হৃদয়ে_রক্তক্ষরণ #পর্বঃ৩৭ #লেখিকাঃমেহের_আফরোজ

0
63

#হৃদয়ে_রক্তক্ষরণ
#পর্বঃ৩৭
#লেখিকাঃমেহের_আফরোজ
❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ❌
[প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য উন্মুক্ত]

“অন্ধকারে র**ক্তের খেলা কেমন নিষ্ঠুর,
মৃ**ত্যু হয়ে,তোমরা একাকার;
তোমাদের মৃ**ত্যুর স্বরে,শুনি হিংসার গান,
এটাই নির্জনের,চিরন্তন প্রতিশোধের মান।”

“নির্জন পাখি দু’টোকে নৃ**শং*স ভাবে শেষ করার পর একটি বাটিতে মাংস গুলো উঠিয়ে, বেসিনে পানি ছেড়ে দিয়ে সুন্দর করে ধুয়ে নেয়।ধোয়ার সময়ও মাংসগুলো কে ধা**রালো নখ দিয়ে আ**ঘাত দিতে ভোলেনি নির্জন।সেই সাথে পৈ**শা*চিক হাসি যেনো ঠোঁটের কোণায় লেপ্টে ছিলো।
অতঃপর চুলায় কড়াই বসিয়ে সরিষার তেল দিয়ে মাংসগুলো রান্নার জন্য প্রয়োজনীয় মশলাগুলো দিয়ে, মাংসগুলো ভালো ভাবে কসিয়ে নেয়।তবে মাংসের মধ্যে লাল মরিচের গুঁড়ো প্রয়োজনের তুলনায় বেশি দিয়েছে।কারণ, নিধিকে শাস্তি দেওয়া এখনও শেষ হয়নি।
নিধির প্রতি নির্জনের ভালোবাসাগুলো হিং**স্র*তায় তীব্র ভাবে মিশ্রিত।সেটা আরও একবার প্রমাণ করলো নির্জন।”

“রান্না শেষ করে,কিচেন পরিষ্কার করে প্লেটে ভাত আর মাংস বেড়ে, রুমে গিয়ে নিধিকে আদুরে স্বরে ডাকলো,

‘ডার্ক কুইন..উঠে পড়ো জানপাখি।দেখো, তোমার জন্য স্পেশাল আইটেম বানিয়েছি।উঠে পড়ো সোনা।তোমার প্রিয় জিনিসটি প্রিয় খাবারে রূপান্তরিত হয়েছে।ওঠো.. ওঠো খেয়ে নাও।’
বলেই নির্জন নিধির গালে আলতো করে স্লাইড করতে থাকল।”

“কিন্তুু নিধির ঘুম ভা**ঙা*র নাম নেই।সেটা দেখে মেজাজ বিগড়ে গেলো নির্জনের।
রেগেমেগে নিধির গালে জোরে একটা চি**মটি দিলো।নরম গালে এভাবে চি**মটি দেওয়াতে চোখজোড়া খুলে,ধরফরিয়ে উঠে বসলো নিধি।চোখজোড়া কঁচলে বললো,
‘আপনি কি আমার গালে চি**মটি দিয়েছেন?”

“নির্জন ইনোসেন্ট ফেইস করে বললো,
‘উহুম,আমি তো তোমায় আদর করছিলাম।তারপর তোমার নরম গাল টা একটু টেনে দিচ্ছিলাম।তখনই একটু জোরে লেগে গেছে নিরুপমা।”

“নিধি চোখজোড়া কুঁচকে বললো,
‘একটু জোরে?আমি তো অনেকটা ব্যথা পেলাম।মনে হলো ইচ্ছে করে দিয়েছেন।’

” নিধির এহেন কথায় নির্জন ভ্রুকু**টি করে বললো,

‘তোমার যদি মনে হয় আমি ইচ্ছে করে দিয়েছি,তাহলে তুমিও আমার গালে চি**মটি দিতে পারো।ব্যাস,শোধবোধ।’
বলেই নির্জন নিধির দিকে গাল এগিয়ে দিলো।”

“নির্জন এভাবে গাল এগিয়ে দেওয়াতে নিধি ম্লান হেসে বললো,
‘নাহ।আমি আপনাকে চি**মটি দিবো না।হতে পারে আমার জ্বরের কারণে শরীর প্রচন্ড ব্যথা; তাই আপনি আস্তে করে টাচ করার পরেও বেশি ব্যথা পেয়েছি।আচ্ছা বাদ দিন,আমার এতো ঠান্ডা লাগার পরেও,এই রুমে মাংসের তরকারির কেমন ঝাঁজালো গন্ধ পাচ্ছি!”

” নিধির এহেন কথা শুনে নির্জন মুচকি হেসে টেবিল থেকে খাবারের প্লেট সামনে এনে বললো,

‘হুমম, তোমার জন্য স্পেশাল রেসিপি করেছি জানপাখি।এখন কোনো প্রশ্ন করবে না।আগে খাবে, তারপর বলবে কেমন হয়েছে,ওকে?”

