মেইড_ফর_ইচ_আদার🌻 #কাজিন_রিলেটেড #পর্বঃ২৬

0
2

#মেইড_ফর_ইচ_আদার🌻
#কাজিন_রিলেটেড
#পর্বঃ২৬
#অনামিকা_রহমান (লিখনিতে)

সব কয়টাকে মে’রে দিয়েছি ইমতিয়াজ ভাই।
ইমতিয়াজ বিষ্ময়কর দৃষ্টিতে তাকালো, উদ্বিগ্ন গলায় বলল, কি বলছ কি তৃনা।

নবিনগর থানায় মিসিং কেস হয়েছে। এখন যদি পুলিশ তোমায় ধরে ফেলে?
তৃনা অট্টহাসি হাসলো, এতোদিন ধরে আপনার সাথে কাজ করেছি, এখনও আমায় চিনলেন না? আফসোস, আফসোস।

আমি কোনো কাজে হাত দেওয়ার আগে বহু দিন ধরে প্লান করি। ওই জানো’য়ারের বাচ্চা যে আমায় সবটা কেড়ে নিতে চাইবে, সেটা আমি আগে থেকেই জানতাম। আর জানেন তো, আমার প্রিয় জিনিসে কেউ চোখ দিলে, তার অবস্থা এমনই হয়।

ইমতিয়াজ বাকরুদ্ধ তৃনার কথা শুনে।
কপালে হাত স্লাইড করে বলে উঠল ইমতিয়াজ, আচ্ছা সবটা বুঝলাম,লাশ গুলো কই?

তৃনা কাঠ গলায় জবাব দিলো, এসিড দিয়ে গলিয়ে বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দিয়েছি।
ইমতিয়াজের গলা শুকিয়ে এলো, সে ভাবতেও পারেনি, এতোটা বাজে ভাবে তৃনা মেরেছে।
ইমতিয়াজ উত্তেজিত কন্ঠে তৃনাকে বলল, আচ্ছা প্রমান লোপাট করেছ, কিভাবে?

তৃনা ইমতিয়াজের পানে চেয়ে অনবরত হাসতে লাগলো।হাসি শেষে দম ফেলে বলল, সিসি ক্যামেরা হ্যাক করে ওই দিনের সব ফুটেজ ডিলেট করে দিয়েছি। আর যা প্রমান ছিল,এসিড দিয়ে আর আগুন দিয়ে পুরিয়ে দিয়েছি।

পুলিশের বাপ ও আমায় ধরতে পারবে না। আমি কোনো কাচা কাজ করি না। আমায় নিয়ে চিন্তা করবেন না।
আপনি আপনার কাজ চালিয়ে যান৷ পরবর্তী এমপি হিসেবে আপনাকেই দেখতে চাই ইমতিয়াজ ভাই।

তৃনা ঘড়ির পানে তাকালো। আজ ইনকোর্সের লাস্ট এক্সাম। তৃনা ইমতিয়াজকে বিদায় জানালো। চলে গেলো এক্সাম দিতে।
____

টানা ৭দিন শেষে ইনকোর্স পরিক্ষা শেষ হলো। পরিক্ষা শেষ হওয়ার সাথে সাথে আন্নি আর রোদেলার বিয়ের ডেট ও এগিয়ে এলো।

আবারো আহমেদ সদস্যরা বিয়ের আমেজে মেতে উঠল। কেনাকাটার দুম পড়েছে। ব্যাংক কলোনির শান্তি কুঠির সাজানো হচ্ছে বিয়ের সাজে।

হলুদের স্টেজ, সাজানো হচ্ছে । বাতাসে যেনো বিয়ে বিয়ে ঘ্রাণ পাওয়া যাচ্ছে।
_____
বুদ্ধিটা কার মাথা থেকে বের হয়েছে, আমায় কি একটু তোমরা বলবে?
নাফিয়ুর স্যার কথা খানা বলে চাইলো আবির, রাইদ,রিয়াদের পানে।

রিয়াদ আর রাইদ আবিরকে দেখিয়ে বলল, স্যার আবির করেছে সব।
আবির চুল চুলকালো, একটা দুষ্টমির হাসি দিয়ে বলল, আসলে স্যার সবার একই কারনে ছুটি লাগবে তো, তাই একটা দরখাস্ত লিখে ফটোকপি করে নিয়ে আসলাম। কষ্ট করে আর ৩জনকে লিখতে হলো না, এখন সময়টা আমাদের কাছে বহু দামি।

নাফিয়ুর স্যার অবাক হয়ে বললেন, তাহলে আমার বউয়ের কাছে কে বলল, আমি তাকে নিয়ে সাজেক যাচ্ছি ৭ দিনের জন্য?

