#হৃদয়েশ্বরী
#লেখিকা- সাদিয়া মেহরুজ দোলা
#পর্ব-১৫.
” শেহজাদা”.
ক্যালিওগ্রাফি করা শব্দটির দিকে গভীর দৃষ্টিপাত নিক্ষেপ করে নিস্তব্ধ হয়ে বসে রইল রুহি। নেত্র যুগলের কার্নিশ নোনা অশ্রুকণা দ্বারা সিক্ত তার। কাঁপাটে হাত আলত করে স্পর্শ করলো মোটা কালো ডায়েরিটাকে। দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে চট করে সে নেত্র জোড়া ধপ করে বন্ধ করলো। বাহিরে মেঘের গর্জনে মেদিনী কাঁপছে। ভীতু রুহি কম্বলের নিচে না গিয়ে ঠায় বসে আছে পাথর রূপে। হিম শীতল অনিলে শিরদাঁড়া অব্দি দাঁড়িয়ে পড়েছে অথচ গায়ে শাল টেনে নেয়ার কোনো তাড়া নেই তার মাঝে। সে স্থির, অনুভূতিশূন্য এবং অচঞ্চল।
রুহি ডায়েরির প্রথম পাতা খুললো। সঙ্গে সঙ্গে দর্শন হয় তার উশানের বেশ কয়েকটা ছবি। বিভিন্ন সময় এর। কিশোর, তরুণ এবং সবশেষে ম্যাচিউর উশান।সর্বকার সময়ের ছবি সংগ্রহ করে এখানে আঠা দিয়ে লাগানো আছে। রুহি পাতা উল্টায়। সব পৃষ্ঠাতে রয়েছে উশানকে নিয়ে লিখা অনুভূতি। যা লিখেছে মীরা। রুহি প্রায়ই চমকাতো এই ভেবে এতো কম সময়ে কাওকে পছন্দ করা যায়?তাও আবার যাকে ঘৃণা করা হয় তাকে? আজ মীরা তার সব সন্দেহ দূর করে দিয়েছে বিশদ বর্ণনার মাধ্যমে।
রুহি ঘাড় বাঁকিয়ে তাকায় পিছনে। ম্লান হেঁসে বলে,
-‘ এতোদিন শুনতাম পাগলাটে প্রেমিক আছে শুধু। এখন জানলাম পাগলাটে প্রেমিকাও আছে। তুই একটা পাগল মাইয়া! ‘
বই থেকে দৃষ্টি সরিয়ে মীরা ঠোঁট বাঁকিয়ে তাকায়। রুহি ফের মনোযোগী হয় ডায়েরী পড়ায়। পৃষ্ঠা উল্টাতে উল্টাতে শেষাংশে আসে। যেখানে লিখা আছে স্পষ্টত মীরার উশানের প্রেমে পড়ার সূচনাকাল এবং তার পরবর্তী যাত্রা!
১০ই ফেব্রুয়ারী. ২০২১।
দাম্ভিকতা নিয়ে চলা উশান রেজওয়ান। তার চরিত্র অংশ হিসেবে তার দাম্ভিকতা, এটিচিউড, কাওকে পরোয়া না করা অন্যতম অংশীদার। তার সাথে আমার প্রথম সাক্ষাৎ পাঁচ, ছয় বছর আগে। উশান যখন তার দাদু বাড়ি আসতো তখন তাকে দর্শন প্রথম বার। ষোল বছরের কিশোরী আমার তখন আবেগী মন। তাকে ভালো লাগতো প্রথমত সুদর্শন, মারাত্মক চাহনি দেখে। বাদামী মনি দু’টোর ঈষৎ মিষ্টি হাসি নজর কেঁড়ে নিলো ভয়ানক ভাবে।হাটাঁ, চলা চোখ ধাধানোতা, মিষ্টি হাসি এবং অপূর্ব কন্ঠ যেনো পদে পদে আমায় মুগ্ধতার চাদরে মুড়িয়ে নিলো।তার কয়েক দিন পর। বয়স বাড়লো আমার।উশানের সৌন্দর্যের পাশাপাশি তার মন পড়ার চেষ্টা। প্রতিবার দাদু বাড়ি এসে যখন পাশের মাঠে ছোট ছেলেদের সাথে খেলার ছলে ক্রিকেট ম্যাচ তৈরি করতো এবং সেই ম্যাচে বিজয়ী হলে ১০,০০০ টাকা নিধারিত করতো সে।