“নিধির এমনিতেও খুব ক্ষুধা লেগেছিলো।তাই কথা না বাড়িয়ে হাসি মুখে বললো,
‘ওকে.. ওকে দিন।’

” নির্জন বাঁকা হেসে ভাতের সাথে মাংসের টুকরো মিশিয়ে, নিধির মুখের সামনে এক লোকমা তুলে ধরতেই নিধি সেটা মুখে পুরে নিলো।”

“নির্জনের দেওয়া প্রথম লোকমাটি মুখে নিয়ে নিধির চোখজোড়া ছানাবড়া হয়ে গেলো।মুহূর্তেই চক্ষুদ্বয় লাল বর্ণ ধারন করলো।সেই সাথে নেত্রকোণায় নোনাজল দেখা দিলো।তৎক্ষণাৎ লোকমার কিছু অংশ ফেলে দিয়ে ঝালে হু হা করতে করতে বললো,

‘এটা কি ছিলো?এটা কিসের মাংস?আর এতো ঝাল দিয়েছেন কেনো?’

“নিধি কে এভাবে তড়পাতে দেখে মনে মনে ভীষণ আনন্দ পেলো নির্জন।ভেতর থেকে ‘মন’ বলে উঠলো,

‘উচিত শিক্ষা হয়েছে।পুরো তরকারি টা খাওয়াতে পারলে আরও ভালো হতো, হিহিহি।”

“মনের এহেন কথায় বাঁকা হাসলো নির্জন।নিধির দিকে তাকিয়ে ম্লান হেসে বললো,
‘সেকি! অনেক ঝাল?কই, আমি ট্রাই করি তো।’
বলেই নির্জন নিজের মুখে এক লোকমা দিয়ে গোগ্রাসে গিলে স্বাভাবিক স্বরে বললো,

‘কোথায় ঝাল?একটুও ঝাল হয়নি।তাছাড়া আমি তো এমন ঝাল খুব পছন্দ করি।এটা আমার কাছে স্বাভাবিক।ছোটবেলায় এর থেকেও বেশি ঝাল খেয়েছি।কথা না বাড়িয়ে পুরো খাবার খেয়ে নাও ডার্ক কুইন।এটা খেলে তোমার সর্দি-কাশি বেরিয়ে যাবে।বুঝেছো?’

‘কি আজগুবি কথ!ঝাল খেয়ে সর্দি কাশি কমাবো?এ কেমন কথা বললো সে?’
ভেবে নিধি ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকল নির্জনের দিকে।
ততক্ষণে নির্জন নিধির মুখের সামনে আরেক লোকমা তুলে ধরেছে।’

“নিধি বড় বড় চোখ করে বললো,
‘একদম না।আমি এটা খাবো না।আর এটা কিসের মাংস?মুরগির মাংস তো মনে হয় না।”

“নিধির এত প্রশ্নে রেগে গেলো নির্জন।কর্কশ স্বরে বললো,

‘তোমার কি মনে হয়?এটা সাপের মাংস?খেতে বলেছি,চুপচাপ খেয়ে নাও।আমার মুখে মুখে তর্ক করা আমি পছন্দ করিনা।তোমাকে সুস্থ হতে হবে।এভাবে অসুস্থতার দোহাই দিয়ে, আমার থেকে তোমার দূরে থাকা আমার একদম পছন্দ নয়।”

“নির্জনের এহেন আচরণে বিস্ময়ের শেষ পর্যায়ে পৌঁছালো নিধি।এ কেমন আচরণ?আমি তো স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন করেছি।এতে এতটা হাইপার হওয়ার কি আছে?’
ভেবে নির্জনের দিকে তাকিয়ে কটমটিয়ে বললো,

‘নির্জন আমি কি একবারও বলেছি,আপনি আমায় সাপের মাংস খাওয়াচ্ছেন?এটা কেমন কথা?আর আপনি হঠাৎ এভাবে কথা বলছেন কেনো?’

“নিধির এইসব বকবক বিরক্ত লাগছে নির্জনের কাছে।তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে নিধির দিকে তাকিয়ে শান্ত স্বরে বললো,

‘খাবার টা খাবে,নাকি জোর করে খাওয়াবো?”

“নিধি বিস্মিত দৃষ্টিতে নির্জনের দিকে তাকিয়ে বললো,

‘আপনি এমন করছেন কেনো?আপনার মধ্যে আমি অন্য কাউকে দেখতে পাচ্ছি।আপনি তো এমন ছিলেন না!’

