মেইড_ফর_ইচ_আদার🌻 #কাজিন_রিলিটেড #অন্তিম_পর্ব।

0
1

#মেইড_ফর_ইচ_আদার🌻
#কাজিন_রিলিটেড
#অন্তিম_পর্ব।
#অনামিকা_রহমান (লিখনিতে)

কত দিন ধরে তুলির সাথে প্রেম করছিস সানি। তৃনার কথার জবাবে সানি বলে উঠল সাড়ে ৩ বছর।
জাবির সেই চিরচেনা বটতলার সিমেন্টের বেঞ্চিতে বসে আছে সকলে। বন্ধুমহলের সকলে উপস্থিত। আর আজকের মধ্যেমনি সানি। সানিকে নিয়ে যত আলোচনা।

তৃনা সানির পিঠে চাপড় দিয়ে বলল,বাহ!
তোর তো বহুত সাহস হয়ে গেছে সানি। আমার সামনে থেকেই আমার বোনের সাথে প্রেম করেছিস, আর আমিই জানি না।
মর্যাদা রাখিস। আমার বোন যদি কষ্টে থাকে না সানি, জানিস তো তোর কি হাল হবে?
একে বারে চাকুরী খেয়ে দিবো। বছরের পর বছর জেলে থাকবি। জুতার বারির কথা তো বাদই দিলাম। ওইটা তুই এক্সট্রা পাবি!

আন্নি,সেহতাজ আর মেহের খিলখিল করে হাসলো, পানি পুড়িটা সানির সম্মুখে তুলে ধরলো, আন্নি বলে উঠল, শেষ অবধি আমার বইনডারে ফাসাইলি, যাক একটা রমরমা বিয়া খামু, মেহের বলে উঠল, আন্নি তুই থাম তো আমি আমার বাচ্চা রাইখা আইছি খালি ছ্যাকা খোড় ওমর সানির বিয়ের কথা শুনে, আমি তো ভাবছি, জামাই বাচ্চা লইয়া কালকেই চইলা আসমু। সেহতাজ বলে উঠল, চিল আমারে দাওয়াত না দিলে ওর বাসর ঘরের কি হাল হবে ওই জানে না, খালি দিদারকে বলমু, জান জাস্ট সিস্টেম হ্যাক।
সবার কথা শুনে সানি তাজ্জব বনে গেলো।
চেচিয়ে বলে উঠল, হো ভাই, তোরা মানষের ভালো দেখতে পারোস না, আর হ্যা আমারে ওমর সানি বলবি না, আমার নাম আরমান সানি। সুন্দর সাবলীল বাংলায় কথা বল, আমি এখন ম্যাজিস্ট্রেট,উপর তলায় কল করে চাকরি নট করে দিবো তোদের তিনজনেই। তোরা আমায় আরো খাতির যত্ন করবি তা না। তোরা সেই দূর থেকে আসছিস, আমায় অপদস্ত করতে, তোরা মরলেও শুধরাবি না।

তৃনা সবটা দেখে দীর্ঘ শ্বাস ছাড়লো। তাদের বন্ধুত্বটা কত গভির। আজ থেকে কয়েকটা বছর আগেও কত সময় কাটিয়েছে তারা সবাই এক সাথে। এখন সবাই যে যার রাস্তায় চলছে। তবুও সময় করে সবাই এই জায়গায় আসে, শুধু বন্ধুত্বর টানে। এটাই বুঝি বন্ধুত্বের ভালোবাসা।জীবন থেকে সব কিছু হারিয়ে গেলেও বন্ধুদের সাথে কাটানো সময় গুলো কখনও হারিয়ে যায় না । সেই স্মৃতি গুলো মনের এক কোনে থেকে যায় ।রাস্তার অলিগলি পথ ধরে বন্ধুদের সাথে কাটানো সময় গুলো যেন বার বার নতুন করে ফিরে আসে।
প্রতিটা মুহূর্ত প্রানবন্ত ছিল যেখানে বন্ধুদের সাথে সময় কাটিয়েছে তারা। পৃথিবীতে নিঃসন্দেহে সুন্দর সম্পর্ক গুলোর একটা হচ্ছে বন্ধুত্ব।

সন্ধ্যা নাগাত গাড়িতে উঠে বসলো তৃনা। সানিকে যেন, অনুরোধের সুরে বলল ওদের একটু পৌছে দিতে। তৃনা তার ড্রাইভারকে বলল, জামসিং যাওয়ার উদ্দেশ্যে। গাড়ি ছুটলো আহমেদ ভিলায়।
____

৩দিন পর!

