মেইড_ফর_ইচ_আদার🌻 #কাজিন_রিলেটেড #পর্বঃ১৮

0
43

#মেইড_ফর_ইচ_আদার🌻
#কাজিন_রিলেটেড
#পর্বঃ১৮
#অনামিকা_রহমান (লিখনিতে)

দিদারের মোবাইল বেজেই চলেছে। দিদার কল না তোলায়, তৃনার মাথা রাগে টগবগ করছে।
ওয়াশরুম থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বেরিয়ে এলো দিদার, ফোনে ৭বার মিসড কল উঠে আছে। এটা দেখে যেনো দিদারের গলা ইতোমধ্যে শুকিয়ে গেছে। কাপা কাপা হাতে ডায়েল করল,তৃনার নাম্বারে।
ওই পাশ থেকে চেচিয়ে উঠল তৃনা।
আচ্ছা দিদার, তোমায় দুইটা অপশন দিচ্ছি যেকোন একটা বেচে নিবে,কেমন।
এখন বলো, কিভাবে মরতে চাও।
তোমায় আমি গুলি করে মারবো নাকি, জীবন্ত করব দিবো।

দিদার জড়তা আটকে রেখেই বলল,
ম্যাম ভুল হয়ে গেছে, ওয়াশরুম গিয়েছিলাম।

তৃনা রাশবারি গলায় দিদারকে শুধালো, আমি বন্যছটায় আছি। তোমার সময় ১ঘন্টা। সাথে করে একটা স্কুটার নিয়ে আসবে। কথাটা মাথায় ডুকিয়ে নেও।

টাইম স্টার্ট নাউ।

দিদার প্রতিউত্তরে জবাব দিলো, ঠিক আছে ম্যাম।
___

এই কারনেই বোধ হয়, ভালোবাসায় জোড়াতে চাচ্ছিলেন না আপনি।
তুলি সানির সামনাসামনি দাঁড়িয়ে কথাটা বলল সানিকে।
চারপাশে একবার অবলোকন করলো সানি। আছরের আযান পড়েছে। নির্জন রাস্তা, জামসিং এর রাস্তা বরাবর একটু নিরব থাকে।এই মুহুর্তেই যে তার তুলির সাথে দেখা হবে, তা একটুও বুঝতে পারে নি সানি।
তুলি তড়িৎ খাবলে ধরল, সানির শার্টের কলার।
তুলির চোখের পানে চেয়ে সানি নরম গলায় বলল,তুলি কলারটা ছাড়ো,কেউ দেখলে খারাপ ভাববে।
ছাড়ব না, কখনই ছাড়বো না। ব্লাকলিস্টে আমার নাম্বার রাখার সাহস আপনার আসে কোথা থেকে। তৃনা রাজনীতি করত তাই আপনি পিছু হটলেন। আমি তো হটবো না। একটু সময় দিন, তারপর দেখবেন, মাথায় গুলি ঠেকিয়ে কবুল বলাবো,তুলি রাগি গলায় বলে উঠল সানিকে।
সানি তুলি কোমড় জড়িয়ে নিজের কাছে টেনে নিলো, তড়িৎ ছুয়ে দিলো তুলির অধর।পুরুষালি ছোয়ায় তুলির তনুময়ে শিহরণ জেগে উঠল।
তুলি কথা শেষ করতে না করতেই সানির কান্ডে হতভম্ব হয়ে গেলো তুলি। এবার যেনো তুলি মুখে তালা দিলো।
এখনো সানি তুলির কোমড় জড়িয়ে আছে। সানি মাথা নিচু করে তুলির কানে ফিসফিস করে বলল, অনার্সটা সম্পুর্ণ করতে দিন, তারপর না হয়, আমি আপনাকে তুলে নিয়ে বিয়ে করবো। এখন তো হ্যাপি। সন্ধ্যা হতে চলল, বাসায় চলে যান। রাতে কল করবো।

সানি তুলিকে ছেড়ে দিয়ে নিজ পথে হাটা শুরু করল, তুলি এখন ও পাথরের ন্যায় দাড়িয়ে আছে সানির পানে চেয়ে।
কিছুক্ষন আগের কান্ড মনে পড়তেই আবারো লজ্জায় লাল হয়ে গেলো তুলি। নিজের মাথায় নিজে চাটি মেরে তুলিও হাটা শুরু করল বাড়ির পানে।
_____
ইমতিয়াজ ভাই তৃনা বলছি। টাইমটা একটু বলে দিন, অন্য নাম্বার টায় আর কল করবেন না, ওইটা ডাস্টবিনের ফেলে দিয়ে এসেছি।।
তৃনার স্বরে কঠোরতার ভাব।