আবির বাহু গুটালো, প্রানবন্ত হাসি দিয়ে বলল, আমি।
স্যার দেখুন ওদের বিয়ের পর পর আবার আমার বিয়ের অনুষ্ঠানের ডেট ফিক্স হবে। তাই চিন্তা করলাম, আপনি নাহয় মেডামের সাথে ঘুড়ে এসে আমার বউভাতে এটেন্ড করবেন?
তাছাড়া অনেক দিন হলো, আপনারা ঘুরতেও যান না, মেডাম বলল।তাইতো মেডামের কথায় আপনাকে ফাসিয়ে দিলাম।

নাফিয়ুর স্যার অবাক হতভম্ব। চট করে নিজের ফোনটা বের করলেন, ফোন লাগালেন তার স্ত্রীকে?
~কোথায় আছো?
~হলে আছি!এখন আবার তোমার কি হলো?
~একটু আমার অফিস রুমে এসে দেখা করে যেও তো!কথা আছে।
~আসছি।

আবির, রিয়াদ আর রাইদ নাফিয়ুর স্যারের বউয়ের কাছে ধমক খাওয়া চেহারাখানা দেখে মুচকি হাসলো।

নাফিয়ুর স্যার তাদের হাসি মুখ দেখেই, মুখ ভার করে বলল,তোমরা হাসছ?
বিয়ে তো করনি। কর, তারপর বুঝবে, বউ কি জিনিস!

কিছুক্ষন বাদেই নাফিয়ুর স্যারের স্ত্রী মাইমুনা জামান হাজির হলেন!

ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে নাফিয়ুরকে বলে উঠল, আমি তোমার জন্য এখানে আসি না।
তুমি ভালো করেই জানো ঢাবির রোকেয়া হলের সুপার হল আমি। আমার আন্ডারে চলে সেটা। তুমি যখন চাইবে তখনই তো আর আসতে পারবো না।

নাফিয়ুর এগিয়ে আসলেন তার বউয়ের কাছে। হাত ধরে বসিয়ে দিলেন চেয়ারে।
মাইমুনা হাত জটকা মেরে বেংচি কাটলেন আর বললেন, কিভাবে যে তোমার মত অকর্মা,আনরোমান্টিক,ফালতু লোকের প্রেমে পড়েছিলাম, আল্লাহ ভালো জানে। সারাদিন ওই গবেষণা নিয়ে পড়ে থাকলে, একদিন দেখবে, বউ হারিয়ে গেছে।

মাইমুনা আবির ও তার বন্ধুদের উদ্দেশ্যে বলল, তোমরা আবার তোমাদের স্যারের মতো হয়ে যেও না যেনো।

নাফিয়ুর বউয়ের উদ্দেশ্যে বললেন, আহা, স্টুডেন্টদের সামনে কিভাবে কথা বলছ?

মাইমুমা আবির,রাইদ, রিয়াদের পানে চাইলো , ভ্রু কুচকিয়ে বলল,বেশ করেছি। শিখুক, ভবিষ্যতে কাজে আসবে।

স্যার মেডামের ঝগড়া দেখে, লাগাতার হেসেই চলেছে আবির ও তার বন্ধুরা।
নাফিয়ুর থতমত খেল,
আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে আমরা ২দিন পড়েই সাজেক যাব।

নাফিয়ুর স্যার দাড়ালেন, হালকা হাতের ইশারা দিয়ে বললেন, তোমাদের ছুটি কনফার্ম।

৩বন্ধু নাফিয়ুর স্যারকে বিদায় জানালো।
____

মেহেদী অনুষ্ঠান শেষ।

গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শুরু হবে সন্ধ্যানাগাত।
বাড়িতে মেহমানের আনাগোনা।
মেয়েরা সবাই বাসন্তী শাড়ি। ছেলেরা বাসন্তী পাঞ্জাবি। দেখতে ফুলের সমাহার মনে হচ্ছে। বন্ধু মহলের সকলে উপস্থিত।
সবাই সবার কাজে ব্যস্ত।কিন্তু সানি খুজে যাচ্ছে তার দুষ্ট প্রেয়সীকে। যাকে একপলক দেখার আশায় মন আনচান করছে তার।
বসন্ত কুঠির এর সামনে সাজানো হয়েছে হ্লুদের স্টেজ। ইতোমধ্যে আন্নি আর রোদেলাকে নিয়ে হাজির হলো তুলি, তৃনা, সেহতাজ ও মেহের। সানির চোখ আটকে গেলো। পলকহীন ভাবে চেয়ে রইল তুলির পানে। পাঞ্জাবির পকেট হতে মোবাইলটা বের করে মেসেজ করল,❝বাসন্তী সাজে আমার বাসন্তী প্রেয়সী, অপরুপ লাগছে তোমায় ওগো প্রেয়সী। হ্রদয়ের গহিনে তোমায় আকি সারাবেলা।এই মাতাল প্রেমিককে তুমি কেনো কর দিশেহারা।❞

~চলবে।

(কেমন লেগেছে আজকের পর্ব। অবশ্যই জানাবেন। সুন্দর মন্তব্য আশা করছি। হ্যাপি রিডিং)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here