তাসের_ঘরে_তুমি_আমি #পর্ব_০৬,০৭

0
384

#তাসের_ঘরে_তুমি_আমি
#পর্ব_০৬,০৭
#লেখক_আয়াশ
০৬

সাব্বিরের ফোনে লাগাতার কল করেই যাচ্ছে পুতুল। কিন্তু ঢুকছে না। খুব টেনশনে আছে সে।
৫২ তম বারের সময়ও যখন কল ঢুকলো না তখন ফোনটা বিছানায় আছাড় দিল সে।

মাত্রই বাসায় ফিরেছে শান। ঘরে ঢুকতে যাবে এসময় এই দৃশ্য দেখে মনের অভ্যন্তরীণ খুশিটা যেন দ্বিগুন হয়ে গেল। এত ভালোবাসার পরও যে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে সেই কালনাগিনীকে জীবনে আর দ্বিতীয়বার সুযোগ দিতে চায় না শান।

কিন্তু খেলা তো শেষ নয়। এখন মানসিকভাবেও ভেঙে দিতে হবে পুতুলকে। তাকে যোগ্য শাস্তি দিয়ে তারপর ছেড়ে দেবে।

লাঠি ঠুকাতে ঠুকাতে ঘরে ঢোকার অভিনয় করতে লাগলো সে। তা দেখেই পুতুল সতর্ক হয়ে গেল। কিন্তু শানের সাথে কথা না বলে চুপচাপ রইল। শানও সেদিকে নজর দিল না।
———-

বিকেলে শান তার মা বাবা আর পুতুলের সাথে ড্রয়িংরুমে বসে আছে। শানের মা বাবার ব্যাগ রেডি, যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। পুতুল সেখানে থাকলেও তার মন তো অন্য চিন্তায়।

‘বাবা, মা এই নাও।’
শান হাতের টাকাটা সামনে এগিয়ে দিল। তার মা সেটা নিয়ে বলল,
‘বাবা এত টাকা?’
‘মা স্যার বলেছে এখানে ১০ হাজার আছে। আসলে মাসের অর্ধেক বাকি তো। বাকি টাকা……’
‘না বাবা আমরা বলছি এত টাকা তো আমাদের লাগবেই না। এত টাকা দিচ্ছিস কেনো?’ শানের মা বলল।
‘মা নাও না। কখন কি দরকার লাগে।’
‘নাও শানের মা, টাকা বেশি হলে না হয় তুমি ৫০০০ রাখো, বাকি টাকা আমাকে দাও, ছেলে দিয়েছে একটু হাত খরচ করবো না!!’
‘তুমি এক টাকাও পাবে না। যা লাগবে আমার থেকে নেবে। বুড়ো বেটার আবার কিসের হাত খরচ!!’
‘বাবা দেখলি! বুড়োকালেও আমার জেলখানা থেকে মুক্তি মিললো না।’
‘কি বললে!!’
‘ক কি কি? কোথায় বললাম?’
‘হাহাহা, মা ঝগড়া না করে চলো যাই, এগিয়ে দেই তোমাদের।’
‘বাবা নিজের খেয়াল রাখিস।’
‘আরেহ মা পুতুল আছে না?’
‘হু সেটা হলে তো নিশ্চিন্ত হয়েই যেতাম।’ পুতুলের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে তাচ্ছিল্য সহকারে বলল শানের মা।
পুতুলের মেজাজ এমনিতেও খারাপ ছিল। শানের মার ত্যাড়া কথা শুনে বলল,’শান তুমি তাদের এগিয়ে দিয়ে এস। আমার মাথা ব্যাথা করছে। আমি রুমে যাই।’ বলে এক সেকেন্ড দেরি না করে চলে গেলো।
‘দেখলে শানের বাবা, কিরকম করলো?’
‘আমরাই হয়ত এর জন্য দায়ী। জেনে বুঝে নিজের ছেলের জীবনটা শেষ করলাম।
‘বাবা মা এখন বাদ দাও এসব। চলো তো। দেড়ি হয়ে যাবে।’

শানের নিষেধ স্বত্তেও তাকে দুই হাজার টাকা ফেরত দিল তার মা। তার হাত খরচ আর চলার জন্য। শান বাবা মাকে সামনের মোড় পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসবে এমন সময় কারো কান্নার আওয়াজ পেলো। সামনে তাকিয়ে দেখলো মিথু রাস্তার সাথের ম্যানহোলের পাশে হাটু গেড়ে বসে নিচে কি যেন দেখছে আর চোখের জল ফেলছে।

