিয়ে মায়াকে ঝাপটে ধরতেই ব্যথায় গোঙ্গাল মায়া। ব্যথিত মায়ার ব্যথার ঠাহর করতেই তৎক্ষনাৎ মায়াকে ছেড়ে উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে জুই বলল….
‘ সরি সরি! আমার মনে ছিল না তুই অসুস্থ। খুব ব্যথা পেয়েছিস? ডাক্তার ডাকবো?
জুইয়ের অস্থিরতায় মায়া তেমন কিছুই বললো না। এই মূহুর্তে মায়ার অল্প শব্দ করতেও কষ্ট হচ্ছে। তারপরও মায়া ছোট গলায় জানতে চাইল আসিফের কথা…
‘ আসিফ ভাইকে ডাক দে জুই।
আসিফের খোঁজ করতে দেখে বিচিলিত হলো জুই। উদ্বিগ্ন গলায় বলল…
‘ কেন কোনো সমস্যা হচ্ছে রিতু? ব্যথা পেয়েছিস খুব?
মায়া একই অবস্থা বলল…
‘ জুই আসিফ ভাইকে ডাক আমি কথা বলবো।
মায়ার ব্যথাতুর কন্ঠে জুই তৎক্ষনাৎ আসিফকে ডাকল কক্ষে আসতে। মায়ার হুশ ফিরেছে শুনে মূহুর্তে কেবিনে ছুটে আসল আসিফ। মায়ার মুখোমুখি হয়ে মায়ার অবস্থা জানতে চাইলে মায়া আসিফের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে রিদের কথা জানতে চেয়ে বলল….
‘ উনি(রিদ) কোথায় আসিফ ভাইয়া?
আসিফ মায়ার প্রশ্ন করাটা স্বাভাবিক ভাবেই নিলো। যেন মায়া হুশে ফিরে রিদের কথা জানতে চাইবে সেটা জানতো আসিফ। তাই স্বাভাবিক নেয় উত্তর দিয়ে বলল…
‘ রিদ ভাই তো ঢাকায় চলে গেছে ভাবি।
মায়া থেমে থেমে আবারও বলল…
‘ উনাকে কল দেন ভাইয়া, আমি কথা বলবো।
মায়ার কথায় আসিফ অনেকটা আমতাআমতা করে বলল…
‘ ভাইয়ের ফোন বন্ধ ভাবি। ভাই(রিদ) এই মূহুর্তে খুবই ডিস্টার্ব। রাদিফ ভাই আছেন রিদ ভাইয়ের বাড়িতেই তবে রিদ ভাইয়ের আশেপাশে যাওয়ার অনুমতি আপাতত কারও নেই ভাবি। আপনি বরং এখন রেস্ট করুন, ভাইয়ের সাথে কাল কথা বলিয়েন। আমি বরং আপনার জন্য ডাক্তার ডাকি।
[ গল্প লেখা শেষ হয়েছিল সাড়ে এগারোটায় কিন্তু কারেন্ট না থাকার কারণে এতক্ষণ যাবত আমাকে রাত জেগে বসে থাকতে হয়েছে। মোবাইলে এমবি নেই, ওয়াইফাই চালাই সেজন্য এতো বিলম্ব হয়েছে গল্প দিতে আর তার জন্য দুঃখিত! ]
#চলিত…..