অবরুদ্ধ_নিশীথ #তেজস্মিতা_মুর্তজা ৫৩.

0
1

#অবরুদ্ধ_নিশীথ
#তেজস্মিতা_মুর্তজা

৫৩.

বাড়ির সামনে অযত্নে লতাপাতা জন্মেছে কত! অন্তূ তালা খুলে দরজার সামনে ছেলেটার দিকে ফিরে তাকাল, “আপনি কতক্ষণ থাকবেন?ʼʼ

-“আপনে যতক্ষণ আছেন, ভাই আশেপাশেই থাকতে বলেছে। সমস্যা নাই, আমি আশেপাশেই আছি।ʼʼ

-“হ্যাঁ। দূরে যাবেন না যেন। বাড়ির আশেপাশেই থাকুন। আমি কয়েক ঘন্টা থাকব এখানে।ʼʼ

অন্তূ ভেতরে ঢুকে দরজা আঁটকে ওভাবেই দাঁড়িয়ে রইল। কিছুক্ষণ পর দরজা খুলে অবাক হবার মতো করে হাসল, “আরে! দাঁড়িয়েই আছেন দেখছি। যে রোদ বাইরে, ঘেমে যাচ্ছেন। এতক্ষণ তো আর এভাবে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা যায়না। চাইলে আপপাশের দোকান থেকে চা-টা খেয়ে আসতে পারেন।ʼʼ

লজ্জা পাচ্ছিল লোকটা। অন্তূ কিছু টাকা বের করে এগিয়ে দিয়ে সুন্দর করে হাসল, “নিন। আর অনেক ধন্যবাদ। বেশি দূরে যাবেন না যেন। আশেপাশেই দোকানপাটে বসুন। বাড়ির দিকেও খেয়াল রাখবেন।ʼʼ

অন্তূ জানে এসব লোক নেহাত বড়ভাইদের মন জয় করতে এসব কাজ করে। মোটেও তার মনোযোগ থাকবে না বড়ভাইয়ের বউ বাপের বাড়িতে ঢুকে কী করছে না করছে, সেদিকে। আন্তরিকতা শূন্য তেলবাজী যাকে বলে। যেটা সে পারেনা। এইসব পার্টির ছেলেরা খুব জানে।

লোকটা চলে যাবার পর অনেকদিন পর অন্তূ নিজের পুরাতন বোরকাটা পরল। গায়ে চড়ানোর সময় বুক আঁটকে আসছিল। ধমকে নিজেকে সামলে ওড়না দিয়ে মুখটাও আবৃত করে নিলো। বহুদিন পর এই সম্মানিত পোশাক গায়ে চড়িয়ে নিজেকে খুব অপরাধী লাগছিল। টেনেটুনে খুলে ফেলে চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছিল। সম্মান অবশিষ্ট নেই আর তার। তার সম্মানে আবৃত শরীরটাকে অনাবৃত করে লোকচোখের লোভী চাহনি ও মিথ্যা নাটকীয় অপবাদের আঘাতে ছিন্নভিন্ন করা পুরুষটা আজ তার স্বামী। আর আজ সে-ও মন ও চলনের দিক থেকে সেই সরল-শুদ্ধ মেয়েটা নেই পুরোপুরি।

জয়ের ছেলেটা আড্ডায় বসে গেছে মোড়ের টঙে। উল্টো পথ ধরে মুস্তাকিনের ফ্ল্যাটের দিকে হাঁটা ধরল। লোকটাকে তার সন্দেহের সাথে মিলিয়ে দেখার পালা এবার। ফ্ল্যাটে না পেলে কার্যালয়ে যাবে। যদিও এতেও সন্দেহ আছে, সে আসলেই চাকরিটা করে কিনা! না পেলে কী করবে, এটা ভেবে উত্তেজনায় ঘেমে ভিজে উঠল শরীরটা। তবু মন বলছিল পাবে, পাবেই!

তালা ছিলনা ফ্ল্যাটের দরজায়। অন্তূ খুশি হলো। দরজায় বেল টিপে অপেক্ষা করল। হাতের তালু ঘামলে খুব অস্বস্তি হয়। উত্তেজনায় হাত ভিজে উঠছে। কয়েকবার বেল চাপলো। খুলছে না কেউ। বারবার বেল চাপাটাও এক প্রকার অভদ্রতা। তবু আরও কয়েকবার করাঘাত করল।

দরজা খুলল মুস্তাকিন। দরজাটা অল্প একটু ফাঁক করে দেখল অন্তূকে। তার চোখ-মুখে বিস্ময় ছড়িয়ে পড়ল, যা সচরাচর দেখা যায়না। অন্তূ অবাক হলো, যখন দেখল, মুস্তাকিনের হাতে লোডেড পিস্তল ছিল, সেটা অন্তূকে দেখে চট করে লুকিয়ে ফেলার চেষ্টা করল।

