হৃদয়ে_রক্তক্ষরণ #পর্বঃ৩১ #লেখিকাঃমেহের_আফরোজ

0
4

#হৃদয়ে_রক্তক্ষরণ
#পর্বঃ৩১
#লেখিকাঃমেহের_আফরোজ

[কঠোর থেকে কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্ক এবং মুক্তমনাদের জন্য]

“নিধির এহেন কথায় নির্জনের মাথার উগ্র পোকা গুলো নিমিষেই কিলবিল করে উঠলো।”

“নিধির অনামিকা আঙ্গুলে গোল্ডেন স্টোনের আংটি টি এমন ভাবে জ্বলজ্বল করছে,এ যেনো নির্জনের অস্তিত্বকেই চ্যালেঞ্জ করছে।নির্জনের মনের ভেতর রাগের আ””গুন দাউ দাউ করে জ্বলে উঠলো।অপরদিকে দৃষ্টি ফিরিয়ে চোখ জোড়া বন্ধ করে, ক্রোধ কে দমন করার বৃথা চেষ্টা করলো নির্জন।’
ভাবলো,
‘ইচ্ছে করছে,আংটি টা কে ছিনিয়ে এনে এসিড দিয়ে গলিয়ে ফেলি।কিন্তুু এই মুহূর্তে কিভাবে করবো?”

“হঠাৎ ভেতর থেকে ‘মন’ বললো,
‘অন্যের উপহার দেওয়া আংটি তোমার প্রেয়সীর কোমল চামড়ায় লেপ্টে আছে।এটা কিন্তুু খুবই অশোভনীয় ব্যাপার।দ্রুত আংটি টা কে ধ্বংস করার ব্যবস্থা করো।”

“অপরপাশ থেকে ‘হৃদয়’ বুদ্ধিদীপ্ত স্বরে বলে উঠলো,
‘নির্জন,কিছু ধ্বংস তীব্র ক্রোধে নয়,বরং মৃদু উপেক্ষায় করা হয়,যা হৃদয়ে গভীর ক্ষত রেখে যায়।’
ঠান্ডা মাথায় ভাবো,মনের কথা শুনে এখন তুমি যদি নিধির কাছ থেকে আংটি ছিনিয়ে আনো,তাহলে নিধি কিন্তুু তোমার প্রকৃত সত্তার পরিচয় পেয়ে যাবে।তারপর কি হবে ভেবে দেখেছো?আমি কি বলতে চেয়েছি,আশা করি বুঝতে পেরেছো।তাই ঠান্ডা মাথায় সহজ কিছু পরিকল্পনা করো,যেনো একটি পাথর দিয়ে দু’টি পাখি মা**রা হয়।এতে ওই আংটি এবং নিধি কষ্ট পাবে।কিন্তুু তোমার পাথর অক্ষত থাকবে।”

“ভেতর থেকে ‘মন’ শ**য়তানি হাসি দিয়ে আবার বলে উঠলো,
‘নির্জন তোমাকে একটা দারুণ আইডিয়া দিচ্ছি।আশা করি এতে তোমার প্রেয়সী কে নিশ্চিন্তে বোকা বানাতে পারবে।সেই সাথে কষ্ট নামক শাস্তি টাও দিতে পারবে।’
বলেই ‘মন’ নির্জন কে পুরো প্ল্যান টা বললো।”

“মনের প্ল্যান শুনে আকস্মিক হো হো করে হেসে উঠলো নির্জন।”

“নির্জন কে এভাবে হাসতে দেখে নিধিও মুচকি হেসে বললো,
‘হঠাৎ এভাবে হাসছেন কেনো?বাই দ্যা ওয়ে, আপনি যেভাবে হাসেন সেভাবেই সুন্দর লাগে।’
বলেই নির্জনের চোখ থেকে হেলে পড়া চশমাটা তর্জনী দিয়ে উপরে উঠিয়ে দিলো নিধি।”

“নির্জন এইবার মুচকি হেসে ‘থ্যাংকস’ দিয়ে ভ্রুকুটি করে বললো,
‘তোমার আংটি টা বেশ সুন্দর।তোমার ফ্রেন্ডের চয়েজ আছে মানতে হবে।দেখি আংটি টা খুলে দাও তো।”

‘হুম, ওর চয়েজ বরাবরই বেশ সুন্দর।কিন্তুু,আপনি আংটি দিয়ে কি করবেন?’

