#মেহেরজান
লেখনীতে- #সোহামণি
পর্ব ১৬
বাড়ির ছেলেমেয়েদের নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও পরবর্তীতে মাহবুব খানের নির্দেশে বড় একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আর সেটা হলো শুধু ছেলেমেয়েরাই না বাড়ির সবাই মিলে একটা ভ্রমণে যাবে এবার।তবে সেটা আর কিছুদিন পরে। অফিসেও অনেকগুলো ইম্পর্টেন্ট মিটিং আছে।আজ সন্ধ্যায় পরিবারের সবাই একসাথে হয়েছে কোথায় যাবে এই বিষয়ে আলোচনা করতে।গিন্নিরা সবার জন্য সুস্বাদু খাবার বানাতে ব্যস্ত।বাড়ির ছেলেমেয়েরা একপাশের সোফায় তো বড়রা অন্যপাশে। গিন্নিরা বাদে শুধুমাত্র অনুপস্থিত হলো মেহরান।আজ অফিসে না গেলেও বিকেলের দিকে একটা কাজে গিয়েছে। মেহরানের প্রতি এতদিন যাবৎ অন্যকোনো অনুভুতি না থাকলেও গতকাল রাত থেকে আলাদা একটা টান অনুভব করছে রাউশি। এইযে এখানে সবাই উপস্থিত শুধুমাত্র মেহরান নেই সেজন্য মনটাও কেমন খচখচ করছে।সদর দরজার দিকেই বার বার তাকাচ্ছে।মানুষটা কখন আসবে।রাউশি ঠিক করেছে মেহরানকে সে এখনও তার অনুভুতির বিষয়টা বুঝতে দেবে না কিছুদিন যাক তারপর।ভাবতেই ঠোঁটে একটা হাসি ফুটে ওঠে।রাউশিকে এভাবে হাসতে দেখে নাহিন জিজ্ঞাসা করে উঠলো,
“এই রাউশি কি হয়েছে তোর?হাসছিস কেন একা একা?”
নাহিন আর মাইশা আজকে এসেছে এ বাড়িতে।তারাও ভ্রমণে যেতে চায় সবার সাথে।নাহিনের এমন প্রশ্নে রাউশি হতকচিয়ে ওঠে।আর আশেপাশে সকলের দিকে একবার তাকালো।যে যার মতো কথা বলাবলিতে ব্যস্ত।নাহিনের মাথায় গাট্টা মেরে বলে,
“এমনিতেই।”
“এমনিতেই মানে?নিশ্চয় কিছু একটা হয়েছে।বল আমাদেরও বল আমরাও হাসি।”
নাহিনের জোরে কথা বলাতে এবার সবাই তার কথা শুনতে পেয়ে রাউশি আর নাহিনের দিকে তাকায়।সকলের দৃষ্টি এখন রাউশি আর নাহিনের দিকে।রাউশি ইতস্ততবোধ করলো।মাহমুদ খান মেয়েকে জিজ্ঞাসা করেন,
“কি হয়েছে মা?কি বিষয়ে কথা বলছিস তোরা?”
রাউশি নাহিনের দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকায় একবার তারপর তার বাবাকে নিচু স্বরে জবাবে বলল,
“কিছু না বাবা।আমরা তো এমনিতেই মজা করছিলাম।”
আবারও সবাই সবার মতো কথা বলা শুরু করলো।মাইশা রাউশির পাশে এসে বসে জিজ্ঞাসা করলো,
“এই রাউশিপু কাউকে কি পছন্দ হয়েছে নাকি গো তোমার?”
“এমন মনে হলো কেন?”
“না তোমাকে অন্য দিনের তুলনায় আজ বেশিই উজ্জ্বল আর খুশি লাগছে।হাসিটাও কেমন লাজুক মনে হলো।”
চোখ ছোট করে রাউশি বলল,
“এমন কিছুই না।”
“আচ্ছা এটা বলোতো তোমাদের ডিপার্টমেন্টের সেই নুজাইশ স্যার কেমন আছেন?উনাকে অনেকদিন ধরে দেখছি না আমি।”
রাউশি ভাবলো নুজাইশের বিষয়ে।ওই লোকটাকে রাউশির অদ্ভুত মনে হয়।অন্য টিচারদের তুলনায় উনি একটি বেশিই চঞ্চল মনে হয়।রাউশি গালে হাত দিয়ে বললো,
“এটাতো জানিনা দুদিন হলো ভার্সিটি যায় নি।”
“আচ্ছা।মেহরান ভাইয়ের বন্ধু লোকটা।”
রাউশি চমকে গেলো।চোখ বড় করে বললো,
“কীইই?”
