#মেহেরজান
লেখনীতে- #সোহামণি
বোনাস পার্ট
বাড়ির সবাই রেডি হতে ব্যস্ত।শাহ পরিবারের সাথে খান পরিবারের সম্পর্ক বহুদিনের।নওয়াজ শাহ আর মাহবুব খানের বন্ধুত্ব অনেকদিনের।তাইতো নওয়াজ শাহ মেয়ের বিয়েতে খান পরিবারকেই আগে ইনভাইট করেছে।এটা শুধু বড়রাই জানতো ছোটোরা জেনেছে আজ।রাউশি আজ সারাদিন ঘুমিয়েই কাটিয়েছে।এতকিছু জানা নেই তার।অবশ্য তার মা অনেকবার ডেকে গিয়েছেন রাউশিকে, রাউশি ততটা গুরুত্ব দেয় নি।রেডি হতে বললে মানা করে দিয়েছে।বারান্দায় দাঁড়িয়ে বন্ধুদের সাথে ফোনালাপ করছে রাউশি।রুনা ফোন দিয়েছে।ভার্সিটি যাচ্ছে না কেন এই বিষয়ে নানারকম প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করছে।রাউশি সেসবই বলছে রুনাকে।সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে।পক্ষীগুলোও নিজ নিজ নীড়ে ফিরে যাচ্ছে।লাল আভায় আকাশটা কেমন আকর্ষণীয় দেখাচ্ছে। রাউশির রুমের বারান্দাটা বিশাল।বিশাল বারান্দার কার্ণিশে গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে ছিলো এমন সময় পেছনে কারও উপস্থিতি টের পায়।সাথে টের পেলো মানুষটা তার খুব নিকটেই দাঁড়িয়ে।কড়া ফারফিউমের ঘ্রাণ নাকে আসতেই বুঝতে পারলো মেহরান দাঁড়িয়ে।তাৎক্ষণিক পেছনে ফিরে তাকাতেই মেহরানের থুতনির সাথে রাউশির মাথা বারি খায়।মেহরান কপাল কুঁচকায়।রাউশি মাথায় যে স্থানে ব্যাথাটা লেগেছে সেই স্থানে হাত দিয়ে ঢলতে থাকে।মেহরান পর্যবেক্ষণ করে সামনে দাঁড়ানো কাঙ্ক্ষিত সেই নারীকে।চোখ দুটো ফুলোফুলো লাগছে আজ।বেশি ঘুমানোর ফলে।মেয়েটা এতো ঘুমায় কিভাবে?যেখানে বাড়ির সবাই এখন রেডি হতে ব্যস্ত সেখানে রাউশি বারান্দায় দাঁড়িয়ে কথা বলায় ব্যস্ত।এটা কেমন লাগলো মেহরানের।তবে ফোনে এতো কার সাথে কথা বলছে এটা নিয়ে কিছুটা ভাবুক হলো।মুখটা গম্ভীর করে বলল,
“ফোনে এতো কার সাথে কথা বলিস?”
রাউশি চোখ তুলে মেহরানের দিকে একবার তাকায়।মেহরান দূর আকাশপানে তাকিয়ে আছে।রাউশি স্বাভাবিক স্বরে জবাব দেয়,
“বন্ধুর সাথে কথা বলছিলাম।”
“ছেলে না মেয়ে?”
কেমন যেন ধমকের মতোই শোনালো মেহরানের কণ্ঠ।রাউশি নিজেও কপাল কুঁচকে জবাবে বলল,
“মেয়ে ছেলে দুইটাই।”
মেহরানের মুখায়ব এবার কিছুটা পরিবর্তন হলো।নিজের দুই হাত রাউশির দুপাশে গ্রিলের ওপর রাখলো।রাউশি ঈষৎ পিছু হটলো সাথে মেহরানও রাউশির দিকে কিছুটা ঝুকে গেলো।মেহরান শান্ত একদম স্থির দৃষ্টিতে রাউশির চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।রাউশি কি ভয় পায় নাকি মেহরানকে?সেও একইভাবেই তাকিয়ে। মেহরান বলল,
“বারণ করেছিলাম, মনে আছে?নাকি ভুলে গেছিস?ভুলে গেলেও সমস্যা নেই, মনে করিয়ে দেওয়ার মতো ট্রিকস আছে আমার।”
রাউশির বুক কেঁপে উঠলো।তার মনে হয় মেহরান আজকাল একটু বেশিই অনুভুতি মিশিয়ে কথা বলে তার সাথে।চোখ নামিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে বললো,
“যা ভাবছেন এমন কিছুই না।”
“কি ভাবছি?”