“খেলবো।উফফ!আগে দাও তো।তারপর আমার খেলা দেখাই।’বলেই হাত বাড়িয়ে দিলো।”

“নিধি কৌতুহলী দৃষ্টিতে তাকিয়ে মুচকি হেসে, অনামিকা আঙ্গুল থেকে আংটি খুলে নির্জন কে দিলো।”

“আংটি টা হাতে পেতেই মুচকি হেসে মুঠোবন্দি করে নিলো নির্জন।অতঃপর বসা থেকে দাঁড়িয়ে, আংটি টি শূন্যে উড়িয়ে আবারও মুঠোবন্দি করে নিলো।কয়েকবার এভাবেই নির্জন বল খেলার মতো রিংটি নিয়ে খেলতে থাকল।সেটা দেখে হেসে কু**টিকু**টি হলো নিধি।
হাসতে হাসতে বললো,
‘নির্জন আপনি তো দেখছি একদম বাচ্চাদের মতো খেলছেন।’

“হুম,কানামাছি,চোর-পুলিশ খেলার পাশাপাশি এই খেলাটাও আমার ভীষণ প্রিয়।’
বলেই মন ভুলানো হাসি দিয়ে ধীরে ধীরে পুকুরের কাছে চলে গেলো নির্জন।আর সেভাবেই আংটি টি শূন্যে উড়িয়ে আবার ধরলো।”

“নিধি নির্জনের কাছাকাছি গিয়ে বললো,
‘একি! পুকুরের এতো কাছে যাবেন না।পড়ে যাবেন তো।”

“খেলতে খেলতে উচ্চস্বরে হেসে উঠলো নির্জন।বিজয়ের হাসি দিয়ে বললো,
‘উহুম,আমার কিচ্ছু হবে না ডার্ক কুইন।তুমি শুধু মজাটা উপভোগ করো,এখনই ধামাকা হবে।’
বলতে না বলতেই নির্জন আংটি টি শূন্যে উড়িয়ে ধরতে যাবে,তখনই আংটি টা পুকুরের ঘোলাটে জলরাশিতে পড়ে গেলো।তৎক্ষণাৎ দ্রুত গতিতে একটি মাছ সেই আংটি টা মুখে তুলে নিলো।”

“আকস্মিক ঘটনাটি ঘটে যাওয়ায় হতভম্ব হয়ে গেলো নিধি।অস্ফুটস্বরে বলে উঠলো,
‘নির্জন..আমার আংটি।’

“নিধির কষ্টে ভরা মুখস্রি দেখে পৈ**শাচিক আনন্দ পেলো নির্জন।মন কে অনেক গুলো ধন্যবাদ জানিয়ে তৃপ্তির হাসি দিয়ে ভাবলো,
‘প্ল্যান পারফেক্টলি সাকসেস।’
তৎক্ষণাৎ মনে মনে কবিতা আওড়ালো,

“হিং**স্র প্রেমের আংটি”

নিদ্রাহীন চোখে দেখি, আংটি সে হাতের বাহার,
জ্বলে ওঠে র**ক্তলাল আগুন, জেগে ওঠে মন অন্ধকার।
পুকুরের জলই তার ঠিকানা, ছুঁড়ে দিলাম নিঃশব্দে,
ডুবলে ডুবুক আংটি, প্রেয়সী আমার কেউ স্পর্শ করবে না সশব্দে।

মাছের পেটে লুকালো আংটি,
ঠোঁটে ফুটলো পৈ***শাচিক হাসি,
কেবল আমিই চাই স্পর্শ করতে, সে হাতে অন্য কেউ নয়,
আমার ভালোবাসায়,অন্য কারো ছাপ যেনো কোনোদিন না হয়।

হিং**স্র এ প্রেমের দাবি, শুধু আমার জন্যই থাকবে আশায়,
অন্য কারো অধিকার নেই, তার হাতের ভালোবাসায়।
যে আংটি বোঝে না প্রেমের সীমা,
পুকুরের তলানিতেই তার হবে শেষ ঠিকানা।”

~মেহের~

“কবিতা আবৃত্তি করে চশমাটা ঠিকঠাক করে ইনোসেন্ট মুখ করে, দ্রুত পায়ে নিধির কাছে এসে বললো,
‘সরি,সরি..আসলে আমি বুঝতে পারিনি এমন কিছু একটা ঘটে যাবে।আচ্ছা, প্লিজ মন খারাপ করো না ডার্ক কুইন।আমি এখনই পুকুরে নেমে, আংটি টা উদ্ধার করে আনব।দরকার হলে পুকুরের সবগুলো মাছের পেট কে**টে হলেও তোমার আংটি তোমাকে ফিরিয়ে দিবো।ডোন্ট আপসেট মাই ডার্ক কুইন।আমি যাবো আর আসবো।’
বলেই পুকুরের পানিতে যেই পা ডুবাতে যাবে,তখনই নিধি খপ করে নির্জনের হাত ধরে হতাশা মিশ্রিত কন্ঠে বলে উঠলো,

