সুন্দর_স্পৃহা #সামিয়া_সারা #psychobasedstory পর্ব-১৪

0
3

‼️ Violence alert ‼️
#সুন্দর_স্পৃহা
#সামিয়া_সারা
#psychobasedstory

পর্ব-১৪

সুন্দর আর এক সেকেন্ড অপেক্ষা না করে হাত মুট করে আশিকের নাক বরাবর ঘুসি দিল । আশিকের নাক দিয়ে র*ক্ত পড়ছে । সুন্দর warning দিয়ে বলল,

-তোকে শেষ বারের মতো বলছি, আমার স্পর্শকে নিয়ে কোন ধরনের কথা আমি শুনতে চাই না ।

-সুন্দর !তুই এমন করলে সত্যিটা আমি তোকে বলবো কিভাবে?

আশিকের গার্ড দুইজন বরফ নিয়ে তার নাকের দিতে গেলে আশিক তাদেরকে সেখান থেকে চলে যেতে বলে এবং বরফ নিয়ে নিজেই নিজের নাকে দিয়ে সুন্দরকে বলে,

– সুন্দর , আবার বলছি । একটু বোঝ। তুই এমন করলে সত্যিটা আমি তোকে জানাবো কি করে। তোর ভাই লিহান গত দুইদিন আমার কাছে এসেছিল ।প্রথম দিন যখন সে আমার কাছে
আসে ,আমি ভেবেছিলাম তার সমস্যা সমাধান করব । কিন্তু ঐদিন সবশেষে যখন আমি ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম ,

“তোমার ভাইয়ের নাম কি ”

তখন সে বলেছিল ,

“সানজিল চৌধুরী সুন্দর “।

আর আমি জানতাম তোর একটি ভাই রয়েছে । শুধু আমি ওকে চিনতাম না । কিন্তু পরে খোঁজ নিয়ে আমি শিওর হই যে ও তোরই ভাই । আর ওকে কে নিয়ে এসেছিল জানিস? আমাদের ফ্রেন্ড আনিসার ছোট ভাই আরিয়ান।

-তুই আমাকে যা খুশি বলবি আর আমি বিশ্বাস করে নিব?
তোর সাথে শেষ কলেজে দেখা হয়েছে আমার। আমি তোর কথা প্রায় ভুলে গিয়েছিলাম আর আমার ছোট ভাই তোকে চিনবে !এটাও মানতে হবে? By the way Ashique! তোর এটা জানার কথা আমি মেয়েদের পছন্দ করি না । আমার লাইফে একটাই মেয়ে আছে যে আমার সব । তবে লিহানের বন্ধু আরিয়ানকে আমি চিনি। আর ওই মেয়ে কে ? লিহান ,আরিয়ান, তুই বা ওই মেয়ের মধ্যে আমার স্পর্শকে কেন টানছিস? আমার সাথে মজা করিস না!

-সেসব রাখ। তুই আমার বন্ধু এইজন্যই আমি তোকে সব জানাতে চাই। জীবনে আজ আমি যে ভালো অবস্থাতে আছি তার পিছনে সবচেয়ে বড় অবদান তোর । তুই আমার সত্যিকারের বন্ধু ।আর একজন বন্ধু তার বন্ধুর পাশে বিপদে দাঁড়াবে । তাই না ?

-ঠিক আছে বল ।

-তোকে খুব জরুরী কথা বলার ছিল তোর বউকে নিয়ে । তাই এভাবে ডাকতে হলো ।
তোর ভাই তোর বউকে ভালবাসে।

সুন্দরের চোয়াল হঠাৎ শক্ত হয়ে গেলো। রাগে শরীর অবশ হয়ে এসেছে। ঘাড় হালকা কাত করে আশিকের দিকে তাকিয়ে বলল,

-Any evidence?

আশিক তার হাতের ফোনটা থেকে একটি ফুটেজ বের করে সুন্দরের হাতে দিল । যেখানে দেখা যাচ্ছে লিহান তার প্রথম ভালোবাসা নিয়ে কথা বলছে। সুন্দর খুব মনোযোগ সহকারে ভিডিওটা দেখে সেখান থেকে চলে গেল ।

লিহান যা করেছে তার শাস্তি তাকে পেতেই হবে । কিন্তু স্পৃহা যে তাকে মিথ্যা কথা বলল এর শাস্তি? সুন্দর ঠিক যেভাবে এসেছে তেমনি বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালিয়ে আবার ফিরে যাচ্ছে। তার মাথা পুরো ব্ল্যাঙ্ক । কি করবে বা কি করা উচিত নিজেও বুঝতে পারছে না।

.