লাঠির সাহায্যে তার কাছে গিয়ে বলল,’ এই কাঁদছে কে এখানে?কে?’
‘আ আমি মিথিলা।’ ফুফাতে ফুফাতেই বলল মেয়েটি।
‘ওহ তুমি! কি হয়েছে তোমার? বলো আমাকে।’
‘কিছুনা।’
‘দেখো আমি আজ অন্ধ বলে হয়ত বলছোনা।’
‘না নাহ এ কি বলছেন আপনি! সেদিন আপনি না থাকলে আমার কি হত!’
‘তাহলে বলো।’
‘আমাকে এই সামনের মুদি দোকানটা থেকে বাজার আনতে দিয়েছিলো মামী। টাকাটা হাতে নিয়েই আসছিলাম। হঠাৎ সামনে থেকে কুকুরের শব্দ পেয়ে চমকে উঠে হাতের টাকাটা নিচে ম্যানহোলের ছিদ্র দিয়ে পড়ে গেছে। এবার কি হবে? আগের দিন ভাঙা ডিম নিয়ে গেছিলাম জন্য মেরে রাতের খাবারও দেয়নি কিন্তু আজ কি হবে? কি বলব? মামী এসব বিশ্বাস করবে না। বলবে টাকা চুরি করেছি আমি।’ বলে আবার ফোফাতে লাগলো মিথিলা।

শান তো এ কথা শুনে অবাক। কতটা নির্দয় হলে এই মেয়েটির উপর এরকম করতে পারে। সে বলল,
‘আচ্ছা আমি তোমাকে হেল্প করতে চাইলে হেল নেবে তো?’
‘মানে?’
‘টাকাটা যদি আমি দেই?’
‘কিন্তু আপনি কেনো দেবেন?’
‘দেখো সেদিন কিন্তু আমার কারণেই ডিম ভেঙেছিলো। আজ না হয় বন্ধু হিসেবে তোমাকে হেল্প করলাম। কি নেবে না এই বন্ধুর হেল্প?’
‘ক কিন্তু!!’
‘না আর কোনো কথা নয়। কত টাকা দিয়েছিলো?’
‘৫০০ টাকা।’
শান এবার মেয়েটিকে একটু পরীক্ষা করতে চাইলো। পকেটের দুইটা একহাজারের নোটের একটা দিয়ে বলল, ‘নাও ৫০০ টাকা।’
‘এটা তো এক হাজার টাকার নোট!’
শান মিথুর কথায় বুঝল মেয়েটি আসলেই সরল।
‘আচ্ছা চলো।’
‘কোথায়?’
‘আজ একজনের জন্মদিন। তার জন্য কেক কিনতে হবে।’
‘কে ভাবী নিশ্চয়ই!’
‘না এক সর্বনাশিনী।’
‘কিহ!!’
‘আরে আমার কেউ নেই ভালোবাসার। অন্ধকে কে ভালোবাসবে?’
‘ভালোবাসতে অন্ধ পঙ্গু না, লাগে মন। আর আপনার মত মনের মানুষকে কে না ভালোবাসবে!’
‘আচ্ছা চলো।’

দুজনে খুশি মনে আগে মিথিলার মুদি বাজার করল তারপর শানের একটা কেক কিনে মিথিলার সাথেই বাসার উদ্দেশ্যে ফিরল।

মিথিলা বাসায় যাওয়ার আগে বলল,’আপনি আমাকে সাহায্য করেই যাচ্ছেন। আমি জীবনেও ভুলব না আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতার কথা।’
‘আমরা তো বন্ধু। আমাদের মাঝে আবার কৃতজ্ঞতা কি?’
শানের কথায় মেয়েটির চোখে মুখে খুশির আভা দেখা দিল।
‘আজ থেকে আপনি আমার সবচেয়ে প্রিয় দুইটি মানুষের মধ্যে একজন।’
‘আরেকজন কে শুনি?’ শান হেসে বলল।
‘আর জে শান। নাম শুনেছেন? আমার মনে শুধুই সে।’
মিথিলার কথা শুনে শানের চোখ বড় বড় হয়ে গেল।
‘আচ্ছা আপনার নামটা তো জানা হল না?’
‘হাহাহা, সেটা আরেকদিন বলব, আচ্ছা আসি। রাত হয়ে গেছে।’
‘আচ্ছা।’
মিথিলার থেকে বিদায় নিল শান। সে এখন আর এসব নিয়ে ভাবতে চাচ্ছে না। তার সামনে বড় কাজ, অনেক বড়।
——-

