#অবরুদ্ধ_নিশীথ
#তেজস্মিতা মুর্তজা
৬৩. (প্রথমাংশ)
লুঙ্গির নিচে একটা আন্ডার-প্যান্ট পরা দরকার। কিন্তু জয় আমির জীবনে আন্ডার প্যান্ট কেনেনি। হামজা থাকতে সে আন্ডার প্যান্ট কিনবে কেন?
রাত সাড়ে বারোটা মতো বাজে। হামজা কিছু কাগজপাতি দেখছিল। কোয়েল পাশে বসে এটা-ওটা নাড়ছে, আর ঝগড়া করছে হামজার সাথে। আজকাল হামজা তাকে বেশ সময় দেয়। হামজার সাথে কোয়েলের মিষ্টি সম্পর্ক ছিল। তেতো সম্পর্ক ছিল জয়ের সাথে। বলাই বাহুল্য জয়ের সাথে মিষ্টি সম্পর্ক গড়া যায়না।
-“সাহেব!ʼʼ
হামজা মাথা না তুলে বলল, “হু।ʼʼ
-“আপনার জাইঙ্গাটা খোলেন তো ভাই, তাড়াতাড়ি করেন।ʼʼ
হামজা গম্ভীর মুখে তাকালো, “মাল খেয়েছিস? তারতুর কেটে গেছে মাথার?ʼʼ
-“তার কাটা, ঠিক। তবে মাল খাই নাই। ফিরে এসে খাবো। এখন খালি আপনার জাইঙ্গাটা দরকার। ধার দ্যান। ফিরে এসে ফেরৎ দিচ্ছি।ʼʼ
হামজা ধুপ করে একটা লাত্থি মারল ঠ্যাংয়ের ওপর। ল্যাং খেয়ে পড়ে গিয়ে আবার উঠে জয় তাড়া দিলো, “খোলো, ভাই। জলদি খোলো। লুঙ্গির নিচে জাইঙ্গা না পরলে বেইজ্জতি হবার চান্স থাকে রাস্তাঘাটে।ʼʼ
কোয়েল বলল, “তুমি কোথায় যাবে, জয়? সেদিন আমাকে নাওনি। আমি যাব।ʼʼ
-“কবরে যাব। চল যাই। মিড-নাইট ডেটিং সেরে আসি।ʼʼ
-“কবরে কি দোলনা আছে? আমি দোলনায় উতবো।ʼʼ
-“আছে। সেইসাথে তোর আব্বাও আছে। সকাল বিকাল দুলতেছে ওইখানে। চল বেইমান, সাক্ষাৎ করে চা-পানি খেয়ে আসি। মজ্জাই মজা ওইখানে।ʼʼ
কোয়েল কান্না জুড়ে দিলো। সে কবরে যাবে। বাবার সাথে দেখা করতে যাবে।
তুলি এসে ঝারা মেরে মেয়েকে নিয়ে বলল, “বেলেহাজ কেন তুই এত? ধর্ম আর সৃষ্টিকর্তাকে একটু ভয় কর।ʼʼ
জয় মুখ বিকৃত করল, “সৃষ্টিকর্তা? কীসের সৃষ্টিকর্তা? আমার তো কোনো সৃষ্টিকর্তা নেই। দেয়ার ইজ নো গড, ফাকিং অনলি আই এম মাই ওউন গড অ্যান্ড ক্রিয়েটর। আদারওয়াইজ নো ওয়ান ইন দ্য স্কাই।ʼʼ
তুলি গর্জে উঠল, “চুপ্প! নাস্তিক। বাজে কথা না বলে বের হ তো। তোর কথা শুনলে গা জ্বলে আমার। তোর মতো শয়তানের আবার সৃষ্টিকর্তা কী? তুই তো বহিষ্কৃত।ʼʼ
জয় হো হো করে হাসল। তুলি দাঁত খিঁচে বলল, “তোর সৃষ্টিকর্তা নেই, না?ʼʼ
-“তোদের থাকলে থাকবে হয়ত। কিন্তু মূলত ওসব কিছুই থিউরেটিক্যালি অর প্রাকটিক্যালি কোনোভাবেই নেই। নয়ত মানুষ এত ডাকে এত ডাকে…..হা হা হা! নো হ্যাজ এনি রিলিজিয়ন অর ক্রিয়েটর ইন দ্য হোল ইউনিভার্স, সুইটহার্ট! ওসব আল্লাহ-বিল্লাহ কিছু হয়না।ʼʼ
