ডাহুক_নদীর_তীরে (পর্ব-১৭)
হালিমা রহমান
মামুনের শীতল কন্ঠে সোনালীর হৃৎপিন্ডের গতি তীব্র হয়। মেরুদণ্ড বেয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে যায়।হাত-পা কাঁপে থরথর। এই কঠিন মুহূর্তেও মাথা ঠান্ডা রাখে সোনালী।কঠিন পরিস্থিতি সামলে নেওয়ার অদ্ভূত ক্ষমতা নিয়ে জন্মেছে মেয়েটা।বড় এক দম নেয় সোনালী।বুকে হাত দিয়ে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করে।ক্ষনিকের মাঝে মুখে প্লাস্টিকের হাসি ঝুলিয়ে মামুনের দিকে ফিরে তাকায়।
_” এভাবে পিছু নেয় মানুষ? ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন আমাকে।”
সোনালীর কথায় মামুনের কোনো ভাবান্তর হয় না।কপাল কুঁচকে প্রশ্ন করেঃ” ওদিকে কোথায় যাচ্ছিলেন আপনি?”
_” হাম্মামখানায়।আর কোথায় যাব।ওখানে আর কিছু আছে নাকি?”
_” এতো রাতে হাম্মামখানায়?আশ্চর্য! ”
_” কেন? ওখানে খালি দিনের বেলায় যাওয়া যায়?রাতের বেলায় যাওয়ার নিয়ম নেই নাকি?”—খানিকটা কঠিন শোনায় সোনালীর কন্ঠ।
_” না তা বলছি না।কিন্তু এতো সেজেগুজে কে হাম্মামখানায় যায়?আপনার বেশভূষায় রীতিমতো অবাক হচ্ছি আমি।”
আলগোছে নিজের দিকে একবার নজর বুলায় সোনালী।শার্ট-জিন্স-কেডস।চুলগুলো মাথার উপর উঁচু করে বাঁধা।সোনালী যে অন্যকোথাও যাচ্ছিল তা পাগলেও বুঝবে।তবে দমে গেলে চলবে না।যখন আত্মরক্ষার জন্য সহজলভ্য কোনো অস্ত্র থাকে না তখন গলাবাজি করতে হয়।এই নীতিটা সবসময় মেনে চলে সোনলী। এই বিপদের সময়ও সেই মোক্ষম অস্ত্রটাই ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিলো সে।গম্ভীর গলায় বললঃ” আপনি কি আজকাল মেয়েদের পোশাক নিয়ে গবেষণা করা শুরু করেছেন? ”
_” না।কিন্তু চোখের সামনে উল্টা-পাল্টা কিছু দেখলে অবশ্যই আমি প্রশ্ন তুলব।আমার মনে হচ্ছে আপনি অন্যকোথাও যাচ্ছিলেন।”
_” হাম্মামখানা ও কয়েকটা দেওয়াল ছাড়া কি আছে সেখানে?আমাকে ভূত মনে হয় আপনার?দেয়ালের মাঝ দিয়ে ভ্যানিশ হয়ে যাব?তাছাড়া,এই রাত-বিরেতে কোথায় যাব আমি?অথবা,ধরুন আমি অন্যকোথাও গেলাম।তাতে আপনার কি?এখানে আছি আমি।যেখানে ইচ্ছা সেখানে যেতেই পারি।আমরা তো আর এখানে বন্দী নই।আমি দেশের স্বাধীন নাগরিক। যেখানে ইচ্ছে সেখানে যাব ।ইচ্ছে হলে রাতের বেলায় চাঁদ দেখতে ছাদে যাব।আপনার কি হ্যাঁ? আপনি আমাকে জিজ্ঞেস করার কে?আর প্রশ্ন করলেই কি আমি আপনায় কৈফিয়ত দেব?এতো সোজা-সাপ্টা,লুতুপুতু মেয়ে আমি নই।বুঝলেন?”–একটানা এতোগুলো কথা বলে হাঁপিয়ে উঠে সোনালী।কথার শেষে বড় এক নিঃশ্বাস ছাড়ে।চোরের উপর বাটপারি করতে সে ভালোই জানে।
_” সবই বুঝলাম।কিন্তু লুতুপুতু মানে আবার কি?”
