হৃদয়েশ্বরী – ৪৯

0
50

#হৃদয়েশ্বরী – ৪৯

-” মীরা তুই এমন বিহেভ করতেছিস যেন উশান ভাই তোরে ফালাইয়া আরো দশটা বিয়ে করছে। বিয়ে করে তাদের নিয়ে হানিমুনে গেছে ঢাকার বাহিরে।আরে মহিলা! তোর জামাই গেছে দেশ রক্ষা করতে, কই তুই খুশি হবি তা না! এমন সন্নাসী সেজে বসে আছস কেন?”

আজগুবি প্রলাপ থামিয়ে টুইঙ্কেল ঘুমিয়েছে বিশ মিনিট হলো। মীরা টুইঙ্কেলের সন্নিকটে বসে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।রুহির করা প্রশ্ন কর্ণকুহরে এসে পৌঁছালেও প্রতিত্তুর করতে ইচ্ছে হলোনা তার।
রুহি ক্ষিপ্ত হয়! রুষ্ঠতায় ছেয়ে থাকা মুখোশ্রী নিয়ে সে ফোন হাতে চলে যায় বারান্দায়।

মীরা মন বিমর্ষ হয়ে। অন্তঃস্থলে একগাদা বিষাক্ততা আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে। সে আজ সকালে তীব্রর হতে বার্তা পেয়েছিল উশান দু’দিন ধরে জঙ্গলে পড়ে আছে। জঙ্গলে থাকাকালীন বৃষ্টিতে ভিজেছিল সে যার দরুন উশান জ্বরাক্রান্ত আজ দুইদিন যাবৎ। খাওয়া নেই, ঘুম নেই, একটুখানি বিশ্রাম অব্দি নেই! উশানের পরিস্থিতি একবার মনে আওড়ালেই মীরার অবস্থা করুন হয়! এই অসুস্থ শরীর নিয়ে গাধার খাটুনি খাটছে। উশান ভালো নেই! অসুস্থ! ব্যাপক ক্লান্ত!কথা গুলো যখন সে আওড়ায় নিভৃতে, নিরবে আপনমনে তখন তার অন্তঃকরণ দুমড়ে মুচড়ে ভেঙে আসে৷ছটফট করে ওঠে বক্ষঃস্থল। শেহজাদা ভালো নেই তার, এরূপ অবস্থায় সে কি করে ভালো থাকে?

ঘড়ির কাটা রাত দশটা ছুঁই ছুঁই! মীরা বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়াল। এগোল বারান্দায়। সেখানে পৌঁছাতেই দেখা মিললো রুহির ঘুমন্ত মুখোশ্রী। বারান্দায় থাকা ছোট্ট বেতের সোফাটায় পা মুড়ে কানে ইয়ারফোন গুঁজে ঘুমিয়ে পড়েছে। মীরা জোড়াল শ্বাস ফেললো। মেয়েটা এতো ফাজিল! যখন দেখবে মীরার মন খারাপ, তখন সেও মন খারাপ করে অন্যত্রে বসে থাকবে।

-” রুহি ওঠ! আমি জানি তুই ঘুমাসনি। ”

কৃত্রিম নিদ্রার পসরা তখনি ভাঙলোনা। রুহি বেশ চতুরতার সাথে এমন ভাং করলো যেনো সে সত্যিই ঘুমিয়ে পড়েছিল।আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসে বলল,

-” কান্না কাটি শেষ জান?”

আকাশ’সম বিরক্তি নিয়ে নাক মুখ কুঁচকায় মীরা। জিজ্ঞেস করে,

-” মারবো এক চড়! কাদঁছিল কে? ”

রুহি ভেংচি কেটে প্রতিত্তুর করল,

-” হুহ ঢং! সত্য তো শিকার করবানা। রাখো, চল খেতে যাই। আজকে আমি রান্না করছি! ”

মীরা বিমূঢ়! স্তব্ধ নেত্রে রুহিকে দেখলো। কিয়ৎক্ষণ পর স্তব্ধতার লেশ কাটিয়ে বলল,

-” তুই রান্না করেছিস? ও মাই গড! ও মাই গড! কি ছাইপাঁশ রেঁধেছিস কে জানে? ”

-” ছাইপাঁশ রান্না করিনাই। চুপ! আঙ্কেল আমার রান্না খেয়ে কতো তারিফ করছে জানস? ”

