‘ একদিন তুমিও ভালোবাসবে ‘ 🌸❤️
||পর্ব~৫৮||
@কোয়েল ব্যানার্জী আয়েশা
৮৬.
কোয়েল সমানে নিজের হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছে সৌভিকের হাতের থেকে কিন্তু সৌভিক এত শক্ত করে ওর হাত ধরে রেখেছে যে ও শত চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছে। কোয়েলের ব্যাথা তো লাগছেই সাথে সৌভিকের স্পর্শে এবং শয়তানি হাসি দেখে গা জ্বলে যাচ্ছে।
কোয়েল: সৌভিকদা হাত ছাড়ো আমার। তুমি এখানে কেন? কি চাই তোমার?
সৌভিক: এত ছটফট করে কোনো লাভ নেই কোয়েল পাখি। এত সহজে যে তুমি আমার হাত থেকে ছাড় পাবে না। আমার যে এবার তোমাকে চাই’ই চাই।
সৌভিক কথাগুলো বলে কোয়েলের হাত ধরে হ্যাঁচকা টেনে সামনে নিজের সামনে নিয়ে এসে কোয়েলের আরেকটা হাতের কব্জি করে ধরে। কোয়েল এবার চোয়াল শক্ত করে সৌভিকের দিকে তাকায়। তা দেখে সৌভিক হেসে বলে,
সৌভিক: বাহবা! কোয়েল পাখির রাগ হয়েছে দেখছি? কিন্তু আমি তো ভয় পাচ্ছি না সোনা। বিয়ের পর তোমাকে না হয় ভয় পাবো।
কোয়েল: বিয়ে? আর তোমাকে? মরে গেলেও করবো না আমি। ছাড়ো আমাকে নাহলে ফল ভালো হবে না।
সৌভিক: তাই নাকি? কি করবে তুমি আমার? এই যে রাজ তোমার সাথে ভালোবাসার নাটক করে বেরিয়ে গেলো তুমি কিছু করতে পেরেছো? পারোনি তো? তাহলে আমার কি ক্ষতি করবে? আচ্ছা তোমার আমাকে বিয়ে করতে প্রবলেম কোথায়? তুমি যাকে ভালোবাসো সে নিজেও তো মেয়েদের সাথে ফুর্তি করে তাও আবার একসাথে দুটো। আমি তো একসময় একটাতেই খুশি থাকি।
কোয়েল: ওহ, তো আমি ঠিকই ছিলাম? এসব তোমাদের কাজ, ষড়যন্ত্র। কি ভেবেছো এসব করে আমাদের সম্পর্ক ভাঙতে পারবে? এতোটাও সহজ নয় একটা সম্পর্ক ভাঙা জানো তো? আমাদের সম্পর্ক এতোটাও ঠুনকো নয় যে তোমাদের সস্তার প্ল্যানে আমাদের সম্পর্ক ভাঙবে, হয়তো সামান্য ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে কিন্তু ভাঙবে না। আর কোন সাহসে তুমি নিজেকে রাজের সাথে তুলনা করো? নখের যোগ্য না তুমি ওর আর আমি তোমাকে বিয়ে করবো ভাবছো? দিবাস্বপ্ন দেখা ছেড়ে দাও সৌভিকদা, আমাকে তুমি কোনোদিন পাবে না। ছাড়ো আমায়!
কোয়েল নিজের সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে সৌভিকের বুকে ধাক্কা মারলে সৌভিক কিছুটা পিছিয়ে যায়। কোয়েল চলে যেতে নিলেই সৌভিক পিছন থেকে আবারও কোয়েলের হাত ধরে নিজের সামনে আনলে কোয়েল হাত ছাড়তে নেয় কিন্তু পারে না। সৌভিক কোয়েলের হাতটা মুছড়িয়ে ধরে ওকে সামনে ঘুরিয়ে দেয় ফলে কোয়েলের পিঠ সৌভিকের বুকের সাথে ঠেকে। তারপর কোয়েলের কানের কাছে মুখ এনে বলে,
সৌভিক: দেখি তোকে আজকে কে বাঁচায়। ভেবেছিলাম বিয়েটা ভালো ভাবে তোর ইচ্ছাতে করবো কিন্তু নাহ! আমাকে বাধ্য করলি তুই খারাপ হতে।
সৌভিক ওর হাতটা কোমরে ধরে রাখার ফলে কোয়েলের ভীষণ ব্যাথা লাগছে, ব্যাথায় চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে গেছে।
সৌভিক: এইটুকুতে কেঁদে দিলে হবে কোয়েল পাখি? লড়াই করবে না আমার সাথে? এতক্ষণ তো খুব ছটফট করছিলে, এখন কি হলো?