“হ্যা তুমি জানো না?”
“না তো।”
“উনি নাকি মেহরান ভাইয়ের ছোটবেলার বন্ধু।আমিও এটা জেনেছি স্যারের বায়োডাটা চেইক করে।”
“ওহ।আমরা তো ছোট ছিলাম এত কিছু কি জানতাম নাকি?”
“হ্যা তাইতো।”
এরই মাঝে বাড়ির গিন্নিরা গরম গরম সিঙ্গারা,সমুচা আরও নানা রকমের খাবার নিয়ে আসে।রোকসানা বেগম খাবারগুলো রাখতেই উজান গরম গরম একটা মুখে পুরে নিতেই গরম পেয়ে চেঁচিয়ে ওঠে।মাহবুব খান ছেলের এহেন কান্ডে ধমকে বলেন,
“এত বড় ছেলে হয়েছো অথচ এমন বাচ্চামো করো কেন?”
উজান মাথা নিচু করে কুকুর যেমন জিহবা বের করে কেমন একটা করে উজানও ঠিক তেমনটাই করছে।তার পাশে বসা তানজিম তো মুখ চেপে হাসছে।বাকিরাও হাসলো। উজান মাহবুব খানকে বলল,
“লোভ সামলাতে পারিনি।খুব পছন্দ আমার।”
মাহবুব খান কিছু বললেন না।আবারও ব্যবসায়ের কথা বলা শুরু করলেন তিন ভাই।উর্মিলা বেগম রাউশির পাশে বসে রাউশির মাথায় হাত বুলিয়ে দেন।কপালে হাত রেখে দেখেন জ্বর আছে কিনা?রাউশি আদুরে বাচ্চার মতো বসে রইলো।মাহবুব খান স্ত্রীকে প্রশ্ন করলেন,
“মেহরান কোথায়?”
দরজার দিকে তাকিয়ে উত্তরে উর্মিলা বেগম বললেন,
“বিকেল তিনটের দিকে কাজ আছে বলে বের হলো।”
“এখনও ফেরেনি?সাড়ে ছয়টা তো বাজতে চললো।”
তখনই গাড়ির আওয়াজ শুনতে পাওয়া যায়।রাউশি উৎসুক হয়।চঞ্চল হয় দৃষ্টি।সবাই দরজার দিকেই তাকিয়ে আছে।গম্ভীর পায়ের ধাপ ফেলে ভেতরে প্রবেশ করে মেহরান।সোফায় সবাইকে নিজের দিকে তাকিয়ে বসে থাকতে দেখে ভ্রুকুটি করে নেয়।একে একে সবাই চোখ সড়ালেও রাউশি তাকিয়ে থাকে মেহরানের দিকে। মেহরানও রাউশির দিকে তাকাতেই চোখে চোখ পড়ে।রাউশি তৎক্ষনাৎ চোখ সড়িয়ে নেয়।ভদ্রমেয়ের মতো বসে থাকে।মাহবুব খান মেহরানকে বললেন,
“ফ্রেশ হয়ে এসো কথা আছে।”
মেহরানও কোনো কথা ব্যয় না করেই উপরে উঠে নিজের রুমে চলে যায়।বাকিরা আবারও নিজেদের মতো কথা বলতে থাকে।
রাউশির কয়েকঘণ্টার চোখের তৃষ্ণার সমাপ্ত হয়।বড় একটি শ্বাস ফেলে।মানুষটাকে আজকে অন্যদিনের তুলনায় একটু বেশিই সুদর্শন মনে হলো।উৎফুল্ল মেজাজে নাহিনের সাথে কথা বলা শুরু করে। তানজিম তাদের পাশে এসে বলে,
“এই রাউশি তোর জন্য আমার পক্ষ থেকে একটা সারপ্রাইজ আছে।”
রাউশি কপাল কুঁচকায়।তানজিম ভাই আবার এই অসময়ে তাকে কি সারপ্রাইজ দেবে?জিজ্ঞাসা করতেই তানজিম বলল,
“যেখানে ঘুরতে যাব সেখানে গিয়েই দেব।ওয়েট কর তুই।”
“ঠিক আছে।”
নাহিন বাচ্চাদের মতো করে বলে উঠলো,
“আমাদের জন্য সারপ্রাইজ নেই?”