মীরা সন্দিহান চোখে তাকাল। তার বিশ্বাস হচ্ছে না কিছুতেই রুহির বলা কথা। যে মেয়ে চিনি কে লবণ বলে, হলুদ কে মরিচ বলে সে করবে রান্না? আবার সে রান্না খেয়ে মাহদি প্রশংসা করেছে? এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? বলা বাহুল্য প্রশংসা করতেই পারে। রুহির মন রাখতে।

মীরা কিচেনে যাচ্ছিল লম্বা কদম ফেলে। তার পিছে রুহিও ছুটেছে।তবে মাঝপথে এসে থামলো দু’জনই।কলিংবেল বেজেছে। তাও এতো রাতে! মীরা – রুহি দু’জনই হতভম্ব! এতো রাতে আসলোটা কে? মাহদি তো অবশ্যই আসবে না। সে জরুরি কাজে চট্টগ্রাম গিয়েছে রাত আটটার দিকে।

-” কে আসলোরে মীরা? ”

মীরা ধমকে বলল, ” তুই যেখানে আমিও সেখানে। আমি কি করে জানবো? আশ্চর্য! আয় দেখি। ”

রুহি মূর্ছা বনে মীরার পেছনে হাঁটা ধরল। দরজা খুলতেই দু’জনের দর্শন হলো উজানকে। উজানকে বিধ্বস্ত দেখাল ভীষণ।এলোমেলো চুল, কাঁপাটে অধর জোড়া। মীরা চিন্তিত গলায় প্রশ্ন করল,

-” ভাইয়া!কি হয়েছে?আপনি এতো রাতে এখানে?”

উজান হাসঁফাসঁ করে বলে উঠলো,

-” হসপিটাল যেতে হবে ভাবী। জলদি রেডি হয়ে এসো। ”

মীরার অন্তরাল বেসামাল হলো। আবার কার কি হলো?

-“কেনো ভাইয়া?কি হয়েছে? ” মীরার বিচলিত কন্ঠ।

-” বা..বাবা, বাবা তোমাকে দেখতে চাচ্ছে আপু।”

-” আয়মান আঙ্কেল? আঙ্কেল না দেশের বাহিরে ছিলেন? ”

-” হ্যা। চারমাস হলো ফিরেছে বাংলাদেশে। এতদিন স্কয়ার হসপিটালে চিকিৎসাধীন ছিল। বাবার ক্যা’ন্সা’র হয়েছে ভাবী। লাস্ট স্টেজ! যেকোনো সময় যেকোনো কিছু হয়ে যেতে পারে। ”
______

-” স্যার আপনার কি মনে হয়না সিয়া মেয়েটার মধ্যে কোনো ঘাপলা আছে? না মানে স্যার, এতো সহজে মাত্র একবার বলায় আমাদেরকে সাহায্য করতে রাজি হয়ে গেলো যে? ”

উশান গায়ে মাটি লাগাচ্ছিল। বৃষ্টি ভেজা মাটি। মাত্র করা সায়াশের প্রশ্নে সে রক্তিম নেত্রে তার প্রতি দৃষ্টি ফেলল। গত দু’দিনের টানা জ্বরের প্রকোপে তার আঁখি দু’টো রক্তিম হয়ে রয়েছে। স্বাভাবিক হওয়ার নামগন্ধ নেই। উশানের এরূপ চাহনিতে প্রথমত ভয় পেলো সায়াশ।পরবর্তীতে সে নিজেকে ধাতস্থ করল। সায়াশ উশানের টিমের একজন সদস্য। সে উশানের জুনিয়র।

ভাঙা গলায় জোর টানলো উশান। কন্ঠে মেশালো রুষ্ঠতা। বলে উঠলো,

-” আর একটা বার যদি এই কথা তোমার মুখ দিয়ে বের হয়! তাহলে আমার থেকে খারাপ আর কেও হবেনা। বুঝতে পেরেছো? সিয়ার ব্যাপারটা আমি ভালো বুঝবো। ”

সায়াশ ঘন ঘন মাথা দোলালো। জবাব দিল,

-” জি স্যার। আর বলবোনা। ”

বিরক্তি কাটিয়ে মুখোশ্রীতে কাঁদার প্রলেপ টানলো উশান। সায়াশের ওপর সে বিরক্ত! চরম মাপের বিরক্ত! ছেলেটা সেই কখন থেকে একই কথা বারবার বলে যাচ্ছে। সায়াশ এতো কেনো অবুঝ? উশান কি আর এমনি – তেমনি মানুষের কথা গ্রাহ্য করে নাকি আশ্চর্য!