“জানি না।”
“কি জানিস না?”
“কিছুই জানি না।”
মেহরান আরেকটু ঝুকে রাউশির কাছে।রাউশি হতচকিত হয়ে চোখ বড় বড় করে।নিজেও সড়ে যায় কিছুটা।বুকের ভেতর ঢোল বেজে চলেছে একাকার।ধুকপুকানির কথা নাহয় অজানাই থাকুক।মেহরান রাউশির কানের কাছে মুখ নিয়ে আসে।ফিসফিস করে বলল,
“জানতে হবে।সবকিছুই জানতে হবে। জানতে বাধ্য তুই।”
রাউশি চোখ বন্ধ করে শুধু শুনলো কথাগুলো।ঠান্ডা হাওয়া এসে গা ছুয়ে দিলো দুজনের।মেহরান সড়ে আসে।রাউশির মাথায় একটা টোকা মেরে বলল,
“রেডি হয়ে নে।সবাই রেডি হচ্ছে।”
রাউশি চোখ খুলে দেখে মেহরান চলে যাচ্ছে।মাথায় হাত দিয়ে বলে,
“আমি যাব না মেহরান ভাই।”
মেহরানের চলন থামে উল্টো আরও কড়া সড়ে বলে যায়,
“যা বলেছি তাই কর।”
মেহরান চলে যেতেই রাউশিও মুখ বেঁকিয়ে একই কথা পুনরায় বলে।রুমে আসতেই বিছানায় খপ করে বসে পড়ে।এই অসময়ে কার বিয়ে হচ্ছে?যে বাড়ির সবাই ড্যাংড্যাং করে সেখানে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে।এরই মাঝে রাউশির গতকালকে উজান ভাইয়ের বলা কথা মনে পড়ে।মেহরান গতকাল আরিয়ার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলো।কিন্তু কেন এটা জানে না।রাউশির কেন যেন মেহরানকে অবিশ্বাস করতে মন চায় না।নিশ্চয় কোনো কারণ আছে?তবে আবার কৌতুহলও হয় জানার, কি সেই কারণ?রাউশি ভাবতে থাকে কি পড়ে যাবে?তার সাজগোজ তেমন ভালো লাগে না।শাড়ি পড়তেও মন চায় না তার।তাই মনমতো একটি জামা নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ে।বের হতেই বিছানায় তানিয়াকে রেডি হয়ে বসে থাকতে দেখে রাউশি বলল,
“তুই এখানে?”
তানিয়া তাকালো রাউশির দিকে।রাউশি সবুজ রঙা একটি থ্রিপিস পড়েছে।সাধারণের মাঝেই অসাধারণ লাগলো তানিয়ার।মেহরান তানিয়াকে পাঠিয়েছে রাউশিকে ডাকার জন্য।রাউশি ড্রেসিং আয়নায় সামনে গিয়ে নিজের চুল আচড়াতে থাকে।চুলগুলো লম্বা নয় রাউশির ঘাড় সমান হতে একটু লম্বা।প্রসাধনীহীন মুখে শুধু গোলাপী রঙের লিপস্টিক লাগায়।এতেও বোঝা গেলো না লিপস্টিক লাগিয়েছে কিনা?তবে দেখতে সুন্দর লাগছে।তানিয়া শাড়ি পড়েছে।তাকে সুন্দর লাগছে।রাউশি জিজ্ঞাসা করলো,
“আচ্ছা আমরা কার বিয়েতে যাচ্ছি?”