‘পা**গল হয়েছেন আপনি?এতগুলো মাছের পেট কে**টে আংটি বের করবেন?থাক লাগবে না ঐ আংটি।
যদিও আংটি টা নাদিয়া আমার জন্য টাকা জমিয়ে বেশ শখ করে কিনেছিলো।ও শুনলে হয়তো খুব কষ্ট পাবে।আমি ওকে কিছুই বলবো না;বাদ দিন।আপনিতো আর ইচ্ছা করে ফেলেন নি।আচ্ছা,এখানে আর থাকতে ইচ্ছে করছেনা।চলুন যাই।”

“ইশ! কি আনন্দ।হৃদয় ঠিকই বলেছিলো,
‘কিছু ধ্বংস ক্রোধ দিয়ে নয়,নীরবতা দিয়েও করা যায়।’
ভেবে মনে মনে মুচকি হাসলো নির্জন।কিন্তুু ওপরে ইনোসেন্ট মুখ করে অপরাধীর স্বরে বললো,
‘আসলে ভুলটা আমারই ছিলো।আমি যদি খেলতে খেলতে পুকুর পাড়ে না যেতাম,তাহলে হয়তো এই অঘটন ঘটতো না।ওকে, আমি তোমায় এর থেকেও সুন্দর একটি আংটি কিনে দেবো ডার্ক কুইন।আমার সাথে চলো।”

“বলেই নিধির হাত ধরে হাঁটতে থাকল।প্রতিত্তোরে কিছুই বললো না নিধি।প্রিয় বান্ধবীর দেওয়া সবচেয়ে প্রিয় উপহারটি আঙ্গুলে পড়ে এসেছিলো সে।এই তো, গতবছর নাদিয়া ফ্রেন্ডশিপ ডে তে কত ভঙ্গিমা করে আংটি দিয়ে সারপ্রাইজ দিয়েছিলো।নিধিও ওকে ব্রেসলাইট গিফট দিয়ে সারপ্রাইজ দিয়েছিলো।কিন্তুু নিধির উপহার টি নাদিয়া যত্ন করে রাখলেও,নিধি পারলো না।’
কথাগুলো ভাবতেই নিজের কাছেই লজ্জিত হলো নিধি।”

“নির্জন নিধিকে একটি দোকানে নিয়ে গিয়ে কয়েকটি গোল্ডের আংটি দেখিয়ে বললো,
‘দেখোতো কোনটা তোমার পছন্দ?’

“নিধি কি বলবে ভেবে পেলো না।মনম**রা স্বরে বললো,
‘এখন এগুলো আমি চাই না, নির্জন।বিয়ের পর নেবো।আমি বাসায় যাবো,বেশি দেরি হলে মা রাগ করবে।”

“নির্জনের মন ক্ষুন্ন হলো।ভেতর থেকে ‘মন’ হিং**স্র স্বরে বলে উঠলো,
‘দেখেছো,সে তার সো কলড ফ্রেন্ডের
গিফটের কথা কিছুতেই ভুলতে পারছে না।এর মানে তোমার কথা তার কাছে মূল্যহীন।সে অবহেলা করেছে তোমায়।এই মুহূর্তে তাকে কি শাস্তি দেওয়া উচিত ছিলো?”

“অপরপাশ থেকে ‘হৃদয়’ বলে উঠলো,
‘অবশ্যই তার অনামিকা আঙ্গুলের চামড়া কে**টে মরিচের গুঁড়ো, লবণ এবং সরিষার তেল দিয়ে মেখে দেওয়া উচিত ছিলো।কিন্তুু, এই মুহূর্তে তো এটা অসম্ভব।আপাতত তার প্রতি বেশি বেশি ভালোবাসা প্রদর্শন করতে হবে।নইলে বাঘিনী হাত ছাড়া হয়ে যাবে।”

“দিব্যশক্তি দিয়ে ‘মন’ আর ‘হৃদয়ের’ কথপোকথন শুনে বাঁকা হাসলো নির্জন।নিধির হাত ধরে দোকান থেকে রাস্তার এক সাইডে নিয়ে গিয়ে বললো,
‘ওকে জানপাখি,তোমাকে বিয়ের পর মন-প্রাণ উজাড় করে সবকিছু দিবো।তখন কিন্তুু আমায় একদম ইগনোর করতে পারবে না,বলে দিলাম।”

“নির্জনের এহেন কথায়, না চাইতেও মৃদু হাসলো নিধি।নির্জনের সাথে আরও কয়েক মিনিট কথা বলে,সেখান থেকে বিদায় নিলো।আজ আর নিধির গুরুত্বপূর্ণ কথাটি বলা হলো না।”