সায়াশ কৌতূহল ভরা চোখে উশানের কার্যকলাপ দেখছিল। প্রশ্ন ছিল তার অন্তঃকরণে বেশকিছু।তবে তা জিজ্ঞেস করার সাহসে কুলালো না। কিয়ৎক্ষণ বাদে উশান শুধালো,

-” কাঁদা লাগাও গায়ে জলদি! ”

সায়াশ সরল গলায় প্রশ্ন করল,

-” কেনো স্যার? ”

উশান পুনরায় গলা শুকিয়ে কাঠ করা দৃষ্টিপাত ফেলল সায়াশের পানে। সায়াশ হন্তদন্ত হয়ে উঠলো সেই দৃষ্টি দর্শন করে। সে দু’হাত দিয়ে কাঁদা না লাগিয়ে মাটিতে গড়াগড়ি খেলো। পরপর ভূমি হতে উঠে এসে বলল,

-” লাগিয়েছি স্যার। ”

-” চলো। ” উশানের ভারী কন্ঠ।

উশান প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নেয়ার তাগিদে সম্মুখে বহমান ছোট্ট কামড়ারটার দিকে এগোল। কামড়ার দরজা উন্মুক্ত করতেই তার চক্ষু সম্মুখে দেখা মিললো সিয়ার ঘুমন্ত মুখোশ্রী। মেয়েটা মেঝেতেই গুটিশুটি মেরে ঘুমিয়ে গেছে। মুখোশ্রীতে ক্লান্তির ছাপঁ। মেয়েটা কি খুব বেশি ক্লান্ত?

উশান দৃষ্টি ফেরালো। কামড়ায় বহমান একজন পুলিশ অফিসারকে ডাক দিল সে। সে আসতেই গলার স্বর খাদে নামিয়ে বলল,

-” সিয়াকে দেখে রাখার, ওর নিরাপত্তা দেয়ার দায়িত্ব আপনার। খেয়াল রাখবেন ওর আমি না আসা অব্দি। ঘুম থেকে উঠলে খেতে দিবেন। আর এই রুমে যেনো আপাতত কেও না ঢুকে। ও ঘুমোচ্ছে ঘুমাক! ”

পুলিশ অফিসার অতীব দ্রুত মাথা নাড়ল। বলল,

-” জি স্যার। টেনশন নিবেন না। আমি খেয়াল রাখব তার। ”

উশান দ্রুত পদে বেড়িয়ে আসল জাহাজ থেকে। এই জাহাজটা আনা হয়েছে সন্ত্রা’সীদের জিম্মিতে থাকা মানুষদের জন্য। তাদের উদ্ধার করে এই জাহাজে করেই শহরে পাঠানো হবে। জাহাজটা সমুদ্র বন্দরের দৃষ্টিসীমানার অনতিদূরে রাখা হয়েছে। যাতে কারো নজরে না পড়ে। সন্ত্রা’সীদের নজরে পড়বে না নিশ্চিত। কারণ তারা মাসে একবার নিজেদের আস্তানা থেকে বের হয়। হা’মলা করার পর দুইমাস বাদে বের হয়। এই তথ্য সিয়ার হতে পাওয়া। উশান, সায়াশসহ আরো কয়েকজন আপাতত যাচ্ছে জঙ্গলের মাঝে সন্ত্রা’সীদের দেওয়া সিকিউরিটি নষ্ট করতে। সিকিউরিটি সিস্টেম পুরোটা অকেজো করার পর মিশন শুরু হবে। সন্ত্রা’সীরা বাহিরে কোন গার্ড বা কাওকে পাহারা দেয়ার জন্য রাখেনি। কড়া সিকিউরিটি সিস্টেম তৈরি করেছে তারা। যার দরুন এই পথ দিয়ে কেও পদচারণ করলে তার মৃ’ত্যু নিশ্চিত।
উশানের আদেশে বাকি সবাই নিজেদের গায়ে মাটি লাগিয়েছে। সিক্ত মাটি! এই কর্মটি করার ফলস্বরূপ তাদের বর্তমান কাজটি করা অতীব সহজতর হবে। এখানকার বিশাল বিশাল গাছে কিছু স্ক্যানার আছে যা মানবদেহ শনাক্ত করে মানবদেহের ওপর লেজার রশ্মি নিক্ষেপ করে।লেজার রশ্মি নিক্ষেপ করার ফলে মানবদেহের উপরিভাগ যেমন তৎক্ষনাৎ পুড়ে পঁচে যেতে শুরু করে তেমনি মানবদেহের ভেতরের কোষকলা নষ্ট করে সেখানে ক্যা’ন্সা’রের কোষকলা সৃষ্টি করে। গায়ে মাটি লাগালে স্ক্যানার তেমন দ্রুত, কঠোর ভাবে কার্যকলাপ হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
উশান মাটির সঙ্গে মিশে মিশে এগোচ্ছে। তাকে অনুসরণ করছে আসছে পিছনের সবাই। লেজার রশ্মি ধ্বংস করার ক্রিয়াকলাপ কিভাবে করতে হয় তা উশান সবাইকে আগেই বুঝিয়ে এসেছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এক একটা লেজার রশ্মির মূল কেন্দ্র বিন্দু অকেজো করা হচ্ছে। সিকিউরিটি সিস্টেম নষ্ট করার পরও সন্ত্রা’সীদের কাছে কোনো বার্তা পৌঁছাবে না। তার ব্যাবস্থা সিয়া পূর্ব হতেই করে দিয়েছে।