_” জানি না।মুখে এসেছে বলে ফেলেছি।আমি এতো ভাবনা-চিন্তা করে,অর্থ বুঝে কথা বলতে পারি না।আর আপনিই এতো রাতে কি করছেন এখানে?এটা তো আপনার বাড়ি না।এটা আমার ক্রাশের বাড়ি।তাহলে আমিও আপনাকে প্রশ্ন করতে পারি,আপনি কেন এতো রাতে ঘুরঘুর করছেন?এতো রাতে আপনার কি কাজ?”
মামুন এক-ভ্রু তুলে চেয়ে থাকে কেবল।মুখে কিছুই বলে না।সোনালী আড়চোখে তাকায় একবার মামুনের দিকে।সে বোধহয় মনে মনে কিছু ভাবছে।অথবা সোনালীকে সন্দেহ করছে।এই মামুনকেও দেখতে পারে না সোনালী।খারাপের সাথে কি আর ভালো মানুষ চলে?মামুনও খারাপ।সেও ইউসুফের মতো পঁচা আপেল।সোনালী বিরক্ত হয় খুব।এই লোক এখন আবার কি প্রশ্ন করবে আল্লাহ মালুম।
_” আপনি না হাম্মামখানায় যাবেন?তো দাঁড়িয়ে আছেন কেন? যান।”
_”এখন আর যাব না।বিরক্ত বানিয়ে ফেলেছেন আপনি আমায়।এতো কথা বলেন আপনি।”
বোকার মতো চেয়ে থাকে মামুন।বিস্মিত কন্ঠে বলেঃ” আমি বেশি কথা বললাম! আমি?আশ্চর্য মানুষ আপনি ছোট্ট মেয়ে।কথা তো বললেন আপনি।বেশি কথা বলে আমার কানের পোকা বের করে ফেলেছেন।”
_” রাস্তা ছাড়ুন।রাত-বিরেতে মেয়েদের পিছু নেওয়া খুবই বাজে স্বভাব।আমি নিতান্ত ভালো মেয়ে বলে কিছু বললাম না।আমার জায়গায় অন্যকেউ হলে আজকে খবর ছিল আপনার।”
মামুনকে অতিক্রম করার পর হাঁফ ছাড়ে। ভাগ্য ভালো থাকায় আজ ধরা পড়েনি।মনে মনে আল্লাহকে ধন্যবাদ দেয়।
_” আর কখনো এতো রাতে বাইরে বের হবেন না, ছোট্ট মেয়ে।আর কখনো যাতে না দেখি।কথাটা মনে রাখবেন।”— খুব কঠিন শোনায় মামুনের কন্ঠ।মনে হচ্ছে সে শাসন করছে সোনালীকে।সোনালীর পা থেমে যায়।মুহূর্তেই রাগ উঠে যায় মামুনের কথা শুনে।হারামজাদা বেয়াদব।সবকিছুতে তোর নাক গলাতে হবে কেন ?” মূর্তিমান শয়তান”—বিরবির করে মামুনকে গালি দিয়ে ধুপধাপ পা ফেলে ঘরে চলে যায় সোনালী।তা দেখে মুচকি হাসে মামুন।ডানহাতের মুঠোতে রাখা ছোট্ট কাগজটাকে কয়েক টুকরো করে একপাশে ফেলে দেয়।ফিসফিসিয়ে বলেঃ” আল্লাহর কসম,আপনাকে আমি বাঁচাব ছোট্ট মেয়ে।অন্য কারো জন্য নয়,নিজের জন্য বাঁচাব আপনাকে।জীবনের বাকি সকালগুলো আপনার সাথেই দেখব, প্রিয়তমা। আপনার ও আমার মাঝে কোনো পর্দা নেই।আপনি যেমন আমার সবকিছু জানেন, তেমনি আমিও আপনার সবটাই আমি।আপনাকে আমি পোষ মানিয়েই ছাড়ব।”
