সুন্দর_স্পৃহা #সামিয়া_সারা #psychobasedstory পর্ব-১৩

0
2

#সুন্দর_স্পৃহা
#সামিয়া_সারা
#psychobasedstory

পর্ব-১৩

আর ঠিক ১৬ দিন পরে স্পৃহার আটারো বছর পূর্ণ হবে ।সুন্দর কিছুতেই স্পৃহাকে তার নাগালের বাইরে রাখতে চাচ্ছে না। তাই সে ঠিক করে আজ থেকে স্পৃহা তার বাড়িতেই থাকবে।

সুন্দর আবার তার রুমে ফিরে যায়। স্পর্শ এখনো কান্না করেই চলেছে। ঠোঁটের কোনায় রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে ।
সুন্দরের বুকের ভেতরটা কেমন খালি খালি লাগতে লাগলো। স্পৃহার মুখোমুখি সুন্দর বসে শীতল কন্ঠে বলল ,

-আজ থেকে তুমি এখানে থাকছো।

ভেজা চোখ নিয়ে সুন্দরের দিকে তাকিয়ে ভেজা গলায় স্পৃহা বলল ,

-মানে কী? আপনি যে বলেছিলেন আমার যতদিন না ১৮ বছর হবে ততদিন আপনি আমায় ছোঁবেন না। স্বামীর অধিকার আদায় করবেন না ।

-স্পর্শ ,আমি তোমার কাছে অধিকার আদায় করার জন্য থাকতে বলিনি । তোমাকে আমি আমার থেকে এক সেকেন্ডের জন্য দূর হতে দিতে পারবো না। যখন বলেছি এখানে থাকবে ,মানে এখানেই তোমাকে থাকতে হবে !আমার কাছে ,আমার সাথে ! আমি আর একটা কথাও শুনতে চাই না।

-বাবা মা..

-স্পর্শ ,তোমাকে আরো একবার বলছি আমি এটা পছন্দ করি না যে তুমি অন্য কাউকে নিয়ে কনসার্নড থাকো।

স্পৃহা নিশ্চুপ। সুন্দর একবার যা সিদ্ধান্ত নেয় তা মেনে নেওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই।

সুন্দর স্পৃহার কাছে আরেকটু এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করল,

-অনেক ব্যাথা পেয়েছো? আমার মাথা কাজ করছিল না তখন। তুমি অন্য কারো কথা মনে রেখেছো ! মানে তোমার মনের মধ্যে অন্য কেউ ছিল, আমি সানজিল সুন্দর, ছাড়াও তোমার মনে কেউ ছিল! তোমার মনে যে ছিল আমি তোর অস্তিত্বই রাখবো না।

-আপনি আমার কথা শুনুন ।কেউ ছিলনা আমার মনে । শুধু এমনি চেনা পরিচিত লেগেছিল। আপনার পেছনে দাঁড়িয়ে থেকে আমি ভাবছিলাম কোথায় যেন দেখেছি ।তখন মনে পড়েছিল। এর বেশি কিছু না।

-Are you sure Sporsho?

হ্যাঁ বলতে চাইলেও তার গলায় “হ্যাঁ” শব্দ টি এসে আটকে ছিল । সুন্দরের এ প্রশ্নটা সন্দেহজনক মনে হচ্ছে । অনেক সময় আমরা সত্যি যেনেও এ ধরনের প্রশ্ন করে থাকি ,যে অপর পাশের মানুষটি সত্য বলছে না মিথ্যা বলছে তা যাচাই করার জন্য। স্পৃহা এখন কি উত্তর দিবে তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্ধের মধ্যে পড়ে গেল। নিজেকে কিছুক্ষণের জন্য বুঝিয়ে বলল,

-Sure…

-Okay I’m sorry! তুমি আমাকে যা শাস্তি দিতে চাও দিতে পারো । আর একটা কথা ! কাউকে চেনা পরিচিত লাগলেও তুমি কারো কথা ভাববে না ! মনে আনবে না ! তোমার মনের কোন জায়গায় যেন কেউ না থাকে আমি ছাড়া । মনে থাকবে ?

-জ্বী..

-এখন বলো আমাকে শাস্তি দিতে চাও ?

-আপনাকে শাস্তি দেওয়ার যোগ্যতা আমার নেই! আপনি সব শাস্তির ঊর্ধ্বে।

-তোমার কাছে আমাকে শাস্তি লাগে?

-তা কখন বললাম?

-আমি সকল শাস্তির ঊর্ধ্বে বলতে কী বোঝায় স্পর্শ ? তুমি কি আমার সাথে সুখে নেই ? আমি কি তোমায় ভালোবাসি না?

-আমি কি একটু ঘুমাতে পারি?

-না!

-এখন কি আপনি আমার ঘুমটাও নিয়ন্ত্রণ করতে চান ? আমি মানুষ অথচ আমার প্রাণ যেন আপনার মধ্যে ।আপনার যেমন ইচ্ছা তেমন ভাবেই চালতে হচ্ছে আমাকে। নিজের ইচ্ছা বলতে কিচ্ছু নেই!

