‘সুদর্শন শঙ্খচিল’
[২৮]
লেখনীতে:- নূরজাহান আক্তার (আলো)
পৃথার কথাটা শুনে প্রত্যয় মুচকি হেসে বলল,”বাচ্চা বউয়ের বাচ্চামি আবদার নিয়ে আমি কিন্তু বেশ ভাল আছি।” পৃথা হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়িয়ে মুচকি হেসে বলল, “দোয়া করি অনেক ভাল থাক।” প্রত্যয় হেসে বলল,” তোদের জন্যও রইল অনেক ভালবাসা এবং শুভ কামনা।”
একটুদূরে, তুয়া প্রত্যয়ের বন্ধুর বউদের সঙ্গে কথা বলছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বাঙালি নয়। ওরা প্যারিস থেকে এসেছে। আর মুখস্থ পড়ার মতো ইংলিশে কথা বলছে। ওরা যখন তুয়ার সঙ্গে দ্রুত ইংলিশে কথা বলছিল। তুয়া তখন ওদের কথা বুঝতে পারছিল না। ইন্টার পড়া মেয়ের ইংলিশ স্পিকিং নিয়ে চর্চা না থাকলে, যা হয় আর কি। যেখানে মাস্টার্স কমপ্লিট করা ছাত্র-ছাত্রীরও চর্চা না করে, ইংলিশে কথা বলতে গেলে আঁটকে যায়। যেখানে তুয়া তো শিক্ষাগত যোগ্যর দিক থেকে বাচ্চা। হ্যাঁ, তুয়াও টুকটাক ইংলিশ বোঝে। কিন্তু মুখস্থ পড়ার মতো ইংলিশ বোঝার জ্ঞান টা, সে এখনও অর্জন করতে পারেনি। আর গল্পের হিরোইন হলে যে সব পারতে হবে তা কিন্তু নয়। মানুষ এক লাফে গাছে উঠতে পারেনা। চর্চা, জ্ঞান, কৌশল, বুদ্ধি, আর পদক্ষেপ ঠিক করে তারপর গাছে উঠতে শিখে।
তুয়াকে উত্তর দিতে না দেখে উনারা মুখ বাঁকালো। উনারা ভাবছে, তুয়া অহংকার করে কথা বলছেনা। একটুপরে, প্রত্যয় তুয়াকে ডাকল। তুয়া প্রত্যয় কাছে যাওয়ার জন্য পা বাড়াল। তখন একজন বাঙালি ভাবি বিদ্রুপ করে বললেন, ” রুপ থাকলে হয় না গুনও থাকতে হয়। বড় ডক্টরকে বিয়ে করলেই সন্মানিত হওয়া যায় না, সন্মান পেতেও যোগ্যতা থাকা লাগে।”
উনার কথার প্রত্যুত্তর না করে তুয়া প্রত্যয়ের কাছে চলে গেল। প্রত্যয় দু’জনের সঙ্গে তুয়ার পরিচয় করিয়ে দিল। উনারাও বাঙালী নন। যার ফলে অর্নগল ইংলিশে কথা বলছেন। তুয়ার এখন নিজেকে খুব তুচ্ছ মনে হচ্ছে। প্রত্যয় বুঝতে পেরে উনার কথাটা বাংলাতে বলল। তখন তুয়া উনার কথার উত্তর দিল। প্রত্যয় কথার ছলে উনাকে ইংলিশে জানিয়ে দিল, তার বাচ্চা বউ ইংলিশে একটু কাঁচা। উনি যেন কিছু মনে না করে। অপর ব্যাক্তি হেসে ইংলিশে বলল, “এটা স্বাভাবিক ব্যাপার, এখানে মনে করার মতো কিছু নেই। আজ পারছেনা কাল নিশ্চয়ই পারবে।”
প্রত্যয় হেসে সুন্দর ভাবে ব্যাপারটা সামলে নিল। যাতে তুয়া কষ্ট না পায় আর নিজেকে ছোট না ভাবে। কিন্তু তুয়া যে একটু আগে অপমানিত হয়েছে। এটা প্রত্যয়ের অজানায় থেকে গেল। প্রত্যয়ের বন্ধু এক একজন উচ্চশিক্ষিত এবং উচ্চপদে কর্মরত। তারা বিয়েও করেছে যোগ্যতা মোতাবেক। কিন্তু প্রত্যয় এখানে যোগ্যতা দাপট দেখায় নি। বরং তুয়াকে ভালবেসে গ্রহন করেছে। এখানে তুয়াকে নিয়ে প্রত্যয়ের একটুও ইতস্ততবোধ হচ্ছে না। এদের সঙ্গে তাল মিলাতে না পেরে ওর রাগও হচ্ছে না। কারন এটাই তুয়ার শিখার সময়। সঠিক সময় সেও একদিন ঠিক পারবে।