মুস্তাকিন মেকি হাসে, “উড-বি উকিল মহোদয়া! চমকে দিয়েছেন পুরো! আমি ভেবেছি পুলিশ!ʼʼ

অন্তূ উপহাস করে ওঠে, “পিবিআই অফিসার সৈয়দ মুস্তাকিন মহান কোন সংস্থার পুলিশকে ভয় পেতে পারে? সেটা ভাবার বিষয়। পুলিশকে অপরাধীরা ভয় পায় বলেই জানতাম। কত ভুল যে জানি আমি!ʼʼ

মুস্তাকিন বুঝল খোঁচাটা। তার ওপর গাঢ় সন্দেহের তীর তাক করেই এই নারীটি আজ তার দরজায় কড়া নেড়েছে। সে জানতো, আসবে। এবার দিনাজপুর ফিরলে এই রমনীর সম্মুখীন তাকে হতে হবে, এই প্রস্তুতি ছিল তার। ঘাঁড় চুলকে হাসল, “ভেতরে আসুন, দরজায় দাঁড়িয়ে কেন? ভয়-টয় পাচ্ছেন নাকি? ওসব মানায় না আপনাকে। তার ওপর জয় আমিরের বিবাহিতা স্ত্রী আপনি। লোক কাঁপবে আপনাকে দেখে।ʼʼ

-“ভয় তো পাচ্ছিই। আজকাল ভয়টা ঘামের মতো হয়ে গেছে। সাধারণ তাপমাত্রায়ও ঠিকরে বেরোয়।ʼʼ

-“আমাকে ভয় পাবার কী?ʼʼ

-“অনেককিছুই আছে, জনাব.—ʼʼ বাকিটা বলল না। ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বলল, “আপনি যেন কে? জনাব—ʼʼ


জয় ঘুম থেকে উঠে বড়ঘরে গিয়ে আধঘন্টার মতো কাটিয়ে এরপর ফিরল বাড়ির ভেতরে। তরুর জ্বর। চোখ-মুখ লাল হয়ে উঠেছে। তবু ছুটে এসেছিল জয়কে খাবার দিতে। জয় ধমক মারল একটা, “বেশি গিন্নিগিরি দেখাবি না আমার সঙ্গে। আমার লম্বা দুটো হাত আছে। বেড়ে নিয়ে খাচ্ছি। তুই তৈরি হয়ে নে। চল তোকে ডাক্তার দেখিয়ে এরপর যাব কাজে।ʼʼ

-“আমি সুস্থ আছি।ʼʼ

-“থাপড়ে কান গরম করে দেব। চোখ উল্টে মুখ ভেঙচালো, আমি তুস্থ, আমাল কিতুই হয়নি। সিনেমা করো? ওইহ্ চেংরী! খাইছিস সকালে? বস।ʼʼ

তরু হেসে ফেলল। জ্বরের তোপে শুকনো মুখের হাসি মেয়েটার মুখে অদ্ভুত দেখালো। জয় মায়াভরে চেয়ে থেকে নরম করে বলল, “বস। আয় একসাথে খাই। একা একা খাইতে ভাল্লাগেনা আমার।ʼʼ

এই ডাক উপেক্ষা করার সাধ্যি নেই তরুর। বসে মনে মনে বলল, ‘জানি না কি তা আমি? একা খেতে পারেন না, আর তাই ছোটবেলা থেকে বসে বসে খাওয়া পাহারা দিতে গিয়ে আমার কত বড় সর্বনাশ হয়েছে, তার খোঁজ রাখলেন না, নিষ্ঠুর পুরুষ। তবু আপনি এত মায়াময় কেন বলুন তো?ʼ

তরু খেতে পারছিল না। জয় তুলে তুলে দিলো, সাথে ধমক ফ্রি। চোখ দেবে গেছে কোটরের ভেতর। জয় দাঁত খিঁচে উঠল, “ইচ্ছা করতেছে, তোর চুলের ঝুঁটি ধরে ঘুরান্টি মারি চারটা। ওরা গেছে ডাক্তারের কাছে, তুই যাস নাই ক্যান? এখন যদি তোরে ধরে দুটো চড় মারি, ঠেকাবে কে?ʼʼ

তরুর হাসি পেল। একমাত্র মানুষ এটা, যার সামনে কারও গাম্ভীর্য চলে না, সে না চাইলে। ঠোঁট উল্টে একটু আহ্লাদ করে, “ধুর। আমার ডাক্তারের কাছে যেতে ভাল্লাগে না। ওষুধ দেয় একগাদা। ওষুধ ভাল্লাগেনা। তিতা…ʼʼ

