#সুন্দর_স্পৃহা
#সামিয়া_সারা
#psychobasedstory
পর্ব-২১
সুন্দরের দেওয়া ড্রেসটি পরে স্পৃহা মেহেন্দির জন্য তৈরি হয়ে নেয়। পার্লার থেকে দুজন আর মেহেন্দি আর্টিস্ট নিয়ে আসে লিহান। আশিক, আনিসা, আরিয়ান, লিহান , ফিহা, সুন্দর , স্পৃহা ও স্পৃহার কয়েকজন ফ্রেন্ড ,সকলেই উপস্থিত রয়েছে। স্পৃহা আর লিহান , দুজনকেই আজ একই সাথে মেহেন্দি পরানো হবে। স্পৃহার বন্ধুরাও যে যার মত মেহেন্দি নিবে। আনিসাকেও দিয়ে দিবে ফিহা।
বাড়িতে মেহেন্দি আর্টিস্ট আনার জন্য সুন্দর লিহানকে বলল ,
-কী দরকার ছিল বাইরে থেকে মানুষ আনার? আর আমাকে আগে কেন বলিস নি?
জবাবে লিহান বলল,
-মেহেন্দি অনুষ্ঠানে মেহেন্দি আর্টিস্ট আসবে এটা তো স্বাভাবিক । তোমাকে জানানোর কি হয়েছিল?
লিহানের থেকে জবাব শুনে ই সুন্দর দুজন আর্টিস্টকে বললো ,
-আপনারা আগে আমার ভাইয়ের মেহেদি দেওয়া শেষ করুন। ছেলের হাতে আগে লাগাতে হয় ।
ওরা দুজনও তারপর লিহানের দুই হাত নিয়ে দুপাশে বসে মেহেন্দি দিতে শুরু করল।
সুন্দর স্পৃহার পাশে বসে বলল,
– আপনি কি মেহেন্দি দিতে পারেন?
স্পৃহা মাথা উপরের ঝাঁকিয়ে হ্যাঁ বোঝালো । তারপর সুন্দর তার হাত স্পৃহার থেকে বাড়িয়ে বললো,
-শুধু শুধু তো বসেই আছেন । এক কাজ করুন আমাকে দিয়ে দিন ।
স্পৃহারও কোন কাজ ছিল না বিধায় সেও সুন্দরের হাতে ডিজাইন করতে শুরু করল।
লিহানের দুহাতের মাঝখানে কিছু জায়গা ফাঁকা রেখেছিল নাম লেখার জন্য। যেহেতু সে ছেলে ,তাই পুরো হাত ধরে তাকে মেহেদি দেওয়া হয়নি । খুব হালকা ডিজাইন এর মধ্যে মেহেদি ছোঁয়ানো হয়েছে। কী নাম লিখবে হাতে জিজিজ্ঞেস করতেই,
লিহান কিছু বলবে তার আগে সুন্দর বলে,
– আপনারা আগে ডিজাইন করা শেষ করুন । জায়গাটা ফাঁকা রেখে দিন । একেবারে শেষে লিখবেন । সুন্দরের কথা মত ওরাও আবার ডিজাইন করতে শুরু করে।
এদিকে স্পৃহা সুন্দরের হাতে মেহেন্দি দেওয়ার সময় সুন্দর তাকে বলে ,
-আমার হাতের মাঝখানে যা বলি তাই লিখে দিন। স্পৃহা তাকিয়ে ইশারায় বলে ,
-বলুন
সুন্দর তাকে বলে এই মাঝে লিখুন,
-ইচ্ছে।
.
.
.
লিহানের হাতের ডিজাইন করা শেষ। আর্টিস্ট দুজন আবারো লিহানকে বলল ,
-এখন বলুন কী লিখব ?
লিহান বলতেই যাবে এমন সময় একটি অঘটন ঘটে। স্পৃহার ফ্রেন্ড ফিহা সোজা এসে লিহানের হাতের উপর পড়ে। এদিকে ফিহার জামাকাপড় নষ্ট হয় ,অন্যদিকে লিহানের দুহাতের ডিজাইন একেবারে নষ্ট হয়ে যায়। পুরো হাতে মেখে যায়।
এমন একটা মোমেন্টে তার হাতের এই অবস্থা হল দেখে ভীষণ রেগে যায় লিহান। রাগী দৃষ্টিতে তাকায় সে ফিহার দিকে।
যেন তাকে পারলে এখনি মেরে ফেলে। শুধুই স্পৃহার সবচেয়ে কাছের বন্ধু বলে তাকে কিছু বলে না । এখন আর মেহেদি নেওয়ার মুড নেই তার, নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কাউকে কোন কথা
না বলে লিহান সেখান থেকে উঠে চলে যায় । সুন্দর এবার দুজন মেহেদি আর্টিস্ট কে বলল ,
-আপনারা এখন চলে যান । দেখলেন তো এমন একটা বিষয় ঘটল। বিলটা বলুন পেমেন্ট করে দিচ্ছি।
-কিন্তু স্যার ! ম্যামের মেহেন্দি দেওয়া তো এখনো হলো না…
-আপনাদের ভাবতে হবে না । এখন আসতে পারেন।
ওদের দুজনকে বিদায় দিয়ে সুন্দর আবারও স্পৃহার পাশে এসে বসলো । মেহেদি হাতে নিয়ে বলল,
– আপনার হাত দিন । আমি ডিজাইন করে দিচ্ছি।
বাকি সকলের দৃষ্টি এখন সুন্দরের দিকে । আশিক সুন্দরের কাঁধে হাত রেখে বলল,
– কিরে তুই আবার মেহেদী দিতেও পারিস?