গরীব, অভুক্ত বাচ্চাগুলো সারাদিন খেটেখুটে বিকেলে খেলতে আসতো।উশান তখন এক টিমে থাকতো বাচ্চা গুলো অন্য টিমে। নিজে ক্রিকেটে বেষ্ট হওয়া সত্বেও ইচ্ছে করে হেরে গিয়ে টাকা গুলো দিতো সেই বাচ্চাদের।
অতঃপর চট্রগ্রামের অলি – গলি ঘুরে বেড়ানো তার স্বাচ্ছন্দে। এলাকার মেয়েদের বড় ভাই হিসেবে সে ভীষণ পরিচিত। মেয়েদের যারা ডিস্টার্ব করছে পরদিন তাদের হাত – পা ভাঙা অবস্থায় হসপিটালে দেখা মিলছে।
আলিশান, আভিজাত্যে মোড়ানো খানদানে জন্ম নেয়া ব্যাক্তিটির সাধারণ ভাবে চলাফেরা করা যেনো আরেকবার, নতুন করে তার প্রতি আমায় দূর্বল করলো।
উশান দাদু বাড়ি আসতো ছুটিতে। বাকি সময় ঢাকা থেকে পড়ালেখা করতো। সে যখন ছুটিতে দাদু বাড়ি আসতো ঠিক সে সময় ফুপির থেকে বাহানা নিয়ে ছলে – বলে আমি হাজির হতাম চট্রগ্রাম। লুকিয়ে তাকে দর্শন করে তৃষ্ণা মিটিয়ে আবার ফিরে যেতাম যশোর। তার সাথে তো পরিচয় আমার পাঁচ বছর পার হলো। সকলের সামনে তাকে কৃত্রিম ঘৃণা করা, তাকে চিনতে না পারার অভিনয় হাঁপিয়ে উঠে ক্লান্ত হয়ে অনুভূতি প্রকাশ করে বসি। তবে ভাগ্য হয়তো আমার অন্য কিছু চাচ্ছে। উশানকে আমার থেকে আল্লাহ তায়াল দূরে সরিয়ে দিলো। নিশ্চিত কোনো কারণ আছে হয়তো। তবুও আমি আল্লাহ তায়ালার কাছে চাইবো, যেনো তিনি একবার হলেও আমায় উশানের হৃদয়েশ্বরী হওয়ার সুযোগটা প্রদান করেন।
সময়ঃ ১০ঃ২৩ ( রাত)
তাঈরাত ইমরোজ মীরা।
(অনুভূতি প্রকাশ).
__
ঝকঝকে বিকেল। মিষ্টি রোদ্দুরের আনাগোনা চারপাশে। বসন্তের হটাৎ বর্ষণের ধাপ শেষে আজ দেখা মিললো হলদেটে সূর্যের সতেজ কিরণের। রাস্তায় জমে রয়েছে পানি। পড়েছে কাঁদার আস্তরণ। কাঁদায় পা পিছলে পড়ে যেতে নিতেই বেশ কায়দা করে নিজেকে সামলে নিলো মীরা। দু’হাত ভর্তি তার শপিং ব্যাগ।কাঁদা লেগে যাচ্ছে বোরকায়।কিন্তু হাত মুক্ত না থাকায় বোরকা উঁচু করেও হাঁটা যাচ্ছে না।কি মুশকিল! আগামীকাল রাতে চট্টগ্রাম যাচ্ছে সে। সামনে সেমিস্টার ফাইনাল পরিক্ষা। পরিক্ষার পূর্বে মাইন্ড ফ্রেশ করা অতী আবশ্যক। তাই তার এবং রুহির সিদ্ধান্ত পরিক্ষার আগে পরিবারের সাথে সময় কাটাবে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ শপিং মলে গিয়ে মায়ান এবং বাবার জন্য টুকিটাকি কেনাকাটা করেছে মীরা টিউশনির টাকা দিয়ে।
কর্দমাক্ত রাস্তার ধাপ শেষে পাকা রাস্তায় আসতেই ফুটপাত ধরে হাঁটা শুরু করে মীরা। শা শা শব্দে তার পাশ দিয়ে গাড়ি চলছে। মানুষের কল্লোধ্বনি, আরো কত শব্দ উৎস।সেদিকে তার ধ্যান নেই বিন্দুমাত্র। মীরার ধ্যান – ধারণা জুড়ে এখন ‘ উশান ‘ রয়েছে। বেশ কয়েকদিনের জন্যই চট্টগ্রাম যাচ্ছে সে। লোকটাকে না দেখে কিভাবে থাকবে? যদিও এটাই ভালো। দূরে দূরে থাকা। অভ্যাস করতে হবে না? তপ্তশ্বাস ফেলে এপার্টমেন্ট এড়িয়ায় পা রাখলো মীরা। তৎক্ষনাৎ অদূরের দৃশ্য দেখে তার চোখ দু’টো ছানাবড়া। উশানের পা ধরে বসে আছে একজন মেয়ে। সেদিকে উশান তাকিয়ে বিরক্ত চোখে।
