মেইড_ফর_ইচ_আদার🌻 #কাজিন_রিলেটেড #পর্বঃ১৬ #অনামিকা_রহমান (লেখনিতে

0
38

#মেইড_ফর_ইচ_আদার🌻
#কাজিন_রিলেটেড
#পর্বঃ১৬
#অনামিকা_রহমান (লেখনিতে)

তৃনা ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে চুল শুকাচ্ছে। আবির সোফায় হেলান দিয়ে ল্যাপটপে কাজ করছ,অবশ্য কাজ রেখে কিছুক্ষন পর পর তৃনাকে সে অবোলোকন করছে। তার পুতুলকে আজ অসম্ভব সুন্দর লাগছে। শুভ্র রঙের ঢিলেঢালা ফোরপিছ পরে আছে তার পুতুল । হাটু ছুই ছুই চুল গুলোকে শুকাচ্ছে মেশিন দিয়ে। এমন দৃশ্য দেখে আবির নিজেকে আটকাতে পারলো না। তৃনার হাত থেকে ছো মেরে নিয়ে গেলো মেশিনটা, চুলের মধ্যে হাত ভুলিয়ে আঁকিবুঁকি করতে করতে শুকাতে লাগলো তার পুতুলের চুল।
__

দরজায় ঠকঠক কড়া নাড়ছে। তৃনা জিজ্ঞাসা করলো, কে?
দরজার ওপাশ হতে উত্তর আসলো,
ছোট মা জননী, আমি তোমাদের যাবেদ চাচা। বড় মা জননী খাবার খেতে ঢাকছে। চলে আসেন।
তৃনা কথার জবাব দিলো, আমি কিচ্ছুক্ষন পর আসছি, আপনি চলে যান চাচা।

আবিরের হাত থেকে মেশিনটা নিয়ে একগাল হেসে বলল,থাক বউকে ভালোবাসতে হবে না, অনেক ভালোবাসার সময় পাবেন, এবার চলুন।
আবির লজ্জায় নিজ ঠোঁট কামড়ে ধরলো, তড়িৎ অন্য দিকে ফিরে নিজে নিজে ব্লাশ করতে রইল, তার পুতুলের কথা শুনে।
_

খাওয়ার পর্ব শেষ করে আবির এখন অবস্থান করছে তার ছোট নিজস্ব ল্যাবটাতে। আবির নিজ মনে তার কাজ করে চলেছে। তৃনা আবিরের আশেপাশে ঘুর ঘুর করছে। ছোট ল্যাবটাতে রাসয়নিক এসিডে ভরপুর। ভিন্ন ভিন্ন কাচের ঝারে বিভিন্ন কিছু রাখা।
এসিড রাখার সেল্ফটার সামনে দাঁড়িয়ে তৃনা তার বিজ্ঞানী মশাইকে বলল, এগুলা কি বিজ্ঞানী মশাই। আবির তার পুতুলকে কড়া করে বলল, সাবধান কিচ্ছু স্পর্শ করনা। ২মিনিট সময় দেও আমি এসে নেই।
তৃনা হ্যা সূচক মাথা দুলালো।

আবির হাতের কাজটাকে গুছিয়ে রেখে ২টা কাচের মাক্স নিয়ে এগিয়ে এলো তার পুতুলের কাছে। একটা তৃনাকে পড়তে বলে, নিজে একটা পড়ে নিলো।

এইযে দেখছ,এইটা হলো সালফিউরিক এসিড,আর এটা নাইট্রিক এসিড। সালফিউরিক কিংবা নাইট্রিক অ্যাসিড ঝলসে দিতে পারে মানুষের শরীর। গলিয়ে দিতে পারে মাংস।
এরজন্য এই যত প্রকারের এসিড আছে এইগুলা নিয়ে কাজ করতে গেলে প্রথমে এই মাক্স আর হাতে গ্লোপস,আলাদা পোশাক পরিধান করে নিতে হয়।

আবিরের কথা গুলো তৃনা৷ মনোযোগ দিয়ে শুনছে।
তৃনা নিচের তাকের রাখা এসিড গুলোকে দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করলো এগুলো কেমন, এগুলো কি মানুষের ক্ষতি করে।

আবির জবাব দিলো, এটা ফ্লোরো-অ্যান্টিমনিক অ্যাসিড।
সালফিউরিক অ্যাসিড বা হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের চেয়েও মারাত্মক অ্যাসিড এটা। সেগুলো অনেক কম পরিচিত। ফ্লোরো-অ্যান্টিমনিক অ্যাসিড (H2F[SbF6])। হ্যামেট ফাংশন অনুসারে এই অ্যাসিডের শক্তিমাত্রা হচ্ছে মাইনাস ৩১.৩। ১০০% সালফিউরিক অ্যাসিডের তুলনায় এই অ্যাসিড ১ লাখ কোটি (১০১৬) গুণ শক্তিশালী!

