#বিষাক্তফুলের_আসক্তি
লেখনীতেঃ তাহমিনা তমা
পর্ব-২০
আবারও সাদা বরফে ঢাকা পড়েছে আভিজাত্যের শহর লন্ডন। বরফের ছোট ছোট বল বানিয়ে বছর পাঁচের ছোট ছেলে ছুঁড়ে মারছে বছর একুশে’র এক তরুণীকে। সেই তরুণী খিলখিল করে হাসছে তাতে, নিজেও বরফের বল বানিয়ে ছুঁড়ছে বাচ্চাটার দিকে।
ধ্রুব, পাখি অনেক হয়েছে তোমাদের খেলা এবার বাসায় চলো। আহান বাসায় ফিরলে দু্’টোকে বকবে কিন্তু।
ধ্রুব আর পাখি সামনে তাকিয়ে দেখতে পেলো পঞ্চাশোর্ধ ন্যান্সি কোমরে দু’হাত রেখে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। ধ্রুব আর পাখি একে অপরের দিকে তাকিয়ে ইশারায় কিছু বুঝাপড়া করে নিলো। তারপর দু’জনে একসাথে ন্যান্সির দিকে বরফের বল ছুঁড়তে লাগলো আর খিলখিল করে হাসতে লাগলো।
পাখি হাসি বজায় রেখে বললো, মাম তুমিও আমাদের সাথে খেলো।
মাম ভালো হবে না কিন্তু, এভাবে বল মেরো না। আহান চলে এলে তোমাদের বকবে।
গম্ভীর গলায় কেউ বলে উঠলো, কী হচ্ছে এখানে ?
পাখি আর ধ্রুবর হাত থেমে গেলো। ভয়ে ভয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখলো বয়স ত্রিশের সুদর্শন আহান দাঁড়িয়ে আছে। চশমার নিচে গভীর চোখের দৃষ্টি ধ্রুব আর পাখির দিকে।
ধ্রুব চট করে ভাঙা বাংলায় বললো, আমি কিছু করিনি পাপা সব মাম্মাম করেছে।
আহান তাকালো পাখির দিকে, ধ্রুব কী বলছে পুতুল ?
পাখি হুট করে নিচ থেকে বরফের একটা বল তুলে আহানের দিকে ছুঁড়ে দিলো, হ্যাঁ আমি করেছি কী করবে তুমি ?
আহান নিজের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলো, তবে রে।
আহান পাখির দিকে দৌড় দিলে পাখি উল্টোদিকে ছুট লাগালো আর খিলখিল করে হাসতে লাগলো, আমাকে ধরতে পারে না।
বরফের জন্য বেশি দৌড়াতে পারলো না পাখি ধরে ফেললো আহান তাকে। ধাক্কা দিয়ে বরফে ফেলে ইচ্ছে মতো বরফ দিয়ে ঢেকে দিলো। ধ্রুব লাফাচ্ছে আর হাত তালি দিচ্ছে।
আহান বললো, আরো দুষ্টুমি করবে ?