বাসায় ঢুকে দেখলো পুতুল এখনো মোবাইল হাতে নিয়ে বসে আছে। গাধাটার মাথায় এটুকুও বুদ্ধি আসেনি যে টিভি চালালেই সব জেনে যেত।
শান মুচকি হেসে রুমে ঢুকলো।

‘পুতুল পুতুল?’
‘কি হল চেচাচ্ছো কেনো?’
‘আসো দেখো কি এনেছি।’
‘পুতুল বলল,’পরে আমি বিজি আছি।’
‘আরেহ দেখোই না।’
‘উফফ, আচ্ছা দেখি।’
শানের হাত থেকে প্যাকেট খুলে দেখলো একটা ছোট কেক। উপরে হ্যাপি বার্থডে লেখা৷’
পুতুল অবাক হল। কারো মনে না থাকলেও শানের মনে আছে। আজ তার জন্মদিন বলেই সাব্বিরের জন্য এত কিছু রান্না করে নিয়ে গেছিল সে।
‘তোমার মনে আছে?’
‘তোমার জন্মদিন আমি ভুলতে পারি?’
‘কিন্তু নাম কই কেকের উপরে?’
‘আমার বউয়ের নাম অন্যকেউ লিখবে কেনো? তাই লিখতে দেইনি। এই নাও ক্রিম পেন। তুমিই লিখ।’
আগের পুতুল হলে হয়ত শানকে জড়িয়ে ধরতো। এই পুতুলের ফেস দেখে মনে হল শানের সব কাজ তার কাছে ঢং লাগছে।

দুজন কেক কেটে খাওয়া দাওয়া করে বিছানায় বসেছে। শান হঠাৎ বলল,
‘তোমার একটা গিফটও আছে। দেখো একটা ব্যাগ রেখেছি অফিস থেকে এসে। ওইটায়।’
শানের কথা শুনে পুতুল শানের ব্যাগটা নিয়ে আসলো।
শান বলল,’খোলো এটার ভিতরে একটা প্যাকেটে আছে।

পুতুল ব্যাগের ভিতরে একটা প্যাকেট দেখলো। কিন্তু খুলে যা দেখলো তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না। তারই বোরকা যেটা পড়ে সাব্বিরের কাছে গেছিলো সে।

পুতুল অবাক হয়ে শানের দিকে তাকালো৷ শান শুয়ে উপরের সিলিংয়ের দিকে চেয়ে আছে।
‘ত তু তুমি এ এটা!!’
‘হাহাহা সাব্বিরের রুমেই ফেলে এসেছিলে তাই নিয়ে এসেছি।’
পুতুলের ভয়ে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। কি হচ্ছে তার সাথে! কি বলছে শান!!!
‘তুমি কিভাবে জা জা জান ল লে?’
শান এবার হঠাৎ পাশের দেয়ালে লাগানো ঘড়ির দিকে ফিরল। বলল,’রাত ১১ টা ২৫ বেজে গেছে। শুয়ে পড়। কাল কথা হবে।’

পুতুল শানের দৃষ্টি অনুসরণ করে সেদিকে দেখলো ঘড়িতে ঠিক ১১ টা ২৫ ই বাজে।
‘তার মানে!!! তার মানে শান চ চোখে দেখতে পারে?’ পুতুলের মনের মাঝে উথান পাথান শুরু হয়েছে। এক নিমিষে তার সব কিছু উলটা পালটা লাগছে।

চলবে,

#তাসের_ঘরে_তুমি_আমি
#পর্ব_০৭
#লেখক_আয়াশ

শানের মুখ থেকে বলা কথাগুলো মাথায় নিতে পারছে না পুতুল। সে এমন অপরাধ করেছে যার কোনো ক্ষমা হয় না। কি করবে সে এখন সেটাই ভাবছে। কিছু ভাবতে না পেরে হঠাৎ বেডে শুয়ে থাকা শানের পা জড়িয়ে ধরলো।