————
“রাত ১১টা বেজে ৩৪মিনিট।দিগন্ত চেয়ারে বসে পা ঝুলিয়ে, ল্যাপটপে মনযোগ দিয়ে অফিসের কিছু ফাইল রেডি করছিলো।এমন সময় পেছনে দরজা খোলার আওয়াজ পেতেই,ফিরে তাকালো দিগন্ত।
পেছনে তাকাতেই নাদিয়ার সাজ-সজ্জা দেখে বিস্ময়ে চোখ জোড়া বড় বড় হয়ে গেলো দিগন্তের।
অবাক হয়ে বললো,

‘একি,হানি!তুমি দেখি ওপেন লাভ শেপ নাইটি টা পড়ে নিয়েছো?’
বলেই নাদিয়ার আপাদমস্তক চোখ বুলিয়ে শুকনো ঢোক গিলে, সামনে তাকিয়ে দ্রুত গতিতে ল্যাপটপ বন্ধ করে মুচকি হেসে বললো,
‘আজ আর অফিসের ফাইল রেডি করা হবে না।আজ রুমের ফাইল রেডি করা হবে।’
বলেই আবারও দুষ্টু হেসে এগিয়ে গেলো নাদিয়ার পানে।”

“এদিকে মাত্রই ওয়াশরুম থেকে দিগন্তের শখ করে কিনে আনা অদ্ভুত নাইটি পরে বের হয়েছে নাদিয়া।চোখে-মুখে তার লাজুক হাসির ঝলক।সামনে আসা এলোমেলো চুলগুলো থেকে ফোটা ফোটা পানিগুলো টপটপ করে নিচে পড়ছে।
কিছু ফোটা নাইটিতে পরে,নির্দিষ্ট জায়গার কিছু অংশ ভিজে গেছে।সেদিকে তাকিয়ে আবারও শুকনো ঢোক গিলে,দিগন্ত নাদিয়ার হাত আলতো করে টেনে কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বললো,
‘দিলেতো আমার ঘুমন্ত অনুভূতি গুলো জাগ্রত করে।এখন আমার কি হবে?”

“দিগন্তের কথা শুনে, নাদিয়া কোনোরকমে হাসি আটকে ঠোঁট কা**মড়ে বললো,

‘ইশশ!তোমার মুখে কি কিচ্ছু আটকায় না?ঠোঁট কা**টা কোথাকার!আর গতকাল রাতে বাবার বাসা থেকে তুমি আমাকে এভাবে নিয়ে আসায়,আমার মন টা খুব খারাপ ছিলো।তাই আর এটা পড়িনি।কিন্তুু তোমার অনুরোধ ফেলতে পারলাম না।তবে, তুমি কিন্তুু প্রতিনিয়ত আরও বেশি নির্লজ্জ হয়ে যাচ্ছো।”

“উফফ!তুমি আমার ১৫টা না,২০টা না, ১টা মাত্র বউ।তোমার সামনে আবার কিসের লজ্জা?চলো, এইবার মেইন ফাইল টা রেডি করে ফেলি।’
বলেই দিগন্ত নাদিয়া কে কোলে তুলে নিলো।”

“এদিকে দিগন্ত নাদিয়াকে কোলে তুলে নিতেই, নাদিয়া জোরে জোরে পা দুলিয়ে বললো,
‘এই..এই আমাকে নামাও প্লিজ।’

“কে শোনে কার কথা।দিগন্ত নাদিয়াকে বিছানায় নিয়ে, নাদিয়া যে পাশে ঘুমায় সেই পাশে ওকে শুইয়ে দিয়ে,নিজেও ওর ওপর ভর ছেড়ে দিলো।”

“এইবার নাদিয়ার দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হলো।অস্ফুটস্বরে বলে উঠলো,
‘প্লিজ জানু, তোমার এই চালের বস্তার মতো শরীর নিয়ে নিচে নামো।নইলে আমি দম ফেটে ম**রে যাবো।তখন রোমান্সের ১০০টা বেজে যাবে।”

“দিগন্ত বুঝতে পারলো,নাদিয়ার কষ্ট হচ্ছে।তাই নিচে নেমে নিজের বরাদ্দকৃত জায়গায় যেতেই,পিঠে সূচালো কিছুর আ**ঘাত ফুটতেই তীব্র স্বরে চেঁচিয়ে উঠলো,

“আহ!গেলো রে… সব শেষ হয়ে গেলো।”

“এদিকে দিগন্ত কে এভাবে চেঁচাতে দেখে, নাদিয়া তড়িঘড়ি করে উঠে মুখ চেপে ধরে বললো,
‘একদম চেঁচাবে না।আমি জানি, তুমি খুব বেশি ব্যথা পাওনি।আমি সেভাবেই সুই টা তোমার সাইডে সেটআপ করেছি।বিছানায় গেঁথে জাস্ট সুঁইয়ের মাথাটা বের করে রেখেছি।
গতকাল মায়ের সামনে আমায় নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছো।মনে আছে?বলেছিলাম, বাসায় গিয়ে মজা দেখাবো।
গতকাল রাতে খুব টায়ার্ড ছিলাম।তাই আজ দেখিয়েছি।মজাটা কেমন ছিলো জানু?”