“নওয়াজ আঙ্কেলের মেয়ের বিয়েতে।”
‘নওয়াজ’ নামটা একবার আওড়ালো।চেনে না রাউশি।তানিয়ার সাথেই নিচে নেমে গেলো।দুজনে নিচে নামতেই সোফায় মেহরান সহ বাড়ির কর্তারা বসে আছে। রাউশিকে দেখে মেহরান কপাল কুঁচকায়। নুজাইশের বিয়ে বাড়িতে যাচ্ছে সাজগোজ না করাটাই সবচেয়ে ভালো মনে হলো মেহরানের কাছে।বহুল মানুষের আনাগোনা হবে।মেহরান অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু চায় না। বাড়ির কর্তীরাও এলো নিচে।রাউশিকে দেখে রোকসানা বেগম বললেন,
“একি মা তুই এই জামা পড়ে যাবি?”
রাউশিও সহজ সরল উত্তর দিলো,
“হ্যা।”
“কিন্তু_”
আর বলতে পারলো না মেহরান বলে উঠলো,
“থাক ছোট মা।যেভাবে ইচ্ছে সেভাবেই যাক ও।”
মাইশা এসে রাউশিকে জড়িয়ে ধরলো।বলল,
“খুব সুন্দর লাগছে তোমাকে আপু।”
তাজবিরও কাছে এসে তাল মেলালো,
“হ্যা রাউশিপু তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে।”
তাজবির ও রাউশির কাছে এসে বললো,
“হ্যা রাউশিপু খুব সুন্দর লাগছে তোমায়।”
তাজবির কয়েকদিনের জন্য নানুবাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলো আজই সকালে এলো।রাউশি তাজবিরের গাল টেনে দেয়।সবাই বেড়িয়ে পড়লো।তানজিম ওপর থেকে এসে মাইশাকে ধাক্কা দিয়ে উজানের কাছে চলে গেলো।মাইশা মুখ ভ্যাংচালো।বাড়ির কর্তারা একটি গাড়িতে উঠলো আর ড্রাইভ করার জন্য ড্রাইভার আছে।উর্মিলা বেগমরা অন্য একটি গাড়িতে উঠলো।রাউশি গিয়ে সেই গাড়িতে ওঠার আগেই তানজিম জোর করে তানিয়াকে সেই গাড়িতে পাঠিয়ে দিলো।রাউশি মুখ বেজার করে তাকালো তানজিমের দিকে।তানজিম দাত কেলিয়ে হাসলো।পরের গাড়িতেও নাহিন,মাইশা, তানজিম,তাজবির,উজান বসে পড়লো।রাউশির জন্য বিন্দুমাত্র জায়গা নেই।রাউশি চোখ ছোট ছোট করে পেছনের গাড়ির দিকে তাকালো মেহরান বসে আছে ড্রাউভিং সিটে। চোখ বন্ধ অবস্থায়।রাউশি হাত ঝাড়া মেরে মেহরানের গাড়ির দরজা খুলে বসে পড়ে মেহরানের পাশে।রাউশি বসতেই মেহরান গাড়ি স্টার্ট দেয়।রাউশি মনে মনে বেজায় খুশি তবে ভাবটা এমন রেখেছে যেন সে খুশি নয়।মেহরান নিজমনে গাড়ি চালাচ্ছে খুবই ধীরে।যেন গাড়ি চলছেই না।রাউশি বলে উঠলো,
“একটু জোরে চালান না মেহরান ভাই।”
“কেন?এত তাড়া কিসের তোর?”
রাউশি চাপা ক্ষোভে আওড়ালো,
“এমন কিছুই না।”
আবারও নিরবতায় ছেয়ে গেলো পরিবেশ।কিছুক্ষণ পর মেহরানই বলল,
“ওখানে গিয়ে তুই আমার চোখের সামনেই থাকবি সবসময়।”
“কেন?”