-“তো ওষুধ কি আবার চানাচুরের মতো টক-ঝাল-মিষ্টি স্বাদ লাগবে খেতে? এই জন্যই কওয়া হয়—মেয়েলোকের নাই বারো হাত কাপড়ের কাছা।ʼʼ

-“আপনি আসার সময় জ্বর আর শরীর ব্যথার কথা বলে ওষুধ আনবেন নাহয়। আমি যেতে পারব না। হাঁটতে গেলে শরীর বেশি খারাপ লাগছে। এতদূর যাব আবার। আপনিই আনবেন নাহয়!ʼʼ

তরুর আস্তে আস্তে অল্প আদুরে আহ্লাদ নিয়ে বলা কথাগুলোতে জয় হাসল। এই চাপা মেয়েটার কিঞ্চিৎ আহ্লাদটুকুর সবটাই একমাত্র জয়ের কাছে। হামজাকে তরু বড় ভয় পায় ছোট থেকেই। জয় মাথা নিচু করে আলতো হাসিমুখে খাবার গিলছে। চোখে-মুখে বিরক্তি দেখিয়ে ঠোঁটে হাসলে জয়ের মতো খিটখিটে পুরুষদের বুঝি একটু বেশিই সুন্দর দেখায়, তরুর তাই মনে হলো।

জয় খাওয়া শেষে ডাকে, “এদিক আয়।ʼʼ

তরু এলে কপালে হাত রেখে তাপমাত্রা দেখে বলল, “জ্বর মেপেছিস?ʼʼ

-“হ্যাঁ। একশো চার ছিল সকালে। এখন কম মনেহয়। ভালো লাগছে শরীরটা।ʼʼ

জয় কড়া চোখে তাকায়, “বাটপার কেন তুই এত? নিজের সমস্যা না থাকলেও লোক বানিয়ে সমস্যা বলে সুবিধা নিয়ে বড়লোক হয়ে যাচ্ছে। তুই আর আমার বউ দুই মহিলা, যাদের নিজের জন্য কিছু চাওয়ার নাই। অন্যের জন্য নিজে বাঁশ খেয়ে লক হয়ে থাকে।ʼʼ

খেয়ে গোসল করে তৈরি হয়ে নিলো। পলাশ এখন জয়পুরহাটে আছে। জয় এটা ভেবে হাসে, তার নামের শুরুটা দিয়ে জেলার নামের শুরুতে পলাশের সাথে একটা মিটিং করলে খারাপ হবেনা। গুনগুন করে গান ধরল,

এই পদ্মা, এই মেঘনা, এই যমুনা সুরমা নদী তটে
আমার রাখাল মন গান গেয়ে যায়…
কী আমার দেশ, কী আমার প্রেম…কী আনন্দ, বেদনা, মিলনও বিরহ সংকটে..

গান ছেড়ে আয়নায় নিজেকে দেখে সন্তুষ্ট হলো। দারুণ বলিষ্ঠ আর হ্যান্ডসাম লাগছে দেখতে। বউটা গেছে বাপের বাড়ি। তা ভেবে দুঃখ হলো। এখন থাকলে একটু জ্বালাতন করা যেত। বদমায়েশের মতো মুচকি হাসল। ওর বউয়ের চোখদুটোকে ওর বড় ভয়। নিজের জন্য ওই চোখে ঘৃণা দেখলে খুব রাগ হয়, মন চায় থাপড়ে চোখের দৃষ্টিতে নিজের জন্য একটু ভয় আনতে। আর সবাই পায়, ঘরের বউ ভয় কেন পাবেনা? এই দুঃখে, হতাশায় জোরে করে স্লোগান দিয়ে উঠল, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।ʼ

পরে ভাবল, আহারে! বঙ্গবন্ধুর বউটা তার বউ হলেও পারতো। তার বউয়ের মতো এমন কড়া ছিল না হয়ত।

বের হবার সময় তরুকে ডাকল, “নিচে ছেলেরা আছে। কোনো দরকার পড়লে ডাকবি শুধু একবার।ʼʼ

তরু ঘাঁড় নাড়ল।

-“মাথায় পানি নিবি? চল, দুই বদনা হট-কুল পানি মাথায় ঢেলে যাই। জ্বর নেমে যাবে।ʼʼ

-“না না। আপনি কোথাও যাবেন, যান। আমার শরীর ভালো আছে বললাম তো। দরকার হলে বাথরুমের ট্যাপকল ছেড়ে পানি মাথায় নেব আমি নিজেই।ʼʼ

জয় গম্ভীর মুখে বেরিয়ে যাচ্ছিল, তরু হন্তদন্ত পেছন থেকে ডাকল, “দাঁড়ান দাঁড়ান।ʼʼ