“নাদিয়ার এহেন কথা শুনে দিগন্তের চোখ জোড়া আরও বড় বড় হয়ে গেলো।মুখ থেকে নাদিয়ার হাত ঝটকা দিয়ে সরিয়ে উত্তেজিত স্বরে বললো,
‘তুমি জানো,তুমি আমার কতো বড় ক্ষতি করতে যাচ্ছিলে?এই সুঁইয়ের আ**ঘাত যদি অন্য কোথাও লাগত,তাহলে আমি বেঁচে থাকতেও তোমাকে কুমারীর মতো জীবন কা**টাতে হতো।”

“দিগন্তের এহেন কথা বুঝতে নাদিয়ার প্রায় ১মিনিট সময় লাগল।
যখন বুঝলো,ততক্ষণে দিগন্ত নাদিয়ার ঠোঁট জোড়া আবদ্ধ করে নিয়েছে।গভীর চুমু দিয়ে বললো,

‘যেহেতু তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি, তাই ফাইল টা রেডি করা যাক।’
বলেই শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো নাদিয়াকে।
নাদিয়া বেচারি দিগন্ত কে শাস্তি দিতে গিয়ে, নিজেই রোমান্টিক শাস্তি পেয়ে গেলো।হায় কপাল!”

———
“সময় চির বহমান, যেমন নদীর জল কখনও থেমে থাকে না। অতীতের স্মৃতি তার স্রোতে ভেসে যায়, ভবিষ্যতের প্রতীক্ষায় নতুন অধ্যায় আসে।
এই স্রোতে গাঁথা থাকে মানুষের হাসি-কান্না, জয়-পরাজয়।
সময় সবকিছু বদলায়, আবার কিছুই বদলায় না—মনের গভীরে থেকে যায় চিরন্তন সেই অনুভূতি। ”

“দেখতে দেখতে কে**টে গেলো দেড় মাস।তোহার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়েছে।তোহার মন কিছুটা খারাপ।কারণ দিন-রাত মাহিরের প্রেমে হাবুডুবু খাওয়াতে, পড়াশোনায় তেমন মন বসাতে পারেনি।যার কারণে পরীক্ষা আশানুরূপ হয়নি।এখন শুধু রেজাল্টের জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষা।
তবে মাহির তোহা কে স্বান্তনা দিয়ে বলেছে,
পরীক্ষা খারাপ হলে,এই নিয়ে তার কোনো মাথা ব্যথা নেই।তার স্বপ্নচারিনী ফেইল করলে,তাকে নিয়ে
সাজেক ঘুরতে যাবে।সাজেকের মনরোম পরিবেশ দেখে মন চাঙ্গা হয়ে যাবে।”

“মাহিরের এমন স্বান্তনার বাণী শুনে, তোহা হাসবে না কাঁদবে ভেবে পেলো না।”

“দেখতে দেখতে নিধি এবং তোহার বিয়ের আলোচনা শুরু হয়ে গেলো।”

“রফিক মির্জা একই সাথে নির্জন এবং মাহির কে তার বাসায় নিমন্ত্রণ করেন।মাহির তার পরিবার সহ এলেও,নির্জন একাই এসেছে।অবশ্য সেটা নিয়ে মাথা ব্যথা নেই রফিক মির্জার।কারণ, তিনি নির্জনের এলাকায় খোঁজ-খবর নিয়ে জানতে পেরেছেন,
‘এই যুগে নির্জনের মতো চরিত্রবান, মহৎ,ভদ্র ছেলে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
তাই সে নির্জনের ওপর সম্পূর্ণ ভরসা করে, নির্জনের সাথে তার বড় মেয়ে নিরুপমার বিয়ে দিবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”

“আজ মির্জা বাড়িতে রফিক মির্জার কিছু ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজন এসেছে।তাদেরকে রফিক মির্জা নির্জন এবং মাহিরের সম্পর্কে সবকিছু বলেছে।
ডাইনিং টেবিলে নির্জন চুপচাপ খেয়ে গেলেও,বিষদ আলোচনা জুড়ে দিয়েছে মাহির।রফিক মির্জাও জমিয়ে মাহিরের সাথে আলোচনা করছেন,আর কিছুক্ষণ পর পর মুখে লোকমা তুলছেন।”

“আত্মীয়-স্বজনরা নির্জনের বাহ্যিক চেহারা এবং ভদ্রতা পছন্দ করলেও,তাদের বেশি মনে ধরেছে মাহির কে।নিধি এবং তোহার কাজিনরা সবাই মাহিরের সাথে বেশ ভাব জমিয়েছে।মাহিরও সবার সাথে ‘হাই,হ্যালো’ করছে।”

