হৃদয়েশ্বরী #লেখিকাঃসাদিয়া মেহরুজ দোলা #পর্ব-২০

0
54

#হৃদয়েশ্বরী
#লেখিকাঃসাদিয়া মেহরুজ দোলা
#পর্ব-২০
__

-‘ আপা উঠো আপা! তোমার বর এসেছে। বাবা বলেছে তোমাকে বিয়ে দিয়ে দিবে। তাই বর নিয়ে এসেছে। ‘

মায়ানের চঞ্চল কন্ঠস্বর। মীরার ধ্যান নেই। ও প্রচন্ড ঘুমকাতুরে। একবার ঘুমিয়ে পড়লে দিন- দুনিয়ার খোঁজ থাকেনা। মায়ান হতাশ হলো। এভাবে ডাকলে তার আপা কিছুতেই উঠবেনা জানে সে। এদিকে মাহদি তাকে দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছে মীরাকে ঘুম থেকে উঠানোর জন্য। ছোট্ট হলেও মায়ান দায়িত্বে হেলাফেলা করেনা কখনো। মায়ান বিছানা থেকে নামলো।বেড সাইড টেবিল হতে পানি ভর্তি গ্লাস হাতে নিলো সে।গ্লাসের সবটুকু পানি ঢেলে দিলো মীরার মুখোশ্রীতে। বেজায় বিরক্তি নিয়ে চক্ষু জোড়া উন্মুক্ত করলো এবার মীরা। সঙ্গে সঙ্গে মায়ান লাফিয়ে উঠে হাতে তালি দিলো। হৃষ্টচিত্তে বলল,

-‘ আপা উঠেছে! আপা উঠেছে! ‘

মীরা গর্জে উঠে বলল, ‘ এক থাপ্পড় লাগাবো বেয়াদব ছেলে। এভাবে পানি ঢাললি কেনো? ‘

-‘ বাবা তোমার জন্য বর এনেছে আপা। ‘

মীরা বিস্ফোরিত চোখে তাকালো।বাবা তাহলে সত্যিই পাত্রপক্ষ নিয়ে হাজির হয়েছে?চট্টগ্রাম আসার পূর্বে মাহদি বারংবার বিয়ের কথা বলছিল। মীরা বিশেষ পাত্তা দেয়নি। না ও করেনি বাবাকে। সেই সাধ্য নেই তার। মাহদিকে যথেষ্ট সম্মান এবং ভালোবাসা মীরা। বাবার ইচ্ছেতে না বলার কাবিল তার নেই।
আজ ভোরে ফিরেছে নিজের বাসায় মীরা। উশান, তীব্র, উমাইশা, দিগন্ত! তারা চারজন গিয়েছে উশান এর দাদু বাড়ি। মীরা ধাতস্থ করলো নিজেকে।জিজ্ঞেস করলো,

-‘ রুহি কই? ওকে ডেকে নিয়ে আয় তো মায়ান। আর বাবা কি সত্যিই পাত্রপক্ষ নিয়ে এসেছে? ‘

মায়ান চমকালো। ‘ পাত্রপক্ষ ‘ শব্দটা তার অভিধানে নতুন। ঠোঁট উল্টে প্রশ্ন করলো,

-‘ পা..ত্র..প..ক্ষ! মানে কি আপু? ‘

-‘ গাধা ছেলে একটা। যাহ্ এখান থেকে। রুহিকে ডেকে নিয়ে আয়। ‘

মীরার ধমক শুনে রুমের বাহিরে ছুট লাগালো মায়ান। কিয়ৎক্ষণের মাঝেই রুহিকে ঠেলেঠুলে এনে মীরার রুমে প্রবেশ করিয়ে আবার সে ছুটে গেলো। আপার সামনে থাকা যাবেনা। আপা এখন ক্ষেপে আছে! মায়ানের যাওয়ার প্রতি দৃষ্টি দিয়ে মীরা উঁচু স্বরে বলল,

-‘ আস্তে যা মায়ান! পড়ে যাবি তো। ‘

রুহি এসে হাত পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে মীরার পাশে শুয়ে পড়লো। মীরার গা থেকে কম্বল টেনে নিজেকে মুড়িয়ে বলল,

-‘ কি হয়েছে? ডাকলি কেনো?’