হঠাৎ পায়ে কারো স্পর্শ পেয়ে সেদিকে তাকালো শান। দেখলো পুতুল পা জড়িয়ে কাদছে৷

এক ধাক্কা দিয়ে পা সড়িয়ে নিল শান।
‘এসব ন্যাকামির মানে কি?’ কড়া গলায় বলল সে।
‘আমি জানি তুমি খুব কষ্ট পেয়েছো আমার কাজে। আসলে আমার মাথা ঠিক ছিল না। তোমাকেও কাছে পাচ্ছিলাম না। কি যে হয়েছিল আমার! তাই,,,’
‘তাই কি? নিজের স্বামীকে ভুলে অন্য পুরুষে মত্ত ছিলে? তাই কি? নিজের স্বামীর ভালোবাসা ভুলে অন্যের কাছে ভালোবাসা বিলিয়ে দিয়েছো অনায়াসে?’
‘আমাকে ক্ষমা করে দাও, আমার ভুল হয়ে গেছে।’
‘কিছু কিছু ভুলের ক্ষমা হয় না পুতুল। সেটা কালকেই বুঝতে পারবে।’
‘মানে?’
‘আমার ক্লান্ত লাগছে, অফিসেও যাই নি তাই। সো নো মোর ওয়ার্ডস।’
পুতুলকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে শান পাশ ফিরে ঘুমিয়ে পড়ল। আর পুতুল বেডের পাশে নিচে বসে চোখের জল ফেলছে৷ আজ শান তাকে জন্মদিনের উপহার দিয়েছে, হোক সেটা অভিনয়৷ সে সত্যি সত্যি সব ভালোবাসার প্রাপ্য ভাগীদার ছিল কিন্তু নিজের ভুলে হয়ত সব হারালো।

————–
সকালে ঘুম থেকে উঠে পুতুলকে ওইভাবেই বসে থাকতে দেখলো শান। ভালো করে তাকাতে দেখলো পায়ের কাছে বেডে মাথা দিয়েই ঘুমিয়ে পড়েছে। শান বিছানা থেকে উঠতে নড়াচড়ায় পুতুলেরও ঘুম ভেঙে গেলো।

‘আপনাকে নিয়ে এক জায়গায় যাব মিস পুতুল। তৈরি হয়ে নিন।’
শানের কথায় পুতুল চমকে উঠল।
‘আমাকে আপনি করে বলছ হটাৎ!’
‘আমি শুধু কাছের লোকদের তুমি বলি। আর আপনাকে আমি আমার জীবনে কোথায় জায়গা দিতে চাইনা আর।’
পুতুল কেদেই ফেললো। ‘কি বলছো এসব!!’
‘কথা না বাড়িয়ে রেডি হয়ে আসুন।’
বলেই শান চলে গেলো তার বাবা মায়ের ওয়াশরুমে রেডি হতে।

রেডি হয়ে রুমে এসেছে শান। দেখে পুতুল বোরকা পড়ছে।
‘হাহাহা হাসালেন,এখনো বোরকা?’
পুতুল চোখ বড় বড় করে তাকালো।
‘কেন, কি হয়েছে?’
‘পরপুরুষের ঘরে পর্দাহীন হয়ে এখন আবার পর্দা করার ঢং করছেন?’
‘তুমি!!’
‘চলুন আমি রেডি।’ বলে শান চশমা পড়ে আবার লাঠি হাতে নিলো।
শানের আবার অন্ধ সাজা দেখে পুতুল অবাক হল।
‘এখনো এসব পড়ছো যে?’
‘সেটা নিশ্চয়ই আপনাকে বলতে বাধ্য নই আমি? হ্যা আর একটা কথা, যদি কেউ আমার চোখ ভাল হওয়ার কথা জানতে পারে, আপনার জন্য বিষয়টি ভালো হবে না।’ পুতুল শুধু নিরব দর্শকের মত শুনছে।

বাড়ি থেকে বেরিয়ে একটা সি এন জি নিয়েছে দুইজন। লক্ষ্য থানা। সেটা শুনেই পুতুল বলল,’,থানা কেনো?’
‘সেটা না হয় গেলেই দেখবেন।’
পুতুল খানিক বাদে শানের একটা হাতের উপরে নিজের হাত রাখলো।
শানের মুখ চোখ শক্ত হয়ে উঠলো। হাত ঝাকি দয়ে ছাড়ালো সঙ্গে সঙ্গে।
‘আচ্ছা আমরা কি আবার সব প্রথম থেকে শুরু করতে পারি না? আমি মানছি আমার অনেক বড় ভুল হয়েছে। আমি ক্ষমা চাচ্ছি হাত জোড় করে। আর জীবনেও এই ভুল করব না। একটা সুযোগ দাও।’

‘মিস পুতুল ভুল না অপরাধ করেছেন আপনি। সেটা কি সহজে ভুলার?’