.

.

সুন্দর বাসায় ফিরে তালা খুলে স্পৃহার ঘরে গেল। স্পৃহা ঘুমিয়ে রয়েছে । এ অবস্থাতেই তাকে এক ঝটকা মেরে হাতের বাহু ধরে টেনে তুলল সুন্দর। থতমত খেয়ে স্পহা সুন্দরের দিকে তাকায় ।ভীষণ ভয় পেয়েছে সে । কান্নার ফলে চোখ দুটো ফুলে আছে। ঘুম জড়ানো কন্ঠে সুন্দরকে বলল ,

-কি হয়েছে ? এভাবে ডাকলেন কেন?

-লিহানের সাথে কথা বলেছিলি এটা আমাকে আগে বলিস নি কেন!!!

ঠিক যা ভেবেছিল স্পৃহা তাই হলো। সুন্দর নিশ্চয়ই লিহানের সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়ে এসেছে । এখন সে কি করবে! যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয়।

সুন্দর আবার হুংকার দিয়ে উঠলো ,

-Answer me!

স্পৃহা এখনো নিশ্চুপ। সে যত কথা বাড়াবে তার কথার মধ্যে নিজেই পেঁচিয়ে যাবে।

স্পৃহার থেকে কোন উত্তর না পেয়ে সুন্দর তার স্টোর রুম থেকে একটি মোটা দড়ি নিয়ে আসলো। স্পৃহার হাত দুটো একসাথে জড়ো করে শক্ত করে বেঁধে দিল। এখানে বসা অবস্থায় তার পা দুটো একসাথে জোর করে বেঁধে দিলো এবং মুখটাও শক্ত টেপ দিয়ে আটকে দিল। সব যেন স্পৃহার কাছে দুঃস্বপ্ন লাগছে। সুন্দর এত তাড়াতাড়ি সব কিছু করলো যে সে বাধা দেওয়ার সময় পেল না । তাছাড়া বাধা দিবে কী করে,সে সুযোগ নেই তার কাছে। সুন্দরের সুঠাম দেহ আর তার কাছে স্পৃহার এই ছোট্ট শরীর। ৬ ফিট উচ্চতার একজন ছেলের জিম করা ফিট বডি আর কোথায় ৫ ফুট ৩ ইঞ্চির এই ছোট্ট শরীর!

স্পৃহার গোঙানির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে । সে বেশ ছোটাছুটি করার চেষ্টা করছে । এক পর্যায়ে সুন্দর স্পৃহার মুখ থেকে টেপ সরিয়ে বলল ,

-কী চাই?

স্পৃহা আগে পরের কোন কিছু না ভেবে বলল ,

-মাফ করে দেন ।ভুল হয়েছে।

-ভুল করলে শাস্তি পেতে হবে । না হলে পরবর্তীতে আবার হতে পারে।

-হবে না কথা দিচ্ছি ।

– আর কিছু বলবে ?

-ক্ষুধা লেগেছে…

সুন্দর এক সেকেন্ড অপেক্ষা না করে নিজের ঠোঁট মিশিয়ে দিল স্পৃহার ঠোঁটে । এক মিনিট পরে নিজেই ছেড়ে দিয়ে বলল ,

-পেট ভরেছে ?নাকি আরো খাবে?

স্পৃহা কোন উত্তর দিল না । সুন্দর আবার তার মুখের টেপ লাগিয়ে দিয়ে ড্রয়ার থেকে একটি ব্লে*ড নিয়ে এলো।

স্পৃহা বড় বড় করে তাকিয়ে রয়েছে । তার মধ্যে ভীষণ আতঙ্ক কাজ করছে । এ পাগলের উপর কোন ভরসা নেই ।

সুন্দর খুব আলতো করে স্পৃহার হাতের বাধন খুলে তার বা হাত ধরল। তার হাত নিজের হাতের উপরে রেখে হাতের তালুতে সুন্দর করে মেহেদি দেওয়ার মতো করে লিখতে থাকে,

SUNDAR-SPRIHA

স্পৃহা ব্যথায় ছটফট করছে । প্রত্যেকটা এলফাবেট লেখার সময় তার হাতে যতটা র*ক্ত বের হচ্ছে সুন্দর হাসিমুখে সে র*ক্ত মুছিয়ে আবার লিখতে থাকছে। একপর্যায়ে স্পৃহা তার জ্ঞান হারায়। সুন্দর যখন বুঝতে পারলো স্পৃহা জ্ঞান হারিয়েছে ,সে একটুও অপেক্ষা না করে আবার স্পৃহার জ্ঞান ফিরিয়ে বলল,