তৃনা তুমি কোনো কারনে রেগে আছো?
না ইমতিয়াজ ভাই একটু সাময়িক ঝামেলায় আছি, তেমন কিছু না টাইমটা সেন্ড করে দিয়েন। কথা শেষেই ফোনটাকে রেখে দিলো, কাঠের মেঝেতে৷
চিরচেনা এই বন্যচ্ছটা রিসোর্ট টার এই কাঠের বাড়িতে রয়েছে তৃনার কত স্মৃতি। কত রাত এখানে থেকেছে গা ডাকা দিয়ে। এখান থেকেই কত রাজনীতির কাজে বেরিয়েছে তৃনা। বেশ কয়েকবার বাবার সাথে অভিমান করে এখানে এসে থেকেছে সে। তার গিটার, বেহালা রিসোর্টের মালিকের কাছে রেখেছে তৃনা।কারন এখানে সে রেগুলার কাস্টমার। সবাই চেনা। তাই কেউ একবাক্যও ব্যয় করে না তৃনার সাথে। তৃনা আসলে তারা অনেক খুশি হয়। তৃনার নিরব একাকি রাত গুলো কাটে বেহালা, গিটার আর গানের ঝুড়িতে। আজও সে গান গাইবে। মন মিশিয়ে গাইবে। কেউ তাকে ডিস্টার্ব করবে না, এতটুকু হলেই তার শান্তি।
প্রিয় মানুষের হাত থেকে চড় খাওয়া ভোলা কি অত সহজ। এর শাস্তি যে আবিরকে সে দিবে। এই যে তার বিজ্ঞানী মশাইয়ের থেকে দূরে থাকবে এইটাই যে তার দেওয়া বিজ্ঞানী মশাইর উপর শাস্তি।
____

আবির তার পুতুলের মোবাইলে কল করেই অবাক হয়ে গেলো। তার পুতুল যে মোবাইল রেখে গিয়েছে। সন্ধ্যা হতে চলল, এখন কি করবে আবির । রক্তাক্ত হাতটাকে বেন্ডেজ করলো আবির। রেহানা খানকে আবির বলল, মা আমার জন্যই যেহেতু পুতুল বেড়িয়ে গেছে, আমিই ওকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবো। এই বলেই আবির বেড়িয়ে এলো।

আবির পর পর মেহের আর সেহতাজের কাছে কল করে জানতে পেরেছে তৃনা ওখানে যায় নি। দিশেহারা লাগছে আবিরের।

মোবাইলে চোখ ফেরাতেই ভেসে উঠল নাফিয়ুর স্যারের নাম্বার। কল রিসিভ করলো আবির।
~আবির কোথায় তুমি?তোমায় যে টেস্ট গুলো দিয়েছিলাম, কতদূর এগিয়েছে?
~স্যার,বউ হারিয়ে গিয়েছে, তাই বউ খুজছি।
~আবিরের কথায় নাফিয়ুর স্যার ভ্রু কুচকালো। সে যানেই না আবিরের বিয়ে হয়েছে।
কি বলছ, আবির। তোমার বিয়ে হলো কবে, জানতেই তো পারলাম না।
~২৪ ঘন্টা হতে চলল, স্যার। বিয়েটা হুট করে হয়েছে। বউ আমার উপর অভিমান করেছে। স্যার, আপনি তো প্রেম করে বিয়ে করেছেন, বউ অভিমান করে লুকিয়ে থাকলে আপনি কি করেন?
নাফিয়ুর স্যার হাসলেন। মৃদু গলায় জবাব দিলেন, চিন্তা করো না, কয়েকটা পদক্ষেপ বলে দিচ্ছি, তাতে কাজ হতেও পারে।
~ঠিক আছে স্যার, বলুন।

~তুমি কি ওর বান্ধুবিদের সাথে কথা বলেছ?
~জ্বি স্যার।
~ওর কি কোনো ছেলে বন্ধু আছে?
~জ্বি স্যার।
~ওকে যদি কল করে না থাকো, ওকে কল করবে, ও নিশ্চিত কিছু জানতে পারে৷
অভিমান করলে মেয়েরা সচারাচর বাপের বাড়িতে যায়, সেখানে খোঁজ নিয়েছ,?

~স্যার, আমার বউ রাজনীতি করে, সে রাগ করলে বাপের বাড়ি যাবে না, তাছাড়া বিয়েটা অন্যভাবে হইছে, তাই ওর বাড়িতে যাওয়ার সম্ভবনা নাই।
~আচ্ছা তোমার ওয়াইফ সবচেয়ে কাকে বেশি ভালোবাসে?
~ওর বাবাকে স্যার।
~হুম বুঝলাম, আচ্ছা আবির, তারপর ও তুমি ওর বাসায় স্বাভাবিক ভাবে যাবে,ওর বাবা নিশ্চিত জানে তার মেয়ে অভিমান করলে কোথায় যায়,তুমি তো বুদ্ধিমান ছেলে, আশাকরি বাকি যা করতে হবে তা তুমি বুঝেছো।
~আবির আশার আলো খুজে পেলো, ঠোঁটে হাসি টেনে ফিরলো বাসায় এই ভেবেই যে, সকাল সকাল উঠেই আবির বের হবে সাভারের উদ্দেশ্যে।
~চলবে।

আজকের পর্ব নিয়ে সুন্দর সুন্দর কমেন্ট চাই। আপনাদের সাপোর্ট আমার খুবই কাম্য।
কেমন লেগেছে আজ তুলি আর সানিকে, অবশ্যই জানাবেন, কমেন্ট করে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here