__
উজান স্টেশনে বসে ফাইল ঘাটছে ব্যাস্ত ভঙ্গিতে। কয়েকদিন আগে এক তরুণী খুন হয়েছে। সেই কেসের ইনভেস্টিগেশনের দায়িত্ব এসে পড়েছে তার কাঁধে। ভীষণ ব্যাস্ত সময় পার করছে সে। ক্লান্তিরে তরে নাজেহাল অবস্থা। টেবিলের এক কোণায় অবহেলায় পড়ে থাকা উজানের ফোন হটাৎ কম্পিত হলো। কিয়ৎ নড়বড়ে হয়ে সেদিকে দৃষ্টি ফেলে সে। রুষ্ট’ও হয়। তবে ভাইয়ের ফোন দেখে ভেজা বেড়ালের মতো চুপসে যায় সে। কি আশ্চর্য! বেশিরভাগ পুরুষ সঙ্কিত হয়ে থাকে বউয়ের কাছে। আর সে সঙ্কিত, ভীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে ভাইয়ের কাছে।উজান চটজলদি ফোন রিসিভ করে কানে লাগাল। নয়তো দেখা যাবে এরজন্য ফের উশান তাকে ঠাস করে থাপ্পড় মে’রে বসবে।
-‘ তুই জলদি আমার ফ্লাটে আয় উজান। উমাইশা আপু এসেছে। আপুর অবস্থা ভালো না। আসার পথে আমাদের পারসোনাল ডাক্তারটাকে নিয়ে আসিস। ‘
‘ উমাইশা ‘ নামটা বিদুৎস্পষ্টের মতো উজানের মস্তিষ্কে হানা দিলো। রাগে, ক্ষোভে হাত – পায়ের সকল সবুজ, নীল রঙা শীরা গুলো দাঁড়িয়ে পড়ে টগবগ করে উঠলো। কৃষ্ণ কপালে ছেয়ে থাকা সাড়িঁ সাড়িঁ রগগুলো কম্পমান। রুষ্ট কন্ঠে উজান চেঁচিয়ে বলল,
-‘ মরে যাক ঐ মেয়ে। তুমি তার প্রতি এতো চিন্তিত কেনো হচ্ছো ভাই? জানোনা সে কি করেছে? তোমাকে জানে মে’রে ফেলতে চেয়েছে। ভুলে গেছো সে কার মেয়ে? ‘
উত্তেজনায় চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো উজান। পারলে যেনো এক্ষুনি ফোনের ভিতর দিয়ে হাত বাড়িয়ে উমাইশার গলা চেপে ধরে শ্বাস রোধ করে মে’রে ফেলে। ফোনের এপাশ হতে উশান উজানের উত্তপ্ত মেজাজটাকে ঢের উপলব্ধি করতে পারলো। হতাশায় মৃদু শ্বাস ফেললো। ছেলেটা এতো অধৈর্য, খিটখিটে মেজাজের..!কিভাবে যে পুলিশ হলো আল্লাহ জানে। অতীব শীতল গলায় উশান বলে উঠলো,
-‘ এপার্টমেন্টে ওয়েট করছি তোর জন্য। জলদি আয়। মীরার রুমে আপু আছে। সেখানেই আসিস আর হ্যা পুলিশের ইউনিফর্ম ছাড়া আসবি। ‘
খট করে ফোন কেটে দিলো উশান উজানকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই। ক্ষোভের তাড়নায় হাতের ফোন উজান ছুঁড়ে ফেললো ভূমিতে। তার মস্তিষ্কে এটাই ঢুকছেনা এতো কিছুর পরও উশান কেনো উমাইশা কে পুলিশের হাতে তুলে দিচ্ছে না? কেনো এতো এখনও ভালোবাসা? কেনো এতো দরদ, মায়া?
