সুন্দর_স্পৃহা #সামিয়া_সারা #psychobasedstory পর্ব-২৭

0
4

#সুন্দর_স্পৃহা
#সামিয়া_সারা
#psychobasedstory

পর্ব-২৭

বাড়িতে হলুদের অনুষ্ঠান চলছে। কিন্তু সেখানে উপস্থিত
সকলেই সে বিষয়ে অমনোযোগী ।এই কয়েক দিনে যা কিছু হয়েছে তাতে প্রত্যেকের মানসিক অবস্থা খারাপ। এরই মাঝে ফিহা একবার হলুদের পানি দিয়ে বর এবং বউকে আলাদা করে গোসলের কথাটি তুলেছিল। সকলের সামনে তার স্পর্শকে গোসল করাবে কথাটি শুনে জ্বলে ওঠে সুন্দর। অগ্নিদৃষ্টিতে তাকায় ফিহার দিকে। এদিকে ফিহা একেবারে চুপসে যায়। কিছুক্ষণ পর সুন্দর স্পৃহাকে কোলে করে রুমে নিয়ে যায়। স্পৃহার হাতে একটি সিল্কের হলুদ রঙের শাড়ি দিয়ে বলে,

-নাও এবার পড়ো।

স্পৃহা গুটিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে । সুন্দর একটু কেশে আবার বলে ,

-কী হলো ? নিতে বলছি না ? বাইরে কারো সামনে তোমার
শাড়ি পরতে দিব না কিন্তু হলুদের অনুষ্ঠানে শাড়ি না পড়লে
কি আর বউ বউ লাগে? শাড়িটা পড়ো এখন।

স্পৃহা নরম কণ্ঠে বললো ,

-আপনি এখানে থাকলে আমি শাড়ি পরবো কি করে?

-তোমার বিউটি স্পট কোথায় কোথায় আছে তা কি আবার মনে করিয়ে দিব?

সুন্দরের এমন কথা শুনে লজ্জায় নুয়ে পড়ল স্পৃহা। আমতা আমতা করে বলল ,

-আপনার সামনে আমি শাড়ি পড়তে পারব না….

সুন্দর স্পৃহার লাজুক মুখের দিকে তাকিয়ে বলল ,

-ঠিক আছে আমি উল্টো পাশে ঘুরে চোখ আটকে রাখছি ।তাড়াতাড়ি পড়ে ফেলো।

স্পৃহা কিছু বলতে যাবে তার আগে সুন্দর আবার বলে উঠল ,

-আমি কিন্তু আর কিছু শুনতে চাই না । এটাই ফাইনাল । আর নয়তো যা বলেছিলাম তাও করব না।

স্পৃহা আর কোন কথা বাড়ালো না।

উল্টা ঘুরে চোখে হাত দিলো সুন্দর। স্পৃহা এবার নিজের
মন মতো করে শাড়ি পরা শুরু করেছে। বেশ অনেকগুলো কুচি দিয়ে পেটে গুঁজতে যাবে এমন সময় সুন্দর বলে উঠলো ,

-উফফ্ নাভির তিলটা !

স্পৃহা বেশ অবাক হয়ে সোজা তাকালো। সুন্দর ঠোঁটে কামড় দিয়ে পেছনে ঘুরতেই স্পৃহা চেঁচিয়ে বলে উঠলো ,

-আপনি এতক্ষণ আমায় দেখছিলেন!??

নির্দোষ ভঙ্গিতে সুন্দর এর জবাব ,

-না মানে এই আর কি! নিজের বউকেই তো দেখছিলাম । অন্য নারীকে তো না । এতো রিয়েক্ট করার কী হলো…