তারপর ওরা আনন্দের সমাপ্ত ঘটিয়ে বিদায় নিয়ে বাসায় পথে রওনা দিল। গাড়ি বসে তুয়া প্রত্যয়কে বুঝতেও দিল না, ওর বুকে কেউ কথার তীর মেরেছে। আর সেখানটাই বেশ গভীরভাবে জখম হয়েছে। প্রত্যয় গাড়ি থামিয়ে তুয়াকে বেলী ফুলের মালা আর এক গুচ্ছ লাল গোলাপ কিনে দিল। তুয়া ফুল গুলো নিয়ে মিষ্টি হেসে বলল,”ধন্যবাদ স্বামী।” প্রত্যয়ও হেসে প্রত্যুত্তরে বলল, “স্বাগতম বউ।”
দু’জনে বাসার গেটে ঢুকে গাড়ি থেকে নামল। তখন পলক আর রনিতের সঙ্গে ওদের দেখা হল। তুয়া জানত না, এখানে পলক থাকে। কারন ওদের সঙ্গে ওর দেখাও হয়নি। প্রত্যয় তুয়া ওদের সঙ্গে কথা বলল। তুয়া পলকের হাতে কয়লা দেখে জিজ্ঞাসা করল,’ আপু, কয়লা কি করবে?’ রনিত হেসে পলকের ব্যাপারটা ওদের জানাল। প্রত্যয় সবটা শুনে পলককে বলল,”পলক এই বাচ্চাটাকে কি তুমি চাও না?” পলক অবাক এবং একটু রাগান্বিত হয়ে বলল,”চাইব না কেন? খুব করে চাই।” পলককের কথা শুনে প্রত্যয় মুচকি হেসে বলল,”এই সময় অনেক কিছু ইচ্ছে জাগে। কিন্তু সব ইচ্ছেকে প্রাধান্য দিতে নেই। এই যে কয়লা চিবুচ্ছে, এটার রস পেটে গেলে বাচ্চাও খাবে। আর এসব খেলে পেটে সমস্যা দেখা দিবে। তখন দিন দিন বাচ্চার বেঁচে থাকাটা রিস্কি হয়ে যাবে। এবার তুমি ভাবো, তুমি তোমার ইচ্ছেকে প্রাধান্য দিবে নাকি বাচ্চার কথা ভাববে।”
প্রত্যয় ওর কথার কৌশলে পলকের মন ঘুরিয়ে দিল। সে ডক্টর হয়ে তো বেহুদা কথা বলবে না। এটা ভেবে পলক ওর হাতের কয়লা দূরে ছুঁড়ে মারল। পলকের এমন কাজে রনিতের মুখে হাসি ফুটল। প্রত্যয় তুয়াকে ইশারা করল, পলককে নিয়ে একটু দূরে যেতে। তুয়া প্রত্যয়ের ইশারা বুঝল। আর কথার ছলে পলককে নিয়ে ইচ্ছদের বাসায় ডুকল। ওদের যেতে দেখে প্রত্যয় রনিতকে বলল,”পলকের এই রোগের নাম পাইকা ডিজঅর্ডার। যদিও এটা একটা মানসিক রোগ।”
একথা শুনে রনিত অবাক হয়ে তাকাল। কারন অখাদ্য কিছু জিনিস খাওয়া কোনো রোগ হতে পারে, এটা ওর জানা ছিল না। রনিত এবার ব্যাপারটা সিরিয়াস ভাবে নিয়ে জিজ্ঞাসা করল,”স্যার আমাকে একটু বুঝিয়ে বলুন, প্লিজ। আমি ব্যাপারটা ঠিক বুঝতে পারছিনা।”
প্রত্যয় রনিতের কথার প্রত্যুত্তরে বলল,” জ্বি অবশ্যই! পলকের এই অদ্ভুত ইচ্ছে দু’টো কারনে হতে পারে। প্রথমটা হলো প্রেগনেন্সী আর দ্বিতীয়টা পাইকা ডিজঅর্ডার। পাইকা রোগের লক্ষণ, ছাই/কয়লা, সুঁতা, ইট, কলমের কালি, মাটির তৈরী চায়ের ভাঁড়, এক কথায় অখাদ্য গুলো খেয়ে ফেলা। তাছাড়া শরীরে আয়রণ, আর জিংক এর অভাব থাকলে, অদ্ভুত খাবার খেতে ইচ্ছে করে। যেটা এই মুহূর্তে ওর বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর। প্রেগনেন্সীতে হরমোন চেঞ্জের কারনে এই সমস্যা দেখা দেয় আবার সমাধানও হয়ে যায়। আপনি ওর সঙ্গে কথা বলুন। ওর মানসিক চাপটা কি নিয়ে বোঝার চেষ্টা করুন। যদি সম্ভব হয় তো সেটার সমাধান করুন। তারপরেও যদি ঠিক না হয় তাহলে এর রোগের চিকিৎসা নিতে হবে। কারন এটা হাস্যকর রোগ হলেও, রোগ সারানোর পথ এতটাও সহজ নয়।” রনিতের মুখে চিন্তার ছাপ দেখে প্রত্যয় আবারও বলল,”সমস্যা থাকলে সমাধানও হবে। আপনি ইজি থাকুন আর পলকের কার্যকলাপে নজর রাখুন।”