পাখি মুখ ফুলিয়ে বললো, না।
আহান উঠে দাঁড়িয়ে পাখিকে টেনে তুললো, অনেক খেলা হয়েছে এবার বাসায় চলো।
আহান এগিয়ে এসে ধ্রুবকে কোলে তুলে নিলো। সারা মুখে চুমু খেয়ে বুকে জড়িয়ে নিলো। ধ্রুবর মুখের দিকে তাকালে তার তুতুলকে দেখতে পায় আহান। ধ্রুবর মুখের আদুল একদম তিতিরের মতো। তিতিরের সাথে পাখির মিল থাকলেও ধ্রুব যেনো মায়ের কপি হয়েছে। আহান ভুলতে বসেছে ধ্রুব তার কাছে আমানত, যেকোনো সময় ফিরিয়ে দিতে হতে পারে। ভালোবাসায় আগলে রেখেছে তিতিররে রেখে যাওয়া দু’টো ভালোবাসাকে। তিতির চলে যাওয়ার দু’বছর পর পুতুলের যখন আঠারো হয়েছে তখনই পুতুলকে বিয়ে করেছে আহান। নিজের মনে অন্য কাউকে জায়গা দিতে পারবে না আহান। তাই তিতিরের কথা রাখতে, পাখিকে সারাজীবন আগলে রাখতেই বিয়ে করেছে। তবে পাখির জন্য ধীরে ধীরে মনে একটা জায়গা তৈরি হয়ে আহানের। তিতিরকে ভুলে যাওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়, তবে পাখিকে ছাড়া থাকার কথা চিন্তাও করতে পারে না। এদিকে পাখি ভুলতে বসেছে তার আপুনিকে, এইদিক থেকে পাখি অবুঝ হওয়ায় ভালোই হয়েছে। প্রথমদিকে পাখি যেমন পাগলামি করতো সারাজীবন তেমন করলে আহান সামলাতে পারতো না। তিতিরের রক্তাক্ত অবস্থা দেখে পাখির মানসিক অবস্থার আরো অবনতি হয়েছিলো। ন্যান্সি ছিলো বলে আহান দু’দিক সামলে উঠতে পেরেছে। তবে এখনো মনে পড়লে খোঁজে তার আপুনিকে। ন্যান্সির উপকার কোনোদিন ভুলতে পারবে না আহান। সেও এখন ন্যান্সিকে মাম বলেই ডাকে।
বাসায় ফিরে ধ্রুবর পোশাক বদলে দিলো আহান। তারপর নিজেও ফ্রেশ হয়ে এলো। ড্রয়িংরুমে এসে দেখলো পাখি তখনো চেঞ্জ না করে বসে আছে।
আহান ধ্রুবকে সোফায় বসিয়ে পাখিকে বললো, তুমি এখনো চেঞ্জ না করে বসে আছো কেনো ?
পাখি গাল ফুলিয়ে বললো, তুমি ধ্রুবকে চেঞ্জ করিয়ে দিয়েছো আমাকে দাওনি, আমিও একা করবো না।
আহান বিষম খেতে গিয়েও নিজেকে সামলে নিলো। পাখি মাঝে মাঝেই এমন উদ্ভট আবদার করে বসে। আহান আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো ন্যান্সি নেই, তাতেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। মেয়েটা মাঝে মাঝে ন্যান্সির সামনে লজ্জায় ফেলে দেয় আহানকে।
আহান অসহায় গলায় বললো, একা করে নাও না রে বাবা।
পাখি আগের মতোই বললো, আমি যাবো না।
আহান হতাশ হয়ে ধ্রুবর হাতে একটা রুবিকস কিউব দিয়ে কপালে চুমু খেয়ে বললো, বাবাই এটা মেলাও পাপা এখনই আসছে। এখান থেকে কোথাও যাবে না, ওকে ?
ধ্রুব শান্ত হয়ে মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো। ধ্রুব অনেক শান্ত বাচ্চা, হয়তো মায়ের কথা রাখতেই শান্ত হয়েছে। আহান ফিরে না আসা পর্যন্ত এখানেই বসে থাকবে। আহান পাখিকে নিয়ে নিজেদের রুমে চলে গেলো চেঞ্জ করিয়ে দিতে। পাখিটা মাঝে মাঝে বড্ড জ্বালায় আহানকে।
সন্ধ্যার নাশতা খাওয়ার সময় আহান বললো, মাম আগামীকাল কী মনে আছে তো ?