“নির্জন মুচকি হেসে বললো,
‘আমি আগে থেকেই এমন।শুধু তোমার দৃষ্টি ভুল ছিলো।এনিওয়ে, হা করো।পুরো খাবার শেষ করো।তারপর মেডিসিন খাবে।”

” নিধি কঠোর স্বরে বললো,
‘আমার মনে হয় আপনি পা**গল হয়ে গেছেন।নইলে এই ঝাঁজালো জিনিস আমাকে খেতে বলতেন না।আমি খাবো না।’

“ব্যাস,নির্জনের রাগ যেনো এইবার চূড়ায় উঠে গেলো।এক হাত দিয়ে নিধির মাথা নিজের বুকের কাছে চেপে ধরে, প্লেট থেকে এক লোকমা ওর মুখের সামনে ধরে বললো,

‘তোমাকে খেতে বলেছি।অনেক কষ্ট করে রান্না করেছি।খাও,নইলে কিন্তুু পুরো খাবার মুখে মাখিয়ে দিবো।খেতে বলেছি কিন্তুু।”

‘নিধি চোখ-মুখ বন্ধ করে তেজি স্বরে বললো,
‘খাবো না।’

“নিধির এহেন কথায় হো হো করে হেসে উঠলো নির্জন।অবশেষে নিধির দুই গালে শক্ত করে ধরে, জোর করে হা করিয়ে মুখে খাবার দিতে থাকল।সেই সাথে পাশে থাকা গ্লাস থেকে একটু একটু করে পানি দিতে থাকল।এই মুহূর্তে নির্জন কে দেখলে মনে হবে, সে কোনো ছোট বাচ্চাকে খাওয়াচ্ছে।আর বাচ্চা টি বারবার না খাওয়ার জন্য কান্না করছে।
এভাবে নির্জন আরও তিন-চার লোকমা দেওয়ার পর, নিধি তার দুর্বল শরীর নিয়ে গড়গড় করে বমি করে নির্জনের জামা-কাপড় মাখিয়ে দিলো।”

“নিধি এভাবে বমি করাতে একটুও বিরক্ত হলো না নির্জন।শীতল স্বরে বললো,

‘যাক ভালোই হয়েছে,বমির সাথে বুকে কফ থাকলে সেটাও বেরিয়ে যাবে।দেখেছো, আমার কত বুদ্ধি?তারিফ করো..আমার বুদ্ধির তারিফ করো।’

“নিধি পিটপিট করে নির্জনের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
এই নির্জন তার কাছে অচেনা।নির্জন কেনো এমন অদ্ভুত আচরণ করছে, সবকিছুই যেনো তার কাছে অচেনা লাগছে।”

“নিধির ভাবনার মাঝে নির্জন বিছানা থেকে নেমে, সরাসরি ওয়াশরুমে চলে গেলো।এদিকে নিধি দুর্বল শরীর নিয়ে কোনো রকমে উঠে বেসিনে গিয়ে হাত-মুখ ধুয়ে নিলো।অতঃপর নিজেকে একবার আয়নায় পরখ করলো।২ দিনের জ্বরে চেহারা কেমন ফ্যাকাশে হয়ে গেছে।কিন্তুু চোখ এবং ঠোঁট জোড়া লাল টকটকে হয়ে আছে।নিধি মুখে কয়েকবার পানি দিয়ে গড়গড়া করলো।তবুও ঝাল যেন কমছে না; বরং বাড়ছে।
এভাবে আরও কয়েকবার মুখে পানি দেওয়ার পর ঝাল কিছুটা কমলো।ঘন ঘন নিঃশ্বাস ফেলে টাওয়াল দিয়ে মুখমন্ডল মুছতে মুছতে বেলকনিতে যেতেই, আরও একবার শক খেলো।মনে মনে আওড়ালো,

‘পাখিগুলো কোথায়?আর খাঁচা কোথায়?’
ভেবে পেছনে ঘুরতেই দেখলো, নির্জন হাতে শুভ্র রঙা টাওয়াল নিয়ে শরীর মুছতে মুছতে নিধির কাছে এগিয়ে এলো।”

“নিধি কিছুটা পেছনে সরে গিয়ে কর্কশ স্বরে বললো,
‘পাখি গুলো কোথায়?’

“নির্জন ফের মুচকি হেসে নিধির দিকে মুখমন্ডল এগিয়ে বললো,
‘তোমার পেটে.. ডার্ক কুইন।’

“নির্জনের এহেন কথায় হতভম্ব হয়ে গেলো নিধি।অকপটে বলে উঠলো,
‘মানে?’

“নির্জন তার মাথার চুলগুলো হাত দিয়ে ব্যাক ব্রাশ করার মতো উল্টিয়ে,একটু রসিকতা করে বললো,

‘সেকি!পাখি দু’টোর মাংস খেয়ে,এখন বলছো পাখি কোথায়?হাহাহা..এটা দিয়ে কিন্তুু দারুণ জোকস বানানো যাবে।আচ্ছা শোনো,তোমার শরীর টা প্রচন্ড দুর্বল ছিলো;তাই ভাবলাম, কোয়েল পাখির যেহেতু পুষ্টিগুণ অনেক, তাই সেটাই রান্না করি।
তাছাড়া এটা শুধু স্বাদের দিক থেকে নয়, স্বাস্থ্যের দিক থেকেও অনেক ভালো।”