তানিয়াও আবদারের সহিত তার ভাইকে বললো,
“হ্যা আমার জন্য নেই ভাইয়া?”
“আছে আছে সবার জন্য।চুপ থাক এখন তোরা।”
বাকিরা খুশি হয়ে যায়।উজান ফোনে মেসেজিং করছে কারও সাথে।আর ঠোঁট টিপে হাসছে।তানজিম উজানের পেছনে গিয়ে দেখছে আসলে কাহিনীটা কি? তখনই নজরে পড়ে উজান একটি মেয়ের সাথে চ্যাট করছে।মেয়েটি এইমাত্র একটা মেসেজ দিলো,
‘ I Love you Ujan.’
উজান হয়তো এই মেসেজটা পেয়ে ভীষণ খুশি হয়েছে।এদিকে তানজিমের খুব হাসি পেলো।উজান আর সে সমবয়সী।উজান এখন কি সেন্ড করে এটা দেখার অপেক্ষায় আছে তানজিম।তখনই দেখলো উজান একটা মেসেজ সেন্ড করেছে বাংলায় লেখা,
“নাটক কম করো পিও।”
এই মেসেজটা দেখে তানজিম এবার নিজের হাসি থামাতে পারলো না।খুব জোরে হেসে দিলো সবার সামনে।তানজিমের এমন পাগলের মতো হাসি দেখে সবাই চমকিত হয়।সিড়ি বেড়ে নামতে থাকা মেহরানও বুঝতে পারলো না এই ছেলের এমন পাগলের মতো হাসি।উজান ঠিকই বুঝতে পারলো কেননা তানজিম তার পেছনেই দাঁড়িয়ে ছিলো।হয়তো মেসেজটা দেখতে পেয়েছে।মাহতাব ছেলেকে ধমকে ওঠেন,
“কি হয়েছে তোমার?এভাবে একা একা পাগলের মতো হাসছো কেন?মানসিক রোগে আক্রান্ত হলে নাকি?”
স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে পুনরায় বললেন,
“ছেলের পাবনা যাওয়ার ব্যবস্থা করো।”
রোকসানা বেগম ছেলের বিপক্ষে এমন কথা সহ্য করতে পারলেন না।তেঁতে উঠলেন,
“ছেলেকে এমন কথা বলতে খারাপ লাগছে না তোমার?”
“তোমার ছেলে যে দিন দিন পাগল হয়ে যাচ্ছে সেই ব্যাপারে নিশ্চুপ কেন তুমি?এভাবে একা একা পাগলের মতো হাসছে।”
“তাই বলে কি তুমি এমন কথা বলবে।”
“তো কি ব_”
বাকিটুকু বলতে পারলেন না মাহবুব খানের কড়া চাহনীতে।মাহবুব খান তানজিমকে জিজ্ঞাসা করলেন,
“কি হয়েছে তানজিম?আজ তোমরা এতো কি নিয়ে হাসাহাসি করছো বলোতো?কোনো গন্ডগোল করেছো নাকি?”
তানজিম মাথা দুদিকে নাড়িয়ে বললো,
“না বড় বাবা এমন কিছুই না।”
মেহরান সেখানে এসে রাউশি বরাবর বসে পড়ে।রাউশির দিকে একবার তাকায়।মেয়েটা জড়োসড়ো হয়ে বসে আছে এখন। তবে অন্যদিক মুখ ঘুরিয়ে ভাবটা এমন মেহরানকে সে দেখতে পায় নি।মেহরানকে কাছে মেয়ে মাহবুব খান এবার বলা শুরু করলেন,
“শোনো মেহরান, তুমি যে সিদ্ধান্ত নিলে আজকে ঘুরতে যাওয়ার সেটা ক্যান্সেল করেছি তা তো জানোই।গেলে সবাই একসাথেই যাবো।তবে কোথায় যাবো তারই বিষয়ে এখন আলোচনা করবো।”
আগামীকাল নুজাইশের বোন নুসফারের বিয়ে।নুজাইশ খুব করে যেতে বললো না গেলে খারাপ দেখাবে।আবার রাউশিকেও যেতে বলেছে নুজাইশ।মেহরান রাজি হয়েছে।রাউশিকে নিয়েই যাবে আগামীকাল নুজাইশের বোনের বিয়েবাড়িতে।মেহরান গলা উঁচিয়ে গম্ভীরভাবেই জবাবে বলল,
“দর্শনীয় স্থানে না গিয়ে আমরা বরঞ্চ আমাদের গ্রামে ঘুরে আসি।”
মাহবুব খান ভ্রু কুচকে বলেন,
“আমাদের গ্রাম মানে?”