বারান্দায় দাঁড়িয়ে অন্ধকার আকাশের দিকে চেয়ে থাকে মামুন।শত্রুর সাথে নিজের জীবন জড়াতে চাইছে সে।মামুনের জন্য সোনালীর অপর নাম মৃত্যু। সোনালীকে ছোঁয়া মানে নিজের ধ্বংসকে সাদরে আহ্বান করা।তবুও সেটাই করবে মামুন।হুট করেই সোনালী নামের চোরাবালিতে আটকে গেছে সে।এখানে থেকে উপরে উঠার রাস্তা আছে কিনা তা জানে নেই।জানার ইচ্ছেও নেই।প্রেমের মহাসমুদ্রে ডুবে যেতে চায় মামুন।হাত বাড়িয়ে স্পর্শ করতে চায় মৃত্যুসম ভয়ংকর কিছু অনুভূতিকে।
***
পেটের ভিতর কেমন যেন শব্দ হচ্ছে।মেঘ ডাকলে যেমন গুড়গুড় শব্দ হয়,ঠিক তেমন।নাভীর কাছটায় ব্যাথা হচ্ছে খুব।তলপেটটা ভারী লাগছে আবার।মনে হচ্ছে একটা বিশাল পাথর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে সেখানে।তথা দম খিচে শুয়ে রইলো।দু-হাতে আকঁড়ে ধরলো বিছানার চাদর।তবে শেষ রক্ষা হলো না আর।আবার পেট মোচড় দিয়ে উঠলো।মনে হচ্ছে যেন পেটের ভিতর ভয়ংকর এক ভূমিকম্প হচ্ছে।কয়েক সেকেন্ড পরেই অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হল পুরো পেটে। আর সহ্য করতে পারলো না তথা।দূর্বল শরীরের ভার দুটো পায়ের উপর ছেড়ে দিয়ে বহুকষ্টে ওয়াসরুমে গেল।সকাল থেকে এ নিয়ে পনেরো বার বাথরুমে ছুটতে হয়েছে।তথার শরীর আর চলছেই না।
কাল রাতে মন ভরে নারিকেলের নাড়ু খেয়েছিল তথা।এ বাড়িতে রানাবান্নার কাজ করেন রোকসানা নামের একজন মহিলা।কিভাবে যেন রান্না করেন তিনি। রান্নাগুলো এতো ভালো হয়!প্রতিবেলা খাবার শেষে দশ মিনিট হাতের আঙুল চাটে তথা।মাঝে মাঝে রোকসানা খালার হাতটাও চেটে ইচ্ছে করে তার।কাল রাতে নারিকেলের নাড়ু বানিয়েছিলেন তিনি।নাড়ু তো নয় যেন অমৃত। গোটা বিশেক নাড়ু খেয়েছে তথা। রাতটুকু ভালোই কেটেছে।কিন্তু সকাল হতেই তথার পেটের অবস্থা পাল্টে গেল।ওয়াসরুমে ছুটতে ছুটতে প্রাণ যাওয়ার জোগাড়।এর মাঝে বমিও করেছে বার তিনেক।সব মিলিয়ে তথা এখন চোখে শুধু অন্ধকার দেখেছে।
এবাড়িতে ইউসুফের ঘর ছাড়া আর কোনো ঘরে এটাচড বাথরুম নেই।মেয়েদের জন্য আছে দুইতলার হাম্মামখানা এবং ছেলেদের জন্য আছে নিচ তলার হাম্মামখানা। রুম থেকে বেরিয়ে হাম্মামখানা অবধি যাওয়ার সামর্থ্য নেই তথার। তাই তার ঠাই মিলেছে স্বয়ং আহমেদ ইউসুফের শোবার ঘরে।
টানা পনেরো মিনিট পর বাথরুম থেকে বের হলো তথা।পেটে আর কোনো খাবার নেই বোধহয়।হুড়হুড় করে পানি বেরোচ্ছে কেবল।রুমে পা দিতেই সোনালী ও মালিহাকে চোখে পড়লো তার।সোনালী।চিন্তিত মুখে খাটের কাছে দাঁড়িয়ে আছে, মালিহা স্যালাইন বানাচ্ছে।তথাকে দেখতে পেয়ে সোনালী ছুটে যায় তার কাছে।তথার হাত টেনে ধীরে ধীরে খাটের কাছে নিয়ে আসে।চিন্তিত সুরে বলেঃ ” এ নিয়ে কতবার?”