সৌভিক বোঝে কোয়েল নিস্তেজ হয়ে পরেছে তাই কথাটা বলেই কোয়েলের হাতটা ছেড়ে ওকে সামনে ঠেলে দেয়। ধাক্কাটা জোরেই ছিল বেশ তাই কোয়েল শরীরের ভারসাম্য না রাখতে পেরে পরে যায়। কিন্তু সেটা মাটিতে না, একজনের বুকের উপর। কোয়েল বুঝতে পারে তাঁকে কেউ ধরে নিয়েছে। মানুষটার শরীরের সুবাস নাকে আসতেই কোয়েল তাঁর শার্ট আঁকড়ে ধরে ডুকরে কেঁদে উঠে মিশে যায় মানুষটার সাথে। পিছন থেকে আওয়াজ আসে,
সৌভিক: ওহ! তো তুই এসে পড়েছিস? তোর অপেক্ষাতেই তো ছিলাম আমি। তোর প্রেমিকা তোর অপেক্ষা না করলেও আমি অধীর আগ্রহে তোর অপেক্ষা করছিলাম, “রাজ”।
কোয়েল সৌভিকের কথা শুনে রাজের বুক থেকে মাথা তুলে সৌভিকের দিকে তাঁকায়। দেখে ওর পিছনে আরো বেশ কয়েকজন ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। ভয়ে ভয়ে কোয়েল রাজের দিকে তাকালেদেখে কোয়েলের কানটা লাল হয়ে এসেছে এদিকে চোয়াল শক্ত। কোয়েল ঘাবড়ে যায় এটা দেখে।
রাজ: ভার্সিটিতে ফিরে যাও।
কোয়েল: তোমাকে এখানে একা রেখে আমি চলে যাবো?
রাজ: আমার এই রূপটা দেখতে তুমি অভ্যস্ত নও।
কথাটুকু বলেই রাজ কোয়েলকে ছেড়ে সৌভিকের দিকে নিজের শার্টের হাতা ফোল্ড করতে করতে এগিয়ে গেলো। এক মিনিট সময়ও ব্যয় করলোনা রাজ, সৌভিকের সামনে দাঁড়িয়েই একটা ঘুষি মেরে দিলো গালে। সৌভিকসহ ওর সাথে থাকা ছেলেগুলোও একটু ভয় পেয়ে গেলো। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই রাজ সৌভিককে এলোপাথারি মারতে শুরু করে। সৌভিক ওর সহকারী ছেলেগুলোকে নির্দেশ দেওয়ার মতো অবসর পাচ্ছে না, দম বন্ধ হয়ে আসছে জানো। কিন্তু একটা ছেলে তাদের মধ্যে ছুরি হাতে নিয়ে এগিয়ে আসে রাজকে মারার জন্য তখন রাজ ছুরিটা একহাত দিয়ে ধরে একবার তাঁকায় ছেলেটার দিকে। ছুরিটা ছেড়ে দিতেই ওই ছেলেটা পিছিয়ে যায়। আর সাহস পায়না এগানোর কারণ ইতিমধ্যে সৌভিকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এমন সময় ওরা দেখে আদিত্যকে এসে দাঁড়াতে, ব্যাস! ওদের আর পায় কে? সবাই নিমিষেই সরে যায় ওখান থেকে।
৮৭.