“নির্জন এইবার কোয়েল পাখির মাংসের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানালো,
‘কোয়েল পাখির মাংস প্রোটিনের ভালো উৎস, যা পেশী গঠন ও মেরামতে সাহায্য করে। এছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন বি১২, আয়রন, জিংক, এবং ফসফরাস, যা র**ক্ত উৎপাদন, শক্তি বৃদ্ধি এবং স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতা রক্ষা করে।
তবে সবচেয়ে ভালো দিক হলো, এতে থাকা সঠিক চর্বি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া, এমিনো অ্যাসিড শরীরের বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তাই আমি তোমায় এই পুষ্টিগুণে ভরপুর সুস্বাদু খাবার টা খাওয়ালাম।আমি চাই, তুমি সবসময় সুস্থ ও সুখী থাকো।”

“নির্জন যেভাবে কোয়েল পাখির সম্পর্কে লেকচার দিচ্ছিলো,যে কেউ দেখলে ভাববে,টিচার তার স্টুডেন্ট কে পড়াচ্ছে।এদিকে নির্জনের এই লেকচার শুনে মাথায় মনে হয় আকাশ ভে**ঙে পড়লো নিধির।নির্জনের দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে উচ্চস্বরে বললো,

‘আপনার সাহস হলো কি করে,আমার কাছে জিজ্ঞেস না করে, এই পাখিগুলোকে হ**ত্যা করার?”

“নির্জন এইবার নিধির আরও কাছে এসে ওর চোয়াল চেপে ধরে বললো,
” হিসস..Don’t talk to me with rubbish, speak in a lower tone.’

“নিধি নির্জনের হাত ঝটকা দিয়ে সরিয়ে, আরও কিছুটা উচ্চস্বরে বললো,

‘একশো বার বলবো,হাজার বার বলবো।আপনি পাখি গুলোর সাথে এমন কেনো করলেন?আপনি জানেন না,পাখিগুলোকে আমি তোহার কাছ থেকে কত শখ করে নিয়েছি?”

“নির্জন চোখ-মুখ কুঁচকে নিজের দুই কান চেপে ধরে বললো,
‘চুপ..একদম চুপ। গাড়ির হর্ণ,মোবাইলের উচ্চ আওয়াজে রিংটোন,ভয়েসের উচ্চশব্দ শুনলে আমার কানে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হয়।নিচু স্বরে কথা বলো।তাছাড়া আমি তোমার স্বামী হই।স্বামীর সাথে এভাবে কথা বলতে হয় না সোনা।”

“তাছাড়া তুমি খাবে বলে খুব যত্ন করে কোয়েল দু’টোকে কে**টে, মনের মাধুরী মিশিয়ে রান্না করেছি।আর সেই কখন থেকে পাখি..পাখি করে পা**গল হয়ে যাচ্ছো;এদিকে আমি যে গতকাল রাত থেকে তোমার কত সেবা করলাম; সেটাতো একবারও বললে না?তুমি তো দেখছি অকৃতজ্ঞ মানবী!যাইহোক, আমি এতে কিছু মনে করিনি।আমার সবকিছু তোমার; আর তোমার সবকিছু আমার।তুমি রেগে থাকো,খুশি থাকো,বা কষ্টে থাকো সবকিছু আমার জন্য করবে, ওকে সোনা?আর ডোন্ট ওয়ারি,আমি তোমাকে কিছুদিন পর আরও ভালো একটা প্রাণী কিনে এনে দেবো;যার সাথে তুমি নির্দ্বিধায় চমৎকার সময় কা**টাতে পারবে।এখন ঘুমাতে চলো নিরুপমা।’
বলেই হাই তুলে বেলকনি থেকে চলে গেলো নির্জন।”

“নির্জনের কাছ থেকে এমন অপ্রত্যাশিত আচরণ পেয়ে,নিধির মুখমন্ডলে যেন বিস্ময়ের ছাপ এখনও কা**টিয়ে উঠতে পারেনি।নিধি অগত্যা আর কথা বাড়ালো না।চুপচাপ গিয়ে বিছানার এক কোণে গুটিশুটি হয়ে শুয়ে পড়লো।এদিকে নির্জনও নিধির অপরপাশে শুয়ে মুচকি হাসলো।ভেতর থেকে ‘মন’ অভ্যর্থনার সুরে বলে উঠলো,

‘এই তো.. এভাবে ধীরে ধীরে সে তোমার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।কিপ ইট আপ নির্জন।’

“মনের সাথে ‘হৃদয়’ ও তাল মেলালো।তারপর নির্জন কে বললো,
‘তোমার ডার্ক কুইনের জন্য একটা হিংসুটে কবিতে আবৃত্তি করে ফেলো নির্জন।’

‘নির্জন কয়েক মিনিট ভেবে,মুচকি হেসে মনে মনে কবিতা আওড়ালো,

“হৃদয়ে র**ক্ত*ক্ষরণ”

