সুন্দর_স্পৃহা #সামিয়া_সারা #psychobasedstory পর্ব-২

0
2

#সুন্দর_স্পৃহা
#সামিয়া_সারা
#psychobasedstory

পর্ব-২

স্পৃহার চোখ দিয়ে অনর্গল পানি পড়েই চলেছে। একদিকে
তার মনের মধ্যে তৈরি হওয়া চাপ অপরদিকে তার ঠোঁট থেকে
অঝরে র*ক্ত পড়ছে। শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা একসাথে
যাকে বলে। সুন্দর কিছুক্ষণ হলো ফিরে গিয়েছে,নিজের
রাগ সম্পূর্ণভাবে মিটিয়ে তবে সে ফিরেছে।

স্পৃহার মা নিরু হোসাইন,তার রুমের বাইরে থেকে ডেকে
চলে যায়। সকালে কাউকে কিছু না জানিয়ে স্পৃহা বাসা
থেকে বেরিয়ে পড়েছিল,এ কারণে মুখে কিছুই দেয়া হয়নি তার। এদিকে নিজের ঘর থেকে বের হতে সে লজ্জায় একাকার হয়ে আছে। ঠোঁট থেকে র*ক্ত এখনও পড়েই যাচ্ছে ।বেশ অনেকখানি ফুলেও গিয়েছে ।এ অবস্থায় সে সকলের সামনে কি করে মুখ দেখাবে! এই প্রশ্ন যেন তাকে কিছুতেই আর স্বাভাবিক হতে
দিচ্ছে না। নিজের রুম ভেতর থেকে আটকিয়ে বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে নিজের অবাধ্য চোখের জল আটকানোর বৃথা চেষ্টা চালিয়ে যায়।

মানুষটা কি পাগল ? কেউ এতটা ডেসপারেট কিভাবে হতে পারে? এটা কি করে ভালোবাসা হতে পারে ?জোর করে আর যাই হোক ভালোবাসা পাওয়া যায় না! এ সকল কথা চিন্তা করতে করতে স্পৃহা ঘুমের দেশে তলিয়ে যায়।

তখন সময় ছিলো বেলা ১১ টা আর এখন বাজে সন্ধ্যা ৭ টা। মাঝখানে এতো সময় চলে গিয়েছে,হঠাৎ কারো উপস্থিতে স্পৃহার ঘুম ভেঙে যায়। নিজের মাথার কাছে সে সুন্দর কে দেখতে পায়। ওমনি ওখান থেকে ছিটকে সরে যায় দেখামাত্রই।

-Don’t touch me!

-what did you say? My love,just say again..

-আপনার স্বাভাবিক কথাও কি এমন হিংস্র শোনায়? নাকি আসলে আপনি সবসময়ই এরকম?

-তুমি আমায় হিংস্র হতে বাধ্য কর ।

স্পর্শিয়া স্পৃহা,তুমি কি জানো তোমাকে কেউ কেন স্পর্শিয়া বলে ডাকতে পারেনা ? কারণ এই নামটি শুনলে আমার মনে হয় কেউ তোমাকে স্পর্শ করেছে। তাই শুধু নামটা আমার জন্য ।অন্য কারোর মুখে কোনদিন তোমাকে এই নামে ডাকা শুনলে তাকে মারতে আমি এক চুল পরিমাণ ভাববো না,কোনদিন ভাববো না!

আর তোমার জন্য একটি ওয়ার্নিং ,কখনো তোমাকে স্পর্শ করা নিয়ে কথা বলে আমার ইগো হার্ট করবে না।

-আপনি এভাবে আর কতদিন জোর করে অধিকার খাটাবেন আমার উপর?

-তোমার মনে হয় তোমার মুক্তি আছে আমার থেকে ?
তাহলে কতদিনের প্রশ্ন ওঠে কেন? যতদিন আমি আছি ততদিন তুমি শুধু আমার! তবে এটা ভেবো না আমি না থাকলে তুমি অন্য কারো হতে পারবে,কারণ আমি না থাকলে তুমিও থাকবে না।

-মানে কী এসবের? মে*রে ফেলবেন আমায়?

