#মেইড_ফর_ইচ_আদার🌻
#কাজিন_রিলেটেড
#পর্বঃ২১
#অনামিকা_রহমান (লিখনিতে)
গোডাউনের পিলারে বেধে রাখা হয়েছে সানওয়ার, মাশরিফ ও জিসান কে।
অত্যাধিক মা’রের ফলে অচেতন তারা। কিছুক্ষন বাদেই গোডাউনের দরজা খুলে দিলো দিদার, প্রবেশ করল তৃনা। গম্ভির কন্ঠে বলতে লাগলো তৃনা দিদারকে,
বাইরে যাও, কল করা মাত্রই চলে আসবে। তোমায় যে গুলো কেনার জন্য ফর্দ পাঠিয়ে ছিলাম, সেইগুলো কলের সাথে সাথে ভেতরে নিয়ে ডুকবে।
~ম্যা ম্যাম।
~তোতলাচ্ছ কেনো দিদার?
~ম্যাম ওদের পুলিশের হাতে ছেড়ে দিলে হয় না, পড়ে যদি কোনো ঝামেলা হয়।
তৃনা বিকট সুরে হাসতে লাগলো, বলল
~ঝামেলার ঝ ই যদি না থাকে, ঝামেলা হবে কি করে দিদার। আর একটা কথা বললে তোমায় এসিড দিয়ে গলিয়ে দিব।এখন যাও এখান থেকে।
দিদার চলে গেলো।
তৃনা এগিয়ে এসে টেবিলের কাছে দাড়ালো, সিল করা বোতল খুলে পানি ঢেলে নিলো গ্লাসে।
এক এক করে পানি ফিকে মারলো ৩জনের মুখে। অচেতন সবার জ্ঞান ফিরেছে তাদের।তৃনা তাদের সামনে চেয়ার টেনে খুব আয়েস করে বসল।
বোতলের বাকি পানি টুকু নিয়ে খেয়ে গলা ভিজিয়ে নিলো তৃনা।
~আমার কি বোকা মনে করেন আপনারা?
আপনাদের প্লানে একটু মনে হয় ত্রুটি ছিলো।
আপনাদের এই অবস্থার জন্য আমার খুব দুঃখ হচ্ছে।আমায় গুলি করা কি সোজা কথা নাকি। যাক ভালো প্রথম গুলি মিস করলেন,তারপর আবার ২য় গুলি করলেন তা গিয়ে আমার হাসবেন্ডের শরীরে লাগলো।
আফসোস,
কোনো কাজ হলো না।
তৃনা বসা থেকে উঠে দাড়ালো, হাতে গুলিটাকে নিয়ে ঘুরাতে ঘুরাতে বলল,
~আমি কাচা কাজ করি না। বুলেট প্রুফ গ্যাজেট পড়ে নিয়েছিলাম যে।
তবে আমার জামাই একটু ভয় পেয়েছিলো।
তাকে আমি ম্যানেজ করে রেখে আসলাম বোঝাপড়া করতে।
~সানওয়ার গোঙ্গাতে লাগলো, চাপা কন্ঠে বলতে লাগলো, আমায় ছেড়ে দে তৃনা। আমি কখনও আর করবো না।
তৃনা ভয়ংকর হাসলো, হাসি থামিয়ে বলল,
~আমার সম্পর্কে এতো কিছু জানেন, এটা জানেন না।
আমি শত্রুদের বাচিয়ে রাখি না। তোকে ছেড়ে দিতাম। কেনো দিচ্ছি না জানিস?