আমি রাজদার পথ অনুসরণ করে বেরিয়ে এসে এদিক ওদিক রাজদাকে খুঁজতে শুরু করলে আদি এসে আমাকে বলে, “পার্কে চলো।” পার্কে আসতেই যে এমন দৃশ্য দেখবো ভাবিনি। কোয়েলকে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে ভয়ে গুঁটিশুঁটি হয়ে আছে। আর রাজদা বীভৎস ভাবে সৌভিকদাকে মারছে। রাজদার এমন রূপ দেখতে হবে ভাবিনি আমি। আর কিছুক্ষণ যদি এভাবে মার খায় তাহলে মনে হয় মারাই যাবে সৌভিক তাই আমি আদি কে যাওয়ার জন্য ইশারা করলাম। ও রাজদার সামনে গিয়ে দাঁড়ালে আমি কোয়েলের কাছে গিয়ে দাঁড়ায় কিন্তু এ কি? আদি ওনাকে আটকাচ্ছে না কেন?
কোয়েল: ও’কে আটকা, আ..আমার ভীষণ ভ..ভয় লাগছে এবার।
কোয়েলের কথা শুনে আমি ওনাদের দিকে তাকালে দেখলাম রাজদা থেমে গেছেন। রাজদাকে থামতে দেখে আদি সৌভিকদার কাছে দু-হাঁটু ভাঁজ করে বসে আর বলে,
আদিত্য: তুই কি ভেবেছিলি? কান টানলে মাথা আসবে? মানে আমার বোনকে দিয়ে তুই আমাকে ব্ল্যাকমেইল করবি কি? এত সহজ মনে করলি কীভাবে সবটা তুই? এই জন্যেই হয়তো তোর বেঁচে থাকাটা এবার কঠিন হয়ে উঠবে। সো স্যাড! (দুঃখ করে)
আদিত্য উঠে দাঁড়াতেই সৌভিক আর্তনাদ করে উঠলো। আমি আর কোয়েল কেঁপে উঠলাম কারণ রাজদা সৌভিকের একটা হাত ভেঙ্গে দিয়েছেন। এতে আদির কোনো ফারাক পরলো না ও শুধু একবার চোখটা বন্ধ করলো তারপর একটা নিশ্বাস ছাড়লো, জানো জানতো এটাই হতে চলেছে।
আদিত্য: অঙ্কিত! একবার এই পার্কের সাইডে আয় তো। একটাকে হসপিটালে চালান করতে হবে।
আদি অঙ্কিতকে কল করে আসার কথা বললে রাজদা ওখান থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পার্কের অন্যদিকে পিছন ফিরে হনহনিয়ে চলে যান। আদি এসে কোয়েলের কাছে দাঁড়াতেই কোয়েল আদিত্যকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ওঠে।
আদিত্য: তুই এখন শান্ত না থাকলে, ঠিক না থাকলে রাজকে সামলাবে কে? বুঝতে পারছিস তো ও কতটা রেগে আছে? ছোটো থেকে নিয়ে যা রাগ ছিলো আজ অবধি সৌভিকের উপর তা তো মিটিয়েছেই সাথে আমার আর তোর রাগটাও মিলিয়ে সব মিটিয়ে নিয়েছে একবারে। যা নিজের পাগলের কাছে গিয়ে ওকে সামলা। আপাতত দুদিন ওর সামনে যাচ্ছি না আমি, আমাকেও হসপিটালে ভরে দেবে কেলিয়ে।
কোয়েল আদির কথা শুনে ছুটে চলে যায় রাজদা যেদিকে গেছে সেদিকে। এরপর আদি আমার দিকে তাকালে আমিও মুখ ফিরিয়েনি অন্যদিকে।
এদিকে,
পার্কটা বেশ বড় হওয়ায় পার্কে প্রবেশ করার দুটো গেট আছে। রাজ দ্বিতীয় গেটের কাছে একটা বেঞ্চে চুপচাপ নীচের দিকে তাকিয়ে বসে আছে। তা দেখে কোয়েল গুটিগুটি পায়ে রাজের কাছে এগিয়ে গিয়ে ওর পাশে বসে। সাহস পাচ্ছে না কোয়েল রাজের কাঁধে হাত রাখার, হাত কাঁপছে ওর। তবুও অনেকটা সাহস সঞ্চয় করে রাজের কাঁধে হাত রাখতে নিলেই রাজ বলে ওঠে,
রাজ: দুপুর হয়ে গেছে হস্টেলে ফিরে যাও।
রাজের কন্ঠস্বর বেশ ঠান্ডা যা দেখে কোয়েল ভীষণ অবাক হলো। রাজের স্বর শুনে মনেই হচ্ছে না কিছুক্ষণ আগে এত বড় একটা ঘটনা ঘটেছে।
কোয়েল: তুমি কি বলতে চাইছিলে আজকে সকালে?
রাজ: (এক গালে নীরব হেসে) সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে গেছে, এখন শুনতে চাইছো?
কোয়েল: ওই মুহূর্তে আমার কিছু শোনার অবস্থা ছিলো না। মাথা কি শুধু তোমার গরম হতে পারে? আমার পারে না? আর মাথা গরম থাকা অবস্থায় আমি অনেক কিছু উল্টো পাল্টা বলে ফেলি তাই শুনিনি। (মাথা নীচু করে)
রাজ: উল্টো পাল্টা কিছু বলোনি?
কোয়েল: সেটাই তো। আরো কিছু বলে ফেলতাম যদি তোমার সামনে থাকতাম। ওই সকালবেলায় একটা নির্জন গলিতে তোমাদের ওই অবস্থায় দেখে আমার মাথা ঠিক থাকার কথা ছিলো রাজ?
রাজ: এখন মাথা ঠান্ডা হয়ে গেছে তাই এসেছো? নাহলে তুমি তো আমার মুখ দেখতেও চাওনি।
কোয়েল উত্তরে চুপ করে থাকলে রাজ বলে ওঠে,
রাজ: হস্টেলে ফিরে যাও।
কোয়েল: তুমি কিছু ভেবেই নিশ্চই করেছো এসব তাই না?
রাজ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলতে শুরু করে,
রাজ: আমি তোমার হস্টেলের সামনে দাঁড়িয়ে তোমাকে কল করবো ঠিক সেই সময় পাশের গলি থেকে একটা মেয়ের চিৎকার আসে। আমি সেদিকে এগিয়ে গেলে দেখি ওই গলির মধ্যে দুটো ছেলে টিনাকে ধরে রেখেছিলো। আমি যেতেই ওরা পালিয়ে যায়, আমি টিনার কাছে এগিয়ে গেলে ও বলে ওরা নাকি ওর সাথে খারাপ বিহেভ করার চেষ্টা করছিল। আমি ওকে দূর থেকেই শান্ত করার চেষ্টা করতে থাকি আর ও শান্তও হয়ে যায়। তারপর আমি যেই না ওই ছেলেগুলো কোথায় গেলো সেটা দেখার জন্য এগোই তখনই ও আমাকে বাঁধা দিয়ে জড়িয়ে ধরে।
কোয়েল: আমি সেই সময়েই তো গেছিলাম। কিন্তু তুমি ওকে জড়িয়ে ধরেছিলে…
রাজ: ওই ছেলেগুলোর মধ্যে একটা ছেলে টিনার ফ্ল্যাটের ছেলে ছিলো, ওর খুব ভালো ফ্রেন্ড। আমি দেখেই চিনে নিয়েছিলাম ছেলেটাকে তাই ছেলেটা নার্ভাস হয়ে তাড়াতাড়ি সরে যায় ওখান থেকে। টিনা আমাকে ওদের ধরতে যেতেও দেয়না। আর, আমি কালকে রাতেই টিনাকে একটা কাজের জন্যে কলকাতার বাইরে পাঠিয়েছিলাম…
কোয়েল: (উঠে দাঁড়িয়ে উত্তেজিত হয়ে) তার মানে তুমি সব জেনে বুঝে টিনাকে জড়িয়ে ধরে ছিলে? তোমার কথার মানে তো এটাই দাঁড়াচ্ছে যে ওই ছেলেটা টিনার খুব ভালো ফ্রেন্ড সো ও কেন টিনার সাথে এরকম করতে যাবে? আর তুমি কালকে রাতে টিনাকে বাইরে পাঠালে আজকে সকালে ও এলো কীভাবে?
রাজ: (হেসে) টিনা এইখানের একটা রাস্তাও ঠিকভাবে চেনে না।
কোয়েল ধপ করে বেঞ্চে বসে পড়ে। ওর সকালের ভাবনাই ঠিক! রাজ ইচ্ছা করেই করেছে এই জন্যেই ও বলেছিলো একে অপরকে প্রতি বিশ্বাস রাখতে। রাজ কোয়েলের পাশে বসে বলে,
রাজ: কিছু সময় নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করতে হয়। আজ আমি যদি ওদের ফাঁদে পা না দিতাম তাহলে সৌভিক এই স্টেপটা নিত না। আসলে এতদিন ধরে ওরা অনেকরকম চেষ্টা করেছে কিন্তু কিছুই করতে পারেনি কারণ আমরা খুব সতর্ক ছিলাম। এরকম চলতে থাকলে সৌভিককে বা পরেশবাবুকে কাওকেই হাজতে পুরতে পারতাম না তাই ওই মুহূর্তে দাঁড়িয়েই আমি প্ল্যান করে নিয়েছিলাম যে আমাকে কি করতে হবে। ওরা যেমন চাইছে তেমন করতে হবে আমায়।
কোয়েল: কি চাইছিলো ওরা? তখন দাভাই যেটা বললো সেটাই কি..??
রাজ: হ্যাঁ। ওদের মধ্যে ভুলবোঝাবুঝি করানোর উপায় ছিলো না তাই তোমার আর আমার মধ্যে ঝামেলা হলে তোমাকে একা পাওয়া যাবে আর সেই সুযোগে সৌভিক তোমাকে কিডন্যাপ করে আদিত্যকে ব্ল্যাকমেইল করবে যাতে বউদিকে ছেড়ে জিয়াকে মেনে নেয় ও। একদম পাতি প্ল্যান যাকে বলে। খুব ইজি ছিল ব্যাপারটা বোঝা আমার কাছে। আমাদের চারজনকে ভাঙ্গার একটাই উপায় ছিলো আর সেটা হলো ভুল বোঝাবুঝি। আজ অবধি টিনা কোনোদিনও আমাকে টাচ করার সাহস পায়নি। তোমার হস্টেলের সামনে করার কারণ তোমাকে দেখানো তাই আমি নিজেই ইচ্ছা করে ওকে জড়িয়ে ধরেছিলাম নাহলে তুমি আমাকে ভুল বুঝতে না।
কোয়েল: স্যরি! (কান্নামিশ্রিত গলায়)
রাজ: কি জন্যে? তুমি তো কোনো ভুল করোনি। তুমি যদি আমাকে আজকে ভুল না বুঝতে তাহলে তো প্ল্যান সাকসেসফুল হতো না। ভাগ্যিস তখন তুমি আমার কথা শোনোনি নাহলে তখনই আমি তোমায় সবটা বুঝিয়ে দিতাম আর বুঝতে পারতাম না আমার নিজের লোকেরা আমার প্রতি কি মনোভাব পোষণ করে নিজেদের মনে। (তাচ্ছিল্য হেসে)
কোয়েল রাজের কথার মানে বুঝতে পেরে চুপ করে থাকে। চোখ যায় রাজের হাতের দিকে, সাদা রুমালটা লাল হয়ে গেছে যেটা হয়তো রাজ পেঁচিয়ে নিয়েছিলো।
কোয়েল: রাজ তোমার হাত!
রাজ: এটা তো হওয়ারই ছিল। আমাকে আর নিজেকে শাস্তি দিতে হলো না। (তাচ্ছিল্য হেসে) আমি আসছি, তুমি চলে যাও।
রাজ উঠে চলে গেলো পার্কের বাইরে। কোয়েল রাজের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুখ ঢেকে শব্দ করে কেঁদে উঠলো। এতটা ভুল না বুঝলেও পারতো সে। রাজ কেমন সেটা তো তাঁর থেকে ভালো কেউ চেনে না তাও এমন ব্যবহার কীভাবে করতে পারলো। ভীষণ অপরাধী লাগছে নিজেকে কোয়েলের কিন্তু কোয়েল জানেনা শুধু ও না, ওর থেকেও বেশি আঘাত আদিত্য রাজকে দিয়েছে।
[#ফিরে_আসবো_আগামী_পর্বে🥀]
বি:দ্র: সত্যি কি শুধু পরেশবাবু, সৌভিক আর জিয়ার কাজসাজি এসব? নাকি লুকিয়ে আছে অন্য কোনো রহস্য? মতামত জানার অপেক্ষায় রইলাম। শুভ রাত্রি।
আইডি- কোয়েল ব্যানার্জী