প্রায় একঘন্টার মতো সময় লাগল সকল প্রকার সিকিউরিটি নষ্ট করতে। মূল আস্তানার সামনে দাঁড়িয়ে উশান বার্তা পাঠালো তার টিমকে এবং অপেক্ষাকৃত ২০,০০০ পুলিশ সদস্যকে। তাদের কাল রাতেই এখানে আনা হয়েছে। সন্ত্রা’সীদলে প্রায় ৩০ হাজারের মতো মানুষ। তারা পুরো বিশ বছর সময় নিয়ে নিজেদের দল বিশাল বড় করেছে। উশানের প্রথম পদক্ষেপ এখন বন্দী মানুষদের মুক্ত করা। সিয়ার মতামত প্রেক্ষিতে, পরিত্যাক্ত ভবনটার ডান দিকে গ্যারেজ রয়েছে।গ্যারেজের নিচের ভূমিতে বন্দী রয়েছে হাজারো মানুষ।উশান এবং কয়েকজন পরিকল্পনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে মাটি খুঁড়ে সেখানে প্রবেশ করা হবে। প্রবেশমুখের উপরিভাগে দরজা রয়েছে। গোপন দরজা। সেই গোপন দরজা দিয়েই বন্দী মানুষ গুলোকে বাহিরে নিয়ে আসতে হবে।তবে পরিকল্পনা করার সময় বলা যতোটা সহজ হয়েছে তার থেকেও দ্বিগুণ কঠিন হতে চলেছে যে এই পদক্ষেপ তা সবার নিকট পূর্ণ নিশ্চিত!

________

তুমুল গো’লাগু’লি একাধারে, বো’মা বিস্ফোরণ, শুষ্ক ভূমিতে হাজারো মানুষের রক্তাক্ত প্রাণহীন লাশ!দীর্ঘ ২৭ ঘন্টার একটানা মিশনে অবশেষে স্থিতিশীলতা এসেছে কিছুটা। সন্ত্রা’সীদের লাশ দিয়ে স্তুপ তৈরি হয়েছে চারিপাশে। সেখানে অবশ্য অনেক নির্ভীক পুলিশ অফিসারের মৃ’ত্যদেহও রয়েছে। তাদের লা’শ সেখান হতে আলাদা করে অন্যত্রে নেয়া হচ্ছে। দীর্ঘ দিনের এই স’ন্ত্রা’সীদের প্রকোপ কাটল বলে।বিভিন্ন সংবাদ গণমাধ্যমের বর্তমান সময়ের হেডলাইন হিসেবে এটাই দেখানো হচ্ছে।

উশান চারিপাশ দেখছে। তার কেন যেনো মনে হচ্ছে এখনো সবকিছু হাতের নাগালে আসেনি। আহত দেহ নিয়ে সে আশেপাশে সুক্ষ্ম নজরে পর্যবেক্ষণ করছে। সমুদ্রে বন্দরে তখন উদ্ধার করা বিশ হাজার মানুষ। সন্ত্রা’সী সংখ্যা হাজার খানেক ছিল। তাদের বেশিরভাগকে মে’রে ফেলা হয়েছে তৎক্ষনাৎ। তবে মূল হোতা, যারা এই পুরো সন্ত্রা’সী দলটাকে পরিচালনা করে তাদের সঙ্গগোপণে আটক করা হয়েছে। বেশ কিছু সংখ্যাক সন্ত্রা’সীকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। উশান যার ভয় করছিল তাই হলো। এই মা’ফিয়া টিম অত্যান্ত চতুর। তাদেরই একাংশ এখন এক স্থানে লুকিয়ে জাহাজে বো’মা নিক্ষেপ করার পায়তারা করছে। তাদের অবস্থান শনাক্ত করা যায়নি এখনো। তবে যারা বো’মা নিক্ষেপ করার পায়তারা করছে তারা অত্যান্ত নিখুঁত বুদ্ধিতে এই বার্তাটি এয়ার ফোর্সের নিকট প্রেরণ করেছে। উশানের টিমের একজন দৌড়ে আসল উশানের নিকট। হন্তদন্ত হয়ে বলল,