জয় পেছন ফিরল, “আবার কী?ʼʼ

তরু টলমলে পা নিয়ে ফ্রিজের কাছে যায়। ছোট্ট কনটেইনার-বক্স নিয়ে এসে জয়ের সামনে ধরে বলল, “গতদিন সুজির হালুয়া বানিয়েছিলাম কোয়েলের জন্য, সেটা দিয়ে পরে বরফি বানিয়েছি। আপনার খুব পছন্দ। এই দুটো খেয়ে যান।ʼʼ

জয় দাঁত কিড়মিড় করে বিরবির করল, “থাপড়ে তোর.. ওই! তুই কি ধরেই নিয়েছিস আমি রাস্তায় মরে যাব, নাকি তুই-ই বাঁচবি না? রেখে দে। এসে খাব আরামে বসে। ফিরলে মনে করে দিবি কিন্তু।ʼʼ

তরু মুখটা ছোট করে দাঁড়িয়ে রইল। জয় বলল, “ভুলে যাস না। আসলেই দিবি। ফ্রিজে রাখ এখন। আমি কাউকে দিয়ে প্রাথমিক ওষুধ পাঠাচ্ছি। ফেরার পথে ডাক্তারের সাথে কথা বলে ওষুধ আনবো। সাবধানে থাকিস। বেহুশ হয়ে পড়ে-টে থাকার আগে গলা দিয়ে টুকটাক আওয়াজ বের করিস।ʼʼ

জয় চলে গেলে তরু খাবারটা ফ্রিজে রেখে দিলো। জয় ফিরলে বের করে দিতে হবে। জ্বর শরীরে নিয়ে সে গতদিন বরফি বানিয়েছে, লোকটার খুব পছন্দ সুজির বরফি।


-“কবে ফিরেছেন দিনাজপুর?ʼʼ আন্দাজে ঢিল ছুঁড়ল অন্তূ। ফ্ল্যাটের হাল দেখে বোঝা যাচ্ছে, বহুদিন লোক ছিল না এখানে।

মুস্তাকিন বিভ্রান্ত হলো কি-না, বোঝা গেল না। মুচকি হেসে বলল, “নাশতা হিসেবে কী খেতে পছন্দ করবেন আমার হাতের?ʼʼ

-“একগ্লাস পানি এনে রাখুন।ʼʼ

-“শুধু পানি?ʼʼ

অন্তূ আশপাশে চোখ ঘুরাতে ঘুরাতে শুধু মাথা নাড়ল মৃদু।

মুস্তাকিন পানির সঙ্গে ট্রে ভর্তি কিছু শুকনো খাবার ও দুই কাপ অদক্ষ হাতে বানানো চা এনে রাখল। অন্তূ একদৃষ্টে তাকিয়ে চোখের মণি ঘুরিয়ে লক্ষ করছিল মুস্তাকিনকে।

কিছুক্ষণ কেউ কোনো কথা বলছিল না। মুস্তাকিন আজ খুব হাঁসফাঁস করছিল। যেটা তার মাঝে আগে দেখা যায়নি। বলল, “কেন এলেন, কিছুই তো বলছেন না। কিছু নিচ্ছেনও না। আমাকে দেখতেই এসেছেন?ʼʼ

-“হ্যাঁ। দুনিয়াতে দেখা ছাড়া আর কাজ কী বিশেষ!ʼʼ

-“হেঁয়ালি বুঝিনা, ম্যাডাম।ʼʼ

-“আমিও বুঝতাম না।ʼʼ

মুস্তাকিন তাকিয়ে রইল। অন্তূ নিজের দৃষ্টি তীরের মতো মুস্তাকিনের চোখের মণির ওপর স্থির রেখে জিজ্ঞেস করল, “কে আপনি?ʼʼ

মুস্তাকিন চট করে হেসে ফেলল, “আমি? চেনেন আপনি আমায়। পিবিআই অফিসার সৈয়দ মুস্তাকিন মহান।ʼʼ

-“আপনি কে, সেটা জিজ্ঞেস করেছি। কল্পকাহিনী খুব বেশি পছন্দ না আমার। আব্বু ছোটবেলা থেকে বাস্তব গল্প বেশি শোনাতো। রূপকথার গল্প বিরক্ত লাগে আমার।ʼʼ

-“কল্পকাহিনী? তাহলে বাস্তবটা আপনিই বলুন।ʼʼ

-“সেটা আপনার কাছে জানব। শুধু এটুকু জানি, আপনার আপাত-পরিচয়টা কল্পকাহিনির অংশ।ʼʼ

-“তা কী করে বলছেন?ʼʼ

-“কথার লাইন কাটছেন, আপনি। যেটুকু জিজ্ঞেস করেছি, তার জবাব দিন।ʼʼ

অবাক হবার ভান করল মুস্তাকিন, “মাই গড! সবে আপনি অনার্স থার্ড ইয়ার। অথচ এক সেকেন্ডের জন্যও এতক্ষণে মনে হয়নি যে আমি কোনো উকিল মহোদয়ার সামনে বসে নেই। এমন জেরা করার দক্ষতা নিয়েই জন্মেছিলেন নাকি? তারপর উকিল হবার স্বপ্ন দেখেছন?ʼʼ