-“চুপ কর জয়। এই! যদি তোর সৃষ্টিকর্তা না থাকে, তোকে পয়দা কে করেছে? নিজে নিজেই এতবড় দামড়া শয়তান হয়েছিস? তুই নিজে নিজে জন্মেছিস?ʼʼ
জয় হাসল, “উহু, বাপ! তুই তো রেগে যাচ্ছিস! আমাকে জন্মেছে আমার বাপ-মা। এ পর্যন্ত ওদের দায় শেষ। এরপর বাকিটা তোর ওই পয়দা বল আর এত বড় দামড়া হওয়া বল, ওটার ক্রেডিট আমার যায়, আমার আমার। জয় আমিরের।ʼʼ
-“তুই নাস্তিক হয়ে কী পেয়েছিস? কী আছে তোর? অন্তত ধর্মবিশ্বাসটুকু রাখতি জীবনে! ফাঁটা বাঁশ।ʼʼ
-“তোরা আস্তিক হয়ে কার বাল লাড়ছিস? তোর কী আছে?ʼʼ
-“তুই নাস্তিক হয়েও তো কিছু পাসনি!ʼʼ
-“আমার বিশ্বাসও নাই, পাওনাও নাই। সিম্পল হিসেব বোঝো না, শালীর মেয়ে? অথচ তোরা বিশ্বাস রেখেও পাসনা কিছু তোদের সেই আল্লাহর কাছে, এটা দুঃখজনক, উহ! আমি কারও উপাসনা করিনা, এবং কারও কাছে আবেদনও না। কোনোকিছুর জন্যই না। জয় আমির ইজ দ্য আলটিমেট।ʼʼ
তুলি রাগে কিছু বলতে পারল না। জয় হাহল, “হি হ্যাজ নো ওউনার, হি ইজ দ্য ওউনার, ডিয়ার!ʼʼ
তুলির মানসিক অবস্থা কেমন যেন হয়ে গেছে। দিনের পর দিন বোবার মতো চুপ থাকে। আর যদি কিছু বলেও, সেটাতে শুধু ক্ষিপ্ততা ছাড়া কিছু থাকেনা। মানসিক বিপর্যস্ত হয়ে গেছে পুরো। রিমি কতদিন ওকে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে কাঁদতে দেখেছে সেসবের পর!
তুলি এবার চিৎকার করে কিছু বলতে যাচ্ছিল। হামজা দারাজ গলায় ধমকে উঠল। পুরো বাড়ি ঠিক ঝড়ের আগের নীরবতার মতো থমকে উঠল। রিমি দৌঁড়ে বেরিয়ে এলো। অন্তূ ঘরের দরজায় দাঁড়াল, সিঁড়িঘর থেকে কবীর ভেতরে এসে দাঁড়াল। তুলি পা ঝারা মেরে মেয়েকে নিয়ে রুমে চলে গেল।
জয় দীর্ঘশ্বাস ফেলল, “ভাবী! একটা ফ্রেশ জাইঙ্গা এনে দ্যান তো। শালার জাইঙ্গার ধার করতে এসে কেলেঙ্কারী হয়ে গেল।ʼʼ
লুঙ্গির নিচে আন্ডার প্যান্টটা পরল। এগিয়ে এসে অন্তূকে দেখে ভ্রু কুঁচকে মাথা থেকে পা দেখল। এরপর বলল, “হোয়াট হ্যাপেনিং, সিস্টার? এমনে তয়-তৈয়ার হয়ে খাড়ায়ে আছো ক্যা?ʼʼ
-“আব্বুর কবর জিয়ারত করতে যাব।ʼʼ
হামজা এসে দাঁড়াল, “জয়, তুই কবীরকে নিয়ে বেরিয়ে যাব।
অন্তূ গলায় জোর দিয়ে বলল, “আমি যাব।ʼʼ
হামজা শান্তস্বরে জয়কে বলল, “যা যা। দেরি হচ্ছে তোদের।ʼʼ
-“মেয়র সাহেব!ʼʼ
হামজা তাকাল। অন্তূ শান্তস্বরে বলল, “আমি আব্বুর কবর জিয়ারত করতে যাব।ʼʼ