প্রেমের অন্ধকারে,
হৃদয়ে র**ক্ত*ক্ষরণ হয়,
প্রতি চুম্বনে এক নতুন ক্ষ*ত,
বেদনাময় র**ক্তস্রোত ঝরে যায়।

প্রতি অনুভূতিতে,
র**ক্তের মতো চিহ্ন গাঢ় হয়,
প্রেমের এই অমলিন য*ন্ত্রণায়,
হৃদয়ের গভীরে ক্ষ*ত রয়ে যায়।

তোমার প্রতিটি স্পর্শ,
যেন একটি অদৃশ্য অস্ত্র,
হৃদয়ে একটানা র**ক্ত*ক্ষরণ,
ভালোবাসার প্রতিটি দাগ পেড়ে যায়।” ~মেহের~

“দুই বেস্ট ফ্রেন্ডের সাথে এভাবে তাল মিলিয়ে, নির্জন ধীরে ধীরে ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমালো।কিন্তুু ঘুম নেই নিধির চোখে।মাত্র কয়েকদিনে নির্জনের এহেন রূপ ওকে বারবার ভাবিয়ে তুলছে।কিভাবে কি হয়ে গেলো, কিছুই বুঝতে পারছেনা সে।মনে মনে অনেক কথা বলে, অবশেষে নিধিও ঘুমিয়ে গেলো।”

——–
“এদিকে রাত ৪টায় কোমর ব্যথায় ঘুম ভে**ঙে গেলো তোহার।মাহির তোহাকে নিয়ে হসপিটালে গিয়ে এক্স-রে করে দেখেছে, কোমরে কিছুটা ফ্র্যাকচার হয়েছে।কিছুদিন রেস্ট করলে এবং নিয়মিত ঔষুধ খেলে ঠিক হয়ে যাবে।রাত সাড়ে ৮টার দিকে মাহির আর তোহা বাসায় ফিরলে, তোহার শাশুড়ি তোহার এই অবস্থা দেখে মন খারাপ করেন। সেই সাথে তোহার আদর-যত্ন যেনো দ্বিগুণ বেড়ে যায়।তোহার শ্বশুর এবং শাশুড়ি উভয়ে তোহাকে ভীষণ ভালোবাসেন।তোহা যেন তাদের চোখের মনি।নিজের শ্বশুর-শাশুড়ির কাছ থেকে এত ভালোবাসা পেয়ে, তোহা সবসময় আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে।এমন শ্বশুর-শাশুড়ি যদি প্রতিটি ঘরে ঘরে হতো, তাহলে হয়তো প্রতিটি মেয়ে নির্দ্বিধায় তাদের কে নিজের মা-বাবার আসনে বসাতো।এক্ষেত্রে বউ এবং শ্বশুর-শাশুড়ি উভয়কেই ভালো হতে হয়।”

“কোমরে প্রচন্ড ব্যথা নিয়েও তোহা কথাগুলো ভেবে অস্ফুটস্বরে ‘মা’ ডেকে উঠলো।”

“তোহার মুখনিঃসৃত বানী শুনে মাহির তড়িৎ গতিতে উঠে লাইট জ্বালিয়ে,তোহার গালে আলতো করে হাত বুলিয়ে বললো,

‘কোমরে খুব কষ্ট হচ্ছে স্বপ্নচারিনী?চিন্তা করো না, নিয়মিত মেডিসিন খেলে ধীরে ধীরে তুমি সুস্থ হয়ে উঠবে,আর সেই সাথে আমিও।’

“মাহিরের এহেন কথা শুনে তোহা কটমটিয়ে বললো,

‘আমি সুস্থ হলে, আপনি কিভাবে সুস্থ হবেন?আপনি তো অসুস্থ নয়।’

“মাহির দুষ্ট হেসে বললো,
‘ধুর..তুমিও না..।আমি নিজেকে এতটা কন্ট্রোল করতে চাই, তবুও মুখ ফস্কে বের করতে বাধ্য করো।আচ্ছা বলছি।’
বলেই মাহির তোহার গালে চুমু দিয়ে শুরু করলো,

“তোহা রানী ফ্র্যাকচারের কষ্টে কেমন আছো?
তোমার মাহির এখন শুধু তোমার খোঁজে, রোজই আসে।

মিলন না হলে তার হৃদয় হবে ভা**ঙা,
তোমার কোমর ঠিক হলেই,জল থেকে ডুব দিয়ে উঠবো ডাঙায়।

বিনা মিলনে সে তো কেমন যেন পা**গল,
তোমার সুস্থতার অপেক্ষায়, দেখে সে থেমে যায় অচল।

কবিতার মাধ্যমে হাসির ছোঁয়া নিয়ে,
তুমি সুস্থ হলে, আনন্দে লাফাবে,
মজা করবে আরও মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে।” ~মেহের~

“হায়, কি লজ্জা! কি লজ্জা!এটা কি ধরণের লাগাম ছাড়া কবিতা?তাও আবার এই কোমর ব্যথার মধ্যে উচ্চস্বরে হাসতেও পারছে না তোহা।
মুহূর্তেই লজ্জায় মুখ মিইয়ে গেলো তোহার।”

“তোহা কে এমন লজ্জা পেতে দেখে মাহির মুচকি হেসে বললো,
‘হায়, হায়! এতো লজ্জা পেয়ো না স্বপ্নচারিনী।আমি কিন্তুু তাহলে তোমার কোমর ব্যথার কথা ভুলে যাবো।তারপর..