চাইলেই যে কেউ ফ্লোরো-অ্যান্টিমনিক অ্যাসিড নিয়ে কাজ করতে পারবে না। টেস্টটিউব বা বিকারকে মুহূর্তেই গলিয়ে ফেলে এই ভয়ংকর অ্যাসিড। কাচ, সিরামিক বা ধাতু কোনো কিছুই নিরাপদ নয় ফ্লোরো-অ্যান্টিমনিকের কাছে।

তৃনা জিজ্ঞেসু দৃষ্টিতে চেয়ে বলল, তাহলে এই অ্যাসিড সংরক্ষণ করা হয় কীভাবে?
আবির বিকার গুলোকে পরিষ্কার করতে করতে বলল, রান্নার সময় যে ননস্টিক ফ্রায়েড প্যান ব্যবহার হয়, তার ওপরে একটা মসৃণ আবরণ থাকে। আবরণটা টেফলন পলিমারের। এই টেফলনের কাছেই হার মানে ফ্লোরো-অ্যান্টিমনিক অ্যাসিড।

টেফলন আসলে বাণিজ্যিক নাম। রাসায়নিক নাম পলিটেট্রাফ্লোরোইথিন। টেট্রাফ্লোরোইথিন নামের একটি ২-কার্বনবিশিষ্ট জৈব যৌগের পলিমার হলো পলিটেট্রাফ্লোরোইথিন বা টেফনল। অর্থাত্ অনেক টেট্রাফ্লোরোইথিন অণু পাশাপাশি যোগ হয়ে যে পলিমার যৌগ গঠন করে, তাই টেফলন। টেফলনের কার্বন-ফ্লোরিন (C-F) রাসায়নিক বন্ধন রয়েছে। এই বন্ধন অত্যন্ত শক্তিশালী। শক্তিশালী অ্যাসিডও টেফলনের এই বন্ধন ভাঙতে পারে না। টেফলনের সঙ্গে বিক্রিয়া ঘটে না কোনো অ্যাসিডের। তাই টেফলনের পাত্রে রাখা হয় ফ্লোরো-অ্যান্টিমনিক নামের মারাত্মক এই অ্যাসিডকে। তারপরও ফ্লোরো-অ্যান্টিমনিক সবচেয়ে শক্তিশালী অ্যাসিড নয়। সবচেয়ে শক্তিশালী হলো কার্বোরেন গ্রুপের অ্যাসিড।

তবে,টেলফনের প্লাস্টিকের পাত্রে ব্যবহার যায় অহঃরহঃ।

এরপর তৃনা বিজ্ঞানাগার থেকে বেড়িয়ে এলো ব্যালকনিতে। গোপন ফোনটা বের করে কল করল, দিদারকে। গম্ভির কন্ঠে তৃনা বলে উঠল, দিদার একটা ফর্দ পাঠিয়ে দিচ্ছি। জিনিস গুলো কিনে রাখবে।।
ইতোমধ্যে ফর্দ পেয়ে দিদারের কপালে ঘামতে শুরু করলো, ম্যাম। এইগুলো দিয়ে কি হবে।
তৃনা পৈশাচিক হাসলো, দিদার তুমি ভালো করেই জানো, আমি কিছু বলি না, সব করে দেখাই। জিনিস গুলো যেনো রেডি থাকে।
দিদার শুকনো ঢোক গিলছে । সাহস জুগিয়ে বলল, ঠিক আছে ম্যাম।

তাহলে কি করতে চলেছে তৃনা। আর ফর্দ দেখেই কেনো দিদার ঘামতে শুরু করলো।
তাহলে কি কোনো কিছু ঘটতে চলেছে?
~চলবে।

(সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য আশা করছি)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here