“এদিকে নির্জন এদিক-সেদিক চোখ বুলিয়ে নিধিকে খুঁজে বেড়াচ্ছে।তাহমিনা বেগম বিষয়টি বুঝতে পেরে মুচকি হেসে,নিধি কে ডাকতে গেলেন।প্রথম দিনের মতো আজ নির্জন এত কথা না বললেও, তাহমিনা বেগম নির্জন কে মেয়ের জামাই হিসাবে বেশ পছন্দ করেছেন।তার মতে, ‘ছেলেটা মাত্রাতিরিক্ত ভদ্র।’

“তাহমিনা বেগম নিধির রুমে যেতেই দেখলেন, নিধি ধূসর রঙা লং গাউন পড়ে চুলগুলো এপাশ-ওপাশ করে ঢং করছে।’
তাহমিনা বেগম গম্ভীর স্বরে বললেন,
‘অনেক সেজেছিস,এখন নিচে যা।তোর হবু স্বামী তোর জন্য অপেক্ষা করছে।’

“তাহমিনা বেগমের মুখে আকস্মিক এহেন বাক্য শুনে ভড়কে গেলো নিধি।ভাবলো,
‘এটা কি সত্যি শুনলাম?ভূতের মুখে দেখি জ্বিন জ্বিন।হায় আল্লাহ!মা দেখি, আমার মতো রোমান্টিক হয়ে গেছে।অবশ্য বুঝতে হবে,ডিজিটাল যুগের মা।’
ভেবে ফিচেল হেসে পেছনে তাকাতেই দেখলো, তাহমিনা বেগম চলে গেছে।
বিস্ময়কর চাহনি নিক্ষেপ করে ভাবলো,
‘ যাহ!মা মনে হয় লজ্জা পেয়েছে, হিহিহি।’
বলেই আবারও আয়নার সামনে কিছুক্ষণ ঢং করে, নিচে চলে গেলো।”

———-
“এদিকে সবার আড়ালে মাহির তোহা কে চোখ এবং হাতের ইশারা করে ছাদে যেতে বলেছে।”

“মাহিরের কথা অনুযায়ী তোহা চারিদিকে সতর্ক দৃষ্টি নিক্ষেপ করে,ছাদে গিয়ে মাহিরের জন্য অপেক্ষা করতে থাকল।প্রায়
৫-৬মিনিট পর মাহির ছাদে যেতেই,তোহার মনে প্রজাপতিরা উড়তে থাকল।কতদিন পর দু’জনে আবার একসাথে দেখা করলো।সর্বশেষ মাহিরের সাথে চেম্বারে দেখা হয়েছিলো।অতঃপর আজ।’
ভেবে গাঢ় নিঃশ্বাস ফেললো তোহা।”

“মাহির তোহার কিছুটা কাছাকাছি এসে,তোহাকে আপাদমস্তক দেখে মুচকি হেসে বললো,
‘স্বপ্নচারিনী গাঢ় সবুজ রঙের শাড়িতে ভীষণ সুন্দর লাগছে তোমায়।আমার তো এক্ষুনি কত কিছু করে ফেলতে ইচ্ছে করছে।ভাগ্যিস, এখনও বিয়ে হয়নি।”

“শুরু হয়ে গেলো আবার নির্লজ্জ টাইপ কথা।তোহা লজ্জা পেয়ে যখনই চলে যেতে নিবে,তখনই মাহির খপ করে হাত ধরে বললো,
‘তোমার বোন আর তোমার বিয়ের কথা কিন্তুু পাকাপাকি হয়ে গেছে।নিশ্চয়ই শুনেছো।তোমাদের দুই বোনের বিয়ে একই দিনে হবে।
বিষয়টি আমার এবং নির্জন ভাইয়ার কাছে সুখের হলেও,তোমার বাবা-মায়ের কাছে খুব কষ্টের।কিন্তুু কিছু কিছু কষ্ট মানুষের মনে হাসি ফুটিয়ে তোলে।এটাই দুনিয়ার জটিল বাস্তবতা।”

“তোহা মাথা নাড়িয়ে সায় জানিয়ে মৃদুস্বরে বললো,
‘হাত টা ছাড়ুন, প্লিজ।”

“তোহা বলতেই মাহির হাত টা ছেড়ে দিলো।তোহার কিছুটা কাছাকাছি এসে বললো,
‘আগামী রাত টুকু শুধু দূরে থাকার সময় পাবে,তারপর আর তোমার হাত ছাড়ছি না তোহা রানী।তুমি বললেও না।’
বলেই মুচকি হেসে একটি কবিতা আওড়ালো,

“লজ্জা ভা””ঙার চুম্বন”