-‘ বাবা কি সত্যিই পাত্রপক্ষ হাজির করেছে? ‘

-‘ হাজির করেছে মানে কি? বিয়ের কথাও পাকা করে ফেলেছে মনেহয়। পাত্রপক্ষ আগেই দেখেছে তোকে। আজ শুধু স্ব-চোখে দেখতে এসেছে। তোর জামাইটা বোকা বোকা টাইপ। তোর সাথে মানাবে না। আবার জানস বোকাটা কি করে? ব্যাবসা! মানে এই লোক কেমনে যে ব্যাবসা করতেছে বুঝলাম না।’

মীরা থম মেরে বসে। এদিকে রুহি পাত্রের ইতিহাস খুলে বসেছে। এ টু জেট! সবকিছুই বলছে। মীরার ধ্যান নেই সেদিকে। সে ভাবছে অন্যকিছু। আচানক বলে উঠলো,

-‘ বিয়েটা ভাঙতে হবে রুহি। ‘

– ‘ উশান ভাইয়ের জন্য ভাঙতে চাচ্ছিস বিয়ে? ‘

-‘ নাহ! নিজের জন্য। ‘

-‘ মানে?’

মীরা দম নিলো লম্বা করে। বলল,

-‘ লাস্ট সেমিস্টার তো শেষই! মাস্টার্স কমপ্লিট করবো আমি যশোরে গিয়ে। প্রস্তুতি নেয়া শেষ। আমি যশোরে যেতে চাই রুহি। আম্মুর সাথে কতোশতো সৃতি আমার যশোরে রয়েছে। চট্টগ্রাম তো অল্প কয়েকদিন যাবৎ থাকি। আগে আম্মুর সাথে যশোরে থাকতাম। ওখানে গিয়েই আমি ভালো থাকবো। মায়ের সৃতির সাথে। ‘

-‘ আমিও তাইলে ওখানে মাস্টার্স করবো। ওকে? তোকে ছাড়া থাকতে পারবো না। ‘

-‘ আচ্ছা যাস! আগে বাবাকে ম্যানেজ করতে হবে। আমি এতো জলদি বিয়ে করতে চাই না। কিছুদিন নিজের মতো থাকবো। মেন্টালি প্রিপ্রারেশন দরকার না বিয়ের? ‘

__

মীরা তৈরি হলো খুব জলদি। শাড়ী পড়ার ফাঁকে ফাঁকে রুহি তার মুখোশ্রীতে কৃত্রিম প্রসাধনীর পশরা একে দিলো। মেয়েটাকে ধমকেও দমাতে পারলো না মীরা। শেষে ব্যার্থ হয়ে নিজের কাজে মনোযোগী হলো। নীরবতা পালন করা মায়ান হুট করে বলে উঠলো,

-‘ তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে আপা। একদম টিভিতে থাকা নায়িকা গুলোর মতো সুন্দর। সত্যি বলছি! ‘

রুহি, মীরা চোখে হাসলো। রুহি এগিয়ে এসে মায়ানের মাথায় আদুরে ভাবে হাত বুলিয়ে দিলো।মায়ান তাকালো মীরার প্রতি। বোনের মলিন চেহারা দেখে বড্ড মন খারাপ হলো তার। আশ্বাস ভরা কন্ঠে বলল,

-‘ আপা তোমার কি মন খারাপ? মন খারাপ করো না। তোমার শাশুড়ী খুব ভালো। রীনা খানের মতো না। তোমাকে খুব ভালোবাসবে দেখো। ‘

রুহি গলায় শব্দ করে হাসলো। মীরার ওষ্ঠাধর স্থির তখন।ললাটে সুক্ষ্ণ ভাজ! রুহি কোনোমতে হাসি থামিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলো,

-‘ এই ফাজিলের হাড্ডি! হটাৎ করে তুই শাশুড়ী টানলি কেনো? ‘

-‘ আরেহ্ জানোনা? বিয়ের আগে তো মেয়েরা খুব চিন্তায় থাকে তাদের শাশুড়ী রীনা খানের মতো দজ্জাল হবে কিনা তা নিয়ে। আমাকে তোহা ফুপি বলেছে। ‘

মীরা রুষ্ট কন্ঠে শুধালো, ‘ এই তোহা ফুপিও অদ্ভুত এক মানুষ। যার তার কাছে উদ্ভট কথা বলে বসে।তুই একদম তার কাছে যাবিনা মায়ান।’

-‘ আচ্ছা আপা!চলো এখন।বাবা ডাকে তোমাকে। ‘

.
বেজায় বিরক্তি নিয়ে মীরা পুতুলের মতো নড়চড় বিহীন বসে দেড় ঘন্টা যাবৎ। অপেক্ষায় আছে সে কখন তাকে আর পাত্র কে একা কথা বলতে দেয়া হবে এবং সেই ফাঁকে সে বিয়েটা ভেঙে দিবে। মীরা ভেবেছিলো বাবা পাত্রপক্ষ আসার পূর্বে কিছু হলেও বলবে। কিন্তু না! এখানে মাহদি তার অনুমতি ছাড়া বিয়ের তারিখ অব্দি ঠিক করে ফেলেছে। মীরা হাসঁ ফাঁস করে। টানা বসে থাকতে থাকতে পিঠ ব্যাথা করছে তার।