“তোহা মাহির কে আর কিছু বলতে না দিয়ে তার মুখ চেপে ধরে বললো,

‘এই ভোর রাতে কি শুরু করেছেন বলুন তো?না নিজে ঘুমাচ্ছেন, আর না আমাকে ঘুমাতে দিচ্ছেন।সব সময় মাথার মধ্যে উল্টাপাল্টা চিন্তা ঘোরে।আপনার কবিতা শুনে আমার কোমর ব্যথা আরও বেড়ে গেছে।এখন না ঘুমালে,আর ঘুম আসবে না।’
বলেই তোহা অপরপাশে ফিরে শুয়ে পড়লো।”

“এদিকে মাহির দুই হাত তুলে মোনাজাত ধরে বললো,

‘হে আল্লাহ আমার তোহা রানী কে তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দাও।এইবার আর আমি কোনো রিস্ক নিবো না।আমি খুব তাড়াতাড়ি বাবা হতে চাই। আমিন।’
বলেই তোহার দিকে ফিরে ওর গালে আলতো করে ঠোঁট ছুঁইয়ে, তোহা কে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়লো মাহির।”

———-
“কে**টে গেলো ৪ দিন।সকাল থেকে নাদিয়ার শরীর খুব খারাপ লাগছে।মাথা ব্যথা,খাবারে অরুচি থেকে শুরু করে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দিয়েছে।নাদিয়ার শাশুড়ি বিষয়টি লক্ষ্য করে নাদিয়াকে কিছু প্রশ্ন করেন।নাদিয়া সেগুলোর উত্তর দেওয়াতে, ওর শাশুড়ি যা বোঝার বুঝে গেছে।তার মুখমন্ডলে মুহূর্তেই খুশির ঝলক দেখা দিলো।”

“দুপুরে দিগন্ত অফিস থেকে ফিরতেই,নাদিয়ার শুকনো মুখমন্ডল দেখে জিজ্ঞেস করলে, নাদিয়া সবকিছু বলে দেয়।সবকিছু শুনে দিগন্ত হাসবে না কাঁদবে ভেবে পেলো না।তার আদুরীনি বউ ‘মা’ হতে চলেছে!’
ভেবেই কেমন অন্যরকম অনুভূতি হলো দিগন্তের মাঝে।সেই সাথে চেহারায় চিন্তার ছাপও দেখা দিলো।
দিগন্ত নাদিয়ার সামনে সেটা প্রকাশ না করে, ওকে জড়িয়ে ধরে বললো,

‘হানি গো..আমার বেবিটা হানিমুনে যাওয়ার আগেই এসে পড়লো।দেখেছো,সে আমার থেকেও অ্যাডভান্স।
যাইহোক, আমি আজ লাঞ্চ করে অফিসে যাবো না।তোমাকে নিয়ে হসপিটালে যাবো।বেবি হওয়ার আগ পর্যন্ত তোমাকে একজন গাইনোকোলজিস্টের আন্ডারে থাকতে হবে।’

“দিগন্তের এহেন নির্লজ্জ টাইপ কথায়, লজ্জায় লাজুকলতা হয়ে গেলো নাদিয়া।নিজের লাজে রাঙা মুখ লুকাতে দিগন্তের বুকে মাথা রেখে বললো,
‘তোমার মতো এমন ঠোঁট কা**টা পুরুষ মনে হয় এক পিস আছে,আর সে হলো তুমি।’

“বিকালে গাইনী ডক্টরের চেম্বারের বাইরে পাশাপাশি দু’টি চেয়ারে বসে আছে দিগন্ত এবং নাদিয়া।
৮জন রোগীর পরে সিরিয়াল অনুযায়ী নাদিয়া কে ডাকা হলে,ও ডক্টরের রুমে ঢুকে পড়ে।এদিকে দিগন্ত ফেইসবুকে নিউজফিড দেখতে থাকে।
কিছুক্ষণ পর দিগন্তের কানে একটি নাম ভেসে ওঠে..
‘এই ১০ নাম্বার সিরিয়ালে আছে, মিসেস সুমাইয়া আফরিন।মিসেস নাদিয়া বের হলে, আপনি প্রবেশ করবেন।”

“মহিলার কন্ঠ শুনে আশে পাশে তাকালো দিগন্ত।অতঃপর ডান সাইডে কিছুটা দূরত্বে আফরিন কে বসা দেখে,১২০ভোল্টেজের শক খেলো দিগন্ত।বসা থেকে সটান হয়ে দাঁড়িয়ে আফরিন কে উদ্দেশ্য করে বললো,

‘আফরিন.. তুমি এখানে?’