সুন্দরের এমন উত্তর শুনে স্পৃহা অসহায় ভঙ্গিতে বলল ,

-কিন্তু আপনি কিভাবে দেখলেন ? আপনি তো উল্টো পাশে ঘুরে ছিলেন।

বাচ্চাদের মত করে সুন্দর বলল,

-তোমার ডান দিকে তাকাও…

ডানদিকে বড় আয়নাতে তাকাতেই স্পৃহা সুন্দরকে দেখতে পেল। তার দিকে তাকিয়ে চোখ মেরে মুচকি হাসি দেয় সুন্দর । স্পৃহা তাড়াহুড়ায় শাড়ি পরতে গিয়ে আশেপাশে খেয়াল করেনি । এখন নিজেরই নিজেকে মারতে মন চাচ্ছে। লজ্জায় ফ্লোর এর সাথে নিজের পায়ের বৃদ্ধা আঙ্গুল খোঁচাতে লাগলো । হঠাৎ সুন্দর তাকে কোলে তুলে ওয়াশরুমে নিয়ে যায়। বাথ ট্যাবটা খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে হলুদের পানি এবং তার উপরে জাফরান ও গোলাপের পাপড়ি রেখে। স্পৃহার কিছু বুঝে ওঠার আগেই সুন্দর তাকে কোলে করে বাথ ট্যাবে শুয়িয়ে দেয়। এতো তাড়াতাড়ি সবকিছু হয় যে স্পৃহার বুঝে উঠতেই সময় লেগে যায়।
সুন্দরের দিকে তাকিয়ে বলে,

-এভাবে হুট করে এ কাজ করলেন কেন?

-তুমি শুনলে না হলুদের পানিতে গোসল করতে হয়? কিন্তু আমি তো তোমায় বাইরের মানুষদের সামনে এমন করতে দিব না । তাই ব্যক্তিগতভাবে তোমার জন্য এই ব্যবস্থা করে রেখেছি। সারপ্রাইজ টা কেমন লাগলো ?

-আপনার সারপ্রাইজ আপনার কাছে রাখুন। ভিজতে যখন হবে শাড়ি কেন পড়তে বললেন?

-ওই যে বললাম হলুদের দিন শাড়ি পরতে হয়।

.

.

.

ভেজা শরীরে শাড়িটা স্পৃহার শরীরে লেগে আছে। নিজের দুই হাতে যতটুকু সম্ভব নিজের শরীরকে ঢেকে রেখেছে সে। সুন্দরের সামনে এ অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে তার ভীষণ লজ্জা করছে । সুন্দর একটি বড় টাওয়েল খুলে স্পৃহা কে জড়িয়ে দিল। শান্ত গলায় বলল,

-যাও চেন্জ করে নাও।

স্পৃহারও সোজা শান্ত জবাব,

-আপনিও।

-আমায় নিয়ে ভাবছো! স্বপ্ন দেখছি না কি আবার!!

স্পৃহা আবার লজ্জায় পড়ে গেল।

এমন রাঙা মুখ দেখে হেঁচকা টান দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল সুন্দর। মুখের ওপর থেকে চুল গুলো সরিয়ে কানে গুঁজে দিতে দিতে বলল,

-খেয়ে ফেলি?

-মানে কী?

-টমেটোর মতো লাগছে! খাব?

স্পৃহা দ্রুত ছিটকে সরে ঠোঁট ফুলিয়ে বলল,

এই না!

.

.

.

সুন্দর রুম থেকে বেরিয়ে যায়। উদ্দেশ্য লিহানের কাছে যাওয়া। ফিহাকে দায়িত্ব দিয়েছিল যা তা ঠিক মতো করছে কি না এটাই পরোখ করে দেখবে ।
সুন্দর ফিহার সামনে এসে বলল ,

-কাজটা ঠিক মতো করছো তো ?

হঠাৎ সুন্দরের উপস্থিতি দেখে চমকে উঠল ফিহা। সুন্দর আবার বলল,

– জানো তো আমি আসলে কাউকে বিশ্বাস করতে পারি না ! এজন্য বারবার চেক করতে হচ্ছে।

তুচ্ছ হাসি হেসে ফিহা জবাব দেয়,

-যে নিজের ভাইকেই মে*রে ফেলার মতো করে বাঁচিয়ে রাখতে চায় নামে মাত্র,সে কাউকে বিশ্বাস করবে না সাভাবিক।

-খুব বেশি কথা বলছো দেখি! বাঁচিয়ে রাখা ভুল হলো মনে হচ্ছে!