-হয়তো… Life is very unpredictable sporsho!

তুমি খাওনি কেন কিছু ? তোমাকে যাওয়ার সময় ওষুধ দিয়ে গিয়েছিলাম না? কেন খাওনি ! তুমি আমার কথা মেনে চললে তো আমাকে এত জোর করতে হয় না।

(লেখক: সামিয়া সারা)

-আমি আপনার হাতের পুতুল নই, যে যা বলবেন তাই করব।

-হ্যাঁ,তা ঠিক বলেছ। হাতের পুতুল নও,তুমি আমার মনের পুতুল। তাই এখন ওষুধটা খেয়ে নাও।

-খাবোনা বললাম তো,দয়া করে আপনার ওষুধ টা নিয়ে আপনি চলে যান এখান থেকে।

-ইশ্! এমন তেজ দেখালে তোমার খাওয়ার আগেই আমার খাওয়া হয়ে যাবে !

-কী খাবেন আপনি ?

-চুপচাপ ওষুধটা খাও বেশি কথা না বলে।

-তুমি ওষুধটা খেয়ে নাও,আমার একটা জরুরী কল এসেছে।Just one minute…

-হ্যাঁ,কাজ শেষ?
-yess boss,torture chamber থেকে বের করব নাকি এখানে রাখব?
-leave them
-okay boss

তুমি ওষুধ এখনো খাওনি!???

-এতক্ষণ কী নিয়ে কথা বলছিলেন? কী কাজ?

-আগে ওষুধটা খান,তারপর বলছি।

-বলুন এবার। আবার কারো কোন ক্ষতি করেছেন তাই না?

-বাহ খুব ভালোই দেখি বোঝো আমায় । আমার থেকেও বেশি চেনো আমাকে তাই না ? তবুও বলো না কেন ভালোবাসো?

-দেখুন আমি আপনার সাথে মজা করছি না ।সত্যি করে বলুন ।
-কেন মায়া হচ্ছে?

-হ্যাঁ হচ্ছে। আপনি কী ক্ষতি করেছেন আবার নতুন করে ?

-মায়া হওয়ার কথা বলো না ।তোমার এই মায়ার জন্য যতটুকু বেঁচে আছে তাও থাকতে পারবে না । সো বি কেয়ারফুল।

-কি হলো চুপ করে গেলে কেন ? ভয় পাচ্ছো ?অন্য কাউকে নিয়ে যেন তোমাকে ভাবতে না দেখি । আর এমন কোন ক্ষতি করিনি কারো । শুধু আজকে যে তিনজনের সাথে কথা বলেছিলে
তাদের কথা বলার ক্ষমতা শেষ করে দিয়েছি। যে মুখ দিয়ে
তারা তোমার সাথে কথা বলেছে আর কোনদিন যেন সেই মুখ দিয়ে কখনো কোন আওয়াজ করতে না পারে সেই ব্যবস্থা করেছি।আশা করি এই শাস্তির কথা তোমার মনে থাকবে।

নিশ্চয়ই তুমি এতটা নিষ্ঠুর নও যে নিজের ভুলের জন্য অন্যকে শাস্তি ভোগ করাবে !
কি ঠিক বলেছি তো স্পর্শ ?

-আমার নাম স্পৃহা । স্পর্শ নয়! হয় আমাকে স্পর্শিয়া বলবেন আর নয়তো স্পৃহা। আপনার মুখে স্পর্শ ডাক শুনলে আমার বমি পায়।

সুন্দর এবার আর স্পৃহাকে কিছু বলল না সে, কিন্তু চোখে
মুখে তার তীব্র হিংস্রতা। চোখের সাদা অংশ লালাভ হয়ে
আছে । মুহূর্তেই তার পাশে থাকা কাঁচের গ্লাস নিজের হাতে মুঠোয় করে চাপ দিতে গ্লাসের টুকরোগুলো তার হাতের মধ্যে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করল ।র*ক্ত পড়ছে হাত বেয়ে, তবুও একটি
কথা না বলেও স্পৃহার চোখের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে
রইল ।এদিকে স্পৃহার তো যায় যায় অবস্থা।তবুও নিজেকে শান্ত করে সুন্দরকে বলল,

-এটা আপনি কি করলেন? হাত তো অনেকখানি কেটে গিয়েছে ।প্রচুর র*ক্তক্ষরণ হচ্ছে এক্ষুনি কাঁচ টুকরো বের করে অ্যান্টিসেপটিক দিয়ে হাতটা বেঁধে ফেলুন!