ন্যান্সি দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বললো, বাকি জীবনে কোনোদিন হয়তো ভুলতে পারবো না এই দিনটা।
আহানও চাপা শ্বাস ছেড়ে বললো, আগামীকাল আমরা বাংলাদেশে যাচ্ছি সব গুছিয়ে রেখেছো তো।
আমি সব গুছিয়ে রেখেছি মাই সান।
হঠাৎ ধ্রুব ভাঙা বাংলায় বললো, গ্রানি আমি পানি খাবো।
ধ্রুব বাংলার থেকে ইংলিশ ভালো বলতে পারে। তবে বুঝতে পারে দু’টোই। বাংলাটা এখনো শিখছে। আহান সময় কম পায় তাই শেখাতেও পারে কম। ন্যান্সি তো আর বাংলা শেখাতে পারে না আর পাখি, সে তো সেই। ন্যান্সি মুচকি হেসে চলে গেলো ধ্রুবর জন্য পানি আনতে। আহান ধ্রুবর গালে চুমু খেয়ে টিভির দিকে তাকালো।
পাখি বললো, আমাকে হামি দিলে না কেনো ?
আহান নিজের মাথা চাঁড়াল, তবে কিছু না বলে পাখির গালেও একটা কিস করলো। সোজা হয়ে বসার আগেই পাখিও আহানের গালে কিস করলো। আহান মুচকি হেসে টিভি দেখায় মনোযোগ দিলো।
২৫.
অফিসে মনোযোগ দিয়ে ফাইল দেখছে তাজ। ইকবাল খান অফিস থেকে পুরোপুরি অবসরে গিয়েছেন বলা চলে। সম্পূর্ণ দায়িত্ব এখন তাজ পালন করে। একসময়ের হাসিখুশি অভিনেতা এখন গম্ভীর বিজনেসম্যান। শেষ কবে গান গেয়েছিলো সেটা হিসেব করতে বসতে হবে। তাজ বদলে গেছে, পুরোপুরি বদলে গেছে। প্রয়োজন ছাড়া কথা বললে যেনো অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। কেনো এমন হয়ে গেলো তাজ ? তিতির তো তাকে মুক্ত করে দিয়ে গেছে ভালো থাকতে, তবে কেনো ভালো নেই সে ? সারাদিন কাজে ডুবে থাকে, শুধুমাত্র নিজের করা একটা ভুলের অনুশোচনা ভুলে থাকতে। কাজের ফাঁকে জীবনের তাগিদে ছুটে চলা মানুষের ভীড়ে তাজ খুঁজে চলে তিতিরকে, তার সন্তানকে। আচ্ছা তাজ যে সন্তানকে ফিরে পাওয়ার জন্য এতো উতলা হয়ে আছে, সেই সন্তান ফিরে পেলে তার চোখে চোখ রাখতে পারবে তো ? সে যে তাজের ভালোবাসার নয় অন্যায়ের প্রমাণ। এমন হাজারো প্রশ্নের বেড়াজালে বন্দী তাজ। এমন হাজারো প্রশ্নের উত্তর পেতে মরিয়া হয়ে আছে সে।
অন্ধকার অনেক আগেই গ্রাস করেছে আশপাশটা, অফিসে হয়তো আর একজনও খোঁজে পাওয়া যাবে না। তাজ উঠে দাঁড়ালো, চেয়ারে ঝুলানো ব্লেজার হাতে নিয়ে এক হাত পকেটে ঢুকিয়ে লম্বা কদমে বের হলো কেবিন থেকে।
স্যার গাড়ি বার করতে বলবো ?