বংশের কনিষ্ঠ সন্তানের বিয়ে বলে কথা। বেশ আমেজ ছড়িয়েছে বাড়ি জুড়ে। তৃনার বন্ধু মহল এবং তাদের স্বামীরাও বসে নেই। সবাই বিয়ের কাজে ব্যস্ত।
কিন্তু বিপত্তি বাধলো সকল ছোট সদস্য নিয়ে।
এদের সামলানো দরকার। তাই সাহেলা খানম, মেহরিমা ও রেহানা খানের কাছে বুঝিয়ে দিলো তৃনা। তৃনার সাফ কথা নাতি নাতনি চেয়েছ,দেয়েছি। সামলানোর দ্বায়িত্ব এবার তোমাদের। গুনে গুনে সব ছোট বাচ্চাদের দিয়ে গেলো তৃনা।
রেহানা খান গুনতে লাগলো, সবাইকে।তন্নি- তন্ময়ের ছেলে তৌহিদ, আবির- তৃনার দুই মেয়ে আমিরা, আরিফা।রিয়াদ রোদেলার ছেলে রওনক,রাইদ আর আন্নির মেয়ে আনাবিয়া,মেহের আর মাহতাবের ছেলে মুহিব,সেহতাজ আর দিদারের ছেলে দিহান।
কম নয় এইগুলাকে সামলাচ্ছে নানী-দাদী সমাজ, ব্যপারটা জমে খিল, সব কয়টা বিচ্ছু।
হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে,বহু রাত ধরে অনুষ্ঠান হয়েছে, সবাই মজা করেছে।

পরের দিন আছর নাগাদ বিয়ে সম্পন্ন হলো, সফিউল আহমেদ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এই বাড়িটায় সে একলা কি করে থাকবে। সকলে এক এক করে চলে গেলো। শূন্য বাড়ি খা খা করবে। সফিউল আহমেদের চোখের পানি নদী থেকে সমুদ্রে রুপ নিচ্ছে।
তুলিকে বিদায় দেওয়া হলো। তুলিও সেন্সলেশ হয়ে গেছে, তাকে আড় কোলে তুলে দেওয়া হয়েছে গাড়িতে।
গাড়ি চুটলো ভাটপাড়ার পানে।
___

বাসর ঘরে অবস্থারত তুলিকে উদ্দেশ্যে হাত বাড়িয়ে দিলো সানি, তুলি নিজের হাতটাও বাড়িয়ে দিলো। বারান্দায় সজ্জিত দোলনায় দুজনে বসল,
তুলির কপালে চুমু খেয়ে বলল,
তোমায় নিয়ে পূর্নিমার নির্জনে হাজারটা বছর বেঁচে থাকা হোক শ্রেয়সী!
দীর্ঘ আলাপে প্রেম নেমে আসুক আমার ছোট আঙ্গিনায়।
তুলি হাসলো, সানির কাধে মাথা হেলিয়ে দিয়ে বলল,তবে তাই হোক।
শুরু হলো এক দুষ্ট মিষ্টি সম্পর্কের সাজানো সংসার।
____
আহমেদ ভিলার ছাদে বসে আছে তৃনা। পূর্নিমার আলোয় ঈষদচ্ছ দেখা যাচ্ছে চারপাশ।
তৃনা চারপাশটা অবোলোকন করছে, কয়েক সেকেন্ড বাদেই চুলে কিছু গুজে দেওয়ার স্পর্শ পেতেই পেছন ঘুড়ে তাকালো তৃনা।পূর্নিমার আলোয় দেখা যাচ্ছে তার স্পষ্ট অবয়ব।
তৃনা মুচকি হেসে বলল, বিজ্ঞানী মশাই।
আবির তৃনাকে রেলিং এর আবদ্ধ করে বলে উঠল,
তোমার এলিয়ে পড়া চুলে ফুল গুঁজে দেয়া পৃথিবীর সবচেয়ে নান্দনিক কর্ম পুতুল।
ভালোবাসি তোমায়, আজন্ম ভালোবেসে যাবো তোমায় পুতুল।
তৃনা জড়িয়ে ধরলো তার বিজ্ঞানী মশাইকে। আবির সাথে সাথে বুকে ঠাই দিলো তার পুতুলকে।
এইভাবেই প্রবাহিত হতে লাগলো দুষ্ট প্রকৃতির মেয়ে তৃনা ও তার বিজ্ঞানী মশাইয়ের জীবন।

~সমাপ্তি

(অবশেষে শেষ হলো গল্পটা।
আমি নিজেই অনেক মিস করবো গল্পটাকে।
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমার পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরীক ধন্যবাদ।
অবিরাম ভালোবাসা রইলো পাঠকমহলের জন্য ❤️🌼)
আরেকটা রিকুয়েষ্ট অবশ্যই রিভিউ দিবেন,এতে আমি আমার ভুল-ভ্রান্তি বুঝতে সক্ষম হব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here