তেজস্ক্রিয়_রক্তধ্বনি #লেখিকা_রিয়া_খান #পর্ব_৪

0
16

#তেজস্ক্রিয়_রক্তধ্বনি
#লেখিকা_রিয়া_খান
#পর্ব_৪

তীব্র কোনো উত্তর না দিয়ে রাগী নিশ্বাস ছাড়লো। পুনরায় আবার চেয়ার টেনে বসলো তীব্র। বোতল থেকে পানি খেয়ে কিছুক্ষণ ভেবে চিন্তে উত্তর দিলো,
‘‘ঠিক আছে আমি কেসটা সলভ করবো। কিন্তু শর্ত আছে আমার। যদি আপনারা রাজি থাকেন তো আমি আছি না হলে নাই।’’
‘‘আমরা তোমার সব শর্তে রাজি। তুমি শুধু কেসটা হাতে নাও।’’
‘‘শর্তটা হলো, আমি শুধু কেস সলভ করবো। একদম আসামী শনাক্তকরণের জন্য যা যা করতে হয়, সব ফাঁদের প্ল্যান আমি করবো। শুধু এইটুকুই আমি করবো এর বেশি না, এরপর আপনারা ক্রিমিনাল ধরবেন নাকি ছুঁবেন আপনাদের ব্যাপার।আমার কাজ শেষ দিয়েই আমি চলে যাবো, আমাকে আর কোনো প্রকার পিছু ডাকা যাবে না। আসামী যদি মরেও যায় আমাকে ডাকা যাবে না, এই কেসটাতে আমার কাজ ওখানেই ফুলস্টপ!’’
‘‘এতোটুকুই আমাদের জন্য সোনা সোহাগা তীব্র। থ্যাংকস এ লট! আমাদের প্রস্তাবে রাজি হওয়ার জন্য ।’’
‘‘ওয়েলকাম!’’
ওসি মোতালেব হোসেনের দিকে তাকিয়ে তীব্র বলল,
‘‘আর আপনি কেসটার ডিটেইলস নিয়ে আমার কেবিনে আসুন।’’
‘‘ওকে স্যার.’’
তীব্র মাথা গরম করে ডিসিশন নিয়ে সবার সামনে ভাষণ দিয়ে নিজের কেবিনে গেলো, তীব্রর পেছনে পেছনে গেলো মুতালেব হোসেন।
‘‘বলুন আপনার কাছে কি কি এভিডেন্স আছে। ’’
‘‘স্যার আমার কাছে বলতে ডিপার্টমেন্টে একজন আছে যে কেসটা নিয়ে প্রচুর পড়াশোনা করেছে, কিন্তু দুর্ভাগ্য সে কিছুই উদঘাটন করতে পারে নি।’’
‘‘কে সে?’’
‘‘ এ এস আই রাসেল মন্ডল।’’
‘‘ডেকে পাঠান তাকে।’’
‘‘ওকে স্যার একটু ওয়েট করুন।’’
মুতালেব হোসেন ফোনে কল ডায়াল করতে করতে তীব্রর কেবিন থেকে বেরিয়ে গেল।
এই সুযোগে প্রবেশ করল ইরফান শেখ।
‘‘আপনার কি চাই এখানে?’’
‘‘স্যার আমাকে মোশারফ স্যার পাঠিয়েছেন ইনিভেস্টিগেশনের সহায়ক হিসেবে।’’
‘‘কিন্তু আমি তো কোনো সহায়ক চাই নি, একমাত্র মুতালেব সাহেবকে ছাড়া।’’
‘‘মানে স্যার আপনি ক্রিমিনাল শনাক্ত করার পর পর ই আমি কাজে লাগবো।’’
‘‘তাহলে এখন এসেছেন কেনো? তখন আসলেই তো হতো।’’
‘‘যদি আগে থেকে থাকি তাহলে তো আমার কাজে সুবিধা হবে তাই না?’’
তীব্র ভ্রু বাঁকিয়ে তাকিয়ে রইল, কিছু বললো না ইরফানকে। তীব্র নিজের চেয়ারে বসে টেবিলে থাকা টেলিফোনটা হাতে নিয়ে কাউকে কল দিলো,
‘‘অই মামুন ’’
অপর পাশ থেকে উত্তর দিলো,
‘‘জি স্যার?’’