উড়ে যাবে লজ্জা, মুছে দেবো সাজ-সজ্জা,
এসো কাছে, প্রিয়া, ভা””ঙো মনের ব্যাকুলতা।
মধুর কথার সুরে, হৃদয়ে বাঁধা প্রেমের গান,
তোমার ঠোঁটে হাসি ফুটুক, চুম্বনে মিটুক অভিমান।

চোখের পলকে ভাসে, স্বপ্নের রঙিন ছোঁয়া,
লাজুক হাসির আভায়, কাটুক সময়ের প্রহর রোয়া।
চুম্বনেতে মিশে থাকুক, হৃদয়ের গভীর প্রেম,
লজ্জা নয়, ভালোবাসায় ভাসবো মোরা,
খেলবো সুখের গেম।”

~মেহের~

“ছিঃ ছিঃ! কি নির্লজ্জ কবিতা।শুনেই গা গুলিয়ে আসলো।’
ভেবে, তোহা মাহিরের দিকে একবার কটমটিয়ে তাকিয়ে,দুই হাত দিয়ে শাড়ি উঁচিয়ে,এক দৌড়ে নিচে চলে গেলো।’
সেদিকে তাকিয়ে দুষ্টু হাসলো মাহির…হাহাহা।”

———-
“এই প্রথম নিধির রুমের বেলকনিতে সরাসরি প্রবেশ করলো নির্জন।নিধি নির্জন কে দোলনা দেখিয়ে বললো,এখানে বসে সে তার প্রিয়তমর চিঠির জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতো।মাঝে মাঝে দু’চোখ বেয়ে অঝোরে আবেগের অশ্রু ঝরতো।আরও অনেক অনুভূতি শেয়ার করলো।”

“নিধির কথা শুনে মুচকি হাসলো নির্জন।”

“আগামীকাল শুধু এই বাড়িতে স্থায়ী ভাবে থাকতে পারবে।তারপর সবচেয়ে প্রিয় মানুষদের ছেড়ে শ্বশুর বাড়িতে পা রাখতে হবে।’
আকস্মিক কথাগুলো ভেবে,নিধির মন টা বিষন্নতায় ছেয়ে গেলো।”

“নির্জন ভ্রুকুটি করে বললো,
‘এইমাত্র হাসছিলে,এখন আবার মন খারাপ কেনো ডার্ক কুইন?’

“নিধির নেত্রকোণায় কিছুটা পানি জমা হয়েছে।সেগুলো কে গাল বেয়ে পড়তে না দিয়ে,চোখজোড়া বন্ধ করে আবার খুললো।অতঃপর করুণ স্বরে বললো,

‘নির্জন, সেদিন রমনার বটমূলে আপনাকে একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলার জন্য গিয়েছিলাম।আমার মনে হয়েছিলো ফোনের থেকে কথাগুলো সরাসরি বললে বেশি ভালো হবে।কিন্তুু, কিছু অযাচিত কারণে কথাগুলো আর বলা হয়ে ওঠেনি।”

“নির্জন গম্ভীর স্বরে শুধালো,
‘কি কথা বলবে ডার্ক কুইন?এখন বলো।’

” ক্ষুদ্র নিঃশ্বাস ছেড়ে নিধি বলতে শুরু করলো,
‘একটা মেয়ে যখন তার প্রিয় বাসস্থান,প্রিয়জনদের ছেড়ে শ্বশুর বাড়িতে যায়,তখন মেয়েটি মনে অনেক আশা নিয়ে বাড়িটিতে পদার্পণ করে।সে চায়,নিজের বাড়ির মতো,শ্বশুর বাড়িতেও শান্তিপূর্ণ ভাবে নিঃশ্বাস নিতে।
আমার বাবার প্রিয় একটি গল্প আছে,’দেনা-পাওনা’
সেই গল্পের আসল চরিত্র ছিলো ‘নিরুপমা’।গল্পটি নিশ্চয়ই পড়ে থাকবেন।”

“ভারী নিঃশ্বাস ফেললো নির্জন।বুকের ওপর হস্তদ্বয় ভাজ করে বললো,
‘হুম,তারপর?’

“নিধি আবার বলতে শুরু করলো,
‘সেই গল্পে নিরুপমা শ্বশুর বাড়ি নামক যৌতুক লোভী রাক্ষসপুরীর জন্য,স্বামীর কাছে যাওয়ার আগেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।’
আমার বাবার নাকি এই গল্প পড়ে সর্ব প্রথম চোখজোড়া ভিজেছিলো।তার প্রতিটি পাতায় যৌতুক লোভীদের সম্পর্কে বিষদ বর্ণনা থাকত এবং যেখানেই এই ধরণের কাহিনী হতো,তিনি সেখানে গিয়ে তীব্র প্রতিবাদের সুর তুলতেন।আমার বাবা তার সাংবাদিক জীবনে অনেক সংগ্রাম করে এই পর্যন্ত এসেছেন।আজ তিনি রিটায়ার্ড করার পরেও তাকে সবাই সম্মানের চোখে দেখে।”