‘এদিকে দীর্ঘদিন পর সেই পরিচিত কন্ঠস্বর পেয়ে,আফরিন ভীষণ অবাক হয়ে দিগন্তের দিকে তাকিয়ে হতভম্ব হয়ে গেলো।’

“সেও বসা থেকে দাঁড়িয়ে গিয়ে বললো,

‘আমি এখানে গাইনী ডক্টর দেখাতে এসেছি।বাই দ্যা ওয়ে, তুমি এখানে কি করছো?’

“দিগন্ত শুকনো ঢোক গিলে বললো,

‘আমার ওয়াইফ নাদিয়া কে নিয়ে এসেছি।ও প্রেগন্যান্ট।কিন্তুু তুমি এখানে কেনো?’

“এক্স বয়ফ্রেন্ডের মুখে অন্য নারীর নাম শুনে কিঞ্চিৎ কষ্ট পেলো আফরিন,যদিও সে সবকিছু জানে।তবুও মুখে ম্লান হেসে দিগন্ত কে একটু জ্বালানোর জন্য বললো,

‘ওহ।আমার শারীরিক কিছু প্রবলেম আছে,তাই গাইনী ডক্টর দেখাতে এসেছি।যাইহোক, আমার বিয়ে হয়েছে কিছুদিন হলো।আমি কানাডা থেকে ২দিন আগে এসেছি।আর তুমি আমার হাসবেন্ডের নাম শুনলেও চিনবে।”

“দিগন্ত হা করে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
‘কি নাম তার?’

“আফরিন বাঁকা হেসে বললো,
‘ইহান।’

“আফরিনের এহেন কথা শুনে চোখ বড় বড় হয়ে গেলো দিগন্তের।রিয়েল লাইফের পুরো অংকটাই কেমন গোলমাল লাগছে।তবুও মন কে প্রশান্ত করে একটু ভাব নিয়ে বললো,

‘ওহ।ওকে..ওকে বুঝতে পেরেছি।আচ্ছা শোনো,একটু পর আমার ওয়াইফ চলে আসবে।আমি আমার জায়গায় বসি,আর তুমি তোমার জায়গায় বসো।আমার ওয়াইফ তোমার পরিচয় জানলে,লাল মরিচের গুঁড়ো দিয়ে আমার তরকারি বানাবে।তোমার আর আমার কথা এখানেই ডিসমিস।’

বলেই দিগন্ত রোবটের ন্যায় অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিজের বরাদ্দকৃত চেয়ারে বসে পড়লো।”

“দিগন্তের এহেন কান্ড দেখে আফরিন বাঁকা হেসে মনে মনে আওড়ালো,
‘অদ্ভুত নাটকবাজ পুরুষ.. হুহ।’

———-
“আজ ৪দিন যাবৎ নির্জনের সাথে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কথা বলে না নিধি।নির্জন রাতের গভীরে নিজের অর্ধাঙ্গিনী কে অনেক বার কাছে পেতে চেয়েছে।কিন্তুু,নিধি তার জেদ বজায় রাখতে বরাবরই নির্জন কে ইগনোর করেছে।
যদিও এই ৪দিন নির্জন নিধিকে তেমন কিছু বলেনি।সে তো ভেতরে ভেতরে ছক কষছে, কিভাবে তাকে এই ৪দিন অবহেলা করার জন্য শাস্তি দিবে।তবে এখন নয়;আরও পরে।’
ভেবে বাঁকা হাসলো নির্জন।”

“বিকালের দিকে নির্জন বাসায় ফিরে এসে দেখলো,নিধি বিছানার একপাশে বসে ফোনে ওর মায়ের সাথে কথা বলছে।”

“নির্জন মনে মনে ভাবলো,
‘যাক এই সুযোগ টাকে কাজে লাগাতে হবে।’
ভেবে নিধির পাশে গিয়ে বসলো।নিধি আরও কিছুক্ষণ ওর মায়ের সাথে কথা বলে, ফোন রেখে নির্জনকে দেখে মুখ অন্যদিকে ফিরিয়ে নিলো।সেদিনের ব্যবহার কিছুতেই ভুলতে পারছে না নিধি।”

“নির্জন এইবার বিছানায় উঠে নিধির পাশ ঘেঁষে বসে, নিধির হাত জোড়া নিজের মুঠোবন্দি করে বললো,

‘আর কতো অভিমান করে থাকবে ডার্ক কুইন?সামান্য পাখির জন্য এতো অভিমান?সামনে তো আরও অনেক পথ চলা বাকি আছে।”

“নিধি নির্জনের দিকে না তাকিয়ে বললো,
‘মানে?’