রনিত প্রত্যয়কে ধন্যবাদ জানাল। প্রত্যয় নিজে থেকে ব্যাপারটা না জানালে, সে ব্যাপারটা তুচ্ছ ভেবে অবহেলা করত। প্রত্যয় রনিতের থেকে বিদায় নিয়ে যাওয়ার জন্য এক পা বাড়িয়ে আবার এসে বলল,”বাচ্চা ছেলে/মেয়ে হওয়ার নিয়েও সন্তান সম্ভাবা মায়েরা চিন্তিত থাকে। আর এই চিন্তাটা অনেক সময় মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। অনেকের আবার শশুড়বাড়ির চাপ, বাচ্চা নিয়ে হাজবেন্ডের খুশি/অখুশির ভাবনা, মেয়ে বাচ্চা নিয়ে মানুষের কটু কথার ভয়, এসব নিয়েও মানসিক রোগ সৃষ্টি করে। আপনি ওর প্রতি খেয়াল রাখুন। তাহলে হয়তো সবটা বুঝতে পারবেন, আসি।”
প্রত্যয় তুয়াকে ডেকে ওদের বাসায় চলে গেল। প্রত্যয় ওর কথা দিয়েই রনিত সমস্যা দেখিয়ে দিল। আর রনিতও সেটা দ্রুত ক্যাচ করতে পারল। কারো পরিবার নিয়ে হুট করা কথা বলাটা বেমানান। তাই প্রত্যয় ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে পরিবারের কথাটা রনিতকে বোঝাল। যদিও পরিবার নিয়ে কথাটা প্রত্যয় আন্দাজে ঢিল ছোঁড়ার মতো করে বলেছে। যাতে রনিতের এই ব্যাপরটাও ভেবে দেখে। আর সমস্যাটা খুঁজে বের করতে পারে।
প্রত্যয়ের প্রত্যেকটা কথা রনিত গভীর ভাবে চিন্তা করল। প্রেগনেন্ট হওয়ার পর থেকে পলকের একই কথা, “কি বাবু হবে? কার মতো হবে, তুমি খুশি তো? মেয়ে হলে ভালবাসবা তো? আমার মনে হয় মেয়ে হবে?” অহরহ বার সে পলকের এই কথার সম্মুখীন হয়েছে। আর রনিতের মা, দাদী, মেয়ে বাচ্চা পছন্দ করেনা, একথাও পলক জানে। হয়তো এসব চিন্তায় পলকের মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে। রনিত সমস্যা এবং সমাধান দু’টোই পেয়ে না দাঁড়িয়ে পলককে নিয়ে বাসায় চলে গেল।
সন্ধ্যার পর চাঁদ প্রিয়মের কাছে পড়তে বসেছে। এই নিয়ে প্রিয়ম একই অংক চাঁদকে পাঁচবার বুঝাল। কিন্তু চাঁদ তাও বুঝতে পারছেনা। প্রিয়মের কটমট করে তাকানো দেখে চাঁদ না বুঝেও বলল বুঝেছে। প্রিয়ম চাঁদকে একটা অংক করতে দিল। চাঁদ তখন ধরা খেয়ে কলমের নিব কামড়াতে লাগল। চাঁদের কাহিনী বুঝতে পেরে প্রিয়ম স্টিলের স্কেলটা হাতে নিল। চাঁদ তখন দ্রুত উঠে দাঁড়িয়ে বলল,”তুয়া আপুরা এসেছে নাকি দেখে আসছি।” প্রিয়ম স্কেলটা দিয়ে ইশারা করে ওকে বসতে বলল। চাঁদ মিনমিন করে বলল,”তোমার কাছে অংক বুঝছিনা, আমি ভাইয়ার কাছে বুঝব।” প্রিয়ম তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলল,”ভাইয়া, নিজের ব্রেণকে পরীক্ষা করতে কানে ইয়ারফোন গুঁজে ফুল পাওয়ারে গান দিয়ে, ত্রিকোনোমিতি আর পিথাগোরাসের অংকের সমাধান করে। তাহলে ভাবো, সে কেমন ছাত্র। তাই বলছি! তোমার মতো গবেট গিয়ে ভাইয়ার সময় নষ্ট করো না।”
