সুন্দর_স্পৃহা #সামিয়া_সারা #psychobasedstory পর্ব-১৮

0
1

#সুন্দর_স্পৃহা
#সামিয়া_সারা
#psychobasedstory

পর্ব-১৮

একটু আগেই যে সুন্দরের ব্রাশ দিয়ে স্পৃহা তার দাঁত ব্রাশ করেছে ভেবেই তা গা গুলিয়ে উঠলো স্পৃহার। সুন্দরের কথা শুনেই চোখ বড় বড় করে তার দিকে তাকালো। মুখ, দাঁত পানি দিয়ে ভালো করে ধুতে শুরু করলো । কিন্তু কিছুতেই তার মনে শান্তি লাগছে না। স্পৃহার এমন বমি বমি অবস্থা থেকে সুন্দর সান্তনার স্বরে বলল,

-এই রিল্যাক্স ! আমি আমার ব্রাশ পরিষ্কার রাখি । ময়লা নেই কোনো। সমস্যা নেই । এখন আমার ব্রাশ টা দিন।আর এইযে নিন আপনার ব্রাশ।

সুন্দরের হাত থেকে নিজের ব্রাশটা নিয়েই আবার ব্রাশ করতে লাগলো স্পৃহা। বেশ অনেকক্ষণ পরে ভালো করে ক্লিন করে সুন্দরকে তার ব্রাশ ফেরত দিল আর বলল,

-আপনার কি কোন কমনসেন্স নেই ? আমার ওয়াশরুমে এসে ব্রাশ নিয়ে চলে গিয়েছেন। চোখ কি কপালের নিয়ে কাজ করেন?

-চোখ তো জায়গা মতোই ছিল । কিন্তু আর একটা সমস্যা হয়ে গেল যে ।

-আবার কি সমস্যা?

-আপনার ব্রাশ টা যেহেতু আমার সাথে এক্সচেঞ্জ হয়ে গিয়েছিল তাই আমি ওটা দিয়েই ব্রাশ করেছিলাম।

স্পৃহার চোখ এখন কপালে । কী বলে এই লোক ! দুই দুইবার অন্যের ব্যবহার করা ব্রাশ দিয়ে সে নিজে ব্রাশ করল! রাগ ,কষ্ট, ঘৃনা , বিরক্তি নিয়ে ওয়াশরুমের দরজা বন্ধ করে দিল স্পৃহা । সুন্দরও কোনরকম রিয়্যাক্ট না করেই রুম থেকে বেরিয়ে গেল । যেন তার কিছুতে কিছু আসে যায় না।

.

.

.

.

.

আজ বাড়িতে ডেকোরেশন এর কাজ চলবে ।লোকেরা সব আসতে শুরু করেছে বাড়ি সাজানোর জন্য। তখনই তাদের সাথে আরিয়ান উপস্থিত হয়। সুন্দর নিচে থাকাতে, সদর দরজা পেরিয়েই আরিয়ান তাকে দেখতে পায়। সুন্দর আরিয়ানের কাঁধে হাত রেখে বলে ,

-Welcome!
এসে গিয়েছো!

সুন্দরের কথায় সৌজন্যমূলক হাসি হেসে আরিয়ান সুন্দরকে বলে ,

-কি যে বলেন ভাইয়া ! আমার বেস্ট ফ্রেন্ডের বিয়ে ! কম করে এক সপ্তাহ আগে তো আমার আসতেই হবে । তাই চলে আসলাম।

-আসলে আমিও তোমারি অপেক্ষাতে ছিলাম।

-লিহান কোথায় ভাইয়া?

-উপরে।

শয়তানি হাসি হেসে আরিয়ান সুন্দর কে বলল,,

-এত তাড়াতাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন?

তাদের কথার মাঝেই লিহান উপর থেকে আরিয়ানকে ডেকে বলে ,

-কী নিয়ে কথা হচ্ছে শুনি?

আরিয়ান লিহানের দিকে তাকিয়ে হেসে বলে ,

-তোর বিয়ের প্ল্যানিং ! দেখ কেমন সারপ্রাইজ দিলাম এসে ?

-আমি জানতাম তুই আজই আসবি। তাই বেশি একটা সারপ্রাইজড হয়নি।

আরিয়ান কী উত্তর দিবে তা ভেবে না পেয়ে জিজ্ঞেস করল ,

স্পৃহা কোথায়?