অন্তূ এক ভ্রু উচায়, ঘাড়টা কাত করে, “ওরা কবরস্থানে যাচ্ছে?ʼʼ
-“হ্যাঁ, মেয়র সাহেব। ওরা কবরস্থানে যাচ্ছে।ʼʼ
গলাটা ভরাট হয়ে এলো হামজার, “তাতে কী?ʼʼ
-“কিছু না তো। আমি সঙ্গে যেতে চাই।ʼʼ
হামজা হাসল, “আমি চাই না।ʼʼ
অন্তূ আগের চেয়ে নিচু গলায় বলল, “আর এজন্য হলেও আমি চাই, মেয়র সাহেব। অন্তত পলাশ আজগরের ধড়হীন মাথাটা দাফন হবার সময়ে সেই স্থানের খুব কাছাকাছি থাকার জন্য হলেও যেতে চাই। ওর শেষকৃত্যের সহযাত্রী হতে চাই। আবদারটুকু পূরণ করুন, মেয়রসাহেব। আপনি তো জনদরদী, সেবক!ʼʼ
দুজনের দুর্বোধ্য এক দৃষ্টি বিনিময় হলো। সেই দুই জোড়া চোখে আগুন জ্বলছে। ভিন্ন সেই আগুনের জ্বালানি। কারোটা কাঠখড়ি, কারোটা পেট্রোলিয়াম। কারোটা প্রজ্জ্বলন, কারোটা দহন। সেই আগুন চোখে চেয়ে হামজা যখন আলতো হেসে আত্মসমর্পণের ভঙ্গি করল, দেখতে ভয়াবহ লাগল।
অন্তূ তা অগ্রাহ্য করে মাথার চওড়া ওড়নাখানি কপাল অবধি টেনে নিয়ে বেরিয়ে গেল জয়ের পেছনে।
পলাশের মাথাটায় পঁচন ধরেছিল। গরমের কাল। তার ওপর বস্তায় বাঁধা ছিল একদিন। খাদেম দাঁড়িয়ে কাঁপছে। ছোট্ট একটা শাবল দিয়ে মাটি খুড়ছে জয় তরুর কবরের পাশে। কবীর বস্তা হাতে দাঁড়িয়ে।
অন্তূ ফটকের বাইরে দাঁড়িয়ে সেদিন আব্বুর জন্য দোয়া করেছিল, কিন্তু কাঁদেনি। আব্বুর সাথে কথা বলল, তবু কাঁদল না। আব্বুর কবরটা ডানপাশের সাড়িতে। তরুরটা অপর পাশে। সেই কবরের ডানপাশে জয় পলাশের মাথাটা পুঁতলো।
অন্তূর আব্বুটা নেই। ডাক্তার বলেছিলেন, পলাশ যেভাবে থেতলে মেরেছিল আমজাদ সাহেবকে, তাতে করে পরে সেসব দুষিত রক্ত জমে টিউমার এবং তা থেকে ক্যান্সার হবার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। অন্তূ খেয়াল করল, তার যন্ত্রণা হচ্ছে না। কবরের ফটক ধরে তীক্ষ্ণ চোখে চেয়ে দেখল জয়ের দক্ষ হাতের দাফনকার্য। অন্তূর মা কাছে নেই, ভাবী অন্তঃসত্ত্বা। সে পড়ে আছে এক কারাগারে। সে যতই গলাবাজি করুক, সে আছে খু-খার অধিপতিদের হাতের থাবার নিচে। তবু অন্তূর কোনো দুঃখ নেই। একটুও কষ্ট লাগছে না।
জয় সারা দেহে মাটি মেখে এসে দাঁড়াল। অন্তূ কাঁদছে না। তার মুখে একফোঁটা কাতরতা নেই। জ্বলজ্বল করছে মুখখানি। এখনও চেয়ে আছে পলাশের মাথার কবরের দিকে।
জয় ডাকল, “ঘরওয়ালি!ʼʼ
অন্তূ তাকাল, “হু! কাজ শেষ? যাব আমরা?ʼʼ
-“থাকবে নাকি?ʼʼ
-“বেশ তো লাগছে।ʼʼ