‘‘ঠান্ডা বরফ মেশানো এক গ্লাস লেবুর শরবত নিয়ে আসো অফিসে।’’
‘‘ঠিক আছে স্যার।’’
ফোন টা রেখে, তীব্র সিগারেট ধরিয়ে টানতে লাগলো, মুতালেব হোসেনের সাথে আনা কিছু পেপারস তীব্রর কাছে দিয়ে বেরিয়ে গেছে এএসআই রাসেলকে সাথে আনার জন্য আর বাকি এভিডেন্স গুলো আনার জন্য।
ইরফান শেখ তীব্রর দিকে তাকিয়ে স্বর নরম করে বলল।
‘‘স্যার আমাক পাঠানো হয়েছে বলে কি আপনি বিরক্ত?’’
‘‘বিরক্ত হওয়ার মতো কিছু হয়েছে?’’
‘‘না আমিও আপনার সাথে কেস সলভের সময় থাকবো তার জন্য আপনি বিরক্তও হতে পারেন, যেহেতু বরাবরই আপনি সব সময় যেকোনো কাজ একা একা করেন, এরকম নাম ডাক আছে।’’
‘‘ইরফান সাহেব।’’
‘‘বলুন স্যার।’’
‘‘এসবিতে এসেছেন কতোদিন?’’
‘‘দু বছর স্যার।’’
‘‘আপনি আমার বয়সে বড় ঠিকি, কিন্তু অভিজ্ঞতায় অনেক ছোটো, পদবীর কথা বাদ ই দিলাম। কথাটা কি মানেন?’’
ইরফান শেখ নিরুত্তর।
‘‘তিনটে জায়গায় তিন ধরণের মানুষ আমাকে কখনোই বুঝে না, কিন্তু এদের নিয়েই আমার চলতে হয়।’’
‘‘কে কে স্যার?’’
‘‘এক নাম্বারে এসবির সিনিয়র অফিসার রা, দুই নাম্বারে আমার বাবা, তিন নাম্বারে আমার বউ।’’
‘‘স্যার একটা প্রশ্ন ছিল।’’
‘‘বলে ফেলুন।’’
‘‘সব ই বুঝলাম স্যার, কিন্তু আপনি তো বিবাহিত নন। তাহলে কেনো বার বার আপনি বলেন আপনার বউ আছে!’’
‘‘মানুষের কল্পনার জগৎ অনেক প্রশস্ত চাইলে সেখানে সে সব কিছুই পেতে পারে।কথা বুঝেছেন?’’
‘‘আপনার কাল্পনিক বউ কেমন?’’
‘‘সেটা কেনো আমি আপনাকে বলতে যাবো?’’
‘‘না যদি বাস্তবে আপনার কাল্পনিক বউয়ের দেখা পাই আপনাকে জানাবো।’’
‘‘কোনো প্রয়োজন নেই, আমি চাই না আমার বউ আমি ছাড়া অন্য কেউ দেখুক, হোক বাস্তব বা কল্পনায়।’’
‘‘পর্দাশীল?’’
‘‘না।’’
‘‘তাহলে?’’
‘‘বলার প্রয়োজন মনে করছি না। আউট অফ টপিক কথা আমার সাথে বলবেন না।’’
‘‘ওকে।’’
এমন সময় হাতে একটা শরবতের গ্লাস নিয়ে ছোট্ট একটা ছেলের প্রবেশ তীব্রর কেবিনে,
‘‘স্যার আসসালামু আলাইকুম।’’
‘‘ওয়ালাইকুম আসসালাম। ’’
‘‘স্যার শরবত।’’
তীব্র গ্লাস হাতে নিয়ে শরবত মুখে দেয়ার আগে ইরফান শেখের দিকে তাকিয়ে ইশারা করল খাবে নাকি, সে না করলো,
তীব্র চুপচাপ তিন ঢোকে এক গ্লাস শরবত শেষ দিলো।
ছোট্ট ছেলেটা ঠোঁটে হাসি লাগিয়ে বলল,
‘‘কেমন হইছে স্যার?’’
‘‘তুই বানিয়েছিস?’’