_” পনেরো।”
_” আল্লাহ! রক্ত-টক্ত যায় নাকি?”
তথা মাথা নেড়ে না বলে।কথা বলার শক্তি ফুরিয়ে গেছে তার।
_” তথা আপু,মাথাটাকে একটু উপরে তুল।একটু স্যালাইন খাও।হা করো দেখি।এই তো আরেকটু, আরেক চুমুক।”
বেশ যত্ন সহকারে তথাকে স্যালাইন খাওয়ায় মালিহা।একটু একটু করে পুরো একগ্লাস স্যালাইন ঢেলে দেও তথার মুখে।স্যালাইন না খেলে শক্তি হবে কেন?
_” তথা আপু,পা সোজা করো।একটু তেল মালিশ করে দেই।ভালো লাগবে।”—কোথা থেকে যেন একটা সরিষার তেলের বোতল জোগাড় করেছে সোনালী।
তথা বিব্রত হয়।ইশারায় মাথা নেড়ে বলে ঃ”প্রয়োজন নেই।”
_” বেশি কথা বলো তুমি।প্রয়োজন নাকি অপ্রয়োজন তা জানতে চেয়েছি আমি?”
জোর করে তথার পায়ে তেল মালিশ করে দেয় সোনালী।মালিহা আলতোহাতে তার চুলে বিলি কেটে দেয়।আরামে ঘুম চলে আসে তথার।এই মেয়ে দুটো না থাকলে কি যে হতো আজ!
_” এক্সকিউজ মি,আমি একটু ভিতরে আসব?”
দরজার বাইরে থেকে ইউসুফের কন্ঠ পেয়ে ত্বড়িৎ গতিতে উঠে দাঁড়ায় মালিহা।মেয়েটা ইউসুফকে অকারণেই ভয় পায়।সোনালীও উঠে দাঁড়ায়।ইউসুফকে দেখে কপাল কুঁচকে ফেলে।এর ছায়া দেখলেও জ্বিভের আগায় গালি চলে আসে মেয়েটার।সোনালী গলা বাড়িয়ে বলেঃ” তথা আপু এখানে শুয়ে আছে।আপনি একটু পরে আসুন।”
ইউসুফ কিন্তু পাত্তাও দিলো না সোনালীর কথায়।হাতে একটা স্যালাইন ও কিসব ঔষধের বোতল নিয়ে ঢুকে পড়লো ঘরের ভিতর।তার পিছন পিছন মামুনও ঢুকলো।তার হাতে খাবারের প্লেট। সোনালী একবার উঁকি দিয়ে দেখলো। কাঁচকলার খিচুড়ির মতো কি যেন আছে সেখানে। হাতের জিনিসগুলো টেবিলের উপর রেখে সোনালীর দিকে শান্ত চোখে একবার তাকায় ইউসুফ।শক্ত কন্ঠে বলেঃ” এতোক্ষণ ওর খেয়াল রাখার জন্য ধন্যবাদ।আপনাকে আর প্রয়োজন হবে না মিস।আপনি আসতে পারেন এখন।”
_” মানে কি?আপনি এখন থাকবেন এঘরে!”