জয় হাসল। অথচ তার খেয়াল অন্তূর নির্লিপ্ত মুখটার দিকে। তাতে সন্তর্পণে ফুটে আছে অদ্ভুত হাসি। এই অন্তূ কেমন যেন। শুধু প্রতিবাদী অন্তূ বোধহয় সরল ছিল। সেই প্রতিবাদের সাথে এখন কী যুক্ত হয়েছে? আগেরবারও এখানে এসে অন্তূ পাগলের মতো কেঁদেছে।
ফটকের বাইরে বিশাল পুকুর। তরতরে পানি। আকাশে চাঁদ নেই। কালো হয়ে আছে। দুজন গিয়ে পুকুরপাড়ে বসল। কবীরকে জয় বলল, “বাড়ি গিয়ে কড়কড়া একখান ঘুম দে। যা।ʼʼ
-“আপনাকে রেখে কেমনে?ʼʼ
-“ওরে শালা! শোন কবীর, ইমানদাররা পেছন মারা খায়, মনে রাখিস।
কবীর হাসে। একটু দূরে দাঁড়িয়ে সিগারেট ধরিয়ে তাকিয়ে থাকে ওদের দিকে। অসীম দূরত্ব দুজনের মাঝে। এই দূরত্বের অস্তিত্ব অদৃশ্যে। আর এই যে দৃশ্যমান নৈকট্য, তা অস্তিত্বহীন।
—
চেয়ারের সাথে মাথাটা হেলে পড়ে ছিল রূপকথার। মহিলা কনস্টেবল এসে থুতনি চিপকে ধরে সোজা করে দিলে আবারও পড়ে গেল। চুলের কয়েকগাছি উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। ডানহাতের তিনটে ও বাঁ হাতের দুটো নখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। রড দিয়ে পেটানো হয়েছে। অকথ্য গালিগালাজও করা হয়েছে। সেসব শুনলে কোনো সুস্থ মানুষ চুপ থাকতে পারেনা। রূপকথা আরাম করে শুনেছে সেসব।
মামলাটা যা-তা নয়। শীর্ষস/ন্ত্রা/স পলাশ আজগরের স্ত্রী। এত মার খেয়েও মুখ খোলার নাম নেই। পাথরের মূর্তির মতো চুপ থাকে। পুলিশগুলো অবাক হয়ে গেল। মেয়ে মানুষ এমন হয়না।
প্রতিটা আঘাতে রূপকথা চোখ বুজে ফেলে। দেখে মনেহয় যেন কিছু অনুভব করছে, কিছু মেলাচ্ছে।
রূপকথা পলাশের করা আঘাতের সাথে পুলিশের আঘাতগুলোর তুলনা করেছে। এখনও অবশ্য বুঝতে পারছে না, কোনটা যন্ত্রণাদায়ক বেশি। তার মনে হচ্ছে, পলাশেরটা। কারণ পলাশ আঘাত করলে সে চিৎকার করতো, কাঁদতো, পলাশের কাছে মুক্তি ভিক্ষা চাইতো। পুলিশ মারছে, তার চেঁচাতে বা কাঁদতে ইচ্ছে করছে না। অলস লাগছে খুব। আঘাতগুলো বিশেষ কিছু লাগছে না।
অন্তূ একবার বলেছিল, আমজাদ সাহেব বলতেন, ‘ব্যথার ওপর ব্যথা দিলে আর ব্যথা লাগেনা। ব্যথাহীন হবার শর্ত হলো, ক্রমাগত ব্যথা পেতে থাকা ততক্ষণ, যতক্ষণ না ব্যথাটা আর ব্যথার মতো অনুভূত না হয়।ʼʼ
তার কি আবার তাই হলো? সে ব্যথাহীন হয়ে গেছে? আশ্চর্য আরেকটা বিষয় আছে। তার মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে রাজন আজগরের কন্যা হওয়ার খাতিরে। কারণ বাংলাদেশের আইন সক্রিয় হয় পাপীর ধ্বংসের পর।