অন্তূ কপট হাসল, “রসিকতা বিরক্ত লাগছে।ʼʼ

-“আগে শুনি, আমার ওপর আপনার সন্দেহের শুরুটা কবে?ʼʼ

-“অনেক আগে।ʼʼ

-“অনেক আগে? তবু আপনি…ʼʼ

-“পাকাপোক্ত প্রমাণ একত্র না করে কাউকে অভিযুক্ত করা যায়না। বড়জোর সাসপেক্টিভ হিসেবে মার্ক করা যায়। যেটা আমি অনেক আগেই করেছি আপনাকে।ʼʼ

মুস্তাকিন সামান্য ভ্রু কুঁচকে কেমন বিব্রত মুখে তাকিয়ে রইল। অন্তূ বলল, “প্রথমত আপনাকে আজ অবধি কোনোদিন পুলিশের ইউনিফর্মে দেখার সৌভাগ্য হয়নি আমার। একবার কার্যালয়ে গেছিলাম, আপনি তখন সেখান থেকে বেরিয়ে আসছিলেন, ডেস্কে বসিয়েছিলেন ঠিকই, তবে সবার পরনে পোশাক থাকলেও আপনি কিন্তু তখনও অর্থাৎ কার্যালয়ের ভেতরেও সিভিল ড্রেসে ছিলেন।ʼʼ
মুস্তাকিন চুপচাপ বসে রইল। অন্তূ বলে, “আপনি আমাদের বাড়ি এসেছিলেন। আব্বুকে পরে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘উনি কি সৈয়দ পরিবারের ছেলে?ʼ আব্বু হেসে বলেছিল, ‘না। পুলিশের চাকরির সময় এটা নাকি ছদ্মনাম লাগিয়েছে।ʼ এন্ড দেয়ার ওয়াজ মাই ব্ল্যাডি ফল্ট দ্যাট— সেদিন আব্বুকে জিজ্ঞেস করা হয়নি, তাহলে আপনার আসল নামটা কী?ʼʼ

-“তাতে কী প্রমাণ হয়?ʼʼ

অন্তূ মাথা নাড়ল, “বিশেষ কিছু না। কিন্তু এরপর? আমি যেদিন পলাশের ডেরায় গেলাম, আপনি আমায় জিম্মি করে পাঠিয়ে আপনারাই ব্যাক-আপে রইলেন। হাস্যকর না? পুলিশেরা সন্ত্রাসীর খোঁজ পেলে নিজেরা চার-পাঁচ ফোর্স মিলে একসাথে অফারেশন চালায়, পেছনে আরও লোকাল থানা ও কত রকমের সংস্থা এবং ব্যাটেলিয়ন ইত্যাদিরা ব্যাক-আপে থাকে। আর আপনি সেদিন আমার মতো একটা নিরীহ মেয়েকে পাঠালেন তো পাঠালেন, এক ঘন্টা সময় দিলেন, এরপরও আমি না বেরোলে আপনি যাবেন! আপনার হাসি পাচ্ছেনা?ʼʼ

মুস্তাকিন কিচ্ছু বলল অন্তূর এমন শক্ত ধিক্কারে। একগ্লাস পানি খেল ঢকঢক করে।

অন্তূ থেমে এবার চোখ তুলে তাকাল, “অথচ এক ঘন্টায় একটা মেয়েকে ছিঁড়ে-ফেঁড়ে রান্না করে খেয়ে ফেলা যায়। আপনি পলাশের ডেরা থেকে খুব দূরে ছিলেন না। তবু এত চিৎকার চেঁচামেচিতে উঠে আসেননি। তাছাড়া জয় আমিরের সঙ্গে আপনার কথাবার্তা বরাবর রহস্যজনক ছিল। যেন দুজন দুজনকে খুব চেনেন, জানেন।

আমার সঙ্গে যখন জয় আমির মজার খেলা খেলছিল, তখন আপনি নাকি জেলার বাইরে ছিলেন। আমার তথাকথিত বিয়ে হলো, আব্বুর ইন্তেকাল হলো, দান খয়রাত হলো সেই উপলক্ষে। এরপর আপনি একদিন চট করে ফিরলেন। আপনার পরিবারের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলাম, এড়িয়ে গেলেন।ʼʼ

অন্তূ থেমে কপাল চুলকালো, “ধুর! এত ফিরিস্তি দিতে ভালো লাগছে না। মোটকথা সাসপেকশন আপনার ওপর আমার বহুদিনের, কিন্তু আজকের আগে বিশেষ প্রয়োজনবোধ করিনি তা ক্লিয়ার, তাই জানতে আসিনি।ʼʼ