_” মামুন,খাবারটা এখানে রেখে এদেরকে নিয়ে চলে যাও এখন।মেয়েটা একটু ঘুমাচ্ছে। মিস সোনালীর গলার আওয়াজে ওর ঘুম ভেঙে যাবে।”
সোনালীকে এবারেও পাত্তা দেয় না ইউসুফ।মামুনকে আদেশ দিয়ে তথার ঔষধ-পত্র তৈরি করে।তথার পাশে বসে পড়ে আস্তে করে।
_” চলুন ছোট্ট মেয়ে।এখানে আর কাজ নেই আপনার।”—হতভম্ব সোনালীকে একপ্রকার টেনেটুনে রুম থেকে বের করে মামুন।মালিহা বেরিয়ে গেছে অনেক আগেই।
চোখটা লেগে এসেছিল তথার।খাটের পাশে খুটখুট আওয়াজ পেয়ে চোখ মেলে তথা।হাতের কাছেই ইউসুফকে দেখতে পেয়ে ভূত দেখার মতো চমকে উঠে। তড়িঘড়ি করে উঠতে যেয়ে খাটের পাশের টেবিলের সাথে হাতে ব্যাথা পায়।
_” আস্তে, কামিনী ফুল।”
_” আপনি এখানে কেন? মালিহা,সোনালী কোথায়?”
_” ওদেরকে দিয়ে কি হবে?রোগীর দরকার ডাক্তারকে।তাই আমি আছি।”
_” আপনি ডাক্তার?”
_” পুরোপুরি সার্টিফিকেট পাওয়া ডাক্তার নই।ডাক্তারি পড়া শুরু করেছিলাম।শেষ পর্যন্ত চালিয়ে যাইনি।কাটা-ছেড়া ভালো লাগে না আমার।”
অত্যন্ত অস্বস্তি হচ্ছে তথার। ইউসুফ একদম কাছেই বসে আছে।বড়জোড় আধ-হাতের দুরূত্ব দুজনের মাঝে। তথার দম আটকে আসে।মনে হয় যেন,ইউসুফ নামক কঠিন এক দেয়ালের একপাশে চাপা পড়ে আছে।তথা মাথা উঠানোর চেষ্টা করে।দূর্বল গলায় বলেঃ” আপনি একটু সরে বসুন।”
কপাল কুঁচকায় ইউসুফ। খিচুড়ির প্লেটটাকে কোলের উপর রেখে প্রশ্ন করেঃ” কেন?”
_” অস্বস্তি হচ্ছে আমার।ডাক্তারি করা লাগবে না।আপনি সরুন।আমি এমনিই ভালো হব।”
তথার কথায় কিছুই বলে না ইউসুফ। প্রেয়সীর ঘাড়ের নিচে আলতোভাবে হাত দিয়ে তথাকে বসতে সাহায্য করে।উত্তেজনায় পুরো শরীর কাঁপে তথার।রাগে তার দূর্বল শরীরটা কাঁপে থরথর।নিজের দূর্বল হাত দিয়ে ইউসুফের হাত সরিয়ে দেয় তথা।শীর্ণ কন্ঠে বলেঃ” আপনি এখন এখান থেকে চলে যাবেন।আমার ভালো লাগছে না এসব।”
এবারেও ইউসুফ কিছু বলে না।কোলের উপর থেকে খাবারের প্লেট আবারো টেবিলের উপর রেখে দেয়।তথার দিকে শান্ত চোখে চেয়ে থাকে কিছুক্ষণ।কয়েক সেকেন্ড পরে হুট করেই তথার কপালে ঠোঁট বুলায় ইউসুফ। তথার হাতদুটো এক হাত দিয়ে আঁটকে ভালোবাসার স্পর্শ এঁকে দেয় প্রাণপ্রিয় রমনীর কপালে।ফিসফিসিয়ে বলেঃ” আনা বেহিবাক,কামিনী ফুল।আনা বেহিবাক।”
কিছুই বুঝতে পারলো না তথা।বুঝার চেষ্টাও করলো না।জীবনে প্রথম কোনো পুরুষের স্পর্শ পেয়ে চোখ বেয়ে দু-ফোটা জল গড়িয়ে পড়লো তথার।পেটের ভিতর আবারো গুড়গুড় করছিল।অনেকক্ষণ যাবৎ একদলা বমি আঁটকে ছিল গলার কাছে।এদিক-ওদিক তাকায় না তথা।চোখ বন্ধ করে বমি করে দেয়।ভাসিয়ে দেয় ইউসুফের গলা ও বুকের একাংশ।
চলবে