মীরার সম্মুখে বসে পাত্র। পাত্রের নাম আহনাফ৷ লোকটা বারংবার ভূমি হতে চোখ তুলে মীরাকে লাজুল চোখে পরখ করছে। মীরার বিতৃষ্ণা তৈরি হয় অন্তঃকরণে। তেলে চোপচোপ করা চুল গুলো কানের পিঠে গুঁজে দেয়ার বাহানায় আহনাফ আবারো তাকালো মীরার পানে। রুহির কথা অনেকটা সঠিক। লোকটা সহজ, সরল ধরনের। অবশেষে বহুল অপেক্ষার অবসান ঘটে। মাহদি কথার মাঝে ফোড়ন কেটে বলে,

-‘ আমার মেয়েটা একটু চুপচাপ ধরনের। বাহিরের মানুষের সাথে একদমই কথা বলেনা। আপনজনের মাঝে আবার ও এক্সট্রোভার্ট। আপনারা কিছু মনে করবেন না ওর চুপচাপ থাকাতে। আস্তে আস্তে মানিয়ে নিবে। এখন আহনাফের সাথে একটু একান্তে কথা বলুক? ‘

আহনাফের বাবা, মা দু’জনই সায় জানায়। মীরা ছোট্ট করে শ্বাস ফেলে উঠে দাঁড়ায়।তখনই তাকে চমকে দিয়ে উপস্থিত আলোচনা কেন্দ্রে আগমন ঘটে উশানের। দরজা দিয়ে বেশ ভাবসাব নিয়ে দারুণ ভাবে হেঁটে ঢুকছে। মীরা চমকালো! উশানের বেশভূসা তাকে একটুখানির জন্য অন্যমনস্ক করে দিলো। নিজেকে সামলায় মীরা।উশান হেঁটে এসে দাঁড়ালো মাহদির নিকট। ম্লান হেঁসে বলল,

-‘ কেমন আছেন আঙ্কেল? ‘

মাহদি মিষ্টি করে হাসলেন। নম্র কন্ঠে বললেন,

-‘ এইতো আলহামদুলিল্লাহ বাবা। তোমার কি অবস্থা? একদম ঠিক সময়ে এসেছো। কয়েকজন এর সাথে পরিচয় করাবো তোমাকে। ‘

-‘ আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। কাদের সাথে? ‘

-‘ মীরার হবু বরের পরিবার। এদিকে এসো কথা বলো। ‘

মীরা সুক্ষ্ম নজরে তাকালো। নাহ! কোনো পরিবর্তন দেখলো না সে উশানের মুখোশ্রীতে। বরঞ্চ উশানের মুখোশ্রীতে উচ্ছ্বসিত আভাস প্রকাশ পাচ্ছে। মীরা মনে নিজেকেই গা’লি দিলো কয়েকটা। এই লোকের থেকে কিছু আশা করাই পাপ।
উশান একে একে সকলের সাথে কথা বলে আহনাফের সাথে কথা বলায় মশগুল হলো। মীরার কেনো যেনো মনে হলো, উশান একটু বেশিই খুশি। এই মানবের ওষ্ঠাধর কোণে হাসি বেশিক্ষণ লেগে থাকে না। কিন্তু এখন দেখো! হাসি যেনো অধর হতে সরছেই না।
কিয়ৎ বাদে আহনাফ কে নিজের রুমে নিয়ে আসলো। আহনাফ পুরো রুম দেখে হাসি দিয়ে বলল,

-‘ এটা আপনার রুম? বাহ্! বেশ গোছালো তো। ‘

মীরা অন্তঃকরণে কথা বিন্যস্ত করে সাজিয়ে নিলো। দম নিয়ে বলল,

-‘ আহনাফ সাহেব! আপনাকে আমার গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বলার আছে। মনোযোগ দিয়ে শুনবেন।’

-‘জি বলুন।’

-‘আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাচ্ছি না। ইচ্ছুক নই! এমন নয় যে আপনাকে আমার পছন্দ হয়নি। এখানে পছন্দ- অপছন্দের ব্যাপার না। আমি মাস্টার্স করতে যশোরে যাবো। আপনি ব্যাবসা করেন এ শহরে।নিজের ব্যাবসা ফেলে নিশ্চয়ই আমার সাথে অন্য শহরে গিয়ে থাকতে পারবেন না। এবং এটা আমি চাচ্ছিও না। আপনি বিয়েটা কোনো একটা কারণ দেখিয়ে ভেঙে দিন প্লিজ? রিকুয়েষ্ট করছি আপনার কাছে। আমি বলতে পারবে না। বাবা কষ্ট পাবেন যা আমি চাই না৷ বাবা আমাকে বাহিরেও পড়তে যেতে দিবেন না তাই সরাসরি স্কলারশিপের ব্যাপারটা আমি তাকে খুলেও বলতে পারছি না। আমি বিয়ে ভেঙে দিলে আমি কোনোমতে ম্যানেজ করতাম সবকিছু। ‘