মেহরান চোয়াল শক্ত করলো।অসন্তোষে জবাব দিলো,
“আমি বলেছি তাই।”
রাউশি চুপ করে গেলো।মেহরান আড়চোখে একবার তাকালো রাউশিকে।মেয়েটাকে আজ একটু বেশিই সুন্দর লাগছে মনে হলো।ঠোঁটের দিকে চোখ যেতেই ভ্রু কুঁচকালো।গাড়ি সাইডে দাড় করাতে রাউশি পাশে মেহরানের দিকে তাকালো।তখনই মেহরান রাউশির ঠোঁটে বুড়ো আঙুল ছুয়ে দিলো।আচমকা মেহরানের এহেন কাজে আর আকস্মাৎ স্পর্শে হতচকিয়ে গেলো সাথে কেপে উঠলো দেহ।মেহরান বুড়ো আঙুল দিয়ে রাউশির ঠোঁটজোড়ায় লাগানো সেই গোলাপী লিপস্টিক মুছে দিলো। এবার ঠোঁটজোড়া আরও সুন্দর লাগছে মনে হলো মেহরানের।খুব করে একটা চুমু খেতে মন চাইলো।তবে নিজেকে সংযত রাখলো।সড়ে এলো কাছ থেকে।এদিকে রাউশি যেন প্রাণে বাঁচলো।এই লোকের আশেপাশে থাকা মানেই ভয়ানক কিছু।বারকয়েক ঘন করে শ্বাস নিলো।চোখ বুজে সিটে হেলান দিতেই মেহরানের শীতল অনুভুতিতে টালমাটাক করা গকার আওয়াজ শুনতে পেলো,
“চুম্বক নাকি তুই?এত কাছে টানিস কেন?অতিদ্রুত চুমু খাওয়ার জন্য ব্যবস্থা করবো।”
.
দেখতে দেখতে পৌঁছে গেলো জাকজমকপূর্ণ বিয়েবাড়ি অনুষ্ঠানে।কোলাহলের মাঝে কথা শুনতে পাওয়াটা দুষ্কর হয়ে যাবে। রাউশি এখনও জানে না বিয়েটা হচ্ছে কার? আর মেহরানের কোন বন্ধুর বোনেরই বা বিয়ে হচ্ছে?রাউশি গাড়ি থেকে নেমে যায়।বাকিদের খুজতে থাকে তবে পায় না।ভ্রু কুঁচকে মেহরানের দিকে তাকায়,মেহরানও ততক্ষণে নেমেছে।কোথা থেকে যেন তিনজন ছেলে এসে দাঁড়ায় তাদের সামনে।এদের মধ্যে একজনকে চেনা চেনা লাগলো রাউশির।ভার্সিটিতে দেখেছে।ছেলেগুলো আসতেই মেহরানের সাথে হ্যান্ডশেক করে।একটি ছেলে মেহরানকে রসিকতা করে বলল,
“কি মামা তোমার অবস্থা তো দেখছি খুবই ভালো।”
সাঈদ রাউশির সামনে এসে বলে,
“কেমন আছো রাউশি?”
রাউশি চমকায় তবে মুখে তা না ফুটিয়ে হাসিমুখে জবাব দেয়,
“ভালো আছি।আপনি কেমন আছেন?”
সাঈদও হাসিমুখেই জবাব দিলো।রাউশি চিনলো না মানুষটাকে।এদিকে এহসান আবারও রসিকতা করে বলল,
“মামা তুমি আমাদের থেকে বেশিই ফার্স্ট।”
মেহরান এবার গম্ভীর মুখে জবাব দিলো,
“চুপ থাকাটা শ্রেয় মনে কর।ভেতরে চল।”
রাউশি শুনলো।বুঝতে পারলো মেহরানের এই বন্ধুগুলো একেকটা ভয়ানক দুষ্টু হবে।মেহরান রাউশির দিকে তাকালো চোখ দিয়ে বোঝালো ‘আয়’।রাউশিও মেহরানের পেছনে যায়।বাকিরা রাউশিকে দেখে আর মিটিমিটি হাসে।এহসান মেহরানকে বলে,
“আপনার হুকুম শিরধার্য মি. মেহরান।”
হাসলো সবাই। রাউশিও হাসলো।মেহরান হাটা শুরু করে। রাউশিও পেছন পেছন যাচ্ছে।বাকিরাও গেলো পিছু পিছু।
