#সুন্দর_স্পৃহা
#সামিয়া_সারা
#psychobasedstory
পর্ব- ১৬
সকালে স্পৃহা ঘুম থেকে উঠে দেখে সুন্দর তার রুমে । আতঙ্কিত হয়ে জিজ্ঞেস করে ,
-আপনি এখানে?
নিজের আলমারি খুলতে খুলতে সুন্দর বলে ,
-ও উঠে গিয়েছেন ? আসলে কাজ ছিল তো তাই এসেছিলাম ।
-কিন্তু আমি তো রুম লক করে ঘুমিয়ে ছিলাম । আপনি ঢুকলেন কী করে ভেতরে ?
-ভুলে যাবেন না এটি আমার রুম এবং এই রুমের চাবি আমার কাছে আছে।
স্পৃহা আর কোন কথা বাড়ায় না। সুন্দরের মত একটা পাগলের থেকে মুক্তি পেয়েছে এই অনেক বড় ব্যাপার ।তাকে এখন ফ্রেস হতে হবে। তাই সে নিরবে চলে যায় ওয়াশরুমে। হাতমুখ ধুয়ে ওয়াশরুমের দরজায় উকি দিয়ে সুন্দরকে বলে ,
-আমাকে একটি নতুন ব্রাশ দিতে পারবেন?
সুন্দর একটি নতুন ব্রাশ বের করে স্পৃহার হাতে দেয়। সাথে স্পৃহাকে বলে ,
-আমার ব্রাশ টাও দেন।
উত্তরে স্পৃহা জানায় ,
আপনার ব্রাশ আমি চিনতে পারছি না । কোনটি ?
সুন্দর তাকে বলে ,
-আপনার হাতে যে রকম ব্রাশ ঠিক একই রকম দেখতে আরেকটি ব্রাশ আছে দেখুন। ওটা আমাকে দেন।
সুন্দর কে ব্রাশ দিয়ে স্পৃহা আবার ওয়াশরুমের দরজা
বন্ধ করে দেয়। ব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে মুখে দিয়েই আয়নায় তাকে নিজের উষ্ক শুষ্ক চুল দেখতে থাকে। হঠাৎ তার চোখ যায় নিজের গলায়।গলার এক জায়গায় প্রায় কালচে লাল রং ধারণ করেছে। ডান হাতে ব্রাশ ধরে বাঁ হাত দিয়ে গলায় হাত বোলাতে থাকে স্পৃহা। চিন্তিত হয়ে ওড়নাটা গলা থেকে সরিয়ে দিতেই দেখে গলার ঠিক একটু নিচের অংশে, প্রায় আরো ৫-৬ জায়গায় র*ক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে। তাড়াতাড়ি মুখ ধুয়ে রুমে চলে আসে সে । সুন্দর রুম থেকে চলে গিয়েছে। স্পৃহা রুমের দরজা বন্ধ করে বিছানায় বসে ভাবতে থাকে, এলোমেলো শোয়ার জন্য কি রক্ত জমাট বাঁধবে ? নাকি কিছু পেশার পড়েছে ? হঠাৎ এমন হলো কেন?
পরবর্তীতে কোন একজন ডাক্তারকে দেখাবে ভেবে স্পৃহা তার ছবি তুলে রাখতে চায় । কিন্তু ফোন তো সে মাথায় কাছে নিয়ে ঘুমিয়েছিল । এখন আশেপাশে খুঁজেও ফোন পাচ্ছে না। বেশ অনেকক্ষণ খোঁজাখুঁজির পর বিছানার নিচে তার ফোনটি পায়। মনে হয় রাতে ঘুমের ঘোরে হাতে লেগে পড়ে গিয়েছিল । যদিও এমনটা আগে কখনো হয়নি । তবুও স্পৃহা ওসব না ভেবে ফোন ওপেন করতে লাগলো। কিন্তু বারবার তার পাসওয়ার্ড ভুল শো করছে। অনেকদিন হয়ে গিয়েছে সে পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করেছে। প্রায় এক সপ্তাহর মতো। সেই পাসওয়ার্ড দিয়েই ফোনের লক খুলেছে সে এতোদিন। কিন্তু আজ কেন খুলছে না ? ভুলে যাওয়ার তো কথা না। বেশ কয়েকবার চেষ্টা করার পরেও স্পৃহা তার ফোনের লক খুলতে পারল না ।
.