মুস্তাকিন চুপচাপ বসে ছিল। এবার জিজ্ঞেস করল, “আজ এমন কী বিশেষ হয়েছে যে, জানতে এসেছেন?ʼʼ

অন্তূ কোনো কথা না বলে কেবল সামান্য হাসল যেন।

সৈয়দ মুরসালীন মহানের বোন সৈয়দ মুমতাহিণা মহান। কিন্তু আরেকটা কথা থেকে যায়, সেটা হলো–মুমতাহিণার ভাইকে জয় আমির খুন করেছে। কিন্তু সেটা মুরসালীন নয়, কারণ মুরসালীন এখনও জীবিত। তাহলে মৃত ভাইটা কে? এটা ভাবতে গিয়ে অন্তূ খুঁজে পেয়েছিল, সৈয়দ মুস্তাকিন মহান নামটা। অথচ যখনই তার চেনা-জানা সৈয়দ মুস্তাকিন মহানের মুখটা ভেসে উঠেছিল চোখের সামনে, বিষয়টা খাঁপে খাঁপ খায়নি।

এই মুস্তাকিন মহানের জন্য অন্তূর মনে মনে যে সন্দেহ গেঁথে ছিল, তা ছিল—এই লোকটা একটা ছদ্মবেশী ভন্ড। জয় আমির ভন্ডদের দেখতে পারেনা, মুস্তাকিনকেও দেখতে পারতো না। অথচ মুরসালীনের চোখের আগুন বলেছিল, ওর ভাই ওর মতোই আগুনের দলা হবে। সৈয়দ পরিবারের রক্তে ভন্ডামি আর কলুষ থাকতে পারেনা, এটা যেন কেউ অন্তূকে ডেকে বলেছিল। যে মুরসালীন বোনের সম্মান ও প্রাণহানীর বদলায় হুমায়ুন পাটোয়ারীর মতো জানোয়ারটাকে কমবেশি সত্তরটা ছুরিকাঘাত করে মারতে পারে, তার সাথে অন্তূর চেনা মুস্তাকিন মহান মেলেনি মুরসালীনের ভাই হিসেবে। মুমতাহিণার আরেক ভাই এই মুস্তাকিন মহান হতে পারেনা।

এই হিসেবটা অন্তূ সেদিন বড়ঘরে দাঁড়িয়ে মাত্র কয়েক সেকেন্ডে কষেছিল। এরপর বসে পড়েছিল লোহার বীমের ওপর।

এইসব কিছুই চেপে শুধু জিজ্ঞেস করল, “আপনি কে?ʼʼ

মুস্তাকিন এতক্ষণে হাসল মৃদু, “আমি?ʼʼ

-“জি, আপনি। কে আপনি?ʼʼ

-“আমি পরাগ আজগর। সরি—আমি জানিনা জারজ বাপের নামের সারনেম জারজ সন্তান ব্যবহার করতে পারে কি-না! কারণ আমার নামটাকেই কখনও ব্যবহার করতে দেয়া হয়নি কোথাও, সারনেমের প্রশ্নই ওঠেনা। স্কুলে আমার নাম পারভেজ দেয়া হয়েছিল।ʼʼ

অন্তূ ভ্রু কুঁচকাল, “আপনি পলাশ আজগরের ভাই?ʼʼ

পরাগ দুপাশে মাথা নাড়ে, “আমি রূপকথা আজগরের সৎ ও জারজ ভাই।ʼʼ

-“অর্থাৎ আপনার মা রূপকথার মা নয়?ʼʼ

-“আমার মা সালমা বেগম। আপনাদের ভার্সিটির খন্ডকালীন আয়া। রূপকথার মা রূপকথাকে ছোট রেখে বাপের বাড়ি চলে গেছিল। পরে অন্য ঘরে বিয়ে হয়েছে।ʼʼ

অন্তূ কপাল চেপে ধরে চুপ করে বসেছিল বেশ কিছুক্ষণ। পরাগ চা-য়ে চুমুক দিচ্ছিল শব্দ করে। অন্তূ জিজ্ঞেস করল, “সৈয়দ মুস্তাকিন মহানটা কে?ʼʼ

-“আপনার পতি-পরমেশ্বরকে জিজ্ঞেস করবেন। সে ভালো বলতে পারবে।ʼʼ

-“সে কি জীবিত?ʼʼ

-“তাকে জয় আমির নিজহাতে খু-ন করেছে।ʼʼ

-“শুধুই কি রাজনৈতিক রেষারেষি?ʼʼ

-“এছাড়াও অন্যকিছু আছে। যা শুধু জয় আমিরই জানে হয়ত। আমি যেটুকু জানি, শুধুই ধান্দা-পার্টনার হিসেবে। আপনার স্বামী মালটা ব্যাপক চাপা আর ঘাউরা। সহজ জিনিস না।ʼʼ আজ চট করে মুস্তাকিনের চিরচেনা ভদ্রতায় পরাগের অসভ্যতা ফুটে উঠছিল একটু একটু করে।