“নির্জন মুচকি হেসে বললো,
‘মানে, দু’টো পাখি কা**টাতে তোমার এই অবস্থা,সামনে যদি আমার দ্বারা আরও ভুল হয়,তাহলে তো তুমি মনে হয় আমার থেকে চিরতরে হারিয়ে যেতে চাইবে।যদিও আমি সেটা হতে দিবো না।কারণ, আমি তোমায় ভীষণ ভালোবাসি নিরুপমা।তোমার এই ৪দিনের অবহেলা আমাকে ভীষণ কষ্ট দিয়েছে।
প্লিজ এইবার একটু ভালো করে কথা বলো।”

“নির্জন এতটা নত স্বরে কথা বলায় নিধির ভারিক্কি মন কিছুটা গলে গেলো।কিন্তুু নির্জনের সেই অদ্ভুত আচরণ এখনও সে ভুলতে পারছে না।
তবুও মলিন স্বরে বললো,

‘আমাকে না জিজ্ঞেস করে এভাবে পাখিগুলোকে কা**টা আপনার উচিত হয় নি।তার ওপর আপনি আমার সাথে যে ধরণের ব্যবহার করেছেন,সেটা এখনও ভুলতে পারছিনা।’

“নির্জন এইবার আরেকটু সুযোগ পেলো।বুঝতে পারলো, মম গলতে শুরু করেছে।তাই নিধির আরেকটু কাছে গিয়ে কপালে চুমু দিয়ে বললো,
‘আমি তোমায় আরেক জোড়া পাখি কিনে দেবো।আর আজ তোমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবো।বলো কোথায় যেতে চাও?’

‘ঘুরতে যাওয়ার কথা শুনে খুশিতে নিধির মুখমন্ডল ঝলমল করে উঠলো।মুচকি হেসে বললো,
‘আমি মা-বাবার সাথে দেখা করতে চাই নির্জন।এই বদ্ধ ঘরে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে।’

“নির্জন কিছু একটা ভেবে মুচকি হেসে বললো,
‘ওকে সোনা,রেডি হয়ে নাও।আর অবশ্যই বোরকা পড়বে।’

“নির্জনের দিকে তাকিয়ে আজ ৪দিন পর মন খুলে হাসলো নিধি।খুশি হয়ে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নিলো।”

“দু’জনে রেডি হয়ে নিধিদের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলো।’
নিধিদের বাসার নিচে এসে নির্জন বললো,

‘তুমি বাসায় যাও।আমি কিছু কেনাকা**টা করে আসছি।’

” নির্জনের কথা মতো নিধি বাসার ভেতরে প্রবেশ করলো।এদিকে নির্জন দোকানে গিয়ে কিছু ফলমূল কিনছিলো,এমন সময় মাথার ওপর একটা হাতের ছোঁয়া পেতেই পেছনে ফিরে তাকালো নির্জন।”

“নির্জন পেছনে ফিরে তাকাতেই, জিন্স-টপ পরা যুবতী খিলখিল করে হেসে বললো,
‘নির্জন, কেমন আছিস?কতদিন পর দেখা হলো।’

“চোখের সামনে বিশ্বাসঘা**তক নারীটিকে দেখে, নির্জনের চোখজোড়া নিমিষেই বড় বড় হয়ে গেলো।ভ্রু জোড়া কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,

‘ইতি,তুই এখানে?৩বছর আগে কত খুঁজেছি তোকে।আজ হঠাৎ এখানে?আর তুই আমার চুলে হাত দিলি কেনো?”

“ইতি মুচকি হেসে বললো,
‘বাব্বাহ!চুলে হাত দিয়ে কি কোনো অপরাধ করে ফেলেছি?তাছাড়া আমরা তো ইউনিভার্সিটির ফ্রেন্ড।আর আমি এখানে আমার হাসবেন্ডের খোঁজে এসেছি।”

“নির্জন ফের ভ্রুকু**টি করে জিজ্ঞেস করলো,

‘ওহ রিয়েলি, তুই বিয়েও করে নিয়েছিস?’

“ইতি আশেপাশে তাকিয়ে কন্ঠস্বর খাদে নামিয়ে বললো,

‘হুম।ইউনিভার্সিটি চেঞ্জ করার ৬মাস পর আমরা বিয়ে করেছি।আ’ম সরি নির্জন;সেদিন তোকে এভাবে প্রেমপত্র দিয়ে,কিছু না জানিয়ে চলে যাওয়া উচিত হয় নি।
আমি জানি,তুই আমায় অনেক খুঁজেছিস।কিন্তুু আমি লজ্জায় তোকে মুখ দেখাতে পারিনি।”

“নির্জন বাঁকা হেসে বললো,
‘তাহলে এখন দেখালি কেনো?তোর শেষ নিঃশ্বাসের ইতি ঘটাতে?’

🔴আমার গল্পের গ্রুপ লিংক👇
https://facebook.com/groups/540631661830855/
#চলবে…
(সবাই গঠনমূলক মন্তব্য করবেন।আর বেশিদিন আপনাদের জ্বালাবো না।গল্পটি আর কয়েকটি পর্বে শেষ হয়ে যাবে।আর হ্যা, সবাই যার যার কর্মফল ভোগ করবে।সবার জন্য ভালোবাসা অবিরাম।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here