__
শান্তিনিবাস ভবনের দুই তলায় চার রুমের ফ্লাটটায় ঘোর মৌনতা বিরাজমান। ফ্লাটের এক নির্দিষ্ট কক্ষে উপস্থিত ৭ জনের চেহারায় একেক রকম অনুভূতি ফুটে। একেক রকমের অভিব্যাক্তী বজায় রয়েছে। ৫ জনের কড়া দৃষ্টিপাত পরখ করছে বিছানায় পড়ে থাকা ক্লান্ত, জীর্ণ, দূর্বলতা, অসুস্থতায় আটস্থ এক নারীর প্রতি। সর্বোর্ধ্বে এক পুরুষ। উশান! সে এক মনে তাকিয়ে জানালার কপার গলিয়ে বাহিরে। স্থির সকলে। নিশ্চুপ! মীরার দম বন্ধ হয়ে আসতে চাইলো। হটাৎ সে উঠে দাঁড়িয়ে হাসঁফাসঁ করে বলল,
-‘ আপনারা কেও কফি খাবেন? রাত তো অনেক হলো কিছুই খেলেন না। এটলিষ্ট কফি..?’
উশান, তীব্র, দিগন্ত, উজান। চারটে পুরুষ হয়তো বুঝতে পারলো মীরার মন অবস্থা। মীরাকে স্বাভাবিক করতে তীব্র চমৎকার হেঁসে মিষ্টি কন্ঠে বলল,
-‘ অযথা কষ্ট করতে যাবে কেনো ছোট আপু? বসো তুমি। আমিই বানাই। ‘
মীরা তাড়াহুড়ো করে উঠে দাঁড়িয়ে কৃত্রিম হেঁসে বলল,
-‘ না, না ভাইয়া।কষ্ট কিসের? আপনারা আমার বাসার মেহমান। মেহমাদের খাতিরদারি করতে কখনো কষ্ট হয়না। বসুন আসছি। এ্যাই রুহি আয় এদিকে একটু। ‘
রুহি হুড়মুড়িয়ে উঠে দাঁড়িয়ে ছুটলো বাহিরে মীরাকে ফেলেই। তার মতো ছটফটে নারীর এতক্ষণ চুপটি করে বসে থাকা সহজ ব্যাপার ছিলো না বৈকি। মীরা সৌজন্যতার হাসি দিয়ে বেড়িয়ে আসলো রুম থেকে।
কফি বানাচ্ছে মীরা। আর তার পাশে রুহি বসে কাজুবাদাম চিবুচ্ছে। অমনোযোগী হয়ে মীরা ভাবনা লগ্নে মগ্ন। সে যখন এপার্টমেন্টে ফিরলো তখন খুব সম্ভবত সায়াহ্নের প্রহর নেমেছে ধরণীতে। উশানের পা ধরে বসেছিলো তার বোন উমাইশা। কোনো মতে উশান উমাইশা কে সেখান থেকে উঠিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে মীরাকে মানিয়ে উমাইশা কে নিয়ে আসে মীরার ফ্লাটে। নিজের ফ্লাট রেখে উমাইশা কে কেনো এখানে আনলো উশান? তা জানে না মীরা। কিয়ংদশ বাদেই ডাক্তার সাথে নিয়ে উপস্থিত হয়েছে উজান। তীব্র, দিগন্ত ছিলো আগে থেকেই। ডাক্তার উমাইশা কে চেকাপ করে বলল, উমাইশা দীর্ঘ দিন ধরে ড্রাগ দেয়া হচ্ছে। দীর্ঘদিন বলতে কিশোরী বয়স থেকে। অর্থাৎ উমাইশা যখন বয়ঃসন্ধিতে পা রাখলো তখন। বয়স সম্ভবত ১২ কিংবা ১৩। তখন থেকে উমাইশা কে কড়া ডোজের ড্রাগ দিয়ে দিয়ে মস্তিষ্ক কন্ট্রোলে নেয়া হয়েছে। এটা কার কাজ? জানা নেই। উমাইশা হয়তো বলতো পারবে। তবে ঘুমের ঔষধের ফলস্বরূপ উমাইশা ৬ টি ছটফট করা মানুষকে চিন্তায় রেখে ঘুমে মত্ত।