সুন্দর এ ভয়ানক হুমকি শুনে ফিহার আত্মা কেঁপে উঠল। আকুতি করে বলল,

-না….. এমন বলবেন না প্লিজ। আপনি যা বলছেন আমি তো তাই করছি…

-বাহ্ ! কিন্তু এতো ভালোবাসলে আমাকে সব জানালে কেন?

-আসলে অন্য সব সহ্য করতে পারলেও কেউ নিজের ভালোবাসার মানুষের অন্য কারো প্রতি ভালোবাসা সহ্য করতে পারে না। আর এজন্যই সেদিন কল দিয়ে আপনাকে সব বলেছিলাম।

-আয়ুর্বেদিক ওষুধ যেগুলো এনেছিলাম ওগুলো দিয়েছো?

-হ্যাঁ…

-আগামী কাল ডোজ বাড়িয়ে দিবে। ওষুধ যতটুকু বাকি আছে সব দিবে। আমার আর আমার স্পর্শের বাসর রাত হওয়ার পরেই যেন ওর সব ক্ষমতা শেষ হয়!

এই বলে অট্টহাসিতে ফেঁটে পড়লো সুন্দর।

.

.

.

.

হলুদ সন্ধ্যা এখন। কিন্তু সুন্দরের কড়া আদেশ , কেউ তার স্পর্শকে হলুদ ছোয়াতে পারবেনা। সুন্দরের মা একবার বলার চেষ্টা করেও থেমে যায়। শুধু স্পৃহার না ,সুন্দর তার নিজের শরীরেরও বাইরের কারো ছোঁয়া নিবে না। তাই দুজনেই চুপচাপ বসে রইল। সুন্দরের চাহনি স্পৃহার দিকে সীমাবদ্ধ। বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে স্পৃহার কানে ফিসফিস করে বললো,

-আর মাত্র ১দিন স্পর্শ! আগামীকাল রাতের কথা একটু ভাবো এবার!

স্পৃহা কোনো জবাব দিলো না। রুমে একা যা খুশি বলে ঠিক আছে। কিন্তু এতো মানুষের মধ্যে শুনে আরো লজ্জায় পড়ছে সে।

স্পৃহার জবাব না পেয়ে সুন্দর তার মুখ ঘুরিয়ে ঠোঁটে হাত রেখে বলল,

-চাইলেও কিছু আটকাতে পারবে না।

এর মাঝেই লিহান হঠাৎ করে পড়ে যায় ফ্লোরে।

(চলবে…)
#Running
Story Name: #Shundor_Spriha
Written by Samia Sara©️
Episode:27

আমার প্রিয় মানুষেরা এই পর্বটি আপনাদের কেমন লেগেছে ? আগের পর্বগুলোতে এত ভালোবাসা দেয়ার জন্য আমি অনেক অনেক কৃতজ্ঞ আপনাদের কাছে ।আশা করি সব সময় পাশে থাকবেন💖
Jototuk parsi lekhar try korsi,mon khule support koren🥺🙏🏻
Bolechilam ekti important alochona ache. Apnara sobai golpota shesh korte mana korchen. Kintu amar porikkhar jonne ektaana lekha ekebare oshomvob bola chole . Tai vebechi 30 porbo deoar pore ekta break nibo. Break ta biye porjoto hoye dibo. Bisoyta onekta part one ,two er moto hobe. Amar exam shesh hole Biyer porer kahini theke start korbo. Sobai ki eta chan? Naki 30 ei ending chan? Exam er time lagbei amar🥺🥺🥺

Koekdin dhore khub sick,onek struggle korte hocche. Jor e achi,tobuo koshto kore jototuk pari dilam,jani na valo hoyeche naki. Apnader sobar wait korte onek koshto hocchilo,ei taan ei etotuku kora. Doa korben amar jonne…
Ar apnara ki chan ta obossoi janan 💝

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here