-তোমাকে আমার কথা ভাবতে হবে না স্পর্শ ! ওষুধটা খেয়ে খাবার খেয়ে নাও ।অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে ।তুমি খেলে আমি এখান থেকে চলে যাব ।তার আগে না।

-ঠিক আছে আমি খাচ্ছি ,কিন্তু আপনি গিয়ে আগে ডক্টরের কাছে যাবেন।

বেশিক্ষণ র*ক্তক্ষরণ হলে সমস্যা হবে ভেবে না চাওয়া সত্ত্বেও স্পৃহা নিজের খাবারটা শেষ করল। সুন্দর আর কোন কথা
না বলে বেরিয়ে গেল বাসা থেকে, তবে উদ্দেশ্য তার ডক্টরের কাছে যাওয়া নয় ।নিজের ওপর তীব্র অনীহা হচ্ছে তার। যন্ত্রণা দিতে মাঝে মাঝে কেন যেন ভালই লাগে ।হাত দিয়ে র*ক্ত গড়িয়ে পড়ছে ,তীব্র যন্ত্রণা হচ্ছে ,তবুও এই যন্ত্রনা সে মাথা পেতে
গ্রহণ করছে ।কেননা তার স্পর্শের কথার তুলনায় এটি সামান্য মাত্র ।নিজের ড্রাইভারকে পাঠিয়ে দিয়ে আজ এই হাত নিয়ে নিজে ড্রাইভ করে যাবে সুন্দর। তার জেদের কাছে যেন সব হার মেনে যায়। দুই বছর আগেও ঠিক এমনই হয়েছিলো। মাত্র ১৫ বছর বয়সের একটি তরুণী যেন ২৩ বছরের একজন পুরুষের জীবন ওলট-পালট করে দেয় তার তীব্র জেদ হয়ে থেকে যায় ।

-ভালোবাসা জোর করে পাওয়া যায় না? কিন্তু আমি না পেলেও যে আর কেউ পাবে না!

গাড়িতে গান বাজছে,
সারি দুনিয়া সে জিতকে মে আয়া হু ইধার,
তেরি আগে হি মে হারা কিয়া তুনে কিয়া আসার…..
(Song name: Yeh Tune Kya Kiya)

সুন্দর নিজেই আনমনে হেসে ফেলে। স্পৃহা শুধু তার, তার কোন ছাড় নেই।

(চলবে…)
#Running
Story Name: #Shundor_Spriha
Written by Samia Sara
Episode:2

(Gaan tar lyrics er majhe apnara Shundor and Spriha ke khuje paben,tai somoy pele shune niben😁amar most favourite song kintu🥺)

যাইহোক ,এবার বলুন আমার প্রিয় মানুষেরা এই পর্বটি আপনাদের কেমন লেগেছে ? কন্টিনিউ কি করা উচিত? আশা করি সবাই সাপোর্ট করবেন এবং নিজেদের মতামত জানাতে ভুলবেন না ! বর্তমান পরিস্থিতিতে ফেসবুকে এসে এক ধরনের অ্যানজাইটি এবং ডিপ্রেশন তৈরি হয়, আপনারা যাতে সাময়িক সময়ের জন্য হলেও আমার লেখা পড়ে অন্য চিন্তাতে ঢুকতে পারেন এই জন্যই লেখা। তবুও আমরা সকলের জন্য দোয়া করব এবং আশা করি ন্যায়-অন্যায়ের বিচার সঠিকভাবেই হবে।
আগের পর্বতে এত ভালোবাসা দেয়ার জন্য আমি অনেক অনেক কৃতজ্ঞ আপনাদের কাছে ।আশা করি সব সময় পাশে থাকবেন💖

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here