নুজাইশ খুবই ব্যস্ত আজ।একমাত্র বোনের বিয়ে।আর একটুপর তাদের ছেড়ে চলে যাবে।হ্যা হয়তোবা আসবে মাঝেমধ্যে তবে আগের মতো খুনসুটি আর হবে না ভাইবোনের মাঝে।রান্নার তদারকি করছিলো সে ফোনে কল আসায় একটু সাইডে যায়। সেখান থেকে বাড়ির ভেতরে প্রবেশের রাস্তাটা স্পষ্ট দেখা যায়।ফোনে কথা বলার মাঝে নজরে পড়লো চিরচেনা অনাকাঙ্ক্ষিত পছন্দের সেই নারীকে।খুবই সাধারণ তার সাজ।অথচ আশেপাশের নারীদের দেহ জৌলুশপূর্ণ আস্তরণে আবদ্ধ। নুজাইশ চোখ নামায়।পাশে এসে দাঁড়ায় আলভি,
“এখানে দাঁড়িয়ে আছিস যে?আঙ্কেল তোকে ডাকছে।”
নুজাইশের হুশ ফিরে।না চাইতেও কেমন রাগ লাগছে হুট করে।চাপা ক্ষোভে আওড়ালো,
“ডাকুক।”
সামনে হাটা ধরলো।উদ্দেশ্য মেহরান আর মৌরিন।পেছন পেছন আলভিও এলো। মেহরানের পেছনে তুষার,সাঈদ,এহিসানও এলো।নুজাইশ মেহরানের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।রাউশি পরিবারের লোকজনদের খুজছিলো।কিন্তু ওপাশে থাকা কিছু মেয়েদের দেখে যারা কয়েকটা ছেলের সাথে গায়ে পড়ে কথা বলছে, মেহরানের হাটা থেমে যাওয়ায় সেও হাটা থামিয়ে সামনে তাকাতেই নুজাইশকে দেখে।এবার একটু অবাক হয়।এই ব্যাটা আবার এখানে কি করছে?আবার নুজাইশের বোনেরই বিয়ে নয়তো?নুজাইশ রাউশির দিকে একবার তাকিয়ে মেহরানের সাথে কোলাকুলি করে আর বলে,
“ভেবেছিলাম সবাই আসলেও তুই আসবি না।”
“এসে পড়লাম।”
তুষার চোখ ছোট ছোট করে নুজাইশ, মেহরান আর রাউশিকে দেখে চলেছে বার বার।রাউশি শিক্ষক হিসেবে সৌজন্যমূলক সালাম দিয়ে জিজ্ঞাসা করলো,
“কেমন আছেন স্যার?”
বিয়েবাড়িতে এসে স্যার ডাকছে?এটাতে নুজাইশ অসন্তোষ হলো তবে প্রকাশ করলো না।হেসেই জবাব দিলো,
“ভালো না থাকলেও থাকার প্রচেষ্টায়।তোমার ব্যাপারে বলো মৌরিন?”
রাউশির মনে হলো নুজাইশ আগের তুলনায় কিছুটা গম্ভীর হয়েছে।আর উত্তরটাও কেমন যেন?সেও সুন্দর করে জবাব দিলো।এহসান এই রাস্তার মাঝেই বন্ধুদের নিয়ে মজা করে বলে উঠলো,
“এত রমণীর ভিড়ে তুষার জান তোমার একটা পছন্দ করা উচিত।চিরজীবন তো আর এভাবে কুমার হয়ে থাকতে পারবে না। মেহরানকে দেখো,”
একটু আস্তে করেই বললো,”প্রেয়সীকে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।”
এহসানের কথায় খুব মজা পেলো বাকিরা। রাউশি তাদের পাশেই ছিলো। তারা হয়তো ভুলে গেছে তাদের সাথে রাউশিও আছে। মেহরান কথাটা শুনলো কপাল কুঁচকে গম্ভীর মুখে শুধু দাড়িয়েই আছে।ফোনে কাউকে কল করলো।তখনই তানজিম আসলো সেখানে।মেহরানের বন্ধুদের সাথে কুশল বিনিময় করে রাউশিকে নিয়ে চলে গেলো।তুষার মজা করে বলে,
“আহা এতো কেয়ারিং।”
সাঈদ বললো,
“খুবই শখের কিনা।”
মেহরান তাদের কথার মাঝে বলল,
“শুধুই শখের না অনেক ধৈর্যেরও।”
চলবে…..
গল্পটি সম্পর্কে রিভিউ, আলোচনা, সমালোচনা করুন আমাদের গ্রুপে। গ্রুপ লিংক নিচে দেওয়া হলোঃ
https://facebook.com/groups/holde.khamer.valobasa/