সুন্দর তার দিকে না তাকিয়ে জবাব দেয় ,
-মাঝে মাঝে সবকিছুই পারতে হয়।
সুন্দর প্রথমে স্পৃহার ডান হাত ডিজাইন করল। কিন্তু মাঝখানে নাম লেখার জন্য কোন ফাঁকা জায়গা রেখেছিল না বলে সকলে তাকে বাম হাতে আবার ডিজাইন করতে বলে । এবার যেন লিহানের নাম লিখতে না ভুলে সে বিষয়েও সতর্ক করে দেয়। সুন্দরের যে মেহেদি দেওয়ার হাত কাঁচা তা তার ডিজাইন দেখে বোঝা যাচ্ছে । তবুও সে তুলনায় বেশ সুন্দর হয়েছে। এবার স্পৃহার বাঁ হাতে মেহেদিতে লাগানোর জন্যে তার হাত ধরতেই স্পৃহা আহ্হঃ শব্দ করে ওঠে । হঠাৎ করে তার এমন আঁতকে ওঠাতে সকলেই স্পৃহার কাছে এসে বলে,
– কি হয়েছে??
তারপর স্পৃহার বাম হাতের কব্জিতে তাকাতেই সবাই ভীষণ অবাক হয় । তার হাতের কব্জির অংশ দেখে মনে হচ্ছে কেউ মাংস তুলে ফেলেছে। ওই স্থানের ত্বক এতো পাতলা হয়ে
গিয়েছে যেন একটু ছুঁলেই রক্ত বেরিয়ে আসবে । এ অবস্থা কি করে হলো জানতে চাইলেও স্পৃহা কোনো জবাব দেয় না।
তারপর সকলে পরামর্শ দেয় , বাম হাতে সম্পন্ন ডিজাইন করার দরকার নেই। শুধু এই হাতের তালুতে লিহানের নাম লিখে দেয় যেন । সুন্দর তাতে রাজি হয়ে স্পৃহার তালুতে লিখতে চায় । অন্যদিকে স্পৃহার হাত মুট করে বসে রয়েছিল । বারবার খুলতে বলার পরেও সে তার হাত খুলছিল না । অবশেষে সুন্দর বলে ,
-হাত খুলছেন না কেন ম্যাম?
তখন স্পৃহা তার হাত খুলে দেয় । সকলে আরো একবার অবাক হয় ,কারণ তার হাতের তালুতে সুন্দরের নাম লেখা ছিল। এত গভীরভাবে কেটে এমন নাম লেখার কারণে তা একদম স্পষ্ট চোখে পড়ছে।
.
.
.
.
.
লিহান নিজের হাত ধুয়ে আবার ফিরে এসেছে । এদিকে কারো আর মেহেন্দি দেওয়ার কোন মুড ও নেই । সবাই নিজেদের মতো আড্ডা দিচ্ছে। লিহান আসতেই সুন্দর উঠে দাঁড়িয়ে সবার উদ্দেশ্যে বলল,
– একটি জরুরী ঘোষনা রয়েছে । এখানে উপস্থিত সকলে খুব মনোযোগ সহকারে শুনুন।
আশিক সকলের হয়ে তাকে জিজ্ঞেস করল,
-আর অপেক্ষা করবো না । জলদি ঘোষণাটা দে।
সুন্দর আবার বলতে শুরু করে ,
-যেহেতু স্পৃহার ১৮ বছর হতে এখনো তিন বাকি । তাই আমরা আজ রাত বারোটার পর থেকে ব্যাচেলর পার্টি আয়োজন করব। আগামী দুদিন এই অনুষ্ঠানের পর হলুদের প্রোগ্রাম শুরু হবে।
সকলে এক কথায় রাজি হয়ে যায়।
-এ তো খুব ভাল ডিসিশন । বিয়ের আগে ব্যাচেলর পার্টি হওয়া উচিত।
সুন্দর সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলে ,
-তাহলে আর এক ঘন্টা পর থেকে শুরু হচ্ছে আমাদের পার্টি।
এবার লিহান তাকে প্রশ্ন করে ,
-তাহলে কী কী হচ্ছে পার্টিতে?
সুন্দর তার জবাবে বলে ,
-আমি প্রত্যেকের রুমে ক্যামেরার সেট করেছিলাম । সকলে তোর বিয়ে নিয়ে কী অনুভব করছে , কে কেমন খুশি বা কেমন চিন্তা এগুলো রেকর্ড করার জন্য। প্রথম দিনে এটাই সকলের সামনে দেখানো হবে।
আশিক , আনিসা ও আরিয়ান একে অপরের মুখে তাকায়।
(চলবে…)
#Running
Story Name: #Shundor_Spriha
Written by Samia Sara©️
Episode:21
আমার প্রিয় মানুষেরা এই পর্বটি আপনাদের কেমন লেগেছে ? আগের পর্বগুলোতে এত ভালোবাসা দেয়ার জন্য আমি অনেক অনেক কৃতজ্ঞ আপনাদের কাছে ।আশা করি সব সময় পাশে থাকবেন💖
Jototuk parsi lekhar try korsi,mon khule support koren🥺🙏🏻
Dark romance category te jehetu golpo ta likhchi,tai thrilling,rohossho,ar onek pech thakbeei 🥺
Apnader ke tension e na felle ar kisher dark hobe bolun 🥺 but kalkei shob clear hoye jabe,Porte thakun…. Comment e Obossoi apnader motamot janaben🥹eto łatę korar jonne ar episode choto hoar jonne sorry🥺 but ami day by day thik korar try kori.
Good night💜✨