.
.
.
.
এদিকে স্পৃহার ১৮ বছর হতে আর আট দিন বাকি। বাড়িতে বিয়ের একটা আমেজ শুরু হয়ে গিয়েছে। সবার মনে অনেক আনন্দ শুধু সুন্দরের বাবা-মা ছাড়া। সুন্দর সব দায়িত্ব নিজে পালন করছে। যদিও তা স্পৃহার ইচ্ছামতই । সে চেয়েছিল তার বিয়েতে বেশ বড়সড়ো অনুষ্ঠান হবে। বিয়েতে কারা কারা আসবে তার লিস্ট সুন্দর নিজেই বানালো। আত্মীয়দের পাশাপাশি স্পৃহার পুরনো সকল বন্ধুদেরকে দাওয়াত দিল। তাছাড়াও লিহানের বন্ধু আরিয়ান , আরিয়ানের বোন আনিসা ও সুন্দরের বন্ধু আশিক কেউ দাওয়াত দিতে বাদ দিল না সুন্দর। বাড়িতে একটু পরেই লোকজন আসবে সাজানোর জন্য। সুন্দর খুব হাসি মুখে সবকিছু কন্ট্রোল করছে । বাড়ি সাজানোর কাজে যারা রয়েছে তারা একে একে আসতে শুরু করেছে।
স্পৃহা তা উপর থেকেই দেখতে পেয়েছিল । তাই সে রুম থেকে বেরিয়ে আসে। তারপর সুন্দরকে দেখে এগিয়ে গিয়ে বলে ,
-আমার ফোনে একটু প্রবলেম হয়েছে। লক খুলতে পারছি না । আপনি কি একটু সারিয়ে এনে দিতে পারবেন?
-কিন্তু ম্যাডাম আপনার উড বি হাসবেন্ডকে না বলে আমাকে বলছেন কেন?
-হাসবেন্ডের বড় ভাই আমার ও ভাই ।
আর ভাইকে তো বলাই যায় ।
-খুব খুশি তাই না?
স্পৃহা কোন জবাব দিল না । সুন্দর আবার বলল ,
-এ কি ম্যাডাম! গলায় কি*স দিয়েছে কে? বিয়ের আগেই এসব কিন্তু ঠিক না।
সুন্দরের এ কথায় স্পৃহা বেশ অপ্রস্তুত হয়ে গেল । নিজের ওড়নাটা বেশ মোটা করে ভাজ করে গলার সাথে পেঁচিয়ে নিল। এখানে দাঁড়িয়ে নিজের ওড়না খুলে সে ঠিক করার সময় বাড়ি সাজানোর কাজে আসা এক লোক তার দিকে তাকিয়ে থাকে। স্পৃহা এ দৃষ্টি দেখে বিব্রত বোধ করে। সুন্দরকে জানায় ,
-আমি কিছুক্ষণ পর আসছি । একটু রেস্ট করি রুমে গিয়ে ।
সুন্দর যেন তার কথা কিছু শুনতে পাইনি এমন একটা ভাব করে লোকদের কাজ দেখিয়ে দেয়। স্পৃহা সোজা তার রুমে চলে যায় । দরজা লক করে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে থাকে কিছুক্ষণ। হঠাৎ নিচে শোরগোল শোনা গেলে সে দরজার কাছে আসতেই দেখে তা বাইরে থেকে লক করে। অনেক চেঁচিয়ে কোন লাভ হয় না। কারন ভেতরের আওয়াজ বাইরে যেতে পারেনা রুম সাউন্ড প্রুফ হওয়াতে। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ ডাকতে থাকে সবাই কে ।কিন্তু কারো কোন সাড়া পায় না। দিকে তার ফোনটিও অন করতে পারছে না সে।
.
.
.
.
.
