মেইড_ফর_ইচ_আদার #কাজিন_রিলেটেড #পর্বঃ১৭

0
42

#মেইড_ফর_ইচ_আদার
#কাজিন_রিলেটেড
#পর্বঃ১৭
#অনামিকা_রহমান (লিখনিতে)

ইমতিয়াজ ভাই, আপনি তো সব কিছুই শুনেছেন।আমি এখন উত্তরায় আছি। আমি আমার ফ্যামিলিকে খুব ভালোবাসি। আমি পদত্যাগ করতে চাই। আপনি যত শীগ্রই একটা মিটিং ডাকবেন। আমি এসে আমার পদত্যাগের ঘোষণা করে দিব।

ইমতিয়াজ ভারাক্রান্ত মনে জবাব দিল, আমার দলে তোমার উপর আমার খুব ভরসা ছিলো। একটা আস্থার জায়গা ছিল, কোনো কাজ দিলে নিজে নিশ্চিত থাকতাম। তোমার শূন্যতা আমি বারবার অনুভব করব তৃনা।

তৃনা ফিচেল হাসলো, চিন্তা করবেন না ইমতিয়াজ ভাই। আমি এবার একটু নিজেকে নিয়ে ভাবতে চাই। আমার শত্রুরদের টেক্কা দেওয়ার দায়িত্ব আমার। সানওয়ারের জন্য আমার বাবার আজ এই অবস্থা। আমি জানি ও আমায় শান্তিতে বাচতে দিবে না। ওর ব্যাপার আমি দেখে নিবো।আপনি মিটিং এর ব্যবস্থা করুন।

ইমতিয়াজ বিদায় নিয়ে কল কাটলো।
তৃনা ভাবলেশহীন ভাবে দাঁড়িয়ে আছে বারান্দায়। হঠাৎ তৃনাকে আষ্টেপৃষ্টে জরিয়ে ধরলো আবির। বাক ফিরিয়ে চুমু খেলো তার পুতুলের ললাটে। তৃনা তার বিজ্ঞানী মশাইকে জরিয়ে ধরে বলল, আমি খুবই ক্লান্ত, সর্বদিক থেকে ক্লান্ত। আমি একটু সময় চাই। আমায় একটু সময় দিন, সবটা আমি গুছিয়ে নিবো।

আবির মৃদু হাসলো, তৃনাকে কোলে তুলে বিছানায় শুইয়ে দিলো। ল্যাম্পলাইটের সুইচ অফ করে আবির তার পুতুলকে বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে ঘুমের রাজ্যে পারি দিলো।
____

ঠাস’স’স

চড়ের শব্দে কেপে উঠল কক্ষ। তৃনা হতবাক হয়ে চেয়ে আছে তার বিজ্ঞানী মশাই এর পানে। কি হলো, কেনো হলো, কিচ্ছু জানে না তৃনা। হঠাৎ এই চড়ই কেনো দিলো আবির তার গালে।

আবির চেচিয়ে বলে উঠল, এই রাজনীতির জন্য তোমার বাবার সাথে এতো বড় একটা ঘটনা ঘটে গেলো। তারপর ও তুমি মিটিং ডেকেছ?
এখন তো মনে হচ্ছে তোমার এই রাজনীতির জন্য আমার প্রান গেলেও, তুমি তোমার জায়গা থেকে এক চুল ও নড়বে না।
নিজের জীবনকে কি মনে করেছো বলো তৃনা।

তৃনার চোখ ছল ছল করে উঠল। তার বিজ্ঞানী মশাই তাকে তৃনা বলে ডেকেছে। তার মুখে যেনো নামটা কতই না বিশ্রী শোনা যাচ্ছে। তার মুখে পুতুল নামটাই মধুর মতো মনে হয়। তৃনা নিজেকে গুছিয়ে বলতে লাগলো, আমি মিটিংটা পদ…..
কথা শেষ করতে পারলো না। আবির গর্জে উঠলো, আমার শোনার কোনো দরকার নেই, এই মুহুর্তে আমার সামনে থেকে চলে যাও।
আবিরের কথায় তৃনার মন দুমড়ে মুচড়ে যেতে লাগলো। রাগ সঞ্চার করে নিজের পার্সোনাল ফোনটাকে কাবার্ডে রেখে বেড়িয়ে গেলো কক্ষ থেকে।

কিছুক্ষন আগের কথা।
তৃনা তার ফুফুর কক্ষে গল্প গুজবে মেতে ছিল।

আবিরের কক্ষে তৃনার ফোন ক্রমাগত বেজেই চলেছে। বের কয়েকবার রিং হওয়ার পরেও যখন আবির দেখলো ফোন কেউ তুলছে না। তখন আবির ল্যাব থেকে বেড়িয়ে কলটা রিসিভ করার সাথে সাথেই ওপাশ থেকে, ইমতিয়াজ বলে উঠল, কতবার কল দিয়েছি কোথায় ছিলে তৃনা। তুমি যে মিটিংটা এরেঞ্জ করতে বলেছিলে। ওইটা আমি করে দিয়েছি। টাইম টা আমি তোমায় বিকেলে জানিয়ে দিচ্ছি।

এটা যে পদত্যাগের মিটিং ছিল, তা আবির অবগত ছিল না। কিন্তু তার রাগকে সে কন্ট্রোল করতে পারলো না। তৃনা আসা মাত্রই বসিয়ে দিলো চড়। সৃষ্টি হলো ভুল-বোঝাবুঝির।
তাহলে এই ভুল-বোঝাবুঝির জন্য আবিরকে যে কাঠখড় পোড়াতে হবে, আবির তা যদি জানতো তাহলে কোনো দিন এই ভুল আবির করতো না।

তাহলে কি হতে চলেছে আবিরের সাথে?
___

কক্ষের সাফেদ পর্দাটা নড়ছে। ইতোমধ্যে কক্ষের আশেপাশে থাকা ফুল দানি গুলো ভেঙে পড়ে আছে মেঝেতে। হাত থেকে অঝোর ধারায় ঝরছে রক্ত আবিরের হাত থেকে। তাতে আবিরের কিছু যায় আসে না, চোখ ভিজে আছে তার। এর মাঝেই বিকট শব্দ শুনতে পেয়ে রেহানা খান তড়িঘড়ি করে ছুটে আসলো। ছেলের এমন অবস্থা দেখে দক করে উঠল তার তনু। দৌড়ে গিয়ে ছেলের পানে বসে ফাস্ট এইট বক্স থেকে তুলা বের করে চেপে ধরলো ক্ষতস্থানে। ছেলের করুন চাহুনি দেখে দিশেহারা অবস্থা হয়ে গেলো রেহানার। কান্নামাখা অবয়ব নিয়ে হাউমাউ করে কেদে উঠল আবির।
❝মা, আমি এই হাত দিয়ে পুতুলকে মেরেছি। ওমা, পুতুল অনেক কষ্ট পেয়েছে মা। আমি এখন কি করবো মা,বলো না মা, বলো ❞
আবিরের কথা শেষ হতে না হতেই যাবেদ চাচা এসে হাজির।
মা জননী, ছোট মা জননীকে দেখলাম সদর গেট থেকে বেড়িয়ে যেতে। আমি অনেক আটকানোর চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু ছোট মা জননীকে দেখলাম সিএনজি করে কোথায় যেনো চলে গেলো। তাই আপনাদের জানাতে এলাম।

যাবেদের কথা শুনে আবির বসা থেকে উঠে দাড়ালো।
~অতঃপর

~চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here