প্রথমত,আমার বাবার অসুস্থতার কারন তুই,
তা গেলো,
দ্বিতীয়ত, তুই আবার হিম্মত দেখালি আমায় মারার। তোর কোন চাল দিয়ে কুটো চুরি করেছিলাম সানওয়ার।
আমার নিজস্ব পছন্দ থাকতেই পারে, আমার ইচ্ছে হয়নি তাই তোর দলে আমি কাজ করি নি। তুই চরম সীমা অতিক্রম করলি। বহুত সম্মান করতাম। বিরোধী দলের ছিলি, তবুও সম্মান দেখিয়ে ভাই ঢাকতাম। কিন্তু তুই আমার কলিজায় হাত দিলি। এখন আমার বাবার কাছে আমি বিষক্ত হয়েগেছি।
তৃনা মাশরিফের পানে চাইলো,জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে শুধালো,
~কি পেলি বল, কিছুই পেলি না, তবে এবার ভয়ংকর মৃত্যু পাবি। যন্ত্রণায় কাতরাবি।
তৃনা টেবিলের কাছে এসে গুলি লোড করল, ভয়ংকর হেসে বলল, আমার নিশানা কখনও মিস হয় না, জা’নো’য়া’রে’র বাচ্চা।
সাইলেন্ট পিছতল দিয়ে অতর্কিত গুলি ছুরলো ৩জনের দেহে।
তড়িৎ মারা গেলো ৩জন। তৃনার অট্টহাসিতে কেপে উঠল গোডাউন। চিৎকার করে হাসতে হাসতে বলল,
❝The end❞
_____
বড় একটা প্লাস্টিকের পাত্রে সানওয়ারকে রাখলো দিদার। কাচের মাক্স পরিধান করে আছে দিদার ও তৃনা। হাতের গ্লোলবসটা পড়ে নিলো তারা। ইশারায় এসিডের ক্যান গুলো এগিয়ে দিতে বলল তৃনা। দিদার কাপা কাপা হাতে এগিয়ে দিলো। দিদারের কাপা কাপি দেখে, মেজাজ তুখোড় হয়ে গেলো তৃনার।
চেচানোর সুরে বলল, তোমার সমস্যা হলে বাইরে যাও দিদার। আমি তোমায় ডেকে নিবো।
দিদার এমন দৃশ্য সহ্য করতে পারবে না,তাই বেরিয়ে এলো দিদার।
ধোয়ায় ভরে উঠলো গোডাউন। এসিড ঢেলে গোলাতে লাগলো দেহ,এক ঘন্টার ব্যবধানে গলে মিশিয়ে গেলো ৩টি দেহ।
তৃনা দিদারকে ডাকলো, আদেশ করলো,
রাতের গলানো বর্জ্য গুলো ফেলে দিয়ে এসো, দিদার এই কাচের মাক্স হাতের গ্লোবস ছাড়া যাবতীয় যা আছে সব আগুনে পুড়িয়ে দেও।
দিদার মাথা নাড়ালো।
কি যেনো ভেবে বলে উঠল, মেডাম তাহলে এই মাক্স আর গ্লোবস কি করবো।
তৃনা হাসলো, হাতে থাকা মাক্স, গ্লোবসগুলো প্লাস্টিকের পাত্রে ছুড়ে মারলো, মুহূর্তেই গলে যেতে লাগলো সব কিছু।
দিদারকে সব বুঝিয়ে বিদায় নিলো দিদার। স্কুটারে বসে স্টার্ট করল,উদ্দেশ্য বন্যচ্ছটায় যাওয়া।
_____
কাক্ষিত কক্ষের দরজা খুলেই তৃনা মুচকি হাসল,তার বিজ্ঞানি মশাই সোফায় বসে আছে।
গলা খাকারি দিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলো তৃনা।
এলোমেলো অবয়বে তার অর্ধাঙ্গিনীকে সুন্দর লাগছে,
মোবাইলে আঙুল চালাতে চালাতেই শুধালো এতো দেড়ি হলো কেনো পুতুল।
তৃনা ফ্রেশ হওয়ার জন্য পোশাক নিয়ে ওয়াশরুমের দরজা খুলে ডুকতে ডুকতে বলল,তদন্ত করতে গিয়েছিলাম, কার এমন সাহস হয় আমায় জামাইকে গুলি করার?
আবির তাকালো তৃনার পানে, আবির কিছু বলার আগেই তৃনা চোখ টিপ দিয়ে ওয়াশরুমের দরজা বন্ধ করে দিলো।
আবির তৃনার এমন কান্ডে বোকা বনে চলে গেলো।
কিছুক্ষন বাদেই তৃনা ওয়াশরুমের দরজা খুলল,দরজায় আবিরকে দেখে চোখের ইশারায় জিজ্ঞেস করল, কি?
আবির কিছু বলল না, তড়িৎ টান দিয়ে ওয়াশরুমের দরজা বন্ধ করে দিলো। ঝর্নার নব চালু করে দিলো, ভিজে গেল তৃনা, আবির । ভিজে যাওয়াতে তৃনা আবিরে চুল খাবলে ধরে চেচিয়ে বলল,বলুন ভিজিয়ে দিলেন কেনো।
চুল থেকে তৃনার হাত দুটো ছাড়িয়ে নিয়ে দেয়ালে ঠেকিয়ে নরম গলায় বলল, একটু বউয়ের সাথে ওয়াশরুম ভ্রমণ করতে এলাম, আমার বউ আবার ওয়াশরুম ভ্রমণ করতে মাইন্ড করে না, কোন এক সমিক্ষা থেকে জানতে পারলাম, কিছুক্ষন আগে।
তৃনা এবার হাসবে নাকি কাদবে ভেবে পাচ্ছে না, এই লোক তৃনাকে এমন ভিজিয়ে দিয়ে মজা পাচ্ছে।
তৃনা শয়তানি হাসি দিলো আর বলল,খুব শখ হয়েছে বউয়ের সাথে ওয়াশরুম ভ্রমণ করার তাই না, এবার নেন ঠ্যালা।
অতঃপর।
(সুন্দর সুন্দর মন্তব্য চাইছি। আজকের পর্ব কেমন লেগেছে অবশ্যই জানাবেন)