‘‘জি স্যার।’’
‘‘ফার্স্ট ক্লাস।’’
ছেলেটা দাঁত কেলিয়ে হাসতে লাগলো,
তীব্র ওয়ালেট থেকে টাকা বের করে ছেলেটার হাতে দিলো আর বলল,
‘‘ঠিক পাঁচমিনিট পর পাঁচ কাপ চা নিয়ে আসবি,’’
‘‘আইচ্ছা স্যার যাই তাইলে।’’
‘‘হুম যা।’’
ছেলেটা বেরিয়ে গেল আর মুতালেব হোসেন ভেতরে প্রবেশ করল, উনার সাথে এএসআই রাসেল। রাসেল তীব্রকে সালাম দিলো,
‘‘স্যার আসসালামু আলাইকুম।’’
‘‘ওয়ালাইকুম আসসালাম। বসুন আপনারা।’’
দুজনেই বসলো,
‘‘হুম এখন শুরু করুন আপনারা কি কি তথ্য জোগাড় করেছেন?’’
এএসআই রাসেল বলল,
‘‘স্যার বেশ কয়েক জায়গায় খোঁজ নিয়েছি তেমন কোনো জরুরি তথ্য জোগাড় করতে পারি নি, যা পেয়েছি তাই ই সংরক্ষণ করে রেখেছি।’’
‘‘সব কিছুর কপি আমাকে দিয়ে যাবেন।আর সব কিছু আমার সামনে এখন সারসংক্ষেপে এক্সপ্লেইন করুন।’’
‘‘শিউর স্যার! আমি অলরেডি কপি করে এনেছি আপনার জন্য।’’
‘‘ওয়েল ডান!’’
এএসআই রাসেল তীব্রকে সব কিছু ডিটেইলে বলা শুরু করল,
‘‘স্যার প্রথমত কিলারের মারার স্টাইল একদম ইউনিক। সব কিছুই সে স্মার্টনেসের সাথে ইউনিক ভাবে করলেও ডেড বডি স্পটেই ফেলে যায়, যদি কোনো প্রফেশনাল ক্রিমিনালের কাজ হতো এটা, তবে সে অবশ্যই ডেড বডি টা সরিয়ে ফেলতো এবং গুম করে ফেলতো, কিন্তু সেটা করে নি। আর সব থেকে বড় ব্যাপার হলো, কে মারছে সেটা জানা তো দূরে থাক কেনো মারছে কি উদ্দেশ্যে মারছে সেটাও বুঝা যাচ্ছে না। ভিক্টিমের সাথে যদি লাখ টাকাও থাকে তবে সেটাতে কিলার হাত ও লাগায় নি, টাকা যেরকম সেরকম ই থেকে যায়।’’
পাশে থেকে ইরফান শেখ কথার মধ্যে বলে উঠল,
‘‘এক্সাম্পল আছে কোনো?’’
কথার মধ্যে ব্যাঘাত ঘটানোর জন্য তীব্র খানিকটা চোখ গরম করে তাকালো ইরফান শেখের দিকে। রাসেল ইরফান শেখকে উত্তর দিলো,
‘‘জি স্যার, ফর এক্সাম্পল ধরুন গত বুধবার রাতে নবীনগর থানার এমপির মেয়ের জামাইকে মারা হয়েছে যেখানে বর কনে একগাড়িতে ছিল, কিলার চাইলে কনের গহনা লুট করতে পারতো, কিন্তু তা করে নি, সে মার্ডার করেই হাওয়া হয়ে গেছে, মেয়েটার বয়ান অনুযায়ী মনে হয় এটা প্রেতাত্মার কাজ, কারণ সে নাকি শুধু একটা ছায়া অতিক্রম করে যেতে দেখেছে, এর বেশি কিছু দেখে নি। গত রাতে মৌচাক রেলওয়ে স্টেশন থেকে একটু দূরে একটা বডি পাওয়া গেছে যেখানে তার সাথে চার লাখ টাকা ছিলো, ইনভেস্টিগেশন করে জানা যায় লোকটা চার লক্ষ টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলো। চাইলে কি কিলার টাকাটা নিতে পারতো না?’’
তীব্র গম্ভীরস্বরে বলে উঠল,
‘‘রাসেল সাহেব কাজের কথায় আসুন, এগুলো আউট অফ টপিক কথা বার্তা। আশা করি ইরফান সাহেব আপনার এক্সাম্পল জানা হয়ে গেছে, আরো এক্সাম্পল জানার ইচ্ছা থাকলে নিজে ইনভেস্টিগেশন করে জেনে নেবেন।’’
ইরফান শেখ চুপ হয়ে গেলো আবারও।
‘‘রাসেল সাহেব শুরু করুন।’’
‘‘জি স্যার!’’