-” স্যার! ওদের দলের একাংশকে আমার এখনো খুঁজে পাইনি স্যার। ওরা এখন বো’মা হা’ম’লা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে জাহাজে। জাহাজটাও দ্রুত চালানো সম্ভব হচ্ছে না স্যার। অন্যদিকে পাঠানোরও সুযোগ নেই বললেই চলে। এখন কি করবো স্যার? জাহাজে হাজারো অসহায় মানুষ রয়েছে। ওরা মারা যাবে স্যার এই হা’মলা করা হলে। ”

উশান কপালে দুই আঙুল ঘষেঁ ভাবল কিছুক্ষণ। বলে উঠলো,

-” বো’মটা জাহাজ পর্যন্ত যেতে দেওয়া যাবেনা। তার আগেই এমন কিছু বো’মার সামনে দিতে হবে যাতে করে বো’মের সকল শক্তি সেখানেই শেষ হয়ে যায়। বো’ম তো আকাশপথেই ওদিকে ছুটবে। তাহলে, ওকে! আমি দেখছি ব্যাপারটা। ”

উশান ছুটলো!হেলিকপ্টারে বসে পাইলট কে নির্দেশ দিল তাকে একা ছাড়তে। পাইলট বেড়িয়ে যেতেই উশান হেলিকপ্টার এবার নিজে চালানো শুরু করে। পেছন থেকে সায়াশ চেঁচিয়ে বলল,

-” স্যার! স্যার যাবেনা স্যার। আপনার বদলে আমি যাই স্যার। দয়া করে নিজের প্রাণ দিবেন না স্যার। আপনার বদলে আমি মা’রা যাই তবুও আপনি সুস্থ, স্বাভাবিক থাকুন দয়া করে। ”

উশান সায়াশের প্রতি বিরক্তিকর দৃষ্টিপাত ফেলল। সায়াশ ছুটে আসছিলো তখন তড়িঘড়ি করে। তার পূর্বেই উশান হেলিকপ্টার নিয়ে ছুটেছে আকাশপথে, পেছনে ফেলে গিয়েছে হন্তদন্ত, ব্যাকুল ছটফট করা সায়াশকে। সমুদ্রের মাঝামাঝি যখন হেলিকপ্টার নিয়ে উশান পৌঁছালো ঠিক তখনি বো’মা নিক্ষেপ করা হয় জাহাজকে উদ্দেশ্য করে। উশান তৎক্ষনাৎ হেলিকপ্টার সেই বো’মের সামনে নিয়ে যায়।মূর্হতে বো’ম গিয়ে ছিটকে লাগে জাহাজের বদলে উশানের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হেলিকপ্টারে। জাহাজের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি! তবে লহমায় চোখের সামনে বি’স্ফো’রণ ঘটেছে হেলিকপ্টারে’র। পুলিশের আওতায় আসল তখন বো’মা নিক্ষেপ করা সন্ত্রা’সীরা। তাদেরকে তৎক্ষনাৎ সেখানেই ক্র’স’ফা’য়া’র করে মে’রে ফেলা হয়। সায়াশ নিষ্প্রাণ নেত্রে তাকিয়ে। উশান! তাহলে ছেলেটা কি বিসর্জন দিলো তার প্রাণ? সায়াশের আচানক খেয়াল হলো বো’ম যখন হেলিকপ্টার স্পর্শ করছিল তার আগ মূর্হতে হেলিকপ্টার থেকে কিছু পড়ে গিয়েছিল। তা ঠিক কি ছিলো? তা তার বোধগম্য হলোনা। তবে তার ছটফট, উচাটন মন বারংবার বলছে সে উশান ছিলো!উশান রেজওয়ান।

চলবে~

~#সাদিয়া_মেহেরুজ_দোলা~

[ রিচেইক করিনি। সবাই রেসপন্স করবেন তাহলে পরবর্তী পর্ব দ্রুত দেয়ার চেষ্টা করবো। গঠনমূলক মন্তব্য করার চেষ্টা করবেন। গঠনমূলক মন্তব্যকারীদের নিয়ে তাদের মন্তব্যসহ আমার গ্রুপে পোস্ট করা হবে। ]

গ্রুপ- Sadiya’s Fiction❤️

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here