-হাতের দিকে তাকিয়ে থাকো । ব্যথা সহ্য কর ! ঠিক এমন ব্যথা আমার বুকে লেগেছে। সুন্দর এ কথা বলতে বলতে ব্লে*ড দিয়ে তার বুকে বেশ গর্ত করে ঢুকিয়ে টান দিল ।এদিকে তার বুকে থেকেও র*ক্ত পড়ছে অন্যদিকে স্পৃহার হাতে দিয়েও র*ক্ত পড়ছে। এজন্য লাল র*ক্তের খেলা ,রঙের নয়।

ক্লান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল স্পৃহা। মুখ দিয়ে কোন আওয়াজ করতে পারছে না । অসহায়ের মত সুন্দরের দিকে চোখের দিকে তাকিয়ে বোঝাতে চাইলো , দয়া করুন আমাকে !ছেড়ে দিন প্লিজ।

.

.

.

লিহান আজ ভিষণ খুশি । তার ভালোবাসা তার কথা মনে রেখেছে ! এটা ভেবেই আনন্দে আত্মহারা সে । তার মানে নিশ্চয়ই স্পৃহার মনে তার জন্য কোন অনুভূতি রয়েছে । দুই বছর আগে কাউকে সামান্য দেখে তো মনে রাখার কথা না। এদিকে লিহান পরিকল্পনা করতে থাকলো কিভাবে সে স্পৃহা কে এর মধ্যে থেকে বের করবে । তারা সুখের সংসার করবে । সেখানে তাদের ছেলেমেয়ে থাকবে । নাতি নাতনী হবে। বেশ গভীর চিন্তায় সে মগ্ন।

.

.

.

.

সুন্দর এবার স্পৃহার থেকে তাকিয়ে শান্ত স্বরে বলল ,

-তোমার হাতে এটা কেন লিখেছি জানো?

স্পৃহা তার মাথা দুটিকে নাড়ালো , অর্থাৎ সে জানে না।

সুন্দর তখন বলল ,

-স্পৃহা মানে ইচ্ছা। সুন্দর স্পৃহা মানে সুন্দর ইচ্ছা। তুমি বলো আমার নাম কি ইচ্ছা ছাড়া সম্পন্ন হবে ? তাই আমি সুন্দর স্পৃহা লিখে দিলাম । ভালো হয়েছে না?

মাথা ওপর নিচ নাড়িয়ে স্পৃহা তাকে হ্যাঁ বোঝালো।

সুন্দর আবার বলতে লাগল,

-তোমার ডান হাতে কেন লিখিনি জানো?

স্পৃহা মাথা দুদিকে নাড়িয়ে না বলল ।

সুন্দর আহ্লাদ করে বলল ,

-কারণ ডান হাতে তুমি আমাকে খাইয়ে দেবে । আর বা হাতে আমার নাম সারা জীবনের জন্য লিখে দিলাম।

সুন্দর এবার পাগলের মত হাসতে লাগলো ।

কিছুক্ষণ পর স্পৃহার দিকে তাকিয়ে শান্ত স্বরে বলল,

-লিহান কে বাঁচাতে চেয়েছিলে, তাই না?

তুমি তো আমার প্রিয় স্পর্শ ! তোমাকে এত কষ্ট পেতে হল ওর এখন কি হবে তা তোমার কল্পনাতীত!

(চলবে…)
#Running
Story Name: #Shundor_Spriha
Written by Samia Sara©️
Episode:14

আমার প্রিয় মানুষেরা এই পর্বটি আপনাদের কেমন লেগেছে ? আগের পর্বগুলোতে এত ভালোবাসা দেয়ার জন্য আমি অনেক অনেক কৃতজ্ঞ আপনাদের কাছে ।আশা করি সব সময় পাশে থাকবেন💖
Jototuk parsi lekhar try korsi,mon khule support koren🥺🙏🏻boro kore lekhar try korlam to,happy?? Apnader sobar comment e ami pori,ar reply o deoar try kori sobaike,tai sobai beshi beshi inspire korben🥺 Lihan er jonne koshto pacchen? #সুন্দর_স্পৃহা নাম ক্যারেক্টারের জন্য রাখা হয়নি বরং #সুন্দর_স্পৃহা নাম রেখেছিলাম সুন্দর ইচ্ছা বোঝাতে । আপনাদেরকে একটু টেনশন এ রাখি😁 হতেও পারে গল্পের প্রধান চরিত্র লিহান!!!!‼️
Good night 🥹

N.B. -Don’t copy

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here