স্যার দ্বিতীয়ত যে ঘটনা সেটা হলো, টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া কোথাও বাদ নেই এই ঘটনার, প্রতি রাতেই কেউ না কেউ এই রহস্যময় মৃত্যুর শিকার হচ্ছে।এই মৃত্যুর ঘটনা কোনো নির্দিষ্ট এলাকাতে ঘটছে না।
একই রাতে ভিন্ন জায়গায় ভিন্ন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। এখন এখানে প্রশ্ন হলো, কিলার কি একজন, নাকি একাধিক মানে কোনো কিলার গ্যাং?
আর তৃতীয়ত মৃত্যুর রহস্যের সব থেকে বড় রহস্য, মার্ডার গুলো ইউনিক ভাবে করা হচ্ছে, প্রায় বেশ কয়েকটা সেম্বল পাওয়া গেছে একেক জনের একেক রকম, কারো সেম্বল দেখা যাচ্ছে মুখের ভেতর গুলিবিদ্ধ করে মারা হয়েছে। আবার কারো গলাতে ব্লেডের মতো অস্ত্রের আঘাত, আর সব থেকে বেশি আশ্চর্য জনক মৃত্যু হলো, কপাল বরাবর একটা লোহার তারকাটার মতো কিছু একটা বিঁধানো আর সারা শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই কপালে একটা পেরেক গাড়লে মানুষ এতো তাড়াতাড়ি মারা যেতে পারে?
স্যার এসবের মাঝে প্রশ্ন দাঁড়ায়, কিলার কি একটা গ্যাং নাকি একাধিক গ্যাং?
এখানে আমার উত্তর যেটা সেটা হলো, আমার ধারণা একটা গ্যাং বা একজন কিলার। কারণ টা হলো, মনে করুন এই সপ্তাহের শুরুতে একজনকে মারা হলো কপালে পেরেক গেড়ে, পুরো সপ্তাহেই এই এক ক্যাটাগরিতে সব গুলো মার্ডার হবে।আবার পরের সপ্তাহে আরেক ভিন্ন ক্যাটাগরিতে। কিন্তু এরকম কোনো এভিডেন্স এখনো মিলে নি যেখানে কিলারের একই সপ্তাহে ভিন্ন ক্যাটাগরিতে মার্ডার করেছে।
তীব্র একটা পেপার ওয়েট হাতে নিয়ে টেবিলের উপর ঘুরাতে ঘুরাতে বললো,
‘‘রাসেল সাহেব, আপনি তো কেস ৯০% ই সলভ করে ফেলেছেন, এখন শুধু আসামী ধরলেই হয়ে যাবে, আরেকটু চেষ্টা করলেই ওটাও পেরে যাবেন।’’
‘‘স্যার গত দুমাসে আমি আমার সর্বোচ্চ টা দিয়ে চেষ্টা করছি তাতে এর থেকে বেশি তথ্য জোগাড় আমার পক্ষে সম্ভব হয় নি, এখন আপনার সাহায্য দরকার। ’’
‘‘হুম বুঝলাম।’’
‘‘স্যার এখন আমাদের কি করণীয়?’’
‘‘করণীয় কি আবার আসামী ধরতে হবে।আর কেনো মারছে সেটা আসামীর থেকেই ভালো জানা যাবে।
এখন আসামী শনাক্তকরণটাই বাকি আছে, আপনি যথেষ্ট করেছেন এখন আমি দেখছি ব্যাপারটা আজ রাতে ইনভেস্টিগেশন করে। পেপারস রেখে যান আমি ভেবে দেখছি কোনো পথ পাওয়া যায় কিনা।’’
‘‘ওকে স্যার।’’
কিছুক্ষণ কেসটার ব্যাপারে আলোচনা করে চা খেয়ে সবাই বেরিয়ে গেল।
তীব্র একা বসে বসে এএসআই রাসেলের দেয়া তথ্যগুলো ঘেটে দেখছে।
অফিসে বসেই অনেক রাত অব্ধি কেসটা সলভ করার চেষ্টা করল।
‘‘মে আই কাম ইন স্যার?’’
পেপারস থেকে চোখ সরিয়ে মাথা তুলে দরজার দিকে তাকাতেই দেখে রিফাত ।
‘‘আসো।’’
‘‘স্যার বের হবেন কখন?’’
