মেইড_ফর_ইচ_আদার🌻 #কাজিন_রিলেটেড #পর্বঃ১০ #অনামিকা_রহমান (লিখনিতে

0
60

#মেইড_ফর_ইচ_আদার🌻
#কাজিন_রিলেটেড
#পর্বঃ১০
#অনামিকা_রহমান (লিখনিতে)

পরীক্ষা শেষ হতে না হতেই ৩য় বর্ষের ছোয়া লেগেছে তৃনার। দেখে নেত্রীর থেকে কম মনে হয় না। সবার অগোচরে নেতৃত্ব দিয়ে কাজ করে যায়। আজ মিটিং এ যোগ দিয়েছে তৃনা।
আজকের মিটিং এর মধ্যমনি হয়ে আলোচনা করছে। তৃনার এই মতামতের ভিত্তিতে কাজ সহজ হয়ে গেলো, জুনিয়র হলেও কূটনৈতিক বুদ্ধিতে পারদর্শী মেয়েটা। এর জন্য সবাই তার মতামতকে গ্রাহ্য করে।

মিটিং শেষে ইমতিয়াজের কাছে তৃনা গিয়ে দাঁড়ায়।হাসি হাসি অবয়বে তৃনা বলে, ইমতিয়াজ ভাই বিয়ের দাওয়াত রয়েছে, বরিশালে যাচ্ছি। এক সপ্তাহ পর ফিরবো। দ্বায়িত্ব গুলো সবাইকে বুঝিয়ে দিয়েন।

ইমতিয়াজ পালটা উত্তর দেয়। বিয়ের দাওয়াত তো অনেক খেলে, নিজে কবে বিয়ে করবে শুনি। তুমি না জানালেও টুকিটাকি অনেক কিছুই বুঝতে পারি। তা করে কি দুলাভাই।
তৃনা হাসে,জবাব দেয়। এইতো কিছুদিন হলো ভাব হয়েছে,পদার্থ বিজ্ঞানী। আমার কাজিন হয়। আল্লাহ যদি চায় খুব শীগ্রই দাওয়াত পাবেন ইমতিয়াজ ভাই ।

তৃনা বিদায় নেয়। বাড়ি ফিরে তার বিজ্ঞানী মশাই কে কল করে। ওপাশ থেকে জবাব আছে আহমেদ ভিলায় আবির কিছুক্ষনের মধ্যে চলে আসবে। রাতটা কাটাবে আজ তৃনাদের বাসায়। সকাল সকাল বরিশালের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে যাবে সবাই মিলে।

____

রেডিও কলোনির রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে আবিরের প্রাইভেট কার। তুলি, তৃনা, আবির অপেক্ষা করছে আন্নি আর সানির আসার জন্য। রেডিও কলোনির গলি থেকে সানি আসছে। তৃনা সানির দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো, গজাল কোথাকার। মেয়ে মানুষের মত এত টাইম নেস কেন,মাঝে মাঝে আমার অবাক লাগে তুই আসলেই ছেলে না মেয়ে। এতো ডিলা হলে চলে সানি। সানি হতাশ চোখে চাইলো তৃনার পানে। তুলির সামনে এমন অপদস্ত না করলেও পারতো তাকে। শত হলেও সে তৃনার বন্ধু। সানির এমন চেহারা দেখে তুলি মুচকি হেসে উঠল। ব্যাংক কলোনি থেকে আন্নি রিকশায় উঠে নামলো রেডিও কলোনি। এবার ডেইরি ফার্ম গেইট থেকে মেহের আর সেহতাজকে উঠিয়ে গাড়ি চলতে লাগলো আপন গতিতে।