গড়গড় করে বলে লম্বা নিঃশ্বাস টানলো মীরা। আহনাফের বিমূঢ় দৃষ্টি। মলিন কন্ঠে বলল,

-‘ কিন্তু আমি যে আপনাকে খুব পছন্দ করে ফেলেছি মীরা। আমার আপনাকে চাই। আমি আপনাকে সুখে রাখবো অনেক। আপনার পড়াশোনার ব্যাপারটাও আমি দেখবো। প্লিজ বিয়েটা ভাঙতে বলবেন না। ‘

-‘ পছন্দের ব্যাক্তিকে যে কাছে রাখতেই হবে এটা কোনো কথা না। পছন্দের মানুষ গুলোর সুখের জন্য একটু স্যাক্রিফাইস করা উচিত না বলুন? আমায় যদি আপনি বিয়ে করেন তাহলে আমি সুখী হবো না মন থেকে। কারণটা জানতে চাইবেন না প্লিজ। বিয়েটা আমি করতে চাচ্ছিনা। ‘

আহনাফ দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। নিষ্প্রাণ নেত্রে তাকিয়ে বলল, ‘ বিয়েটা আমি ভেঙে দিবো মীরা। ভালো থাকবেন। ‘

অতঃপর পদধ্বনির শব্দ গুলো মিলিয়ে গেলো অনিলে। তারপর আগের মতো নিস্তব্ধতা। মীরা রেলিঙে হাত রেখে বাহিরে তাকালো। মিষ্টি দুপুর। নেই রোদের কোনো উত্তাপ। চারিদিকে সতেজতা বিরাজমান। মীরা প্রকৃতিতে ডুব দেয়ার পূর্বে তীক্ষ্ণ শব্দে শ্রবণ করে ভ্রু কুঁচকে নিলো। নিশ্চয়ই শব্দ করে পা ফেলে মায়ান আসছে। পিছন ফিরলো মীরা। মায়ান নয় উশান এসেছে। উশান হেলেদুলে মীরার নিকটবর্তী পৌঁছে বলল,

-‘ বিয়ে করছো ভালো কথা। কিন্তু এই বলদ কেই কেনো? লোকটাকে আস্ত এক আহাম্মক লাগলো। ‘

মীরা ফুঁসে উঠে বলল, ‘ আমার যাকে ইচ্ছে তাকে বিয়ে করবো। আপনার কি তাতে? ‘

-‘ আমার কিছুই না! ‘

-‘ তো?এখানে কি করছেন? ‘

উশান বহির্ভাগে দৃষ্টি ফেললো। বলল,

-‘ উমাইশা আপুকে নিয়ে বাহিরে যাচ্ছি আমরা। পাহাড়ে উঠবো। আপু বলল তোমাকে নিয়ে যেতে। যাবে?’

শক্ত খোলস ফেলে নম্র হলো মীরা। কিয়ৎক্ষণ বাদে বলল,

-‘ যাবো! শুধু আপু বলেছে তাই। ‘

উশান বাঁকা চোখে মীরার প্রতি নজর দিয়ে বলে উঠলো,

-‘ চেঞ্জ করে আসো তাহলে। যেমন পেত্নী সেজেছো, জংলী মানবদের মতো পোশাক পড়েছো! দেখা যাবে তোমাকে নিয়ে জঙ্গলে প্রবেশ করতেই জঙ্গলের পশু-পাখি ভয়ে জ্ঞান হারাবে। আমি একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে অবশ্যই এমন গুরুতর অপরাধমূলক কাজ হতে দিতে পারিনা। ‘

মীরা চটে গেলো ভীষণ। রাগের বশে উশানের রোমশ হাতে খামচি দিয়ে বসলো। উশান আর্তনাদ করে অস্ফুটস্বরে বলল,

-‘ ওহ আল্লাহ! মীরা এটা কি করলে? ‘

-‘ উল্টোপাল্টা কথা বললে খামচি দিবো এবার আপনার গালে। ‘

উশান হাত ধরে কঠিন দৃষ্টিতে তাকালো। মীরা তাচ্ছিল্যের হাসি দেয় তা দেখে। উশানের আহত হাত দেখে তার প্রথমবার কোনোরূপ খারাপ লাগা কাজ করছেনা। বরং প্রশান্তির উৎপত্তি হয়েছে। বদ লোকটার এটাই প্রাপ্য!

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here