তাজ পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখলো তার পি.এ সবুজ দাঁড়িয়ে আছে।
তাজ সামনে হাঁটতে হাঁটতে বললো, তোমাকে না বললাম বাসায় চলে যেতে।
সবুজ মাথা নিচু করে বললো, স্যার আপনাকে একা ফেলে যেতে ইচ্ছে করেনি।
আগামীকাল দু’দিনের জন্য সিলেট যাচ্ছি আমরা। পরিবারের সাথে একটু সময় কাটাতে বাসায় যেতে বলেছিলাম তোমাকে।
সবুজ তাকালো তাজের দিকে। এতো গম্ভীর মানুষটার মন কতটা ভালো সেটা সবুজ প্রমাণ পেয়েছে বারবার। তাজ গম্ভীর, কথা কম বলে কিন্তু কাউকে ধমক দিয়ে কথা বলে না। কাউকে শাসানোর হলেও খুব ঠান্ডা মাথায় আর শান্ত গলায় শাসায়। এতেই সামনের মানুষের ঘাম ছুটে যায়। পাঁচ বছর ধরে সবুজ আছে তাজের সাথে। তবে এখন পর্যন্ত তাকে একটা ধমকও দেয়নি তাজ, শুধু শান্ত নজরে একবার তাকালেই সবুজের ঘাম ছুটে যায় ভয়ে। ভয় দেখানোর জন্য সবসময় চেঁচামেচি করাটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, সবুজ সেটা তাজকে দেখে শিখেছে। তাজ আর সবুজ দু’জনে চুপচাপ হাঁটতে হাঁটতে লিফটের কাছে চলে এলো।
সবুজ অনেকটা সাহস নিয়ে বললো, স্যার সিলেট থেকে এসে আমার দু’দিনের ছুটি লাগবে।
মুলত এটা বলার জন্যই সবুজ অপেক্ষা করছিলো তাজের। কারণ কাজের সময় অন্য কথা পছন্দ করে না তাজ।
তাজ বেশ ঠান্ডা গলায় বললো, কেনো ?
স্যার চারদিন পর আমার ছেলের জন্মদিন। ছেলে অনেকদিন ধরে জেদ ধরছে এবার জন্মদিনে সে সমুদ্র দেখতে যাবে।
তাজ এবার তাকালো সবুজের দিকে। “আমার ছেলে” শব্দটা তাজের বুকে বিঁধল।
বিড়বিড় করে আওড়ালো, “আমার ছেলে।”
একটা ভুলের জন্য সে হারিয়েছে এই শব্দ বলার সুযোগ। আচ্ছা তার ছেলে হয়েছে না মেয়ে ? সে তাজের কাছে থাকলে সেও এমন জেদ ধরতো ? তাজ ভালো সন্তান, ভালো স্বামী কিংবা ভালো মানুষ হয়তো হতে পারেনি কিন্তু নিজের সন্তানকে কাছে পেলে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাবা ঠিক হয়ে যেত। আচ্ছা তার সন্তান বেঁচে আছে তো আর তিতির সে বা কেমন আছে ?
স্যার ?
সবুজের ডাকে হুঁশ ফিরলো তাজের। না এসব ভাবতে চায় না তাজ। সে মন ভড়ে দোয়া করে তিতির আর তার সন্তান যেখানেই থাকুক, যেনো ভালো থাকে। তাজ নিজের করা সব পাপের জন্য প্রতি ওয়াক্তে নামাজ পড়ে মাফ চায় আল্লাহর কাছে। ফিরে চায় নিজের সন্তান আর তিতিরকে। ওদের ফিরে পেলে তাজ আর কোথাও যেতে দিবে না তাদের। তিতির তাজের কাছে থাকতে না চাইলে তাজ নিজেকে বদলে তিতিরের মনের মতো করে গড়ে তুলবে। তবু তাজ ফিরে চায় নিজের পরিবারকে। তাজ তাকিয়ে দেখলো সবুজের দিকে, সে আশা নিয়ে উত্তরের অপেক্ষা করছে।
কাজটা ভালোভাবে কমপ্লিট হয়ে গেলে তোমাকে পাঁচদিনের ছুটি দেবো।
খুশীতে চকচক করে উঠলো সবুজের মুখ। সে জানতো তাজ তাকে হতাশ করবে না। পাঁচ বছর ধরে চিনেছে তো।
বাড়িতে পৌঁছে কলিংবেল বাজালে দরজা খোলে দিলো ইরিনা।
ফ্রেশ হয়ে আয় আমি খাবার দিচ্ছি।
তাজ ছোট করে হুম বলে উপরে চলে গেলো নিজের রুমের দিকে। ইরিনা তাজের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে খাবার টেবিলের দিকে গেলো। খাবার সাজিয়ে ইকবালকেও ডেকে পাঠালো। আধঘন্টা পরে তাজ ভেজা চুলে উপস্থিত হলো ডাইনিং টেবিলে। কোনদিকে না তাকিয়ে খাবারে মনোযোগ দিলো।
ইরিনা আর ইকবাল একে অপরের দিকে তাকিয়ে উশখুশ করছে৷ দু’জন কিছু বলতে চাইছে তাজকে কিন্তু কেউ বলতে পারছে না। একজন আরেকজনকে বলতে ইশারা করছে।
হঠাৎ তাজ বলে উঠলো, কিছু বলতে চাইছো তোমরা ?