পুতুল কিছু বলবে তখনই ড্রাইভার বলল ‘চলে এসেছি স্যার, নামেন।’

থানার ভিতরে যাচ্ছে দুজন। শান লাঠির সাহায্যে এগোচ্ছে। একটু পরই দুজন থানায় একটা লকাপের সামনে আসলো। ভিতরের মানুষটাকে দেখে তো পুতুলের চোখ কপালে।
‘সাব্বির!!! ও এখানে কেনো?’ পুতুল মনে মনে বলছে।

পুতুলকে দেখেই সাব্বির লকাপের সামনে চলে আসলো।
‘তুই!!!’
‘সাব্বির তুমি এখানে কিভাবে?’
‘তুই জানিস না নষ্টা বেহায়া মেয়ে? নিজে সব করেছিস, আর এখন সাধু সাজছিস? ওই অন্ধকে সাথে করেও এনেছিস?’

শান পিছনে দাড়িয়ে না শোনার ভান করে আছে।পুতুল অবাক হয়ে চেয়ে আছে সাব্বিরের দিকে।
‘কি বলছো এসব তুমি? আমার জন্য মানে?’
‘খুশি হোস না রে বেশি। আজ হোক কাল হোক আমি জামিন নিয়ে নেব। তারপর তোকে কে বাচাবে সেটাও আমি দেখে নেব। আমার জীবন নষ্ট করে কি মনে করেছিস? আমি তোকে শান্তিতে থাকতে দেব?’
‘আমি সত্যি কিছুই বুঝতে পারছি না।’
‘চুপ কর কালনাগিনী। তোর সব অভিনয় আমার দেখা শেষ। টাকা হাতিয়েছিস আমার থেকে। এখন আমাকে আর দরকার হবে কেনো? তোকে সব কিছুর মাশুল দিতে হবে। দেখে নিস।’
পুতুল শানের উপস্থিতি ভুলেই সাব্বিরের সামনে গেল,’তুমি বিশ্বাস করো, আমি তো কিছুই করিনি।’
সাব্বির রেগে এবার পুতুলের গলা চেয়ে ধরল। পুতুল ছটফট করছে। শান পিছনে দাড়িয়ে মজা নিচ্ছে।
‘তোকে আমি মে’রেই ফেলব নষ্টা মেয়ে।’
‘অফিসার, অফিসার আসুন এখানে, আমার ওয়াইফকে মেরে ফেললো।’ পুতুলের গোঙানিতে শান ন্যাকামি করে লাঠি এদিক ওদিক করছে আর সাহায্য চাইছে।

পুলি’শরা এসে অনেক কষ্টে পুতুলকে ছাড়ালো। সাব্বির ওরা যাওয়ার সময়ও পুতুলকে শাসিয়ে দিল।

‘এসব এর মানে কি? কি বলল সাব্বির?’ যাওয়ার পথে গাড়িতে বসে বলল পুতুল।
‘হাহাহা।’ সব একে একে বলল শান, সে কি কি করেছে।
‘টিভিটা চালালে নিজেই বুঝে যেতেন। কিন্তু আপনার সাব্বিরের চিন্তায় সেটাও হয়ত মাথায় আসেনি আপনার। আচ্ছা মিস পুতুল অফিসে যাবেন না?’
পুতুল শানের প্রশ্নে থতমত খাচ্ছে।
‘না মানে,,,’
‘হাহাহাহা, জানি, সব জানি। কবে থেকে আমাকে ধোকা দিচ্ছেন সেটাও। মাত্র তো খেলা শুরু। আপনার নাগরকেই আপনার শত্রু বানিয়ে দিলাম।’
পুতুল পাশে বসে চোখের জল ফেলছে। কিন্তু তার একটাই আশা, শান হয়ত তাকে এখনো ভালোবাসে, নাহলে সাব্বিরের কাছে থেকে জেলে ওইভাবে বাচাতো না।

গাড়ি থেকে নেমে ভাড়া চুকিয়ে হাটছে বাসার দিকে শান আর পিছনে পুতুল, হঠাৎ একজন এসে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল শানকে। পুতুল তো পুরোই অবাক।
‘আপনি খুব খারাপ, কেনো বলেন নি আপনিই আমার আর যে শান?’ শানকে জড়িয়ে ধরে মৃদ্যু কন্ঠে বলছে মেয়েটি। পুতুল রাগে ফেটে যাচ্ছে, কিন্তু,,,,,,,,

চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here