-কথা বাড়িও না। যতক্ষণ আমি তোমার সাথে থাকবো ততক্ষণ তুমি অন্য কিছু করবে না । ঘুমানোও যাবে না। আর এই ঘরের বাইরে যেন তোমার পা দিতে না দেখি । মাথায় ভালো করে গেঁথে রেখে দাও । যেমন অন্য বিষয় মনে রেখেছিলে ।

সুন্দরের খোঁচা দেয়ার কথাটা ঠিকই বুঝতে পারলো স্পৃহা। কিন্তু এ বিষয় নিয়ে কথা বললে সুন্দর আবার হিংস্রতর রূপ ধারণ করতে পারে । তাই কথাটা এড়িয়ে চুপ রইল সে।

সুন্দর কিছুক্ষণ থেমে আবার বলল ,

-আমি তোমাকে বাইরে থেকে তালা মেরে দিয়ে যাব । তখন এখানে ঘুমিয়ো । আর দুপুরে এসে একসাথে খাব । কথার যেন কোন এলোমেলো না হয়!

-এখানে সমস্যা হলে?

-বাইরে গার্ড আছে। কোনভাবে যেন পালিয়ে না যাও তার জন্য এ ব্যবস্থা করা । তোমার কোন অসুবিধা হবে না !

-আমি আমার নিজের সমস্যার কথা বলছি ।আর আপনি পালিয়ে যাওয়া নিয়ে ভাবছেন?

-কেন যে ভাবি বুঝবে না।

-কেন?

-ভয় হয় আমার!
সব কথা রাখো । তোমার সাথে আমি আরো এক ঘন্টা আছি। আসলে তোমাকে ছাড়া আমার বাইরে থাকতে মন চাচ্ছে না।

বলতে বলতে সুন্দর এর কাছে একটি কল আসে । কল রিসিভ করে কানে নিতেই চিৎকার করে বলল ,

-আমি আসছি!

.

.

স্পৃহা কে আর একটিও কথা না বলে বাইরে থেকে রুমের দরজা তালা দিয়ে চলে যায় সুন্দর। এদিকে সুন্দরের হঠাৎ এমন রাগ দেখে স্পৃহার ভীষণ ভয় হচ্ছে । সুন্দর যদি কোন ভাবে তার পুরনো বন্ধুদের থেকে লিহানের খোঁজ পেয়ে যায়?

স্পৃহার বন্ধুরা সেদিন তাকে নিয়ে অনেক মজা করেছিল ।তার প্রথম ভালোবাসা লিহান , জীবনে প্রথম তার কারো ভালো লেগেছ অবশেষে , অবশেষে কাউকে ভালোবাসতে পেরেছে , এই টাইপের কথা বলে সবাই তো তাকে বলতে থাকে। লিহানের প্রতি ক্রাশ খাওয়ার ব্যাপারটি সবাই জানতো । সুন্দর জেনে গেলে কী হবে ভেবে শরীর শিউরে উঠছে স্পৃহার।

.

.

.

.

সুন্দর ঠিক মত গাড়ি ড্রাইভ করতে পারছে না । ভীষণভাবে তার হাত কাঁপছে । তখন তার কাছে যে কলটি এসেছিল, সে কলটিতে তাকে তার স্পর্শের কথা বলা হয়েছিল ।সুন্দরের সবকিছু কেমন ঘোর ঘোর লাগছে। তার স্পর্শের নাম কেউ মুখে নিয়েছে ! এমন দুঃসাহস দেখিয়েছে যে সুন্দর তাকে শেষ করে দিবে ,যতই সে তার কাছের মানুষ হোক না কেন ।

সুন্দর বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে । কোন সিগন্যাল যেন তার চোখে পড়ছে না ।

টানা ৪৫ মিনিট ড্রাইভিং এর পর সে তার গন্তব্যে পৌঁছায়। বাইরের থেকে হুংকার দিতে দিতে যায় সকল গার্ডদের উপেক্ষা করে। কাঙ্খিত ব্যক্তিটিকে সামনে পেয়ে তাই কলার চেপে চিৎকার দিয়ে বলে ,

-আমার স্পর্শের নাম মুখে নিলি কি করে?

-একটু শান্ত হ ভাই সুন্দর ! তোকে অনেক জরুরী কথা জানানোর আছে । তোর বউকে আমি চিনিও না । তবে…

তবে কী?
বল নাহলে আমি তোকে মেরে ফেলতে পারি আশিক!

(চলবে…)
#Running
Story Name: #Shundor_Spriha
Written by Samia Sara©️
Episode:13

আমার প্রিয় মানুষেরা এই পর্বটি আপনাদের কেমন লেগেছে ? আগের পর্বগুলোতে এত ভালোবাসা দেয়ার জন্য আমি অনেক অনেক কৃতজ্ঞ আপনাদের কাছে ।আশা করি সব সময় পাশে থাকবেন💖
আজকের পর্ব টি এত দেরিতে দেওয়ার জন্য আমি খুব খুব খুব দুঃখিত। Sick chilam😓kintu apnader message e inbox vore jacchilo,tai vablam koshto kore holeo likhi 😊🫶🏻
Jototuk parsi lekhar try korsi,mon khule support koren🥺🙏🏻Apnader sobar comment e ami pori,ar reply o deoar try kori sobaike,tai sobai beshi beshi inspire korben🥺 btw twist ta kemon legeche?🥲

Ar goto diner shupto twist ta chilo “Sprihar 1st love Lihan”.😶‍🌫️ Good night 🥹

N.B. -Don’t copy

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here