কথাটা শুনে চাঁদ মুখ ভেংচি দিয়ে খাতার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে, নিজে নিজে অংক করতে লাগল। আর প্রিয়ম নিজের বই নিয়ে পড়াতে মন দিল। প্রিয়মের কিছুদিন পর পরীক্ষা। তাই সে শুয়ে শুয়ে পড়ছিল। ওর দেখে চাঁদ শখ করে পড়তে বসে ফেঁসে গেছে। প্রিয়ম পড়তে পড়তে চাঁদের খাতার দিকে তাকাচ্ছে, একটা জায়গায় এসে চাঁদ আঁটকে গেছে। সেখানে সূত্র প্রয়োগ করলে সমাধান বের হয়ে যাবে। প্রিয়ম চাঁদের খাতা টেনে সমাধান করে দিল। আর বেশ কয়েকটা সূত্র লিখে চাঁদকে মুখস্থ করতে দিল। চাঁদ মন দিয়ে পড়ে প্রিয়মকে ধরতে দিল। প্রিয়ম এলোমেলো করে ধরাতে চাঁদের সবটা গুলিয়ে গেল। তখন তুয়া ড্রয়িংরুমে বসে চাঁদকে ডেকে উঠল। তুয়ার ডাক শুনে চাঁদ দৌড়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল। প্রিয়ম চাঁদের দিকে তাকিয়ে বলল,”বুদ্ধি আছে কিন্তু কাজে লাগায় না, ফাজিল একটা।”
একটুপরে, চাঁদ হন্তদন্ত হয়ে ছুঁটে এসে প্রিয়মকে বলল,”এই লোক, এই! আপনার পুরো নাম কি?” প্রিয়ম দাঁতে দাঁত চেপে বলল,”এক থাপ্পড়ে ভদ্রতা শিখায় দিব।” থাপ্পড়ের কথা শুনে চাঁদ ঢোক গিলে জোরপূর্বক হেসে বলল,”আপনার পুরো নামটা বলবেন? একটু দরকার ছিল।” প্রিয়ম ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বিরক্ত হয়ে বলল,”তাশফিক সাফায়েত প্রিয়ম।” চাঁদ ওর হাতের সুন্দর একটা বেসলেট দেখিয়ে বলল,”প্রত্যয় ভাইয়া প্যারিস থেকে এনেছে। আমার টাতে ‘S’ আর তুয়া আপুটাতে ‘W’ লিখা। দারুন দেখতে, তাই না?” প্রিয়ম ‘হুম’ বলে ওর পড়াতে মন দিল। আর চাঁদ মুখ ভেংচি দিয়ে স্থান ত্যাগ করল।
প্যারিস থেকে আসার সময় প্রত্যয় চাঁদ তুয়া জন্য একই রকম দু’টো বেসলেট এনেছে। শুধু অক্ষর আলাদা। আরো অনেক কিছু এনেছে। কিন্তু দেওয়ার কথা প্রত্যয়ের মনে ছিল না। প্রিয়ম জানে প্রত্যয় ওর জন্যও ইউনিক কিছু এনেছে। কারন প্রত্যয় যতবার প্যারিসে যায়, ততবার ওর জন্য ইউনিক মডেলের ড্রেস অবশ্যই আনে। প্রিয়মের গিটারটাও প্যারিস থেকে আনা। রাতে খাওয়ার সময় প্রত্যয়ের আব্বু জানালেন, কালকে সবাই বসুন্ধরার ফ্ল্যাটে চলে যাবে। এখান থেকে শুধু প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো নিবে। আসবাবপত্র দিয়ে ওই ফ্ল্যাট সাজানোই আছে।
প্রত্যয় তখন বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে চাদঁ তুয়াকে বেসলেট দিয়েছিল। তার পর পরই জরুরী কল আসায় হসপিটালে চলে গেছে। কিছুক্ষণ পরে, তুয়া কল দিল কিন্তু প্রত্যয় রিসিভ করল না। প্রত্যয়ের অপেক্ষা করতে করতে তুয়া বেলকণিতে ঘুমিয়ে গেল। আর ওখানেই সারারাত কেটে গেল। কিন্তু প্রত্যয় বাসায় ফিরল না। পরেরদিন সকাল আটটায় জামিল প্রিয়মকে ফোন করে বলল,”ছোট ভাই দ্রুত হসপিটালে চলে এসো। একটা সমস্যা হয়ে গেছে।”
To be continue….!!