“তো সেই গল্পের নামটি থেকেই আমার জন্ম হওয়ার পর,বাবা শখ করে আমার নাম রেখেছেন ‘নিরুপমা’।তার কাছে আমি ‘অতুলনীয়া’।ছোটবেলা থেকে আমাকে এবং তোহাকে খুব আদর এবং যথাযথ স্বাধীনতা দিয়ে বড় করেছেন তিনি।”

“আমি আমার কিছু বান্ধবীর জীবন কাহিনী শুনেছি,তাদের কাছে শ্বশুর বাড়ি মানে রাক্ষসপুরী।যেখানে শুধু অকৃতজ্ঞতা এবং অত্যাচারের বন্যা বয়ে যায়।তাদের স্বামীরাও নাকি সেই অত্যাচারে হাতে-হাত মিলিয়ে সামিল হয়।”

“এখন আমি আপনাকে শুধু এটাই অনুরোধ করবো,
আমি আপনার বাসায় গিয়ে আপনার এবং আমার শাশুড়ির সেবায় নিমগ্ন হবো,আমি একজন ভালো বৌমা এবং ভালো বউ হতে চাই।পেছনের সকল খারাপ অভ্যাস গুলো ত্যাগ করতে চাই।তার পরিবর্তে আপনার কাছে শুধু স্বাধীনতা চাই।আমি জানি,আপনি আমায় ভীষণ ভালোবাসেন।আমি যা চাইবো,তাই আপনি করবেন।তবুও বিয়ের আগে কথাগুলো বলা অতি গুরুত্বপূর্ণ মনে করছি।”

“এতক্ষণ যাবৎ নিধির আবেগী কথাগুলো নির্জনের কাছে অহেতুক টেপ রেকর্ডের মতে লাগছিলো।তবুও
এই মুহূর্তে এগুলো কে ইগনোর করা মানে চরম বোকামি হবে।তাই চেহারায় আবেগী ভাব লেপ্টে নির্জন নিধির হাত ধরে মুঠোবন্দি করে বললো,

‘আমি তোমাকে কথা দিলাম ডার্ক কুইন,আমার থেকে এই ধরণের কষ্ট তুমি কখনোই পাবে না।আমাকে
ভালোবাসার সর্বোচ্চ স্বাধীনতা তুমি পাবে।এতো ভালোবাসবো তোমায়,যে তুমি নিজেই অবাক হয়ে বলবে,
‘একজন পুরুষ একজন নারীকে এতটাও ভালোবাসতে পারে?’
আমার তীব্র ভালোবাসার বাহুডোরে শক্ত করে বেঁধে রাখবো তোমায়।এতটা শক্ত করে বাঁধবো, যেনো কখনো ছুটে যাওয়ার মতো কল্পনাও না করতে পারো।’
বলেই,হাস্কি ভয়েসে আওড়ালো,

“আমার বক্ষপিঞ্জরে চলবে তোমার স্বাধীন বিচরণ।
অনুভূতির সাগরে ভাসাবো তোমায়
বলবে তুমি,এখানেই হয় যেনো
আমার সুখের শেষ মরণ।”

নির্জনের কথার ভাবার্থ ইতিবাচক ভাবে নিয়েছে নিধি।মুখে অনাবিল হাসির রেখা ফুটিয়ে বললো,
‘আমাকে এতটা বোঝার জন্য থ্যাংক ইউ সো মাচ নির্জন; এন্ড আই লাভ ইউ।”

“নির্জন মুচকি হেসে বললো,

“I love you excessively my Dark Queen.”

#চলবে…
(প্রিয় পাঠকমহল যারা ভেবেছিলেন, আংটি টা কে নির্জন এসিড বা আগুন দিয়ে পু**ড়বে,তাদের জন্য এক বালতি সমবেদনা।আগামী পর্বে দুই জুটির বিয়ে হবে।সেই সাথে থাকবে একটা সারপ্রাইজ।যারা মনযোগ দিয়ে আমার গল্প পড়েছে,তারাই শুধু সারপ্রাইজ টা ধরতে পারবে।
আর তোহা,মাহিরের বিয়ের জন্য গিফট কিনুন।কাল বাদে পরশু ওদের বিয়ে নিয়ে আমার অনেক কাজ আছে।
তোহা আর মাহির গিফট নিলেও,নির্জন নিবে না।তাই ওটা আমাকে দিবেন।আমি আবার গিফট পেতে খুব ভালোবাসি।সবাই কে বিয়ের দাওয়াত রইলো।ভালোবাসা অবিরাম।আর গঠনমূলক মন্তব্য করতে ভুলবেন না।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here