যতদিন পাপী পাপ করতে পারে, করুক না। দোষ কী! শুধু শুধু পাকরাও করে পরিশ্রম করা, আর শরীরের ক্যালরি খরচা। এটা বাংলার আইনের বিধান। যখন পাপী মরে যায়, অথবা দূর্বল হয়ে পড়ে, তখন তার পাপের মাল বাজেয়াপ্ত করা থেকে শুরু করে সব রকম আইনি পদক্ষেপ নেয়া শুরু। স হিসেবে রূপকথার এখন ফাঁসি হতে পারে। রাজন আজগরের সম্পত্তি ও কালোধান্দা সবটা নিয়ে চরম তোলপাড় তদন্ত শুরু হয়েছে।
রূপকথার মৃত্যুকে ভয় লাগছেনা। সে শুধু সময় কাটাতে চাইছে, যাতে ততটা সময়ে জয় পলাশকে ফুরিয়ে সবটা কাটিয়ে উঠতে সুযোগ পায়।
চেয়ারের একদম ওপরে স্পটলাইট। অফিসার বারিক সামনে এসে বসলেন, সেখানে অন্ধকার। রূপকথার ব্লাউজের হাতাটা ফেঁড়ে গেছে। ফর্সা দেহে চামড়ার নিচে রক্ত জমাট বাঁধা কোথাও, তো কোথাও চামড়া ফেটে রক্ত বেরিয়ে শুকিয়েও গেছে।
সেই রক্তাক্ত খোলা দেহের দিকে বারিক লালসার চোখে চেয়ে রইল। মুখটা বিশ্রীভাবে আঘাতপ্রাপ্ত, তবু সুন্দরী তো রূপকথা। বারিকের ভেতরে তোলপাড় শুরু হলো। এটা পাপ নয়। রিমান্ডের থার্ড ডিগ্রি টর্চারে নারী কয়েদিদেরকে ধ-র্ষ-ণের নজিরও আছে। ওসব কোনো ব্যাপার না। সব জায়েজ।
বারিকের আদেশে লোহার একটা রড গরম করে আনা হলো। বাহানা করে রূপকথার ছেঁড়া ব্লাউজটা আরেকটু ফেঁড়ে আচল নামিয়ে দিলো। লোহার রড গরম হয়ে আগুনের হল্কার মতো লাল টকটকে হয়ে গেছে। তা রূপকথার চামড়ায় ঠেকাতেই ছ্যাঁত করে শব্দ হয়ে নরম চামড়াটা গলে গেল। রূপকথা একটু আর্তনাদ করে ওঠে দাঁতে দাঁত চাপে। এরপরের ছ্যাঁকাটা রূপকথার বুকের স্পর্শকাতর নরম অংশে ঠেকানো হলো।
রূপকথা হাসল। লোকে শুধু পলাশদের দোষ দেয়। বোকা বাঙালি। কত পলাশ আইনরক্ষাকারীর ইউনিফর্ম পরে জীবন কাটাচ্ছে, তার খবর বোকা বাঙালি রাখবে? বারিক কি পলাশ নয়? উমমম, ভাবনায় পড়ল রূপকথা। বারিক বোধহয় পলাশের চেয়েও খারাপ! পলাশ তো পাগল, পলাশ তো খারাপ, খারাপই। কিন্তু বারিক?
রুপকথার বুকের মাংস অনেকখানি ঝলছে গলে গেল। হাতের বাহুতে গর্ত তৈরি হলো মাংস ক্ষয়ে। জ্ঞান হারিয়ে চেয়ারে হেলে পড়ল। উচিত ছিল মেঝেতে লুটিয়ে পড়া। পড়ল না। হাত-পা কাঠের চেয়ারে বাঁধা।
বারিক বিরক্ত হলো। এখন আবার হাসপাতালে সরাতে হবে। কাজের কাজ হলো না। কোনো তথ্য দিলো না।
চলবে…
[ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন]