অনুভূতির_শীর্ষবিন্দু #written_by_Nurzahan_Akter_Allo #part_07

0
791

#অনুভূতির_শীর্ষবিন্দু
#written_by_Nurzahan_Akter_Allo
#part_07

–“আমি ইউ ফুরীর খতাই খইয়াম। ই ফুরীর লাগে তোর বিয়া দিতাম নায়।” (নানু)

একথা শুনে নক্ষত্রের ভুরু কুঁচকে নানুর দিকে তাকালো। নানু তিতিক্ষাতে দেখেই নি। তাহলে এরকম মন্তব্য করার কারণ নক্ষত্র বুঝতে পারছে না। নানু আবার কিছু বলতে চাইলে, তার আগেই নক্ষত্র বলল,

–” আমি আবেগ প্রবণ হয়ে তো কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি নানু । আমার ভালো-মন্দ বোঝার বয়স হয়েছে।”

নক্ষত্রের নানু পারছেনা নক্ষত্র কে গিলে খেতে। নানু চোখ বড় বড় করে নক্ষত্রের দিকে তাকিয়ে আছে। তবে নক্ষত্র এখনো নিজেকে স্বাভাবিক রেখে চুপ করে বসে আছে। এটাই নক্ষত্রের বিশেষ একটি গুণ। অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতেও সে নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে পারে। আর এখানে তিতিক্ষা কে নিয়ে কথা উঠেছে। ভেবে ,চিন্তে, মাথা ঠান্ডা রেখে পদক্ষেপ নেওয়াটাই নক্ষত্রের কাছে বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে হচ্ছে। নানু নক্ষত্রের দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। নানুর এমন রূপ দেখে নক্ষত্র মুচকি হেসে শান্ত গলায় বললো,

–“আমি মানলাম তিতিক্ষাকে তোমার পছন্দ হয়নি। এবার বলতো কেন তোমার ওকে পছন্দ হয়নি ?”

নক্ষত্র কথা শুনে নানু আরো ক্ষেপে গেল। উনি রেগে গিয়ে উচ্চ স্বরে বলল,

–“আমি তোর লাগি ওনো ফুরী দেখিয়া রাখছি। তাইর লগেউ তর বিয়া দিমু। আমি আর কিচ্ছু হুনতাম নায়। আমি যেখান কইছি অকান অইব। তুমি এখন যাও গিয়া ঘুমাইলে ঘুমাও।”

তখনই বড় মামির সাথে একটা মেয়ে রুমে প্রবেশ করলো। গ্রাম্য বেশে শাড়ি পরা মাথায় এক হাত ঘোমটা দেওয়া। নক্ষত্র উনাদের দেখে বাহিরে যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়াতেই নানু বলল,

–“ওককা তর হবু বউ। নক্ষত্র ই ফুরিরে দেকিয়া কোনো মাত মাতিবে না। অগুরেউ তরে বিয়া খরা লাগবো।”

নক্ষত্র কিছু বলছ না চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। বড় মামি সবার মুখে মুখে তাকাচ্ছে। উনি আশেপাশে তাকিয়ে তিতিক্ষাকে খুঁজছে। কিন্তু কোথাও তিতিক্ষা নেই। নক্ষত্রের আম্মু বড়মামিকে দিয়ে এই মেয়েটাকে নানুর রুমে পাঠিয়েছে। বড়মামিও এই মেয়েকে চেনে না। নক্ষত্রের আম্মু এই রুমের দিকে আসেনি। নক্ষত্র এখনও চুপচাপ স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কারণ নক্ষত্র এখানে কথা বলার আর কোন প্রয়োজনই মনে করছে না। তিতিক্ষা এখন ওর হবু বউ । আর এখন এই বিষয়টাকে আবার নতুন করে ভেবে-চিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোন প্রশ্নই ওঠে না। নানুর এমন বোকা বোকা যুক্তিতে নক্ষত্রের কোন মাথা ব্যাথা নেই। সেই মেয়েটি চুপচাপ রুমের এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে। নক্ষত্র রুমের বাইরে পা বাড়াবে। তখনই নানু আবার বলে উঠলো,

–“এখবার তা ওউ ফুরিটার ছান্দর লাখান মুকখান দেকি লা। ইগু ফুরিরে আর মনো ফরতো নায়।”

নক্ষত্র মুচকি হেসে পিছনে ফিরলো। ওর দুই হাতদুটো পকেটে ঢুকিয়ে হাসি হাসি মুখে বলল,

–“তিতিক্ষার চাঁদের মত মুখ থাকুক আর নাই বা থাকুক। সে আমার অনুভূতির শীর্ষবিন্দু।”

কথাটা শুনে নানু হো হো করে হেসে দিল। উনি আর নক্ষত্রকে ঘাটালো না। উনি উনার নাতি পরীক্ষা নেওয়ার পালা সমাপ্ত করলো। নানু উনার হাতের ইশারায় ঘোমটাওয়ালীকে উনার পাশে বসালো। নানু মেয়েটার ঘোমটা তুলে দিলেন। এরপর হাসতে হাসতে বলল,

–” কিতারে কিলা দিছি সারপ্রেরাইজ। আমার কিন্তু হতিন যে বালা লাগে।”

নক্ষত্র নানুর দিকে তাকিয়ে কথা বলতে গিয়ে, আচানক ভাবে মেয়েটার দিকে চোখ পড়ল। নক্ষত্র প্রথমে চোখ সরিয়ে আবার মেয়েটার দিকে তাকালো। মেয়েটাকে কে চিনতে নক্ষত্রের দু’সেকেন্ড সময়ও লাগেনি। কারন ওটা তিতিক্ষা ছিলো। নক্ষত্র একটু অবাক হয়েছে তিতিক্ষাতে এখানে দেখে। তবে সেটা কাউকে বুঝতে দিলো না।
যদিও নক্ষত্র তিতিক্ষাকে এখানে এই অবস্থায় মোটেও আশা করিনি। আর এরকম গ্রাম্য সাজে যে
তিতিক্ষা ছিল। এটা নক্ষত্রেরও জানার কথা না। একটা সবুজ শাড়ি বাঙালি ভাবে পড়া, চুলে খোঁপা করা, হাতে চুড়ি, চোখে কাজল। এতটুকুই ছিলো তিতিক্ষার সাজ। নক্ষত্র আর কিছু বলার ভাষা পেলো না । তবে সে যে খুব খুশি এটা ওর চোখের চাহনি বলে দিচ্ছে। নক্ষত্র ওর মাথা চুলকে ,ঠোঁটের কোণে মুচকি হাসির রেখা টেনে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।

মিস্টার আবরারের বাইরে থেকে কেবল আসলো। আসার সময় অনেক ফাস্ট ফুডও সাথে করে এনেছে। মিস্টার আবরার আর নক্ষত্রের মামারা একসাথে বসে আড্ডা দিচ্ছে। মিসেস আবরার নক্ষত্রকে ওর মামাদের ফ্ল্যাটে নিয়ে গেল। কারণ এখানে আপাতত কোন রুম ফাঁকা নেই । অদ্রি আর পাতা বসে বসে আচার খাচ্ছে আর গল্প করছে। তিতিক্ষা লজ্জা মাখা মুখ নিয়ে নানুর পাশে বসে আছে। নানু তো এই ব্যাপারটাতে খুব মজা নিচ্ছে। নক্ষত্রের বলা কথায় তিতিক্ষা যে ঠিক কতটা খুশি হয়েছে। এটা সে প্রকাশ করতে পারছেনা।

এদিকে তিতিক্ষার মামনি আর উনার হাসব্যান্ড তুমুল ঝগড়া করছে। বিভা আর আহান সোফাতে বসে দুজনের ঝগড়া দেখছে। দুইজনে গালে দুই হাত দিয়ে একবার সামনের দিকে তাকাচ্ছে। একবার ওনার হাজবেন্ডের দিকে তাকাচ্ছে। আবার মাঝে মাঝে ওদের বাবা মায়ের কথা অনুযায়ী দুজনে ঠিক ঠিক বলে স্লোগান দিচ্ছে। আজকে ওনাদের ঝগড়ার মূল বিষয় হলো,’ আহানে বাবা বাইরে থেকে হালিম খেয়ে এসেছে। তারপর থেকে উনার ডায়রিয়া শুরু হয়েছে।’ উনি একটু পর পর ওয়াশরুম ভ্রমণে যাচ্ছে। মামনি অগ্নি কন্ঠে চিৎকার করে বলে উঠলো,

–“এই বুড়া বয়সেও কি তোমার ভীমরতি কমবে না? কতবার বলেছি? যে বাইরে খোলা জায়গার খাবার খাবে না। বেশ হয়েছে! দোয়া করি যাতে তুমি সারা বছর এইরকম ডায়রিয়ার রুগীই থাকো। অসভ্য লোক একটা। ”

মামণির কথা শুনে আহান আর বিভা মুখ টিপে হাসছে। এটা নতুন কিছু না। তারা সবসময়ই ওর বাবা মায়ের এরকম ঝগড়া দেখে অভ্যস্ত। তবে ওদের বাবা কখনো এর প্রতিউত্তর করে না। কারণ উনিও ভালো করেই জানে। উনার মিসেস উনার ভালোর জন্যই এত বকাঝকা বলে। মামনি যখন উনার হাজবেন্ডকে বকা দেয়। তখন উনার হাজবেন্ড মামনির দিকে তাকিয়ে বোকা বোকা একটা হাসি দেয়। এ বোকা বোকা হাসি দেখে তনুকা, বিভা, আহান, নবীন, হেসে লুটোপুটি খায়। এমন সিরিয়াস মুহূর্তে ছেলেমেয়েদের হাসি দেখে মামনি আরো রেগে যায়। তখন ওনার হাজবেন্ডের সব রাগ ছেলে মেয়ের উপর ঝাড়ে।

তিতিক্ষার আব্বু, আম্মু বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে নিলো। সারাদিন দু’জনেরই খুব ব্যস্ত সময় কাটে। তিতিক্ষার আম্মু কলেজ থেকে ফিরে কাগজ পত্র নিয়ে বসেছে। উনার কলেজে সামনে সপ্তাহ থেকে পরীক্ষা শুরু হবে। এজন্য সব টিচারদের একটু ব্যস্ত সময় কাটছে। শীত বাড়ছে পরীক্ষাটা হয়ে গেলে সবাই স্টুডেন্টাও বাঁচবে সাথে টিচাররাও।

নক্ষত্র কেবল হট সাওয়ার নিয়ে বের হলো। নক্ষত্রের আম্মু খাবার নিয়ে নক্ষত্রের রুমে এলো। নক্ষত্র আর কিছু না বলে
খেতে বসলো। নক্ষত্রের আম্মু নক্ষত্রকে উদ্দেশ্য করে বললো,

–“তিতিক্ষাকে নিয়ে কোথাও একটা ঘুরে এসো। দু’জন দুজনকে একট সময় দাও। তাহলে দেখবে দুজনের সম্পর্কটা সহজ হয়ে যাবে।”

নক্ষত্র কিছু না বলে মাথা নাড়িয়ে হ্যা বোঝালো। আসলেই ব্যাপারটা নক্ষত্রও ভেবেছে। তিতিক্ষা এখনো ওর সাথে সহজ হতে পারেনি। এজন্য সে নক্ষত্রকে দেখলেই পালিয়ে পালিয়ে বেড়ায়। নক্ষত্রের আম্মু আরও কিছু কথা বললো। নক্ষত্র চুপ করে ওর আম্মুর সব কথা শুনলো। নক্ষত্র খাওয়া শেষ করে হাত ধুয়ে এসে বললো,

–” আমাকে তো বললে। কিন্তু তোমার পুত্রবধূ কি আমার সাথে যেতে রাজি হবে আম্মু ?”

নক্ষত্রের আম্মু মুচকি হাসলো। উনি এসে নক্ষত্রের পাশে বসতেই নক্ষত্র ওর আম্মুর কোলে শুয়ে পড়লো। নক্ষত্রের আম্মু নক্ষত্রের চুল টেনে দিতে দিতে থাকলো। প্রশান্তিতে নক্ষত্র ওর চোখ বন্ধ করে নিলো। নক্ষত্রের আম্মু বললো,

–“সম্পর্কটাকে সহজ করতে চাইলে দুজন দুজনকে সময় দিতে হয়। বোঝার চেষ্টা করতে হয় একে অপরকে। তিতিক্ষা তো তোমার সাথে তেমনভাবে একটা সময় কাটায়নি। তুমি যে মানুষ হিসেবে কেমন সেটা তো সে জানেনা। ফোনে কথা বলে কতটুকই বা মানুষ চেনা যায়? এই বার দিয়ে তিনবার হলো তোমাদের দেখা। তবুও দুজন দুজনকে সেভাবে সময় দাওনি। আর সম্পর্কটাকেও সহজ করতে পারো নি।
এজন্য মনে হয় তিতিক্ষা তোমার থেকে পালিয়ে বেড়ায়। তোমরা যাতে দুজন দুজনকে সময় দিতে পারো। তিতিক্ষা আর তোমাকে এই কারনেই এখানে এনেছি। এটা তিতিক্ষার বাসার সবাই জানে। আর সবাই চাই তোমরা একে অপরকে চেনো, বুঝো। আমি জানি আমার ছেলের মতো বিবেক আর বুদ্ধিসম্পূর্ণ ছেলে হয় না। তবুও বলছি, সময় দিতে গিয়ে এমন কিছু ভুল করোনা। যাতে আমাদের সবার মাথা হেট হয়।”

নক্ষত্র বুঝলো ওর আম্মু ওকে কি বুঝাতে চাচ্ছে। নক্ষত্র ওর আম্মুর দিকে তাকিয়ে বললো,

–” কালকে সকালে আমরা বের হবো। এই কথাটা তোমার পুত্রবধূকে জানিয়ে দিও। আর হ্যা চারদিন আমরা বাসায় ফিরছিনা। এই চারদিন তোমার পুত্রবধূকে সিলেট ঘুরিয়ে দেখাবো । আর আম্মু চিন্তা করো না। তোমার ছেলে তোমার মেয়েকে আগলে রাখবে। আমার নামে নেগেটিভ কোন অভিযোগ তোমার কাছে আসবেনা।”

নক্ষত্রের আম্মু ছেলের কথা শুনে হাসলো। নক্ষত্র এখন ঘুমাবে ভেবে নক্ষত্রের আম্মু চলে গেল। নক্ষত্র ওর ফোনটা বের করে তিতিক্ষাকে কল দিলো। তিতিক্ষা কলটা রিসিভ করলো। নক্ষত্র বললো,

–“তোমার লজ্জামাখা মুখটা খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। তুমি একটু লজ্জা পাও তো, আমি বসে বসে দেখি।” (আদুরে সুরে)

নক্ষত্রের কথা শুনে তিতিক্ষা সত্যিই লজ্জা পেলো। হুট করে ফোন দিয়ে এভাবে কেউ কথা বলে। তিতিক্ষা কি বলবে বুঝতে পারছেনা। এমন আদুরে সুরে নক্ষত্রের বলা ভয়েজটা খুব মারাত্মক । নক্ষত্রের এমন আদুরে ভয়েজটা তিতিক্ষার যেন সরাসরি হার্টে গিয়ে বিঁধে। তিতিক্ষা ফোনটা কানে নিয়ে চুপ করে আছে। লজ্জায় ওর মুখটা লাল আভা ধারণ করেছে। গলুমলু গাল দুটো লাল হয়ে গেছে। তিতিক্ষা মাথা নিচু করে আছে। নক্ষত্রের বলা কথাটা শুনে ওর শরীর মৃদুভাবে কাঁপছে। তিতিক্ষা চুপ করে আছে দেখে নক্ষত্র বললো,

–“আমি কি তোমার রুমে আসতে পারি ? শুধুমাত্র
তোমার এই লজ্জামাখা মুখশ্রীটা দেখে আমার দু’চোখের তৃষ্ণা মেটাতে।” (নক্ষত্র মুচকি হেসে)

নক্ষত্র ইচ্ছে করেই তিতিক্ষাকে লজ্জাতে ফেলতে চাচ্ছে। ইস! ছেলেটা আসলেই খুব ফাজিল। তার না হলে এভাবে কেউ লজ্জা দেয়। নক্ষত্রের এসব বললেই বা ওকে কেন লজ্জা পেতে হবে? এই কথার উত্তরটা তিতিক্ষার অজানা। তিতিক্ষার চুপ করে থাকাতে নক্ষত্র দুষ্টু হেসে আবার বলে উঠলো,

–“তোমাকে পুরো টমেটোর মতো লাগছে। আমার যদিও টমেটো খুব একটা পছন্দ না। তবে তুমি নামক টমেটো বউটা আমার খুব বেশি পছন্দের। ” (আদুরে সুরে, স্লো ভয়েজে)

তিতিক্ষার এবার যায় যায় অবস্থা। নক্ষত্রের বলা কথাগুলো শুনে ওর হার্ট দ্রুত গতিতে লাফাচ্ছে। নিঃশ্বাস আটকে যাচ্ছে। তিতিক্ষা লজ্জায় কিছু বলতেও পারছেনা। নক্ষত্রের বলা এমন কথায় প্রতিউত্তরে কি বলবে তিতিক্ষা খুঁজে পাচ্ছে না। তিতিক্ষা চুপ করে থেকে মনে মনে ভাবছে,

–“এই ছেলেটা আজকে উনার প্রতিটা কথায় আমাকে লজ্জা দেওয়া জন্যই মনে হয় উঠে পড়ে লেগেছে।”

তিতিক্ষা কিছু একটা মনে করে মাথা তুলে সামনে তাকালো। নক্ষত্র তখন দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো। নক্ষত্রের দৃষ্টি তখন তিতিক্ষার মুখ পানে। নক্ষত্র মুচকি মুচকি হাসছে।
তিতিক্ষা নক্ষত্রকে দেখে সাথে সাথে মাথা নিচু করে নিলো। নক্ষত্র হাসলো তিতিক্ষার কান্ড দেখে। অদ্রি তখনই তিতিক্ষাকে ডাকতে রুমে আসলো। নক্ষত্রকে দেখে অদ্রি ভ্রু কুঁচকে বললো,

–“ভাইয়া তুই কি এখন ভাবমণির সাথে প্রেম করতে এসেছিস?”

অদ্রির কথা শুনে নক্ষত্র ঘাড় ঘুরে পাশ ফিরে তাকালো। অদ্রি ওর কোমরে দুই হাত রেখে নক্ষত্রের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে। অদ্রির এমন বেআক্কেলের মত কথা শুনে, নক্ষত্র অদ্রির মাথাতে একটা ঠুয়া মেরে চলে গেছে। অদ্রি মাথা নাড়তে নাড়তে রুমে ঢুকলো। তিতিক্ষা তখনও চুপ করে মাথা নিচু করে বসে ছিলো। অদ্রি তিতিক্ষার পাশে বসে বললো,

–“ভাবিমণি চলো সবাই বাইরে আড্ডা দিচ্ছে। তোমাকেও ডাকছে।”

অদ্রির কথা শুনে তিতিক্ষা উঠে দাঁড়ালো। দুজনেই গেলো রুমের বাইরে। নক্ষত্র তখন একটু দূরে ফোনে কারো সাথে কথা বলছিল। সামনে রাখা আছে হরেক রকমের নাস্তা। সবাই খাচ্ছে আর জমপেশ আড্ডা দিচ্ছে। বাড়ির সবাই এখানে উপস্থিত আছে শুধু পলক ছাড়া। নক্ষত্র ফোনে কথা বলা শেষ করে এসে দাঁড়াতেই অদ্রি বলে উঠলো,

–” আম্মু তোমার ফাজিল ছেলে একটা আকাম করেছে। সে ভাবিমণির রুমে উঁকি দিচ্ছিল। ভাবি মণিকেও সে কিছু একটা বলেছে। যার কারণে ভাবিমণি এক্কেবারে লজ্জায় রাঙ্গা হয়ে উঠেছে। তুমিই দেখো ভাবিমণির মুখটা এখনো লজ্জায় লাল হয়ে আছে। তোমার ভদ্র ছেলের এই আকামটা আমি দেখে ফেলেছি। তাই সে আমাকেও মেরেছে।”

লে এবার অদ্রি একঘর মানুষের সামনে নক্ষত্রের ইজ্জতের ফালুদা করে দিলো। নক্ষত্র আড়চোখে তিতিক্ষার দিকে তাকালো। তিতিক্ষার অদ্রির কথা শুনে আরো বেহাল দশা। তখনই নানু বাজখাঁই গলাতে বলে উঠলো,

–“অই ফুরি আমার নাত্তি রে কি কালাজাদু খরসত এখবারে বউর ফাগল অইগেছ।”

To be continue…!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here