‘‘হুম হবো এখনি’’
‘‘গাড়ি বের করতে বলবো স্যার?’’
‘‘বলো।’’
‘‘ওকে স্যার।’’
পেপারস গুলো সব একটা ফাইলে ঢুকিয়ে রিফাতের হাতে দিয়ে গাড়িতে রাখতে বলল।
তীব্র অফিস থেকে বের হয়ে একটা সিগারেট ধরিয়ে এক হাত দিয়ে সিগারেট টানছে আরেক হাত পকেটে ঢুকিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মোশারফ হোসেনের সাথে দেখা করে কিছু একটা বলে বেরিয়ে গেল।
একটা জুসের প্যাকেট হাতে নিয়ে স্ট্র মুখে দিয়ে রাস্তার মাঝখান দিয়ে আঁকাবাঁকা হয়ে ঢোলতে ঢোলতে হাঁটছে মিশান, পেছনে তাপসিন মিশানের হাত ধরে টেনে রাস্তার সাইডে নেয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু কোনো ভাবেই মিশানকে এক চুল সাইডেও আনতে পারছে না।
‘‘এই রাস্তা গুলো এমন ভাঙাচোরা উঁচু নিচু কেনো? ছিহঃ! এই রাস্তা দিয়ে হাঁটতেও লজ্জা লাগে।
‘‘মিশান আপি প্লিজ কত্ত গাড়ি যাচ্ছে রাস্তা দিয়ে, এভাবে রাস্তার মাঝখান দিয়ে হেঁটো না। এক্সিডেন্ট হয়ে যাবে চলো ফুটপাত দিয়ে হাঁটি।’’
‘‘এই তোকে আমার সাথে আসতে বলেছে কে? আমি কি তোকে আমার সাথে আসতে বলেছি? যা বাড়ি যাহ! আর একবার যদি আমার হাত ধরে টান দিয়েছিস না, তোকে এই রাস্তার মধ্যে চেপে ধরবো, তারপর গাড়ি তোর উপর দিয়ে যাবে।’’
‘‘আমাকে যা ইচ্ছা করো, তুমি সেইফ থাকো।’’
‘‘অই আমার চোখ আছে, তোর মতো কানা না, যে ডাবল ব্যাটারি নিয়েও উষ্টা খাবো। গাড়ি আসলে আমি দেখতে পাবো।’’
তাপসিন ভয়ার্ত কণ্ঠে মিশানকে বলল,
‘‘প্লিজ আপি ভয় লাগছে আমার!’’
‘‘হপ যা ভাগ এখান থেকে! ফালতু যত্তসব!’’
মিশান তাপসিনকে ধমকিয়েই যাচ্ছে, এমন পর্যায় একটা প্রাইভেট কার মাঝ রাস্তায় মানুষ দেখে ব্রেক কষে গাড়ি থামালো। তাপসিন খানিকটা হকচকিয়ে গেলো, কারণ গাড়িটা ছিল সরকারি গাড়ি। মিশান কোনো তোয়াক্কা না করে সামনের দিকে পায়ের কদম ফেলতেই, গাড়ির ভেতর থেকে তীব্র বেরিয়ে একদম মিশানের সামনে দাঁড়ালো। মিশান খানিকটা বিরক্তবোধ করে ভ্রু বাঁকিয়ে তীব্রর দিকে তাকালো, তীব্রও একই রিয়্যাকশনে মিশানের দিকে তাকিয়ে আছে। হাতের আঙুলের ভাঁজে জ্বলন্ত সিগারেট ঠোঁটের সাথে লাগিয়ে ধোঁয়া শুষে নিয়ে মিশানের মুখ বরাবর তা নিঃসরণ করল। মিশান রাগ চেপে গরম নিঃশ্বাস ছেড়ে চুপচাপ পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিল।
তীব্র বাঁকা হাসি দিয়ে মিশানের উল্টো দিকে দাঁড়িয়েই বলে উঠল,
-ক্যাপ্টেইন মিশান খান!
মিশান চলন থামিয়ে দাঁড়িয়ে গেল।

– চলবে…
আগের পর্বের লিংক:-
https://www.facebook.com/112848997065058/posts/238330621183561/
পরের পর্বের লিংক:-
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=239577457725544&id=112848997065058

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here