দুপুরের দিকে সুন্দর রুমের দরজা খুলে ভেতরে আসে। টিটকারির সুরে বলে,
– কাজ থেকে বাঁচার জন্য রুমে এসে বসে আছেন তাই না ?নিচে এ দিকে এত কাহিনী হয়ে গেল আর আপনি এখানেই চুপচাপ বসে আছেন।
-শুনুন আন্দাজে কথা বলবেন না । আমি শখ করে এখানে বসে ছিলাম না । আমাকে কেউ বাইরে থেকে আটকে গিয়েছিল।
-আপনি না চাইলে তো কেউ এমনি এমনি আর আটকে দিয়ে যাবে না, তাই না?
-আমি তর্ক করতে চাচ্ছি না । কী হয়েছিল নিচে? তখন অনেক শোরগোল শোনা গিয়েছিল।
-বাড়ি সাজানোর কাজে যারা এসেছিল তাদের মধ্যে একজনের চোখে ওপর থেকে লাইটের তারের ছিড়ে যাওয়া অংশ পড়ে ।
-ইয়া আল্লাহ!! কি বলছেন??
-হ্যাঁ,চোখ তো শিওর নষ্ট, যেভাবে শক লেগেছে। বাঁচে নাকি কে জানে!
এইসব রাখেন। যে কারণে এসেছিলাম, খেতে চলুন।
আপনি আমাকে আপনি করে বলা শুরু করেছেন কেন ?
সম্মান প্রদর্শন। মাত্র লক্ষ্য করলেন ?
-জ্বী।
-আচ্ছা ঠিক আছে । আপনি এখন খেতে আসুন । আমি আসি।
এই বলে সুন্দর চলে গেল।
এমন একটা দুর্ঘটনার কথা শুনে স্পৃহার খেতে ইচ্ছে করছে না । তবুও সকলের কথা ভেবে সে খেতে গেল।
.
.
.
.
.
লিহানের খুশি আজ দেখে কে।
তার বিয়ের আয়োজন চলছে তার বাড়িতে ,তাও আবার তার ভালোবাসার মানুষের সাথে। এখনো কাউকে এ খবরটা দেওয়া হয়নি । তবে আজ সে তার বেস্ট ফ্রেন্ড আরিয়ানকে সবকিছু জানাবে। আরিয়ান কে কল দিয়ে লিহান জানায় একটি খুশির খবর আছে, যার জন্য সে আরিয়ানকে ট্রিট দিবে ।
আরিয়ান কিছুক্ষণ হলো রেস্টুরেন্টে এসে বসেছে । লিহান এখনো আসেনি। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর লিহান এলো। এসে আরিয়ানকে জড়িয়ে ধরে বলল,
– দোস্ত মারাত্মক খুশির খবর আছে!
-নতুন কোন ভালোবাসার মানুষকে পেয়েছিস?
-ওসব বলিস না । আমার লাইফ একজনই আছে। খবরটা হলো ভাইয়া স্পৃহাকে ছেড়ে দিয়েছে !
-আলহামদুলিল্লাহ!
আর একটা খুশির খবর আছে যেটা শুনে তুই দ্বিগুণ খুশি হয়ে যাবি।
– বল! দেরি করিস না ।
-আর এক সপ্তাহ পরে আমার বিয়ে ।
-কিহ! কার সাথে ?
-স্পৃহার সাথে…
-What the …. কী বলিস তুই এসব! ওকে ভুলে যা, নিজের ভালো চাইলে…
(চলবে…)
#Running
Story Name: #Shundor_Spriha
Written by Samia Sara©️
Episode:16
আমার প্রিয় মানুষেরা এই পর্বটি আপনাদের কেমন লেগেছে ? আগের পর্বগুলোতে এত ভালোবাসা দেয়ার জন্য আমি অনেক অনেক কৃতজ্ঞ আপনাদের কাছে ।আশা করি সব সময় পাশে থাকবেন💖
Jototuk parsi lekhar try korsi,mon khule support koren🥺🙏🏻
Twist e twisted na hoa porjonto golpo ta cholbe kintu😌temon kichu na,apnader halka shock khaonor jonne beshi late hoye gelo🥺
Beshi beshi react,comment r share o kore diyen🥺💖 good night 🥹💖