-“আপনি সৈয়দ মুস্তাকিন মহানের নাম ধারণ কেন করেছিলেন?ʼʼ

-“সে আইনের কর্মকর্তা ছিল। আমারও সেরকমই একটা মিছেমিছি পদের দরকার ছিল।ʼʼ

অন্তূ কয়েক সেকেন্ড চুপচাপ থেকে আন্দাজ থেকে বাকিটা বলল, “তাকে খুন করার পর তার স্থল পলাশ আজগর আপনাকে দিয়েছিল আপনাদের অনৈতিক ব্যবসা ডিফেন্স করার জন্য?ʼʼ

বাহ-বা দেবার মতো ঠোঁট ফুলিয়ে নাটকীয়তা নিয়ে পরাগ বলল, “আধ্যাত্মিক চিন্তাধারা, ম্যাডাম!

-“শুধুই সাধারণ জ্ঞান।…. কিন্তু এমনও কি হয়? একজন মৃত আইন কর্মকর্তার জায়গা আপনি নিয়ে তার স্থলে তার নাম নিয়ে অন-ডিউটিতেও থেকেছেন।ʼʼ

-“প্রতিটা থানা ও তদন্ত সংস্থায় যদি আমরা পেইড-এজেন্ট রাখতে পারি গাদা করে, এ আর এমন কী? তাছাড়া উপরমহলের আদেশে মুস্তাকিন মহানের উপরের টিকিট কাটা হয়ে গেছিল। আদেশ ছিল টুপ করে যেন ওকে কোনো কেইসে অভিযুক্ত করে ফাঁসিয়ে দেয়া অথবা দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেবার। কিন্তু তার আগেই জয় আমির তাকে টপকে দিয়েছে।ʼʼ

-“এটা কতদিন আগের ঘটনা?ʼʼ

-“২০১৩-এর মাঝামাঝি। তবে আমাকে এর ফায়দা দেয়া হয়েছিল মাসকয়েক আগে। আমি শুধু অফিসারের রোল প্লে করেছি লোকের সামনে। কার্যালয়ের ভেতরের কোনো কাজে আমার হস্তক্ষেপ ছিল না। সরকারী কার্যালয়ের ব্যাপার-স্যাপার অতিরিক্ত সহজও না। তবে মাল ছাড়লে আর পাওয়ার থাকলে কঠিনও না। সবাই টাকার বিনিময়ে আমাকে মুস্তাকিন মহানের পদের অফিসারের মতো ট্রিট করেছে।ʼʼ

অন্তূ চুপচাপ বসে রইল মেঝের দিকে তাকিয়ে। মুস্তাকিন মহান নিশ্চয়ই আইনের কর্মকর্তা হয়েও ক্ষমতাসীন দলের বিপক্ষ আচরণ করেছিল প্রকটভাবে। তাই তাকে সরিয়ে দেবার অর্ডার এসেছিল! এমন কত জজ, ব্যারিস্টার, মেজর কত রকম কর্মী-ই তো বরখাস্ত হলো অথবা জীবন দিয়ে মূল্য শোধ করে গেল সেই ভয়ানক সময়টাতে! আব্বু এসব বলতো টুকটাক। শুধুই অন্যায়ের বিরুদ্ধে মৃদু আওয়াজ তোলার দায়ে নয় কি এসব? এবং নিজের কর্তব্য নিষ্ঠার সাথে পালন করতে চাওয়ার অপরাধে!

অন্তূ ভাবে, তাহলে সে আর এমন কী হারিয়েছে? সে তো এখনও জীবিত! সে এমন চুনোপুটি হয়ে যা টুকটাক কথা বলেছে, হিসেবে তার সাথে কমই বিট্রে হয়েছে। অন্তূর ভেতরটা একপ্রকার নিদারুণ শক্তিতে গমগম করে উঠল। সে একা বেঁচে আছে, জয় আমিরের সুপ্ত-ইচ্ছার জোরে।জয় আমিরকে সেটুকুর কৃতজ্ঞতা, আর বাকিটা অথবা অনির্দিষ্ট হারে অগ্রহণযোগ্যতা।

পরাগের জীবনকাহিনির ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ এখনও বাকি। দুপুর সাড়ে এগারোটা বাজছে। গরম বাড়ছে প্রকৃতিতে।


তরুকে ওষুধ দিয়ে গেল একটা ছেলে। দুটো ব্যথার, কয়েকটা প্যারাসিটামল এবং গ্যাসের ওষুধ। জয় পাঠিয়েছে। হাতুরে ডাক্তারদের প্রাথমিক চিকিৎসা। খেল না সে-সব। ওষুধ তার জন্মের শত্রু।

ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর বারোটা ছুঁইছুঁই। শরীর একেবারে আওলে গেছে তখন। কোনোমতো হুশ আছে যেন। মাথার ব্যথা ও সর্দিতে গোটা মুখমণ্ডলের সাইনাস ভেঙেচুড়ে আসছিল। অসহ্য ব্যথায় ছটফট করছিল বসার ঘরের সোফাতে আধশোয়া হয়ে বসে।

রিমি ও তুলি মেয়েকে প্রাইভেট এপোয়েনমেন্টে দেখাতে গেছে। অনেকক্ষণের ব্যাপার। সিরিয়াল দিয়ে বসে থাকতে হবে। কখন ফিরবে জানা নেই। এখন মনে হচ্ছিল, সে সঙ্গে গেলেই পারতো। ঠান্ডার প্রকোপে শ্বাস-প্রশ্বাস আঁটকে আসছিল।

বেলা বারোটার পর দরজায় করাঘাত পড়ল। অন্তূ এসেছে নিশ্চিত সে। খুশি হলো। এই মেয়ে এখন জোর করে ওকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েই ছাড়বে। এখন আর না গেলেই নয়। অন্তূকে খুব প্রয়োজন ওর। ওই মেয়ে গম্ভীর মুখে দুটো ধমক মারবে এরপর জোর করে হাসপাতালে নিয়ে যাবে।

তরু দরজা খুলতেই দেখল দুজন পুরুষ দাঁড়িয়ে। একজনকে সে চেনে—রিমি ভাবীর চাচাতো ভাই মাজহার আলমগীর। আরেকজনকে সে চিনলো না। ফর্সা, উঁচু লম্বা চেহারা। চোখদুটো জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। বিড়ালচোখা।ঠোঁটের কোনে প্যাচপ্যাচে হাসি। তরু টলমলে পায়ে কয়েক কদম পিছিয়ে যায়। শরীরটা অজান্তেই ঝাঁকুনি দিয়ে উঠল। তলপেটে একটা আতঙ্কিত পাক জড়িয়ে এলো। শরীরের ওড়নাটা দূর্বল হাতে টানলো। কেউ নেই বাড়িতে। একবার কেন জানি ইচ্ছে করল চিৎকার করে নিচের ছেলেদের ডাকতে। বোকামি হবে। এরা তো কেন এসেছে সে-সব বলেইনি!

পলাশ মাজহারের দিকে মুখ এগিয়ে জিজ্ঞেস করে, “এইটা কে রে?ʼʼ

-“কে জানি লাগে হামজা লোটির বাচ্চার।ʼʼ

পলাশ ঠোঁট হেলিয়ে মাথা দুলিয়ে হাসল। ঠিক যেমন রক্তচোষা প্রাণীরা— রক্তের গন্ধে তাদের জিভ লকলক করে ওঠে ওমন উজ্জ্বল হয়ে উঠল পলাশের চোখ-মুখের ভাষা।

তরু কম্পমান গলায় জিজ্ঞেস করে, “আপনারা কে এসেছেন? কিছু দরকার? কেউ তো বাসায় নেই আমি ছাড়া।ʼʼ

-“চলবে তো তাতেই। আর কাউকে আপাতত দরকার নেই। পলাশ ভেতরে ঢুকে পড়ল।

মাজহার হেসে উঠল। পলাশের বুট জুতোর গটগট আওয়াজে তরুর শরীরটা ঝাঁকি মেরে ওঠে। পুরুষটা এগিয়ে আসছে। কেমন এক ভঙ্গিমা। কাধদুটো হেলিয়ে-দুলিয়ে হাঁটছে। ঠোঁটের ওই হাসি নরকের দেবতার খেয়াল এনে দিচ্ছে। হৃদযন্ত্রের ধরাস-ধরাস আওয়াজে শরীরটা শেষ পর্যায়ের নিস্তেজ হয়ে এলো মেয়েটার। মাজহার সে-সময় দরজা আঁটকে দিলো।

মাথা টলছিল তরুর। ওর ক্ষমতা নেই দাঁড়িয়ে থাকার। অন্তূর মুখটা ভাসছিল খুব তখন। তার স্থলে অন্তূ হলে এতক্ষণে নিশ্চিত দৌঁড়ে গিয়ে রান্নাঘর থেকে বটি নিয়ে এসে সামনে দাঁড়াতো। মাথাটা চক্কর মেরে উঠছে, চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। পা টাল খেয়ে আসছিল তরুর।

খানিক বাদে যোহরের আজান পড়বে। জয় কোথায়? সে এতক্ষণ রাস্তায় পলাশের খোঁজে।

চলবে…

[ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here