সুন্দর তার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বলল ,

-খুব দরকার নাকি ছোট ভাই ? মাত্রই তো আসলে ! সহ্য করো । না হলে তো সব বুঝা যাবে সবাই ।

লিহানের সরল বাক্যে প্রশ্ন,

-কী বুঝবে?

আরিয়ান লিহানের কথার কোন জবাব না দিয়ে সুন্দরকে উদ্দেশ্য করে বলল ,

-ভাই দেখি খুব মজার মানুষ হয়ে উঠেছেন । আগে কত রাগী লাগতো । কথা-ই বলা যেত না । এখন ভালোই জোকস মারেন।

স্টেজের ডিজাইন কেমন হবে তা দেখানোর জন্য সুন্দরকে ডেকোরেশন এর লোক ডাকতেই সুন্দর লিহানকে পাঠিয়ে দিলো । লিহান যেতেই আরিয়ান সুন্দরের কাছাকাছি এসে বলল,

-সব প্ল্যান করেই মাঠে নেমেছেন মনে হচ্ছে ভাই!

-যাও ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে নাও । বড় ভাইদের এতো প্রশ্ন করতে হয় না ।

তারপর আরিয়ানের হাতে একটি জুসের গ্লাস দিয়ে বলল,

-Watermelon juice

আরিয়ান গ্লাসটা হাতে নিয়ে আশেপাশে ঘুরে ঘুরে দেখছিল। তারপর গ্লাসে এক চুমুক দিতেই সুন্দর কে বলল,

-ভাই জুসটা মনে হয় নষ্ট হয়ে গিয়েছে । ওয়াটার মিলনের ফ্লেভার ছাড়া আর কিছুই নেই। স্বাদ তো নোনতা।

-আহা খেয়ে ফেলো স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

আরেকবার মুখে নিয়ে আরিয়ানের আর সহ্য হলো না। মুখের সাইড দিয়ে চুয়িয়ে পড়ছে। সুন্দর এর কাছে গ্লাসটি ফেরত দিয়ে সে লিহান এর কাছে চলে যায়।

আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন কন্ঠে লিহান আরিয়ানকে জিজ্ঞেস করে ,

-কিরে ! কার সাথে মা*রামা*রি করে এলি?

-মা*রামারি করবো কেন?

-তাহলে কি পড়ে গিয়েছিলে কোথাও?

-না । কি হয়েছে বলবি?

-তোর মুখ দিয়ে তো র*ক্ত পড়ছে!

.

.

.

.

অনেকক্ষণ যাবৎ ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে স্পৃহা চুপচাপ বিছানায় বসে আছে । এছাড়া তারা এখন কোন উপায় নেই । কারণ গতকালের মত আজও কেউ তার দরজা বাইরে থেকে
বন্ধ করে দিয়ে গিয়েছে। রুমে বসে ডাকাডাকি করেও কোন লাভ হচ্ছে না। তার সাথে তার ফোনটাও অন করতে পারছে না। তখনই সুন্দর তার রুমে প্রবেশ করে। সুন্দরকে দেখেই স্পৃহা বুঝে যায় এ কাজ সুন্দর-ই করেছিল । কারণ সুন্দর-ই একমাত্র ব্যক্তি যে স্পৃহাকে নিয়ে অনেক পসেসিভ। তাই সে সুন্দরকে বলে
ওঠে ,

-ফাজলামো পেয়েছেন আমার সাথে ? গতকালও সেম কাজটা করেছেন । আজও আমাকে বাইরে থেকে লক করে দিয়েছেন। সমস্যা কি আপনার? বিয়েটা আপনার সাথে হচ্ছে না বলে এসব করছেন?

-Ah Mrs. Chowdhury! I’ve no interest on you.

-তবে বাইরে থেকে দরজা লাগিয়ে দিয়েছিল কে?

-Don’t know

আসলেই কি সুন্দরের কোন ইন্টারেস্ট নেই? সে রুমে এসে নিজের যা কাজ ছিল করে চলে গেল।

.

.

.

.