চমকে উঠলো ইরিনা আর ইকবাল। তবে ইকবাল নিজেকে সামলে বলে উঠলো, এভাবে আর কতদিন চলবে তাজ ?
তাজ স্বাভাবিক গলায় বললো, কীভাবে ?
তুমি বুঝতে পারছো আমি কী বলতে চাইছি তবু হেয়ালি করছো কেনো ? বয়স তো কম হয়নি আর কত এভাবে থাকবে ? ছত্রিশ চলছে তোমার আর কত ? এমন তো নয় তুমি তিতিরকে ভালোবাসতে, তার বিরহে এমন দেবদাস হয়ে বাকি জীবন কাটিয়ে দিবে।
তাজ তাকালো নিজের বাবার দিকে, পাঁচ বছর আগেই তোমাকে বলেছিলাম। নিজের ছেলেকে চোখের সামনে দেখতে চাও নাকি চিরদিনের জন্য হারাতে ? আবার যদি এই কথা উঠে সারা বিশ্ব তন্নতন্ন করে খোঁজেও ছেলের হদিস পাবে না। মনে রেখো যে নিজে থেকে হারিয়ে যায় তাকে খোঁজে পাওয়া যায় না, তার প্রমাণ তিতির আর রইলো দেবদাস হওয়ার কথা। আমাকে মদ গিলে কোথায় পরে থাকতে দেখেছো ? তিতির তিতির বলে মুখে ফেনা তুলতে দেখেছো কবে ? আমার সামনে এসব ফা*ল*তু কথা দ্বিতীয়বার শুনতে চাই না।
ইরিনা বললো, তুমি কী চাও তোমার বাবা-মা তোমার চিন্তায় মারা যাক।
তাজ এবারও স্বাভাবিক রইলো, জন্ম মৃত্যু সবই আল্লাহর ইচ্ছে। আমার চাওয়া না চাওয়ায় কিছু যায় আসে না। পৃথিবীতে যার যতদিন আয়ু আছে, সে ততদিনের এক সেকেন্ড বেশি সময় থাকতে পারবে না।
তাজ খাওয়া ফেলে নিজের রুমের দিকে চলে গেলো হনহনিয়ে। কোনো বাবা-মা একমাত্র ছেলের এমন জীবন মেনে নিতে পারবে ? তাজ বরাবরই প্রেম, ভালোবাসা, সংসার এসবে উদাসীন ছিলো, এখন আরো উদাসীন হয়ে গেছে। কিন্তু তার এমন ফেকাসে জীবন মেনে নিতে পারছে না ইরিনা আর ইকবাল। এখন মনে হচ্ছে তিতিরকে খোঁজে পেলে ছেলের সংসারটা অন্তত হত। সেটাও হচ্ছে না আর অন্য কিছু করারও সুযোগ নেই, কিছু বলতে গেলেও চলে যাওয়ার হুমকি দেয়।
তাজ রুমে গিয়ে থম মেরে বসলো, সত্যি কী সে একটুও ভালোবাসেনি তিতিরকে ? গত প্রায় ছয় বছর ধরে প্রতিটা সেকেন্ড তার কথা চিন্তা করে একটুও ভালোবেসে ফেলেনি ?
তাজ ভাবতে চায় না এসব। এখন সবই উপরওয়ালার হাতে ছেড়ে দিয়েছে। সিলেট যাওয়ার জন্য প্যাকিং করতে লাগলো। জীবনের মোড় কী ঘুরতে চলেছে এই সিলেট ভ্রুমণে ?
চলবে,,,,