“সিলেটের কথা বলছি।”
সিলেট উর্মিলা বেগমের বাপের বাড়ি।উর্মিলা বেগম ছেলের কথায় ভীষণ সন্তুষ্ট হন। মেহরান আবারও বলে,
“গ্রাম্য পরিবেশে গেলে সতেজ প্রকৃতিতে কিছুদিন থাকলে মনও সতেজ হয়ে উঠবে। তাছাড়া নানাজান মারা যাওয়ার পর নানীজান একাই আছেন সেখানে।দেখাশোনার মতো শুধু মামা আছে।একবার গিয়ে ঘুরে আসা উচিত।”
মাহবুব খান কিছুক্ষণ ভেবে-চিন্তে নিজেও সহমত প্রকাশ করেন।বাকিরাও খুশি হয়। রাউশি ভাবনার মত্ত হয় সিলেটে কখনো যাওয়া হয় নি এবারই প্রথম।সিলেটে অনেক সুন্দর জায়গা আছে।ঘোরা যাবে ভেবে নিজেও খুশি হয়ে মেহরানকে বারবার ধন্যবাদও বলে।তবে তাদের মাঝে উজান যেনো একটু বেশিই খুশি হয়।সে তো কয়েক মাস আগেই নানাবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলো।সেখানে নিজের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস ঠিক করেছে উজান।ভাবতেই আনমনেই হাসি ফুটে ওঠে ঠোঁটে।সবাই এই বিষয়ে বলাবলি করছিলো মাহবুব খান মেহরানকে জিজ্ঞাসা করে উঠলো,
“এখন এটা বলো কোথায় গিয়েছিলে তুমি?”
মেহরান জবাব দেওয়ার আগে উজান মুখ ফুটে বলে ফেলে,
“মিস. আরিয়ার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলো।”
সবাই চোখ বড় বড় করে তাকায় মেহরানের দিকে।মাহবুব খান প্রশ্নাত্মক দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন মেহরানের দিকে।রাউশির মন কেমন করে উঠলো যেন।আরিয়া? এই মেয়েটার সাথে মেহরানের কি সম্পর্ক? সেদিনই তো সব শেষ হয়ে গিয়েছিলো। তাহলে আজ কেন আবারও আরিয়ার সাথে দেখা করতে গেলো মেহরান।নিমিষেই রাউশির মুখ কালো হয়ে যায়।মেহরান খেয়াল করে বিষয়টা।মনে মনে আচ্ছামতো গালি দেয় উজানকে।উজান মুখে হাত দিয়ে বসে আছে।রাউশির দিকে সেও একবার তাকিয়ে দেখলো।বুঝতে পারলো বিষয়টা। অতি উত্তেজনায় যে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারলো এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।রাউশি হঠাৎ উঠে চলে গেলো নিজের রুমে।রাউশির পুরো বিষয়টা জানতে ইচ্ছে করলো না শুধু এটা ভেবে খারাপ লাগলো মেহরান আবারও কেন ওই মেয়েটার সাথে দেখা করতে গেল? রাউশির হিংসাও কম হচ্ছে না।আরিয়াই নিশ্চয় ডেকেছে? এই মেয়েটাকে রাউশি নিজেই একটা উচিত শিক্ষা দেবে ভেবে নেয়।
মেহরান রাউশির যাওয়া দেখে।উজানের দিকে একবার তাকাতেই ছেলেটার আত্মা কেঁপে ওঠে।রাতে খাওয়া দাওয়ার সময় রাউশিকে দেখা গেলো না।মেহরান বিষয়টা খেয়াল করতেই তানিয়াকে পাঠায় রাউশিকে ডাকার জন্য।মেহরান ভেবেছিলো রাউশি আসবে না তবে তানিয়ার পিছু পিছুই মেয়েটা এসে পড়লো।মাহবুব খান ইদানীং একটা বিষয় লক্ষ্য করছেন মেহরানের ওপর।ছেলেটা রাউশির বিষয়ে খুবই পজেসিভ। মূল ঘটনাটা উনি অনেক আগেই বুঝতে পেরেছেন।ছেলের আরিয়াকে না করে দেওয়ার সময় কিছুটা আঁচ করতে পেরেছিলেন।মাহবুব খান বিষয়টাই নিজেও খুশিই হন। উনার এ বিষয় দ্বিমত নেই।রাউশিকে উনারও পছন্দ। মেয়েটাকে নিজের ছেলের সাথে বিয়ে দেওয়ার মতো একটা পবিত্র বন্ধনের কথা অনেক আগেই পরিকল্পনা করে রেখেছিলেন।তবে পরিস্থিত এমন হলো যে ঘটনা পুরো উলটো হয়ে গিয়েছিলো।তবে সেই সুবর্ণ সুযোগ যদি এবার ফিরে আসে তবে খারাপ হবে না।ঘরের মেয়ে ঘরেই থাকবে।
রাউশি আসতেই তানিয়া যেই চেয়ারের বসা ছিলো সেই চেয়ারে বসতে নিতেই তানিয়াই বসে পড়ে।এখন চেয়ার মাত্র একটাই খালি মেহরানের পাশের চেয়ার। রাউশি না চাইতেও সেখানেই বসে পড়ে।রাউশি বসতেই মেহরান রাউশির পাতে বিরিয়ানি তুলে দেয়।বাকিরা এই বিষয় খেয়াল না করলেও মাহবুব খান,উজান,তানজিম ঠিকই লক্ষ্য করলো।মাহবুব খান মনে প্রাণে খুবই তৃপ্ত হন। সন্তুষ্টি চিত্তে খেতে শুরু করেন।উজান আর তানজিম দুজনে দুজনের দিকে তাকিয়ে হাসা শুরু করে। রাউশি মেহরানের দিকে আড়চোখে তাকায়।মেহরান খাচ্ছে। আজ কাচ্চি বিরিয়ানি রান্না হয়েছে।রাউশির খুবই প্রিয়। মেহরান নিজের পাতের গোস্তটাও রাউশির প্লেটে দিয়ে দেয়।মেহরান জানে রাউশি মাংস পছন্দ করে।মেহরানের এমন যত্নশীল রূপ দেখলে রাউশি সত্যিই অভিভূত হয়ে যায়।না চাইতেও মেহরান রাউশির মনে খুব সন্তপর্ণে ধীরেসুস্থে জায়গা করে নিচ্ছে।
এদিকে তানজিম আর উজান মিটিমিটি হাসছে। উজান আফসোসের সুরে খাওয়ার সময়ই গান গেয়ে উঠলো,
“ভালোবাসা বুঝি এমনই হয়? এমনই হয়?”
উজান ভুলে গিয়েছিলো এখানে বাড়ির বড়রাও আছে। মুখে কুলুপ এঁটে খাওয়া শুরু করে আবারও।তার এই গানের মানে বাকিরা বুঝতে না পারলেও তানজিম মেহরান বুঝতে পারলো।মেহরান নিশ্চুপ খেয়ে যাচ্ছে তানজিম খেতে খেতেই হাসছে।তানজিম বলে উঠলো,
“কবে যে আমাদেরও হবে।”
মাহতাব খান ছেলেকে আবারও ধমকে উঠলেন,
“কি হওয়ার কথা বলছো এই খাওয়া সময়ে?”
“কিছু না বাবা।তুমি এসব বুঝবে না।”
“তা আর বুঝবো কিভাবে?পাগলের প্রলাপ কি কেউ বোঝে নাকি?”
চলবে……
গল্পটি সম্পর্কে রিভিউ, আলোচনা, সমালোচনা করুন আমাদের গ্রুপে। গ্রুপ লিংক নিচে দেওয়া হলোঃ
https://facebook.com/groups/holde.khamer.valobasa/