_______

যাত্রাপথ অতিবাহিত হচ্ছে ৪ঘন্টা যাবত।এখনও গন্তব্যে পৌছাতে লাগবে ১থেকে দেড় ঘন্টা। বরিশালের নথুল্লাবাত এসে হাজির তাদের গাড়ি। সানি আড়মোড়া হয়ে আবিরকে জানান দিলো,ভাই গাড়িটা একটু থামাবেন। পায়ে জিম ধরে গেলো।
আবির গাড়ি রাস্তার এক পাশে দাড়া করালো। বের হলো আবির আর সানি। পাশের শপ থেকে কিছু খাবার আর পানি কিনে আবার ঢুকলো। সবাইকে খাবার বিনিময় করে আবার চলতে শুরু করলো গাড়ি। ঝালকাঠির গাবখান পেরিয়ে গাড়ি এসে পৌছলো রাজাপুর। মেডিকেল মোড়ের রাস্তা ধরে গাড়ি গিয়ে থামল বাইপাসের সেই ডুপ্লেক্স বাড়িটার সামনে।

সকলে গাড়ি থেকে নামলো। সদর দরজায় দাঁড়িয়ে আছে মেহেরের বাবা। বাবাকে দেখা মাত্রই মেহের ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরে তার বাবাকে। মেহেরের বাবা আদুরে সুরে বলে ওঠে, তাহলে সাংগ-পাংগ নিয়ে হাজির হতে পারলেন। মেহের তৃপ্তির হাসি টানে ঠোঁটে। বাবার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় সবাইকে।কুশল বিনিময়ের পর প্রবেশ করে গৃহে সবাই।

মেহেরের কক্ষে অবস্থান করছে, সেহতাজ,আন্নি,তুলিও তৃনা।
মেহেরের বাবা আবির আর সানিকে গেস্ট রুমে দেখিয়ে দিয়েছে।
বিয়ের অনুষ্ঠান ৩দিন পর থেকেই শুরু হবে। কিন্তু তার আভা এখনই ছড়িয়ে পড়ছে।

একমাত্র মেয়ের বিয়ে বলে কথা কোনো ত্রুটি রাখবেন না মেহেরের বাবা।

ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে বিকাল নাগাত ঘুরতে বের হওয়ার প্লান হলো সকলের। উদ্দেশ্য বাদুরতলার বিশখালী নদীর পাড় ভ্রমন ও লঞ্চ ঘাট ঘোরা।

বিকেল ৪ টা নাগাত বের হলো সকলে। একটা অটো রিকশাকে ভাড়া করলো মেহের। সরু চিকন রাস্তাটা দিয়ে রিকশা চলছে ট্রেনের বগির মতো, একটার পিছু আরেকটা। ৩০ মিনিট বাদেই গিয়ে পৌছলো কাক্ষিত জায়গায়।
অসম্ভব সুন্দর সেই জায়গা। লঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার কারনে ওত লোকের সমাগম নেই। নীলচে আকাশের আভা ছড়িয়ে পড়ছে নদীতে। আকাশের প্রতিচ্ছবি নদীর জলে দেখা যাচ্ছে। বিশখালীর উজানে পাড় ভেঙে তলিয়ে গেছে বহু পথ।নদীর আচরনের সাথে তার নামের সার্থকতা রয়েছে বিশখালী।

আবির চেয়ে রইল, এই ভয়ংকর সুন্দর দেখে। পড়ালেখার মাঝে ডুবে থাকতে থাকতে কত কিছুই হলো না দেখা। তৃনা তার বিজ্ঞানী মশাইকে অবলোকন করে। গুটিকয়েক পা ফেলে দাঁড়ায় তার নিকট।
জায়গাটা সুন্দর না বিজ্ঞানী মশাই।
আবির মুচকি হাসে, মনের মানুষ কাছে থাকলে তখন যেকোনো পরিবেশ ভয়ংকর সুন্দর লাগে।
ওদিকে আন্নি, সেহতাজ আর মেহের ছবি তুলছে । তৃনাকে ইশারা করলে,তৃনাও যোগ দেয় ছবি তোলাতে৷

সেদিনের ব্যবহারের জন্য আমি খুবই দুঃখিত।
সানি তার মায়ের সাথে ফোনে কথা বলার সময়, মেয়লী কন্ঠ শুনে পেছন ফেরে, তুলিকে দেখে, সানি তার মায়ের সাথে কথার ইতি টানে।
অতঃপর….

~চলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here