ড্রাগ দেয়ার ফলস্বরূপ উমাইশা দিনে দিনে হয়েছে রোগা। শরীরে বেঁধেছে বিভিন্ন রকম রোগ। এসব সারাতে গেলে বছর খানেক সময় লাগবে। চেহারার অবস্থা বিদঘুটে তার।মাঝখানে গায়েভ ছিলো সে। কই ছিলো? কেও জানেনা। খবর রাখেনি। মাঝে একবার রিলেশনে জরীয়েছিলো উমাইশা। তারপর বাড়িতে বলেছিলো বিয়ের কথা। রাজি হয়নি পরিবার। তার কয়েকদিন বাদে ছেলে সহ উমাইশা গায়েভ।সবাই ধরেই নিয়েছিলো উমাইশা ছেলেটার সঙ্গে পালিয়েছে। ঊষা লজ্জায় মেয়ের খোঁজ করেনি। উশান, উজান তখন ছোট। আয়মান দেশের বাহিরে। ফারদিন অসুস্থ। আর কে খুঁজবে তাকে? তারপর তো কেটে গেলো বহু বছর।
মীরা ট্রে তে কফিমগ সাজিয়ে রুমে প্রবেশ করলো। সবাইকে কফি দেয়ার পর সকলের মুখে বিভিন্ন রকম চমৎকার প্রশংসা শুনে মীরার প্রথম ভারী লজ্জা লাগলো। কিন্তু তারপর যখন দেখলো উশান তার দেয়া কফির মগটা ছুঁয়ে অব্দি দেখেনি উল্টো নাকের কাছে এনে নাকমুখ সিটকে ফেলে দিয়েছে জানালা দিয়ে তখন মীরার নেত্র দু’টো জ্বলজ্বল করে উঠলো। উশানের কান্ড দেখেনি কেও। দেখলে খবর ছিলো। বিশেষ করে রুহি দেখলে উশানের বারোটা বাজিয়ে ছাড়তো। তার বোন সমেত বান্ধবী কে কষ্ট দেয়া? হুহ্!
উশান যখন বিড়াল পায়ে বেলকনিতে চলে গেলো। মীরা সুযোগ বুঝে তখন কেটে পড়লো আড্ডা মহল থেকে। উপস্থিত হলো বেলকনিতে। ধীরে দরজা লাগিয়ে এসে দাঁড়ালো উশানের পেছনে। কর্কশ কন্ঠে বলল,
-‘ মানুষের বাসায় আসলে সৌজন্যতা, ভদ্রতা পালন করতে হয় জানেন না? কফি খাবেন না তো রেখে দিতেন। নাক সিটকেঁ ফেলে দেয়ার কি ছিলো? আপনি একজন চূড়ান্ত মাত্রার অসভ্য এবং অভদ্র লোক। ‘
মীরা প্রস্থান করলো তৎক্ষনাৎ। উশান তার পিছে লুকিয়ে রাখা কফি মগটা সামনে আনলো। ঠান্ডা হয়ে যাওয়া কফি গ্রোগ্রাসে গিলে হাত দ্বারা ওষ্ঠাধর মুছে রুমে চলল।
চলবে…