সন্ধ্যায় সংগীতের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গিয়েছে। স্পৃহার স্কুলের বান্ধবীরা এসেছে । সুন্দর ,লিহান আর আরিয়ান ও সেখানে উপস্থিত। স্পৃহা এত বছর পর তার পুরনো বন্ধুদেরকে পেয়ে আনন্দ আত্মহারা । সুন্দর তখন আইডিয়া দেয় তারা একটি গেম খেলতে পারে। যেহেতু প্রসঙ্গটা গেম নিয়ে তাই সকলের আগ্রহের কোন কমতি নেই। কী গেইম খেলবে জিজ্ঞেস করাতে সুন্দর জানায়,

– ট্রুথ আর ডেয়ার।

সকলে গোল হয়ে বসে মাঝে একটি কাঁচের বোতল ঘুরিয়ে দেয় সুন্দর। বোতলের মুখের দিকটা যার বরাবর এসে থামবে সে ট্রুথ অথবা ডেয়ারের একটি অপশন চুজ করবে। প্রথমবার বোতল ঘোরাতেই তা স্পৃহার বরাবর থামে।
ট্রুথ অর ডেয়ার প্রশ্ন করাতে স্পৃহা ডেয়ার সিলেক্ট করে।
তাকে তার বান্ধবী ডেয়ার দেয় যে তাকে এখন নাচ করতে হবে। যেহেতু সে ডেয়ার নিয়েছে তাই নিয়ম অনুযায়ী স্পৃহা নাচ করার জন্য উঠে দাঁড়ায়। তখনই সুন্দর তাকে থামিয়ে বলে,

– ডেয়ার গুলো পেন্ডিং থাক । গেমের শেষে এগুলো করা হবে।
তারপর আবার বোতল ঘোরানো হয় এবার বোতলের মুখ লিহানের বরাবর থামে।

– Of course truth

লিহানকে এবার প্রশ্ন করে সুন্দর,

-গতকাল এবং আজ স্পৃহার রুমের দরজা লাগিয়েছিল কে?

সুন্দরের এমন প্রশ্ন শুনে ভয় পেয়ে লিহান সুন্দরের দিকে তাকায় । একথা তার ভাই জানলো কী করে, এই প্রশ্ন তার মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে । সুন্দর আবারও তাকে জিজ্ঞেস করে ,

-এই দুই দিন স্পৃহার রুমের দরজা বাইরে থেকে আটকে রেখেছিল কে?

এবার লিহান জবাব দেয়,

– আমি..

লিহানের জবাব শুনে সুন্দর স্পৃহার দিকে তাকায়। স্পৃহা লজ্জায় মাথা নিচু করে রয়েছে। সুন্দর কে তখন সন্দেহ করার জন্য তার অনুতপ্ত বোধ হচ্ছে।

সুন্দর আবারো বোতল ঘোরানো শুরু করে । এবার বোতলের মুখ আরিয়ানের বরাবর থামে। সুন্দর তাকে জিজ্ঞেস করে ,

-ট্রুথ অর ডেয়ার?

বেশ কিছুক্ষণ ভেবে আরিয়ান জবাব দেয়,

– ডেয়ার।

আরিয়ান কেও ডেয়ার দিল সুন্দর।

-তুমি যাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসো তার একটি জিনিস এক্টিং করে দেখাও ,যা তোমার কাছে ইমপ্রেসিভ লেগেছিল।

এবার আরিয়ান একটি বোতল হাতে নিয়ে বলল,

– প্রথম তার পানি খাওয়া দেখে আমি তার প্রেমে পড়েছিলাম।

তারপর আরিয়ান ঐ পানি খাওয়ার দৃশ্য অভিনয় করে দেখাতে লাগলো । ভীষণ আলতো হাতে পানি ভর্তি বোতল নিয়ে হালকা করে ঠোঁট ছুঁইয়ে সকলকে দেখালো ।আর বলল ,

-আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ইমপ্রেসিভ ছিল এ দৃশ্য যা দেখার জন্য আমি এখনো চাতক পাখির মত অপেক্ষা করি…

তখনই লিহান বলে উঠলো ,

-আরে বন্ধু তোর হবু ভাবিও এভাবেই পানি খায়! উফফ্..

(চলবে…)
#Running
Story Name: #Shundor_Spriha
Written by Samia Sara©️
Episode:18

আমার প্রিয় মানুষেরা এই পর্বটি আপনাদের কেমন লেগেছে ? আগের পর্বগুলোতে এত ভালোবাসা দেয়ার জন্য আমি অনেক অনেক কৃতজ্ঞ আপনাদের কাছে ।আশা করি সব সময় পাশে থাকবেন💖
Jototuk parsi lekhar try korsi,mon khule support koren🥺🙏🏻

Apnara ki kichu bujhte parchen? Spoiler twist e ache marattok ekta😶bujhle comment e janan 🫣
Arekta sorol question kori?
Amake etttto valobashen keno?
Good night 🥺🫶🏻

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here